User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
মোটামুটি ভালোই লাগলো।
Was this review helpful to you?
or
অনুভূতিকথন বই : অমলতাসের আমন্ত্রণ অমলতাস ভাবতেই চোখের তারায় ভেসে উঠে হলুদ ফুলের চিত্র। এই বই পড়ার আগে এই ফুল নিয়ে কখনো এতটা ভাবি নি। চিন্তার মাঝেই আসে নি। বইটি পড়া শুরু করে আমি বেশ শান্ত, স্থিরভাবেই আগাচ্ছিলাম। শেষ হলেই তো শেষ। বইয়ের প্রতিটি জায়গার,সময়ের,প্রতিটি চিত্রের নিঁখুত বর্ণনা গুলো আমি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। সাজেক... সবুজ পাহাড়,মেঘ... বইয়ের পাতায় বর্ণনায় আমি মনে হচ্ছিলো নিজেই মেঘের দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছি। মেঘ আমাকে ছুঁয়ে দিচ্ছে। মনে হচ্ছিলো নিজেকে হারিয়ে ফেলছি সেই পাহাড়ে, মেঘ এর আলতো ছোঁয়া যেন অনুভব করছিলাম। অমলতাসের সেই হলুদ ছোঁয়া, দোলনায় যেন দোল খাচ্ছি আর সবুজ সমারোহে হারিয়ে যাচ্ছি। প্রতিটি চিত্র অনুভব করতে পেরেছি বইয়ের গভীরে হারিয়ে গিয়েছি। অনেক সময় এমন হয়েছে বই পড়ার মাঝেই সেই সময় কে ভেবে ভেবে থমকে গিয়েছি। আমি দুঃখ, কষ্ট, গভীর বেদনার মাঝে যখন থমকে যেতাম, বই বন্ধ করে তখন সেটা উপলব্ধি করতাম। কঠিন কিছু সময়, পরিস্থিতিতে মানুষ কত দৃঢ়তার পরিচয় দিতে পারে, এখান থেকে আমি সেই বিষয়ও জানতে পারলাম। আমান, আনতারা এই দুটো চরিত্রের ব্যক্তিত্বে আমি মুগ্ধ হয়েছি। আনতারা চরিত্রটি পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে মেয়েদের এমন ব্যক্তিত্বই হওয়া উচিত, নিজেকে চরম পরিস্থিতিতেও কিভাবে সামলে নিতে হয় এটা প্রতিটি মেয়ের জন্য শিক্ষণীয়। আমান চরিত্রটি নিয়ে লিখতে গিয়েও আমি লেখার মতো কিছুই যেন খুঁজে পাচ্ছিনা। আসলে এই চরিত্রটি পড়তে গিয়ে মাঝে মাঝেই আমি থেমে গিয়েছি। তারপর চিন্তা ভাবনায়,মন মস্তিষ্ক জুড়ে শুধু একটি নামই ভেসে উঠেছে আমান.... অমলতাসের আমন্ত্রণ বইটি আমি পড়তে পড়তে হারিয়ে গিয়েও আবার নিজেকে বইয়ের ভাঁজে খুঁজে নিতাম। বইটি মনে দাগ কেটে গিয়েছে একদম খুব খুব গভীরভাবে। এতো দারুণ একটি বই শেষ করে মন তৃপ্ত। খুব সুন্দর কিছু সময় কাটিয়েছি বইটির সাথে। ??
Was this review helpful to you?
or
"অমলতাসের আমন্ত্রণ" উপন্যাসটি পড়ার অভিজ্ঞতা যেন একটি স্বপ্নময় ভ্রমণ, যেখানে সাজেক উপত্যকার মেঘে ঢাকা পাহাড়, নীরব প্রকৃতি আর আমলতাসের দোলনা শুধু চোখের সামনে দৃশ্য হিসেবে নয়, হৃদয়ের গভীরে এক অদৃশ্য আলোড়ন হিসেবে জেগে ওঠে।প্রতিটি মুহূর্তে মনে হয়, যেন আমি নিজেই সেই মেঘের বাড়িতে দাঁড়িয়ে, মেঘে ঢাকা সকালের চায়ের কাপ হাতে নিয়ে জীবনের গভীরতম প্রশ্নগুলোর মুখোমুখি হচ্ছি। “মেঘে ঢাকা সকালের চা,” “বালিশের নিচে রাখা ডায়েরি,” বা “আমলতাসের দোলনা”—এই চিত্রকল্পগুলো উপন্যাসটিকে শুধু দৃশ্যমান নয়, স্পর্শযোগ্য, অনুভবযোগ্য করে তোলে। উপন্যাসের শক্তি লুকিয়ে আছে এর জীবন্ত চরিত্রগুলোর মধ্যে। আনতারা একজন সংবেদনশীল, স্বপ্নময়ী তরুণী, যার হৃদয়ের সরলতা এবং ভালোবাসার তীব্রতা পাঠককে মুগ্ধ করে। তার বিপরীতে আমান এক জটিল চরিত্র—যার অতীতের বেদনা তাকে আবেগের গভীরে ডুবিয়ে রেখেছে। লেখক আমানের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং তার হৃদয়ের ক্ষতগুলোকে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। আশফাকের কথা ভাবলে মনে হয় এক শান্ত নদীর কথা, যে নিজে থেকে কখনো ঢেউ তুলে না, কিন্তু তার তীরে অন্যের গল্পের ফুল ফোটে। ফাইয়াজের আগমন গল্পে নতুন এক মাত্রা যোগ করে।তার মধ্যে একটা ত্যাগের ছায়া আছে, কিন্তু সেটা কখনো দুর্বলতা নয়—বরং এক অপার শক্তি, যা তাকে মানুষ হিসেবে আরও উজ্জ্বল করে। প্রতিটি চরিত্রই তাদের নিজস্ব গল্প এবং আবেগ নিয়ে এসেছে, যা উপন্যাসের বুনটকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। উপন্যাসটি ভালোবাসার বিভিন্ন রূপকে তুলে ধরেছে—প্রেম, ত্যাগ, ক্ষতি এবং নতুন করে বাঁচার শক্তি।লেখক দেখিয়েছেন কীভাবে অতীতের বেদনা মানুষকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখতে পারে, আবার ভালোবাসার শক্তি তাকে মুক্তিও দিতে পারে। এই উপন্যাস প্রেমের গল্প পছন্দ করেন, এমন পাঠকদের জন্য একটি আদর্শ পছন্দ। তবে এটি কেবল প্রেমের গল্প নয়; এটি জীবনের নানা রঙ, আবেগের উত্থান-পতন এবং মানুষের অদম্য ইচ্ছাশক্তির গল্প।
Was this review helpful to you?
or
।।। অমলতাসের আমন্ত্রণ।।। প্রণয়, বিচ্ছেদ আর সংগ্রাম এর এক আখ্যান। নাটকীয়তাকে ছাপিয়ে যেখানে জায়গা পেয়েছে কারো মন ভাঙার গল্প। কারো জন্য খারাপ লেগেছে আবার পরক্ষণে মনে হয়েছে জগতের নিয়ম তো এটাই। কারো মন হাসবে তো কারো মন ভাঙবে। ভাঙা গড়ার এক অপূর্ব আখ্যান 'অমলতাসের আমন্ত্রণ।' শুধু জীবনদায়ক ঘটনার জায়গা পায়নি এখানে, সাথে ছিল ভ্রমণমূলক এক জার্নি। সাজেকে না গিয়েও ঘরে বসে সেটাকে উপলব্ধি করার এক জার্নি। কিছুটা ভিজ্যুয়াল। গল্পটা আমানের; পেশায় ছিলেন একজন পাইলট। তার জগত জুড়ে ছিল তার স্ত্রী, তার প্রিয়তমা। কিন্তু হঠাৎ তার জগত শূন্য হয়ে যায়। প্রকৃতি শূন্যতা পছন্দ করে না তাই তার বুকে ফিরিয়ে আনে আবার এক টুকরো উত্তাপ। সেখানে জায়গা মিলাতে চেষ্টা করে আনতারা। আনতারা; প্রাঞ্জল এক তরুনী। যার জগতে ছিল তার মি, বাবা, জেঠা-জেঠিমা। সবকিছুই ঠিক ছিল। কিন্তু একটা দমকা হাওয়া বদলে দেয় সবকিছু। কাছে পেয়েও না পাওয়ার অনুভূতি গুলো হয়ত সবচেয়ে সুন্দর হয়। আমার কাছে সবচেয়ে খারাপ মূহুর্ত ছিল আমানের ভাবনা নিশিকে ঘিরে আর আনতারার ভাবনা আমানকে ঘিরে। সব সম্পর্ক যে হাতের মুঠোয় ধরে রাখতে নেই। কিছু দূর থেকে ছেড়ে দিতে হয়। যদি এতে ভালো থাকা যায় তবে মন্দ কি? এসবের মাঝে লেখিকা দেখিয়ে গেছে দেশপ্রেম, পরিবারের সবার প্রতি এক অকৃত্রিম টান। অশ্লীলতার ছোঁয়া যেখানে জায়গা পায়নি। ছোটখাটো হলেও সময় কাটানোর জন্য যথেষ্ট। আর বিশেষত প্রচ্ছদটা! এটা যেন চোখের শান্তি। বই: অমলতাসের আমন্ত্রণ লেখক: আফিফা পারভীন প্রকাশনী: গ্রন্থরাজ্য জনরা: সমকালীন উপন্যাস মূদ্রিত মূল্য: ৪৩০৳
Was this review helpful to you?
or
#অমলতাসের_আমন্ত্রণ #পাঠ_অনুভূতি ♦এক নজরেঃ •উপন্যাসের নামঃ অমলতাসের আমন্ত্রণ •লেখকঃ আফিফা পারভীন •ধরনঃ রোমান্টিক •প্রকাশনীঃ গ্রন্থরাজ্য •প্রচ্ছদঃ আভা তাজনোভা ইরা •পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৫৭ •প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ লেখনীতেঃ রিফায়াত হাসান সাকিব ♦ভূমিকাঃ কিছু কিছু বই থাকে যা পড়ার জন্য ইচ্ছে করে আয়োজন করে পড়তে বসতে । মনে হয় যেন বড্ড সময় নিয়ে অনুভূতিগুলোকে জাগিয়ে রেখে বইটা পড়ি । এই বইটাও তেমনই একটা বই ছিল । এতগুলো দিন শুধু আমি বসেছিলাম একটা নির্দিষ্ট রাতের জন্য । একটা নির্দিষ্ট আয়োজন করে পড়তে বসার মুহূর্তের জন্য । অথচ এই বইটা আমি পড়া শুরু করেছি এমন একটা সময়ে যখন অধিক রাতে ঘুম ভেঙে গিয়ে আমি পাশে রাতের ঘন আঁধারকেই দেখতে পেলাম । তখনই মনে হলো যেন, এই সময়ে বইটি আমার পড়তে হবেই । অন্যথায়, ভালো লাগবে না কিছুই । ♦নামের অনুভবঃ মানুষের জীবনে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে কোথাও একটা যেন সূক্ষ্ম একটা সাদৃশ্য থাকে । কোথাও একটা বিশেষণের অনুভব । সুখ হোক, কিংবা দুঃখ অথবা কান্না মানুষটা তো একই । তাই তার খেয়ালের বশে হওয়া অনুভবগুলোও বড্ড একপেশে হয়ে ধরা দেয় । প্রকৃতিও যেন তাই তাকে সেভাবেই অদৃশ্যে সাজতে অনুমতি দিয়ে দেয় । এই গল্প প্রকৃতিতে অমলতাসকে সাজিয়ে রাখার আখ্যান । যে গল্পে প্রকৃতিতে বারবার অমলতাস এসেছে । যেন এসে বলেছে, আমাকে আঁকড়ে ধরে নেও । আমি তোমার, আমি তোমার...তোমার... এরকম নিমন্ত্রণ যেন তাই কোথাও একটা সুখের মতো অন্যরকম আবহ দেয় । কোথাও একটা ভালোলাগা, একটু টান । কেউ কোথাও একটা সুখে থাকার জন্য অমলতাসকে জীবনে সাদরে আমন্ত্রণ জানায়, আর কেউবা অমলতাসকে বরণ করেই সুখ নেয়ার মায়া জ্বালায় । এরকম নামকরণ তাই বেশ মনের কাছাকাছি গিয়ে লাগতে চেষ্টা করে কোথাও একটা । ♦প্রচ্ছদঃ অদ্ভুত সুন্দর দেখতে হওয়া প্রচ্ছদটি দেখলেই আমার একরাশ ভালোলাগা কাজ করে । কতশত মুহূর্ত এবং স্মৃতিতে এই প্রচ্ছদটা নিয়ে আমার ভালোলাগা আছে তা টের পাই । এত সুন্দর করে প্রকৃতিতে ফুল সুখ আর শান্তির ধারক বাহক হিসেবে এসেছে যেন কোথাও একটা নিঃশ্বাস কাজ করে । এই ফুলটা যেন আকাশ এবং সবুজের মিশ্রিত পৃথিবীতে কোথাও একটা দারুণ ভাবে আন্দোলিত করে, আবেশিত করে । ভালোলাগা দেয় । অদ্ভুত সুন্দর প্রচ্ছদটি একেবারে প্রথমেই মনে জায়গা করে নেয় । ♦পাঠ অনুভূতিঃ মাঝে মাঝে পৃথিবীতে কিছু উপন্যাস থাকে যা শুধুমাত্র তার আবহ এবং পারিপার্শ্বিক পরিবেশ এর আবছায়া অনুভবের জন্যেই ভালো লেগে যায় । এই উপন্যাস যেন তাই জুড়ে ছিল । যেভাবে পরিবেশকে ফুটিয়ে তুলে সাজেক এর বর্ণনা করা হয়েছে তা রীতিমতো আমাকে মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন করেছে । কোথাও একটা থমকে যাওয়া অনুভব যেন তৈরি হয়েছিল । সেই থমকে যাওয়া অনুভবেই যেন সুখ হয়ে এসেছিল অমলতাস । অমলতাস, তার সৌন্দর্য, মুগ্ধতা এবং সাজেক এর পরিবেশের অদ্ভুত খেয়ালী টানাপোড়েন এই উপন্যাসে ভারসাম্য এনেছে । কোথাও একটা যেন গল্পের প্রেক্ষাপটে এই অদ্ভুত ধোঁয়াশায় রাখা পরিবেশ, তার বর্ণনা এবং আবহ কোথাও একটা মেলবন্ধন হিসেবে কাজ করেছে যেন । মনে হয়েছে এই পরিবেশের অদ্ভুত নিস্তব্ধতা, রাতের কোলাহল যেন এই উপন্যাসের প্রেক্ষাপট, জীবনধারা এবং মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েনের জন্যেই তৈরি হয়েছে । এই পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর জন্য যেন কোথাও একটা সুখের মধ্যেও অদ্ভুত ঘুপচি গলির মতো খানাখন্দে পড়া জীবনের বর্ণনার মতো একটা গল্পের প্রয়োজন ছিল । এই টানাপোড়েনের মিশেলে আবহের সৃষ্টি করে ফুটিয়ে তোলা এই পরিবেশকে তাই ভীষণ স্বর্গীয় মনে হয় । মনে হয় যেন কোথাও কেউ একটা অপেক্ষা করে ছিল, এই প্রেক্ষাপটেই সেই সূর্যোদয় দেখা সকাল আসবে । অথবা অপেক্ষায় ছিল, সেই জোছনায় ভেসে যাওয়া ফেনিল জলরাশির মতো দুঃখ আসবে, এই জোছনা যেন তারই একাগ্র চিন্তায় অপেক্ষা করছিল রাতগুলোর । অথবা সেই গানের মতো দুঃখ নিয়ে কেউ যেন অপেক্ষায় থাকে । এই অদ্ভুত পারিপার্শ্বিক মেলবন্ধনে যেন কোথাও একটা ভালো লাগা মিশে যায় । উপন্যাসের পটভূমিতে এই প্রেক্ষাপট, এবং তাকে ঘিরে ধরে রাখা জীবনধারায় যেন এই আবহ অদ্ভুত ভারসাম্য নিয়ে অপেক্ষা করে । কিছু মনস্তাত্ত্বিক অনুভব যেন পুরোটা জুড়ে নিজের নিস্তব্ধতা নিয়ে অদ্ভুত আবেশ তৈরি করে দেয় । ♦অনুভূতির অনুভবঃ এই উপন্যাসে পটভূমি অনুযায়ী একটা পরিস্থিতিতে আমার বারবার মনে হয়েছে, ভালোবাসা এরকম অদ্ভুত কেনো! মানুষ ভালোবেসে কতটা আকুলতা নিয়ে শুধু অপেক্ষা করে! চাহনি নিয়ে শুধু পৃথিবীজুড়ে জীবন বয়ে নিয়ে যেতে থাকে । এরকম করে কেনো ভালোবাসা পৃথিবীতে এলো! ভালোবাসা নামক সংজ্ঞা পৃথিবীতে এলো! এই বিশেষণের কোনো দরকার কি আদৌ ছিল! তবুও তো এলো । এই ভালোবাসার গল্পে তাই একটা পরিস্থিতিতে আমার কোথাও একটা ভয় এবং অস্বস্তি ছিল । বারবার মনে হচ্ছিল, কোনো বর্তমানের ভালোবাসা অতীতের থাকা কোনো বিশেষণ এবং টানাপোড়েনকে আলোড়িত না করে! কোথাও একটা যেন তবুও আলোড়ন সৃষ্টি হয় আমার মনে । আবার বর্তমানের আবেশ এবং আচ্ছাদিত অনুভব যেন অতীতের খেয়ালী টানে মুগ্ধতা না হারায় তাও বারবার মনে হচ্ছিল । এরকমই এক আবেশিত ভাব নিয়ে আমি উপন্যাসের পাতায় পাতায় ঘুরেছি । বারংবার মনে হয়েছে, পৃথিবীতে ভালোবাসা কী অদ্ভুত! একটা চাহনিতে ভালোবাসা পৃথিবীতে তোলপাড় করে দিয়ে যায়, একটা সংলাপে ভালোবাসা আঁকড়ে ধরে নিয়ে যায় । তবুও ভালোবাসা আলাদা, সবকিছু থেকে আলাদা । ভালোবাসার গল্পগুলোও আলাদা । যেমন আলাদা ওই গানটার অর্থের মতো, নিজ নিজ ভালোবাসার মানুষকে বারবার দেখার আকুলতা আর লোভের আজন্ম অনুভব! ♦চরিত্র টুকিটাকিঃ এই উপন্যাসটি খুব কম চরিত্র নিয়ে তৈরি হওয়া একটি উপন্যাস । পুরোটা উপন্যাসে খুব কম দৃশ্যপটও ব্যবহার করা হয়েছে এরজন্য । দীর্ঘস্থায়ী দৃশ্যপট সৃষ্টি করে পুরো গল্পটা যেন ব্যবহার করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে । অদ্ভুত ভাবে তাই চরিত্রগুলোকে নিয়ে দারুণ ভাবে মানিয়ে যায় । দীর্ঘস্থায়ী দৃশ্যপট এসেছে বলেই এই উপন্যাসের বর্ণনায় কিছু কিছু মুহূর্ত বেশ ভালোলাগার মতো মনে হয়েছে যেন । এই উপন্যাসে এক পারিবারিক আবহের দৃষ্টিভঙ্গি দেখানো হয়েছে । যেখানে এক হাসিখুশি পরিবারের ছায়া দেখানো হয়েছে । একজন হাসিখুশি সম্পন্ন, বন্ধুত্বপূর্ণ স্বভাবের মিলেমিশে যাওয়া মেয়ের দুই বাবাকে দেখানো হয়েছে । আনতারা নামের মেয়েটি তার দুই বাবাকেই যেন মনে ধারণ করে । রাশিদ খান এবং লতিফ খান যেন দুইরকম এর হয়ে সন্তানকে ভালোবাসে । একজন অল্পতেই অধৈর্য হয়ে পড়ে, আরেকজন সবকিছু মানিয়ে নিয়ে পাশাপাশি চলে যায় । এছাড়াও উপন্যাসে ভেসে এসেছে দুই মায়ের গল্প । তাদের জীবনে কোথাও যেন মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ এর মতো কোমলতা এবং আঁকড়ে ধরার গল্প । কেউ নরম করে ভালোবেসে যায়, কেউবা শক্ত হাতে মেয়েকে ধরে রাখে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য । দুইজন নারীর মা হয়ে ওঠার এই গল্পে তাই পারিবারিক এক আবছায়া টের পাওয়া যায় । রুবাইয়্যাত হোসেন বা আয়েশা খাতুন দুই নারীর জীবনের গল্প যেন এতেই আচ্ছন্ন । এছাড়াও উপন্যাসে আছে, এক পরিবেশ পরিস্থিতির সাথে অমলতাসকে সাজিয়ে রাখতে চাওয়া একজন পুরুষ, আমান । যার জীবনে শুধু মেঘের বাড়ি’তে অমলতাসের মুগ্ধতা নিয়েই আছে । মনের মাঝে একরাশ নিস্তব্ধতা, তার অদ্ভুত আঁধারের মতো নিঃসঙ্গ রাতগুলোতে ফিরিয়ে নিয়ে যায় ঘনকালো অতীতের মতো আঁধারে । এছাড়াও উপন্যাসে থাকে ভালোবাসার মতো বন্ধুত্ব । থাকে কোথাও একটা আশফাক আর নিশির হাসির তোরজোর । এই উপন্যাসটি যেহেতু পরিবেশের বর্ণনার সাথে গল্পের প্রেক্ষাপটের সাদৃশ্য রেখে তৈরি করা হয়েছে, সেরকমই পরিবেশকে ব্যবহার করে গল্পে ভারসাম্য সৃষ্টি করা হয়েছে । সেজন্যই চরিত্রগুলোতেও আবহের এক দারুণ ভূমিকা রয়ে গেছে কোথাও একটা । পুরোটা জুড়ে যেন তাই ছিল । সব চরিত্রের গঠন এবং উপস্থিতি তাই বেশ ভালো লাগার মতো ছিল, এবং ভারসাম্যপূর্ণ ছিল । তবে উপন্যাসের শেষ দিকে কোথাও একটা যেন ভালোবাসার পূর্ণতা, একটু আবছায়া রেশ এবং আচ্ছাদিত হওয়া মুহূর্তগুলো আরেকটু বিশদে এলে ভালো লাগা বোধহয় বাড়তো । সেখানে একটু যেন তাড়াতাড়িই শেষ হয়ে যাওয়ার মতো মুহূর্ত তৈরি হলো । এই ভালোবাসার মুহূর্তগুলো আরেকটু বিশদে আসতে পারতো । কিন্তু কিছু অনুভব বোধহয় থাকে বুঝে নেয়ার, সেরকম ভাবেই বোধহয় বুঝে নেয়ার মতো অনুভব সৃষ্টি করা হয়েছে কোথাও একটা । তবুও মনে রয়ে যায়, ভালোবাসার গল্পগুলোর শুরু হওয়া গল্পগুলো ভীষণ সুন্দর হয় । ♦সংলাপঃ এই উপন্যাসের পরিবেশগত বর্ণনা এত সুন্দর ছিল যে উপন্যাসটি মনের কাছাকাছি হতে বা ধারণ করতে সময় লাগেনি । উপন্যাসে তাই শব্দচয়ন এবং বর্ণনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি বেশ প্রিয় হয়ে এসেছে । কোথাও একটা যেন সংলাপগুলোও একধরনের রেশ দিয়ে রেখে যাওয়ার মতো ছিল । ♦লেখক প্রসঙ্গেঃ লেখক আফিফা পারভীন এর আরো একটি বই পড়া হলো । পড়তে বসে মনে হলো, এখনও বোধহয় আমি তার প্রথম কোনো লেখাই পড়ছি । প্রথম লেখা পড়ার পরে যেমন পাঠক হিসেবে তৃপ্তি এবং মুগ্ধতা টের পেয়েছিলাম এখনও যেন ঠিক তাই টের পাই । বোধহয় গল্পের পটভূমি, এবং লিখনশৈলী বেশ দারুণ ভাবে কাজ করা হয় বলেই । কোথাও একটা যেন গল্পের প্রেক্ষাপটে ভারসাম্য বজায় রাখাও একটা দারুণ শিক্ষা