User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
"আঁধার উপাখ্যান" তৌফির হাসান উর রাকিব ভাইয়ের লেখা একটি "অতিপ্রাকৃত/হরর" গল্পের সংকলন। বইটিতে মোট ৫ টি গল্প স্থান পেয়েছে।এর মধ্যে 'ধীবরলোক এবং দেয়ালা' গল্পদুটো ইবুক, রহস্যপত্রিকায় আগেই পড়েছি। প্রায় সব গুলো গল্পই আগে প্রকাশিত হয়েছে; হয়তো "বইঘর" অ্যাপে নয়তো কোনো সংকলনে।তবে সবগুলো গল্প একসাথে, একমলাটে পেয়ে ভালোই লাগলো। ⭕১.আধার-পুত্রঃ জঙ্গলগড়ে আবির্ভাব হয়েছে এক জান্তব মাংসাশী জানোয়ারের!!যার খপ্পরে পড়ে নৃশংস ভাবে একের পর এক মানুষ মারা যাচ্ছে।আসলে কি সেটা?? নেকড়ে? জাগুয়ার? ভালুক? বুনো কুকুর?? এদিকে জানা গেলো, জঙ্গলগড়ের ফরেস্ট অফিসার শৌভিক সেন এক বিরল মানসিক রোগে আক্রান্ত। কি হয় শেষ পর্যন্ত? কে রক্ষা করবে জঙ্গলগড়ের বাসিন্দাদের!! ✅রেটিংঃ ৪.২/৫ ⭕২.বিভাবরীঃ হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গেলো কৃষ্ণচন্দ্র ফিরাইল,যাকে বলা যায় একেবারে হাওয়ায় মিলিয়ে যাওয়া। এদিকে পৈত্রিক সূত্রে বাবার অভিজ্ঞতা এবং শিখিয়ে যাওয়া পেশাকে কাজে লাগিয়ে শিমুলতলী গ্রামের নতুন ফিরাইল নিযুক্ত করা হয় অশোক কে। কি ঘটে শেষ পর্যন্ত অশোকের ভাগ্যে!! এই গল্পটা অনেকটা কসমিক হরর জনরার যেখানে গল্পে সরাসরি কোনো ভূত-প্রেতের উপস্থিতি থাকেনা।বরং প্রকৃতির অমোঘ কিছু নিগূঢ় শক্তি যা মানুষের চিরকাল অজানাই থেকে যায়, যার কাছে মানুষ নিতান্তই অসহায়। ✅রেটিংঃ ৩.৮/৫ ⭕৩.দেয়ালাঃ কুড়িখলা গ্রামে নেমে এসেছে ভয়ংকর এক অভিশাপ। আকস্মিক নেমে আসা অকাল বর্ষণের তোড়ে কুড়িখলা তখন পর্যদুস্থ।কুড়িখলার বাচ্চারা যেনো সব কাঠের পুতুল হয়ে গেছে!! এদিকে সৌভাগ্যক্রমে "ভীম কাপালিক" কুড়িখলার অভিশাপের সুলুক সন্ধানে নেমে পড়েছেন। আয়োজন করেছেন হংস-যজ্ঞের!! তিনি কি পারবেন অপদেবতা "পাঁচুঠাকুর" এর অভিশাপ থেকে গ্রামবাসী কে মুক্ত করতে? জানতে হলে গল্পটি দ্রুত পড়ে ফেলুন। ছোটো কলেবরের একটা গল্পতে এতো সুন্দরভাবেও যে কাহিনী ফুটিয়ে তোলা সম্ভব তা গল্পটা না পড়লে বুঝতে পারবেন না।তন্ত্র-মন্ত্র এর অনেক রিচ্যুয়াল নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। সত্যিসত্যিই পড়ে মুগ্ধ হয়েছি। ✅রেটিংঃ ৪.৫/৫ ⭕৪.অংশহারাঃ প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেটর হাবিব আফসার এর কাছে অদ্ভুত এক সমস্যা নিয়ে হাজির হয় হেনা। তার নিজের মতোই এক অবিকল সত্ত্বার উপস্থিতি সে টের পায় তার আশে-পাশে। কে সে,কি চায় সে? তার সাথে হেনারই বা কি কোনো পূর্ব-সম্পর্ক রয়েছে!! গল্পের প্লট টা খুব কমন লেগেছে আমার কাছে। এই গল্পটা এভারেজ লেগেছে। ✅রেটিংঃ ৩.২/৫ ⭕৫.ধীবরলোকঃ এই গল্পটি আমার কাছে দূর্দান্ত লেগেছে এক কথায়।মিথলজির পাশাপাশি বইটিতে প্রচুর তথ্য তুলে ধরেছেন লেখক যা বইটিকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে। ছোটো গল্প হিসেবে সুন্দরবনের অনেক তথ্যও উঠে এসেছে। উপমহাদেশের মাকাল ঠাকুর দেবতা,আটেশ্বর,নর্ঘ এসব দেবতাদের কথা জানতে পারলাম। লেখকের এই লেখার মাঝে মুহম্মদ আলমগীর তৈমুর স্যারের লেখার প্রভাব বেশ লক্ষনীয়।(একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত) ✅রেটিংঃ ৪.৫/৫ ?বইঃ আঁধার উপাখ্যান ?লেখকঃ তৌফির হাসান উর রাকিব ?প্রকাশনীঃ চিরকুট
Was this review helpful to you?
