User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
গ্রেট ছফা। সেরা একটা সৃষ্টি। ছফা সব সময় অন্য রকম।
Was this review helpful to you?
or
A legendary book indeed
Was this review helpful to you?
or
প্রথীতযশা লেখকদের মধ্যে অন্যতম আহমদ ছফার দুর্দান্ত লেখনীর এই বইটিতে আমি বেশ আনন্দ পাই। মাঝে মাঝেই পড়া হয়। তবে, সন্দেশের বইতে বরাবরের মতই বানান ভুলে একাকার, যেটা আমার মতো ক্ষুদ্র পাঠকদের জন্যে বিভ্রান্তি এবং বিরক্তির কারণ।
Was this review helpful to you?
or
যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অতীতে পুরো দেশের আত্মা হিসেবে বিবেচনা করা হত, আজ সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা স্তরে নানান রকম প্রেতাত্মা ভর করেছে। লেখকের ভাষায়, মাছের পচন যেমন মস্তক থেকে শুরু হয়, তেমনি যাবতীয় অসুখের জীবাণু শিক্ষকদের চিন্তা চেতনায় সুন্দরভাবে স্থান করে নিয়েছে। এখানে শিক্ষকসমাজ বলতে কিছু নেই। আছে হলুদ, ডোরাকাটা,বেগুনি এসব দল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতির মারপ্যাঁচে মিয়া মুহাম্মদ আবু জুনায়েদ উপাচার্যের পদে আসীন হন। আবু জুনায়েদ নিতান্তই গোবেচারা আর শত্রুহীন মানুষ ছিলেন। তিনি ছিলেন ডোরাকাটা দলের নীরব সমর্থক। স্ত্রী নুরুন্নাহার বানু থেকে শুরু করে সহকর্মী দিলরুবা খানম সবাই আবু জুনায়েদের উপাচার্য হওয়ার ক্রেডিট নিতে কার্পণ্য করলেন না। অবশ্য দিলরুবা খানমের বিশেষ কৃতিত্ব তিনি আবু জুনায়দের নাম প্রার্থী হিসেবে লিখে দিয়েছিলেন। আমাদের সমাজে একশ্রেণীর মানুষ রয়েছেন যারা অন্যকে আঘাত না দিয়ে কথা বলতে পারেন না। নুরুন্ননাহার বানুও সেই গোত্রের। উপাচার্য ভবনের বাসিন্দা হওয়ার আগে তিনি স্বামীকে যেভাবে হেনস্তা করতেন ,সেই ধারা তিনি অব্যাহত রাখতে চেয়েছিলেন কিন্তু পারেননি। উপাচার্য হওয়ার পর আবু জুনায়েদের মনে বহুদিনের পুরানো খায়েশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠে আর সেটা হল গাইগরু পোষা। আর এই শখ পূরণে আবু জুনায়েদকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকাদার তবারক আলী। তবারক আলী গরু সরবরাহের পাশাপাশি একটা গোয়ালঘরও তৈরি করে দেন। সেই গোয়ালঘরে নুরুন্নাহার বানু একদিন মেয়ে দিলু আর তবারক আলীর জামাতাকে হাতে-নাতে ধরেন। তবারক আলীর সাথে পারিবারিক সম্পর্ক থাকায় মেয়ের এমন কর্মকাণ্ড নুরুন্নাহার বানুর কাছে আরও বেশি বিষাক্ত হয়ে উঠে। নুরুন্নাহারের ইচ্ছে হয়, তবারক আলীর সব উপহার ফেলে দিত কিন্তু পারেন না । লেখকের ভাষায়, নারীর হৃদয় বড় বেশি সোনার বশীভূত। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ব-ঘোষিত নাস্তিক শিক্ষক ডঃ আহমদ তকির বাসার সামনে আড্ডা বসলেও একসময় আবু জুনায়েদের গোয়ালঘরের উত্তর শেডের সান্ধ্যকালীন আড্ডাও বেশ জমে উঠে। দলীয় পরিচয়হীন নানা শিক্ষক যখন নানান স্বার্থে গোয়ালঘরের আড্ডায় নিয়মিত হাজিরা দিতে থাকেন তখন আবু জুনায়েদের মাথায় নতুন শিক্ষক দল গঠনের বুদ্ধি আসে। গরু আর গোয়ালঘর নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা অরুচিকর গুজব ছড়িয়ে পড়ে। “উপাচার্য নাকি গো আচার্য” এই শিরোনামের একটা লিফলেটেও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। গোয়ালঘরের আড্ডার শিক্ষকরাও কেন বসে থাকবেন । তারা “মাননীয় উপাচার্যঃ বৈপ্লবিক দৃষ্টিভঙ্গি” শিরোনামে পাল্টা লিফলেট বিলি করেন। সময়ের পরিক্রমায় গোয়ালঘর হয়ে উঠে আবু জুনায়েদের ক্ষমতা চর্চার কেন্দ্রবিন্দু। যে সহকর্মীরা একসময় তাকে নানাভাবে হেনস্তা করেছেন আজ তারাই গোয়ালঘরে ধর্না দিচ্ছেন। এজন্য তিনি গাভীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ।কারণ গাভী না থাকলে গোয়ালঘরও হত না।আর গোয়ালঘর না হলে ,আড্ডা হত না। এদিকে গাভীর কল্যাণে আবু জুনায়েদের ভাগ্য যতই সুপ্রসন্ন হোক না কেন, তার উল্টো ঘটনা ঘটতে থাকে নুরুন্নাহার বানুর জীবনে। আবু জুনায়েদের সাথে গাভীর সম্পর্কের রসায়নে নুরুন্নাহার নিজেকে অপাঙ্খতেয় ভাবেন । নুরুন্নাহার স্থির করেন, গাভীটিকে বিষ খাইয়ে মারবেন। গাভীটি মারা যাওয়ার আবু জুনায়েদের কি অবস্থা হবে সেটা চিন্তা করে কিছুটা বিকৃত আনন্দও অনুভব করছেন। অবশেষে গাভীটির যখন ছয় মাস চলছে নুরুন্নাহারের সেই সুযোগ আসলো। আবু জুনায়েদের অনুপস্থিতির সুযোগে জাউয়ের গামলার মধ্যে গুড়ো মিশিয়ে দিলেন। এদিকে আবু জুনায়েদ নরসিংদী থেকে এসে দেখতে পান গাভী অসুস্থ। দারোয়ানের কাছে জানতে পারেন, গাভী সকাল থেকে পাতলা পায়খানা করছে। পশু হাসপাতালের অভিজ্ঞ চিকিৎসক এসেও প্রতিকার করতে পারলেন না। আবু জুনায়েদ ভগ্ন হৃদয়ে স্ত্রীর কাছে যায়। আমেরিকায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য প্রদান করে বিরাশি লক্ষ টাকার মত সম্মানী পাওয়া যাবে। স্ত্রীকে এই সংবাদ দেওয়ার পর নুরুন্নাহার বলে উঠেন, খুবই উত্তম সংবাদ।তুমি বিরাশি লক্ষ টাকা পাবে।এই টাকাটা তোমার দরকার হবে। গাভী প্রেমিকার কবরের উপরে তুমি তো তাজমহল বানাবে। শুনে রাখো তোমার প্রেমিকাটি আজ রাতে কিনবা কাল সকালে মারা যাবে এবং আমিই ওকে খুন করেছি। এই উপন্যাসটির মাধ্যমে আহমদ ছফা বিশ্ববিদ্যালয়ের রুগ্ন অবস্থা তুলে ধরেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গবেষণার চেয়ে দলীয় রাজনীতির চর্চায় বেশি ব্যস্ত। উপন্যাসটির রচনার সময়কাল নব্বইদশক হলেও তা আজও প্রাসঙ্গিক।
Was this review helpful to you?
or
এটি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম একটা বই। আমার মতে এটি একটি মাস্ট রিড বই।
Was this review helpful to you?
or
মোটামুটি মনের বই। লোকজনের মুখে যেমন সুনাম শুনেছিলাম তেমন আহামরি কোনো কিছু না।
Was this review helpful to you?
or
khub e chomotkar boi
Was this review helpful to you?
or
Sharp writing. একটা ক্ষয়ে যাওয়া সমাজের প্রতিচ্ছবি অত্যন্ত ধারালভাবে একই সাথে রসাল ভাব রেখে তুলে ধরেছেন।
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
nice
Was this review helpful to you?
or
good one.
Was this review helpful to you?
or
বর্তমান প্রেক্ষাপটে দারুণ একটা বই
Was this review helpful to you?
or
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের রাজনীতিকে ব্যাঙ্গ করে লেখা হয়েছে বইটি। চমৎকার ভাবে সত্যকে তুলে ধরেছেন লেখক
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন
Was this review helpful to you?
or
অনেক সুন্দর অনেক ভালো লাগলো অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
বেশ ভাল যা আশা করেছিলাম তার থেকেও
Was this review helpful to you?
or
সুন্দর হয়েছে
Was this review helpful to you?
or
Please check the books before sending them to us.
Was this review helpful to you?
or
Nice
Was this review helpful to you?
or
Good Book! Please Read it.
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
Valo boi
Was this review helpful to you?
or
Such an amazing book it is!
Was this review helpful to you?
or
Outstanding
Was this review helpful to you?
or
ওনার মতো লেখক বাংলাদেশে অনেক কম আছে। অন্যান্য বইয়ের মত এই বইটি ও অনেক ভালো এবং অনেক তথ্যের সমাহার ছিল। বইটি কিনে পড়ার অনুরোধ রইলো ।
Was this review helpful to you?
or
বুদ্ধিজীবীরা যে তেলবাজি, চাটুকারিতার মাধ্যমে ক্ষমতার সংস্পর্শে থাকতে চান আহমদ ছফা সেটা বেশ ভালোভাবেই ফুটিয়ে তুলছেন।
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
বইগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো,
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
notun kisu janlam novel akare. R real life er character er sathe mil perlam.
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
খুব ভালো একটা বই বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতি বিষয়ক। ধন্যবাদ রকমারিকে।
Was this review helpful to you?
or
nice book
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার একটি বই! লেখক মূল্যবোধহীন একটি সম্প্রদায় কীভাবে মূল্যহীন বস্তুকে মূল্যবান মনে করছেন, তারই চিত্র তুলে ধরেন।
Was this review helpful to you?
or
দারুণ
Was this review helpful to you?
or
gd
Was this review helpful to you?
or
good behave
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ লেখনী! সব কিছুই ঠিক চলছিলো, তবে শেষের দিকটা একটু confusing! কেমন যেনো হঠাৎ করেই গল্পটা শেষ হয়ে গেলো! কিন্তু তবুও সম্পূর্ণ গল্পটিতে বেশ ভালো কাহিনী রয়েছে!
Was this review helpful to you?
or
good book
Was this review helpful to you?
or
আহমদ ছফা স্যারের অসাধারণ একটি বই
Was this review helpful to you?
or
কত সুন্দর করে সমালোচনা করা যায় এই বইটি তার অনন্য উপমা ৷ একটি জাতির অগ্রগতির জন্য সমালোচনা খুবই জরুরি বিষয় ৷ সেই সমালোচনা আমলে নিয়ে কর্মপদ্ধতি পরিচালনা করলেই একটি জাতি উন্নত হতে পারে ৷
Was this review helpful to you?
or
Ok
Was this review helpful to you?
or
এই বই টি বাঙালি সমাজের দর্পনই বলা যায়
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার বই!
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার
Was this review helpful to you?
or
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর শিক্ষা ব্যাবস্থার আসংগতিগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছেন লেখক বিভিন্ন তুচ্ছ ঘটনা দিয়ে. আমাদের সব শিক্ষকদের উচিত বইটি পড়া!
Was this review helpful to you?
or
পড়ুন
Was this review helpful to you?
or
Ok
Was this review helpful to you?
or
একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম দু্র্নীতি সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে উপন্যাসটি অবশ্য পাঠ্য।মাস্টারপিস ফ্রম আহমদ ছফা ?????????????????????????????????
Was this review helpful to you?
or
অসম্ভব সুন্দর বই
Was this review helpful to you?
or
.
Was this review helpful to you?
or
কী বলবো? ২০২১ সালেও লেখাটা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক! খবরে কাগজে মাত্র পড়লাম কোন বিশ্ববিদ্যালয় নাকী অত্যন্ত উত্তাল!
Was this review helpful to you?
or
আহমদ ছফা সেই ১৯৯৪-৯৫ সালে মাত্র ২ মাস ১০ দিনে ৬ মাসের গর্ভবতী একটি গাভীর, যার বাবা অস্ট্রেলীয় আর মা সুইডিশ আর মালিক এদেশীয় অক্সফোর্ড এর ১ নম্বর ব্যক্তি, বিত্তান্ত লিখে গেছেন। কিন্তু তার রেশ মানে গাভীটির মালিকের কল্পনার রাজ্যে স্থাপিত তাজমহলের ভর যেন আমাদের অক্সফোর্ডে রয়েই গেছে। প্রকৃতপক্ষে তিনি তথাকথিত ক্ষমতাবান ও তাদের দোসরদের কাছা খুলে দিয়েছেন। আবু জুনায়েদের বউ নুরুন্নাহার বানু গাভীটিকে সাক্ষাত সতীন ভাবতো। তাই পরিকল্পনামত বিষ খাইয়ে সতীনকে মারার বন্দোবস্ত করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে দৃশ্য-অদৃশ্য হাজারো আবু জুনায়েদের লাভের গাভীগুলোতো বিশ্ববিদ্যালয়েরও সতীন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় তো নিজে নিজেই বানুর মত অসহনীয় অপমান, লাঞ্ছনা, অবজ্ঞা, অবহেলার কারনে সেই সব আবু জুনায়েদদের গাভীগুলোর মুখে প্রতিবাদ স্বরূপ বিষ ঢেলে দিতে পারে না। ডোরাকাটা, নীল, বেগুনি দলের ছাত্র ও শিক্ষকরাও একেকটা আবু জুনায়েদের পাতানো চাচা শ্বশুর তবারক আর পাতানো ভায়রা আবেদর প্রতিরূপ যারা সাধারণ ছাত্রদেরকে দিলুর মত ভোগ করে তবারকের কন্যা ও বানুর মত শোষণ করে। ছফা একজন আবু জুনায়েদের গল্প শুরু করে অসংখ্য আবু জুনায়েদ, তাদের চরিত্র, লোভ, হিংসা, পরশ্রীকাতরতা, পড়ানোর অনিহা, দ্বিচারিতা, দুর্নীতি তুলে এনেছেন তার উপন্যাস "গাভী বিত্তান্ত" এ। আমাদের অক্সফোর্ড এর কর্তাদের কর্ম, ছাত্র শিক্ষকদের ধর্ম, রাজনীতিকদের আচরণ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, এমনকি শিক্ষক কর্মচারীদের আবাসিক এলাকার গৃহিণীদের কথাও আছে উপন্যাসটিতে। পড়তে গিয়ে মনে হচ্ছিল এটা আমার বিশ্ববিদ্যালয়েরই কথা। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়গুলোর স্মৃতি মনে পড়ছিল আর জলজ্যান্ত আবু জুনায়েদদের চোখের সামনে দেখছিলাম। মনে হচ্ছিল আমার সামনেই হচ্ছে এসব কিছু। এখনো পত্রিকার পাতায় তাই দেখি যা আমাদের সময় দেখেছিলাম আর গাভী বিত্তান্ত পরতে পরতে কল্পনায় ভাসছিল। হয়ত আমাদের অক্সফোর্ড একদিন সত্যিকারের অক্সফোর্ডকেও ছাড়িয়ে যাবে। সেদিন এই উপন্যাসের পাঠকরা ভাববে ছফা হয়তো কল্পনার রঙ মিশিয়ে মঙ্গল গ্রহের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু জুনয়াদদের গল্প বলছেন।
Was this review helpful to you?
or
Brilliant satire
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
আহমদ সফা আমাদের দেশের একজন উচু দরের চিন্তাবিদ ছিলেন। তার রেখে যাওয়া অসাধারণ কিছু কাজের মাঝে গাভী বৃত্তান্ত একটি, ততকালীন চলমান রাজনৈতিক সংকটাপন্ন পরিস্থিতির যে ব্যঙ্গ ধর্মী বর্ননা আহমদ সফা তুলে ধরেছেন এতে তা সত্যিই অতুলনীয়। রকমারি খুব সহজে খুব তাড়াতাড়ি পেতে সাহায্য করেছে।
Was this review helpful to you?
or
পাঠ-প্রতিক্রিয়াঃ গাভী বিত্তান্ত---আহমদ ছফা "গাভী বিত্তান্ত" নাম শুনেই মনে হবে হরেক রকম গাভী নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।কোন জাতের গাভী কত বেশি দুধ দেয় কিংবা কতো বেশি মাংশ দেয়। কিন্তু, পড়ার পর একটি বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে চলছে সেটার বাস্তবচিত্র কিছুটা হলেও জানা যাবা।লেখক হাস্য রসাত্মক কাহিনি দিয়ে মূলত বাস্তবতাকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। ★বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্তব্য কী? পাঠদান,গবেষনা কিংবা এমন উৎপাদনমুখী কোনো কাজে জড়িত থাকা।অথচ বাস্তবতা হলো তারা নোংরা রাজনীতির সাথে জড়িত।তারা স্বার্থের নিমিত্তে অযোগ্য ব্যক্তিকেও দায়িত্ব বসাতে পারেন।যা আবু জুনাঈদের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন। আরো দেখা যায়,দলীয় অন্ধ রাজনীতির কারণে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ভালো কাজ করলেও বিরোধী দলীয় সদস্যরা সেটার নেতিবাচক ব্যাখ্যা প্রচার করতে বিন্দু মাত্র কসুর করেন না। অন্যদিকে নেতিবাচক দিকগুলো দলীয় সদস্যরা ইতিবাচক প্রচারণা করতে ভালোবাসেন। লেখক অত্যন্ত তীক্ষ্ণতার সাথে এগুলো দেখিয়েছেন। ★তোষামুদে কিছু মানুষ জীবনের প্রতিক্ষেত্রে দেখা যায়।যারা ব্যক্তিসুবিধা অর্জনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির তেলবাজিতে মগ্ন থাকেন।হয়তো দলীয় স্বার্থের কারণে সবার সামনে নেতিবাচক সমালোচনা করেন। কিন্তু একান্তে নিভৃতে তেলবাজিতে কম যান না তারা। লেখক চতুরতার সাথে এসব মানুষের ও পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন আমাদের। ★বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে উপন্যাসে।তুচ্ছ কারণে আন্দোলন করা,ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা কিংবা গ্যাস বিদ্যুতের জন্য উপাচার্যের বাসভবন ভাংচুর করা প্রভৃতি ও উল্লেখ করেছেন লেখক। রাজনীতির শিকার গ্রামের ছেলেমেয়ে গুলোর অবস্থা দেখিয়েছেন।কীভাবে নষ্ট হয় তাদের স্বপ্ন গুলো,তারা কীভাবে বলির পাঠা হয় সেগুলো অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। সর্বোপরি,উপন্যাসটি পড়ার সময় যেমন আনন্দ পাওয়া যাবে তেমনি বিশ্ববিদ্যালয় পাড়ার হাঁড়ির খবর ও জানা যাবে।পড়ার সময় মনে হবে লেখক বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়েই লিখেছেন। সচেতন এবং ভাবুক ধরণের পাঠক অবশ্যই পড়তে পারেন বইটি।
Was this review helpful to you?
