User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বৃষ্টিস্নাত স্নিগ্ধ মন কেমন করা দিনে এতো চমৎকার কিছু সময় কাটালাম পুরোনো পথের রেখা বইয়ের সাথে। বইটা নিয়ে প্রচ্ছদ প্রকাশিত হওয়ার পরেই তীব্র আকর্ষণ ছিলো মনে। রেললাইন, লজ্জ্বাবতী ফুল কি কানেকশন থাকতে পারে, খুব করে ভাবতাম। আজ সেই ভাবনায় হারিয়ে গেলাম নতুন আবেশে। এতো আদরমাখা, মায়াময়... এই স্নিগ্ধ আবেশে মন মাতোয়ারা এখন। হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো মিষ্টি একটা বই পড়ে শেষ করেছি। শুরু করেছিলাম বৃষ্টিময় মুহুর্তে, শেষ পর্যন্ত এতোটা সুন্দর চমক ছিলো। এই স্নিগ্ধ পরিবেশের সাথে মিশে গিয়েছে একদম। তৃপ্ততায় চোখে মুখে আনন্দ আর তীব্র খুশির ঝলক মনে। এতো চমৎকার আর মধুরতায় কিছু সময় কেটে গিয়েছে। ভালোবাসা, স্মৃতির পাতা, পরিশেষে মিষ্টতায় পরিপূর্ণ। সব মিলিয়ে চমৎকার একটা বই। হৃদয়ে এক স্নিগ্ধতার পরশবুলানো আবেশে ডুবে আছি। এই মায়ায় জড়িয়ে আমি এভাবেই ডুবে থাকতে চাই। রেললাইনের ধার দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি মনে হচ্ছে, সাথে কিছু বেগুনি রঙা লজ্জাবতী। এতো সুন্দর মুহুর্ত! সবকিছু যেন অনুভব করছি নিজের মধ্যে। এতোটা জীবন্ত সবকিছু এতোটা! এতোটা সুন্দর আর মায়ায়মাখানো বই! খুব বেশি ভালোবেসে ফেলেছি আমি এই বইয়ের সাথে জড়ানো সকল কিছুকে। পুরোনো পথের রেখায় এভাবেই হারিয়ে গিয়ে নিজেকে নতুনভাবে ফিরে পাচ্ছি যেন। চোখ বন্ধ করেই সেই সুখময় কিছু মুহুর্ত উপলব্ধি করছি। লেখিকা আপুর প্রতিটি বই শিক্ষণীয়, বাস্তবতায় ঘেরা। সব মিলিয়ে দারুণ চমৎকার কিছুর মিশ্রণ। লেখিকা আপুর শুদ্ধ, শীতল আর স্নিগ্ধ লেখনী এভাবেই পাঠক হৃদয়ে ভেসে বেড়াক। পাঠকের মনের মণিকোঠায় লেখাগুলো গেঁথে থাকুক। শুভ কামনা রইল। ভালোবাসা জানবেন আপু। আফিফা পারভীন অনুভূতিকথন পুরোনো পথের রেখা।?
Was this review helpful to you?
or
#পুরোনো_পথের_রেখা "অনিশ্চিত জীবনের প্রয়োজনে অনিচ্ছায় ফেলে আসা কোনো পুরনো পথের রেখা ধরে হঠাৎই থমকে যাওয়া জীবনের পথটায় মানুষ আবারও নতুন ভাবে চলতে শুরু করে। কারণ পথ চলাই পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন নিয়ম। " ? সমসাময়িক বাস্তবতার নিখুঁত প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠে এসেছে আফিফা পারভীনের লেখা “পুরোনো পথের রেখা” উপন্যাসটি। সামাজিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা সম্পর্কের টানাপোড়েন, অন্তর্দ্বন্দ্ব, নিরব অভিমান আর অব্যক্ত ভালোবাসা, সবকিছু এক নিপুণ শিল্পীর মতোই সাজিয়েছেন লেখক। ? এক পলকে পুরোনো পথ : “পুরোনো পথের রেখা” এক নিপুণভাবে বোনা সামাজিক ও রোমান্টিক উপন্যাস। গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে অর্ক মাহমুদ শিকদার এবং আফরা ইয়াসমিন লাবণ্য। দুজন একে অপরের বিপরীত মেরু হলেও এক সময়ের সহপাঠী এবং বন্ধু। স্কুল, কোচিং, আড্ডা আর বন্ধুত্বের রঙে রঙিন ছিল তাদের শৈশব-কৈশোর। বন্ধুদের মধ্যে পারস্পরিক দায়িত্ববোধ, সম্পর্কের আন্তরিকতা আর চেপে রাখা আবেগের পরতে পরতে গাঁথা গল্পটি একসময় নিয়ে যায় জীবনের কঠিন বাস্তবতায়। সময়ের পালাবদলে সেই বন্ধুত্বের গাঢ়তা হারিয়ে যায়, ছেলেবেলার দলটা ভেঙে পড়ে, কেউ হারিয়ে যায়, কেউ বেঁচে থাকে স্মৃতির ভারে। বহু বছর পর হঠাৎ করেই আবার মুখোমুখি হয় অর্ক আর লাবণ্য। কিন্তু তখনও সময় তাদের অনুকূলে ছিল না। জীবনের আলাদা আলাদা পথে হেঁটে আসা এই দুই চরিত্র যেন রেললাইনের সমান্তরাল দু’টি পাত।একসাথে ঘনিষ্ঠ, তবু কখনও এক হয় না। "কিছু মানুষ কিছু সম্পর্ক পুরনো পথের রেখার মতো। হারিয়ে গেলেও শেষ হয়ে যায় না। বহুদূর চলে যাওয়ার পর যদি কোনদিন সেই ফেলে আসা পথ ধরে আবার যাওয়ার প্রয়োজন হয়, তখন সেই পুরনো পথে রেখা ঠিকই আপন ভেবে নিয়ে পথ দেখায়। " ? অনুভুতু পুরোনো পথ ঘুরে আসার : “পুরোনো পথের রেখা” একটানা পড়ে ফেলার মতো একটি উপন্যাস। লেখক আফিফা পারভীনের লিখনশৈলী চমৎকার। তার ভাষার প্রাঞ্জলতা, সংলাপের স্বাভাবিকতা আর চরিত্র নির্মাণের দক্ষতা সত্যিই প্রশংসনীয়। তিনি যেভাবে কিশোর বয়সের বন্ধুত্ব, প্রেমের সূক্ষ্ম অনুভব এবং সময়ের নির্মম বাস্তবতাকে গল্পে তুলে এনেছেন, তা পাঠকের মনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে। গল্পটি শুধু প্রেম কিংবা বন্ধুত্বের সীমায় আবদ্ধ নয়, এটি আমাদের পরিচিত সমাজ, আমাদের ছেলেবেলার গলি, সেই হারিয়ে যাওয়া দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। এই উপন্যাসে পাঠক খুঁজে পাবে নিজের স্কুলজীবনের কোনো একটি স্মৃতি, হয়তো এক হারিয়ে যাওয়া বন্ধুর মুখ। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, লেখক কোনো কৃত্রিম নাটকীয়তায় ভর না করে বাস্তব জীবনের মতো করেই গল্পটিকে সাজিয়েছেন। শেষটাও বাস্তবতার ছোঁয়ায় মিশে আছে। যেখানে সব গল্পের হয়তো মিলন নেই, কিন্তু থেকে যায় এক গভীর অনুভব। ? চরিত্র বিশ্লেষণ : লাবণ্য চরিত্রটির ভেতর দিয়ে ফুটে উঠেছে এক নারীর না বলা অভিমান। বিলাসিতা, সাজগোজ কিংবা বাহ্যিক আরাম-আয়েশের বাইরে যে আত্মিক যত্ন, স্নেহ এবং দায়িত্ববোধ একজন নারীর জীবনে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ—লেখিকা তা হৃদয়গ্রাহীভাবে প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে, অর্ক মাহমুদ শিকদার, নিরব অথচ দৃঢ়চেতা, সংযত অথচ স্পষ্টভাষী এক চরিত্র। তার দৃঢ়তা ও আত্মসংবরণ কিশোর বয়স থেকে পরিণত জীবন পর্যন্ত পাঠককে টেনে রেখেছে দারুণ মুন্সিয়ানায়। আদিল ও আশিকের মতো চরিত্রগুলো বর্তমান সমাজের এক ভয়াবহ বাস্তবতার প্রতিফলন, যেখানে অর্থবিত্তের দম্ভ ও বিকৃত স্বাধীনতা মানুষকে পশুত্বের স্তরে নামিয়ে আনে। তারা যেন প্রমাণ করে, মনুষ্য জন্ম পেলেই মানুষ হওয়া যায় না। গল্পের আরেকটি শক্তিশালী দিক হলো, বন্ধুত্বের গভীরতা। মামুনের মতো একজন বন্ধুর উপস্থিতি গল্পে শুধু ভারসাম্য এনেই দেয়নি, বরং বন্ধুত্বের গুরুত্ব ও সৌন্দর্যকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। এই চরিত্রটি আমার সবচেয়ে বেশি পছন্দ হয়েছে। ? প্রচ্ছদ এবং প্রোডাকশন : উপন্যাসের রেললাইনের চিত্রটি নিছক একটি দৃশ্য নয়, এটি সময়, জীবনের সমান্তরাল গতি এবং মানব সম্পর্কের অসমাপ্ততার এক গভীর রূপক। জীবনের কিছু পথচলা হয় পাশাপাশি, কিন্তু ছুঁয়ে যাওয়ার নয়। সবুজ প্রকৃতির মাঝে বয়ে চলা রেললাইন ও পাশে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা এক লজ্জাবতী ফুল যেন উপন্যাসটির গভীরতা ও সংবেদনশীলতার প্রতীক হয়ে ওঠে।সাদিউজ্জামানের নান্দনিক প্রচ্ছদটির কথা না বললেই নয়। এক কথায় চমৎকার হয়েছে। আর অন্যপ্রকাশের পরিচিত মানসম্পন্ন প্রকাশনা বইটি পড়ার অভিজ্ঞতাকে করে তুলেছে আরও স্বচ্ছ ও আরামদায়ক। ? পুরোনো পথের রেখা” শুধুমাত্র একটি প্রেমের গল্প নয়, এটি সময়, সম্পর্ক এবং বেঁচে থাকার এক মৃদু দার্শনিক অনুরণন। পাঠ শেষে এক ধরনের নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হবেন, আর ভেবে বসবেন—“কী হতো যদি সময়টা একটু অন্যরকম হতো?” এই বই শুধু চোখ নয়, মন দিয়ে পড়তে হয়। তখনই বোঝা যায়, কেন কিছু লেখা হৃদয়ে গেঁথে যায় চিরকাল।
Was this review helpful to you?
or
অনুভুতিকথন পুরনো পথের রেখা। লেখক: আফিফা পারভীন। চমৎকার প্রচ্ছদের ছোট্ট একটা বই। এক বসায় পড়ে শেষ করার মতো। কিন্তু পাঠকটা আমি বলেই শেষ করতে সময় লেগে গেল কিছুটা। কিন্তু ভালো লাগার রেশ যেন কাটছে না এখনো। লাবণ্য আর অর্ক মাহমুদ শিকদারের সাথে পুরনো পথের রেখা ধরে হাঁটতে আমিও হারিয়ে গিয়েছি চমৎকার স্মৃতিময় কিছু শৈশব ও কৈশোরে। যেহেতু সীমিত পাত্র-পাত্রী আর যাপিত জীবনের খুব সামান্য একটা অংশ এই বইয়ের উপজীব্য তাই মনে হচ্ছে একটা কিছু বলতে গেলেও স্পয়লার হয়ে যাবে। যা আমি সবসময় এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করি। তাই গল্প নিয়ে কিছু বলব না। গল্পটা মূলত দুই বন্ধুর অনেকদিন পর হটাৎ দেখা হয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়। এরই সূত্র ধরে বয়ে চলে বাকি ঘটনা প্রবাহ। আমার মনে হয়েছে আমিও যেন এদের হাত ধরে আমাদের সাধ্ন স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তে চলে গেছি স্যারের বাসায়। স্মৃতি থেকে উঠিয়ে এনেছি স্কুল জীবনের সেই বন্ধুদের। স্কুল লাইফে বন্ধুদের পক্ষ থেকে নিজের এবং অন্যদের বার্থডে সেলিব্রেশনটাও মিস করেছি। এই অংশটা আসলেই ভীষণ ভীষণ টাচি। লেখক আপু, তার চরিত্রদের হাতে ধরিয়ে যেন নিয়ে গেছেন আমাদের অতীতে। ঠিক এই বিষয়টির জন্য আপ্নাকে আলাদাভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। এই বইয়ে শুধু মধুর স্মৃতি দিয়েই ভরপুর নয়, বরং মিশে আছে চরম বাস্তবতার করুণ উপস্থিতি। মা হারা হয়ে গেলে একটা সন্তান কতটা