User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
যদি এমন হয়, নিজ সৈন্যদের সংখ্যা কখনোই না কমে; তাহলে কেমন হয়? প্রতিপক্ষ একের পর এক আক্রমণ শানাচ্ছে, আপাত দৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছে শত্রুর নিধন; কিন্তু দিন শেষে শত্রুর সংখ্যা কমছে না, এমন ঘটনা কি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়? বগুড়ার মহাস্থানগড়ে একটি কূপের কিংবদন্তি আছে। পরশুরামের শাসনামলে যার খনন করা হয়। যে কূপের পানির অলৌকিক ক্ষমতা আছে, এমন এক মিথ ইতিহাসে জায়গা করে নেয়। সে পানি পান করলে না-কি জীবন ফিরে পাওয়া যায়। শাহ্ সুলতান বলখীর সাথে এক যুদ্ধে এই পানির ব্যবহার করেছিলেন পরশুরাম। এতে প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে ফেলার সুযোগ হয়। মহাস্থানগড়ের আরেকটি মিথ প্রচলিত আছে। বেহুলা-লখিন্দরের কাহিনি জানে না, এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া কঠিন। কিন্তু যে কিংবদন্তি আমরা জানি, যে ইতিহাস আমরা শুনি; তার সতত্য যদি মিথ্যে প্রমাণ হয়? বেহুলার বাসর যেখানে হয়েছে বলে জানা যায়, তা যদি অন্যখানে হয়? তাহলে যে ইতিহাসের পাতাতে বিরাট রদবদল হবে। ◾কাহিনি সংক্ষেপ : বগুড়ার মহাস্থানগড়ের অদূরে শিবগঞ্জ উপজেলার শান্ত, নিরুপদ্রব শব্দলদিঘী গ্রামে যেন নেমে এসেছে অশুভ ছায়া। এক ভ্যানচালক, যে কারো সাতে-পাঁচে থাকে না; তাকে কেন কেউ গু লি করে মেরে ফেলবে? শান্ত শব্দল তাই আলোচনার উপলক্ষ পেল। কিন্তু এই আলোচনা তখনই ভীতিতে রূপ নেয়, যখন একজন স্কুল পড়ুয়া ছেলে নিখোঁজ হয়। তাহলে কি এই শান্ত গ্রামে কোনো অপরাধীর আগমন হলো? মশিউর রহমান একজন বৃদ্ধ যুবক। বয়স হলেও তার প্রাণ চঞ্চল মনোভাব থাকে বৃদ্ধ হতে বাঁধা দেয়। তিনি সমাজের চিন্তা করেন। বদলে দিতে চান সবার মানসিকতা। অনেক কাজের মধ্যে ডুবে যেতে চান। তাই নিজেকে প্রাইভেট ডিটেকটিভ হিসেবে তৈরি করেন। কিন্তু শব্দলের মতো জায়গায় যেখানে অপরাধ হয় না, সেখানে ডিটেকটিভ হিসেবে কাজের কিছু নেই। আগ্রহ হারিয়ে ফেলে মনোযোগ দেন একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা করার কাজে। যেখানে এলাকার মানুষ, স্কুলের ছেলেমেয়েরা লেখালেখি করবে। এই কাজের ফাঁকে গ্রামে একটি খু ন আর এক অপ হর ণ তাহলে পুরোনো কাজে ফিরিয়ে এনেছে। পুরোদস্তুর প্রাইভেট ডিটেকটিভ হয়ে অপরাধীর তালাশ করতে ছুটছেন। শ্যাডো সিক্রেট সার্ভিস বাংলাদেশের সিক্রেট এজেন্সি। যার চিফ এসকেইউ সাবেক এনএসআই এজেন্ট। রাশভারী, রাগী এই মানুষটিকে সবাই ভয় পায়। দক্ষ হাতেই গড়ে তুলেছে তার দল। একদিন তার ডেস্কের উপর একটি চিঠি নজরে আসে। যে চিঠিতে হুমকি দেওয়া আছে, আছে পৃথিবী দখলের আভাস। এমন হুমকি তিনি অহরহ-ই পান। তাই গুরুত্ব দেন না। কিন্তু চিঠির পেছনে থাকা একটি চিহ্ন তাকে কৌতূহলী করে তোলে। সাথে ভয়ের এক ছায়া পড়ে অন্তরে। তিনি ফিরে যান অতীতে, যেখানে মুখোমুখি হয়েছিল এক অজানা শক্তির। বিশ বছর আগের একটি গুপ্ত সংগঠন আবারও চলে এসেছে বর্তমানে। তাদের কাজ কী? কোন ক্ষমতা অর্জনের জন্য ছুটে চলে ওরা? বিশ বছর আগে যেভাবে তরুণীরা নিরুদ্দেশ হতো, আবারও কি সেই সময় আসবে? শ্যাডো সিক্রেট সার্ভিসের চৌকষ দুই অফিসার ফাহিম ও আকিব খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে এর মূল। কিন্তু সেই দলটা যেন কো হেজি-পেজি গোছের কোনো দল না। তারা শক্তিতে অতুলনীয়। তাদের সাথে তাই টক্কর খুব সহজ হবে না। আমেরিকা ফেরত এক বিজ্ঞানী শব্দলের মতন জায়গায় কী করছে? তার কি বিশেষ কোনো কারণ আছে? ইতিহাসবিদ সুলেমান সাহেবের ইতিহাসের জ্ঞান এই গল্পে কোনো ভূমিকা রাখবে কি? ফাহিমের হুটহাট সিদ্ধান্ত নেওয়া নিজেকে যেমন বিপদে ফেলে, তেমনি বিপদে ফেলে সহকর্মীকে। তাই ভুলের মাশুল দিতে হয় সাসপেন্ড হয়ে। কিন্তু যে কাজে সে হাত দিয়েছে, তার শেষ না দেখে সে ছাড়বে না। খুঁজতে খুঁজতে সে চলে এসেছে শব্দলে। যেখানে এক খুন আর এক অপহরণের কেস সামলাচ্ছে স্পেশাল ব্রাঞ্চের উৎস। পরিচয় হয় প্রাইভেট ডিটেকটিভ মশিউরের সাথে। দুই শ্যাডো এজেন্টের সাথে যুক্ত হয় এসআই শফিক। সবাই মিলে এমন এক রহস্যের পেছনে ছুটছে যা তাদের নিয়ে যাবে এক কিংবদন্তি গল্পে। যে গল্প বয়ান দেয় অমরত্বের। প্রিয়জনের জন্য মানুষ সবকিছু করতে পারে। ভালোবেসে নিজের মেধা কাজে লাগাতে পারে, আনার প্রতিশোধ-পরায়ন হয়ে উঠতে পারে। তাই এই গল্পটা দিনশেষে হয়তো কাঠ-পুতুল হওয়ার, যে অন্যের হাতের ইশারায় চলে। কিন্তু এই ইশারা করা মানুষটি কি নিজের কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাবে? না-কি নিঃশেষ হয়ে যাবে অচিরেই? ◾পাঠ প্রতিক্রিয়া : অনেকদিন পর তৃপ্তি নিয়ে কোনো থ্রিলার শেষ করলাম। প্লট, এক্সিকিউশন, গল্পের গতিপ্রকৃতি, প্রাচীন বাংলা কিংবদন্তি, বৈজ্ঞানিক বিষয়, সবকিছুকে এক সুতোয় গাঁথা, চরিত্রগুলোকে যথাযথ ব্যবহার করা, কাহিনির মাঝে মাঝে চমক, মানুষের মনস্তত্ত্বের এক গুরুত্বপুর্ণ দিক — সবকিছুকে তাসিন আহমেদ যেভাবে বেঁধেছেন, মনেই হয়নি তিনি তার প্রথম বইটি পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন। এক ধরনের পরিণত ছাপ ছিল লেখকের লেখায়। গল্প বলার ধরনও আকর্ষণীয়। আমার বেশ ভালো লেগেছে লেখকের লেখনশৈলী। ভাষাশৈলী ও শব্দশৈলীর ব্যবহারে