User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#কঠিন_তোমাকে_ছাড়া_একদিন "ওইদিন বাসায় ফিরে মাইডাস মিনিমার্ট থেকে কেনা রঙিন ডায়েরিটা ড্রয়ের থেকে বের করল পারিসা। এখন থেকে এই ডাইরিতে প্রতিদিন একটা করে চিঠি লিখবে সে শার্লককে!যেদিন ওদের রিলেশন হবে ঠিক সেদিন সে এই চিঠিগুলো তুলে দেবে তার প্রেমিকের হাতে। " ✍️ পাঠকপ্রিয় লেখক সুস্মিতা জাফরের চতুর্থ উপন্যাস "কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন "। থ্রিলার এবং শিশুতোষের পাশাপাশি লেখক রোমান্টিক জনরায়ও সমান মুন্সিয়ানার ছাপ রেখে যাচ্ছে দিন দিন। এই উপন্যাসটি শেষ করে তেমনই মনে হবে পাঠকদের। ✍️ কাহিনি সংক্ষেপে : শহুরে এক আবাসিক এলাকায় বেড়ে ওঠা দুজন কিশোর- কিশোরি পারিসা ও শার্লক। হঠাৎ করেই একে অপরের প্রেমে পড়ে । ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে এক সরল, অথচ গভীর সম্পর্ক, যেখানে আবেগ, কৌতূহল আর মানসিক দ্বন্দ্ব মিশে থাকে। বন্ধুত্ব দিয়ে নয়, ওদের শুরুটাই ছিলো প্রেম দিয়ে। কিন্তু সমাজ ও বাস্তবতা এনে দেয় এই সম্পর্কে জটিলতা। চিঠি, ল্যান্ডফোন আর হঠাৎ দেখা।সব মিলিয়ে কিশোর হৃদয়ের প্রথম ভালোবাসা ধরা দেয় নির্মল এক মাধুর্যে। এই অপরিণত বয়সের প্রেমের পরিনতি কী? অপর দিকে অনিমেষ, যে কিনা নিজের ক্লাশ টেনের স্টুডেন্টের মায়ায় পড়ে যায় কিন্তু বেচারা কিছু বলতেই পারে না। ? রোমান্টিক মূর্ছনায় হারানো কৈশোর : ৷ এই উপন্যাসের প্রথম প্রেম, চাপা আবেগ, ছোট ছোট স্পন্দন—সবকিছু যেন শৈশব স্মৃতির এক মধুর পুনর্জন্ম। কিশোর পারিসা ও তার বন্ধুরা, চিঠি, ফোন, অপ্রত্যাশিত দেখা, সবগুলোই জীবন্ত ও প্রাঞ্জলভাবে ফুটে উঠেছে। পার্সনাল মুড, ল্যান্ডফোনে কথোপকথন, গলিতে ছোটদের গুহীর মতো স্ফন্দন… সব মিলিয়ে একটি সময়-সফরে নিয়ে যায় বইটি, যেটা পড়ে স্মৃতির আশ্বাসে কাঁপতে হয়। ? সামাজিক বন্ধন ও সৌন্দর্যের স্বপ্ন : উপন্যাসটি শুধু প্রেমের আড্ডা নয়, সমাজের রূঢ় মানদণ্ডের প্রতিবাদও। একটি শ্যামলা তথা কালো মেয়ের আত্মসম্মান, আক্ষেপ, সংগ্রাম, সবকিছুই এখানে শৈল্পিকভাবে ফুটে উঠেছে। লেখকের অপূর্ব দক্ষতায় পারিসার মেধা আর গায়েবর্ণতার সমস্যা সামাজিক এক তীব্র বাস্তব হয়ে ওঠে। তাই পুরো কাহিনী প্রেমের আড়ালে সামাজিক সচেতনতার এক দৃষ্টান্তও হয়ে রয়েছে। ✍️ চরিত্রের আর্ত ও অন্তস্থ ভাবনা পারিসা নিজস্ব স্নিগ্ধ স্বপ্ন আর বিবেকবোধের আদলে গড়ে ওঠা কিশোরি, ছোট বোন নম্রতার একান্ত সুখ ও অশ্রু, বন্ধুবান্ধবের গোপন আকাঙ্ক্ষা সবটুকু রঙে রঙে ছড়িয়ে পড়ে। শার্লক এক অদ্ভুত কান্নামিশ্রিত অনুভূতির প্রতীক; অনিমেষ ভিন্ন ব্যক্তিত্ব, ক্ষেত্রবিশেষে ছোট্ট যাত্রাপথে প্রভাব বিস্তার করে। লেখকের যে দক্ষতা চরিত্রগুলোকে প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং ‘মানুষ’ হিসেবে তুলে এনেছেন, সেটিই উপন্যাসের প্রাণ। ✍️ পাঠ প্রতিক্রিয়া : ভাষা সহজ, সাবলীল ও হৃদয়গ্রাহী। পাঠকের হৃদয়ে স্পন্দন ফোটায়। লেখনশৈলীতে পাওয়া যায় বাচ্চাদের দিয়ে বানানো শব্দ, পরিণত মানুষের মতো এক মোলায়েম কণ্ঠ। দীর্ঘ গল্প না হলেও গল্পের সংযম, মানসিক টানাপোড়েন আর প্রানাধারার মিশ্রণে বইটিতে এক রকম ভারসাম্য ও মাধুর্য রয়েছে। চমৎকার এই প্রচ্ছদটি প্রথম দর্শনেই সকলের আর্কষণ টেনে নিবে নিসন্দেহে। প্রোডাকশন বরাবরের মতোই দারুণ। ⚠️ খেয়াল রাখা উচিত কিছু বিষয়: যদিও প্লট ও ভাষা বেশ মিষ্টি, তবুও কিছু ছোটখাটো অসঙ্গতি চোখে পড়ে, যেমন ‘দুরিন’ চরিত্রের নাম অনিয়মিতভাবে পরিবর্তন, ডুরিন নাকি দুরিন? আর নির্দিষ্ট কিছু ঘটনাপ্রবাহে চরিত্রগুলোর কার্য-প্রমাণ অনুপস্থিততা। কিছু পয়েন্টে সময় ও প্রেক্ষাপট মিশ্রিত হয়ে মন্থর করে তোলে। নম্রতা ও তাসমীকে এন্ডিং এ আশা করেছিলাম। তবে সামগ্রিক শৈল্পিক আনন্দ বইটির মূল আনন্দকে ছায়া দেয় না। ✅ “কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন”, একদিকে সামাজিক প্রতিবাদ, অন্যদিকে কিশোরী হৃদয়ের প্রথম স্পন্দন। লেখকের কর্মদক্ষতা কিশোরদের মানসিকতা ও আবেগ চিত্রণে অসাধারণ। যদিও কিছু জায়গায় রূপরেখায় সামান্য অগোছালো ভাব পাওয়া যায়, সব মিলিয়ে এটি হৃদয় ছুঁয়ে যায়। প্রথম প্রেমের কোমলতা, সমাজচিন্তার দ্বন্দ্ব, কিশোর মনের আবর্তন, সব মিলিয়ে এক তীব্র, তবু শান্ত অনুভূতি যোগায়।
Was this review helpful to you?
or
#কঠিন_তোমাকে_ছাড়া_একদিন_বুকরিভিউ “পহেলা আষাঢ়ে প্রেম নিবেদন করলে নাকি সেই প্রেম অমর হয়!” সত্যিই কি হয়! যে সমাজে সৌন্দর্যের সংজ্ঞা আজও সীমাবদ্ধ শুভ্রতার মাপকাঠিতে এবং শ্যামবর্ণ মেয়েটিকে শৈশব থেকেই শুনতে হয় নানা কটূক্তি ও তীক্ষ্ণ শব্দবাণ, তেমন সমাজে বসবাসরত সেই মেয়েটিকে প্রেম নিবেদন করলেই কি তা অমর হয়? কারো প্রেম সমাজের প্রচলিত সেই ধ্যান-ধারনার স্রোতে ভেসে যায়, আবার কারো প্রেম স্রোতের প্রতিকূলতাকে পার হয়ে টিকে থাকে। এমনই এক সামাজিক মানদণ্ডকে ভিত্তি করে রচিত হয়েছে রোমান্টিক উপন্যাস “কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন”। ▪️কাহিনী সংক্ষেপ▪️ উপন্যাসের সূচনা ঘটে ২০০২ সালে, এক বিদ্যালয়ের টিফিন পিরিয়ডের বিরতিতে। অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া দুই কিশোরী, পারিসা ও তাসমির খুনসুটির মধ্য দিয়ে এর কাহিনি বিস্তারের সূত্রপাত। পারিসা জন্ম থেকে গায়ের রঙের কারণে অবহেলা ও কটু কথা সহ্য করলেও সে তার মনের গভীরে সযত্নে লালন করে এসেছে শুদ্ধ ভালোবাসার স্বপ্ন। নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসের অভাব ও অনাস্থা নিয়ে বেড়ে উঠতে উঠতে হঠাৎ সে আবিষ্কার করে, তার প্রিয় শিক্ষক অনিমেষ, প্রতিবেশী শার্লক এবং তুহিন সবার মনেই তার প্রতি এক ধরনের ভালোবাসা বা আকর্ষণ রয়েছে। তবে, পারিসা কাকে তার হৃদয়ে স্থান দেবে? একদিন পারিসার জীবনেও প্রেম আসে। আকস্মিক এক মোহময় মুহূর্তে দুজন মানব-মানবীর মধ্যে জন্ম নেয় অকৃত্রিম ভালোবাসা। লুকিয়ে দেখা করা, ফোনালাপ আর ছোট ছোট উপহার আদান-প্রদানের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলে তাদের লুকোচুরি প্রেমের দিনগুলি। কিন্তু সমাজ ও পরিবার কি সহজে মেনে নেবে এই প্রেম? কী হবে এই সম্পর্কের পরিণতি? আর পারিসা কি শেষ পর্যন্ত খুঁজে পাবে সেই শুদ্ধ ভালোবাসা, যা সে ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখে এসেছে? এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যাবে উপন্যাস “কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন”-এ। ▪️পাঠপ্রতিক্রিয়া▪️ লেখক সুস্মিতা জাফর রচিত “কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন” একটি চমৎকার রোমান্টিক উপন্যাস, যার আবহ, চরিত্র ও ঘটনাপ্রবাহ পাঠককে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে একবিংশ শতাব্দীর সূচনালগ্নে। ভালোবাসার গল্পকে কেন্দ্র করে রচিত এই উপন্যাসে পারিবারিক ও সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ের সূক্ষ্ম মেলবন্ধন ঘটেছে। এখানে কৈশোরের প্রেম, আবেগ ও সম্পর্কের টানাপোড়েন, পারিবারিক দ্বন্দ্ব এবং সেই দ্বন্দ্বে সন্তানের মানসিক বিপর্যয় বেশ নিপুণতার সাথে উপস্থাপন করা হয়েছে। উপন্যাসটির প্রেক্ষাপট পাঠককে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে এমন এক সময়ে, যখন মুঠোফোন ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা ছিল না। ভালোবাসা তখন সীমাবদ্ধ ছিল ল্যান্ডফোনের মিষ্টি কথোপকথন, চিঠির গোপন আদান-প্রদান ও সবার অগোচরে লুকিয়ে দেখা করার মধ্যে। সেই সময়ের আবহে রচিত উপন্যাসটি অনেক পাঠককেই মনে করিয়ে দিবে তাদের শৈশব বা কৈশোরের দিনগুলোর স্মৃতিকে। উপন্যাসটিতে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে একটি তীব্র সামাজিক বাস্তবতা - যেখানে কোনো মেয়ে যতই গুণী বা প্রতিভাবান হোক, তার গায়ের রঙ যদি চাপা বা শ্যামবর্ণ হয় তবে সমাজের চোখে তার সব গুণাবলী ম্লান হয়ে যায়। কাপড়, গহনা বা শিল্পকর্মে কালো রঙকে যতই অভিজাত মনে করা হোক না কেন মানুষের শরীরে তা যেন সৌন্দর্যের মাপকাঠিতে ব্যর্থ। এই সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি কীভাবে একটি মেয়ের জীবনে অদৃশ্য দেয়াল তৈরি করে, তাকে তুচ্ছ ভাবতে শেখায় এবং সেই মেয়ে কীভাবে এই মানসিক বাধা অতিক্রম করে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেয় লেখক তা উপন্যাসের কাহিনির মাধ্যমে চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। উপন্যাসটির একদম শুরুর অংশটুকু কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক মনে হলেও বইটি প্রথম থেকেই আমার কাছে দারুণ উপভোগ্য ছিল। তবে শেষ অংশে এসে আরও কিছুক্ষণ বইটির সান্নিধ্যে কাটানোর আকাঙ্ক্ষা অপূর্ণ রয়ে গিয়েছে। সম্ভবত লেখক কাহিনির বিস্তার উপন্যাসের মুখ্য চরিত্রের কৈশোরেই সীমাবদ্ধ রাখতে চেয়েছেন আর সে কারণেই হয়তো তার পরবর্তী জীবনের ঘটনাবলী খুব বেশি ডালপালা বিস্তার লাভ করার সুযোগ পায়নি। ভালোবাসার গল্পের পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি যেমন - বাবা-মায়ের একজনের মৃত্যুতে অপর জনের দ্বিতীয় বিয়ে বা বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ সন্তানের জীবনে কেমন প্রভাব ফেলে, বড়ো বোনের পূর্বে ছোটোবোনের বিয়ে বড়ো বোনের জীবনে কী পরিবর্তন নিয়ে আসে ইত্যাদির বর্ণনা উপন্যাসটিতে আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। ▪️চরিত্র কথন▪️ উপন্যাসের চরিত্রগুলোর নামকরণে রয়েছে এক ধরনের নতুনত্ব, যা সহজেই পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। নামগুলো আকর্ষণীয় হলেও প্রতিটি চরিত্র যেন আমাদের আশেপাশের পরিচিত মানুষদেরই প্রতিচিত্র। তাদের