User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

      By Tarek bin islam

      25 Dec 2019 09:32 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      আশা করি বন্ধু দেশ সম্পর্কে কিছু জানতে পারবেন

      By Md. Sakibul Hasan

      08 Dec 2019 02:54 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      Jaswant Singh was the founding member of BJP (Indian Janata Party), retired army officer of India. But, he wrote this book from a mostly neutral view. How come he managed those hidden historical information about Jinnah, Congress, Muslim League, Lord Mountbatten, Neheru etc? After reading this book, I could realise how Jinnah was compelled to make Pakistan due to the deprivation and ignorance of Congress leaders. Every politician and history researcher of this subcontinent should read this book.

      By Dulal Hossin Emon

      07 Jul 2018 12:28 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      পাশের দেশ সম্পর্কে জানার জন্য এই বইটা পড়া দরকার

      By Tultul Zabin

      19 Jan 2017 12:03 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      ‘জিন্না: ভারত দেশভাগ স্বাধীনতা’ ১৯৪৭ সালের ঘটে যাওয়া ভারত পাকিস্তান দেশ ভাগ নিয়ে লেখা যশোবন্ত সিংহ এর লেখা । ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগ কে নিঃসন্দেহে একটি মর্মস্পর্শী ঘটনা হিসেবে বলা যায় । যশোবন্ত সিংহ ভারতীয় জনজীবনে এবং আন্তর্জাতিক কুটনীতি তে সবচেয়ে শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিদের মাঝে অন্যতম । বর্তমানে তিনি দার্জিলিং এর নির্বাচিত সাংসদ । বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে । বইটি প্রকাশিত হয় আনন্দ প্রকাশনী থেকে । বইটি তে লেখক বলেছেন দেশভাগের কারন । কখন থেকে এই কাহিনীর সুত্রপাত এবং কোথায় এর শেষ হয়েছিল , কি কি কারন ছিলো এর পিছে তা নিয়ে তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেছেন বইটি তে । তিনি এর বিভিন্ন দিক নিয়ে বিশ্লেষন করেছেন । পাশাপাশি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এর কর্মকান্ড তিনি নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ করেছেন । কারন কিছু স্থানে জিন্নাহ কে বলা হয়েছে দানব , আবার কোথাও বলা হয়েছে দেবতা সমতুল্য । এই ঘটনা টা ইতিহাসের অন্যতম বড় একটি ঘটনা । এর পিছে দায়ী কে , জিন্না ? কংগ্রেস ? নাকি বৃটিশ রা । উপমহাদেশের চার প্রজন্মের মানুষের মনস্তত্ত্বকে এ ঘটনা তাপদগ্ধ ও অসার করে দিয়েছে। কেন আদৌ এ ঘটনা তাপদগ্ধ ও অসাড় করে দিয়েছে। কেন আদৌ এ ঘটনা ঘটেছিল লেখক এই প্রশ্নটির উত্তর খোজার চেষ্টা করে গেছেন । হয়ত প্রশ্নটির উত্তর পাওয়া সম্ভব নয় , তারপরেও লেখক তার লেখাতে উত্তর এর খোজ করেছেন । দেশভাগ নিয়ে যাদের জানার ইচ্ছা রয়েছে তাদের জন্য বইটি প্রচুর উপকারী হবে কারন এখানে বইটিতে নিরপেক্ষ ভাবে বিশ্লেষন করেছেন লেখক ।

      By Parvez Alam

      19 May 2016 12:16 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      দেশ ভাগ নিয়ে যাদের জানার ইচ্ছা আছে, তাদের জন্যে খুব ভালো একটি বই।