করুণ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যায় কিছুটা হলেও আমরা জানি। এখানেও তার দেখা মেলে। আবার সারাজীবনের সঞ্চিত স্বপ্ন নিয়ে একটা মেয়ে যখন সংসারে পা রাখে, সেই স্বপ্নের সংসার তার কতটা সুখ ও শান্তির আবাস হয় এটাও দেখলাম। আসলে একটা সংসারে মেয়েদেরকে কতটা মুল্যায়ণ করা হয়, কিসের ভিত্তিতে করা হয় তার নিজের যোগ্যতার জোরে - সভ্য জগতের বাসিন্দা হয়েও আমরা অনেকেই তা এখনো জানি না। আফিফা আপু এই গল্পে অত্যন্ত যত্ন নিয়ে তার গল্পের রেখা টেনে গিয়েছেন। তিনি বরাবরই তা করেন, তবে দিনদিন তার লেখা যেন আরও বেশি পরিপক্ক হচ্ছে একেকটা নতুন বই যেন তার সাক্ষর রেখে যায়। তবে লেখক যেমন তার অন্যান্য বইয়ের ক্ষেত্রে প্রথমে তার ভিত আস্তে-ধীরে তৈরি করেন, ধীরে ধীরে কাহিনির গভীরতায় পৌঁছান, এই বইয়ের ক্ষেত্রে তা হয়নি। শুরুটা যেন একটু অন্যরকম সৌন্দর্যে ভরপুর ছিল, কিছুটা চুম্বকীয়। এরপর কী হলো - ধরনের। ভীষণ ভালো লেগেছে আমার। আপুর লেখায় আমার সবচেয়ে বেশি যেটা পছন্দ তা হচ্ছে একদম বাস্তবতার আলোকে সাজানো প্লট, নির্ভুল বানান আর সাবলীল লেখায় সমৃদ্ধ শব্দভাণ্ডার। কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলোও হয় ব্যক্তিত্ববান, সাহসী। অর্ক মাহমুদ শিকদারের গম্ভীর ও সাহসী ব্যক্তিত্ব যেমন পাঠক মাত্রই মন কেড়ে নেয় তেমনি লাবণ্য মেয়েটাও সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে যেমন পারে তেমনি তার ব্যক্তিত্ব ও সাহসী পদক্ষেপও আমাদের মুগ্ধ করে। আবার বইয়ের সাথে কাটানো দারুণ কিছু সময়ের সাথে বিশাল পাওনা হলো অর্কের মতো নি:সার্থ বন্ধু, মামুনের মতো উদার ও চমৎকার মনের লয়্যাল একজন বন্ধু আর দৃঢ়চেতা লাবণ্য ও তার সাহসী ব্যক্তিত্ব - যা সত্যিকার অর্থেই পাঠক মনে প্রভাব ফেলে। যেন মনে হয় এমন একটা বন্ধুত্ব যদি আমারও হতো। না বলা মনের কথা গুলো নির্দ্বিধায় কেউ একজন বুঝে যেত। যদি সত্যিকার এমন একজন বন্ধু পেতাম যার কাছে মনের আগল খুলে অব্যক্ত কথাগুলো গচ্ছিত রাখা যায়। এমন বন্ধুত্ব হয়তো সেইই ছোট্টবেলায় পাওয়া যায় আর ভাগ্যবানরা সেই পুরনো পথের রেখায় হেঁটে গিয়েও তাদেরকেই পায়। আফিফা আপুর বইয়ের আরেকটা বিশেষ দিক হচ্ছে, তার বই পড়তে পড়তে হটাৎ প্রচ্ছদটা জীবন্ত হয়ে চোখের সামনে ভেসে উঠে। এই প্রচ্ছদটাও তেমনি এত জীবন্ত এত্ত ভালো লাগা তৈরি করেছে যে ইচ্ছে করে একটাবার হলেও হেঁটে যাই ঐ রেললাইন ধরে কিংবা কুড়িয়ে আনি কয়েকটা স্নিগ্ধ লজ্জাবতী ফুল। কিংবা একটিবার গিয়ে বসি দুই বন্ধুর সেই প্রিয় জায়গায়। এখন বইয়ের দিকে তাকালেই যেন গল্পটাও চোখে ভাসে। সবশেষে এটাই বলব, একটা চমৎকার বইয়ের সাথে সময় কাটলো আমার। তিক্ত,মিষ্ট সবমিলিয়েই তার উপস্থাপন। পজিটিভ মানুষজনের পাশাপাশি কিছু নেগেটিভ আদর্শের চরিত্রের উপস্থিতিও আছে এখানে। তাদের পরিচয় না হয় পড়তে গিয়েই উন্মোচন হোক। এত চমৎকার, দারুণ একটা বইয়ের জন্য প্রিয় লেখকের জন্য একরাশ ভালোবাসা আর শুভকামনা সবসময়। এমন বইয়ের অপেক্ষায় থাকব সবসময়।
Was this review helpful to you?
or
অনুভূতি কথন এক বসাতেই পড়ে শেষ করলাম পুরোনো পথের রেখা বইটি। অনেকদিন থেকে কোন বই পড়তে পারছিলাম না। আমি বই পড়া মানুষ, বই পড়তে না পারলে , কেমন যেন লাগে, অস্বস্তিতে ভুগি। পুরনো পথের রেখা বইটি মূলত একটি সন্ধ্যা, একটি রাতের গল্প এবং তার সাথে যোগ হয়েছে অতীতের কিছু স্মৃতি। ভালো লেগেছে বইটি পড়তে। এই বইতে কিছু অংশে রেললাইনের আশেপাশের কিছু বর্ণনা আছে, যা আমাকে নস্টালজিক করে দিয়েছে। আমার বাবার রেলওয়ের চাকরির সুবাদে, শৈশব কৈশোর রেললাইনের আশেপাশে কেটেছে। কী যে সুন্দর ছিলো সেই দিনগুলো। আপুর বর্নণা তো,সব সময়ই অসাধারণ হয়। অর্ক লাবন্যর সাথে আমিও যেনো , সেই রেললাইনের ওপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। ভালো লেগেছে অর্ক, লাবন্যকে। আর মামুনকে ও। এমন দু' একজন বন্ধু জীবনে থাকলে আর কিছুই লাগে না। প্রমো পোস্ট পড়ার র পর থেকেই অর্ক মাহমুদ শিকদারের অপেক্ষায় ছিলাম। অপেক্ষা সার্থক হয়েছে। অনেক কিছু লিখে ফেললাম। ভূল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন সবাই, আশা করছি। আফিফা পারভীন আপু খুব ভালো লেগেছে বইটি। দিন দিন আপনার লেখাকে আপনিই ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। মাশাআল্লাহ।। সবসময় ভালো থাকুন আপু, ভালো লিখুন। আরো বেশি বেশি বই আসুক আপনার। শুভকামনা সবসময় ?