or
‘গাভী বৃত্তান্ত’ উপন্যাসে দেশের সবচেয়ে পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের গাভী পালনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বাস্তবতা উন্মোচিত হয়েছে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ ও হাস্যরসের মধ্য দিয়ে। উপন্যাসটি বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক হলেও এখানে শিক্ষার্থীদের অকর্ম নয়, বরং মুখ্য হয়ে উঠেছে শিক্ষকদের নোংরা রাজনীতি, তোষামদি, নষ্টামি ও স্বার্থপরায়ণতার চালচিত্র।
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসটি মূলত বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতি কেন্দ্রিক।বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির বিষয়টি আমাদের মোটামুটি জানা কিন্তু শিক্ষক রাজনীতির ব্যাপারটি ভিতরের থেকে যায় যদিও এর উত্তাপ মাঝে মাঝে বোঝা যায়।উপন্যাসটি লেখক সে জিনিসটি তুলে ধরেছেন চমৎকারভাবে।একজন নিরীহ গোছের লোক আবু জুনায়েদ,যিনি বাংলাদেশের একটি প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি।ঘটনার শুরু এখান থেকেই, এমন একজন নিরীহ লোক কিভাবে ভিসি হন সেটি নিয়ে নানা জল্পনাকল্পনা শুরু হয়।যদিও তার স্ত্রী নুরুন্নাহার বানু সবাইকে বলে বেড়ান তাকে বিয়ে করাই পরই আবু জুনায়েদের ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন হতে থাকে।কিন্তু প্রকৃত পক্ষে দেখা যায় তার ভিসি হওয়াটাও একটি রাজনৈতিক পরিকল্পনারই অংশ। আবু জুয়ায়েদ সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ না নিলেও ডোরাকাটা দলের সদস্য ছিলেন।তিনি কিভাবে সে দলে ভিড়লো সেটা নিয়েও একটি রহস্য রয়েছে।ভিসি হওয়ার পর দেখা যায় বিরোধি দল এবং তার দলও সবাই তার বিরোধিতা করছে। আবু জুনায়েদের স্ত্রী নুরুন্নাহার বানু উপন্যাসটিতে অন্যতম একটি চরিত্র।তার আকাঙ্ক্ষা আবু জুনায়েদ সব সময় তার কথায় উঠবে বসবে।তার এ আকাঙ্ক্ষার কারন ছিল (তার মতে) আবু জুনায়েদের ভাগ্য তার কারনে পরিবর্তন হয়েছে দ্বিতীয়ত আবু জুনায়েদকে তার বাবা টাকা পয়সা দিয়ে পড়াশুনা না করাকে ভিসি হওয়া দূরে থাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রও হতে পারতো না।নুরুন্নাহার বানু কথায় কথায় আবু জুনায়েদকে একথা মনে করিয়ে দেন যে আবু জুনায়েদ ছোট লোকের বাচ্চা তার বাবার দয়াই সে ভিসি পর্যন্ত আসতে পেরেছে। ভিসি হওয়ার পর আবু জুয়ায়েদের পোষাক থেকে শুরু করে সকল কিছু পরিবর্তন হওয়া শুরু করে।নুরুন্নাহার বানুকে সে আগের মতো মূল্যায়ন করে না।যিনি ভালোভাবে কথা বলতে পারতো না তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঘন্টার পর ঘন্টা অনায়াসে বক্তৃতা দেন।আবু জুনায়েদের ছোট বেলায় একটি শখ ছিল গরু পুষবেন। তার সে শখটি আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠে,নুরুন্নাহার বানুরও প্রস্তাবটি মনে ধরে।একটি উন্নত জাতের গাভী ও সাথে গোয়ালঘর উপহার হিসেবে পান তিনি।গাভী আসার পর গাভীই হয়ে উঠে তার চিন্তাভাবনার কেন্দ্রবিন্দু। ধীরে ধীরে তার অফিসের কাজকর্ম করার ও শিক্ষকের আড্ডা দেয়ার স্থান হয় গোয়াল ঘরের পাশের শেডটি। গাভীকে নিয়ে পুরো ক্যাম্পাসের ছাত্র-ছাত্রী,কর্মকর্তা-কর্মচারী,শিক্ষক মহলে তুমুল আলোচনা সমালোচনা তৈরি হয়।এ ইস্যুকে নিয়ে একদল শিক্ষক হ্যান্ডবিল বানিয়ে পুরো ক্যম্পাসে বিলি করে তার বিপরীতে গোয়াল ঘরে আড্ডা দিতে আসা শিক্ষকরাও হ্যান্ডবিল তৈরি করে।এসময় আবু জুনায়েদের দলের অনেক শিক্ষক বিরোধিদলে যোগদেন কিন্তু এমন কিছু শিক্ষক তার ধরনা দিতে থাকেন যারা তার ঘোর বিরোধিতা করতেন।আবু জুনায়েদ ভাবতে থাকে এগুলো সবই তার গাভীর কারনেই হচ্ছে।আবু জুনায়েদের মাথায় এসময় আলাদা দল গঠন করার চিন্তাও ঘুরপাক খেতে থাকে। এদিকে নুরুন্নাহার বানু এক পরিকল্পনা করতে থাকে।এ গাভী আসার পর থেকে আবু জুনায়েদ তাকে কোনো মূল্যায়নই করছে না তার সংসার নষ্ট হচ্ছে এ গাভীকে তিনি সতীন হিসেবে দেখতে থাকেন।সুযোগ মতো তার পরিকল্পনা বাস্তুবায়ন করে সকল যন্ত্রনার অবসান করে। উপন্যাসটি খুব সরল গোছের এবং হাস্যরসাত্মক মনে হলেও এটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোরই একটি বাস্তবচিত্র।তাই উপন্যাসটি পড়ে ঘটনা রসের সাথে শিক্ষক রাজনীতির এক জটিল তত্ত্বের সন্ধান মিলবে।
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অনভদ্য। আহমদ ছফা তার ভালো লেখার মাধ্যমে বর্তমান সমাজের চিত্র সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। ভাগ্য মনে হয় একেই বলে। বর্তমান সমাজ যোগ্যতার ভিরে অযোগ্যদেরেই স্থান দেয়। বইটা পড়ে দেখতে পারেন। আপনারো ভালোই লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
সকলের দৃষ্টির অজান্তে [বিশ্ববিদ্যালয়টিতে] একের অধিক হনন কারখানা বসেছে, কারা এন্তেজাম করে বসিয়েছেন সকলে বিশদ জানে। কিন্তু কেউ প্রকাশ করে না। ফুটন্ত গোলাপের মত তাজা টগবগে তরুণেরা শিক্ষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার পর হনন কারখানার ধারে কাছে বাস করতে করতে নিজেরাই বুঝতে পারেন না কখন যে তারা হনন কারখানার কারিগরদের ইয়ার দোস্তে পরিণত হয়েছেন। —গাভী বিত্তান্ত
Was this review helpful to you?
or
খুবই ভাল একটা বই আমি পরছি
Was this review helpful to you?
or
পড়া হয় নাই
Was this review helpful to you?
or
"Gavi bittanto" er kendrio choritro public varsity er vc. Tini Valo niriho sovaber manush ebong porshu pakhi premi. Ahmed sofar onnotomo shera akti boi. public Varsity er vitorer Onek ghotona uthe ese boi ti te. Sesh ta Mormo sporshi silo. 1995 sal e lekha holeo akhono sobai milate parben poristhiti.
Was this review helpful to you?
or
আহমদ ছফা সেই ১৯৯৪-৯৫ সালে মাত্র ২ মাস ১০ দিনে ৬ মাসের গর্ভবতী একটি গাভীর, যার বাবা অস্ট্রেলীয় আর মা সুইডিশ আর মালিক এদেশীয় অক্সফোর্ড এর ১ নম্বর ব্যক্তি, বিত্তান্ত লিখে গেছেন। কিন্তু তার রেশ মানে গাভীটির মালিকের কল্পনার রাজ্যে স্থাপিত তাজমহলের ভর যেন আমাদের অক্সফোর্ডে রয়েই গেছে। প্রকৃতপক্ষে তিনি তথাকথিত ক্ষমতাবান ও তাদের দোসরদের কাছা খুলে দিয়েছেন। আবু জুনায়েদের বউ নুরুন্নাহার বানু গাভীটিকে সাক্ষাত সতীন ভাবতো। তাই পরিকল্পনামত বিষ খাইয়ে সতীনকে মারার বন্দোবস্ত করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে দৃশ্য-অদৃশ্য হাজারো আবু জুনায়েদের লাভের গাভীগুলোতো বিশ্ববিদ্যালয়েরও সতীন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় তো নিজে নিজেই বানুর মত অসহনীয় অপমান, লাঞ্ছনা, অবজ্ঞা, অবহেলার কারনে সেই সব আবু জুনায়েদদের গাভীগুলোর মুখে প্রতিবাদ স্বরূপ বিষ ঢেলে দিতে পারে না। ডোরাকাটা, নীল, বেগুনি দলের ছাত্র ও শিক্ষকরাও একেকটা আবু জুনায়েদের পাতানো চাচা শ্বশুর তবারক আর পাতানো ভায়রা আবেদর প্রতিরূপ যারা সাধারণ ছাত্রদেরকে দিলুর মত ভোগ করে তবারকের কন্যা ও বানুর মত শোষণ করে। ছফা একজন আবু জুনায়েদের গল্প শুরু করে অসংখ্য আবু জুনায়েদ, তাদের চরিত্র, লোভ, হিংসা, পরশ্রীকাতরতা, পড়ানোর অনিহা, দ্বিচারিতা, দুর্নীতি তুলে এনেছেন তার উপন্যাস "গাভী বিত্তান্ত" এ। আমাদের অক্সফোর্ড এর কর্তাদের কর্ম, ছাত্র শিক্ষকদের ধর্ম, রাজনীতিকদের আচরণ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, এমনকি শিক্ষক কর্মচারীদের আবাসিক এলাকার গৃহিণীদের কথাও আছে উপন্যাসটিতে। পড়তে গিয়ে মনে হচ্ছিল এটা আমার বিশ্ববিদ্যালয়েরই কথা। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়গুলোর স্মৃতি মনে পড়ছিল আর জলজ্যান্ত আবু জুনায়েদদের চোখের সামনে দেখছিলাম। মনে হচ্ছিল আমার সামনেই হচ্ছে এসব কিছু। এখনো পত্রিকার পাতায় তাই দেখি যা আমাদের সময় দেখেছিলাম আর গাভী বিত্তান্ত পরতে পরতে কল্পনায় ভাসছিল। হয়ত আমাদের অক্সফোর্ড একদিন সত্যিকারের অক্সফোর্ডকেও ছাড়িয়ে যাবে। সেদিন এই উপন্যাসের পাঠকরা ভাববে ছফা হয়তো কল্পনার রঙ মিশিয়ে মঙ্গল গ্রহের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু জুনয়াদদের গল্প বলছেন।
Was this review helpful to you?
or
বিখ্যাত লেখকদের বই পড়লে এই এক সমস্যা। দিনশেষে কি বলতে চেয়েছেন বুঝে উঠতে পারিনা। তবে পড়ে মনে হয়েছে তৎকালীন সময়ে কোন এক উপাচার্যের উপর মনে রাগ ঝেড়েছেন, অথবা আকারে ইঙ্গিতে আমাদের শিক্ষার প্রশাসনের অকালতা তুলে ধরেছেন। দলকানা বা দলীয় ভিত্তিতে উপাচার্যের মত ব্যাক্তিত্ত্ব সম্পন্ন ও উচু মর্যাদার পদ ও অযোগ্য লোকদের কাছে নত হয় তা এই বইতে দেখি। যেখানে চিন্তা করলে উপাচার্যের কাজের কোন শেষ নেই, ছাত্র শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারী মিলিয়ে তার ত হাসহুস করা ছাড়া উপায় দেখিনা, সেখানে উপাচার্য ব্যস্ত গাভী নিয়ে!!!(মনে করতে হবে অযৌক্তিক বা বাহুল্য কর্মকান্ড নিয়ে)। গাভী বৃত্তান্ত সেদিক দিয়ে স্যাটায়ার ধর্মী বলা যেতে পারে। আহমদ ছফা আমার মত চটুল পাঠকদের জন্য নহে। হুমায়ুন, সাদাত হোসাইন, আনিসুল হক এগুলো পড়ে পড়ে কঠিন লেখকের বই পড়লে মাথা কাজ করেনা।
Was this review helpful to you?
or
ভাল বই
Was this review helpful to you?
or
ওভারহাইপড! যতটা ভেবেছিলাম ততটা না! হয়তোবা ঢাবিতে পড়ার দরুণই অনেক কিছুই নতুন লাগেনি!
Was this review helpful to you?
or
ঢাবিতে পড়েন আর এই বই পড়বেন না! তা হয় না৷।
Was this review helpful to you?
or
Ahmed sofa have brilliantly portrayed the reality of our universities using this medium It is a must read for any reader who is interested on his fictional writing
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি উপন্যাস। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া প্রত্যেকটা ছাত্র এর সাথে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়কে রিলেট করতে পারবে।
Was this review helpful to you?
or
আহমদ ছফার স্যাটায়ার মাস্টারপিস এই বইটির ঠিক কিভাবে রিভিউ দেয়া যায় তা আমার জানা নেই। আমি আহমদ ছফাকে সাহিত্যিক নয় বরং প্রাবন্ধিক হিসেবেই ভাল মনে করি। তাকে বুদ্ধিজীবি বলার একটি কারণ এমন হতে পারে যে- যে কথা কেউ বলতে চায় না তার সময়ে সে কথাগুলো বলার ঠেকা যেন তিনি নিজের কাধে নিয়ে নিয়েছিলেন। গাভী বৃত্তান্ত বইয়ের কথা বিভিন্ন গুণিজনদের মুখে এত শুনেছি এবং বাসায় আহমদ ছফা সমগ্র কেনাও রয়েছে,তবু কেন যেন এর আগে বইটি পড়া হয়ে ওঠেনি। এতদিনে বইটি শুনে শেষ করা গেল। বইটি শোনা শুরু করার পর থেকে আমি ৩ বারে বইটি শোনা শেষ করেছি এবং ট্রাস্ট মি, এই শোনার মাঝে ব্রেক নিতে আমার একদমই ইচ্ছা করেনি। হাহাহা, এতটাই ডুবে গিয়েছিলাম আর কি। প্রধান চরিত্র আপাত দৃষ্টিতে গোবেচারা ধরনের এক্সিডেন্টালি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বনে যাওয়া আবু জুনায়েদের ক্যারিয়ারের উত্থান পতন এবং তার তালে তালে ব্যক্তিগত জীবনের নানা পট পরিবর্তনের কাহিনী নিয়েই এই বইটি রচিত। আবু জুনায়েদের উত্থানের গল্প যেন সরল অংকের তৈলাক্ত বাশ বেয়ে বানরের উপরে ওঠার গল্পের মতই স্টাগলে পরিপূর্ণ। পুরো গল্পে তার স্ট্রাগলের বর্ণনার যে আখ্যান তিনি দিয়েছেন, আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতা যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তাতে বইটিকে মাস্টারপিস না বলে উপায় কি। পাওয়ার পলিটিক্সের সিড়ি বেয়ে ওঠার ধাপগুলো এত চমতকার করে আর কেউ বর্ণনা করতে পারতো কিনা সন্দেহ। এ যেন ম্যাগনিফাইং গ্লাসের নিচে রেখে পুরো সমাজ এবং চরিত্রগুলোর সামাজিক-চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গুলোর ব্যাঙ্গাত্মক বিশ্লেষন। এ গল্প এমন এক গল্প- যাতে প্রধান কোন চরিত্রই সাধু নয়, সবাই কোন না কোন ত্রুটিতে পরিপূর্ণ। রাজনৈতিক-সামাজিক বাস্তবতার এক চরম বিদ্রুপাত্মক প্রকাশ ঘটেছে বইটিতে। বাংলা স্যাটায়ারের মানদন্ড ঠিক করতে গাভী বৃত্তান্ত যেন মাপকাঠি হিসেবে একেবারে স্ট্যান্ডার্ড। আমাদের আশেপাশের শিক্ষিত সমাজকে বুঝতে হলে,আহমদ ছফার লেখনি দক্ষতা বুঝতে হলে এ বইটি মাস্ট রিড। একেবারে নিখাদ ৫ তারা। ভবিষ্যতে আবারো পড়া হবে।
Was this review helpful to you?
or
বই: গাভী বিত্তান্ত লেখক: আহমদ ছফা ঐতিহ্যের অনুবর্তন, সুসংযত রীতি, গাম্ভীর্যপূর্ণ ভাষা যে সাহিত্যকর্মে পাওয়া যায় লোকে তার নাম দিয়েছে ধ্রুপদী সাহিত্য।গাভী বিত্তান্ত উপন্যাসটি বিচিত্র ধরনের। রাজনীতির নোংরা কদর্য বাস্তব প্রেক্ষাপট মার্জিত ভাষায় প্রদর্শন করেছেন লেখক।উপন্যাসে চিত্রায়িত হয়েছে স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উপাচার্যের গোলামি আর শিক্ষকদের লেজুড়বৃত্তির রূপ। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র মিয়া মুহম্মদ আবু জুনায়েদ, চুপচাপ, গোবেচারা ধরনের মানুষ, যাকে নিয়েই পুরোটা গল্প। খুব প্রয়োজন না হলে মুখে রা না কাটা লোকটি দেশের সবচাইতে প্রাচীন আর সম্ভ্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তখন রণচণ্ডী চেহারা, রাজনৈতিক রেষারেষি, যখন তখন মিছিলের গর্জন, বন্দুক যুদ্ধ। ছাত্র রাজনীতির এমন দুঃসময় রুখতে শিক্ষকদের কোনো ভূমিকা নেই। উল্টো তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত। কে কাকে ল্যাং মেরে উপরে উঠে গেল, সেটা তখন রীতিমতো এক গবেষণার বিষয়। বাইরের এহেন রাজনীতি, উচ্ছৃঙ্খলার সাথে সাথে ঘরটাও ছাড় দেয়নি আবু জুনায়েদকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ কোনো কাজই যেখন সহজে হবার কিঞ্চিৎ সম্ভাবনা থাকেনা, সেখানে আবু জুনায়েদের মতো এক রদ্দি মানুষের উপাচার্য বনে যাওয়া রীতিমত দিবাস্বপ্নের মতো। আবু জুনায়েদের স্ত্রী নুরুন্নাহার বানুর খুশি যেন আর মনে ধরে না। যার পড়ালেখার খরচ জুগিয়েছেন নুরুন্নাহার বানুর বাবা, সমাজ সংসার নিয়ে যার কোনো কালেই কোনো মাথাব্যথা ছিল না, সেই গোবেচারা আবু জুনায়েদ হঠাৎ যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বনে যান, তার স্ত্রী তখন ভাবেন, এ যেন সতীর ভাগ্যে পতির জয়। উপাচার্য ভবনে জুনায়েদ পরিবার উঠে আসার পর নুরুন্নাহার বানু সেখানে বহাল থাকা কর্মচারীদের ওপর কর্তৃত্ব ফলানোর চেষ্টা করতে লাগলেন। স্বামীর সহকর্মীদেরকেও তিনি ছাড় দিলেন না। উপাচার্য-স্ত্রী হিসেবে কথার দমক যেন একটু বেশিই দেখানোর চেষ্টা করতে থাকলেন। এতসব কতৃত্ব খাটিয়েও মহিলা শান্ত হলেন না। বাড়তি কাজ হিসেবে আবু জুনায়েদের ওপর সন্দেহ করা শুরু করলেন।