      By Shadin Pranto

      13 Oct 2019 04:26 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      "জিন্নাঃভারত,দেশভাগ, স্বাধীনতা" নিঃসন্দেহে দেশভাগের পুরো অধ্যায়টি নিয়ে "ভালো" কাজ। খুব খেটেেই নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করেছেন লেখক যশোবন্ত সিং। কিন্তু তারপরেও কিছু জায়গা ছিলো যেখানে সিং সাবের কলম স্পর্শ করেনি কিংবা প্রশ্নের যৌক্তিক উত্তর না দিয়ে "অতি" সূক্ষ্মভাবে নিজে একটি পক্ষ নিয়েছেন।যেমনঃ #জিন্নাকে দেশভাগের কলঙ্কজনক অধ্যায়ের জন্য দায়ী মানা হয়। কিন্তু যে লোকটি নিজে কট্টর কংগ্রেসী ছিলেন। যাকে সবাই হিন্দু মুসলিম ঐক্যের দূত মানতেন।সেই জিন্নাই কেন ১৯২৯ সালের পর কংগ্রেস থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে বাধ্য হন? যশোবন্ত সিং গবেষণা করা জানান,তিনি কংগ্রেসে গাঁন্ধির(দুঃখিত, কলিকাতার বানানে এই মহান ব্যক্তিকে কোনো পশু বানাতে মন সায় দিচ্ছে না) জনপ্রিয়তার কারণে একঘরে হয়ে যান তাই কংগ্রেস ত্যাগ করতে বাধ্য হন। কোনঠাসা হয়ে দলত্যাগ করলেন বুঝলাম। কিন্তু কী বিশেষ কারণে একজন কট্টর জাতীয়তাবাদী ও হিন্দু-মুসলিমের "ঐক্যদূত" হঠাৎ ঘোরতর কংগ্রেস বিরোধী হয়ে আলাদা ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র চাইলেন তার খুববেশি সুলুক সন্ধান না করেই সিং সাব একটা পক্ষ নেন। অথচ, হালকা চালে পড়লে বিষয়টি ধরা যায় না। #কংগ্রেসকে প্রথম থেকেই "বিরাট" কিছু একটা বলে প্রমাণে ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু কংগ্রেসের প্রথম দিককার ইতিহাসে আলো ফেলেন নি সিং সাব। কংগ্রেসের সাথে হিন্দু মহাসভার সম্পর্কে তিনি নীরব অপরদিকে, কট্টরপন্থী মুসলিম লীগ নিয়ে সর্বদা সরব ছিলেন।এ কেমন বিচার? #কংগ্রেস নিজেদের সবার প্রতিনিধি দাবী করলেও '৪৬ এর নির্বাচন উল্টো রায় দেয়।কেন কংগ্রেস মুসলমানদের মন জয়ে শেষকালে ব্যর্থ হয় তার কারণও বেশি ঘাঁটাতে চান নি লেখক। #জিন্নার "মথ ইটেন" পাকিস্তান তত্ত্ব ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের সাথে সাথেই। আবার,"ধর্মনিরপেক্ষ "ভারতেও ভালো নেই মুসলমানরা। বাংলাদেশে স্বাধীনতার এতো বছর পরেও কাঙ্খিত সাফল্য পায়নি জনগণ। পাকিস্তান তো স্বৈরশাসন, জঙ্গিবাদ নানা বিপদে নিজেই মূর্তিমান আপদ। বইয়ের শেষটায় একটা মোটাদাগে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে লেখক বলেছিলেন, "ভারতভাগের পর শান্তি নির্বাসিত হয়েছে।" এ লাইটিই ছিলো দেশভাগের সারমর্ম বোঝাতে সবচেয়ে দুঃখজনক অথচ বাস্তবসত্য কথা। একজন লেখকের নিরপেক্ষ থাকা প্রায় অসম্ভব। পক্ষ যদি নিতেই হয় তবে যে পক্ষে লোক বেশি তাদের দলে যাওয়াই ভালো -যশোবন্ত সিংয়ের বুদ্ধিদীপ্ততার জন্য রইল ধন্যবাদ!

      By Monir Hossain

      25 Oct 2018 05:29 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      জিন্না: ভারত, দেশভাগ ও স্বাধীনতা’—-বইটি পড়া শুরু করেছিলাম কুরবানি ঈদে । বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ জানাই " রকমারি" এর মত বন্ধু সুলভ ওয়েব সাইট কে , না হলে ইতিহাসের অনেক কিছু জানা হতো না । ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির জন্য কেবল মোহাম্মদ আলী জিন্নাকেই দোষারোপ করার একটি প্রবণতা কেবল ভারতীয় লেখকদের মধ্যেই নয়, বাংলাদেশি লেখকদের মধ্যেও রয়েছে। বুদ্ধিজীবী মহলেও জিন্নাকে ঘোরতর সাম্প্রদায়িক হিসেবেই মনে করা হয়। অনেকে জিন্নার নামটা নিতেও সংকোচবোধ করেন। তবে এর বিপক্ষে মতামতও রয়েছে প্রচুর। মাওলানা আবুল কালাম আজাদের আত্মজীবনী, ‘ভারত স্বাধীন হল’ তে দেখানো হয়েছিল যে এ দেশভাগের দায়দায়িত্ব জিন্নার পাশাপাশি একটি বড় ধরনের দায় ভারতীয় কংগ্রেস, বিশেষ করে সর্দার প্যাটেলরও ছিল। কিন্তু এ বিষয়ে বিশ্লেষণধর্মী বিস্তারিত লেখা সম্ভবত যশোবন্ত সিং এর এ বইটিতে আছে। ভারত ভেঙ্গে এ উপমাহাদেশ দুটো পৃথক ও সার্বভৌম দেশ হয়েছিল ১৯৪৭ সালে। ১৭৫৭ সালের পর থেকে দীর্ঘ দেড়শত বছর ভারত ছিল ব্রিটিশদের দখলে। গত শতাব্দীর গোড়ার দিকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ দানা বাঁধতে শুরু করে। বিশের দশকে মহাত্মগান্ধী দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফেরত এসে এ আন্দোলনের হাল ধরলে তা বেগবান হতে থাকে। এর পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইংরেজদের ভারত থেকে চলে যাওয়া অনেকটা সময়ের ব্যাপারে দাঁড়ায়। এই ব্রিটিশ তাড়াও আন্দোলনের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মোহন দাস কমর চাঁদ গান্ধী ওরফে মহাত্মা গান্ধী ও মোহাম্মদ আলী জিন্না যেমন ছিলেন অগ্রভাগে, তেমনি আলোচনার শীর্ষেও। মহাত্মা গান্ধী ভারতের রাজনীতিতে প্রবেশের পূর্বেই ছিলেন বিখ্যাত ও সর্বজন শ্রদ্ধেয়। আর মোহাম্মদ আলী জিন্না ক্রমান্বয়ে ভারতের মুসলমানদের জন্য একটি নতুন দেশের জন্মদাতা রূপে আবির্ভূত হন। মোহাম্মদ আলী জিন্না ও মহাত্মা গান্ধী ভারতের একই অঞ্চলের অধিবাসী। তাদের উভয়ের জন্মস্থান ভারতের বর্তমান গুজরাট রাজ্যের কাথিয়াবাড়ে। দুই মহাপুরুষের জন্মস্থানের দৈশিক দূরত্ব ছিল মাত্র ৪০ কিলোমিটার। উভয়েই ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রগণ্য পুরুষ। রাজনৈতিক জীবনের গোড়াতেই গান্ধী ও জিন্না উভয়েই ভারতে হিন্দু মুসলিম ঐক্যের প্রবাদ পুরুষ ছিলেন। কিন্তু মহাত্মা গান্ধী তার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের ধারণা অন্তরে লালন করলেও এটা বাস্তবায়নের জন্য বাস্তব কারণেই তেমন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেননি। কারণ যখন ব্রি্টিশ রাজশক্তি ভারত