Was this review helpful to you?
or
#অনুভূতিকথন "পুরোনো পথের রেখা" উপন্যাসটি এমন এক অনুভূতির জগতে নিয়ে যায়, যেখানে ভালোবাসা, ব্যথা, বিশ্বাসঘাতকতা, আত্মোপলব্ধি আর নতুন করে শুরু করার আশা একসঙ্গে মিলেমিশে যায়। এটা শুধু প্রেমের গল্প না, বরং জীবনের বাস্তবতা আর সম্পর্কের জটিলতার একটা গভীর প্রতিচ্ছবি। উপন্যাসের শুরু হয় এক ধরনের একাকীত্বের ছায়া দিয়ে। চারপাশে রঙিন পরিবেশ, কিন্তু মনটা ভারী হয়ে থাকে। এই মন খারাপের অনুভূতি যেন আমাদের জীবনের কোনো চুপচাপ সন্ধ্যাবেলার মতো।যেখানে কেউ পাশে নেই, কিন্তু অনেক কিছু বলার ছিল। উপন্যাসটিতে ভালোবাসার প্রত্যাশা আছে, আবার সেই ভালোবাসা না-পাওয়ার কষ্টও আছে। সম্পর্কের অবহেলা, না-বলা কথা, আর ছোট ছোট ভুল বোঝাবুঝি, সব মিলিয়ে মনকে এক ধরনের ভারি বিষণ্নতায় ভরে দেয়। তবুও, ঠিক সেই সময়ই গল্পে আসে একটা আলোর রেখা। পুরোনো কেউ ফিরে আসে, হাত বাড়িয়ে দেয়, আর সেই মুহূর্তগুলো মনে একটা শান্তি এনে দেয়। উপন্যাসের মধ্যভাগে যখন অতীতের স্মৃতির দিকে ফিরে তাকানো হয়, তখন সেটা একেবারে আমাদের নিজেদের স্কুলজীবনের মতো মনে হয়। বন্ধুদের সঙ্গে হাসি, ছোট ছোট দুষ্টুমি, আবার হঠাৎ হঠাৎ মন খারাপ, সবই যেন চোখের সামনে ভেসে ওঠে। এই পুরোনো দিনের কথা ভাবতে ভাবতে একটা মিষ্টি ব্যথা বুকে জমে যায়। তবে এই পুরোনো স্মৃতির সঙ্গে আসে কিছু কঠিন সত্যও।পরিবারের অবহেলা, কাছের মানুষকে হারানো, কিংবা ভালোবাসার মানুষ দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতার কষ্ট। অর্ক চরিত্রের সবচেয়ে উজ্জ্বল দিক হলো তার নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। সে এমন একজন, যে অন্যের সুখ ও সম্মানকে নিজের চেয়ে বেশি মূল্য দেয়। তার ব্যবহারে একটা গভীর সংবেদনশীলতা প্রকাশ পায়, যেখানে সে কাউকে বোঝার চেষ্টা করে, তাদের কষ্টে পাশে দাঁড়ায় এবং কখনো নিজের অনুভূতি জোর করে চাপিয়ে দেয় না। এই নিঃস্বার্থতা তাকে এমন একজন করে তোলে, যার উপস্থিতি অন্যের জন্য আশ্রয়ের মতো। লাবণ্যের জীবন কষ্ট ও একাকীত্বে ভরা। পরিবারের অবহেলা, সম্পর্কের মধ্যে অপূর্ণতা এবং সামাজিক চাপ তাকে বারবার ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তার এই কষ্টের মধ্যেও একটা গভীর স্থিতিস্থাপকতা লক্ষণীয়। সে কষ্টে ডুবে যায়, কিন্তু হাল ছাড়ে না। লাবণ্যের চরিত্রের একটি শক্তিশালী দিক হলো তার সাহস। জীবনের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তে, যখন সে অপমান ও বিপদের মুখোমুখি হয়, তখন সে নিজের সম্মান রক্ষার জন্য লড়াই করে। তার এই সাহস শুধু প্রতিবাদে নয়, নিজেকে নতুন করে গড়ে তোলার সিদ্ধান্তেও প্রকাশ পায়। তার আত্মমর্যাদার প্রতি এই অটলতা তাকে একজন শক্তিশালী নারী হিসেবে চিত্রিত করে। মামুনের চরিত্রের সবচেয়ে উজ্জ্বল দিক হলো তার বন্ধুত্ব। সে এমন একজন বন্ধু, যে কথার চেয়ে কাজ দিয়ে, নীরব উপস্থিতি দিয়ে বন্ধুর পাশে থাকে। তার বন্ধুত্বে কোনো স্বার্থ বা জটিলতা নেই; এটি নিষ্পাপ, আন্তরিক এবং গভীর। সে বন্ধুদের কষ্ট বোঝে, তাদের মনের কথা শোনে এবং ঠিক সময়ে সঠিক সমর্থন দেয়। তার এই গুণ তাকে গল্পে একটি নির্ভরযোগ্য সেতুবন্ধন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। উপন্যাসটিতে কিছু প্রতীকী জিনিসও আছে, যেগুলো খুব সুন্দরভাবে জীবনের গভীর অর্থ প্রকাশ করে।যেমন- লজ্জাবতী ফুল, রেললাইনের পথ, কিংবা নতুন ফুল ফোটা। এগুলো যেন বলে, জীবনে কষ্ট থাকবেই, কিন্তু সেই কষ্টের মধ্যেই একদিন নতুন কিছু জন্ম নেয়। উপন্যাসের শেষটা যেন এক নতুন ভোরের শুরু। নতুন জীবন, নতুন স্বপ্ন, আর পুরোনো ব্যথার ভেতর থেকেও একরাশ শান্তি। মনে হয়, জীবনের পথটা যেমনই হোক, ঠিক সময়ে যদি ঠিক মানুষ পাশে থাকে, তাহলে আমরা সবাই আবার নতুন করে হাসতে পারি, ভালোবাসতে পারি। বই: পুরোনো পথের রেখা। লেখিকা: আফিফা পারভীন।
Was this review helpful to you?
