User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
বঙ্গবন্ধুকে জানার নতুন একটি কোণ এই বইটি.... যারা মানবিক মুজিবকে জানতে চান, অবশ্যয় পড়বেন....
Was this review helpful to you?
or
অনেক ধন্যবাদ । পছন্দের বইগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে পৌছে দেওয়ার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
এবি এস মুসার উ লেখা চমৎকার একটি বই মুজিব ভাই। বইটা পড়ে আসল ইতিহাস জানতে পারলাম । খুব সুন্দর একটা বই।
Was this review helpful to you?
or
জাতির পিতা বা শেখ মুজিবুর রহমান কে নিয়ে লেখা একটু ভীন্ন ধরনের বই। ব্যাক্তি মুজিব তথা মুজিব ভাই এবং জাতির পিতা, আমার কাছে মনে হয়েছে মুদ্রার এ পিঠ আর ও পিঠ। ভূমিকা টা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আপদ, বিপদ মুছিবত ব্যাপারখানা ও পাঠককে খুব আনন্দ দিবে। আর একটা ব্যাপার - যদিও পত্রিকায় বা অন্য সূত্রে অনেকেই পড়েছে তবু, শেখ সাহেবের কাজ ও গম্ভীরতার আড়ালেও যে কিছু রস ভরা রসিকতা ছিলো তা এখানে ফুটিয়েছেন লেখক।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইঃ মুজিব ভাই লেখকঃ এবিএম মূসা পৃষ্ঠাঃ ১০৪ মলাট মূল্যঃ ২৪০/- প্রকাশনাঃ প্রথমা প্রকাশন বাংলাদেশের ইতিহাস এ যার নাম উজ্জল স্বর্নাক্ষরে লেখা থাকবে তিনি আর কেউ নন । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান । তিনি তার জীবদ্দশায় যা বাঙালী জাতির জন্য করে গেছেন তা ভুলার মত নয় । তবে তিনি সবার কাছে এক নন । কারো কাছে মুজিব ভাই,কারো কাছে নেতা, কারো পিতা আবার কারো সন্তান । তিনি এক জীবনে অনেক জীবন বহন করেছেন । বঙ্গবন্ধু তিনি এমনি তেই হয়ে যাননি । তিনি তার ক্যারিশম্যাটিক গুন দিয়ে সবাই কে আপন করে নিয়েছিলেন । তার উদারতা আর হৃদয়ের ভালবাসা দিয়ে নিজের করে নিয়েছেন । সবাই কে আপন করে নেয়ার এই গুন এর জন্য ই তিনি মানুষ এর প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন । এই বইয়ের ১৪ টি অধ্যায় আছে । সবচেয়ে মজার বিষয় এটিতে শেখ মুজিব এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছে । সাংবাদিক এবিএম মূসা তাকে কাছ থেকে দেখেছেন বলে এই বইটির গুরুত্ব আমার কাছে অন্যতম । যদিও নাতিদীর্ঘ এই বইয়ে অল্প কথায় শেখ মুজিব এর সর্বোদিক তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে । কিন্তু এতো ছোট বই শেখ মুজিব কে বর্নণা করা প্রায় অসম্ভব । তুবও এই বইয়ে সর্বোদিক থেকে অসাধারণ কিছু তথ্য রয়েছে । মুসিবত সাহেব(এবিএম মূসা) বই এর জন্য শ্রদ্ধা রইল । https://www.rokomari.com/book/49675/%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%ac-%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%87
