User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#বই_রিভিউ বই: ঝামেলায় জমেলা লেখক: ফাহমিদা মাহবুবা প্রকাশনী: চলন্তিকা প্রচ্ছদ: আভা তাজনোভা ইরা মলাট মূল্য: ৩৫০৳ গল্পটা শুরু হয় অজপাড়া গাঁয়ের এক সাধারণ মেয়ে জমেলা খাতুন-কে নিয়ে। জন্মের মাত্র তিনদিন পরেই তার মা তাকে ফেলে চলে যায়। কিন্তু কেন? সেই রহস্য জানতে হলে বইটি পড়তে হবে। নামের মতোই জীবনেও সে এক ঝামেলার মধ্যেই থাকে! অন্যদিকে, ঢাকার নামকরা ধনী পরিবারের একমাত্র সন্তান আগুন। অথচ তার বিয়ে ঠিক হয় এক সাধারণ গ্রামের মেয়ের সঙ্গে! আগুন কি এই বিয়ে মেনে নিয়েছিল? নাকি জমেলাকে নিয়ে সত্যিই এক মহা ঝামেলায় পড়ে গেল? জানতে হলে আপনাকে ডুব দিতে হবে বইটির পাতায়! ✪ পাঠ অনুভূতি: ‘ঝামেলায় জমেলা’ লেখক ফাহমিদা মাহবুবার পড়া আমার দ্বিতীয় রম্য উপন্যাস। গল্পটি সামাজিক, পারিবারিক ও রম্যধর্মী হলেও লেখার সহজ-সরল সাবলীলতা একে ভিন্নমাত্রা দিয়েছে। অতিরঞ্জিত কোনো নাটকীয়তা নেই, বরং সাধারণ চরিত্রগুলোকে এত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যে, পাঠক পড়তে পড়তেই চরিত্রগুলোর সঙ্গে একাত্ম হয়ে যাবে। প্রথমে মনে হতে পারে—এ তো খুবই সাধারণ একটি গল্প! কিন্তু যত এগোবে, ততই বুঝতে পারবেন, সাধারণ হয়েও গল্পটি কতটা বিশেষ! বইয়ের নামের সঙ্গে কাহিনীর একেবারে পারফেক্ট মিল। যারা সাবলীল অথচ হৃদয়ছোঁয়া লেখা পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটি একদম উপযুক্ত বই। ✪ চরিত্র বিশ্লেষণ: আগুন: হাজারো মেয়ের ক্রাশ, শহরের সম্ভ্রান্ত পরিবারের একমাত্র সন্তান। কিন্তু পরিবারের সিদ্ধান্তে তাকে বিয়ে করতে হয় এক গ্রামের সাধারণ মেয়ে জমেলাকে। এই সম্পর্ক সে কিছুতেই মেনে নিতে পারে না, তাই বিয়ের রাতেই আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়। কিন্তু যত দিন যেতে থাকে, ততই বুঝতে পারে—জমেলা অন্য আট-দশজনের মতো নয়! একদিন হঠাৎ বউয়ের মুখ দেখেই সে পিছলা খায়! জমেলা তার কাছে ‘ঝামেলা’ হয়ে দাঁড়ায়, অথচ এই ঝামেলাকেই সে আর এড়িয়ে যেতে পারে না। জমেলা: ছোটবেলা থেকেই সৎমায়ের অত্যাচার আর কটু কথা শুনতে শুনতে নিজেকে গড়ে তুলেছে এক আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন ও আত্মনির্ভরশীল মেয়ে হিসেবে। সে কারও বোঝা হতে চায় না, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য দিনরাত পড়ে। স্বামীর কাছে কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই, কিন্তু মন তো আর কথা শোনে না! আগুনের ভালো ব্যবহার দেখে মন তার দিকে আকৃষ্ট হয়। কিন্তু দুজনের ইগো এতটাই বেশি যে, কেউই নিজের ভালোবাসার কথা স্বীকার করতে পারে না! জামিল সাহেব ও চিত্রলেখা চৌধুরী: আমার সবচেয়ে পছন্দের চরিত্র জামিল সাহেব—এক নিখাদ ভালোবাসার মানুষ, যিনি যুগ যুগ অপেক্ষা করতে পারেন সত্যিকারের ভালোবাসার জন্য। আর চিত্রলেখা চৌধুরী হলেন এমন এক শাশুড়ি, যাকে পেলে আসলেই ভাগ্যবান বলতে হয়। তিনি জমেলাকে নিজের মেয়ের মতোই আগলে রাখেন। ‘ঝামেলায় জমেলা’ শুধুই এক প্রেমকাহিনি নয়, এটি আত্মসম্মান, ভালোবাসা ও সম্পর্কের গভীরতার গল্প। লেখক সাধারণ চরিত্রগুলোর মধ্য দিয়ে জীবন ও সম্পর্কের টানাপোড়েন দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। যারা সহজ-সরল অথচ হৃদয়ছোঁয়া গল্প পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটি একটি অবশ্যপাঠ্য বই!