or
#পাঠ_অনুভূতি বই: পুরোনো পথের রেখা লেখক: আফিফা পারভীন চমৎকার একটা বই পড়ে শেষ করলাম। একদম মিষ্টি মিষ্টি আবেশে ডুবে থেকেছি পড়ার সময়। আপুর লেখা নিয়ে নতুন করে কি বলবো, যারা পড়েন তারা অবশ্যই জানেন আপুর লেখার হাত মাশাআল্লাহ। লৈখনশীল, শব্দচয়ন প্রকৃতিক বর্ণনা অনেক দারুণ। প্রত্যক বইতে সমাজের বাস্তবতা, শিক্ষনীয় দিক তুলে ধরেন। ঠিক তেমনি পুরোনো পথের রেখা বইতেও কিছু শিক্ষনীয় দিক ও সমাজের নির্মম বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। লাবণ্য, অর্ক, মামুন, শিলা, মিথিলা, ইশরাক ওদের জীবনের কঠিন বাস্তবতা, সুখের অনুভূতি সবকিছু মিলে চমৎকার একটা বই। অর্ক, লাবণ্য দুইজনে সহপাঠী। কিন্তু দুইজের মধ্যে রয়েছে অনেক দুরত্ব একজন ফার্স্ট গার্ল আরেকজন ব্যাকবেঞ্চার। মানুষের জীবনে দুঃখ কখনো বলে কয়ে আসে না ঠিক তেমনি লাবণ্যের জীবনে ও দুঃখ এসেছিলো। আমাদের সমাজে লাবণ্যের মতো অনেক মেয়ে আছে তারা এসব মুখ বুজে মেনে নেয়। উচু শ্রেণীর মানুষরা ঠিক আদিলের মতো বউকে মানুষ বলেই মনে করে না। আমাদের আশেপাশে লাবণ্যের মতো অনেক মেয়ে পাওয়া যাবে। লাবণ্য আসলেই ভাগ্যবতী। তার পাশে অর্কের মতো একজন মানুষ ছিলো বলে এমন পথ থেকে সরে আসতে পারছে। অর্ক মাহমুদ শিকদার ধৈর্য্যের প্রতীক একদম। আগে আপুর লেখা চরিত্রদের মধ্যে তিতাসকে সবচেয়ে ধৈর্য্যশীল মনে করেছিলাম, এখন তার তাশে অর্কের নামটাও যোগ হলো। একতরফা ভালোবাসা, ভালোবাসার প্রতি অগাত বিশ্বাস। কত কত কষ্ট যে সহ্য করেও বিশ্বাস হারাইনি ভালোবাসার প্রতি। তার নিঃসার্থ ভালোবাসার জয় হতে দেখে কি যে আনন্দ লেগেছে। দুইজন বন্ধুর পুরোনো পথের রেখা এসে মিলে গেছে। এখন লজ্জাবতী ফুল আর রেললাইন দেখলেই আমার অর্ক আর লাবণ্যের কথা মনে পড়বে।
Was this review helpful to you?
or
?পুরোনো পথের রেখা ~পুরোনো পথের শুরু গল্পের তিন ভাগের দুই ভাগ গোটা এক রাতকে কেন্দ্র করে। পড়ন্ত বিকেলে হঠাৎ মুখোমুখি হয় ভিন্ন পথের দুজন মানুষ। কিন্তু এই মানুষদ্বয়ের একটা মিল হলো দুজনই একটা সময় একই পথের পথিক ছিল। এরপর তো যে যার পথে অনেক হাঁটা হলো আর তারপর তাদের অনাকাঙ্ক্ষিত আকস্মিক সাক্ষাৎ। এই সাক্ষাৎ ভিন্ন পথে চলা দুজন মানুষের জীবনপথকে ঠিক কতখানি পরিবর্তন করে দেয় আর সেই পরিবর্তনের কতটা জুড়ে আছে "পুরোনো পথের রেখা" সেটা জানতেই বইয়ের গভীরে ডুবে যাচ্ছিলাম। ~স্মৃতিতে পুরোনো দিন গল্পের বেশ অনেকটা জুড়েই দুজন সহপাঠীর পুরোনো স্মৃতি বিলাস। এদের ঠিক বন্ধু বলা যায় না কারন ফার্স্ট গার্ল লাবণ্য আর ব্যাকবেঞ্চার অর্কের দুুরত্ব যে অসীম ছিল। দুজন দুজনকে এড়িয়ে এড়িয়েই চলতো। অথচ এই দুরত্বের পরেও তাদের দুজনের স্মৃতিতে আজও অমলিন ফেলে আসা সেই পুরোনো দিন, বন্ধুমহল আর সেই রেললাইন আর তারার মতো জ্বলজ্বলে লজ্জাবতী ফুল। অর্ক আর লাবণ্যর স্মৃতিগুলো, সেগুলোকে নিয়ে তাদের ভাবনা পড়ার সময় বেশ স্মৃতিকাতর হয়ে যাচ্ছিলাম। আমার ফেলে আসা সেই পুরোনো পথের স্মৃতিকে জাগিয়ে তুলছিল যেন বইটা। লাবণ্যর মতো আমারও একটা সময় মনে হচ্ছিল, "আর একটি বার আয়রে সখা, প্রাণের মাঝে আয় মোরা সুখে দুখের কথা কবো, প্রাণ জুড়াবে তায়।" ~ নতুন করে পুরোনো মানুষ স্মৃতিময় মুহূর্তগুলো রোমন্থনের ফাঁকে ফাঁকে পুরোনো মানুষটাকেই নতুন করে আবিষ্কার করছিলো অর্ক, লাবণ্য। বহুবছর পর দেখা মানুষটাকে যেন মিলিয়ে নিচ্ছিলো আগের চেনা মানুষটার সাথে। দুজনের জীবনেই তো এসেছে বিস্তর পরিবর্তন। লাবণ্যের জীবনের পথ জুড়েছে আদিলের সাথে আর অর্কের জীবনে এসেছে আরেক জীবনপথ - অগ্নি। ফেলে আসা দিন, বর্তমান সময় এসব নিয়ে দুই সহপাঠীর বিস্তর আলাপ, কিছু আরাধ্য প্রশ্নের উত্তর, নিষ্পাপ আলাপ - আমাকে বেশ আবেশে ডুবিয়ে রাখছিল। পড়ছিলাম আর ভাবছিলাম - পুরোনো পথ কি নতুন দিনের হাতছানি কখনো দেয়? ~ পুরোনো পথে নতুন দিনের হাতছানি আমাদের জীবনে অনেক কিছুর অভাব। তবে একটা মানুষের অভাব সেটা বড় কষ্টের। জীবনের চূড়ান্ত খারাপ সময়েও মনে জোর থাকে যদি কেউ নিভৃতে, নীরবে হলেও পাশে থাকে ঠিক রেললাইনের পাতের মতো। সমান্তরালে থাকুক, তবুও থাকুক - এমনটা মনে হয়। একটুখানি ভরসা, একটুখানি স্বস্তি কিংবা মনের মাঝে চেপে রাখা পাথরকে সরিয়ে একটু হালকা অনুভব করতে একজন মানুষ থাকা আবশ্যক - সে বন্ধুই হোক কিংবা সঙ্গী। অর্কের জন্য মামুন, লাবণ্যর জন্য অর্ক - এই বন্ধুত্বগুলোই যেন আগমনী সঙ্গীতে অভ্যর্থনা জানাচ্ছিল সবুজ গুল্মের বুকে তারার মতো জ্বলতে থাকা গোলাপী লজ্জবতীর মতো নতুন সুন্দর দিনের। ~পুরোনো পথের রেখা বেশ অনেক দিন পর একটানা একটা বই