এই প্রসঙ্গে আহমদ ছফা একটি সুন্দর উক্তি করেছেন," মেয়ে মানুষ ঘরে বসে থাকলে এবং নিজেকে ক্লান্ত করার প্রচুর কাজ না থাকলে, মাথায় উকুন এর মত মনের মধ্যে সন্দেহের উকুন বাসা বাঁধতে থাকে।" গরিব পরিবারে জন্ম আবু জুনায়েদের। গৃহপালিত পশু-পাখির প্রতি সেই ছোটবেলা থেকেই টান। নিজের বানানো গোয়ালঘরে গরু পালনের শখ বহুদিনের। সেই শখ পূর্ণ হয় এক ঠিকাদার চাচা-শ্বশুরের বদৌলতে। উপহার পান খুবই দামী একটি গাভী। পরিবারে যেকোনো ব্যাপার নিয়ে স্ত্রীর অশান্তি, বিশ্ববিদ্যালয়ে তার দুর্বলতার সুযোগে দিন দিন বিশৃঙ্খলা বেড়ে যাওয়া, সময়ের আগেই তহবিলের অর্থ ফুরিয়ে যাওয়া- নানা ঝামেলা নিয়ে আবু জুনায়েদের চিন্তার শেষ ছিল না। এরইমধ্যে আবার সেই গাভীকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মহলে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলতে থাকে। অনেক অপবাদও ছড়ায় বিরোধী দলের ছাত্র-শিক্ষকরা। তবে তাকে পছন্দ করতেন কিছু নির্দলীয় মানুষ, অর্থাৎ যারা কোনোরকম রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন না, তাদের কাছে নিয়মিত আড্ডার স্থান হয়ে ওঠে উপাচার্য ভবনের পেছনের এই জায়গায়টি । আবু জুনায়েদের এই নিরীহ জীবপ্রীতিকে নিঃস্বার্থভাবে সমর্থন করতেন তারা।কিন্তু সেখানেও বাঁধ সাধলেন আবু জুনায়েদের স্ত্রী। তার ধারণা হয় এই গাভী ঘরে আসার পর থেকে তার স্বামী তার প্রতি আগের চেয়েও নিস্পৃহ হয়ে পড়েছেন। যে কারণে একদিন ঐ গাভীটির খড়কুটোর সাথে বিষ মিশিয়ে নির্দ্বিধায় গাভীটিকে হত্যা করেন। এমন সময়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়ে আবু জুনায়েদ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সমগ্র বিশ্বের একান্নটি দেশে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার একটি সুযোগ পেয়ে যান, যার জন্য মোটা অংকের সম্মাননাও ঘোষণা করা হয়।উপন্যাসের যে দিকটি ভালো লেগেছে তা হলো, এখানে সাধারণ একটি প্রাণীর উপস্থিতিটাকে অনন্যভাবে পোট্রে করা হয়েছে। আজকের মানব সমাজের চাইতে পশুসমাজ অনেকগুণে উন্নত। তারা এখনকার জগৎ-সংসারের জটিলতা থেকে মুক্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাপট, বিশেষত বাংলাদেশের স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নোংরা রাজনীতি, অনিয়ম, অস্থিরতা ও দীর্ঘসূত্রী ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির প্রেক্ষাপটে রচিত বাংলা ভাষার সবচেয়ে শক্তিশালী উপন্যাস হিসেবে গণ্য গাভী বিত্তান্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের নোংরা রাজনীতির প্রসঙ্গ উঠলেই গাভী বিত্তান্তকে রেফারেন্স/প্রতিকী হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
Was this review helpful to you?
or
গাভী বিত্তান্ত বাংলাদেশের প্রখ্যাত চিন্তাবিদ ও লেখক আহমদ ছফা রচিত একটি উপন্যাস। এই উপন্যাসের প্রেক্ষাপট আবর্তিত হয়েছে আমাদের দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের একজন উপাচার্যের জীবন প্রবাহ নিয়ে।এখানে মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেই ইঙ্গিত করা হয়েছে।রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ আবু জুনায়েদ এই গল্পের প্রধান চরিত্র। খুবই সাধারন তার জীবন যাত্রা,তার চিন্তা বা স্বপ্ন। কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি আর অতিরাজনীতির ঘেরাটোপে এক সময় হঠাৎ করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিযুক্ত হন তিনি।এই উপাচার্যের পদে অধিষ্ঠিত হওয়াটাই তার নিজস্ব জীবন যাপন প্রক্রিয়ায় এবং দৃষ্টিভঙ্গীতে নিয়ে আসে আমূল পরিবর্তন। পারিবারিক, সামাজিক বিভিন্ন সমস্যা নিরসন করতে গিয়ে,বিশ্ববিদ্যালয়ে মিটিং মিছিল দুর্ঘটনা,নিজ দলীয় কর্মীদের মধ্যে অসন্তুষ্টি সামলে উঠতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারেন এ দেশে একজন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যক্ষ কখনো স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন না,বিভিন্ন মহলকে ব্যালেন্স করে তাকে নিজ পদে টিকে থাকতে হয়।তার উপর তার স্ত্রী নুরুন্নাহার বানুর বিভিন্ন সন্দেহের শিকার হয়েও তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েন।তার এসব কষ্ট দেখে এক পর্যায়ে ভিসির বাংলোতে একটা গোয়ালঘর বানিয়ে দুর্লভ জাতের একটা গাভী উপহার দেন তার চাচা শ্বশুর ঠিকাদার তবারক আলী।সেই গোয়ালে ঠাঁই হয় ‘তরণী’ নামে একটি গাভীর। উপাচার্যের এই গাভীর বংশপরিচয় সম্পর্কে আহমদ ছফা লিখেছেন, ‘সুইডিশ গাভী এবং অস্ট্রেলিয়ান ষাঁড়ের মধ্যে ক্রস ঘটিয়ে এই বাচ্চা জন্মানো হয়েছে’। আবু জুনায়েদ মনে করেন এই প্রাণীটিই বরং তার জন্য মঙ্গলকর। এই প্রাণীটির কোন চাওয়া নেই,দাবি নেই,নেই কোন ষড়যন্ত্র। তখন থেকেই তার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠে গাভীটি। তার সমস্ত কার্যক্রম ওই গোয়ালঘর থেকেই পরিচালিত হতে থাকে।এদিকে জুনায়েদ সাহেবের স্ত্রী গাভীটাকে মনে করতে থাকেন তার সতীন ।তিনি ষড়যন্ত্র করতে থাকেন, কিভাবে গাভীকে হত্যা করা যায় এবং অবশেষে বিষ খাইয়ে গাভীটাকে হত্যা করার মাধ্যমে উপন্যাসের সমাপ্তি ঘটে। মূলত এই গোয়ালঘরকে কেন্দ্র করেই আহমদ ছফা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অন্দরমহলের নোংরা চিত্রটি তুলে ধরেছেন,তুলে ধরেছেন গৌরবজ্জল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতি, শিক্ষকদের অভ্যন্তরীন কোন্দল ও অসুস্থ প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সামগ্রিক অবস্থান আর জ্ঞানচর্চার মোড়কের আড়ালে ভেতরকার নোংরা চিত্র এত নিখুঁতভাবে এর আগে কেউ ফুটিয়ে তুলতে পারেন নি।লেখক আহমদ ছফা সেসময়কার আর্থ-সামাজিক, পারিবারিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক পরিবেশকে অত্যন্ত চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন বলে মনে করি।এজন্য উপন্যাসের অনেক চরিত্রই পাঠকদের খুব পরিচিত লাগবে।প্রায় দুই যুগ আগে লেখা হলেও এই উপন্যাসের প্রেক্ষাপট এবং ঘটনাবলি এখনকার পাঠকের কাছেও খুবই প্রাসঙ্গিক মনে হবে। তাই দেরি না করে অাজই পড়ে ফেলুন বাস্তবতার সাথে সম্পর্কিত চমৎকার এ বইটি।
Was this review helpful to you?
or
এই বইয়ের সম্পর্কে মন্তব্য করার থেকে ভালো হলো বর্তমান পরিতস্থিতি পর্যবেক্ষন করা । বইটির নাম গাভী বিত্তান্ত হলেও বইটি লিখা হয়েছে একটি বিশ্ববিদ্যালয় একজন ভিসি তার স্ত্রী এবং শখের গাভীকে নিয়ে । দেশের সর্বোচ্চ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকটা নাটকীয় ভাবেই ভিসি হয়ে যান তিনি । তিনি মেধাবী এবং যোগ্য হলেও তার স্ত্রী মন করেন একজন সাধারন শিক্ষক থেকে ভিসি হয়ে উঠা সবই তার স্ত্রীর ভাগ্য গুনে । এভাবে গল্পে গল্পে এগুতে থাকে চরিত্র । বর্নিত হতে থাকে বিশ্ববিদ্যালইয়ের নানা পরিস্তিতির বর্ননা ছাত্র আন্দোলন,ছাত্র রাজনীতি, শিক্ষক রাজনীতি ,চাঁদাবাজি,টেন্ডার ,নিয়োগ বানিজ্য এইসবের । এ সব কিছুর মাঝেই তার শখ হয় একটি গাভী পালনের । একটি উন্নত জাতের গাভীও পেয়ে যান তিনি । তার জন্য পরিপাটি গোয়ালঘর এবং গাভীকে চলতে থাকে তার জীবন । এক পর্যায়ে তার স্ত্রীর চক্ষুসুলে । অন্য দিকে তার দিনে দিনে বিশ্ববিদ্যালইয়ের সব কিছুআলোচন ও পরিচালিয় এই গাভী ও গোয়ালঘরকে কেন্দ্র করেই । বাকী অংশ জানতে রিভিও না পড়ে বইটা পড়েন প্লিজ । এভাবেই লিখা হয়েছে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে একমাত্র উপন্যসটি ।
Was this review helpful to you?
or
একাবারে আকস্মিক ভাবে স্বনামধন্য এক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হন গল্পের মূল চরিত্র। অর্থ-কষ্ট থেকে একেবারে বিত্ত-বৈভবে এসে পড়া মানুষ যেভাবে বদলে যায়, সেইভাবেই বদলে যেতে থাকেন, উপাচার্য আর তাঁর স্ত্রী। এদিকে একদিন গল্পে আগমন ঘটে তরণীর। না কোন মানবী নয়, এক গাভী। এই গাভীর আগমনে বদলে গেল পুরো দৃশ্যপট। কিভাবে? কেন? প্রতিটি লাইন, প্রতি পৃষ্ঠা পড়লে বুঝবেন, এটা আসলেই কোন রম্যরচনা নাকি বাস্তবতা। এর বেশি আর খোলাসা করব না। থাকনা একটু রহস্য। ব্যক্তিগত মতঃ সত্যি বলছি প্রথমবার পড়ে কেন যেন খুব রাগ লাগছিল, খুব একটা বিরক্তি লেগেছিল। একটা অস্বস্তি। কিন্তু পরে আবার পড়লাম, অনেক ভাল লাগল । যেমন হাস্যকর লেগেছে কিন্তু লেখক আমাদের দেখিয়ে দিয়েছেন, কিভাবে আমরা ভুল করে নিজের কপাল আর নিজের দেশ কে ধ্বংস করছি। কিভাবে এক একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অযোগ্য মানুষ এর জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা আজকে নড়বড়ে। হ্যা লেখা আজকের না , আজ থেকে অনেক বছর আগের। কিন্তু এত আধুনিক কেন? মনে হচ্ছে আজকের লেখা। আজকের জন্য লেখা। না পড়লে আজকেই পড়ে ফেলুন।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিত া বই পর্যালোচনাঃ- বইয়ের নাম: # গাভী_বিত্তান্ত লেখক: আহমদ ছফা। ধরণ: সমকালীন উপন্যাস। রেটিং: ৪.১৪ পৃষ্ঠাসংখ্যা: ১২৮ প্রথম প্রকাশ: বইমেলা ১৯৯৫। প্রকাশনী : সন্দেশ। রকমারি মূল্য: ১৩২টাকা। লেখক পরিচিতি: আহমদ ছফা (জুন ৩০, ১৯৪৩ - জুলাই ২৮, ২০০১) একজন বাংলাদেশি লেখক, কবি ও সমাজবিজ্ঞানী ছিলেন। বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বুদ্ধিজীবী তিনি। তাঁর লেখায় বাংলাদেশি জাতিসত্তার পরিচয় নির্ধারণ প্রাধান্য পেয়েছে। তিনি ২০০২ খ্রিস্টাব্দে সাহিত্যে মরণোত্তর একুশে পদক লাভ করেন। জীবদ্দশায় আহমদ ছফা তাঁর প্রথাবিরোধী, নির্মোহ, অকপট দৃষ্টিভঙ্গীর জন্য বুদ্ধিজীবী মহলে বিশেষ আলোচিত ছিলেন। বুদ্ধিবৃত্তির নতুন বিন্যাস (১৯৭২), বাঙালি মুসলমানের মন (১৯৮১), ফাউস্ট - অনুবাদ (১৯৮৬), যদ্যপি আমার গুরু (১৯৯৮),গাভী বিত্তান্ত (১৯৯৫) -সহ আরো অসংখ্য কবিতা, প্রবন্ধ, ছোটগল্প, উপন্যাস, অনুবাদ রচনা করেন তিনি। (উইকিপিডিয়া অবলম্বনে) রিভিউ : প্রচলিত ধারার কাহিনী হতে সরে এসে ব্যতিক্রমধর্মী অথচ বাস্তববাদী উপন্যাস রচনার একটি উৎকৃষ্ট নিদর্শন হল এই উপন্যাসিকাটি। এই উপন্যাসটির প্রেক্ষাপট আবর্তিত হয়েছে আমাদের দেশের সর্ব্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের একজন উপাচার্যের জীবন প্রবাহ নিয়ে। গল্পের দৃশ্যপটও প্রায় সম্পূর্ণ রূপে অঙ্কিত হয়েছে জাতির দর্পনরূপে পরিচিত এই বিদ্যানিকেতনটিত েই। মূল চরিত্রের আবডালে জাতির দর্পনরূপে চিহ্নিত এই বিদ্যাপীঠটির নানা অসংলগ্ন ও অপ্রত্যাশিত দিক উঠে এসেছে লেখকের ইস্পাত-দৃঢ় লেখনীতে। গল্পের প্রধান চরিত্র মিয়া মুহম্মদ আবু জুনায়েদ,যিনি কথিত বিশ্ববিদ্যালয়টির একজন শিক্ষক হতে ঘটনাচক্রে উপাচার্য পদে অধিষ্ঠিত হন অনেকটা আশাতীত ভাবেই। ব্যক্তিগত ভাবে অতি নির্ভেজাল ও সাধারণ জীবন-যাপনে অভ্যস্ত আবু জুনায়েদ সাহেবের একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান হওয়ার জন্য যে দৃঢ় মানসিকতা ও নেতৃত্বগুণ প্রয়োজন তা কখনোই ছিল না। এমনকি কারো সাতে-পাঁচে না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবিশাল রাজত্বে তাঁর কোনই শত্রু-মিত্র ছিল না। গল্পের আরেকটি অন্যতম প্রধান চরিত্র,আবু জুনায়েদ সাহেবের স্ত্রী নুরুন্নাহার বানু। যিনি নিজেও স্বামীর আকস্মিক অভাবিত এই পদন্নোতিতে অনেকটা আকাশ হতে পরেন। দাম্পত্য জীবনের প্রথম দিক অনেক অনটন ও কষ্টে যাপন করে এই পর্যায়ে এসে হঠাৎ-ই এমন সম্মান ও প্রাচু্র্য্যের জীবন পাওয়া সত্ত্বেও নুরুন্নাহার বানু তার দৃষ্টিকটু অমার্জিত আচরণগুলো পরিত্যাগ করতে অসমর্থিত হন। পাড়া-মহল্লার ঝগড়াটে মহিলাদের ন্যায় দজ্জাল স্বভাব ও স্বামীকে নিজের ইচ্ছাধীন ভাবে আদেশ-নিষেধের ঘেরাটোপে রেখে নিজে মিথ্যা প্রভুত্বের অর্থহীন আনন্দ লাভ করা নুরুন্নাহার বানুর চরিত্রের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে জীবনযুদ্ধের নামে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসুস্থ প্রতিযোগিতা কতটা সর্বাঙ্গীন ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে,তা সাধারণ পাঠকের ধারণা জগতে আশ্রয় লাভ করে এই উপন্যাসের সার্থক ভাবে অঙ্গিত বিভিন্ন পার্শ্ব-চরিত্রের মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাজনীতি ও নিজেদের নানা সুযোগ-সুবিধা লাভের নামে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করে কিভাবে শিক্ষার মূল কার্যক্রমে প্রতিনিয়ত বিঘ্ন ঘটিয়ে চলেছেন,তা গল্পের প্রতিটি অধ্যায়ে লেখক ব্যঙ্গ-রসাত্মক ঘটনাবলীর ছলে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন। কিছু কিছু মানুষ সর্বদা নিজেদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের চেষ্টা করে গেলেও অধিকাংশের ক্ষেত্রে তার বিপরীত চিত্রেরই দেখা মেলে প্রতিটি দৃশ্যপটে। দিলরুবা খানম নামের একজন অবিবাহিত-রূপসী শিক্ষক নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আবু জুনায়েদ সাহেবকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তথাকথিত হলুদ-বেগুনী-ডোরাকাটা-বাদামী দলের রাজনীতিতে প্রবেশ করান। ডোরাকাটা দল হতে ঘটনাচক্রে সকলের চক্ষু চড়কগাছ করে আবু জুনায়েদ সাহেব উপাচার্য পদে আসীন হন। তারপরই শুরু হয় উপন্যাসের মূল ঘটনাপ্রবাহ। উপাচার্য পদে আসীন হওয়ার পর প্রথম অবস্থায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পরলেও ধীরে ধীরে নিজেকে সামলে নেন আবু জুনায়েদ সাহেব। একদিকে পারিবারিক জীবন ও অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা চড়াই-উৎরাই আবু জুনায়েদ সাহেবের সাদা-মাটা জীবনে বিপুল গতির সঞ্চার করে। কখনো কখনো সৎ পথে সঠিক উপায়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্রোতের অনুকূলে গা ভাসিয়ে দেওয়াটাকেই অভ্যাসে পরিণত করেন আমাদের গল্পের নবাগত এই উপাচার্য সাহেব। শিক্ষক থাকা অবস্থায় যথাসম্ভব সৎ ও ঝামেলামুক্ত জীবনযাপনে অভ্যস্ত আবু জুনায়েদ সাহেবের দুটিমাত্র আজন্মলালিত ইচ্ছা ছিল।