থেকে চলে যাওয়ার আয়োজন করে এবং তার চূড়ান্ত পর্যায়ে ভারতকে বিভক্ত করার প্রচেষ্টা বা ধারণার জন্ম হয় তখন ভারতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্ব ছিল জওহেরলাল নেহেরু, সর্দার প্যাটেল, রাজা গোপালচারী, মওলানা আবুল কালাম আজাদ প্রমূখ নেতৃবৃন্দের হাতে। এ্ক্ষেত্রে গান্ধী আবেদন-নিবেদন আর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ভিন্ন অন্য কিছু করতে পারেননি। গান্ধীর সামনেই তার আজীবন লালিত স্বপ্ন ঐক্যবদ্ধ ভারতকে নির্দয়ভাবে কাটাছেঁড়া করা হচ্ছিল। কিন্তু গান্ধী নিরব দর্শক হয়ে হাহুতাশ ভিন্ন অন্য কিছু করতে পারেননি। তিনি হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত তার প্রভাব দিয়ে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু নিজে কোন সিদ্ধান্ত নিতেও পারেননি, তার সিদ্ধান্ত তৎকালীন কংগ্রেস নেতৃত্বের উপর চাপিয়ে দিয়ে কোন সমঝোতায় নিয়ে আসতে তাদের বাধ্য করা তো দূরের কথা, রাজিও করাতে পারেন। তাই তো গান্ধী-জিন্নার শেষ বৈঠকগুলোতে জিন্না গান্ধীকে সরাসরিই বলেছিলেন, আপনার সাথে আলোচনায় আর কি লাভ। কারণ, আপনি তো কংগ্রেসের প্রতিনিধি নন। অন্যদিকে, জিন্নার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল চরম জাতীয়তাবাদী নেতা হিসেবে। তিনি ভারতে হিন্দু মুসলিম ঐক্যের প্রতীক রূপেই আবির্ভূত হয়েছিলেন। তার জাতীয়তাবাদীতা ও হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের কার্যকলাপ এতটাই প্রসংশনীয় ছিল যে সরোজিনি নাইডু ১৯২০ এর দশকেই জিন্নাকে নিয়ে এ থিমের উপর প্রথম বইটি প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু চরম জাতীয়তাবাদী ও ঐক্যবদ্ধ ভারতের অন্যতম প্রবক্তা মোহাম্মদ আলী জিন্না ক্রমশই কংগ্রেসের রাজনীতিতে প্রান্তসীমায় যেতে শুরু করেন। এক সময় তিনি সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে ইংল্যান্ডে গিয়ে বসবাসও শুরু করেন। এ সময় তিনি ছিলেন দারুণভাবে হতাশাগ্রস্ত। তার ভাষায়- এক সময় আমি ভাবতেও শুরু করেছিলাম যে আমার দ্বারা ভারতের কোন উপকার হল না। আমি হিন্দুদের মনোভাবও পাল্টাতে পারলাম না, আবার মুসলমানরা যে একটি বিচিত্র পরিস্থিতির মধ্যে আছে, সেটাও আমি তাদের বুঝিয়ে বলতে পারিনি। আমি এত হতাশ ও অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়লাম যে ঠিক করেই ফেললাম, ঢের হয়েছে, এবার থেকে লন্ডনেই থাকব। তার কারণ এই নয় যে আমি ভারতকে ভালবাসি না, বরং নিজেকে আমার প্রচণ্ড অসহায় বরে মনে হচ্ছিল। (পৃষ্ঠা-১৮০) কিন্তু শেষ পর্যন্ত লন্ডনের স্বেচ্ছা নির্বাসন শেষে আবার যখন জিন্না ভারতে প্রত্যাবর্তন করেন, তখন তিনি আর হিন্দু মুসলিম ঐক্যের ধারক নন, বিভেদের প্রবক্তা হয়ে ওঠেন। তিনি আশ্রয় গ্রহণ করেন সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সূচনাকারী দল মুসলিম লিগে। প্রথমে কংরেস ও মুসলিম লীগ এই দুই পরষ্পর বিরোধী সংগঠনের দুটোতেই তিনি নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। এ দুই সংগঠনের অভিন্ন লক্ষ্য ভারতের স্বাধীনতালাভ– এমন বিশ্বাসই তার ছিল। তবে মুসলিম লীগ ঐক্যবদ্ধ ভারতে মুসলামানদের স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছিল। কিন্তু দুই নৌকায় পা দিয়ে নদী পার হওয়া যায় না। এক সময় তাকে কংগ্রেস ছাড়তে হয়। ১৯৩৪ সালে তিনি ঘোষণা করেন যে তিনি দরকার হলে মুসলিম লীগের হাল ধরবেন। ১৯৩৭ সাল থেকে জিন্না মুসলিম লীগের গোটা নেতৃত্ব তার নিজের কাঁধে তুলে নেন। এ সময় থেকেই তিনি তার দ্বিজাতিতত্ত্ব অর্থাৎ ভারতে হিন্দু আর মুসলাম দুই সম্প্রদায় দুইটি আলাদা আলাদা জাতি অতএব তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের জন্য পৃথক পৃথক রক্ষাকবজ থাকা চাই। এ রক্ষা কবজের প্রক্রিয়া শুরু হয় সরকার ও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে মুলসলামনদের জন্য ন্যূনতম অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবিদাওয়া নিয়ে। আর শেষ হয় পাকিস্তান নামে মুসলামনদের জন্য একটি সম্পূর্ণ সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনের দাবির মাধ্যমে। জিন্নার দ্বিজাতিতত্ত্বের ধারণা প্রথমে কংগ্রেস নেতৃবৃন্দের কাছে অবিশ্বাস্য ও উদ্ভট মনে হযেছিল। ১৯৪৩ সালে লিখিত ‘ডিসকোভারি অব ইন্ডিয়া’ বইতে নেহেরু প্রশ্ন তুলেছিলেন, একই পরিবারের একভাই হিন্দু, অন্য ভাই মুসলমান। তাদের আচার-ব্যবহার, সংস্কৃতি-ইতিহাস, সাহিত্য-বিনোদন সব কিছুই এক ও অভিন্ন। তাদের পৃথকত্ব কেবল ধর্মের জন্য। তাহলে অভিন্ন ভাষা-সংকৃতি-সাহিত্য-ইতিহাস সম্পন্ন দুই ভাই দুটো আলাদা জাতির সদস্য হয় কিভাবে? কিন্তু ভারতের হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে এত বেশি অভিন্নতা সত্ত্বেও যে একটা বড় ধরনের ভিন্নতা ছিল এবং সেই ভিন্নতাকে সুকৌশলে কাজে লাগিয়ে ভারত ভেঙ্গে পাকিস্তানের মতো একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন রাষ্ট্র তৈরি করা যেতে পারে, আর তৈরি হলেও সেটা নিজের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব বজায় রাখতে পারবে তা বিভক্তির জায়মান পর্যায়ে তো দূরের কথা বিভক্তির পরেও কংরেস নেতারা সেটা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। জিন্না ভারতের গর্ভে থাকা পাকিস্তানের গর্ভনর জেনারেল হওয়ার জন্য যে দিন দিল্লি থেকে করাচির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন তার পরদিন সর্দার প্যাটেল মন্তব্য করেছিলেন: মুসলমানদের শিকড়, ধর্মীয় পবিত্র স্থান আর কেন্দ্র এখানে (ভারতে) রয়েছে। আমি জানি না পাকিস্তানে তারা কী করতে পারবেন, তাদের ফিরে আসতে বেশি দিন লাগবে না।( পৃষ্ঠা ৪০৬)। তৎকালীন কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ জিন্নার রাজনীতির ধরন ও তার অপ্রতিরোধ্য সাংগঠনিক ক্ষমতার প্রতি যে নিরবিচ্ছিন্ন উদাসীনতা, অবজ্ঞা এবং অনেক ক্ষেত্রে তাচ্ছিল্যপনা প্রদর্শন করেছিলেন ক্রমান্বয়ে তাই মাত্র ১০ বছরের ব্যবধানে জিন্না কর্তৃক চালুকৃত অথচ একটি অসংজ্ঞায়িত দ্বিজাতিতত্বের ধারণাটিকে কেবল সংজ্ঞায়িত হওয়ার সুযোগই দেয়নি বরং এ তত্ত্বের ফলিত রূপ কৃত্রিম রাষ্ট্র কিংবা পোকায় কাটা যাই বলি না কেন, পাকিস্তানের জন্মকে অনিবার্য করে তুলেছিল। কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ জিন্নার প্রতি কিরূপ তাচ্ছিল্যপূর্ণ ধারণা পোষণ করতেন তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় জওহের লাল নেহেরুর দিনলিপি থেকে। ১৯৪৩ সালে শেষাশেষি আহমদনগর জেলে বসে লেখা তার ব্যক্তিগত ডায়েরিতে জিন্না সম্পর্কে নেহেরু মতামত লেখেন, জিন্না কোনও সুসভ্য মনের অধিকারী নন। তার যাবতীয় চাতুরি ও দক্ষতা সত্ত্বেও আমার মনে হয়েছে, বর্তমান দুনিয়া ও তার সমস্যাবলী সম্পর্কে তিনি সম্পূর্ণ অজ্ঞ এবং উপলব্ধিহীন। আমার কেমন যেন মনে হয়, এই লোকটাকে শতহস্ত দূরে রাখা দরকার, সে জন্য পকিস্তান বা অন্য যা কিছু সে চায়, তা-ই তাকে দিয়ে বিদায় করা উচিৎ। তা না হলে চিরকাল ভারতের প্রগতির পথে সে তার বিভ্রান্তি ও ঔদ্ধত্য নিয়ে নাক গলাবে। (পৃষ্ঠা-৪৩৯)। অথচ ১৯৩৭ সাল থেকে ভারতীয় মুসলিমদের মূখ্য নেতা হয়ে ওঠা জিন্না স্বভাবতই ভারতীয় সার্বভৌমত্বে অংশীদারি চেয়ে ছিলেন। চেয়েছিলেণ স্বাধীনতা-উত্তর ভারতের নীতি-নির্ধারক সংস্থায় দৃশ্যত মর্যাদার আসন। সেই আসন পেলে ভারতীয় মুসলিমরা পৃথক জাতীয়তারা দাবি ছেড়ে দেবে, এ কথা তিনি বার বার বলেছেন। কেন্দ্রীয় আইনসভায় মুসলিমদের পর্যাপ্ত প্রতিনিধিত্ব অর্জনই তার কাছে মুখ্য বিষয় ছিল। সেই সঙ্গে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠাতা সম্পন্ন পাঞ্চাব, সিন্ধু, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, বাংলা এবং জম্মু ও কাস্মির রাজ্যগুলিতে লিগের প্রাধান্যও তার কাম্য ছিল, যাতে হিন্দুপ্রধান রাজ্যগুলো তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে। কিন্তু নেহেরু তা চাননি।(পৃষ্ঠা-৪৩৮) অবিভক্ত ভারতে ব্রিটিশদের জন্য যখন বিদায় ঘন্টা বাজার সময় সমাগত, তখনও নেহেরু জিন্নাকে বুঝে উঠতে পারেননি, তার চাওয়া মুসলমানদের জন্য একটি পৃথক ব্যবস্থা না হলেও কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারগুলোতে মুসলমানদের জন্য একটি নির্দিষ্ট আসন সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারেননি। তখন পট দ্রুত বদলে চলেছে। সেই সময় মঞ্চে যারা উপস্থি, – বড় লাট, সমগ্র কংগ্রেস নেতৃত্ব, গান্ধী, সুবাষচন্দ্র, অন্য সমস্ত রাজনৈতিক সংগঠন — সবাই বুঝতে পারছিলেন যে মুসলিম লিগ একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে, কেবল নে,হেরু প্রায় শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সে কথা বুঝতে নারাজ ছিলেন।