User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Very helpful & useful.
Was this review helpful to you?
or
একবারে পড়ে শেষ করার মত বই। কিন্তু বইয়ের বাইন্ডিং ভাল ছিল না।
Was this review helpful to you?
or
One of the best books I have ever read. The translation was great too. It successfully holds the emotions.
Was this review helpful to you?
or
Pleased
Was this review helpful to you?
or
[বুক্রিভিউ ও কাহিনী সংক্ষেপ] হাসপাতেলের বিছানায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে জীবনযুদ্ধে হেরে যাওয়া এক মা। সন্তান মরে গেছে, হয়ত সেও মরে যাবে। কিন্তু সে বাঁচতে চেয়েছিল। অবলম্বন হিসেবে চেয়েছিল ধরার জন্য একটা হাত। কিন্তু নিষ্ঠুর পৃথিবীর কেউ তার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয় না, হাত বাড়ায় না তার নিজের সন্তানও! এই গল্পটি একজন অবিবাহিত মায়ের গল্প এবং তার গর্ভে দিন দিন বেড়ে ওঠা অনাগত এক সন্তানের গল্প। ঠিক যখন থেকে কোন একটা মেয়ের শরীরে নতুন আরেকটি প্রাণের উদ্ভব হয় তখন থেকেই একটা সাধারন মেয়ে একজন মা হয়ে যায়! কিন্তু একজন অবিবাহিত মেয়ে যখন তার পেটে ধারন করে আকস্মিক ঘটে যাওয়া এক অসময়ের বীজ, যার দায় ভার কখনোই সেই পুরুষটি নিতে চায় না, কিন্তু মেয়েটি চায় তার সন্তানকে এই বিচিত্র পৃথিবী দেখাতে; তখন সেই মেয়েটিকে আশেপাশের সবাই কোন চোখে দেখে, পেটের মধ্যে বেড়ে ওঠা সন্তানের প্রতি সকলের কি মনোভাব হয়; কিভাবে তার অনাগত সন্তানের সমগ্র ভার তার কাঁধে এসে পরে, কিভাবে মা ও সন্তান একে অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে বেঁচে থাকে, সেই গল্পের নাম-ই— হাত বাড়িয়ে দাও। একা হওয়ার জন্য অনেক কষ্ট সহ্য করতে হবে জেনেও এই নারীটি সমগ্র পৃথিবীর বিপরীতে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে তার সন্তানের জন্য। হজম করে সকলের বাঁকা দৃষ্টি আর কঠিন কঠিন সব কথা। যেখানে একজন গর্ভবতী নারী সকলের নিকট থেকে অনেক শুভেচ্ছা, ভালবাসা ও সাহায্য পায় সেখানে তার সাথে কেউ ন্যূনতম ভাল ব্যাবহার টুকুও করে না! তবু নিজের সন্তানের জন্য সে সবকিছু মেনে তার পরের গল্প টা করুণ! অ্যালকোহলের মধ্যে ভাসতে থাকা একটা ডিম সদৃশ বস্তু, যেটা হতে পারত একটা মায়ের সবচেয়ে আদরের সন্তান, যেটা হতে পারত একজন অবিবাহিত মায়ের জীবন যুদ্ধের ঢাল! কিন্তু তা হয় নি, একটা ডিমের চেয়ে বড় কিছু সে হতে পারেনি। বুক রিভিউ: হাত বাড়িয়ে দাও অনুবাদ: আনু মুহাম্মদ মূল: ‘Letter To A Child Never Born’ by ‘Oriana Fallaci’ প্রকাশনী: সন্দেশ মলাট মূল্য: ৭৫ টাকা
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
এক মায়ের চিঠি যা তার গর্ভের সন্তানের জন্য। তার বাবা যিনি হতে চলেছেন তিনি আসলে সেই সন্তান চান না, তবে সেই মা সন্তান জন্ম দিতে চান। তার মা তাকে বলতে চায় পৃথিবীটা কেমন, তার জন্য উপযোগী নাকি অনুপযোগী।
Was this review helpful to you?