or
বই: আঁধার উপাখ্যান লেখক: তৌফির হাসান উর রাকিব জনরা: অতিপ্রাকৃত প্রকাশনী : চিরকুট প্রথম প্রকাশকাল : অমর একুশে বইমেলা, ২০২৫ পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১১১ এই বইটি মূলত ছোটখাটো একটি গল্প সংকলন। এখানে লেখকের মোট ৫ টি গল্প আছে। সবগুলোই বেশ সুন্দর। সবগুলোরই ছোট্ট করে বর্ণনা এবং আমার অনুভূতি লেখার চেষ্টা করছি। ১. আঁধার পুত্র টাঙ্গাইলের জঙ্গলগড় নামের এক জায়গায় বেশ কিছু খুন হয়। খুনী কোনো মানুষ না, অথচ এমন বিভৎসভাবে হত্যা করার মতো কোনো জানোয়ারও সেখানকার জঙ্গলে নেই। হত্যাকারীর পায়ের ছাপ কোনো জন্তুর সাথেও মিলে না তাহলে আসলে হত্যা গুলো করলো কে?? এই গল্পটা আমার কাছে তেমন ভালো লাগে নি। কিছু জায়গায় অতিরিক্ত তথ্যের বিবরণ দেয়া আছে যেটা না দিলেও চলতো। পুরো গল্পের তুলনায় ক্লাইম্যক্সটা খুব সাধারণ মনে হয়েছে, যেটা সচরাচর এরকম গল্পে থাকে, ভিন্ন কিছু নেই। পার্সোনাল রেটিং : ২/৫ ২. বিভাবরী শিমুলতলী গ্রামের ফিরাইল হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। কোথায় গিয়েছে কেউ জানে না, আশেপাশের দশ গ্রামে খুজেও কোনো লাভ হয় না। অগত্যা সবাই মনে করে বেশি টাকার লোভে অন্য গ্রামে চলে গিয়েছে। গল্প পড়ে মনে হয়েছে ফিরাইল কিছুটা ওঝা ধরনের ব্যক্তি কিন্তু ওঝা না। তাদের কাজ মূলত গ্রামে গ্রামে নিজের জাদুবলে ফসল পাহারা দেয়া যেন পোকামাকড়, ইদুর বা অন্য কোনো প্রাণী ফসলের কোনো ক্ষতি করতে না পারে। এছাড়াও সে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম পূর্বাভাস জানাতে পারে বা এ থেকে রক্ষার জন্য ব্যবস্থা করতে পারে। তো শিমুলতলী গ্রামে এক নতুন ফিরাইল আসে এবং তাকে ফসলের ক্ষেতের মাঝে একটা জায়গায় টংঘর মত ঘরে থাকার জায়গা করে দেয়া হয় যেন সে ফসলের খেয়াল রাখতে পারে। সেখানেই সে অতিপ্রাকৃত কিছু ঘটনার সম্মূখীন হয়। এই গল্পটা বেশ ভালো লেগেছে আমার কাছে। ক্লাইম্যাক্স বেশ ভিন্ন রকম ছিল। পার্সোনাল রেটিং : ৪.৩/৫ ৩. দেয়ালা কুড়িখলা গ্রামের সব শিশু হঠাৎ চুপচাপ হয়ে যায়। ঠিকভাবে কথা বলে না, হাসে না, কাদে না, খেলে না। সবাই এটা নিয়ে বেশ চিন্তিত। এই সমস্যা উত্তরণে এগিয়ে আসে ভীম কাপালিক। পার্সোনাল রেটিং : ৪.২/৫ ৪. অংশহারা হেনা নামের এক কর্পোরেট চাকুরিজীবী একটা ফ্ল্যাট নিয়ে একা ঢাকায় বসবাস করে। একদিন সে তার ফ্ল্যাটে অন্য কারো অস্তিত্ব টের পায়। অন্ধকারেই যত ভয়। ঘুম খাওয়া সব বন্ধ হয়ে যায়। একসময় সে তার এক বান্ধবীর পরামর্শে হাবিব আবসার নামে এক লোকের কাছে যায় যে এসব অতিপ্রাকৃত সমস্যা সমাধানে বেশ পারদর্শী। এই গল্পটা খুবই সুন্দর। কিন্তু এটা এর আগেও বিবলিও হরর বইতে পড়েছিলাম। আরো অনেকেই হয়তো পড়েছে। তাই মনে হয়েছে এই সংকলনেও একই গল্প না দিয়ে লেখক অন্য কোনো গল্প দিতে পারতেন। পার্সোনাল রেটিং : ৪.৮/৫ ৫. ধীবরলোক সজল একজন সাংবাদিক। সে তার উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে সুন্দরবন যায় মিথলজির একটা বিষয়ের উপর রিসার্চ করে ফিচার লেখার জন্য। ফিচারটা মূলত জেলেদের এক দেবতা মাকাল ঠাকুরকে নিয়ে যার পূজা বাংলার জেলেরা করে থাকে। সুন্দরবনের এক গ্রামে যাওয়ার পরে কি ঘটনা ঘটে সেটা নিয়েই মূলত গল্প। গল্পটা বেশ ভালো কিন্তু এখানেও মাকাল ঠাকুরকে নিয়ে তথ্যের অতি বিবরণী রয়েছে, যেটা পড়তে গিয়ে আমার কাছে কিছুটা বিরক্ত লেগেছে। এত বেশি তথ্য না দিলেও হয়তো চলতো। কিন্তু মোটের ওপর গল্পটা সুন্দর। এই গল্পটাকে আমার অতিপ্রাকৃত না, থ্রিলার গল্প মনে হয়েছে। পার্সোনাল রেটিং : ৪.৫/৫ এছাড়া বইয়ের প্রোডাকশন কোয়ালিটি বেশ ভালো ছিল। লেখকের লেখা আমি আগেও পড়েছি, উনার লেখার ধাচ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। খুবই ভালো লেখেন উনি। সবগুলো গল্পের প্রেক্ষাপট খুবই সুন্দর ছিল। মনে দাগ কেটে যাওয়ার মত।