Was this review helpful to you?
or
#ঝামেলায়_জমেলা "জমেলা খাতুন গ্রামের মেয়ে, শাড়ি পরে রোজ, শহুরে আগুনের সুট-বুট দেখে, উঠল হাসির খোঁজ। ঝামেলা যখন বাড়তে বাড়তে, এলো নতুন সকাল, একসঙ্গে হেসে বলল,এটাই তো হলো দাম্পত্য কাল।" ? হাস্যরস আর বিপদের এক অনবদ্য মিশেল ফাহমিদা মাহবুবার রম্য উপন্যাস ঝামেলায় জমেলা। নামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে গল্পের মূল সুর—ঝামেলার মধ্যেই জমেলার বসবাস। জীবনের টুকরো টুকরো ঘটনাকে রসিকতার মোড়কে পরিবেশন করতে লেখিকা অত্যন্ত পারদর্শী। ? ঝামেলার শুরুটা যেভাবে হয়েছিলো : জমেলার জন্মের তিনদিন পরই তার মা পালিয়ে যায়, কিন্তু কোথায় এবং কেন? তা একটি বড় রহস্য। তাই জন্মের ছয় মাস পর দাদী তার নাম রাখেন,‘জমেলা খাতুন’, কিন্তু সবাই ওকে নিজ জীবনের ঝামেলাই মনে করে, ফলে জমেলা থেকে তার নাম হয়ে যায় 'ঝামেলা', যা তার জীবনের সঙ্গে অদ্ভুতভাবে মিলে যায়। সৎমায়ের সংসারে নানা ঝুটঝামেলার মধ্য দিয়ে বড় হওয়া জমেলা বিয়ের পর ধনাঢ্য এক পরিবারের বউ হয়। কিন্তু সামাজিক ও পারিবারিক জটিলতা কি এত সহজে কাটে? সংসার জীবনেও জমেলার জন্য অপেক্ষা করছিল নতুন নতুন বিপত্তি। জীবনের টানাপোড়েন, সম্পর্কের জটিলতা, রোমান্স ও হাস্যরস মিলিয়ে কাহিনি এগিয়ে যায়। আর কি কি ঝামেলা আসে আগুন এবং জমেলার জীবনে? জানতে হলে পড়তে হবে 'ঝামেলায় জমেলা' রম্য উপন্যাসটি। "নাম কিছু একটা হলেই হলো। জমেলা বা ঝামেলা তাতে সমস্যা কি? বরং ওর যে একান্ত ব্যক্তিগত একটা নাম আছে সেটা নিয়েই সে খুশি। " ( পৃ: ১৩) ? ঝামেলার অনুভূতি : ফাহমিদা মাহবুবার লেখা ঝামেলায় জমেলা মূলত পারিবারিক, রোমান্টিক ও রম্যধারার উপন্যাস। লেখার ভঙ্গি সরল, সাবলীল ও প্রাণবন্ত। জমেলার চরিত্র যেমন বাস্তবসম্মত, তেমনি তার জীবনের ঘটনাগুলোও জীবনের প্রতিচ্ছবি। গল্পের হাস্যরস পাঠককে বিনোদিত করবে, আবার সম্পর্কের টানাপোড়েন ও সামাজিক বাস্তবতা ভাবাবে। "প্রিয়জনকে মনের কথা বলতে সঠিক সময়ের অপেক্ষা করে বোকারা। সঠিক সময় বলতে আসলে কিছু নেই। সময় সময়ই। যে কোন সময়কে সঠিক করে ফেলা যায় কাজের মাধ্যমে। " ( পৃ: ৬৭) উপন্যাসটি পড়তে গিয়ে কখনো মনে হবে—এ যেন আমাদের চেনা কোনো চরিত্রের গল্প। সংলাপগুলো প্রাণবন্ত এবং সহজেই আমার মন ছুঁয়ে গেছে। লেখকের ভাষা ব্যবহারের দক্ষতা ও রম্যরস সৃষ্টির প্রয়াস এই বইয়ের অন্যতম আকর্ষণ।