User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
আমাদের শরীর কীভাবে কাজ করে? কেন আমরা খাবার খাই, শ্বাস নিই, চলাফেরা করি, ঘুমাই বা অসুস্থ হই? শৈশবে এসব প্রশ্ন নিয়ে কৌতূহলী হয়েছি, কিন্তু সহজে উত্তর মেলেনি। মাধ্যমিকে পড়ার সময় এসব প্রশ্নের কিছু কিছু উত্তর পেয়েছি, কিন্তু সবটা যেন উন্মোচিত হয়নি। মারিস উইকসের গ্রাফিক বই হিউম্যান বডি থিয়েটার সেসব সমস্যার সমাধান করেছে। আমাদের শৈশবের মানবদেহ নিয়ে কৌতূহলী প্রায় সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন এই বইয়ে। মানবদেহ নিয়ে লেখা বই বাজারে অনেক আছে, কিন্তু এই বই সেগুলো থেকে আলাদা। এটি মানবদেহের এক বিস্ময়কর নাট্যশালা, যেখানে প্রতিটি অঙ্গ, প্রত্যেকটি কোষ চরিত্র হিসেবে মঞ্চে উঠে আসে এবং তাদের নিজেদের গল্প বলে। মনে হবে, আমরা যেন এক বৈজ্ঞানিক মঞ্চনাটক দেখছি, যেখানে চরিত্ররা নিজেরাই নিজেদের ভূমিকা ব্যাখ্যা করছে। জানেন নিশ্চয়ই, মানবদেহের প্রতিটি সিস্টেম একে অপরের সঙ্গে জটিলভাবে সংযুক্ত। তবে এই জটিল বিষয়গুলো এত সহজ ও মজার উপায়ে উপস্থাপন করা হয়েছে, সত্যিই বিস্ময়কর। সাধারণত মানবদেহ নিয়ে বই লেখা হলে সেখানে অনেক তথ্য থাকে, বিভিন্ন অঙ্গের কাজ নিয়ে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লেখা থাকে। এই বইয়েও সব অঙ্গের কাজ ও ব্যবহার নিয়ে লেখা আছে, কিন্তু তা কমিকসের আকারে। ফলে এসব জিনিস ব্যাখ্যা করতে অনেক পৃষ্ঠার খরচ করেননি লেখক। এই গ্রাফিক নভেলে হৃদপিণ্ড, ফুসফুস, হাড়, পেশি, স্নায়ুতন্ত্রসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ও প্রক্রিয়া সহজভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন মারিস উইকস। বইটি বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের জন্য রূপান্তর করেছেন ইশতিয়াক হোসেন চৌধুরী এবং রুকাইয়া সুলতানা মনি দম্পতি। বিজ্ঞানের অতি কঠিন কোনো ভাষা চোখে পড়েনি। বাংলাদেশের আলোকে বইটি এমনভাবে রূপান্তর করা হয়েছে, পড়ে মনে হবে কোনো বাঙালি লেখক মূল বইটা লিখেছেন। বইয়ের হাস্যরস বজায় রেখেই কাজটা সম্পন্ন করেছেন তাঁরা। বইটিতে মোট ৬টি অধ্যায় রয়েছে। শুরুতেই একটা কঙ্কাল আপনাকে নাটমঞ্চে স্বাগত জানাবে। যাতে কঙ্কাল দেখে ভয় না পান, সেজন্য কোষ দিয়ে নিজের শরীর পূর্ণ করবে। এরপর আপনাকে নিয়ে যাবে কোষের গভীরে, কোষে থাকা সাইটোপ্লাজম, মাইটোকন্ড্রিয়া, ভেসিকল, গলজি বডিসহ অন্যান্য অঙ্গ সম্পর্কে জানাবে। তবে জানানোর কাজটা কিন্তু করবে প্রতিটি অঙ্গ নিজে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে দেখা হবে হাড়ের সঙ্গে। শরীরের কোন হাড়ের কাজ কী, সেগুলো কীভাবে থাকে, কেন থাকে—এসব বিষয় খুব সুন্দরভাবে কমিকস আকারে বর্ণনা করা হয়েছে। একইভাবে বাকি অধ্যায়গুলোতে জানা যাবে পেশী, রক্ত সংবহন, স্নায়ুতন্ত্র, ইমিউন সিস্টেম সম্পর্কে। যেকোনো বিজ্ঞানবিষয়ক বইয়ের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তথ্যের নির্ভুলতা। এ বইটি সেদিক থেকে শতভাগ সফল। লেখক অত্যন্ত সরলভাবে কঠিন বিষয়গুলোর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে মনে হতে পারে, এ ব্যাপারে আরেকটু তথ্য থাকলে ভালো হতো। যারা বিজ্ঞানের গভীরে ডুবে যেতে চান, তাঁদের জন্য কিছুটা অপূর্ণতা তৈরি হতে পারে। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, এটা গ্রাফিক বই। চাইলেও অনেক বেশি তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। আবার বেশি তথ্য দিলে হয়তো তথ্যের ভারে অনেকের বিরক্তও লাগতে পারে। বইটি শুধু কিশোর-কিশোরীদের জন্য নয়, বরং যে কোনো বয়সের পাঠকের জন্য দারুণ এক অভিজ্ঞতা হতে পারে। যারা মানবদেহ সম্পর্কে জানতে চান, কিন্তু বিজ্ঞানের কড়াকড়ি ভাষার কারণে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন, তাদের জন্য এই বই অবশ্যই পড়া উচিৎ। এই বইয়ের সবচেয়ে মজার দিক হলো, হাতে দুই ঘণ্টা সময় নিয়ে বসলে বইটি পড়া শেষ হয়ে যাবে। তবে কখন যে এই সময় চলে যাবে তা টেরও পাবেন না। বইটি প্রকাশ করেছে অন্বেষা। প্রচ্ছদও সুন্দর। ছাপা, বাঁধাই সত্যিই দারুণ হয়েছে। পাওয়া যাবে বইমেলায়, এবং অনলাইন-অফলাইনের বিভিন্ন বুকশপে। রিভিউটি প্রকাশিত হয়েছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাসিক বিজ্ঞান পত্রিকা- বিজ্ঞানচিন্তা- এর অনলাইন প্লাটফর্মে, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে। লিখেছেন বিজ্ঞানচিন্তার সহসম্পাদক কাজী আকাশ।
Was this review helpful to you?
or
খুব কম সময়ে শিখার মতো একটি বই
Was this review helpful to you?
or
হিউম্যান বডি থিয়েটার। বইটা দুই ধরনের পাঠকের জন্য লেখা হয়েছে বলে মনে করি। এক, হাইস্কুল স্টুডেন্ট, যারা আনন্দ নিয়ে অনেক কিছু শিখতে চায়। আর দুই, এদের সিনিয়র যে কেউ, যারা আরেকবার হাইস্কুলে পড়া বায়োলজিকে অন্যভাবে ভেবে দেখতে চায়। অতি গুণী এক শিক্ষকের কল্যাণে আমি নাইন-টেনের বায়োলজি বই মুখস্থ করেছিলাম। আফসোস হচ্ছে, এ ধরনের বই তখন কেন হাতে আসেনি। মূলত আমাদের দেশের ঐ নাইন-টেনের বায়ো বইয়ের কিছু কনসেপ্ট নিয়ে এই বই। অনুবাদ হলেও পুরো বইয়ের এক জায়গাতেও মনে হয়নি তা। যেন খাঁটি বাঙালির হাতে লেখা বই! কয়েক মাস আগে একটা গ্রাফিক নভেল পড়েছিলাম। অনুবাদ দেখে বিরক্ত লাগছিল। এইটাও গ্রাফিক নভেল টাইপ বিজ্ঞানের বই। একটা মানব কঙ্কাল পর্দা সরিয়ে মঞ্চে এসে নানান জিনিসপত্র বোঝাবে। প্রয়োজনে আরো পাত্র-পাত্রীরও দেখা মিলবে। আমরা টেক্সট বইয়ে টানা তথ্য পড়ে যাই। এই বইয়ে একেবারেই ভিন্নভাবে বায়ো বোঝানো হয়েছে। একটা স্যান্ডউইচ মুখ থেকে শুরু করে শেষ(!) পর্যন্ত কী কী অদ্ভুত ঘটনার সম্মুখীন হয় তা স্যান্ডউইচের দিক থেকে দেখতে কেমন, সেটা বলা হয়েছে। এমন আরো অনেক কিছুই আছে। সূচি দেখলে বোঝা যাবে। সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই জীবন্ত এই বইয়ে! নিরসভাবে না শিখিয়ে মাঝে মাঝেই নিখাঁদ আনন্দ দানের জন্য জোকস্ দেওয়া হয়েছে। তবে বইয়ের মাঝের দিকে এই জিনিসটা পৃষ্ঠা সংখ্যার ব্যাস্তানুপাতিক মনে হয়েছে। যাইহোক, ওভারাল, মজা করেই লেখা। তথ্যের ঘনঘটা খুব বেশি না। সাবলীল ব্যাখ্যা। হাইস্কুলের শিক্ষার্থীরা যেন বুঝতে পারে সেভাবেই লেখা। বারবার হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য বলছি ঠিকই, তবে আমি সেই সময় পেরিয়ে আসলেও, জানা বিষয়গুলোও যেন নতুনভাবে জেনেছি। বই আয়তনে বেশ বড় হলেও পুরোটাতেই ভরপুর ছবি! তাই পড়তে খুব বেশি সময় লাগবে না। তবে আমার পরামর্শ হলো, সময় নিয়ে ধীরে ধীরে পড়া উচিত। একেবারে রিল্যাক্স মুডে! যাইহোক, বইয়ের বাঁধাই, কাগজের মান সবই প্রিমিয়াম। এই বই নিয়ে আসলে খুব বেশি কিছু বলার প্রয়োজন নেই। অবসর সময়টা একটু আনন্দ নিয়ে বায়ো শিখতে চাইলে বা হাইস্কুলের বায়ো পড়তে পড়তে হাঁপিয়ে উঠলে এই বই পড়া উৎকৃষ্ট উপায় হতে পারে। সবশেষে, লেখক/অনুবাদক ইশতিয়াক চোধুরী স্যারকে অশেষ ধন্যবাদ এমন সুন্দর একখানা বই উপহার দেওয়ার জন্য। এবং বইয়ে অপর লেখিকার অটোগ্রাফ পাইনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছি।