User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
অভিমান গল্পটি পড়তে গিয়ে আমার রাজশাহীর কথা মনে পড়লো। ওই যে পদ্মার পাড়, ক্যাম্পাস, বোয়ালিয়া আর কলেজ রোডে রিকশায় ঘোরাঘুরি। আহা, স্মৃতির দিনগুলো সামনে ভেসে উঠলো। পাতা উল্টাতেই তরুর গল্পটা পেলাম। এইটা দিয়েই বইটা শুরু করলাম। গল্পের জার্নিটা দারুণ। প্রসঙ্গটা আমারে টেনে নিয়ে গেলো পরের গল্পে। শুরুতেই যে সালামের গল্পটা অনেকটা শেষ দিকে এসে চোখ রাখলাম। গেল শীতের দিন। আমি আর রাশেদ ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জুবেরির সামনে হাঁটছি। প্যারিস রোডে সোডিয়াম লাইটের আলোটা ভীষণ রকমের ভালো লাগছিলো। ক্যাম্পাসে হালকা শীত ঝেঁকে বসেছে। সামনের পুকুর পাড়, শানবাঁধানো ঘাটে বসে আড্ডা দেয়ার স্মৃতিটা সামনে এলো অভিমান গল্পটা পড়তে গিয়ে। লাল জুলাইয়ের গল্প নিয়ে লেখা সাব্বির জাদিদের বইটা শেষ করলাম সেহরির ঠিক আগ মুহূর্তে। শুরুর দিকে 'আলো থেকে অভিমান, একটি গোলাপ কিংবা পলুর' শেষ পাতা পর্যন্ত একটানা একটা ঘোরের মধ্যে টেনে নিয়ে গেল। সমসাময়িক পটপরিবর্তনটা গল্পের ধাঁচে পাঠকদের সামনে হাজির করলেন গল্পকার। লেখকের গল্প বলার ঢঙটা আলাদা। আলাদা মানে টোটালি গতানুগতিক না, এইটা টের পেয়েছি পিতামহ নামের দুর্দান্ত উপন্যাসটা পড়তে গিয়ে। আমার পড়া সেরা বইয়ের একটা এই পিতামহ। ফলে পড়তে গিয়ে ক্লান্তি কিংবা থেমে থাকা লাগে নাই। দুইটা গল্প আমার স্মৃতির কাছাকাছি হওয়াতে আরেকটু জোর পেলাম। অভিমান আর গোলাপের গল্পটা আমাকে অনেকটা স্মৃতিকাতর করে তুলেছে। রাজশাহীর প্রেম আর কৃষ্ণচূড়ার মোহ আমারে তাড়িয়ে বেড়ায়। এক পাতা পড়তে গিয়ে পেছনের পাতাটা আবারো উলটিয়ে দেখি। যেন স্মৃতির দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছি। টেবিলে রাখা ডেস্ক ক্যালেন্ডারে দেখি শিল্পির তুলিতে আঁকা কৃষচূড়ার গাছ ডাল মেলে আছে। বইটা পাশেই রেখেই ছবি তুললাম। এই ফুল গাছটার প্রতি আমারও দুর্বলতা কাজ করে। গল্পের মতো বারান্দায় সকালের ভোর দেখা আনন্দের। তার সাথে কৃষচূড়ার দেখা পাওয়া যেন এক রঙিন সকাল। এমন সকাল দেখার জন্য গ্রামে একটা গাছ লাগানোর ইচ্ছে বহুদিনের কিন্তু হয়ে উঠেনি। গোলাপের এই গল্পটা পড়তে গিয়ে বার কয়েক থেমেছি। গল্পের গভীরতা আমাকে ভাবিয়ে তুলেছে ভীষণ রকম। সাব্বির জাদিদ ভাই, এবার ঈদে গ্রামে গেলে এবার একটা কৃষচূড়ার গাছ লাগাবো, তাতে এই গল্পটা আমারে ভুলতে দিবে না। পড়া আর লেখায় অনেক কিছুই বলা যায় না। মানে অনূভুতি ঠিক তুলে ধরা যায় না। বইয়ের সব কয়টি গল্পই আলাদা আলাদা চিন্তা হাজির করে। হাজির করে জুলাইয়ের জাগরণ। গল্পের তন্বীর ওই এক গোলাপের জন্য যে হাহাকার, ব্যকুলতা তা আমারে ব্যথিত করে তুলে। অনেক পরিবর্তন প্রকৃতির কারণে হয়ে যায়। তন্বীর গোলাপকে বাঁচাতে তেমনি লোকালয়ে নেমে আসে বাঘের মতো, যেমন জুলাইয়ে বিপ্লব নেমে এসেছিল এদেশের বুকে। গোলাপের মতো একটি দেশ বেঁচে যাওয়ার আনন্দ আজ লাখো তন্বীর মুখে হাসি, আনন্দ আর উচ্ছ্বাসের ফুল ফুটিয়েছে। মিজান ফারাবী
Was this review helpful to you?