লেখক দক্ষতার সঙ্গে জমেলার চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলেছেন, যেখানে হাস্যরসের আবহে বাস্তব জীবনের টানাপোড়েন স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। "এক লুঙ্গি দিল সব শেষ করে। এই লুঙ্গি জিনিসটার আবিষ্কারক কে? তাকে ধরে এনে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। " ( পৃ: ৮৮) উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র জমেলা, যার প্রতিদিনের সাধারণ জীবনই হয়ে ওঠে অদ্ভুত সব বিপত্তির উৎস। কখনো নিজের কৌতূহল, কখনো পরিস্থিতির চাপে পড়ে সে একের পর এক হাস্যকর কিন্তু বাস্তবসম্মত ঘটনার মুখোমুখি হয়। লেখিকার চটুল ভাষাশৈলী, ব্যঙ্গাত্মক বর্ণনা ও তীক্ষ্ণ রসবোধ গল্পকে উপভোগ্য করে তুলেছে। সবমিলিয়ে গল্প পড়াকালীন সময়টা বেশ কেটেছে। ? কিছু ঝামেলা "ঝামেলায় জমেলায়" : গল্পটির কিছু জায়গায় একটু খটকা লেগেছে। বইটিতে দু-তিনটি টাইপো ছিল, যদিও তা খুব বড় সমস্যা নয়। তবে রম্যগল্প হিসেবে হাসির উপাদান বা কিছু দৃশ্য ও সংলাপ আরেকটু বেশি হলে ভালো লাগত। সেলিনা এবং চিত্রলেখা চরিত্রগুলো ভালো লেগেছে তবে আনিস সাহেবের জন্য একটু শাস্তির প্রয়োজন ছিলো। আর গল্পের শেষটা যেন একটু তাড়াহুড়োতেই হয়ে গেছে। যেহেতু জমেলা ও আগুনকে কেন্দ্র করেই গল্পের শুরু, তাই উপসংহারে তাদের গল্পটা আরেকটু গোছানো হলে ভালো হতো। ? যারা হালকা মেজাজের, মজার কিন্তু একই সঙ্গে বাস্তবধর্মী কাহিনি পছন্দ করেন, তাদের জন্য ঝামেলায় জমেলা অবশ্যই উপভোগ্য হবে। এই উপন্যাস নিছক বিনোদনই দেয় না, বরং আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নানান ছোটোখাট সমস্যার দিকে এক ব্যঙ্গাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলে। হাসতে হাসতেই পাঠক উপলব্ধি করবে, জীবন আসলে যেমনই হোক, তাকে সহজভাবে নেওয়াই সবচেয়ে বড় বুদ্ধিমানের কাজ। "ভালোবাসা মুক্ত পাখির মতো, এতে জোর চলে না। খোলা আকাশে উড়বে, নীল সমুদ্র সাঁতার কাটবে। দিনশেষে সম্পূর্ণ স্ব-ইচ্ছায় ফিরে আসবে আপন ঠিকানায়, তার ভালোবাসার মানুষের কাছে। সেটাই না ভালোবাসা। "( পৃ: ১০৩)