( পৃষ্ঠা-২২০) যাহোক, ভারত-পাকিস্তান নামের দুটো পৃথক দেশ তৈরি হওয়াটা সে সময় ছিল অনিবার্য ও অপ্রতিরোধ্য সম্ভাবনা। তারপরও ব্রিটিশ সরকার ১৯৪২ সালে ক্রিপস মিশন পাঠিয়ে একটা ঐক্যবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রীয় ভারত গঠনের চেষ্টা চালিয়েছিল। এ মিশনের জটিল শর্তগুলোর মধ্যে একটি ছিল ভারতের প্রদেশ ও দেশিয় রাজ্যগুলোকে তিনটি বর্গ বা গুচ্ছে ভাগ করা। দক্ষিণ, পশ্চিম ও মধ্য অঞ্চলের হিন্দু প্রধান এলাকাগুলো নিয়ে ক-গুচ্ছ, উত্তর-পশ্চিমের মুসলিম প্রধান এলাকা যেমন সিন্ধু, পাঞ্জাব, সীমান্ত্র প্রদেশ নিয়ে খ-গুচ্ছ এবং বাংলা ও আসাম নিয়ে গ-গুচ্ছ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এক সময় কংগ্রেস ও মুসলিম লিগ উভয়েরই কাছে এ প্রস্তাব প্রায় গৃহীতও হয়েছিল। নানা কারণে, কারো মতে জিন্নার ডাইরেক্ট একশনের ডাক আবার কেউ বা বলেন নেহেরুর অনীহা ইত্যাদি কারণে সেটাও মাঠে মারা গিয়েছিল। মজার ব্যাপার হল, ভারত বিভক্তির প্রায় সিকি শতাব্দীর মধ্যেই ভারতে শেষ পর্যন্ত ক্রিপস মিশনের প্রাস্তাবিত তিনটি স্বাধীন রাষ্ট্রই প্রতিষ্ঠিত হল। তবে সেটা কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে। ১৯৪০ সালের লাহোর অধিবেশনে মুসলিম লিগ যে প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল এবং পরবর্তীতে জিন্নার ধূর্ততায় যা সংশোধন করা হয়েছিল তারই পরিণতি ঘটেছিল ১৯৭১ সালে। তবে তা একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে। আর এর ফলে প্রমাণিত হয়েছিল যে ভারতে মুসলমানরা আসলে একটি জাতি নয় অন্ততপক্ষে তিনটি জাতি- মূল ভারতের বিশাল এলাকায় ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে থাকা মুসলমানদের নিয়ে একটি ভারতীয়, একটি পাকিস্তানি, অন্যটি বাংলাদেশি। পাঠকদের কাছে বলতে দ্বিধা নেই যে, ভারত বিভক্তি ও ব্রিটিশ ভারতের ইতিহাস সম্পর্কে আমার পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই। কারণ আমি যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের ছাত্রও ছিলাম না, আর পরবর্তীতে ইতিহাসের উপর কর্তৃত্বপূর্ণ জ্ঞানের জন্য পর্যাপ্ত বই পুস্তকও পড়িনি। তবে যশোবন্ত সিংসহ আরো কিছু লেখকের বই পড়ে আমার কাছে মনে হয়েছে, সে সময়ের কংগ্রেস ও মুসলিম লিগ উভয় সংগঠন তথা মুসলিম ও হিন্দু নেতৃবৃন্দ যদি পরষ্পরের প্রতি আরো উদার হতেন, শ্রদ্ধাশীল হতেন, মুসলমানদের দাবিদাওয়াগুলোর ব্যাপারে অন্তত সেই সময়ের জন্যও যদি পর্যাপ্ত ছাড় দিতেন তৎকালীন কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ, তাহলে প্রাচীন সভ্যতার অধিকারী ভারত ভূখণ্ডটি হয়তো একটি ঐক্যবদ্ধ দেশ হিসেবেই আজ বিশ্ব দরবারে টিকে থাকত।

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!