তন্মধ্যে অন্যতম স্বপ্নটি হল একটি গাভী পালন করা। যা পূরণ করার জন্য তিনি সর্বদা কল্পনা ও চেষ্টা করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকাদার ও নুরুন্নাহার বানুর পাতানো চাচা শেখ তবারক আলীর সাথে নতুন করে পরিচয় আবু জুনায়েদ সাহেবের উপাচার্য জীবনের অন্যতম স্মরণীয় ঘটনায় পরিণত হয়। তবারক আলী নিজের মেয়ে-জামাই মনে করেই হোক বা পাঠক অগোচরে থাকা কোন স্বার্থ সিদ্ধির উদ্দেশ্যেই হোক,আবু জুনায়েদ সাহেবের পরিবারকে নানা মূল্যবান উপহার ও আপ্যায়ন দ্বারা অভিভূত করতে থাকেন। এদিকে উপাচার্য ভবনে নিজের প্রাচুর্য ও ক্ষণস্থায়ী রাজত্বের নমুনা নিজের আত্নীয়-বন্ধু নামধারী প্রতিদ্বন্দ্বীদের দেখানোর জন্য নুরুন্নাহার বানুর ব্যর্থ কর্মকান্ডও আলোড়িত করে গল্পের ঘটনাপ্রবাহকে। এর মাঝেই তবারক আলী ও তার জামাতা আবেদ হোসেনের মাধ্যমে অবশেষে গল্পের নাম-চরিত্র “গাভী”-টি আবির্ভূত হয় আবু জুনায়েদের স্বপ্ন পূরণে। আবু জুনায়েদ সাহেবের কনিষ্ঠ মেয়ে দীলু দুষ্প্রাপ্য এই সংকর গাভীটির নাম দেয় ‘তরণী'। ‘তরণী'-কে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয় গল্পের পরবর্তি ঘটনাবলি। তরণী আর উপাচার্য ভবন সংলগ্ন তার অভিজাত ‘গোয়াল ঘর'-কিভাবে সম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল ঘটনাপঞ্জির কেন্দ্রে পরিণত হয়,তা এতই সাবলীল ভাবে বর্ণিত হয়েছে গল্পে,যেন এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক। একদিকে আবু জুনায়েদ ও নুরুন্নাহার বানুর দাম্পত্যকলহ,দীলুর নৈতিক অবক্ষয় এবং এসব হতে পুনরুদ্ধার। অপরদিকে বন্ধুহীন আবু জুনায়েদ সাহেবের অনুগত দল লাভের পাশাপাশি নিজের এক অজ্ঞাত অস্তিত্বের সন্ধান লাভ, বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতির গভীর ও বক্র গলিপথগুলি-সবকিছ ুই যেন আবর্তিত হয় ‘তরণী'-নামধারী গাভীটি ও তার গোয়ালঘরকে কেন্দ্র করে। এমনকি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সম্মান সংশ্লিষ্ট কিছু ঘটনাও যুক্ত হয় গাভীটি ও আবু জুনায়েদ সাহেবের সম্পর্ককে ঘিরে। অকল্পিত অথচ বাস্তবোচিত এই উপন্যাসের সমাপ্তিতেও যে চমক থাকবেই সেটা তো বোঝায় যায়। বাংলা সাহিত্যের অভূতপূর্ব রস আস্বাদন করতে চাইলে এই উপন্যাসটি এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলার সম্ভবত কোনই বিকল্প নেই। ব্যক্তিগত মতামত: গল্পটি যদিও হাস্য-রসাত্মক আবহে রচিত। কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে বিবেচনা করলে বলতেই হয় যে,লেখক এই উপন্যাসের মাধ্যমে আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন,বাঙালি জাতির সকল সংগ্রাম ও গৌরবের লীলাভূমিটি কিভাবে দুর্নীতি ও বিপথগামী রাজনীতির কালো ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে। তাছাড়া আমার ধারণা,লেখক এ কালজয়ী উপন্যাসের মাধ্যমে সাবধান করেছেন,জাতির মেরুদণ্ড ও জাতির ভবিষ্যৎ-উভয়েরই এক বিশাল অংশ যেভাবে ভ্রষ্ট পথে এগিয়ে চলেছেন,তা সত্যিই আশঙ্কাজনক। নামকরণের ক্ষেত্রে-আপাতদৃষ্টিতে যদিও মনে হতে পারে ‘তরণী' নামধারী গাভীটির নামেই নামকরণ করেছেন লেখক তাঁর এই উপন্যাসটির। কিন্তু পাঠক মাত্রেই গল্পটি পড়ে বুঝতে পারবেন,”গাভী”-শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে রূপক অর্থে। যা হতে বাঙালী পাঠকেরা নিঃসন্দেহে “আহমদ ছফা সাহিত্য"-হাস্য-রসিকতার আবডালে বাস্তবতাকে কতটা প্রগাঢ় রূপে তুলে ধরতে সক্ষম তা বুঝে তৃপ্ত হবেন।
Was this review helpful to you?
or
১. একজন সাধারণ, সহজ-সরল, গোবেচারা মানুষ মিয়া মুহাম্মদ আবু জুনায়েদ। তার স্ত্রী নুরুন্নাহার বানু'র ভাষ্যমতে, স্ত্রী ভাগ্যে তিনি বাঘা বাঘা মানুষদের ডেঙিয়ে দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে স্থান পেয়েছেন। নয়ত তার মতন নেতানো মানুষ যে কিনা কোনদিন কোন সভা-সমিতির ধারে কাছে যায়নি, কারো সাথে উচ্চবাচ্চ করেননি সে কিভাবে উপাচার্য হোন। একথা অবশ্য মিয়া জুনায়েদ সাহেবও বিশ্বাস করেন। গল্পের শুরু এখান থেকেই। নুরুন্নাহার বানুর মতে তার পিতা যদি আবু জুনায়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার জন্য অর্থের যোগান না দিতেন তাহলে তাকে রাস্তায় রাস্তায় ঘোরে বেড়াতে হতো। নুরুন্নাহার বানুর মতো রাজ-কপালি মেয়ে তার ভাগ্য জুটেছে সেটা তার সাত কপালের ভাগ্য। ২. কাহিনী এগোতে থাকে আপন নিয়মে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিত্য মারামারি,খুন-খনি, উপাচার্যের ভবন ঘেরাও, বিরোধীদলের গুজব ছড়ানোসহ নতুন করে পাওয়া তবারক চাচার পরিবারের সাথে সর্ম্পক ভালোই চলছিল। মিয়া আবু জুনায়েদ সাহেবের সুপ্ত বাসনা ছিল তিনি একটা গাভী পুষবেন। সেই ইচ্ছা বাস্তবে রূপদান করলেন ঠিকাদার তবারক হোসেন। চমৎকার একখানা গোয়ালঘরের পাশাপাশি সুদর্শনা এক গরু তিনি জামাতাকে উপহার দিলেন। একসময় সেই গরু গাভী হলো। তরুণী নামের সেই গাভী'ই উপাচার্য সাহেবের ধ্যান-জ্ঞান হয়ে উঠলো। ৩. জগতে মেয়ে মানুষ অল্পতে আস্থাহারা মানুষ। ইতিমধ্যে পতিদেবতার সারাক্ষণ গো-প্রীতি দেখে তাকে নিজের সতীন ভাবতেও কুণ্ঠা বোধ করলেন না নুরুন্নাহার বানু। এদিকে উপাচার্য সাহেবও হাতের নাগালে চলে গেছেন। ছোট মেয়ে দীলু যা-ইচ্ছে তাই করছে। এসবে ত্যক্ত,বিরক্ত, রাগে-হিংসায় সিদ্ধান্ত নিলেন যেহেতু সেই গাভীটিই তার সংসার ধংসের একমাত্র কারণ। গাভীটি যতদিন বেঁচে থাকবে তিনি সংসারে সুখ ফিরে পাবেন না। সেহেতু তাকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলাই উত্তম কার্য। কিন্তু গাভীটি এতই চমৎকার দেখতে কেউ একবার দেখলে চোখ ফেরানো দায়। সাথে কয়েকমাসের গর্ভবতী। ক্ষণিকের জন্য মায়াও পড়ে গেল নুরুন্নাহার বানুর গাভীটির প্রতি। শেষ মুহূর্তে কি ঘটেছে সেটা নাইবা বললাম। জানতে হলে পড়তে হবে আহমেদ ছফার 'গাভী বিত্তান্ত' ছফা সাহেবের বই এটা নিয়ে তিনটে পড়া। তার রচনাশৈলী কী চমৎকার। সাবলীলভাবে সব ঘটনা তিনি হরহর করে বলে যান। তার বই সুখপাঠ্য।
Was this review helpful to you?
or
Nice Story
Was this review helpful to you?
or
Awesome
Was this review helpful to you?