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃমুজিব ভাই লেখকঃএবিএম মূসা প্রকাশনীঃপ্রথমা প্রকাশন মূল্যঃ২১৩টাকা এবিএম মূসা রচিত মুজিব ভাই বইটিতে বাহ্যিক বিষয়গুলো থেকে আলাদা করে তুলে আনতে চেষ্টা করেছেন একজন ব্যক্তি মুজিবকে।একেবারে ঘরোয়া আটপৌরে ভাষা যেটাকে বলা হয় লেখক সেই ভাষা ব্যাবহার করে চমৎকারভাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের নানা দিক এমনভাবে তুলে ধরেছেন , এক কথায় যাকে বলা যায়, অতুলনীয় এবং বইটি পড়ার সময় আমার মনে হয়েছে আমি যেন ব্যক্তি মুজিবের জীবনকে প্রত্যক্ষ করছি। একজন মানুষ যখন সাধারণ থেকে অসাধারণ থেকে অসাধারণ বা সবিশেষ হয়ে ওঠেন, তখন পরিণত হন ইতিহাসের মহত্তম ব্যক্তিত্বে। তখন তাঁর ঘরোয়া জীবন বাহ্যিক জীবনের আড়ালে ঢাকা পড়ে যায়। লেখক এবিএম মূসা তাঁর টগবগে যুবা বয়স থেকে শেখ মুজিবকে দেখেছেন। কালক্রমে তাঁর ‘মুজিব ভাই’য়ের নিবিড় সান্নিধ্যে এসেছেন। ফলে তাঁর পক্ষে বঙ্গবন্ধুর ঘরোয় জীবনের এমন সব দিক এই বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে, যা এত দিন আমাদের জানান বাইরে ছিল। শুধু বঙ্গবন্ধু কেন, তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সর্বাত্মক প্রেরণাদাত্রী সহধর্মিণী ফজিলাতুন্নেসা মুজিব এবং তাঁর তিন পুত্রের কথাও তিনি তুলে ধরেছেন, পাঠককে যা মন্ত্রমুদগ্ধ করে রাখবে। এ বই নিছক বঙ্গবন্ধুর ঘরোয়া জীবনের কথা নয়, হয়ে উঠেছে একটি নির্দিষ্ট কালপরিসরের আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনেরও অমূল্য দলিল।লেখক ব্যক্তি মুজিবকে জানার জন্য এক অসাধারণ সুযোগ করে দিয়েছেন পুরো জাতিকে এ বইটির মাধ্যমে। আমার কাছে বইটি অমূল্য এক সম্পদ এবং একজন ব্যক্তি মুজিবের জীবনী বলে মনে হয়েছে বইটি। ব্যক্তি মুজিবকে জানার আগ্রহ মেটাতে বইটি সবার একবার হলেও পড়া প্রয়োজন বলে মনে করি।
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতি, দর্শন, কর্মময় জীবন, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড এবং সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে প্রচুর গবেষণালব্ধ গ্রন্থ এবং বিশ্লেষণমূলক গ্রন্থ রচিত হয়েছে। তাঁর বাহ্যিক জীবন বইয়ের পাতায় যতোটা উঠে এসেছে, ব্যক্তিগত জীবন ততোটা উঠে আসে নি। হয়তো, নেতা মুজিব ব্যক্তি মুজিবকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন বলেই। ব্যক্তি মুজিবকে বইয়ের পাতায় তুলে আনার প্রচেষ্টা বিচ্ছিন্নভাবে দেখা গেলেও তা যথেষ্ট নয়। তদুপরি তাঁর সংস্পর্শে আসা বেশিরভাগ মানুষই বেঁচে নেই, যে কারণে ভবিষ্যতে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের ভুল চিত্রায়নের আশংকা থেকেই যায়। শেখ মুজিবের সংস্পর্শে আসা এবং তাঁকে অনেকদিন ধরে কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য অর্জনকারী সাংবাদিক এবিএম মূসা তাঁর ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণায় ব্যক্তি মুজিবকে তুলে আনার চেষ্টা করেছেন তাঁর ‘মুজিব ভাই’ বইটিতে। এবিএম মূসা সাংবাদিকতা করেছেন প্রায় পাঁচ দশক। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক নানা সংস্থায় সাংবাদিকতার সুবাদে দেশের রাজনীতির অন্দরমহলে তাঁর যাতায়াত ছিল অবাধ। বহু ব্যক্তিত্বকে কাছ থেকে দেখেছেন, দেখেছেন রাজনীতি কিংবা অন্যান্য অঙ্গনে। শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ এবং ঘনিষ্ঠতা ছিল প্রায় দুই যুগ। এবিএম মূসা ব্যক্তি শেখ মুজিবের একেবারে কাছাকাছি আসতে পেরেছিলেন। তাই তো অন্যদের কাছে যখন শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ‘বঙ্গবন্ধু’, ‘নেতা’ বা ‘লিডার’, এবিএম মূসার মতো কিছু ঘনিষ্ঠজনের কাছে তিনি শুধুই ছিলেন ‘মুজিব ভাই’। এই মুজিব ভাইয়ের সম্বন্ধে এবিএম মূসা নানা সময়ে পত্রিকা কিংবা বিশেষ ক্রোড়পত্রে স্মৃতিচারণমূলক কিছু নিবন্ধ লিখেছিলেন। সেগুলোই তাঁর “মুজিব ভাই” নামক ছোট পরিসরের বইয়ে সংকলিত হয়েছে। বইয়ের ভূমিকা লিখেছেন এবিএম মূসার বন্ধু এবং বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখা আরেকজন সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী। তাঁর ভাষায়, “তরুণ প্রজন্মের যেসব পাঠক বঙ্গবন্ধুকে ব্যক্তিগতভাবে দেখার সুযোগ পাননি, তাঁরাও বইটি পাঠের সময় বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য লাভ করবেন। ছোট চৌবাচ্চার পানিতে যেমন বিরাট সূর্যের মতো বিরাট গ্রহের প্রতিবিম্ব ধরে রাখা যায়, তেমনি এবিএম মূসার ‘মুজিব ভাই’ নামের ছোট বইটিতে এক মহানায়কের বিশাল চরিত্রকে তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে”। এই বইয়ে এগারোটি রচনায় আটপৌরে শেখ মুজিবকে তুলে আনার প্রচেষ্টা আমরা লক্ষ্য করি। শেখ মুজিবুর রহমানকে যাঁরা খানিকটাও চিনতেন, তাঁরাই উল্লেখ করেছেন তাঁর মহৎ হৃদয়ের কথা। কোনো কোনো সমসাময়িক রাজনীতিবিদ সমালোচনা করেছেন এই বলে যে, শেখ মুজিব শুধুই মুখের জোরে রাজনীতি করে গেলেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এদেশে জনগণের কাছে যাবার জন্য যে জিনিশটি অতীব প্রয়োজনীয় তা হলো- বিরাট একটি হৃদয় এবং ক্যারিশম্যাটিক ব্যক্তিত্ব; যা শেখ মুজিবের ছিল। বঙ্গবন্ধুর মহৎ হৃদয়ের পরিচয় এবিএম মূসা বরাবরই পেয়েছিলেন। উদাহরণ হিশেবে বেশ কিছু ঘটনার উল্লেখ তিনি করেছেন যা উপরোক্ত দাবির সপক্ষে যায়। পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরার পথে বিমানে সাংবাদিকদের কাছ থেকে প্রথম যাদের খবর জানতে চেয়েছিলেন তারা তাঁর পরিবারের কেউ নয়, বরং বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিক এবং সম্পাদক। উদ্বেগের সাথে নিয়েছেন পরিচিত রাজনীতিক এবং সাংবাদিকদের খবরাখবর যারা স্বাধীনতার আগে তাঁর চরম বিরোধিতা করেছিল। একটি ঘটনার উল্লেখ এবিএম মূসা বিশেষভাবে করেছেন, কারণ সেখানে নিজের সরাসরি একটি ভূমিকা ছিল। শেখ মুজিব ‘মর্নিং নিউজ’ এর অবাঙালি সম্পাদক বহিরুদ্দিনের প্রাণরক্ষা করেছিলেন এবং তাঁর ঢাকাস্থ বাড়ি বিক্রি করে বৈদেশিক মুদ্রায় তার পুরো দামসহ পাকিস্তানে চলে যাওয়ার ব্যবস্থা করার মতো অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। এই