হাসি-কান্না, সম্পর্কের টানাপোড়েন আর সংগ্রাম আমাদের চেনা জীবনের সঙ্গেই মিলে যায়। উপন্যাসে পুরুষ চরিত্রদের চেয়ে নারী চরিত্রদের প্রাধান্য লক্ষ্যণীয়। পারিসা: উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র পারিসা তার নামের মতোই আকর্ষণীয়। সে মেধাবী হলেও গায়ের রঙের কারণে সমাজের কটূক্তির শিকার হয় তাকে। ছোটবেলা থেকে অবহেলা সহ্য করে মনের গভীরে এক অদৃশ্য ক্ষত বয়ে বেড়ালেও তার ব্যক্তিত্ব সত্যিই মুগ্ধ করার মতো। বছরের পর বছর ধরে সে যে নিরব ও অটুট ভালোবাসা ধরে রাখে, তা পাঠককে অভিভূত করবে। নম্রতা: পারিসার বোন নম্রতাও মিষ্টি এক কন্যা। সে এক অচেনা ভালোবাসায় জড়িয়ে গিয়ে সেই ভালোবাসার মানুষের অস্তিত্বকে অনুভব করে গিয়েছে দিনের পর দিন। কোনো এক অজানা কারণে উপন্যাস পড়ার সময় এই চরিত্রটির জন্যই সবচেয়ে বেশি মায়া লেগেছে। সমাপ্তিতে মনে হয়েছে এই চরিত্রটির জীবনের গল্প অনেকটাই অজানা থেকে গেল। তাসমি: তাসমির চরিত্রটিকে সবচেয়ে বেশি বাস্তব মনে হয়েছে। ভালো এক বন্ধু হওয়ার পাশাপাশি তার চরিত্রে ফুটে উঠেছে পারিবারিক টানাপোড়েন, মানসিক অস্থিরতা ও সমাজের বাস্তব চিত্রের প্রতিফলন। শার্লক ও অনিমেষ: শার্লক ও অনিমেষ দুইটি চরিত্র ভালোবাসার দিক থেকে একে অপরের বিপরীত মেরুতে অবস্থান করেছে। তবে কোথাও হয়তো তাদের মধ্যে একটু মিল রয়েছে, এক শ্যামবর্ণ বালিকার প্রতি তাদের দু’জনের হৃদয়েই ভালোবাসা জন্ম নিয়েছিল। তবে সময়ের পরিক্রমায় কারও ভালোবাসা স্থায়ী হয়, আবার কারও মনে তা ম্লান হয়ে যায়। উপন্যাসের অন্যান্য চরিত্রগুলিও যেন আমাদের চেনা, আমাদের চারপাশের বাস্তব মানুষেরই প্রতিচ্ছবি। ▪️লেখনশৈলী ও অন্যান্য▪️ উপন্যাসের ভাষাশৈলী সহজ, সাবলীল অথচ গভীর। এর প্লট সাধারণ হলেও এর মধ্যে লুকিয়ে আছে সমাজের বাস্তব সত্য এবং লেখকের চমৎকার লেখনশৈলীতে তা সুখপাঠ্যে পরিণত হয়েছে। ভালোবাসা-প্রেম, সম্পর্কের জটিলতা, অপেক্ষা, ত্যাগ, প্রতারণা ও স্বপ্নভঙ্গের সংমিশ্রণে রচিত হয়েছে এই উপন্যাসটি। যদিও বানান, বিরামচিহ্ন জনিত কোনো ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়নি তবে ‘ডুরিন’ চরিত্রটির নাম দুয়েক জায়গায় ‘দুরিন’ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এই সামান্য ত্রুটি গল্পের শক্তিশালী আবহকে বিন্দুমাত্র দুর্বল করেনি। বইটির প্রচ্ছদ সুন্দর ও আকর্ষণীয়। যেসব পাঠক রোমান্টিক উপন্যাস পড়তে ভালোবাসেন কিন্তু ভাষায় শালীনতা ও পরিশীলিত প্রকাশ প্রত্যাশা করেন, তাদের জন্য উপযুক্ত এক উপন্যাস হলো “কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন”। ভালোবাসার কাহিনির আবেশের সঙ্গে সমাজের বাস্তবতা ও কিশোর মনের জটিলতার সূক্ষ্ম মেলবন্ধনে এটি হয়ে উঠেছে একটি সুখপাঠ্য উপন্যাস। ▪️বই পরিচিতি▪️ বইয়ের নাম : কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন লেখক : সুস্মিতা জাফর প্রকাশনী : চলন্তিকা প্রচ্ছদ : মো: সাদিতউজজামান পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১৬৮
Was this review helpful to you?
or
#কঠিন_তোমাকে_ছাড়া_একদিন_বুকরিভিউ কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন! নাম দেখেই বুঝা যাচ্ছে বইটির রোমান্টিক জনরার একটি উপন্যাস। তবে এই নাম কেন? প্রিয় মানুষটাকে ছেড়ে একটা দিনও কাটানো অসম্ভব বলে? হতে পারে। "কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন" সুস্মিতা জাফরের লেখা চতুর্থ উপন্যাস। সেই সাথে আমারও পঠিত চতুর্থ উপন্যাস। আপুর লেখা আগে পড়েছি বিধায় তার প্রতি ভরসা ছিল। মন বলছিল বইটা ভালো লাগবে, আর সেটা ফলেও গেলো। বইটাতে প্রেমের নামে নোংরামি দেখানো হয়নি। অত্যন্ত মার্জিতভাবে সম্পূর্ণ উপন্যাসটি লেখা হয়েছে। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র পারিসা। পড়াশোনায় ভালো হলেও তার গায়ের রঙের জন্য কথা শুনতে হয় প্রায়ই। ছোট থেকে এতো পরিমাণ কথা শুনেছে যে তার এখন সবকিছু সয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু না! তার খারাপ লাগে। এখনো লাগে। অবশ্য লাগারই কথা। পারিসা মনে করে তাকে কেউ পছন্দ করে না। কিন্তু একসময় দেখা গেল তার প্রিয় শিক্ষক অনিমেষ, পাশের বাসার শার্লক ও তুহিন তাকে পছন্দ করে। কিন্তু পারিসা কাকে ভালোবাসে? পারিসা ও শার্লকের সম্পর্কটা হুট করেই হয়ে গেছে। একে অপরের প্রতি ভালোবাসা ছিল বলেই হয়তো। এরপর থেকে তাদের প্রেম চলতে থাকে। টেলিফোনে কথা বলা, কোচিং-এর সামনে দেখা করা, গিফট দেয়া-নেয়া ইত্যাদি যেন তাদের নৈমিত্তিক কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তাদের প্রেমে কোনো বাঁধা আসবে না তো? শার্লকের বোন তাদের সম্পর্কে জেনে যাওয়ার পর থেকে সবকিছু যেন ঘেটে গেছে। আগে থেকেই শার্লকের পরিবার পারিসাকে পছন্দ করেনা কালো বলে। অপরদিকে, পারিসার পরিবারও শার্লককে পছন্দ করে না। এর কারণ কী? দুই পরিবারের অমতে তাদের সম্পর্ক কি টিকবে? নাকি ভেঙে যাবে তাদের টিনএজ প্রেম? নামের মতোই সুন্দর একটি চরিত্র পারিসা। একটা মানুষকে বছরের পর বছর এভাবে ভালোবাসা যায় তা তাকে না দেখলে বুঝার উপায় নেই। অপরপক্ষের মানুষটা তাকে মনে রেখেছে কিনা সেটা জেনে হোক কিংবা না জেনে একটা যুগ তাকে ভালোবেসেই কাটিয়ে দিয়েছে। পরিণতি যেমনই হোক কেউ এভাবেও ভালোবাসাতে পারে! পারিসার জন্য যেমন ভালো