পড়লাম। অনেকখানি উপভোগ করেছি বইটা পড়ে আর সাথে কিছু জীবন সমীকরণ মেলানোর উপলব্ধি, প্রশান্তি - এই ছিলো প্রাপ্তি। বন্ধুত্ব, কাম, দাম্পত্য, কামহীন প্রেমের যথার্থতা, মানব মনের গোপনীয় পান্ডিত্য,নারীর অসহায়ত্ব, প্রকৃতির সৌন্দর্য, স্বার্থের লড়াই, প্রেম-অপ্রেম, প্রতারণা, স্বস্তি, সুখ-দুঃখ, স্মৃতিকাতরতা- এসব আবেগ আর অনুভূতির সংমিশ্রণে লিখিত বই "পুরোনো পথের রেখা"। বইয়ে আমার সবচেয়ে পছন্দের চরিত্র লাবণ্য। মা মারা যাওয়ার পর থেকে তার জীবনসংগ্রাম, নিজেকে টিকিয়ে রাখতে তার প্রচেষ্টা- এই সবকিছুই তাকে একটু একটু করে আমার মনের কাছে নিয়ে এসেছে। আভিজাত্যের খাঁচায় বন্দি লাবণ্য, ফুলপুরের সেই মিষ্টি লাবণ্যময়ী কিংবা উড়ন্ত গাংচিলের ন্যায় বাঁচার স্পৃহা রাখা লাবণ্য - সব রুপেই লাবণ্য আমার প্রিয়। সব প্রেম শরীর ছোঁয় না কিছু প্রেম মন ছুঁয়ে যায় এবং তা বছরের পর বছর চলমান থাকে চোরা ফল্গুধারার মতো। রেললাইনের মতো সমান্তরালে থেকে এরা থেকে যায় পাশে, অনন্তকালের জন্য। এখানে প্রেম রয়ে যায় লজ্জাবতী ফুলের মতো নিভৃতে, আলগোছে।
Was this review helpful to you?
or
এই বইটাকে আমি বলব বিষণ্ণতায় মোড়ানো এক টুকরো নরম আলো যা তীক্ষ্ণ সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচিয়ে জীবনে একপশলা প্রভাত নিয়ে আসে। সমাজের নিগূঢ় বাস্তবতার প্রতিরুপ হিসেবে শিলা,লাবণ্য,মিথিলা,ইশরাক,অর্কদের লড়াই করে হয় জীবনযুদ্ধে জয় লাভ করে নাহয় আজীবনের মতো হারিয়ে যেতে হয় কালের গহৃরে। বাস্তবতা বড়ই বি ষা ক্ত , ভয়া বহ। মানুষের চেয়ে বিষাক্ত প্রাণী এই প্রাণীজগতে নেই বোধহয়... কিছুকিছু মানুষের অপেক্ষার পূর্নতায় আমরা উন্মুখ হয়ে থাকি কখন সেই সুন্দর মুহূর্তটা আসবে।অর্ক আর লাবন্যর পুরোনো পথের রেখার মিল হওয়াটা হতেই হতো নাহলে এতো অপূর্ণতা ঠিক মানাতো না। আমি বইটা হাতে নিয়েই ভেবেছিলাম আমি পড়তে গিয়ে হয়তো থমকে যাব। কারন একটা রাত যে কারও জীবনে কতটা ওলটপালট করতে পারে সেটা জানা হতো না। আপুর লেখা বরাবরই থমকে দেওয়ার মতো... বড় একটা দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে আবার শুরু করে প্রশান্তির নিশ্বাস টেনে নিই।
Was this review helpful to you?
or
"পুরোনো পথের রেখা" ছোটবেলায় ট্রেন জার্নিটা মোটামুটি ভালোই করা হতো। আর বাসাটাও ছিল রেলওয়ে কলোনিতে। একারণে রেলগাড়ি, রেললাইন, রেললাইনের পথ ধরে হেঁটে যাওয়া এই বিষয়গুলি এমনিতেই ভালো লাগার একটা জায়গা জুড়ে আছে। বইয়ের প্রচ্ছদে রেললাইন থাকায় তাই হয়তো শুরু থেকে প্রচ্ছদটাও একটু অন্যরকম ভালোলাগার ছিল। একটা সময় রেললাইনের পাশে কিছু বুনো ফুল খুব দেখা যেতো, খুব পছন্দের ফুলটা। অনেক পরে জেনেছি সেই ফুলের নাম 'ল্যান্টেনা'। এই বইতে যদিও লজ্জাবতী ফুলের কথা বলা হয়েছে কিন্তু রেললাইন, তার পাশে ফুটে থাকা বুনো ফুল, বন্ধুদের সেই পথ ধরে হেঁটে চলা সবকিছুই মনে হচ্ছিল আমাকে পুরোনো দিনগুলোয় একটু করে ঘুরিয়ে নিয়ে আসলো। লেখক আফিফা পারভীন বইগুলোতে চরিত্রগুলো সবসময় এমনভাবে তুলে ধরেন যখন যাকে পড়ি তাকেই ভালো লাগে। সব চরিত্র তাদের নিজ নিজ জায়গায় যথার্থ মনে হয়। এই যে, অর্ক আর লাবণ্যকে এতো ভালো লাগলো পড়তে এটা কিন্তু লেখকের লেখনির অন্যতম একটা দিক হিসেবেই মনে হয়। কারণ,ভালো লাগাটা শুধু নায়ক,নায়িকা বা প্রধান চরিত্র বলেই নয়। মানুষ হিসেবে দুজনের মনোভাব, আচার-আচরণ, দায়িত্বশীলতা, মানুষকে সম্মান করতে পারা আর চারপাশের মানুষের প্রতি যেমন হওয়া উচিত তেমন করেই আমরা তাদেরকে পাই লেখকের লেখায়। প্রকৃতির সান্নিধ্যে এলে মানুষের মন যেমন ভালো হয় তেমনি মনের মধ্যে প্রকৃতির বিশালতার একটা সুন্দর প্রভাব সবসময়ই পড়ে। প্রকৃতির সুন্দর বর্ণনা পড়লেও মন ভালোলাগায় আচ্ছন্ন হয়। বইয়ে প্রকৃতির বর্ণনাগুলো একটু করে হলেও পাঠক মনে ভালোলাগার সুন্দর একটা রেশ রেখে যাবে, অনেকক্ষণ। কিছু বই শুরু থেকে একটা সময় পর্যন্ত যেমন করে ভালো লাগে পড়তে শেষ হতে হতে কেন জানি সেই ধারাটা বজায় থাকে না। প্রায় সময়েই সমাপ্তিগুলো এমন হয় মনে হয় যেন, জোর করে নাটকীয়ভাবে শেষ করার জন্যই লেখা। গল্প, উপন্যাসে নাটকীয়তা থাকাটা যেমন স্বাভাবিক তেমনি সেই নাটকীয়তাকে মানানসই করে লিখতে পারাটাও লেখকের একটা বিশেষ গুণ বলে মনে হয়। "পুরোনো পথের রেখা" শুরু থেকে অনেকটা সময় পর্যন্ত যেমন ভালো লেগেছে শেষেও তেমন লাগবে কি না এটা নিয়ে ভাবছিলাম পড়তে পড়তেই। শেষ হতে হতে মনে হলো, এই বইটার এই সমাপ্তিটাই যথার্থ ছিল।
Was this review helpful to you?
