User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
উটপাখির গল্প মানুষ নাগাল পেলে জানি কি কাণ্ড ঘটাবে সেই কথা ভেবে ভগবানের হেড সাগরেদ নাকি আগুনটা সামলাতে দিয়েছিলেন উটপাখিকে। তার পর থেকে দুই ডানার নিচে আগুনটাকে লুকিয়ে রেখে উটপাখি ঘুরে বেরায়ে, মানুষ দূর থেকে দেখে কিন্তু কিছু করতে পারেনা। এটা জানা ছিল যে উরতে পারেনা বলে উটপাখির মনে খুব আফসোস। তাই একদিন সুযোগ বুঝে উটপাখিকে অনেক মন গলানো কথা বলতে শুরু করল। সে বলতে থাকল, চেষ্টা করলে উতপাখির পক্ষে উড়ে বেরানো কোন ব্যাপারই না, কিভাবে চেষ্টা করতে হবে তাও আঁটখানা করে বলতে লাগল। শুনতে শুনতে উতপাখির মন নেচে উঠল আনন্দে। তার আর নিরবিকার থাকা সম্ভব হল না, একসময় হটাত হুঁশিয়ারি ভুলে সে যেই ডানা তুলে উড়ার ভঙ্গি করতে গেছে, ডানার নিচ থেকে পরে গেল আগুন। টেরও পেল না সে, ওড়ার চেষ্টায় ঘুরে ঘুরে নাচের আনন্দে সে তখন মশগুল।এইভাবে নাকি প্রথম আগুন এসেছিল মানুষের হাতে। কিন্তু-- উটপাখি যখন শেষ অবধি তার ওড়ার আগ্রহে ফেটে পড়ল, আর সে আবিষ্কার করল আগুন আর তার কাছে নেই, তা চলে গেল মানুষের হাতে, সে বিস্ময়ে একবার আকুল হয়ে গেল। সে অনেক ভেবে কূলকিনারা করেতে পারল না সে রহস্যের। উলটে তার মাথা গেল গুলিয়ে। সে হয়ে পরল ভারি ভুলমন। এখনো তাই। এখনো দেখা যায়, ডিমে তা দিচ্ছে উটপাখি, কিন্তু কয়েকটা ডিম যে বাসার বাইরে চলে গেছে, সে দিকে তার কনো নজর নেই।তালকানা সভাবের জন্য প্রতিবারই বেশ কটা ডিম নষ্ট হয়। এই হল আফ্রিকার বুশম্যান উপজাতির মানুশদের মুখে মুখে চালু গল্পের একটা। তারা উটপাখিকে কাছ থেকে লক্ষ করে। তারা সত্যিই দেখে, বাসাই বসে তা দিচ্ছে উটপাখি, আর কাছেই, বাসার বাইরে বেশ কয়েকটা ডিম আছে, কিন্তু তার ভ্রুক্ষেপ নাই। এ এক আশ্চর্য। যে কোন পাখির কাছেই তার ডিম হল সবথেকে দামি জিনিস। শখ করে নিজের ডিম নষ্ট করে কেউ, নেহাত মাথাই গণ্ডগোল না থাকলে। তার মাথার গণ্ডগোলের একটা ব্যাখ্যা দেয়ার জন্যই এই মজার গল্প। কিন্তু গল্পটা এখনো শেষ হয়নি। এ গল্প হয়তো হাজার হাজার বছর বা তারও বেশি সময় ধরে বুশম্যানদের মুখে মুখে চলে এসেছে, কিন্তু তার পাশাপাশি উটপাখির স্বভাব চরিত্র আরো খুঁটিয়ে দেখা হয়েছে, সেই সঙ্গে ইদানীংকালে প্রতিটি তথ্য যাচাই করে নেবার একটা বিজ্ঞান মাফিক ধরনও এসেছে। প্রকৃতি নিয়ে গল্পের প্রকৃতি তাই কিছুটা পালটে গেছে।আজকের গল্পটা এইরকম:-------------------------------------- একটা পুরুষ উটপাখির থাকে অনেক স্ত্রি, দুটো থেকে এমনকি সাতটা অবধি। কিন্তু এদের মধ্যে মাত্র একজনই প্রধান মহিষী, আগেকার দিনের রাজাদের পাটরানির মত। পুরুষ উটপাখির “রানি” অনেক হলে কি হবে, তারা সকলে ডিম পারে একটা বাসায়। বাসা মানে আর কিছু না, মাটিতে ফুট দেরেক গভীর গর্ত। সকলে মিলে ডিম পেড়ে সেই বাসা ভরতি করলেও ডিমে তা দেবার অধিকার থাকে কেবল পুরুষটির আর কেবল সেই পাটরানির। এখন এই পাটরানি যখন ডিমে তা দিতে বসে, তখন সে যদি দেখে যতগুলো হলে তা দিতে সুবিধা হয়, বাসায় ডিমের সংখ্যা অতিরিক্ত, তবে সে বেশ কয়েকটা ডিম ঠেলে বের করে দেয় বাসা থেকে। কিন্তু ডিম সরিয়ে দেবার মধ্যেও কিছু বাছবিচার আছে।যদিও সমস্ত ডিম দেখতে একইরকম, তবু পাটরানি তার নিজের ডিম রেখে বেছে বেছে অন্নের পরা ডিমগুল সরিয়ে দেয়। কিভাবে চিন্তে পার? না, গল্পের লেজের জাইগাটা এখনো বাকি আছে। ডিমের যে বৈশিষ্ট্য ধরে স্ত্রি উটপাখি নিজের ডিম আলাদা করে চিনতে পারে সেটা বেশ একটা সূক্ষ্ম ব্যাপার, বিজ্ঞানিরা তা নাগাল পাননি এখনো। তবে এই একটা গল্পই উটপাখির বদনাম ঘুচিয়ে দেবার পক্ষে যথেষ্ট, উটপাখি আদতে হাবাগবা গোছের কেউ নয়। এইরকম অসংখ্য গল্প আছে এই বইটিতে। পারলে সুযোগ বুঝে বইটা কিনে পরতে পারেন। বইটার লেখক ওপার বাংলার জনপ্রিয় বিজ্ঞান সাহিত্যিক যুধাযিৎ দাশগুপ্ত। বইটি আপনারা রকমারিতেও পাবেন। আমার জীবনের সবচেয়ে বেস্ট বিজ্ঞান বই।