or
আপনি কখনো ভেবে দেখেছেন একজন মা ঠিক কবে মা হন? সন্তান আসার খবর কখন তার ইন্দ্রিয়কে ছাপিয়ে ভরে দেয় অনন্য অনুভুতি? আর সেই সন্তানের বাবা যদি তাকে না চায়? মা তখন কি করে! আসুন জেনে নিই কিছুটা #উপন্যাস_না_অনুভুতির_সারকথা__ মেয়েটা বুঝতে পারে বাড়ছে সে তার পেটের মাঝে। তার সমস্ত চেষ্টা কিভাবে তাকে আগলে রাখা যায়, সে তো কেবল একটা কয়েক মিলি সেন্টিমিটারের মাংশপিন্ড যার ভেতরে প্রাণ বাড়ছে সম্ভাবনার। মেয়েটা তার আগমনে খুব খুশি এবং রক্ষা করতে প্রস্তুত। কিন্তু সমাজ? একজন অবিবাহিতা মেয়ের সন্তানকে সমাজ কেন মানবে? মেয়েটার আশঙ্কা দানা বাধে কিন্তু আবার নিজে থেকেই সাহস জোগায়। ভেতরে একটা প্রাণ বাড়ছে যে তার সাথে সে বন্ধনে আবদ্ধ একদম নিবিড়ভাবে। মেয়েটা চুপ থাকে। কিন্তু সব কথা বলে বাচ্চাটাকে। বাচ্চাকে এসময় যদিও ভালো ভালো কথা শোনাতে হয় কিন্তু সে চায় মিথ্যের আঁচলে নয় সে সমাজের কড়া জিনিস জেনেই আসুক আর লড়ৃক সমাজের সাথে। মিথ্যে বিনয়ের চেয়ে কড়া কথার আচড় দাগ কাটে বেশি। মেয়েটা বাচ্চাটাকে তিনটা গল্প শোনায়। নিরাশা, দারিদ্র আর সমাজের ঘৃণ্য আচরণে নিষ্প্রেষিত মেয়ের গল্প শোনায় সে। তাকে শোনায় সেই যুদ্ধের গল্প! প্রাক পুরুষের কাপুরুষিতকতা আর অন্যয়ের গল্প শোনায়। একদিন তার বাবা এসে ভাব জমাতে চায় কিন্তু সে আসন্ন বিপটাকে জানিয়ে দেয় মেয়েটার পেটে নরম পায়ের প্রথম লাথিতে। তারপর? কি হয়ে গেল মেয়েটার? কেন এত অবহেলা বাচ্চাটার জন্য! শেষটাতে কি হলো বাচ্চাটার বা মেয়েটার? #বইটার_অভিনবত্ব ★ বইটা একটা পেটে থাকা বাচ্চার সাথে মায়ের কথোপকথনে নাটকীয়ভাবে গল্পের অগ্রসর হওয়া ★ পুরো বই তে কোনো চরিত্রের নাম বলা হয়নি। বেশ চমকপ্রদ একটা বিষয় ★ বইটাতে মোটামুটি ভ্রুণের পনিস্ফুটন নিয়ে বলা হয়ে, যেটা আমরা সচরাচর পড়ে থাকি জুলোজিতে। বইতে এরকম একটা সাধারণ বিষয়কে এতো চমকপ্রদ করে তোলেছেন যা আসলেই খুবই রেয়ার। ★ আরণ্যক পড়েছেন? সেটাকে যেমন রোজনামচা বলে সনাক্ত করেও করা যায় না, বইটাও ঠিক তেমন। এরকম ধাচ সচরাচর চোখে পড়ে না। ★ বইটাতে মেয়েটার চরিত্রে দ্বিচারি ভাব প্রকাশ পেয়েছে। কখনো খুবই যত্নশীল কখনোবা একেবারেই বেখেয়ালি কিন্তু সারকথা হলো মানবমনের ভাবটা কখনো এক থাকে না। পরিবর্তনই প্রকৃতির নিয়ম বিষয়টা বেশ ফলাও করে বুঝিয়ে দিয়েছেন। #অনুবাদ_প্রসঙ্গে_ অনুবাদটা ভালো ছিল। আর আমি সেটা জোর দিয়েই বলছি। আমি সচরাচর অনুবাদ পড়ি না যদি না সেটা মাণসম্মত হয়। এটার অনুবাদটা বেশ ভালো ছিল। কিছু জায়টা আরেকটকু সারানো যেত অবশ্য। অনুবাদক প্লাসেন্টা বা অমরা বা ভ্রুণথলি যেটাকে বলে আরতি সেটার অনুবাদে ডিম বলেছেন :/ বেশ কয়েকবার। জিনিসটা হাস্যকর এবং বেশ উদ্ভটও। বাকি সব ঠিক ছিল। #মতামত___ বইটার গভীরত্ব নিয়ে বলার সাধ্য আমার নেই। কিন্তু একজন পাঠক হিসেবে আমি মাতৃ মনের সন্তানের নিয়ে যে ভাবটা থাকে সেটা পেয়েছি। পুরো গল্পের ভাষা খুবই সাবলীল। বইটা পড়ে আমার মনে হয়েছে আসলেই সমাজ ঠিক এমনি। পরিণতি খুবই ভালো। কাহিনী প্রবাহ অনবদ্য। গল্পের কিছু জায়গাতে আমি এতো বেশি আভিভুত যে তার রেশ এখনো লেগে আছে। এটা ঠিক উপন্যাস নয় বলা যায় বড় গল্প... মাত্র ৫৫ পেইজের বইটাতে ভাবের প্রগাঢ়তা দেখা যায়। না পড়লে সেই পাঠোরস যেন তৃষ্ণায় কাঁদবে... অতএব পড়ুন।
Was this review helpful to you?
or
বইটা যখন পড়া শেষ করছি। তখন কয়েকটা প্রশ্ন জাগলো মনে। ইতালিতে লেখিকার জন্ম।যে ইতালি রেনেসার জন্ম দিত। লেখিকা আবার কুমারি মাতা। সে কেনইবা আবার ইউরোপীয়া সভ্যতার শেখানো বুলি স্বাধীনতার মত শব্দ কে বিশ্বাসঘাতক বলে। কুমারী মা হিসাবে লেখিকাকে তার জাতির লোকেরা ঘৃণা করে। এই সভ্যতার লোকেরাই কি নারী সমাজের অধিকারের কথা বলে বেড়ায় । লেখিকা নিজেই যখন তার সমাজ সম্পর্কে হতাশ। লেখিকার দুর্দিনে কেউ সহমত পোষণ করেনি । তার বয় ফ্রেন্ড , বস ও সমাজ বলেছে তোমার সন্তানকে গর্ভপাত করাও। একটা মেয়ের জীবনে যেখানে মা হওয়া গর্বের তার সমাজে ঠিক এর বিপরীত ।
Was this review helpful to you?
or
ইতালিয়ান সাংবাদিক ও সাহিত্যিক ওরিয়ানা ফাল্লাচির বিখ্যাত গন্থ 'লেটার টু এ চাইল্ড নেভার বর্ন' এর অনুবাদ হাত পাড়িয়ে দাও। অনুবাদ করেছেন আনু মুহাম্মদ যার সারাংশ - একজন নারী যার শরীরে প্রথম প্রাণের স্পন্দন ঘটে, সেই নারী নতুন শিশুর আগমনী বার্তা শুনেছেন। সজাগ ব্যক্তি হিসেবে তিনি নিজের দায়িত্ব নিয়ে দ্বিধাগ্রস্থ। ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অপমান, বঞ্চনা, কপটতাপূর্ণ এই পৃথিবীতে একজন মানুষ নিয়ে আসা কি ঠিক? মানুষ জন্মের প্রক্রিয়াও এক সংগ্রামের মত। তাকে অনেক প্রতিকূলতা পেরুতে হয়। আমরা কেউ তার বাইরে নই। এই দ্বিধার ক্ষেত্র সৃষ্টি করেছে এই পৃথিবী। এই ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে পুরনো মানুষের সৃষ্ট নিয়মবিধি সম্বলিত ব্যবস্থাবলীতে। এ সমস্যা শুধু একজন নারীর নয়। সমস্যা সর্বজনীন। মানুষের। তবে নারী-পুরুষ যার সমান নয় অসমান অংশীদার।
Was this review helpful to you?
or
LIVE FEEL
Was this review helpful to you?
or
এক মা আর এক ভ্রুণের উপাখ্যান বর্ণিত হয়েছে এই উপন্যাসে। বিশেষত এক মেয়ের গল্প যার পেটে ভালবাসার মানুষটির বীজ যে ভালবাসার মানুষটি বীজ বুনেই ছুট দিয়েছে। মাতৃত্বের বার্তা যতটা না তাকে সুখী করে তুলছে তার চেয়ে বরং দুশ্চিন্তায় ভুগছে সে তার জরায়ুতে বড় হতে থাকা মানবভ্রুণকে নিয়ে। উনি চিন্তা করছেন তার শিশুটিকে এই জরাগ্রস্ত, নির্মম, হানাহানিপূর্ণ, বিশ্বাসঘাতকে ঠাসা পৃথিবীতে আনা উচিত কিনা সেটা নিয়ে। উপন্যাসের শুরুটাই হয়েছে এই শঙ্কা নিয়ে- “গত রাতেই প্রথম টের পেলাম তুমি আছ-অসীম এক শূন্যতা থেকে আসা একটি ছোট জীবনবিন্দুর মতো। তোমার অস্তিত্বের এই আকস্মিক ঘোষণা আমাকে অভিভূত করল, বিস্মিত করল এবং বিদ্ধ করল একটি বুলেটের মতো।এক অজানা ভীতি আমার সারা শরীরে, সমগ্র সত্তায়। অন্যদের জন্যে এই ভয় নয়-আমি কাউকে পাত্তা দেই না। ঈশ্বরের ভয়ও নয়। ঈশ্বরে আমার কোনো বিশ্বাস নেই। ব্যথার জন্যে আমার কোনো ভয় নেই। ভয় তোমার জন্যে। যেখানে এবং যেভাবে আসছ তার জন্যে তোমাকে স্বাগত জানানোর আগ্রহ আমার কোনোকালেই ছিল না। কিন্তু জানতাম যে একদিন-না-একদিন তুমি আসবেই। আমার ভয়, যদি কোনোদিন তুমি চিৎকার করে প্রশ্ন করো- কেন তুমি আমাকে এই পৃথিবীতে নিয়ে এলে? কেন? কে বলেছিল তোমাকে? ” একজন মা কীভাবে ঠেলে দিতে পারে তার সন্তানকে এই নষ্ট আর ভ্রষ্টদের রাজ্যে? তাই তিনি চাইছেন না তার সন্তান আসুক এই রাহুগ্রস্ত পৃথিবীতে। আবার সাথেসাথেই এক অপরাধবোধে ভুগছে। ভাবছে এই পৃথিবীতে অন্ততপক্ষে হাত-পা ছুঁড়ে কান্নাকাটি করার অধিকার তো এই সদ্য পরিপূর্ণ হতে থাকা ভ্রুণটিরও আছে তাহলে কেন তাকে ভেতরে ভেতরেই শেষ করে দিবে! এই দু’টানায় পড়ে গেছে তার মন। প্রতিদিন একটু একটু করে পরিপূর্ণ হতে থাকা ভ্রুণটির সাথে কথা বলে সমাজ-সংসার এবং সেখানে রাজত্ব করা আর শোষিত হওয়া মানুষদের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। তিনি ‘চিন্তার সঙ্গী’ বানিয়েছেন সেই ভ্রুণটাকে এবং জিজ্ঞেস করছেন তার ‘চিন্তার সঙ্গী’ কে – ‘তুমি কি হবে- ছেলে নাকি মেয়ে?’ তারপর একটু একটু করে ব্যাখ্যা করে যাচ্ছে মেয়ে হলে কী কী শোষণ, বঞ্চনা, নির্মমতা আর অবহেলার ভেতর দিয়ে যেতে হবে। কিন্তু উনি এইটাও চাচ্ছেন যাতে সে মেয়ে হোক আর তার মত করে সবকিছুর মধ্য দিয়ে অগ্রসর হোক যা কিছুর মধ্য দিয়ে উনি গিয়েছেন। অপরদিকে উনি বলছেন নারী মহীয়সী, নারীর জীবন অ্যাডভেঞ্চারপূর্ণ। “আর একই কারণে নারীর জীবন এক ধরনের অ্যাডভেঞ্চার, যেখানে সাহসের প্রয়োজন আছে এবং যাতে কখনোই একঘেয়েমি আসে না। ” তিনি পুরুষ এবং নারীর মধ্যেকার বৈষম্যকে কটাক্ষ করে বলছেন- “পৌরাণিক উপাখ্যান বলে – জীবন ব্যাখ্যা করার জন্যে প্রথম পুরুষই সৃষ্টি হয়েছিল। প্রথম মানব হচ্ছে একজন পুরুষ- অ্যাডাম। ইভ এসেছে পরে- তাকে আনন্দ দেয়ার জন্যে এবং সমস্যা সৃষ্টির জন্যে। গির্জায় যে চিত্র ঝুলানো থাকে সেখানেও ঈশ্বর একজন শাদা শ্মশ্রুমণ্ডিত বৃদ্ধ-কখনোই শ্বেতশুভ্র চুলশোভিত বৃদ্ধা নয়। এবং উপাখ্যানের সব নায়কই হচ্ছে পুরুষ- আগুনের আবিষ্কারক প্রমিথিউস থেকে শুরু করে যাকে আমরা ঈশ্বরের পুত্র বলি সেই যিশু পর্যন্ত। ” উনি আবার বলছেন – “যদি তুমি ছেলে হয়ে জন্মাও তবুও আমার কোন দুঃখ থাকবে না। তবে তোমার ঝামেলা তাতে অনেক কম হবে। অন্ধকার রাস্তায় ধর্ষিতা হবার ভয় থাকবে না। প্রয়োজন হবে না বুদ্ধিবৃত্তি ঢেকে মসৃণ শরীর বানানোর। নিজের পছন্দমতো কারো সাথে শুলে কোনো বাজে কথা শুনতে হবে না তোমার। মানুষ কখনোই বলবে না, যেদিন তুমি একটি নিষিদ্ধ ফল তুলে নিয়েছ সেদিন থেকেই তোমার মধ্যে পাপ ঢুকেছে। জীবন সংগ্রাম হয়তো অনেক সহজতর হবে। তুমি তখন প্রয়োজনীয় অবাধ্যতার জন্য অপমানের শিকার হবে না, ভালোবাসার ‘দায়’ হিসেবে গর্ভধারণের ভয় থাকবে না। ” কিন্তু ছেলে হয়ে জন্মালেই যে সব অনাচার, অবিচার আর দায়িত্বকে বুড়ো আঙুল দেখানো যাবে এমনটা নয় বরং ছেলে হয়ে জন্মালেই দায়িত্বের বোঝাটা বড্ড ভারী হয়। কিছু অতিরিক্ত দায়িত্বও তখন যোগ হয়। তিনি ‘পুরুষ’ শব্দটাকে ব্যাখ্যা করছেন এইভাবে– “একজন পুরুষ মানে সম্মুখভাগে লেজবিশিষ্ট একটি মানুষ নয়-একজন পুরুষ মানে একজন ব্যক্তি। ” ব্যক্তি শব্দটিকে তিনি এই কারণেই ব্যবহার করেছেন কারণ ব্যক্তি শব্দটিতে কোন পুরুষ বা নারীর ভেদাভেদ নেই। সুতরাং পুরুষ মানে একটা সত্তাকেই প্রাধান্য দিতে চাচ্ছেন। কোন লিঙ্গান্তরের মারপ্যাঁচে ফেলতে চাচ্ছেন না। ভীতি নামক ঘৃণ্য বিশেষণকে ঝেড়ে ফেলে দিতে বলছেন কারণ “এই ভীতি মানুষকে মানুষ হতে দেয় না, কুরে কুরে খায়”। তার ভালবাসার মানুষটি অল্প অল্প করে বেড়ে ওঠা ভ্রুণটিকে নষ্ট করে ফেলতে বলে কিন্তু উনি করেননি। তারচেয়ে বরং বয়ে নিয়ে গেছেন। বসের চোখ, বন্ধুর খটখটানি আর সামাজিক মানুষের কানাঘোষা সবকিছুকে পরোয়া না করে স্বপ্ন দেখে পৃথিবীর মুখ দেখানোর। শুরু হয় তার সমাজ-সংকার, রীতি-নীতি আর বাস্তবতার বিরুদ্ধে নিঃশব্দ যুদ্ধের। ভালবাসার মানুষটির এমন কদর্য রূপ দেখার পর ‘ভালবাসা’ জিনিসটা যে কি সেটা নিয়েই উনি বিভ্রান্ত হয়ে গেছেন। ভালবাসার কোন সংজ্ঞায়ন করতে পারছেন না। “আমি এখনও বুঝি না ভালোবাসা কী? এখন মনে হয় এটি একটি বড় ধরণের তামাশা, যা মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্যে, অশান্ত পৃথিবীতে তাকে শান্ত রাখার জন্যে উদ্ভাবিত হয়েছে। সর্বত্র শুনি ভালোবাসার কথা-ধর্ম, বিজ্ঞাপন, সাহিত্য, রাজনীতি কোথাও বাদ নেই। প্রত্যেকেই সব দুঃখের সর্বরোগের ওষুধ হিসেবে ভালোবাসাকে দাঁড় করিয়ে মানুষের দেহ এবং আত্মা উভয়ের সঙ্গেই প্রতারণা করছে। আমি এই শব্দকেই এখন ঘৃণা করি। ” ডাক্তার যখন বলছেন- “কংগ্রাচুলেশনস ম্যাডাম” তখন তিনি প্রত্যুত্তরে বলছেন- “না, মিস”। মানে উনি বিবাহিত নন। সাথে সাথেই ডাক্তারের হাস্যোজ্বল মুখটা চুপসে যায় আর শেষপর্যন্ত সকল আনুষ্ঠানিকতা বাক্সবন্দী করে ফেলে। এমনকি ‘গুডবাই’ বলার প্রয়োজনটা পর্যন্ত বোধ করে না যেন আপদটা গেলেই বাঁচে। তারপর তিনি একে একে তিনটি গল্প শুনান যার সাথে তার অবহেলিত ও বঞ্চিত জীবন প্রবলভাবে সম্পর্কিত। যার ফলে উনি ভাবতে শুরু করেছিলেন যে, ফুল ছিঁড়লেই মানুষ মারা যায়। আর চকোলেটের প্রতি তার বিতৃষ্ণা জন্মে আমৃত্যু এবং বুঝতে শুরু করে যে তার প্রত্যাশিত আগামীকাল শুধুই স্বপ্ন। তাই তিনি প্রশ্ন করছেন- “তুমি কি ফুলগাছের মাথায় মৃত নারীদেহ দেখতে রাজি আছ? যাদের প্রয়োজন নেই তাদের উপর চকোলেটের ঢল দেখতে রাজি আছ? অন্যের নোংরা আন্ডারওয়্যার ধুতে রাজি আছ? এবং প্রতিবার উপলব্ধি করতে রাজি আছ যে, তোমার প্রত্যাশিত আগামীকাল শুধুই স্বপ্ন? ” সেই ভ্রুণটি কি আদৌ মুখ দেখেছিল ভোরের সূর্য আর ঘুটঘুটে অন্ধকারের? সে কি কোন পূর্ণিমার চাঁদ দেখে মুগ্ধ হয়েছিল কোনদিন? সে কি কখনো জ্যোৎস্না ধারায় মাতাল হয়েছিল? সে কি কখনো উন্মাদ নৃত্য করেছিল বর্ষার বারি ধারায়? সে না হয় পাঠক নিজ দায়িত্বে জেনে নেবেন।
Was this review helpful to you?
or
জীবনের পরিপ্রেক্ষিতেই সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা অকৃত্রিম।নতুন প্রান জন্মদানেরগৌরব,আনন্দের অনুভূতি অতুলনীয়।সেই সাথে চাওয়াও থাকে সন্তানের জন্য নিরাপদ,স্বচ্ছল,সৃজনশীল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার।এ আকাঙ্খা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি থেকেই।মানুষ নামের শব্দটির প্রতি সুবিচারের আশা থেকেই। এই বইয়ে একজন মা তাঁর অনাগত সন্তানকে উদ্দেশ্য করে বলে গেছেন জীবনের কথা,কঠিন কঠোর বাস্তবতার কথা।বলে গেছেন মানবসৃষ্ট সমাজের নিয়মের বেড়াজালের কথা।ভারসাম্যহীন সেই সমাজের অন্ধকারে মানুষের স্বাধীনতা নামক আকাঙ্খাকে হারিয়ে ফেলার কথা।নিরন্তর বয়ে চলা জীবন স্রোতের গতিতে মানুষ নামক শ্রেষ্ঠ প্রাণীর অস্তিত্বের নৌকা বেয়েচলার কথা।শুনিয়ে গেছেন হৃদয় আর মস্তিস্কের অনুশাসিত হবার গল্প।আবেগ ,চিন্তা ভাবনাকে নির্দিষ্ট ব্যাসার্ধে আবদ্ধ করে ফেলার প্রক্রিয়ার গল্প। এই আমাদের জীবন।উন্নতির পিছে ছুটে চলতে গিয়ে আকাক্ষিত অনুভূতিগুলোকে হারিয়ে ফেলা। তারপর ও সুড়ঙ্গের শেষ মাথায় আলোর প্রত্যাশার মতই সুন্দর আগামীকালের স্বপ্নে বিভোর হয়ে কালযাপন করা।কে জানে?হয়তো, আলো আসবেই! লেখক এখানে তার গল্পগুলোকে আপন রচনাশৈলীতে ফুটিয়ে তুলেছেন, যা সবার জীবনের সাথেই মিলানো যায়। শৈশব, কৈশোর, প্রণয় থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ের আলোচিত সমালোচিত অনেক ঘটনা যা সম্পৃক্ত হয়েছে লেখকের জীবনে এমন কোন কিছুই বাদ পড়েনি এ বইতে। এ বইয়ের গল্পগুলো যেমন বিভিন্ন রসের, ঠিক তেমনিভাবে এ গল্পগুলো সহজেই আলোকপাত করে আবহমান কাল ধরে চলতে থাকা আমাদের সমাজ ব্যবস্থারও। প্রতিটি গল্পের হাস্য, রস, কৌতুক আর বিচ্ছেদ-বেদনার আড়ালে লুকিয়ে আছে আমাদের বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি।