User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বই : পাথরপরান। লেখক : মোহিত কামাল। মূল্য : ২০০ টাকা। পৃষ্ঠা : ১২৫। প্রচ্ছদ : মঈন আহমেদ। প্রকাশনী : বিদ্যাপ্রকাশ। পাথরের পরান? নাকি পরানটাই পাথরের? তাই কি কখনো হয় নাকি! পাথরের কি প্রাণ হয় যে পরান থাকবে? না মানুষের পরান পাথরের হয়? প্রিয় পাঠক এই দোলাচলে না দুলে আমরা জেনে নেই পাথরপরান উপন্যাসের কাহিনী সংক্ষেপ। #কাহিনী_সংক্ষেপ : উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মণি, রূপে-গুণে আকর্ষণীয় ও উচ্চশিক্ষিত। একটি নামী প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও। ঘরে - বাইরে ও কর্মস্থলে তিনি নানাবিধ পীড়ন ও সংহিসতার শিকার। বিত্তবান স্বামী আফজাল ও দুই বছরের এক কন্যা সন্তান মুনতাজকে নিয়ে সমাজের চোখে সুখী পরিবার হলেও বাস্তবিক পক্ষে সে নির্যাতিত এক অসহায় নারী। মদ্যপ স্বামী রাতের আধারে মণির উপর হামলে পড়ে। চলে শারীরিক নির্যাতন, আর তা মণির জন্য দিনের আলোয় রূপ নেয় মানুষিক নির্যাতন হিসেবে। দিনের আলোয় আফজাল যেন এক অন্য মানুষ! রাতের ঘটনা তার মনে থাকেনা, যা একটুআধটু মনে পরে তার জন্য অভিনব কৌশলে স্ত্রীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে সে। দিনের পর দিন একি ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে মণির জীবন বিষিয়ে উঠে। অসহায় অবস্থার সুযোগ নিতে চায় বন্ধুবেশী পুরুষ সহকর্মী মাহমুদ। মণি মাহমুদের অনৈতিক আহবানে সাড়া না দেয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠে মাহমুদ। মণির পেছনে উঠেপড়ে লাগে, অফিস থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবনে ছড়িয়ে পড়ে বিষবাষ্প। পদে পদে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতনে বিধ্বস্ত এক তেজস্বিনী নারীর দীপ্ত পায়ে এগিয়ে চলার কাহিনী পাথরপরান। পাথরপরানে আবিষ্কার করতে চান প্রেমময় ফল্গুধারা? তাহলে আর দেরি কেনো পাঠক? #নিজস্ব_অভিমত : উপন্যাসের প্রক্ষেপটে দেখা যায়, একজন নারী হিসেবে সমাজের উপরতলার মানুষ হবার পরেও সমাজে সর্বস্তরেই নির্যাতিত হচ্ছে। সে হোক না যত উচ্চশিক্ষিত, অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল তবুও তার রেহাই নেই! উপন্যাসের মূল চরিত্র মণিও তার স্বামী হাতে নির্যাতিত হয়! মাতাল হয়ে এসে সে বউ পেটায়! শিক্ষিত ভদ্র সমাজে এটা কি কেউ বিশ্বাস করবে? নাকি বিশ্বাসযোগ্য? অথচ আফজাল নিজেও একজন কন্যাসন্তানের পিতা! যে কিনা কন্যার খুশির জন্য ঘোড়া সেজে মেঝেতে কন্যার সাথে লুটোপুটি করে! তাহলে স্ত্রীর গায়ে হাত তোলার সময় সে এটা কেন ভুলে যায়, মণি মানে তার স্ত্রীও এক বাবার এমনই আদরের কন্যা! পাশের ফ্ল্যাটের মহিলার সাহায্যের জন্য মণির কাছে আসাটাও স্বামী হিসেবে সহজভাবে নিতে পারেনি আফজাল! এইটা কিন্তু শুধু গল্প উপন্যাসেই সীমাবদ্ধ নয়, আমি স্বচক্ষে এমন হতে দেখেছি! নারীরা যেন সমাজে উচ্ছিষ্ট! মণি যখন স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বাবার বাড়ি চলে যায়, সেখানে মণির মায়ের আচরণ পাঠককে ভাবিত করবে! আমাদের সমাজের চিরাচরিত বাণী "বিয়ের পর স্বামীর বাড়িই মেয়েদের আসল বাড়ি", আসলেই কি তাই? তবে কেন আসল বাড়িতেও যে নারীরা নিরাপদ নয়? সেখানেও কেনো তারা নির্যাতিত হয়? আর আশ্রয়ের আশায় যখন নারী আপন আলোয় পুরনো ঠিকানা বাবার বাড়ি যায়, সেখানে সে হয়ে উঠে উচ্ছিষ্ট? তাহলে নারীর আশ্রয় কোথায়? মা, বাবা, ভাই-বোন সবাই কি পর হয়ে যায় বিয়ের পরে ? সমাজ সংসারই কি সব? মেয়ে স্বামী সংসার ছেড়ে এসেছে, লোকে বাজে কথা বলবে এই ভাবনায় মেয়েকে অন্ধকারে ঠেলে দেবেন বাবা-মা? ঘরে-বাইরে নারীর কেউ আপন নয়! নিজের কষ্টের কথা কোনো বন্ধু বা সহকর্মীকে বলা যাবে না, তাহলে সে নিতে চাইবে তোমার দুর্বলতার সুযোগ! তুমি মরো বাঁচো মুখ বুঝে সব অত্যাচার সহ্য করাই তোমার কর্তব্য। আর তুমি একা বাঁচতে নিজের বাসস্থান খোঁজ করতে যাবে? স্বামী ছাড়া বাসা ভাড়াও জুটবে না তোমার কপালে! আর এতকিছু সহ্য করেই একজন নারী হয়ে উঠে পাথরপরান। তবুও নারী মমতাময়ী। তাই তো পাথরপরানেও ফুটবে প্রেমময় জীবনের ফল্গুধারা। উপন্যাসটা শেষ করে আমি প্রচণ্ড মানুষিক পীড়ায় আছি। যখনই নিজেকে মণির জায়গায় কল্পনা করি ভয়ে গা শিউরে উঠে। এ থেকে কি নারীদের কোনো পরিত্রাণ নেই?! বই হোক ভালোবাসার প্রতীক।