লাগা কাজ করছিল তেমন বিরক্তও লেগেছিল। মাঝেমাঝে নিজের ভালোর কথাও তো ভাবতে হয়। টিনএজ প্রেম হলেও পারিসা এবং শার্লকের সম্পর্ক চলাকালীন মুহূর্তটুকু আমি ভীষণ উপভোগ করেছি। একটুও বিরক্তবোধ আসেনি। তখন এই দুটি চরিত্রকেও ভালো লাগতো। কিন্তু শার্লকের ব্যক্তিত্ব যেন হঠাৎ করেই বদলে গেলো। এই জিনিসটা আসলে আমি মেনে নিতে পারিনি। বইটা পড়াকালীন অনেক ভেবেছি। শার্লকের মা ও বোনের চরিত্র যেমন শার্লকেরও তেমনি হওয়ার কথা। কিন্তু কোথায় যেন একটা ক্ষীণ আশা ছিল যে শার্লক এমন হবে না। উপন্যাসের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র তাসমি। তার কিংবা তার পরিবারের মাধ্যমে আমাদের সমাজের একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক লেখিকা তুলে ধরেছেন। পারিবারিক কলহ যেন একটা সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মেয়েটাও অনেক সাফার করেছে। তার কষ্ট দেখে খারাপই লেগেছিল। এছাড়া তাসমিকে সবসময় পারিসার পাশে পাওয়া গেছে। এই একটা চরিত্র যে সবসময় পারিসাকে সাপোর্ট করেছে। পারিসা তার মনের সব কথা নির্দ্ধিধায় তাসমির সাথে শেয়ার করতে পারতো। এছাড়াও উপন্যাসটিতে নম্রতা, অনিমেষ, পারিসার বাবা-মা, শার্লকের বাবা-মা, মিমি, নমিরা, ডুরিনসহ বেশকিছু চরিত্র রয়েছে। সবগুলো চরিত্রের গুরুত্ব লেখিকা সমানভাবে তুলে ধরেছেন। কোনো চরিত্রকেই বেশি প্রায়োরিটি দেওয়া হয়নি। যার যতটুকু প্রয়োজন তাকে ঠিক ততটুকুই দেখানো হয়েছে। আমার অপছন্দের দুটি চরিত্র শার্লকের মা ও বোন। এই চরিত্র দুটির আনাগোনা আমাদের চারপাশে অহরহ দেখা যায়। "কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন" বইটা শুরু করার পর একটানা পড়ে গেছি। লেখকের লেখনশৈলী অনেক পরিপক্ব। সুন্দর, সাবলীল লেখা এবং বর্ণনা পাঠক আকর্ষণে সক্ষম। বইটি নির্দিষ্ট একটা গতিতে এগিয়েছে। কোথাও কোনো তাড়াহুড়ো নেই আবার ধীর গতিও নেই। অতিরঞ্জিত কোনো কিছুই বইটিতে পাওয়া যাবে না। যতটুকু লেখা হয়েছে সবটাই গল্পের প্রয়োজনে। বইটির একটা জিনিস আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। পারিসার জীবনে যা-ই ঘটুক না কেন তার ক্যারিয়ারে কোনো ইফেক্ট সে পড়তে দেয়নি। এই জিনিসটা পজিটিভ একটা ভাইব দেয়। বইটির বাঁধাই বেশ ভালো হয়েছে। টাইপিং মিস্টেক না থাকলেও ডুরিন নামটাকে দুইভাবে লেখা হয়েছে। শুরুর দিকে দুরিন লেখা হলেও পরবর্তীতে ডুরিন লেখা হয়েছে। এই ভুলটা ছাড়া আর কোনো ঘাটতি চোখে পড়েনি। বইটির প্রচ্ছদ চোখ ধাঁধানো সুন্দর। প্রচ্ছদের এই দৃশ্যপটে যেন বইয়েরই একটি অংশ ভেসে উঠেছে। ▪️বই পরিচিতি : নাম : কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন লেখক : সুস্মিতা জাফর প্রকাশনী : চলন্তিকা
Was this review helpful to you?
or
#রিভিউ "গতকাল ছিল ১৫ জুন...বর্ষার প্রথম দিন। কোনো এক উপন্যাসে যেন পড়েছিলাম, বর্ষার প্রথমদিনে প্রেম নিবেদন করলে, সেই প্রেম নাকি অমর হয়।" ~শার্লক বই: কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন লেখক: সুস্মিতা জাফর জনরা: রোমান্টিক প্রকাশনী: চলন্তিকা মূল্য: ৫০০৳ রিভিউতে: ফাহারিয়া লিজা আমাদের সমাজের অনেক নারী তাদের গায়ের রঙের কারণে হীনমন্যতায় ভোগে। তার উপর বাড়তি পাওনা হিসেবে আশেপাশের মানুষের বাজে কথা তো আছেই। পারিসাও ভেবেছিল তার মতো সাধারণ মেয়ের জীবনে প্রেম আসবে না; কিন্তু এলো বর্ষার প্রথম প্রেম। কিশোরী বয়সের ভালো লাগা প্রেমে গড়ায়। পারিসাদের প্রতিবেশী শার্লক। মাঝে মধ্যে দেখা হলেও কথা হতো না তেমন। শার্লক আচমকা একদিন পারিসাকে প্রপোজ করে। পারিসাও সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। চিঠি দেওয়া নেওয়া, টেলিফোনে কথা বলা চলতেই থাকে। গল্পটা পারিসার প্রেমকে কেন্দ্র করে হলেও তাতে রয়েছে আরও রং-বেরঙের ঘটনা। যা তাসমি কিংবা নম্রতার জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে। সর্বোপরি গল্পটা প্রেমের, প্রথম বর্ষার প্রেম। আচ্ছা বর্ষার প্রথম প্রেম কি অমর হয়?? জানতে হলে পড়তে হবে "কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন" বইটি। সহজ, সাবলীল ভাষায় উপন্যাসের ঘটনা প্রবাহ এগিয়েছে। লেখকের লেখা ঝরঝরে, প্রানবন্ত। তবে শেষটা কি হবে তা আমি আগেই অনুমান করেছিলাম কিছুটা আর অনুমান সঠিকও হয়েছে। পারিসার জন্মদিনের সারপ্রাইজও অনুমান করেছিলাম। তার থেকেও বড় কথা শেষটা লেখকেরই একটা অণুগল্পে পড়েছিলাম; তার সাথে অনেকটা মিল রয়েছে শেষের দিকে। একটা গল্পের সাথে অন্য গল্পের মিলে যাওয়াটা ভালো লাগে না। কাহিনীটা সাদামাটা, তবে লেখকের লেখার মুন্সিয়ানা রয়েছে। নব্বইদশকের চিঠি দেওয়া-নেওয়ার বিষয়টি সত্যিই দারুণ! পারিসার চরিত্রটি ভালো লেগেছে। বইয়ের সবচেয়ে মিষ্টি ব্যাপার হচ্ছে, চরিত্রগুলোর (বিশেষ করে পারিসার) বইয়ের প্রতি আলাদা একটা ভালোবাসা। বইটা নিয়ে আমি অনেক বেশিই উদগ্রীব ছিলাম; কিন্তু পড়ার পর ততটা আনন্দিত হতে পারিনি। আপুর বইগুলো অনেক দারুণ হয় তাই হয়তো আশাটা বেশিই ছিল। তবে এটা একান্তই আমার ব্যাক্তিগত মতামত। এছাড়া গল্পে ছোট-খাটো কিছু অসঙ্গতি ছিল। কিছু জায়গায় দুরিন আবার কিছু কিছু জায়গায় ডুরিন ছিল। তবে বইটা রেকমেন্ড করাই যায়। কারণ লেখকের লেখার ধরন সুন্দর। পড়ে দেখতে পারেন, ভালো লাগবে৷ গল্পের শেষে টুইস্ট আছে, যা আপনাকে চমকে দিতে পারে!