বহিরুদ্দিন দিনের পর দিন শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে লিখতেন, তাঁর চরিত্র হনন করতেন। বহুদিন পর এবিএম মূসার সাথে সাক্ষাতে বহিরুদ্দিন আক্ষেপের সাথে বলেন, “ইয়ে ফেরেশতাকো তুমলোক খুন কিয়া?” বঙ্গবন্ধু যে কী বিশাল হৃদয়ের মানুষ ছিলেন তার প্রমাণ পাকিস্তান থেকে ফিরে আসার পর তাঁর রাজনৈতিক বিরোধিতাকারীরা পেয়েছিল। তাঁর রাজনৈতিক শত্রুদেরও তিনি ক্ষমা করে দিয়েছিলেন এবং যারা জেলে ছিল তাদের পরিবারের দেখাশুনার ভার নিয়েছিলেন। যদিও শেখ মুজিবের দুর্বল হৃদয় এবং মানুষের প্রতি কঠোর হতে না পারাকেই তাঁর চরিত্রের একটি দুর্বল দিক হিশেবেই ভাবা হয়। যে কারণে তিনি যেখানে কঠোর হওয়া প্রয়োজন সেখানে তা হতে পারেন নি। কখনো কখনো তাঁর আদরে অন্যায় করেও প্রশ্রয় পেয়েছে কাছের কিছু মানুষ, যা তাঁর জনপ্রিয়তা কিছুটা ক্ষুণ্ণ করেছিল। পঁচাত্তরের আগস্টের ষড়যন্ত্রের কথা তিনি আগে থেকে কিছুটা আঁচ করতে পারার পরও পাত্তা দেন নি, কারণ তিনি ভাবতেন কোনো বাঙালি তাঁর ক্ষতি করতে পারে না। ‘মুজিব ভাই’ বইটি শুধুই শেখ মুজিবকে নিয়ে নয়, তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও উল্লেখ আছে। ‘প্রেরণা-দায়িনী ফজিলাতুন্নেসা মুজিব’ শিরোনামের স্মৃতিকথায় শেখ মুজিবের স্ত্রীর পরিচয় এমন ঘনিষ্টভাবে উঠে এসেছে যা আমরা আগে কখনো দেখি নি। শেখ মুজিবের রাজনৈতিক অঙ্গনে সফলতার পেছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশি, তিনি হলেন তাঁর স্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা মুজিব। তিনি সারাজীবনই ছিলে সাধারণ সেই বধূ, যিনি বহু বছর আগে স্বামীর সঙ্গে গ্রাম্য বধূর যে লেবাসটি পরে এসেছিলেন, গণভবন বা বঙ্গভবনে এসে তা ছাড়তে চাননি। যে কারণে রয়ে গিয়েছিলেন সেই ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে। তবে তাই বলে দেশ ও রাজনীতির খবর একদম রাখতেন না তা নয়। আগরতলা মামলার সময় যখন আইয়ুব খান শেখ মুজিবকে প্যারোলে মুক্তি নিয়ে রাওয়ালপিন্ডিতে যাওয়ার প্রস্তাব দিলেন, তখন এই গৃহিণীই রুদ্রমূর্তি ধারণ করে বিভ্রান্ত শেখ মুজিবকে খবর পাঠিয়েছিলেন, ‘হাতে বঁটি নিয়ে বসে আছি, প্যারোলে মুচলেকা দিয়ে আইয়ুবের দরবারে যেতে পারেন; কিন্তু জীবনে ৩২ নম্বরে আসবেন না’। ‘স্মৃতিতে কামাল-জামাল-রাসেল’ নামক আরেকটি স্মৃতিকথায় এবিএম মূসা তাঁর দেখা বঙ্গবন্ধু পুত্রদের জীবন তুলে ধরেছেন। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সঙ্গে শেখ মুজিবের বিচিত্র সম্পর্ক নিয়ে একটি ছোট রচনা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বইটিতে। মওলানা ভাসানী স্নেহের দৃষ্টিতে দেখতেন শেখ মুজিবকে, ডাকতেন ‘মজিবর’ নামে। তিনিই প্রথম শেখ মুজিবকে আওয়ামী মুসলিম লীগে নিয়ে আসেন, পরে বানিয়ে দেন সাধারণ সম্পাদক। পরবর্তীতে যখন ন্যাপ গঠন করে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে গেলেন তখনও শেখ মুজিবের সাথে তাঁর