দেয় । তাই যেকোনো উপন্যাসই তাই ভালো লেগে যায় । উপন্যাসের বর্ণনা এবং সংলাপ যেন কোথাও একটা গল্পকে ফুটিয়ে তুলতে তাই ভীষণ ভালো ভাবে কাজ করে । ♦প্রকাশনীঃ গ্রন্থরাজ্য প্রকাশনীর সর্বশেষ কোন বইটা পড়েছি তা আমি মনে করতে পারছি না । যখন প্রকাশনী সম্পর্কে লিখতে চাওয়ার জায়গাটা এলো, ততক্ষণে আমি কয়েকবার শুধু মনে করতে চেয়েছি বিষয়টা । এখন মনে পড়ছে না । যাহোক এই বইটা হিসেবে বলি, এত সুন্দর করে বইটার প্রচ্ছদটা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যা অসাধারণ ছিল । বইটা হাতে নিলেই শুধু মুগ্ধতা নিয়ে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে । এছাড়াও বইয়ের বাঁধাই বেশ ভালো ছিল । দারুণ লেগেছে আমার । তাছাড়া বইয়ের পৃষ্ঠা বাঁধাই ভালো লেগেছে । এছাড়াও বইয়ে কিছু ছবি রাখা হয়েছে, তাও দারুণ ভাবে বইয়ের পৃষ্ঠার সাথে খাপ খাইয়ে রাখা হয়েছে । এছাড়া উপন্যাসে জলছাপের ব্যবহার বেশ ভালো ছিল । বইতে বানানের ত্রুটি তেমন একটা নেই । তবে বেশ কয়েকটি ছিল । ♦রেটিংঃ ৪.৬/৫ ♦উপসংহারঃ কোথায় যেন পড়েছিলাম, ভূমিকা লিখলে উপসংহার নামেও কিছু একটা লিখতে হয় । কিন্তু এখানে কী যে লিখবো তা এখন আমি ভেবে পাচ্ছি না । এই একটা জায়গায় আমি আমার অনুভূতি প্রকাশে প্রচণ্ড শূন্যতা নিয়ে ধরা দেই । যা পূরণ হয় না কখনও । আচ্ছা এখানে কী অনুভূতিকে স্থগিত রেখে পরে কখনও শুধুমাত্র উপসংহার সাজাবো তার আয়োজন তৈরি করা যায়? যায় না বোধহয় । যাহোক উপসংহার হিসেবে শুধু ‘অমলতাস’ বলি । এই অমলতাস শব্দটাকে তার সোনালু ফুলের আচ্ছন্ন মতো করেই আমি ভালোবাসি । তা শুধু উপসংহারে বলে যাই । এই ফুলটা এত সুন্দর কেনো? জগতের কিছু ফুল বোধহয় নিজস্ব ঘ্রাণের সবকিছুকে ছাড়িয়ে শুধু নিজস্ব স্বকীয়তা দিয়েই মানুষের পছন্দের তালিকায় গিয়ে জায়গা নেয়, ঠিক যেভাবে মানুষেরা নেয় নিজেকে নিয়ে!
Was this review helpful to you?
or
#পাঠ_অনুভূতি বই: অমলতাসের আমন্ত্রণ লেখক: আফিফা পারভীন প্রকাশনী: গ্রন্থরাজ্য প্রচ্ছদ: আভা তাজনোভা ইরা অনুভূতি কথন: রমজান মাস চলে আসছে বলে পড়বো করে ও বইটা পড়া হচ্ছিলো না। কাল রাত ১০ টায় বই পড়া শুরু করছি শেষ করে ওঠছি সেহেরির সময়। বইয়ের মাঝে এমন করে ডুবে ছিলাম সময় কোনদিকে গেছে বুঝতেও পারিনি। 'অমলতাসের আমন্ত্রণ' বইটি একটি হৃদয়স্পর্শী উপন্যাস। আফিফা আপুর লেখা মানেই বাস্তবতার সাথে মিল পাওয়া। শব্দচয়ন, বর্ণনা অনেক সুন্দর করে বইতে তুলে ধরেন। প্রতিবার আপুর বই পড়ে যে জেলা নিয়ে লেখে সেই জেলার প্রেমে পড়ে যায়। এতো সুন্দর করে সবকিছুর বর্ণনা দেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ডুবে যায়। সাজেক গিয়েছিলাম তিন বছর হয়ে যাচ্ছে, বই পড়ার সময় আমি যেন আবারো সাজেকের সৌন্দর্যে হারিয়ে গেছি। অমলতাসের আমন্ত্রণ বইটি পড়ার সময় পাঠক মুগ্ধ হবেই। ভালোবাসা, বিচ্ছেদ, জীবনসংগ্রাম সবকিছু মিলে দারুণ একটা বই। বই পড়ে পাঠকের মনে গভীর দাগ কাটবেই। বইয়ের প্রধান চরিত্র আমান আফসার যার জীবনে কোন অপূর্ণতা ছিলো না, কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুরতার কারণে সে যেন সব হারিয়ে একা। তারপরও জীবনসংগ্রামে সে এগিয়ে গেছে। খারাপ সময়ে নিজেকে কিভাবে মোকাবেলা করবে সেটা আমান আফসার চরিত্রটার মাধ্যেমে তুলে ধরেছে। আনতারা রশীদ যে কিনা খান প্যালেসের একমাত্র প্রিন্সেস। বাবা,মা, জেঠা,জেঠির একমাত্র আদরের কন্যা। তার জীবনে ভালোবাসার আগমন ঘটে। সে ভালোবাসাকে কিভাবে সম্মান জানাতে হয়, তা আনতারাকে পড়েই জেনেছি। আমান,আনতারা,আশফাক,নিশি সব চরিত্র যে আমাদের বান্তব জীবনের এক একটা জীবন্ত চরিত্র। চমৎকার একটা বই অমলতাসের আমন্ত্রণ।
Was this review helpful to you?