or
আজকে একবসায় বইটা শেষ করেছি। বইটা পড়ে প্রত্যেক বারের মতো আত্মতৃপ্তির টেকুর তুলেছি।সত্যিই জীবনের কখনো মোড়ে গিয়ে পুরোনো পথের রেখা ধরে এগোতে।ব্যাকবেঞ্চার অর্ক মাহমুদ আর ফাস্ট গার্ল লাবণ্যের জীবনের পুরোনো পথের রেখা অসাধারণ লেগেছে। তাদের এই পথযাত্রা সহজ ছিল না। প্রত্যেক চরিত্রর মধ্যে একটা চরিত্র সব সময় আমার মনে দাগ কে টে যায়।এই উপন্যাসের আমার প্রিয় চরিত্র ছিলো অর্ক।?
Was this review helpful to you?
or
ভালোলাগা, মন্দলাগা এই অনুভূতিগুলো শব্দের বুননে বাক্য তৈরি করে সামনে উপস্থাপন করতে পারাটাও একটা আর্ট দুর্ভাগ্যবশত যেটা আমার নেই।। অবশ্য আফসোস ও করি না তবে চেষ্টা করি।।। যাই হোক " পুরনো পথের রেখা " বইটার প্রসঙ্গে অনুভূতিগুলো গুছিয়ে উঠতে অনেক সময় লেগেছে তাই যতটা পারছি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।।। বইয়ের চরিত্রগুলো এবং ঘটনাপ্রবাহ প্রত্যেকটা একটা আরেকটার সাথে প্রাসঙ্গিক।। যতক্ষণ না আপনি পড়বেন এবং চরিত্র গুলো কল্পনায় আনবেন বইটা প্রকৃতপক্ষে উপভোগ করা যাবে না।। লেখিকার লেখার গুণে চরিত্রগুলো কল্পনায় এমনেই চলে আসবে।।৷ অর্ক শিকদারের প্রগাঢ় ব্যক্তিত্ব, ভালোবাসার গভীরতা এবং আগলে রাখার গুণ সব মেয়েদের উইশ লিস্টে থাকে।।। পাশাপাশি লাবণ্যর মতো সুন্দরী, মেধাবী, আত্মসম্মানে ভরপুর কিন্তু কমনীয় এবং নমনীয় নারী ও চাহিদার শীর্ষে অবস্থান করে।।। প্রকৃতির সাথে নিজেদের ভালোবাসার আদান প্রদান বরাবরই অন্যরকম।। কিছু সৎসঙ্গ এবং কিছু অসৎসঙ্গ আবার কিছু স্বার্থপর এবং নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, বন্ধুত্ব এবং আত্মীয়, অনাত্মীয়ের ন্যায্য অন্যায্য দাবি,ন্যায়, অন্যায় সবকিছুর মেলবন্ধনের পরিপূর্ণ প্যাকেজ এই বইটা।। যেখানে মেজাজ যেমন একটা পর্যায়ে অনেক খারাপ হবে আবার অন্য জায়গায় এসে মনে প্রশান্তির একটা আবেশ তৈরি হবে।।।। অনেক কিছু উল্টা পাল্টা লিখেছি হয়তো।।। আফিফা পারভিন আপুকে ধন্যবাদ এবং শুভকামনা।। ???
Was this review helpful to you?
or
#অনুভূতিকথন আধাঘন্টা আগেই বই পড়ে শেষ করেছি।কি লিখব ভাবতে ভাবতে এতটা দেরি। কিন্তু যেহেতু আমি গুছিয়ে কিছু বলতে পারিনা তাই দেরি করে লাভনেই ভেবেই ছোট্ট অনুভূতি জানাতে এলাম। বইটা আসলে কেমন লাগছে এটা আমার মনে হয় বলে বোঝানো থেকে পড়ে অনুভব করাটা বেস্ট হবে।বপ্পার লেখায় সব সময়ই কিছুনা কিছু মেসেজ থাকে আমারমতে।এখানেও সেটা বিদ্যমান, আছে সমাজের কিছু অসংগতি ও।সেসবে যাবনা।শুধু বলব বইটি আমি একবারে পড়ে উঠেছি।এখন ও বুদ হয়ে আছি বইয়ের ঘোরে স্পেশালি জায়গাগুলো মনে হয় ফীল করলাম। আর ব্যাকবেঞ্চার অর্ক মাহমুদ শিকদার জাস্ট লাভ দ্যা পারসন। কিছু বলতে গেলেই স্পয়লার হয়ে যাবে।জীবনে মামুন ওর মত একটা বন্ধু /বড়ভাই থাকলে আর কি লাগে। বইটা বারবার পড়তে ইচ্ছা করবে বারবার। ?????