or
বই: একটি গোলাপের জন্য লেখক: সাব্বির জাদিদ ধরন: গল্পগুচ্ছ প্রকাশনী: ঐতিহ্য পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৯৬ এ দেশে এমন একটি বছর এসেছিল, যে বছরের এক মাস ৩৬ দিনে পূর্ণতা পেয়েছিল। ২৪ ও ৩৬—এই দুটি সংখ্যা ইতিহাসের পাতায় সম্ভবত অমর হয়ে থাকবে। কারণ এই দুটি সংখ্যার ভেতর লুকিয়ে আছে অসংখ্য স্মৃতি, যার বেশিরভাগই বেদনাদায়ক। আর এই বেদনাবিধুর সময়ের পরেই বাঙালি পেয়েছিল সেই আকাঙ্ক্ষিত সুখ, যার জন্য তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল। জুলাই ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানকালীন সময়ে অনেক হৃদয়বিদারক ঘটনা ফেসবুকের সুবাদে দেখা হয়েছে। যখন ইন্টারনেট বন্ধ ছিল, তখন প্রতিটি মুহূর্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার জন্য দুশ্চিন্তায় কেটেছে। যদিও দিনের বেলায় এই দুশ্চিন্তা কিছুটা কম থাকত, কিন্তু রাত হলেই তা বহুগুণে বেড়ে যেত। বারবার মনে হতো, ২০১৩ সালের ৫ই মে-র শাপলা চত্বরের মতো কোনো নারকীয় ঘটনা কি আবার ঘটবে? ফেসবুকে আন্দোলনরত ছাত্রদের আহত বা শহীদ হওয়ার খবর আসছিল, কিন্তু তারপরের খবর কতটুকু আমরা জানতে পেরেছি? প্রতিটি আহত ও শহীদ ভাইয়ের একটি পরিবার আছে, ভালোবাসার মানুষ আছে। আবার এমন অনেক ছিল, যারা আন্দোলন চলাকালীন একে অপরের সাথে গভীরভাবে জড়িয়ে গিয়েছিল, যদিও আগে তাদের মধ্যে কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল না। আন্দোলনের সময় তৈরি হওয়া এই বন্ধন আজীবন কিছু মানুষের স্মৃতিতে অমলিন হয়ে থাকবে। কিন্তু এর পরেও অনেক ঘটনা রয়েছে, যা আমরা জানিই না কিংবা জানার চেষ্টাও করিনি। সেইসব অজানা ঘটনার কিছুটা হলেও অনুভব করা যাবে সাব্বির জাদিদ ভাইয়ের গল্পগুচ্ছ "একটি গোলাপের জন্য" বইটিতে। লেখালেখির জগতে সাব্বির জাদিদ ভাইয়ের অন্যতম গুণ হলো, তিনি বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখতে পারেন। ছুটির দিনে বইটি হাতে নেওয়ার পর এক বসাতেই শেষ না করে উঠতে পারিনি। এটি শুধু একটি বই নয়, এটি এক টুকরো ইতিহাস একটি অনুভূতি, যা পাঠকের হৃদয়ে গভীর ছাপ ফেলে যাবে।
Was this review helpful to you?
or
#রিভিউ ▫️বই: ❝একটি গোলাপের জন্য❞ ▪️লেখক: সাব্বির জাদিদ ▫️প্রকাশনা: ঐতিহ্য ▫️পৃষ্টা: ৯৬ ◾পাঠ-প্রতিক্রিয়া: . চব্বিশের জুলাই গণ অভ্যুত্থানে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প লিখেছেন। প্রথমত পত্রিকায় ‘নিহত গোলাপ’ গল্পটি পড়ে আমি জুলাই -অভ্যুত্থানের সময়ের কথা ভাবতে থাকি। ফ্যাসিস্ট সরকার এবং তার গুন্ডাবাহিনীরা আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা এবং আহত করেছিলেন, তার ওপর আবার শহিদদের লাশ নিয়ে শহিদদের পরিবার বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। জুলাই আন্দোলনের শহিদদের রাষ্ট্রদোহী ট্যাগ তারা লাগিয়েছিল। অসহায় শহিদদের পরিবার কতটা অসহায় হয়ে পড়েছিল সেই সময়টাতে ভাবলেই গা জ্বলে উঠে। ◾ ‘ নিহত গোলাপ’ “ ড্রাইবার: আমার পোলাডাও শহিদ হইছে। কী আর কমু, যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার দিয়া আইতেছিলাম। পোলাপান এক আহত পোলারে আমার গাড়িতে তুইলা দিল। হাসপাতালে আইতে আইতে সে মরা। দরজা খুইলা দেখি সে আর কেউ না, আমার আরমান। ” মনে পড়ে গেল একজন অটোরিকশা চালক এক আহত শিক্ষার্থীকে তার গাড়িতে উঠিয়ে দেখে সে তা নিজেরই সন্তান। আহা কী মর্মান্তিক এক দৃশ্য ছিল! আরেকটি ঘটনা শহিদদের লাশও পুড়িয়ে ফেলার মত করুণ চিত্র গল্পে লেখক তুলে এনেছেন। ◾ ‘আগুনের চিতা’ গল্পে এক শহিদের বাবা,“ ছেলে হারাইছি দুঃখ নাই, কিন্তু মারার পর পোড়ালো ক্যান! এর বিচার আল্লাহর কাছে দিলাম। আমার সোনার ছেলের দেহডারে ওরা কয়লা বানাইয়া দিছে। ” একটা শহিদের পরিবারের জন্য এ ঘটনাটা কতটা বেদনাদায়ক হতে পারে তা আমরা কল্পনাও করতে পারব না। সবগুলো গল্পের মধ্যে আমার কাছে ‘নিহত গোলাপ’, ‘আগুনের চিতা’, ‘পলু’, ‘লাঠি’, ‘আলো’ গল্পগুলো বেশ ভাবিয়েছে। ▪️ আটাশ ফেব্রুয়ারি দুই হাজার পঁচিশ।