or
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কিছু ঘটনা, কিছু মানুষের দ্বি-মুখী আচরণের মাধ্যমে পুরো সমাজকে ব্যাঙ্গ করেছেন ছফা এই উপন্যাসে। সাধারণ কিছু স্যাটায়ার আছে। তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় জীবন, তার রাজনীতি আর মানুষগুলোর দ্বিচারিতা যেন সামনে চলে আসলো। আমরা ছাত্রদেরগুলো দেখতে পাই, প্রশাসনিক বা শিক্ষকদের গুলো হঠাৎ দৃষ্টিগোচর হয় না, এখানে সেগুলো সামনে আনা হলো।দুর্দান্ত স্যাটেয়ার! ছফা এদেশের পাবলিক বিশববিদযালয়ের অনদরমহলের খবর তুলে ধরেছেন কোনরকম রাখঢাক ছাড়াই। উনার সেন্স অব হিউমার অতুলনীয়! ১৯৯৫ সালে লেখা হলেও দুঃখজনকভাবে এখনো সমান প্রাসঙ্গিক। আহমদ ছফার যতগুলো উপন্যাস এ পর্যন্ত পড়েছি এটা সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে...আমার একটা ফ্রেন্ড এর পশুপাখিদের প্রতি অনেক মমতা দেখে একজন স্যার এই বইটি পড়তে সাজেস্ট করেছিলেন...তখন আমি ভেবেছিলাম এটার কাহিনী কিছুটা শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর 'মহেশ' গল্পের মত হবে হয়তো...কিন্তু যখন পড়তে শুরু করলাম দেখলাম উপন্যাসের পুরো কাহিনী একজন উপাচার্যকে ঘিরে...পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন ঘটনা, অভ্যন্তরীন চিত্র, ছাত্র রাজনীতি ইত্যাদি অনেক সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে...নিঃসন্দেহে পড়তে অনেক ভালো লাগছিল কিন্তু গাভীর সাথে কোন যোগসূত্র খুঁজে পাচ্ছিলাম না... অপূর্ব সুন্দর উজ্জ্বল লাল রং এর গরুটি...ছিপ নৌকার মত লম্বা শরীর...মাঝে মাঝে ডোরাকাটা দাগ...সবচেয়ে সুন্দর তার চোখ দুটি...যদি দুটি পাখা থাকত, তা হলে আকাশের দিকে উড়াল দিত...অসহায় এবং কৌতূহলী দৃষ্টি দিয়ে সবার দিকে তাকিয়ে থাকে...এতো সুন্দর একটি প্রাণীর এমন করুণ পরিণতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না...সমাপ্তিটা আসলেই অনেক বেশি মর্মস্পর্শী ছিল।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগীতা। বই- গাভী বিত্তান্ত। লেখক- আহমদ ছফা। ধরন- রম্য, ব্যাঙ্গাত্মক। পৃষ্ঠা- ১২৮। প্রকাশনী- সন্দেশ। প্রধান চরিত্র- আবু জুনায়েদ, নুরুন্নাহার বানু, দিলরুবা খানম, শেখ তবারক আলী, আবেদ হোসেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে বিনা তদবিরে সর্ম্পুণ অযাচিতভাবে মিয়া মোহাম্মদ আবু জুনায়েদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপার্চায নির্বাচিত হন। এহেন উন্নতিতে অবশ্য আবু জুনায়েদই আর সবার চেয়ে বেশী অবাক হয়ে যান। কারন তার নিজেরও জানা ছিলো না তিনি কখনো উপার্চায হতে পারবেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন রাজনিতীর মধ্যে শিক্ষকদের একটা বিশাল ভূমিকা থাকে। আর সেখানে যদি কোনো অবিবাহিত যুবতী শিক্ষিকা থাকে তাহলে তো কথাই নেই। তেমনই একজন শিক্ষিকা হচ্ছেন দিলরুবা খানম। এটা দিলরুবা খানমের অনেকটা সুপ্ত ইচ্ছাও বলা যায় যে নিরীহ, গোবেচারা আবু জুনায়েদের মাধ্যমে আসলে তিনিই কলকাঠি নাড়বেন। কিন্তু আবু জুনায়েদের স্ত্রী নুরুন্নাহার বানু দিলরুবা খানমের নামও শুনতে পারেন না। মধ্যবৃত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা এই মহিলার ধারনা তার ভাগ্যের কারনেই আবু জুনায়েদ এমন একটি পর্যায়ে আসতে পেরেছেন। হাবু ধরনের স্বামীকে সে এ নিয়ে প্রকাশ্যে গালমন্দও করতে ছাড়েন না। একটা সময় আবু জুনায়েদও দারিদ্রের সাথে সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু ভাগ্য তাকে হাটি হাটি পা পা করে আজকে একটি ক্ষমতাধর পর্যায়ে এনে দিয়েছে। এহেন পরিবর্তন আবু জুনায়েদও খুব উপভোগ করছেন। নুরুন্নাহার বানুর ভদ্রতা জ্ঞান একদম কম। যারফলে আবু জুনায়েদকে বেশ ভোগান্তিতেই পড়তে হয় সবসময়। উপাচার্য হবার বেশ কিছুদিন পর আবু জুনায়েদের সাথে সাক্ষাৎ ঘটে ঠিকাদার শেখ তবারক আলীর। একসময়ে আবু জুনায়েদের শশুড়ের বন্ধু ছিলেন তিনি। ওদিকে উপার্চায হবার পর আবু জুনায়েদ যেমনটি আরামদায়ক অবস্থা প্রত্যাশা করেছিলেন তেমনটি হয়নি। বরং তার জীবন যেনো আর অশান্তময় হয়ে গেছে। একেকদিন তাকে একেক ঝামেলা সামাল দিতে হয়। একদম ছিচকে সমস্যা হলেও তা তাকে শুনতে হয়। এরমধ্যে একদিন বিশ্ববিদ্যালয় গ্যান্জামে দাবড়ানি খেয়ে শেখ তবারক আলী তার কাছে আশ্রয় নেন। আবু জুনায়েদ সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাদের হাত থেকে বেচারাকে বাচিয়ে দেন। শেখ তবারক আলীর দাওয়াত পেয়ে তার বাড়িতে যান আবু জুনায়েদ ও নুরুন্নাহার বানু। তার বাড়িতে যেয়ে অবাক হয়ে যান আবু জুনায়েদ। লোকটা যে এতো টাকার মালিক তা তিনি প্রথমে ভাবতেও পারেননি। এমনকি তবারক আলীকে দেখে বোঝাও যায় না সে যে টাকার পাহাড় বানিয়ে রেখেছে। শেখ তবারক আলী আবু জুনায়েদের নিকট ঋণী। কারন আবু জুনায়েদ তাকে সেদিন ধোলাইয়ের হাত থেকে বাচিয়ে দিয়েছে। তিনি তাই আবু জুনায়েদকে একটি উপহার দিয়ে খুশি করতে চান। আবু জুনায়েদের দীর্ঘদিনের ইচ্ছা ছিলো তিনি একটি দুধেল গাই পুষবেন। তিনি তবারক আলীর নিকট তার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। পরদিনই গরুর থাকার জন্য সমস্ত সরন্জাম হাজির হয়ে যায়। নিয়ে আসে তবারক আলীর মেয়ের জামাই আবেদ হোসেন। কিছুদিন পর তার কাঙ্খিত গাই গরুটিও এসে যায়। গরু দেখে আবু জুনায়েদের মন ভরে যায়। আরে, এমন গরুই তো তিনি চাইছিলেন। কি সুন্দর একটি গাই গরু। মোটাতাজা দেখতে, নিরীহ গোবেচারা চাহনি। আবু জুনায়েদের মন কেড়ে নিলো গরুটি। তার ভাবনার বিশাল অংশ জুড়ে এখন গাই গরুটিরই অবস্থান। দেখা যায় তিনি তার বিশ্ববিদ্যালয় সর্ম্পকিত কাজ ফেলে গরু নিয়েই পড়ে থাকেন। কিন্তু তার গরু পালার কথা গোপন থাকলোনা। ধীরে ধীরে অন্য শিক্ষকরাও জানতে পারলো। খুব শিগ্রই গরুর ঘরের সামনের যায়গাটা হলো শিক্ষকদের বৈকাল আড্ডার স্থান। আবু জুনায়েদ সেখানে একটি অস্থায়ী অফিসও খুলে বসলেন। এদিকে নুরুন্নাহার বানুর মনে জন্ম নিলো হিংসা ও ইর্ষা। সেটা যদি কোনো মানবীর প্রতি হতো তাহলে স্বাভাবিক হিংসা বলা যেতো। কিন্তু তার হিংসা ও ইর্ষা হতে লাগলো গরুটির প্রতি। তার মনে এমন ধারনা জন্ম নিলো যেনো গরুটি আসার ফলে তার স্বামী তাকে আগের মতো সময় দেয়না, আগের মতো মান্য করে চলে না। আর এই মানসিকতা থেকেই আবু জুনায়েদের ঘরে শুরু হয়ে গেলো ষ্টার জলসা ষ্টাইলে লড়াই যা আবু জুনায়েদকে আরো ব্যাতিব্যাস্ত করে ছাড়লো। অত্যন্ত অসাধারন এক উপন্যাস। রুপক অর্থে লেখা এই উপন্যাসকে বেশ সাহসী উপন্যাস বলতে হবে। যদি বর্তমান সময়ে আহমদ ছফা লিখতেন তাহলে তার অবস্থাও কি সুশান্ত পালের মতো হতো কিনা কে জানে। গৌরবজ্জল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে লেখা পুরো উপন্যাসে তুলে ধরেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনিতী, হালচাল, শিক্ষকদের ব্যাপার স্যাপার, অভ্যন্তরীন কোন্দল ও প্রতিযোগীতা। গাই গরুটিকে তিনি রুপক অর্থে নিয়ে এ দিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন অন্যকিছু। সেটা কি? তা জানতে হলে পড়তে হবে বইটি। হুমায়ূন আহমেদদের পূর্বসূরী আহমদ ছফাকে আশা করি সবাই চেনেন। তার চারকালের তিনকালই কেটেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। অসাধারন এই উপন্যাসে হাসির অনেক খোড়াকের সাথে আছে অনেক জটিল সব প্যাচও। আশা করি কেউ এবারে বইটি মিস করবেন না। রেটিং- ৫.০০/৫.০০
Was this review helpful to you?
or
এর আগে আমহেদ ছফার 'অর্ধেক নারী, অর্ধেক ঈশ্বরী' -- এই বইটা আমি কয়েক বছর আগে পড়েছিলাম, আমার কাছে বইটা খুবই ভাল লেগেছিল। অনেক সুন্দর একটা বই। আহমেদ ছফার লেখা ২য় কোন বই গতকাল শেষ করলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য উপাচার্য্য পদে নিযুক্ত আবু জুনায়েদের জীবন কাহিনী নিয়ে মূলত বইটা। গোবেচারা টাইপ একটা মানুষ কিভাবে সকল ক্ষমতার উৎস হয়ে উঠে এবং তাকে ঘিরে থাকা মানুষদের কার্যক্রম বইটাতে উঠে আসে। বৃহৎ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে জুনায়েদ সাহেব নানাবিধ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন। এর কোনটা ছিল পরম আনন্দের, আবার কোনটা ছিল বিষাদের। ছোত বয়স থেকে তার একটা গাভী লালনপালনের যে ইচ্ছে ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইজাদার এবং মিয়া মুহাম্মদ আবু জুনায়েদের স্ত্রীর পূর্বপরিচিত তবারক আলী পূরণ করে দেওয়ার পরে এই উপন্যাসে নতুন মাত্রা যোগ পায়। এদিকে জুনায়েদ সাহেবের স্ত্রী গাভীটাকে মনে করতে থাকেন তার 'সতীন' বা 'শত্রু' । তিনি ষড়যন্ত্র করতে থাকেন, কিভাবে গাভীটাকে হত্যা করা যায়। অবশেষে বিষ খাইয়ে যখন গাভীটাকে হত্যা করা হলো, জুনায়েদ সাহেব বাকরোধ হয়ে পরেন। কিন্তু একই সময়ে উনি আমেরিকায় বক্তৃতা দেয়ার জন্যে দারুণ একটা অফার পান এবং স্ত্রীকে তা বলতে গেলে তার স্ত্রী সরল স্বীকারোত্তিতে বলে দেয়, সেইই খুন করে গাভীটাকে, উপন্যাসের শেষে ঠিক কি হলো, তা আমার কাছে অস্পষ্ট। লেখক আসলে পাঠকদের কি বুঝাতে চেয়েছেন, শেষে এসে তা বোধগম্য হয় নাই ... কিন্তু তবুও সব মিলিয়ে বইটা পড়তে মন্দ লাগে নাই।