একবারের জন্যও মনে হয়নি লেখক তার প্রথম বই লিখেছেন। পরিণত ছোঁয়া ছিল তার লেখার মধ্যে। ফলে পড়তেও আরাম লেগেছে। লেখকের লেখাও বেশ গতিশীল। এমন কাহিনির সাথে গতির এক সামঞ্জস্যপূর্ণ খুবই গুরুত্বপুর্ণ। এইদিকে লেখক কিঞ্চিৎ দুর্বলতা দেখিয়েছেন। গতির নিয়ন্ত্রণ তিনি তেমন করতে পারেননি। বেশ কিছু ঘটনায় গতি ছিল লাগাম ছাড়া। এমন রোলার কোস্টার গতির গল্পে গতিপ্রকৃতির নিয়ন্ত্রণ খুব গুরুত্বপুর্ণ হয়ে ওঠে। পাঠককে শ্বাস নেওয়ার সময় দিতে হয়। কিন্তু লেখক সেই জায়গায় গতির লাগাম টানতে অনেক জায়গায় ব্যর্থ হয়েছেন। খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু না, তারপরও অতিরিক্ত গতিতে গল্প ছুটতে থাকলে মস্তিষ্কে ধারণ করতে বেগ পেতে হয়। একটা ঘটনা শেষ হওয়ার পর বুঝতে না বুঝতে আরেক ঘটনার সূত্রপাত ও ছুটে যাওয়া খেই হারিয়ে ফেলতে হয়। উপন্যাসে দুটি ঘটনা সমান্তরালে এগিয়ে চলে। একদিকে শব্দলের ঘটনা, অন্যদিকে শ্যাডো সিক্রেট সার্ভিসের কাহিনি। এখানে একটা কথা বলা প্রয়োজন, লেখক বাংলাদেশের ইন্টিলিজেন্সের নাম শ্যাডো সিক্রেট সার্ভিস দিয়েছেন। অথচ সিক্রেট শ্যাডো নামের অন্য একটা সিরিজ অলরেডি আছে। লেখক জানেন কি না জানি না, হয়তো নিতান্তই কাকতালীয়ভাবে মিলে গিয়েছে। তবে জানানোর জন্য বললাম আরকি। সে যাই হোক, সমান্তরালে থাকা দুটি ঘটনাই ছিল আগ্রহ জাগানিয়া। একদিকে নিতান্তই খুন ও অপহরণের তদন্ত চলমান। অন্যদিকে একটি চিরকুট, একটি গুপ্ত সংঘ — যারা হয়ে উঠতে পারে ভয়ংকর। এমন দুই ভিন্ন ঘটনার সংযোগ লেখক কীভাবে ঘটান, সে বিষয়ে আমার বেশ আগ্রহ ছিল। এবং লেখক যেভাবে দুই পরিস্থিতি এক বিন্দুতে মিলিয়েছেন, প্রশংসার যোগ্য। চমকটাও বেশ ভালো ছিল। আগে থেকে কোনো আভাসই পাওয়া যায়নি। লুসিফারের আরাধনা, ভাতৃসংঘ; এ জাতীয় বইয়ের ক্ষেত্রে এক ধরনের কমন প্যাটার্ন থাকে। লেখক কীভাবে এই কমন প্যাটার্ন ভাঙার চেষ্টা করেন, সেটা জানার বড্ড আগ্রহ ছিল। লেখক ভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন। কাল্টের আড়ালে যেভাবে কাহিনির গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করেছেন, বিষয়টা বেশ ব্যতিক্রম। কাল্ট আনুষঙ্গিক কিন্তু কখনো প্রধান হয়ে উঠতে দেয়নি। রহস্যটা এভাবেই রেখেছেন লেখক। কোনোভাবেই আগে থেকে কোনো কিছুই বোঝা যাবে না। পাঠকের মস্তিষ্ক নিয়ে লেখক খেলা করেছেন। তবে লেখক একটু বেশিই আক্রমণাত্মক। যেকোনো ঘটনা সমাধানের জন্য গোলাগুলির আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেন। অথচ লেখকের হাতে অন্যান্য অপশন থাকার কথা ছিল। কিন্তু লেখক আক্রমণের দিকেই বেশি মনোযোগ দিয়েছেন। ফলে যে লাগাম ছাড়া গতির কথা বলছিলাম, তার কারণ লেখকের অতিমাত্রায় আক্রমণাত্মক হওয়া। শুরুর দিকে এই আক্রমণের বিষয়গুলো লেখক যেভাবে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন, তেমনটা পারেননি। না-কি আমি বুঝিনি, কে জানে! সময়ের সাথে সাথে বর্ণনাগুলো পরিণত হয়েছে। তবে এতবেশি গোলাগুলির আশ্রয় না নিয়ে আরো ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা যেত বলেই মনে হয়েছে। উপন্যাসে দুইটি বাংলার কিংবদন্তির কথা বলা হয়েছে। লেখক যেভাবে কিংবদন্তিগুলো উপস্থাপন করেছেন, বা মূল উপন্যাসের সাথে জুড়ে দিয়েছেন বেশ ভালো লেগেছে। তবে আমি আরেকটু বেশি প্রত্যাশা করেছিলাম। বেহুলা ও লখিন্দরের কাহিনি তাদের মধ্য দিয়ে বর্ণনা করা যেত। আর জিয়ৎকুন্ডের ঘটনা সংক্ষিপ্ত পরিসরে না দেখিয়ে আরেকটু বিস্তারিতভাবে দেখানো যেত। তাহলে হয়তো আরেকটু বেশি তৃপ্তি পেতাম। মোটের উপর বেশ ভালোভাবেই লেখক সবকিছুর এক সংযোগ জুড়ে দিয়েছেন। কিছু অতীতের ঘটনা এখানে এসেছে। আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে, এই ঘটনা শুধু গল্পের গাঁথুনি মজবুত করতে বা ব্যাকস্টোরি বোঝাতে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু এখানেই লেখক তার তুরুপের তাস প্রয়োগ করেছেন। এই ঘটনা যে মূল ঘটনার একটা হয়ে উঠবে, পুরো রহস্যের চালিকাশক্তি হয়ে যাবে, আগে থেকে বোঝা যায়নি। পুরো ঘটনার মূলভাব যেন অচিরেই পাল্টে গেছে। মানুষ প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য যেকোনো কিছু করতে পারে। হতে পারে তা প্রয়োজন হারানোর কারণে। কিংবা এই জং ধরা সিস্টেম বা আমাদের সমাজের যে কার্যক্রম, তার প্রতি। বদলে দেওয়ার চেষ্টা কেউ কেউ তো করে। কিন্তু পুরোটাই কি বদলে দিতে পারে? দীর্ঘ সময় ধরে গড়ে ওঠা যে সিস্টেম, তাকে কি বদলে ফেলা যায় সহজেই? না-কি অজান্তেই নিজেকেই এই সিস্টেমের অংশ হয়ে যেতে হয়। উপন্যাসের চরিত্রগুলো বেশ ইন্টারেস্টিং। একদিকে আছে একজন প্রাইভেট ডিটেকটিভ, যার এটাই প্রথম কেস। অন্যদিকে সাধারণ পুলিশ অফিসার, স্পেশাল ব্রাঞ্চের পুলিশ, সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্ট। সবাইকে লেখক বেশ দক্ষতার সাথে তুলে ধরেছেন। তাদের প্রত্যেকের ভূমিকা উপন্যাসে অনস্বীকার্য। বিশেষ করে প্রাইভেট ডিটেকটিভ মশিউর রহমানের বুদ্ধিমত্তা বেশ মনে ধরেছে। এখানে তার দুইজন সহকারী আছে। একজন হাসান, আরেকজন ফরহাদ। দুইজনের চরিত্রকে লেখক বেশ স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন ব্যাকস্টোরিসহ। কোনো কার্পণ্য করেননি। তবে স্পেশাল ব্রাঞ্চের পুলিশ উৎসকে