Was this review helpful to you?
or
#রিভিউ #কঠিন_তোমাকে_ছাড়া_একদিন ভালো লাগলো সুলেখক সুস্মিতা জাফরের নতুন বই "কঠিন, তোমাকে ছাড়া একদিন"। আমার কাছে মনে হয়েছে যে, বইটা মূলত কিশোর কিশোরীদের জন্য লেখা হয়েছে। একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে, যখন মানুষের হাতে হাতে মোবাইল ছিল না, ইন্টারনেটও অত সহজলভ্য হয়ে উঠেনি, সেই সময়ের গল্প লেখক এই বইয়ে তুলে ধরেছেন। তখন মানুষের জীবনযাপন অনেক সহজ ও সাধারণ ছিল। মানুষে মানুষে যোগাযোগ, বাড়ির সামনের খোলা জায়গায় বাচ্চাদের খেলাধুলা করা, বাসাবাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান করা ইত্যাদি ঘটনা সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। এছাড়া ল্যান্ড টেলিফোন ছিল বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করার অন্যতম মাধ্যম। হয়তো এখনকার যুগের অনেক কিশোরকিশোরীই চিনবেও না এই টেলিফোন যন্ত্রটিকে! "কঠিন, তোমাকে ছাড়া একদিন" মূলত কিশোরী পারিসার গল্প। সে ভিকারুননিসা স্কুলের ছাত্রী। তার ছোট বোন নম্রতাও একই স্কুলে পড়ে। পারিসার বান্ধবী তামসিসহ স্কুলের এবং এলাকার অন্যান্য ছেলেমেয়েদের কথা এখানে এসেছে। স্কুলের বাসে স্কুলে যাওয়া, সায়েন্স ফেয়ারে অংশ নেওয়া থেকে শুরু করে কোচিং সেন্টারে একসাথে পড়তে যাওয়া, বান্ধবীদের খুনসুটি ইত্যাদি সুন্দর করে উঠে এসেছে। পারিসা, শিক্ষক ছাত্রী প্রেম পছন্দ করে না। বুয়েটের ছাত্র অনিমেষ, প্রাইভেট টিউটর হিসাবে পারিসাকে পড়ায়। সে যথেষ্ট ভালো পড়ায়। কিন্তু যেহেতু সে পারিসাকে প্রোপোজ করে, সেজন্যে অনিমেষের কাছেও পারিসা পড়তে রাজি হয় না। বডি শেমিং এর মতো একটা খারাপ জিনিসকে লেখক চমৎকার ভাবে তুলে এনেছেন এই বইয়ে। আমাদের সমাজে গায়ের রঙ, স্বাস্থ ইত্যাদি নিয়ে খুব সহজেই বাচ্চা-বুড়ো সবাইকে বিব্রত করা হয়। বডি শেমিং আমাদের সমাজে খুব সাধারণ একটা বিষয়, অথচ যাকে বডি শেমিং করা হয় সে যে কি পরিমাণ মানসিক কষ্টে থাকে, তা একমাত্র ভুক্তভোগীই জানে। বডি শেমিং না করে বরং আদর করে ভালো কথা বলা উচিত, তাতে সবাই খুশি হয়। আমাদের এই গল্পে পারিসাও তার গায়ের রঙের জন্য অনেক কটু কথার সম্মুখীন হয়। কিন্তু বিউটি আন্টির মুখে “শিরিন আপা, আপনার মেয়েটা তো ভারী মিষ্টি দেখতে হয়েছে” শুনে, পারিসা দারুণ খুশি হয়ে উঠে। নিজেকে বারে বারে ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে ঘুরে ঘুরে দেখে, আর ফিসফিস করে বলে, “উহু, এতটাও তো খারাপ দেখতে নই আমি।” বয়স বাড়ার সাথে সাথে এবং উপরের ক্লাসে ওঠার পর থেকে পারিসা নিজেকে একটু গুটিয়ে নেয়, একটু মুখচোরা হয়ে পড়ে। এই সময় সামনের বাড়ির নটরডম কলেজে পড়া ছেলে শার্লককে সে পছন্দ করে ফেলে। নিজের পছন্দের কথা শার্লককে জানাতে না পারলেও একটা ডায়েরিতে সে চিঠি লিখে। শার্লকের সাথে তার যখন প্রেম হবে, তখন সে চিঠি ভর্তি ডায়েরিটা শার্লককে দিবে! শার্লককের সাথে কি পারিসার প্রেম হয়েছিল? জানতে হলে পড়তে হবে চমৎকার, মিষ্টি "কঠিন, তোমাকে ছাড়া একদিন" বইটি। . বইঃ ❝কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন❞ লেখকঃ সুস্মিতা জাফর প্রকাশনাঃ চলন্তিকা প্রচ্ছদঃ সাদিত উজজামান জনরাঃ রোমান্টিক উপন্যাস পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৬৮
Was this review helpful to you?
