User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
'অন্তরার বাবা' হুমায়ুন আহমেদের লেখা একটি ছোটগল্প। হুমায়ুন আহমেদ জীবনে ছোটগল্প লিখেছেন উপন্যাস ও অন্যান্য রচনার তুলনায় বেশ কম। তারপরও যে কয়টা লিখেছেন তার সংখ্যা শতাধিক। এবং এর অধিকাংশ ছোটগল্পই একেবারে আন্তর্জাতিকমানের। তবে মানের দিক থেকে 'অন্তরার বাবা' হয়ত হুমায়ুন আহমেদের সেরাদের একটি নয় তারপরও এই ছোটগল্পটির কাহিনী যে অতি বিচিত্র তা বলাই বাহুল্য। খুবই স্বল্প পরিসরে একটা আজব কাহিনী যেমন বিশ্বাসযোগ্যভাবে লেখক উপস্থাপন করেছেন তেমনি গল্পে যে প্রধান তিনটি চরিত্র রয়েছে সেই তিনটি চরিত্রকেও পূর্নাংগভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। না, হয়ত একটু ভুল বললাম। তিনটি চরিত্রের মধ্যে দুইটি, অন্তরা আর অন্তরার মায়ের চরিত্রকে লেখক পরিপূর্ণভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন তবে ইচ্ছাকৃতভাবে অন্তরার বাবা, যাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে এই গল্পের কাহিনী, তার চরিত্রটিকে কিছুটা ধোঁয়াশার মধ্যে রেখেছেন। এবং সেটি মূলত করেছেন গল্পের প্রয়োজনেই। এই গল্পে দেখা যাবে নিতান্তই নির্ঝঞ্ঝাট ও অন্তর্মুখি অন্তরার বাবা মফিজুদ্দিন সাহেব যিনি ব্যক্তিজীবনে বেশ সফল, ভাল চাকরি করছেন, স্ত্রী হিসেবে পেয়েছেন মন মত একটি মেয়েকে এবং সন্তান রয়েছে তিনটি যার মধ্যে এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে এবং অন্য মেয়ের বিয়ে খুব শীঘ্রই, তিনি হঠাৎ একদিন বাড়ি ফেরেন নিজের জন্য একটি কাপড় নিয়ে। কাপড়টি কোন সাধারণ কাপড় নয়। নিজের কাফনের কাপড়! এটি তিনি আনিয়েছেন তার এক বন্ধুকে দিয়ে, মক্কা থেকে। এরপর থেকে অন্তরার বাবার আলোচনার একমাত্র বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে কাফনের কাপড় এবং মধ্যরাতে তাকে দেখা যাবে নিজের বিছানা ছেড়ে সোফায় এসে শুয়েছেন সারা গায়ে কাফনের কাপড় জড়িয়ে! এই গল্পের অন্য দুই চরিত্র, অন্তরাকে দেখা যাবে তার আসন্ন বিয়ে নিয়ে খুবই উৎসাহী এবং হবু বরের সাথে টেলিফোনে নিয়মিত প্রেমালাপ করে যাচ্ছে। আর অন্তরার মাকে দেখা যাবে স্বামীর কাফনের কাপড় নিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হবার ঘটনায় রেগে অস্থির হয়ে উঠেছেন। তবে এসবকে ছাপিয়ে এই গল্পের মেইন পয়েন্ট হয়ে দাঁড়াবে শেষ দৃশ্যে কাফনের কাপড় জড়িয়ে অন্তরার বাবার শুয়ে থাকার ব্যাপারটা। নিঃসন্দেহে লেখক মানুষের বিচিত্র মন ও সেই মনে মৃত্যুচিন্তা কতখানি প্রভাব ফেলতে পারে এবং অন্যের মৃত্যুচিন্তা ও সেই মোতাবেক কাজ করায় কাছের মানুষদের প্রতিক্রিয়া কিরকম হতে পারে তা দেখাতে চেয়েছেন এই গল্পের মাধ্যমে, অন্তত আমার কাছে সেরকমই মনে হয়েছে। অন্য পাঠকরা হয়ত এই গল্প থেকে আরও অন্তর্নিহিত কোন অর্থও খুঁজে পেতে পারেন।