or
#অমলতাসের_আমন্ত্রণ "ব্যাপার কী দেখার জন্য বালিশ উল্টাতেই দেখল একটি কালো মলাটের ডায়েরি ও তার উপর এক টুকরো কাগজ ভাঁজ করে রাখা। আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো,কাগজের ওপর তারই নাম লেখা, কিন্তু কে দিয়েছে সেটা লেখা নেই। " ? ভালোবাসা, বিচ্ছেদ, জীবনসংগ্রাম, এই তিনটি অনুভূতির মিশেলে তৈরি হয় হৃদয়ছোঁয়া গল্প। কিছু উপন্যাস কেবল গল্প বলে না, বরং পাঠকের মনে গভীর অনুভূতির দাগ কেটে যায়। আফিফা পারভীনের "অমলতাসের আমন্ত্রণ" তেমনই একটি উপন্যাস, যেখানে প্রেমের সৌন্দর্য, বাস্তবতার কঠোরতা এবং প্রকৃতির অপার মুগ্ধতা একসঙ্গে মিশে আছে। সাজেক উপত্যকার মনোমুগ্ধকর বর্ণনার সঙ্গে চরিত্রগুলোর গভীর অনুভূতি পাঠকদের এক ভিন্ন জগতের স্বাদ দেবে। "একা জীবনে অভ্যস্ত মানুষের কখনো মায়ায় জড়াতে নেই, ছোটখাটো বন্ধনের অদৃশ্য সুতোগুলো শক্ত হাতে কেটে এড়িয়ে যেতে হয়। " ? কাহিনি সংক্ষেপ : ভালোবাসা আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। কখনো তা আশীর্বাদ হয়ে আসে, কখনো অভিশাপের মতো তীব্র হয়ে আঘাত হানে। এই ভালোবাসার রঙিন ও রূঢ় বাস্তবতাই উঠে এসেছে আফিফা পারভীনের "অমলতাসের আমন্ত্রণ" উপন্যাসে। গল্পের প্রধান চরিত্র আমান আফসার, যার জীবন একসময় ছিল আনন্দময় ও পূর্ণতা-সমৃদ্ধ। কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুরতায় সে হারিয়েছে অনেক কিছু। সময়ের স্রোতে সে শিখেছে কিভাবে নিজেকে সামলে জীবনসংগ্রামে এগিয়ে যেতে হয়। অন্যদিকে আনতারা রশীদ, 'খান প্যালেসের প্রিন্সেস', যার জীবন কেটেছে একান্নবর্তী পরিবারের ভালোবাসায়। তার কাছে ভালোবাসার সংজ্ঞা ছিল মা-বাবা, জেঠা-জেঠিমার শাসন-আদর। কিন্তু এক বিকেলে তার জীবনে আসা এক বিশেষ ভালোবাসা বদলে দেয় তার পুরো দৃষ্টিভঙ্গি। এই উপন্যাস সাজেক উপত্যকার অপূর্ব সৌন্দর্যকে কেন্দ্র করে গল্প এগিয়েছে। লেখিকা তাঁর লেখনীতে সাজেকের রুইলুই পাড়া, কংলাক পাহাড়, মেঘের বাড়ির বর্ণনা এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যে পাঠকরা কল্পনায় সাজেকের প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। বইয়ের সঙ্গে সংযুক্ত কিছু ছবিও পাঠকদের জন্য বাড়তি মুগ্ধতা এনে দেয়। "ভালোবাসা যখন জীবনে আসে তখন ভোরে নরম আলোর মতো আলতো স্পর্শ এসে জীবনকে আলোকিত করে দেয়। আয়োজন, পরিকল্পনা কিংবা জবরদস্তি করে আর যাই হোক না কেন, ভালোবাসা হয় না। " ? পাঠ প্রতিক্রিয়া : "অমলতাসের আমন্ত্রণ" নিছকই একটি প্রেমের উপন্যাস নয়, বরং এটি ভালোবাসা, বিচ্ছেদ, জীবনবোধ এবং বাস্তবতার এক সংমিশ্রণ। ছোট পরিসরের এই উপন্যাসটি যেমন মিষ্টি মধুর অনুভূতি দেয়, তেমনি কিছু দৃশ্য পাঠককে গভীর বিষাদের সাগরে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। আমান, আনতারা, নিশি এবং আশফাক চরিত্রগুলো এতটাই জীবন্ত ছিল যে পাঠক হিসেবে আমি তাদের অনুভূতির সঙ্গী হয়ে গিয়েছিলাম। কখনো মনে হয়েছে আমান আর নিশির জন্য বুকের মধ্যে চাপা কষ্ট জমছে, কখনো আনতারার জন্য চোখের কোণে জল চলে এসেছে। লেখিকার শব্দচয়ন, বাক্য গঠন, বর্ণনার সাবলীলতা এবং সংলাপ এতটাই হৃদয়ছোঁয়া যে মনে হয়েছে গল্পের প্রতিটি চরিত্র আমার আশেপাশেই জীবন্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সবচেয়ে অনন্য দিক ছিল সাজেকের বর্ণনা। যারা সাজেক যাননি, তারাও এই বই পড়ে যেন একবার সাজেক ঘুরে আসার স্বাদ পাবেন। লেখিকা শুধু গল্পই বলেননি, তিনি আমাদের প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতেও শিখিয়েছেন। "ওসব প্রাচীনগন্ধি বন-পাহাড় মনুষ্য স্পর্শবিহীন কুমারী যুবতীর মতো অনাঘ্রাতা যেখানে সভ্য জগতের কোন মানুষের পদচিহ্ন আজও পড়েনি।সমস্ত পাহাড় উপত্যকা ও আকাশ জুড়ে সন্ধান আমার ওই সময়কার অপার্থিব দৃশ্যের বর্ণনা দেয়ার মত ক্ষমতা কারো নেই। কোন শব্দে সেই সৌন্দর্যকে ব্যাখ্যা করা যায় না। " ? লেখক আফিফা পারভীন যেভাবে সাধারণ গল্পকে অসাধারণভাবে উপস্থাপন করেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। অল্প কথায় গভীর জীবনবোধ তুলে ধরার ক্ষমতা তাঁর লেখনীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। "অমলতাসের আমন্ত্রণ" শুধুমাত্র একটি উপন্যাস নয়, এটি একটি অনুভূতি, যা পাঠকের মনে সোনালি অমলতাস ফুলের সুবাস ছড়িয়ে দেবে দীর্ঘদিন। যারা হৃদয়ছোঁয়া, আবেগময়, বাস্তবতাসমৃদ্ধ একটি উপন্যাস পড়তে চান, তাদের জন্য "অমলতাসের আমন্ত্রণ" নিঃসন্দেহে একটি চমৎকার পছন্দ হবে।
Was this review helpful to you?
or
#পাঠ্যানুভূতি #অমলতাসের_আমন্ত্রণ বইটা ৩ ঘন্টা ৫০+ মিনিট সময় নিয়ে একটানে পড়ে শেষ করলার। সাজেক ভ্রমনের অনুভূতি হচ্ছে। আমান,আনতারার সাথে সাথে আমিও সাজেক উপত্যকা থেকে ঘুরে আসলাম। কখনোই সাজেক না যাওয়া আমি মনে হয় অমলতাসের আমন্ত্রণ উপন্যাসিকের মাধ্যমে সাজেকের রুইলুই পাড়া,কংলাক পাহাড়, মেঘের বাড়ি রিসোর্টের সৌন্দর্য উপভোগ করলাম। ছোট্ট এই উপন্যাসিকায় যেমন মিষ্টি মধুর অনুভুতি ছিল তেমনি বিষাদের নীল কষ্ট গাঁথা গল্পও ছিল। একটা সময় আমান,নিশি, আশফাকের জন্য আমার কি পরিমাণ যে দুঃখ হচ্ছিল লিখে প্রকাশ করতে পারব না সেই অনুভূতি। সাথে আনতারার জন্যও কষ্ট হচ্ছিল। লেখিকার লেখার ধরন,বাক্য, শব্দচয়ন, ভাষার মাধুর্য এতোটাই হৃদয়স্পর্শী ছিল যে প্রতিটি মুহূর্ত/চরিত্র আমার কাছে জীবন্ত হয়ে ধরা দিচ্ছিল। আমার অনুভূতিতে অনেকদিন সোনা রঙা ফুলেল সুভাষে মুখরিত থাকবে"অমলতাসের আমন্ত্রণ" বইটি।?
Was this review helpful to you?
or
পাঠ-প্রতিক্রিয়া অমলতাসের আমন্ত্রণ আফিফা পারভীন ভীষণ পরিতৃপ্তি নিয়ে শেষ করলাম অমলতাসের আমন্ত্রণ। বইয়ের বাইরেটা যেমন চোখে লাগা সুন্দর, বইয়ের ভিতরটাও তেমনি মনে লাগার মতো সুন্দর। মুগ্ধতার অনুভূতিতে আচ্ছন্ন হয়ে আছি। খুব অনুভূতিপ্রবণ একটা গল্প ছিল। কিছু কিছু ভালোবাসার গল্প থাকে যা খুব সাধারণ হয় কিন্তু সেই সাধারণ গল্পে যে ভালোবাসা থাকে সেই ভালোবাসাই গল্পটাকে অসাধারণ করে। এই গল্পটাও তেমন অসাধারণ ভালোবাসার একটা গল্প ছিল। আমান, আনতারা, নিশিতার ভালোবাসার গল্পটাকে লেখিকার লেখনশৈলী জাদুতে অসাধারণভাবে উপস্থাপন করেছেন। তাদের মন উজার করা ভালোবাসার অনুভূতি আমার মনকেও ছুঁয়ে দিয়েছে। ভালোবাসা কত উদার হয়, মায়ার হয়, সম্মানের হয়, স্বার্থহীন হয় এদের ভালোবাসায় দেখেছি। এই চরিত্র গুলো এক একটা মায়া ছিল। যখন যাকে পড়েছি তখন তার মায়ায় আটকেছি ভীষণভাবে। এই তিনটি জীবনই ছিল অমলতাসে গাঁথা। অমলতাসে কে কখন কাকে কীভাবে আমন্ত্রণ জানায় এবং সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ হয় কি না জানতে হলে অবশ্যই পড়তে হবে অমলতাসের আমন্ত্রণ। ভীষণ সুখ পাঠ্য একটি বই। আশা করি সবার অনেক ভালো লাগবে৷ বইটাতে আমার সবচেয়ে ভালো লাগার যে বিষয় ছিল, প্রকৃতির লীলাভূমি সৌন্দর্যমন্ডিত সাজেকে নিয়ে লেখা। আপুর লেখার জাদুতে এত জীবন্ত করে সাজেককে বইয়ের পাতায় তুলে ধরেছেন, সাজেকের অপরূপ সৌন্দর্যের এত জীবন্ত বর্ণনা দিয়েছেন, আমি ঘরে বসেও চোখ বন্ধ করে আপুর বর্ণিত সাজেকের প্রতিটা দৃশ্য ভিজ্যুয়ালাইজ করছিলাম। সাজেক আমার চোখের সামনেই ভেসে বেড়াচ্ছিল যেনো। সাজেক আমি ছবিতেই দেখেছি সবসময়, কিন্তু আপুর দৃষ্টিভঙ্গিতে সাজেকের আসল সৌন্দর্য উপভোগ করলাম ছবির চেয়েও সুন্দরভাবে। এত সৌন্দর্যমন্ডিত একটা জায়গায় আমার এখনো যাওয়া হয়নি সে জন্য আফসোস নাই কিন্তু এরপর না যেতে পারলে আফসোস থেকে যাবে। আপুর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমি সরাসরি সাজেক দেখতে চাই দুচোখ ভরে। আরো অনেক লিখে যান প্রিয় লেখক। এমন ছোট সাইজের কিন্তু বড় সৌন্দর্যে ভরা আরো অনেক বই নিয়ে আসুন। যে বই পড়ে তৃপ্তিতে মন ভরে যায়। অনেক শুভকামনা সবসময়ই।
Was this review helpful to you?