শুরুতে পছন্দ হয়নি। এখানে লেখক চরিত্রটিকে দিয়ে জোর করেই যেন হাস্যরস সৃষ্টির প্রয়াস করেছেন যা বিরক্ত লেগেছে। তার কাজের পর হুট করেই যেন উৎস গায়েব হয়ে গেল। এই চরিত্রটিকে আরও ভূমিকা দেওয়া যেত সমাপ্তির ঘটনায়। যেখানে সে জানে পরবর্তী ঘটনা কী ঘটছে। সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্ট ফাহিম ও আকিবকে বেশ ভালোভাবেই তুলে ধরেছেন লেখক। তবে আকিবের অতীত যেন এখানে সবচেয়ে বড় চমক। এমন ঘটনা প্রত্যাশারও বাইরে ছিল। কিন্তু ফাহিমের বিষয়ে খুব একটা জানা যায়নি, যেখানে লেখক আভাস দিয়েছেন তার অন্ধকার এক অতীত আছে। শ্যাডো সিক্রেট সার্ভিস নিয়েও তেমন একটা বর্ণনা এখানে ছিল না। যতটা ঘটনার প্রয়োজনে আসে, ঠিক ততটাই। তবে একটা সিক্রেট সার্ভিসের কর্মপদ্ধতি আরেকটু বিস্তারিত বর্ণনা করা যেত। একই সাথে ফরেনসিক বিভাগের ঘটনাও এসেছে সামান্য। এই দিকে গুরুত্ব দেওয়া যেত বলে মনে হয়েছে। বইতে যে বিজ্ঞানী ছিলেন, তার মনস্তত্ত্বের যে দিক লেখক তুলে ধরেছেন তারিফ করার মতন। প্রিয় মানুষকে বাঁচানোর তাগিদে মানুষ কত কী না করে! আমার মনে হয়েছে লেখক চাইলে ভিলেনের দিক দিয়ে আরেকটু কিছু দেখানো যেত। শুরু আর শেষ ছাড়া রহস্য যেন আরও ঘনীভূত হয়েছে এখানে। লেখক সম্ভবত ইচ্ছা করেই এই রহস্য বাড়িয়ে নিতে চেয়েছেন। তবে শেষটা চমকপ্রদ। কোনো তাড়াহুড়ো নেই, অতিরঞ্জিত বিষয় নেই। একেবারে পিন পয়েন্ট ফিনিশিং যাকে বলে। শেষে ক্লিফহ্যাঙ্গার রেখে দিয়েছেন লেখক। এখান থেকে নতুন কিছু শুরু হলেও হতে পারে। সম্ভবত লেখকের সেই ইচ্ছাও আছে। ◾বানান, সম্পাদনা ও অন্যান্য : “জিয়ৎ” বইটিতে বেশ কিছু ছাপার ভুল চোখে পড়েছে। বানান ভুলও ছিল কিছু। দুয়েক জায়গায় নামের অদল বদল, শব্দের অদল বদল ছিল। যেমন এক জায়গায় অনুধাবন শব্দের পরিবর্তে অনুবাধন লেখা ছিল। কয়েক জায়গায় যুক্তবর্ণ ভেঙে গিয়েছিল। এছাড়া সম্পাদনা ঠিকঠাক ছিল। বাঁধাই বেশ মজবুত। ঋদ্ধ প্রকাশের প্রোডাকশন কোয়ালিটি নিয়ে অভিযোগ করার সুযোগ নেই। প্রচ্ছদটাও বেশ ইউনিক। দেখতে ভালো লাগে। ◾পরিশেষে, এক জীবনে মানুষ হয়তো দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকতে চায়। এই পৃথিবীর আলো বাতাস উপভোগ করতে চায়। কিন্তু কেউ কেউ চায় আজীবনের চালিকাশক্তি, চায় অমরত্ব। কিন্তু মৃত্যু তো মানুষের জীবনে নিরেট বাস্তব এক বিষয়। তাকে হারিয়ে অমরত্ব পাওয়ার চেষ্টা করলে কি সফল হওয়া যায়? ◾বই : জিয়ৎ ◾লেখক : তাসিন আহমেদ ◾প্রকাশনী : ঋদ্ধ প্রকাশ ◾প্রকাশ সাল : বইমেলা ২০২৫ ◾পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৩৩৬ ◾ব্যক্তিগত রেটিং : ৪.৫/৫