Was this review helpful to you?
or
#পাঠ্যানুভূতি #পুরোন_পথের_রেখা বইটায় সমাজের বাস্তবচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ভাগ্য আমাদের কাকে, কখন, কোথায় নিয়ে যাবে আমরা সেটা জানি না। লাবণ্য যেন তার নামের মতোই লাবণ্যময়। বিয়ে একটা পবিত্র বন্ধন। এই পবিত্র সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন দম্পতিদের একে অপরকে সম্মান করা। সম্মান, বিশ্বাস, ভালোবাসা না হলে কি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যায়? আমার মতে যায় না।যেই সম্পর্কে এই তিনের একটিও ঘাটতি দেখা দেয় সেই সম্পর্ক বয়ে নেওয়ার ভাড় কারো উপর না পড়ুক। আমি বইটা পড়ছিলাম আর ভাবছিলাম যে লাবণ্য একটা নির্ভার সুখী জীবন ডিজার্ভ করে। অর্কের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার মনোভাবে আমি আশ্চর্য হয়েছি। সে যেন স্বতন্ত্রভাবে এগিয়ে গেছে পুরোটা গল্পজুড়ে। ব্যাকবেঞ্চার অর্ক মাহমুদ শিকদার ও স্কুলের ফার্স্ট গার্ল আফরা ইয়াসমিন লাবণ্য! তাদের হঠাৎ দেখা হওয়ায় পুরোনো পথের রেখা ধরে আবারো যাত্রা শেষ পর্যন্ত আমার প্রশান্তির কারণ হলো। আমি গুছিয়ে লিখতে পারছি না । আমার মনে হয় এই বইটা পড়ে অনুভব করার বিষয়। লিখে প্রকাশ করতে ব্যর্থ হচ্ছি আমার অনুভূতি। ১২:৪৭ মিনিটে বই পড়ে শেষ করে কিছুক্ষণ সুখ সুখ আবেশে ডুবে থেকে ১:০৫ মিনিটে অনুভূতি লেখার চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হচ্ছি। আমার ভাবনায় এই মুহূর্তে বইয়ের প্রতিটা চরিত্রের বিচরণ রয়েছে। ভাবনার ঘরে সব চরিত্রের বিচরণ হওয়ায় কিছু চরিত্রের উপর বেহিসেবি রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে যাচ্ছি। তেমনি রাগ ভুলে আমি সুখ সুখ আবেশে চোখ বুজে শুধু অনুভব করছি সেই লজ্জাবতী ফুল ও ফুলের সৌন্দর্য।
Was this review helpful to you?
or
পাঠ-অনুভূতি পড়ে শেষ করলাম পুরোনো পথের রেখা। এখনো মন জুড়ে রয়েছে সেই আবেশ। অনেক কিছু বলতে মন চাচ্ছে, কিন্তু আপুর লেখা নিয়ে অনুভূতি প্রকাশে আমি বরাবরই শব্দের অভাব বোধ করি। তাই যা যা বলতে চাই সবটা ঠিকভাবে বলা হয়ে উঠে না। বইটা একটা আবেশ, পড়া শুরু করলে শেষ না করে থাকা যায় না। একবার পড়া শুরু করলে বইয়ে ডুবে যেতে হয়। এই বইটাতে সমাজের সেই সব মেয়েদের জীবনের কষ্ট দেখানো হয়েছে, যারা বৈধ সম্পর্কের জেরে কিছু স্বামী নামক নরপশুর কাছে দিনের পর দিন লাঞ্ছিত ও অসম্মানিত হয় এবং মাঝে মাঝে পরিস্থিতি তাদের এতটাই প্রতিকূলে থাকে যে মুখ বুঝে এসব লাঞ্ছনা সহ্য করা ছাড়া কোনো উপায়ও থাকে না। এই যে তাদের কষ্ট, যন্ত্রণাকাতর দিন এগুলো কিন্তু সমাজ দেখে না, খোঁজও রাখে না, কিন্তু যখনি এমন নরক থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করে তখন এই সমাজই আসে আঙুল তুলতে, অপবাদ দিতে। এটাই হলো এই সমাজের কাজ। এই সমাজে পুরুষ নামক এমন অনেক কাপুরুষ আছে যারা বউকে কেবল ভোগের পণ্য মনে করে। আবার এইসব কাপুরুষের বিপরীতে অর্কের মতো সুপুরুষও আছে। অর্ক মাহমুদ শিকদার হি ইজ আ ম্যান, হি ইজ এন আইডল ম্যান, এই বইয়ের ভীষণ চমৎকার একটা চরিত্র। যে তার স্বভাব ও আচরণে আমার মন কেড়ে নিয়েছে। যার চারিত্রিক দৃঢ়তা, দায়িত্বশীলতা, সম্পর্কের প্রতি যত্নশীলতা, মেয়েদের প্রতি তার শ্রদ্ধাবোধ, ধৈর্যশীলতা, তার নীরব অনুচ্চারিত ভালোবাসা, সককিছুই ছিল ভীষণ মুগ্ধকর । আরো ভালো লেগেছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার প্রতিবাদি স্বভাব। এতসব চমৎকার গুনে গুনান্বিত এমন আদর্শিক মানুষকে সবাই ভালোবাসতে বাধ্য অথচ এই মানুষটা ভালোবাসা না পাওয়ার যন্ত্রণায় দিনের পর দিন কাতর হয়ে থেকেছে। তার যন্ত্রণাগুলো আমার মনকে নাড়া দিয়েছে। এই বইয়ের আরো একটা মন কেড়ে নেওয়া চরিত্র হলো লাবণ্য। লাবণ্য তার নামের মতোই লাবণ্যময়ী, ভীষণ মিষ্টি স্বভাবের, মায়াবী একটা চরিত্র। অর্ক-লাবণ্য দুজনই খুব মায়ার চরিত্র। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই দুইটা চরিত্র তাদের মায়ায় আমাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রেখেছে। তাদের কষ্টে যেমন মন জর্জরিত হয়েছে, ওদের ভালো সময়গুলো মনে ভালোলাগা ও শান্তির পরশ বুলিয়ে দিয়েছে। বইয়ের আরো একটা খুব ভালো লাগার চরিত্র হলো মামুন, মামুন একজন ভাইয়ের মতো বন্ধু। এমন বন্ধু জীবনে থাকলে ভাইয়ের অভাববোধ হয় না, জীবনে অনেক কিছু সহজ হয়ে যায়। ভালো লেগেছে অর্কের বাবা ও দাদীকেও। বইয়ে আরো কিছু চরিত্র আছে, কেউ কেউ অল্প সময়ে থেকে মনে দাগ কেটেছে, আবার কেউ কেউ শুধু নিজেদের স্বার্থপরতা দেখিয়ে আমার মনকে বিষিয়ে তুলেছে। এই চরিত্রগুলোর কথা আর ডিটেইলে বলছি না, বই পড়ে তাদের জানলে বেশি ভালো লাগবে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বইয়ে চুম্বকের মতো আটকে ছিলাম, শেষটা এত বেশি সুন্দর ছিল, শেষ করে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে ভালোলাগার আবেশে বুদ হয়ে আছি।