or
#রিভিউ #কঠিন_তোমাকে_ছাড়া_একদিন #সুস্মিতা_জাফর রিভিউদাতাঃ ফারহানা তাবাসসুম _____ ★পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ গল্প টা প্রেমের। প্রথম প্রেমে পড়ার অনুভূতির। প্রথম প্রেম হৃদয়ের গভীরে দাগ কেটে রাখে। গল্পটাতে কিশোরী বয়সে প্রথম প্রেমে পড়ার কাহিনী ফুটিয়ে তোলা হয়েছে খুবই সুন্দর ভাবে। পারিসা, শার্লক, অনিমেষ, নম্রতা চারজনের প্রথম প্রেমে পড়ার গল্প। পারিসা ও নম্রতা দু বোন। বাবা মাকে নিয়ে ওদের পরিবার। পারিসা ছোট থেকেই গায়ের রং ফর্সা আর কালোর পার্থক্য ফেস করে। নম্রতা ফর্সা আর পারিসা ফর্সা না হওয়ার দরুন পারিসাকে সবার কাছ থেকে অবহেলা করতে দেখা যায়। এমনকি নিজের কাছের মানুষদের থেকেও। পারিসার ক্লাসমেট, প্রতিবেশী মেয়েদের প্রেম হয় কিন্তু পারিসার প্রেম হয়না দেখে পারিসা ভাবে সে ফর্সা নয় বলে তাকে কেউ পছন্দ করে না। হঠাৎ করে পারিসার জীবনেও প্রেম আসে। প্রথম প্রেম। শার্লক নামের এক ছেলের প্রেমে পড়ে সে। ভীষণ ভাবে। কিন্তু প্রকাশ করে না। অনেকদিন পর শার্লক একদিন কল করে পারিসাকে জানাই সে পারিসাকে ভালোবাসে। আর তখনই পারিসাও নিজের ভালোবাসার কথা প্রকাশ করে প্রিয় মানুষটির কাছে। শুরু হয় ওদের প্রেম। লুকিয়ে দেখা করা, চিঠি দেয়া, টেলিফোনে কথা বলা চলতে থাকে। কিন্তু একদিন শার্লকের বোন মিমি সবটা জেনে যায়। শার্লকের মা ও বোন পারিসাকে পছন্দ করে না ফর্সা নয় বলে। কালো বলে কটুক্তি করে। শার্লক জানিয়ে দেয় আর রিলেশন কন্টিনিউ করা সম্ভব নয়। পারিসা তবুও অপেক্ষা করে যায়। এত ভালোবাসার পর প্রিয় মানুষ টাকে ছাড়া থাকা কি সম্ভব। তাকে ছাড়া থাকা যে খুব কঠিন হয় যায়। শার্লক কি কাজটা ঠিক করলো! নিজেই সম্পর্কে এগিয়ে আবার নিজেই মাঝপথে পারিসাকে ছেড়ে চলে যায়। এটাকে কি ভালোবাসা বলে? ভালোবাসলে কি কাউকে এভাবে ছেড়ে থাকা যায়! তবুও পারিসা নিজেকে ভাঙতে দেয়নি। খুবই শক্ত প্রকৃতির মেয়ে পারিসা। নিজেকে খুব শক্ত ভাবে সামলিয়ে নিয়েছিল। অন্য দিকে পারিসার হোম টিচার অনিমেষ পারিসার প্রতি মুগ্ধ। পারিসারকে পড়ানোর সময় পারিসার দিকে মুগ্ধ ভাবে তাকিয়ে থাকে। পারিসাকে জানাই নিজের অনুভূতির কথা। কিন্তু পারিসা সেখান থেকে পালিয়ে বেড়ায়। অনিমেষকে নিজের জীবন থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। টিচার-স্টুডেন্ট প্রেম তার কাছে আনইজি লাগে। ~ চরিত্রঃ ★পারিসাঃ গল্পের মূল চরিত্র। গল্পের নায়িকা যে। পারিসা উচ্চস্থ পরিবারের মেয়ে। পছন্দের চরিত্র একটা। হুট করে একদিন প্রমের পড়ার অনুভূতির জোয়ারে ভাসে। আবার হুট করেই একদিন সব শেষ হয়ে যায়। এক দমকা হাওয়ার মত সেই প্রেম হারিয়ে যায়। তবে বুকের গভীরে রয়ে যায় সেই অনুভূতি। ভুলতে না পারার যন্ত্রণা রয়েই যায়৷ নিজেকে ভেঙে গুড়িয়ে দিতে দেয় না। জীবনের আসা সব বাধা বিপত্তিকে পিছিয়ে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছায় সে। একজন সফল ডক্টর হয়ে দেখায় সে। ~ ★অনিমেষঃ পারিসার হোম টিচার। এই চরিত্র টাকে গল্পে অল্প সময়ই দেখানো হয়েছে। তবুও এই চরিত্রটার প্রতি একরাশ মুগ্ধতা জড়িয়েছে আমার। পারিসা তার প্রথম প্রেম। একদিন হুট করে হারিয়ে ফেলে সেই ভালোবাসাকে। আচ্ছা অনিমেষ কি পারিসাকে নিজের করে পাবে? নাকি দমকা হাওয়ার মত ভেসে যাবে তার ভালোবাসা! ~ ★শার্লকঃ পারিসার প্রথম প্রেম। শার্লকের মনেও ছিল পারিসার জন্য কিছু। রিলেশনের মাঝপথে পারিসাকে ছেড়ে দূরে সরে যায়। আবার হুট করে একদিন পারিসার সাথে দেখা হলে তাকে কালো বলে কটুক্তি করে ঠিক তার মা ও বোনের মত। পরিবারের বাইরে নয় সে। সেও তার পরিবারের সবার মতন। চরিত্রটার প্রতি ভালো মন্দ দুটোই লেগেছে। ~ ★নম্রতাঃ পাশের বিল্ডিংয়ের এক ছেলেকে না দেখেই দূর থেকে তাকে ফলো করতে করতে তার প্রেমে পড়ে যায়। পড়ালেখায় অমনোযোগী মেয়ে রাত-দিন প্রিয় মানুষটাকে দেখার জন্য টেবিল ছেড়ে উঠতেই চাই না। টেবিলের পাশে তার জানালা যেখান থেকে সে তার প্রিয় মানুষকে দেখে। একদিন না দেখলে ছটফট করে উঠে। এক তরফা ভালোবাসা। আচ্ছা নম্রতা কি তার সেই প্রিয় মানুষ টাকে নিজের করে পাবে? ~ ★তাসমিঃ পারিসার বেস্ট ফ্রেন্ড। যে সবসময় পারিসার সকল বিপদে আপদে পাশে থেকে পারিসাকে সাপোর্ট করেছে। এই তাসমির জীবন বেশি সুখের যায় না। মা মা'রা যাবার পর তাসমির জীবন দূর্বিষহ হয়ে পড়ে। পারিবারিক জটিলতা লেগেই থাকে। তবে তার জীবনেও প্রথম প্রেম আসে। সে কি সেই গিটারিস্ট কে পাবে? ~ গল্পে আরও কয়েকটি চরিত্র রয়েছে। পারিসার মা-বাবা, শার্লকের মা-বাবা, মিমি, তিয়ানা, ছোট্ট নমিরা, ডুরিন আরও কয়েক চরিত্র। ডুরিন চরিত্র টা আমার কাছে খুবই বিরক্তিকর লেগেছে। খুবই একরোখা, অহংকারী মেয়ে। _____ ★মতামতঃ প্রথম প্রেমের গল্প হওয়ায় গল্পের মাঝে হারিয়ে গিয়েছিলাম। মনে পড়েছিল অনেক কিছুই। খুবই চমৎকার লেগেছে গল্প টা। তবে নম্রতার কাহিনীটা একটু ধোঁয়াশায় রয়ে গেলো। ওকে নিয়ে আর একটু লিখলে ভালো লাগতো। আর গল্পের শেষ টা আরও বড় হলে পড়ে আরও তৃপ্তি পেতাম। তবে শেষ টা যেমন চেয়েছি তেমনই মত মতন হয়েছে। চমৎকার এন্ডিং অপেক্ষার প্রহর সুন্দর। অপেক্ষা তিতো হলেও এর ফল মিষ্টি।
Was this review helpful to you?