সম্পর্ক ছিল অটুট। আগরতলা মামলা চলাকালীন সময়ে জেল থেকে ভাসানীর কাছে তাঁদের মুক্তির জন্য আন্দোলন করার অনুরোধ করেন শেখ মুজিব। মুজিবের ডাকে সাড়া দিয়ে পরদিনই মওলানা পরদিনই পল্টন ময়দানে লক্ষ জনতার সমাবেশে দিয়েছিলেন সেই বিখ্যাত হুংকার, ‘খামোশ’। স্বাধীনতার পর জাতি গঠনে নানা বিভেদ থাকলেও শেখ মুজিব এবং মওলানা ভাসানীর মধ্যকার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল আগের মতোই অটুট। এমনকি বঙ্গবন্ধু তাঁর আলোচিত-সমালোচিত ‘বাকশাল’ এর পেছনের দর্শন ও কর্মপদ্ধতি নাকি সর্বপ্রথম ব্যাখ্যা করেছিলেন ভাসানীর কাছেই। তাঁদের পরস্পরের রাজনৈতিক শ্রদ্ধাবোধ উপলব্ধি করে আজকের দিনের রাজনীতিবিদদের অনেক কিছুই শেখার আছে বৈকি! ‘মুজিব ভাই’ বইটিতে ব্যক্তি মুজিবের প্রসঙ্গ বেশিরভাগ জায়গা দখল করলেও, তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কিছু ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবিএম মূসা। সাতই মার্চের সেই বিখ্যাত ভাষণ নিয়ে এবিএম মূসার ব্যক্তিগত ব্যাখ্যা ভাবনার খোরাক যোগাবে। ‘মুজিব ভাই’ বইয়ে আমার সবচেয়ে প্রিয় রচনাটি হলো ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ শীর্ষক অধ্যায়টি। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে ফিরে না এলে যে দেশটি স্বাধীনতাই অর্থহীন হয়ে যেত এবং রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধে দেশটির পরিণতি কী দাঁড়াত, মিত্র ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশ ছেড়ে যেত কিনা, হাজার হাজার কোলাবোরেটর ও তাদের নেতাদের জীবন রক্ষা যে দুরূহ হতো, এ সম্পর্কিত প্রশ্ন ও প্রসঙ্গ সামনে টেনে এনে একজন নিরপেক্ষ ও সৎ পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিকোণ থেকে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভূমিকা বিশ্লেষণ করেছেন। ‘মুজিব ভাই’ বইটির প্রত্যেকটি অধ্যায় সুলিখিত এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ। এই বইটিতে আছে অত্যন্ত কাছ থেকে দেখা মানুষ শেখ মুজিব। আছে তাঁর রঙ্গরসপ্রিয়তা। এবিএম মূসা তাঁর কাছ থেকে দেখা মানুষটিকেই বইয়ের পাতায় তুলে এনেছেন। পিতা, পুত্র, স্বামী, বন্ধু হিসেবে তাঁর চরিত্রের যে বিশেষত্ব; নেতা, রাজনীতিক, রাষ্ট্রনায়ক হিশেবেও অনুরূপ বিশেষত্বগুলো রয়েছে। গ্রন্থকার এবিএম মূসা ছোট ছোট স্মৃতিকথার মধ্য দিয়ে অন্তরঙ্গ ভাষায় সেইসব বিশেষত্ব আশ্চর্য নৈপুণ্যের সাথে তুলে ধরেছেন। আবদুল গাফফার চৌধুরী আলোচ্য বইয়ের সারাংশ তুলে ধরেছেন একটি কথায়, ‘তিনি (এবিএম মূসা) বই-পুস্তক ঘেঁটে, গবেষণার দ্বারা নয়, চোখের দেখার আলোকে যে বিরাট মানুষটির ছবি ক্লোজআপে ধরে রেখেছেন, সেই ছবি ধরে রাখার কাজে চোখের বিভ্রমটুকু তিনি এড়াতে পেরেছেন’। আমি মনে করি,ভবিষ্যতে সাহিত্যের পাতায় কিংবা সেলুলয়েডের ফিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বন্দী করতে চাইলে, ‘মুজিব ভাই’ বইয়ের শরণ নিতেই হবে।