or
অমলতাসের আমন্ত্রণ :::::::: আস্ত একটা অনুভুতি।।। গভীর ভাবে কাউকে ভালোবাসার।। কাউকে অনুভব করার।। জীবন যতটা কেড়ে নেয় উসুল হিসেবে ফিরিয়েও দেয়।। নিশি এবং আনিশা পূর্ণতার মাঝেও অপূর্ণ একটা গল্প।। আর আশফাককে নিয়ে কিছু বলার ভাষা পাই নি।। একটা পর্যায়ে ফোনের কথোপকথনে অনুভুতিগুলোর সাথে পরিচিতির মুহূর্তে চোখে পানি চলে এসেছে।। এতোটাই হৃদয়স্পর্শী।।।দুদিকের অনুভূতি গুলো একতরফা দুজন ভিন্ন মানুষের জন্য।। একজনের পূর্ণ হয়েও অপূর্ণতার শুন্যতা আর অপরজনের না পাওয়ার তীব্র যন্ত্রনা।। ডাক্তার ফাইয়াজের আনতারা, শুকতারা, ধ্রুবতারা একজন হলেই হবে ??? জীবনের প্রথম ভালোবাসা ভুলা যায় না।। তাই বলে পরম মমতায় দ্বিতীয় ভালোবাসায় মত্ত হওয়াটাও দোষণীয় নয়।। বরং অনেক স্বস্তির৷ এতে ধ্রুবতারার সন্ধান পাওয়া যায়।। আরো একবার আফিফা আপুর পাংখা হইয়া গেলাম।। সাজেকের এতো সুন্দর বর্ণনা তার সাথে অমলতাসের সোনালু ফুলের সৌন্দর্য যেন যুগলবন্দী।। অনুভুতিগুলোকে তরতাজা করে দেয়।।। গ্রহণ করলাম আপুর """অমলতাসের আমন্ত্রণ ''"" ??? (ভুল ত্রুটিগুলো মার্জনীয়)
Was this review helpful to you?
or
বইটি আজকেই রিসিভ করলাম। সারাদিন অপেক্ষায় ছিলাম কখন বাসায় যাবো আর আনপ্যাক করবো। অফিস থেকে ফিরেই পার্সেল আনপ্যাক করেই বসে গেলাম বইটি পড়তে। প্রথমেই বলি, আপুর সকল বইয়ের প্রচ্ছদ আমার ভীষন পছন্দের। আর অমলতাস কিবা সোনালু ফুল আমার নিজের ভীষন প্রিয়। তাই বইয়ের প্রচ্ছদ যখন আপু প্রথম প্রকাশ করলো আমি তখনই ভেবেছি, আপুর লেখার জন্য তো বটেই, তবে শুধু প্রচ্ছদের জন্য হলেও এই বইটি আমি কিনব। আর পড়ার পর সত্যি বলতে খুব ভালো লাগলো। ছোট একটি উপন্যাস কিন্তু কি মিষ্টি! খুবই সুন্দর করে সাধারণভাবে ঘটে যাওয়া অসাধারণ একটি কাহিনী বুনন লেখিকা করেছেন যা আপনাকে গল্পের শেষ অবধি আঁকড়ে ধরে রাখবে। আপুর গল্প উপন্যাসের সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো কোনো একটা জায়গা নিয়ে আপুর গভীর পর্যবেক্ষণ ও তার বিবরণ। পাঠককে আপু বাধ্য করেন সেই জায়গায় নিয়ে যেতে - এমনইভাবে আপু জায়গার বর্ণনা দেন। সাজেকের বিবরণ পড়তে পড়তে আমি হারিয়ে যাচ্ছিলাম আমার নিজের ভ্রমনের দিনগুলোতে। মনে হচ্ছিল এক্ষুনি আবার চলে যাই, আনতারার মত করে নতুন ভাবে পরিচিত হই সাজেকের সাথে। এই গল্পের আনতারাকে আমার এত ভীষন পছন্দ হয়েছে যে কি বলব? তার ভালোবাসার অনুভব ও তার মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখার ব্যাপারটি কি সুন্দরভাবে প্রকাশ করেছে। আমানের নিখাদ ভালোবাসা আর তার বিভীষিকাময় করুণ পরিণতি পড়ে এত কষ্ট মায়া অনুভব করছিলাম যে মনে হচ্ছিল কোনভাবে তার সেই কষ্টটা এড়িয়ে যাবার উপায় যদি থাকতো! এমন করে ভালোবাসা করো জীবন থেকে চলে না যেত! আপুর লেখার আরেকটা ভীষন সুন্দর বৈশিষ্ট্য হলো, অটল বন্ধুত্বের সম্পর্কের উপস্থাপনা। আমান, নিশিতা, আশফাক এরা মনে গেঁথে গিয়েছে। এর সাথের দুঃখটাও মনকে পীড়া দিয়েছে। সত্যি বলতে, আমান ও আন্তারাকে এত ভীষন মনে ধরেছে যে শেষ হওয়ার পর মনে হলো এত ছোট কেন লিখলো আপু? খুবই চমৎকার একটি বই, এক বসায় শেষ করে ফেলার মত।
Was this review helpful to you?
or
#পাঠ_অনুভূতি: ইয়া আল্লাহ বই পড়লাম নাকি সাজেক ঘুরে এলাম বুঝতে পারছিনা। আমি বরাবরই সমুদ্র প্রিয় মানুষ।পাহাড় কখনো দেখা হয়নি।কিন্তু বপ্পার বইয়ে পড়েই পাহাড় দেখার ইচ্ছা জাগছিল মনে।কিন্তু অমলতাসের আমন্ত্রণ পড়ে পাহাড়ে যাবার অদম্য আকর্ষন অনুভব করছি আমি নিজের ভেতর। আর আমান আনতারা কি বলব এভাবেও ভালোবাসা যায়? কি অদ্ভুত সুন্দর অনুভূতি। ছোট একটা বই কিছু বলতে গেলেই কাহিনী বলে ফেলার সম্ভাবনা আছে। বইটা ভালো লাগছে অনেক আর এটা আসলে রাতে নিরিবিলিতে পড়ে অনুভব করার মত একটা বই। আমার দিনে থেমে থেমে পড়া হইছে এখন মনে হচ্ছে এটা ভুল হলো।আমি সম্ভবত রাতেই সাজেক যাবো আরেকবার একদম নিরিবিলি মেঘের বাড়ির বেলকনি আর অমলতাসের কাছে বেঞ্চ এ বসে রাতের সৌন্দর্য অনুভব করতে।