or
বই:কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন লেখিকা:সুষ্মিতা জাফর প্রকাশনী:চলন্তিকা "আমার সারাটা দিন মেঘলা আকাশ বৃষ্টি তোমাকে দিলাম শুধু শ্রাবণ সন্ধ্যা টুকু তোমার কাছে চেয়ে নিলাম।” প্রথম প্রেম কী?প্রথম প্রেম হচ্ছে রঙহীন সাদা স্লেটে রঙিন আলপনা,পেটের ভীতর শত প্রজাপতির ডানা মেলে উড়ে চলা,মনের আকাশে একরাশ মেঘ বা হঠাৎ বজ্রপাতের নিনাদ শোনা।সেই মিষ্টি প্রেমের গল্প নিয়েই আজকের বইটির মূল প্রেক্ষাপট।ভিকারুননিসা স্কুলে পড়া দুই বোন সহ মধ্যবিত্ত এক পরিবার।পরিবারের দুটি মেয়েই বয়:সন্ধিকালের সময় পার করছে। হরমোনের উঠানামার সাথে তাদের ভেতর নানা পরিবর্তন আসতে থাকে।গল্পের মূল নায়িকা পরিবারের বড় কন্যা পারিসা ও তার প্রিয় পুরুষ শার্লক।পারিসার চরিত্রটি মেধাবি,গুণী, চুপচাপ,মুখচোরা একটি মানবীর আর শার্লক যেন দুর্দমনীয় একজন মানব।পাশাপাশি থাকার সুবাদে ধীরে ধীরে প্রেম আর সেই প্রেমের সমাপ্তিতেই গল্পের শেষ পরিণতি। গল্পটি পড়তে গিয়ে আমি টাইম ট্রাভেল করে স্কুলে পড়ার সময় পৌছে গিয়েছিলাম।পড়ালেখার জন্য পারিসার বিভিন্ন স্যার ম্যাডামদের পড়তে যাওয়ার কথা যেন নস্টালজিয়ার পাখায় নিয়ে আমাকে ফেরত পাঠাচ্ছিলো বেইলী রোডের সেই কোচিং পাড়ায়।কিশোরী বয়সের প্রেম বড়ই বেদনাবিধুর হয়।জীবনে প্রথম বিপরীত লিঙ্গের কারো কাছ থেকে আলাদা এটেশন মনে এক ঘূর্ণিপাকের সৃষ্টি করে।তবে গল্পের মূল ভালো লাগার জায়গা ছিলো পারিসার নিজের পড়ালেখার সাথে কোনো রকম কম্প্রোমাইজ না করা।আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টির জলে ভালোবাসার জন্ম হলেও সেই ভালোবাসার পূর্ণতা কি আসলেও সম্ভব? নিজেদের পড়ালেখা,ক্যারিয়ার সহ নানা রকম সমস্যা এলে প্রেমের এই সম্পর্কগুলো বেচেঁ থাকার রসদ পায় না।কোথায় যেন পড়েছিলাম বালিকা বয়সের প্রেম বড়ই সাংঘাতিক হয়।না পারে নিজের অন্তরকে শান্ত করতে না পারে সমাজের সাথে যুদ্ধ করতে।তাই তো অন্তর গুমরে গুমরে ওঠে।অনিমেষের পারিসার জীবনে সঠিক সময়ে আগমন ছিলো যথার্থ।শিক্ষকের সাথে প্রেম বিষয়টা আমার জন্য অস্বস্তিকর,তাই তো পারিসার জীবনে তার নতুন রুপে আগমন ছিলো চিত্তাকর্ষক।জীবন সঙ্গি হিসেবে তাকেই গ্রহণ করা উচিৎ যে আপনাকে ভালোবাসে,নইলে সারাজীবন তার মাশুল দিতে হয়।লেখিকা এখানে চমৎকারভাবে শ্যামলা মেয়েদের যে সমাজে ছোট করে দেখার প্রবণতা তা আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন।মানুষের সৌন্দর্য তার অন্তরে।বাহ্যিক সৌন্দর্য তো পরিবর্তনশীল কিন্তু অন্তরের সৌন্দর্য সদা নিজস্ব আলোয় প্রস্ফুটিত।
Was this review helpful to you?
or
#কঠিন_তোমাকে_ছাড়া_একদিন খুব প্রিয় একজন মানুষ এবং প্রিয় একজন লেখকের বই দিয়ে এবারের মেলার বই পড়া শুরু করলাম। আনন্দের সাথে বলছি প্রিয় লেখক সুস্মিতা জাফর আমাকে হতাশ করেননি। বইটির নামখানিতে যতটুকু আবেগ মিশে আছে ঠিক ততটুকু আবেগ মিশে আছে বইয়ের প্রতিটা পাতায়। "কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন" একজন কিশোরী মেয়ের প্রথম প্রেমে পড়ার গল্প, তার জীবনের লুকানো আবেগের গল্প। মেয়েটির কিশোরী থেকে তরুনী হয়ে ওঠার গল্প। আমি নিশ্চিত বলতে পারি, এই গল্পের সাথে আমরা প্রত্যেকেই আমাদের জীবনের প্রথম প্রেমের গল্পের কোনো না কোনো সাদৃশ্য খুঁজে পাব। চোখের সামনে আমাদের নিজেদের কিশোরী বেলার স্মৃতিগুলো ভেসে উঠবে। বইটার শেষে মজার একটা টুইস্ট আছে। শেষের টুইস্টটা পড়ার পর থেকে আমার ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা লেগেই আছে। বইয়ের শেষ ভাগে এসে আমি দারুণ খুশী! বইটি সকল পাঠককে রিকোমেন্ড করছি।
Was this review helpful to you?
or
"কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন" বইটার নাম দেখে বোঝা যায় এটা একটা রোমান্টিক জনরার উপন্যাস। এটা সুস্মিতা জাফরের লেখা আমার পড়া প্রথম বই। এর আগে আপুর একটা ই-বুক পড়েছিলাম তবে ই -বুক আর বইয়ের মধ্যে বিশাল পার্থক্য থাকে। যেহেতু লেখিকা আপুর লেখা সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা ছিলো না উপন্যাসের প্রথম লাইন পড়েই একটু আঁতকে উঠেছিলাম যে রোমান্টিকের নামে আবার একটু বেশিই বোল্ড লেখা হবে কি না..? তবে পুরো বইয়ের মধ্যে তেমন কোনো কিছুই পাইনি। গল্পটা হলো পারিসা নামক এক মেয়ের কিশোরী বয়সে প্রেমে পড়ার গল্প। পারিসা নামটা বেশি সুন্দর হলেও পারিসা নিজেকে নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগে তার কারণ হলো তার গায়ের রঙ। আমাদের সমাজে কোনো মেয়ের গায়ের রঙ কালো হোক বা শ্যামলা তাকে বিভিন্নভাবে বুলিংয়ের স্বীকার হতে হয়। এমনকি নিজের পরিবারের মানুষগুলোও বিভিন্নভাবে ছোট করে দেখে শুধু গায়ের রঙের জন্য। গল্পের পারিসাও তেমন ছোট থেকে নানা কথা শুনতে শুনতে সে ধরেই নিয়েছে যে সুন্দর না। তাই যখন কেউ তার প্রসংশা করে তার পুরো দিনটাই যেন ভালো হয়। এই কিশোরী হঠাৎ করেই তাদের পাশের বাসার ছেলের প্রেমে পড়ে। শুধু সে নয় সেই ছেলেটাও তাকে জানায় ভালোবাসার কথা। শুরু হয় বাসার ল্যান্ডলাইনে লুকিয়ে চুড়িয়ে ফোন আলাপ। কিন্তু স্ট্রেইট প্যারেন্টসের চোখ ফাঁকি দেওয়া কি এতোই সোজা যখন তাদের সুখের শত্রু চারপাশে ছড়ানো ছিটানো? গল্পটা প্রথমে টিনএজ ছেলেমেয়েদের সাধারণ প্রেমকাহিনির মতোই এগিয়েছে। হঠাৎই কাউকে কোনো কারণ ছাড়াই ভালো লেগে যাওয়া, নিজের অপছন্দের বিষয়গুলোও ভালোলাগার মানুষের জন্য পছন্দ করা, বাবা মায়ের চোখ ফাঁকি দেওয়া, অল্পতেই আবেগী হয়ে পড়া ইত্যাদি বিষয়গুলো প্রথম থেকে নজরে আসে। তবে গল্পটা ঠিক কোনদিকে যাবে, কিভাবে শেষ হবে সেটা শেষ না করে আইডিয়া করার উপায় ছিলো না। রোমান্টিক জনরার উপন্যাস হলেও এখানে একসাথে অনেকগুলো বিষয়ের উপর আপু কলম চালিয়েছেন। পারিবারিক কলহ, মানুষিক অবসাদ, কৈশোরের বিভিন্ন পরিবর্তন, আবেগ, ভালোলাগা, পরিবর্তনগুলো ফুটিয়ে তুলেছেন। যেহেতু গল্পের প্রধান চরিত্রগুলো ছিলো কিশোর-কিশোরী তাই তাদের কল্পনার দিকগুলো, কৈশোরের বিভিন্ন ধাপের মানুষের পরিবর্তন গুলো উপন্যাসে স্থান পেয়েছে। গল্পে শুধু পারিসা নয় আরও বেশ কিছু চরিত্র ছিলো। তবে বেশিরভাগ চরিত্রগুলোই ছিলো নারী চরিত্র আর তাদের প্রাধান্যতাই ছিলো বেশি। প্রতিটা নারী চরিত্রের মাধ্যমে কোনো না কোনো দিক ফুটে উঠেছে। পারিসার ছোট বোন নম্রতার মধ্যে এক অন্যরকম অনুভূতি দেখতে পাই। কৈশোরের হঠাৎ পরিবর্তন, না দেখেই শুধু কারো অস্তিত্বের প্রতি প্রবলভাবে অনুরক্ত হয়ে পরা। তাসমির মধ্যে যেন আমাদের সমাজের বড় একটা অংশর বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে। পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি, মানুষিক চাপ, চঞ্চলতা অনেক কিছুর সন্নিবেশ ঘটেছে এই চরিত্রটার মধ্যে। তাসমির চরিত্রটাকে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। অনেকটা বাস্তববাদী। এছাড়াও গল্পের কোনো চরিত্রকে তেমন কাল্পনিক মনে হয় নি শুধু মাত্র অনিমেষ ছাড়া। নাম দেখে মনে হতে পারে মাখোমাখো কোনো প্রেমের উপন্যাস হতে পারে, তবে যতটুকু দরকার লেখিকা ততটুকই প্রতিটা চরিত্রকে প্রাধান্য দিয়েছেন। অতিরিক্ত কোনো বাড়াবাড়ি ছিলো না বা অস্বস্তিকর কোনো কিছু ছিলো না। শেষটা ভালো লেগেছে বেশি। লেখার ধরণ সুন্দর সাবলীল, খুব বেশি গাম্ভীর্যতা নেই। এমন লেখা সহজেই অনেকটা পড়ে ফেলা যায়। আরেকটা বিষয় হলো পড়ার সময় কোনো জায়গায় বিরক্ত লাগে নি। মনে হয় নি বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে তবে পারিসার শেষ দিকের কাহিনিগুলো পড়ে একটু অবাকই হয়েছিলাম যদিও।। পরিশেষে রোমান্টিক জনরার মধ্যে মোটামুটি সুন্দর একটা বই। প্রচ্ছদ, বাইন্ডিংও সুন্দর। তবে দামটা আমার কাছে একটু বেশি মনে হয়েছে যেহেতু ১৬৭ পেইজের বই। বই : কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন লেখিকা : সুস্মিতা জাফর প্রকাশনী : চলনন্তিকা মলাট মূল্য :৫০০৳ ( বি.দ্র: যেহেতু এটা নতুন বই। এখনো বইমেলা শেষ হয় নি তাই গল্পের কাহিনি যতটা কম বলা যায় সেই চেষ্টা করেছি। যাতে কেউ আগ্রহ হারিয়ে না ফেলে। শুধু অল্প কিছু অংশ লিখেছি, যদিও গুছিয়ে আলোচনা করতে পারি নি। যদি স্পয়লার হয়ে যায় এই ভয়ে।পরবর্তীতে আরও গুছিয়ে আলোচনা করব ইন শাহ আল্লাহ। সবাই বইটা পড়ুক)
Was this review helpful to you?
or
#কঠিন_তোমাকে_ছাড়া_একদিন আমি রোমান্টিক কাহিনি আজকাল তেমন পড়ি না আর। সুস্মিতা আপুর লেখা দেখেই বইটা কিনেছিলাম দ্বিতীয়বার না ভেবেই। মাত্র বইটা পড়ে শেষ করলাম। গত সন্ধ্যায় শুরু করেছিলাম পড়া। মাঝে কিছু কাজে গ্যাপ যায় পড়া। পরে সারা রাত জেগে বইটা পড়ি। এখন এই ভরদুপুরে কাজ ফেলে বইটা শেষ করে আমি পাগলপ্রায় হয়ে গেছি মুগ্ধতায়!! আসলে বইটা যারা পড়েছেন তারাই বুঝবেন এর কারণ! #স্পয়লার_এলার্ট: কিছু কথা না বলে পারছি না আমি। তাই এলার্ট দিয়ে নিলাম আগেই। বইয়ের শেষ টা মারাত্মক সুন্দর!! অপ্রত্যাশিত সুন্দর! খুব প্রিয় একটা চরিত্র গল্পে হঠাৎ করেই হারিয়ে গেছিলেন। আমিই অবাক ছিলাম উনার কোনো উল্লেখ কেন নেই আর! সত্যিকার ভালোবাসার বুঝি এভাবেই জয় হয়!! গল্পটায় কেমন একটা অপূর্ণতা, শূন্যতা ছিল! না পেল নম্রতা তার মনের মানুষকে, না পেল পারিসা! শেষ টা এমন হবে ভাবতেই পারিনি। পুরা গল্পের শেষটা সবচেয়ে ভালো লেগেছে আমার। মনটা ভালো হয়ে গেছে। রিওন কাহিনিতে আসার পর থেকেই ম্যাচিউর বয়সের প্রেম ভালো লাগছিল খুব। হয়ত আমি নিজেও ম্যাচিউর বয়সে আছি দেখেই। কাহিনির সবচেয়ে অল্প সময় থাকা ভালোলাগার চরিত্রটা এসেছে আবার ভালোবাসায় ঘিরে রাখতে পারিসাকে। চমৎকার লেখনী আপুর! মানুষ কতটা স্বার্থপর হয় আর বদলাতে কোনো সময় লাগেনা সেটা এই কাহিনিতে স্পষ্ট! পারিসা তার যোগ্য জীবনসঙ্গীই পেয়েছে। যে তাকে নিরবে, আড়াল থেকে ভালোবেসে গেছে এত্ত গুলা বছর! একেই বলে আসল প্রেম কাহিনি!! "আমাদের আসলে তাকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে মর্যাদা দেওয়া উচিত যে মানুষটা আমাকে ভালোবাসে, যে আমাকে ভালো রাখতে পারবে।" - বেস্ট লাইন ছিল এটা ❤️❤️