User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#যেথায়_মনের_বৃষ্টি_নামে #পাঠ_অনুভূতি ♦এক নজরেঃ •উপন্যাসের নামঃ যেথায় মনের বৃষ্টি নামে •লেখকঃ তৃধা আনিকা •ধরনঃ রোমান্টিক •প্রকাশনীঃ অন্যধারা •প্রচ্ছদঃ নাসিম আহমেদ •পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৩৫ •প্রকাশকালঃ একুশে বইমেলা ২০২৫ লেখনীতেঃ রিফায়াত হাসান সাকিব বেশ অনেকগুলো দিন ধরে যেদিন থেকে এই বইটা সংগ্রহে নিয়ে বসে আছি, ততদিন থেকে বারবার শুধু এটাই মনে হয়েছে আমি এই বইটি এখনও পড়ছি না কেনো? কেনো আমার পাঠক মন বইটা নিয়ে এখনও পড়ার তোরজোর করছে না? সেই থেকে অপেক্ষায় আমি মাঝেমাঝেই বইটি পড়তে চেয়েছি । অবশেষে এতগুলো দিন পরে বইটি পড়া হলো । ♦নামকরণঃ দারুণ সুন্দর নামের এই উপন্যাসটির নাম দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম । কোথাও মনে হয়েছিল, এত সুন্দর নাম কেনো পৃথিবীতে থাকতে হবে । যে পৃথিবীতে বৃষ্টি এত সুন্দর সেই বৃষ্টি যদি মনের মাঝে গিয়ে বৃষ্টি ছড়ায় তা না জানি কতটা মোহনীয় হয়ে রূপ নেয় । সেজন্যই কিনা জানি না, এত সুন্দর নামকরণের আঙ্গিকে উপন্যাসটি পছন্দ করতে আমার খুব একটা সময় লাগেনি । আমি যে কতবার বইটি ধরে শুধু নামটার উপর হাত ছুঁয়ে দিয়ে মনের শান্তি খুঁজেছি তার শেষ নেই । ♦ফ্ল্যাপে লেখাঃ আজ সকাল থেকেই লিলির সঙ্গে একটার পর একটা অঘটন ঘটছে । রান্নার সময়ে ভাতের গরম মাড় পড়ে গেল তার হাতে । বাঁ-হাতে ঠোসা পড়ে একাকার । পাশের বাড়ি থেকে খাবার পানি আনতে গিয়ে আরেক অঘটন ঘটল । টিউবওয়েলে দুটো চাপ দিতেই টিউবওয়েলের ওয়াসার ছিঁড়ে গেল । বজলু বুড়োর বউ চেঁচামেচি শুরু করলেন । -এতই যখন কলের পানি খাওয়ার শখ । তোর বাপেরে বল্, কল বসাইতে । নাইলে পুকুরের পানি খা । পুকুরের পানি খাইলে তো কেউ মরে না । দুপুরে ভাত খেতে বসে লিলি দেখল, ভাত শেষ । দুপুরবেলাটা লিলি না খেয়েই থাকল । বিকেলবেলা পোস্টম্যান চাচা এলেন । লিলির নামে চিঠি এসেছে । রেজিস্ট্রি করা সাদা খামের চিঠি । খামের কোনায় লেখা, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার । খাম খুলে লিলি অবাক । এটা তার অ্যাপয়েন্টমেন্টের চিঠি । চিঠিটা পড়তে গিয়ে লিলি হাউমাউ করে কেঁদে ফেলল । পোস্টম্যান চাচা অবাক হয়ে বললেন, -কানতেছ কেন মা? -আমার চাকরি হয়েছে চাচা । চাচা, যাবার পথে চেয়ারম্যান বাড়িতে একটু খবর দিতে পারবেন বাবাকে? আমি যেতে পারব না চাচা । আনন্দে আমার হাত-পা জমে গেছে । ♦প্রচ্ছদঃ এই বইয়ের সবথেকে সেরা কী কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞেস করে, আমি কী বলবো জানেন? বলবো, বইয়ের প্রচ্ছদটা । এতটা মায়া নিয়ে নামের সাথে মিলিয়ে দারুণ একটা প্রচ্ছদ আমি অনেকদিন দেখিনি । আমি শুধু নিজেকেই যেন বারবার বলেছিলাম, এই প্রচ্ছদের বইটা তাড়াতাড়ি আসুক । প্রচ্ছদে যেখানে বইয়ের নামটি দেয়া, ঠিক সেখানেই যেন বৃষ্টির পানির ফোঁটার জলধারা চলে গিয়েছে জীবনের পাতার মতো । এই অদ্ভুত লুকায়িত সত্য নামক এক দোটানা এই উপন্যাসের প্রচ্ছদকে দারুণ সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছে । ♦পাঠ অনুভূতিঃ কতগুলো দিন পরে জানি না, এই বইটা পড়তে গিয়ে মনে হলো লেখক তার নিজেকে ভেঙেছেন । ভেঙেচুরে নিজেকে এমন এক রূপে নিজের লিখনশৈলী ফুটিয়ে তুলেছেন যা পড়তে গেলে মুগ্ধ হতে হয় । অবিরত হাতছানির মতো তাকিয়ে দেখতে হয় । লেখক কখনও যা করেননি তাই যেন করতে চেয়েছেন এই গল্পের পটভূমিতে । এই গল্পের পটভূমিতে প্রথমেই যা খেয়াল হয়েছে তা হলো, কোথাও একটা গল্পটা অনুধাবন করার মতো অনুভব করার জন্য সবকিছু ছাড়িয়ে গিয়ে, আবহকে গল্পের মধ্যে বইয়ে দিয়ে শুধু গল্পটাকেই অনুধাবন করানোর চেষ্টা করা হয়েছে । এইরকম একটা অসাধারণ চেষ্টায় এই প্রথম লেখকের উপন্যাস আমার অন্যরকম ভাবে অসাধারণ লাগলো । এতটা সুন্দর করে পটভূমি এবং প্রেক্ষাপটে ভারসাম্য এসেছে যে কোথাও একটা মনে হয়েছে ভালোবাসা এভাবেও হয়! এছাড়াও উপন্যাসে সামাজিক ছাপ, সমাজের বেশকিছু চিরাচরিত জীবন দেখানো হয়েছে । দেখানো হয়েছে এই জীবন সংসারের কিছু পরিস্থিতি । সবকিছু মিলিয়ে এই উপন্যাসের পটভূমি এবং প্রেক্ষাপটকে ভেসে যাওয়া দৃশ্যপটগুলো দারুণ ছিল । তবে উপন্যাসটি পড়তে গিয়ে কোথাও কোথাও আমার দুইরকম ধাঁচের অনুভূতি এসেছে । কোথাও যেন হালকা ধাঁচে বয়ে গিয়েছে জীবনবোধ । আবার কোথাও একটা গল্পের প্রয়োজনেই কিছুটা এলোমেলো । বোধহয় এরই নাম জীবন । যেখানে শুধু মনের বৃষ্টিতেই ভালোবাসা নামে । ♦চরিত্র আলাপনঃ উপন্যাসের প্রথমদিকে লিলি চরিত্রের বয়ানে উপন্যাসটি বয়ে গিয়েছে পুরোটা জুড়ে । লিলি চরিত্রটি যেন আমাদের সমাজের নিত্যনৈমিত্তিক জীবনে গড়ে ওঠা এক মেয়ের নারী হয়ে ওঠার রূপই দেখানো হয়েছে । সমাজের বিভিন্ন পরিস্থিতি এবং বেঁচে থাকার তাগিদে মেয়েটি নিজেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে, স্বপ্ন দেখে বেঁচে থাকার । এই মুহূর্তগুলো যেন কোথাও একটা ভারসাম্য দেয় উপন্যাসে । লিলি চরিত্রটির মাঝে মনস্তাত্ত্বিক ছাপের যে দৃষ্টিভঙ্গি কিছুটা কষ্টে পেতে চাওয়া আশ্বাস এগুলো উপন্যাসে দারুণ একটা ধাঁচ তৈরি করে । অসাধারণ পারিবারিক দৃষ্টিভঙ্গির বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবারের মেয়ে রূপা । এই হাস্যোজ্জ্বল নারীটি জীবনে যেন হাসি নিয়েই কিছু একটা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে যায় । তবে জীবনে সবকিছু পেলে যে আর পাওয়ার কিছু থাকে না তার অদ্ভুত সুন্দর এক ব্যাখ্যায় তার জীবন যেন পূর্ণ হয়ে ওঠে খুব । এছাড়াও বন্ধুত্বপূর্ণ স্বভাবের ফয়সাল যে প্রতিটি পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসার মতো কাজগুলো যেন নিজের খুশির জন্যেই করে যায় । বোধহয় জীবনের কিছু খেলায় নিজেকে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং হাসিখুশি স্বভাবের জন্যেই দেখতে চায় । এরকম করেই তার জীবনের পালাবদলে বিভিন্ন ধরনের বৃষ্টি নামে । ভালোবাসার জন্য কি সব করা যায়? এই পৃথিবীতে ভালোবাসাতে যদি সুখে কান্না করে ফেলা যায় তাহলে উত্তরে বলা যায়, সত্যিই সব করা যায় । যদি তা ভালো হয় । ভীষণই ভালোবাসতে চাওয়া, অপেক্ষা করে যাওয়া হিমেল চরিত্রটি এক জীবন ধরে যেন শুধু ভালোবাসতেই চাইলো । ভালোবাসার জন্যেই জীবনে কাজগুলোকে নিয়ে থেকে গেল । ♦চরিত্র বিশ্লেষণঃ এই পৃথিবীতে কিছু কিছু অনুভূতি আসে যেন । যার কিছু আসে উপন্যাসে যখন বই পড়ার শেষে চরিত্রগুলোকে নিজের সামনে অদৃশ্য অবস্থায় দেখতে পাই । তখন মনে হয় এরকমই বুঝি পৃথিবী । রূপার অপেক্ষা পৃথিবীতে অন্যরকম হয়ে আসতে পারতো কিন্তু তার জীবন তাকে ভবিষ্যতে বোধহয় সুখ দিবে । ফয়সাল এর বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব, হাস্যোজ্জ্বল চরিত্রটি বইয়ের প্রচ্ছদের পিছনের অংশটুকুতে যেন দ্বিধান্বিত করে দেয় । মনে করিয়ে দেয়, এটা তো আমাদের চেনা ফয়সাল নয় । বিপরীত এই অনুভব যেন আমাকে ঘিরে ধরে রাখে । হিমেল চরিত্রটির উপস্থিতি আরেকটু বেশি সময় ধরে থাকতে পারতো । তার এত এত চেষ্টা, এত প্রাপ্তি । তার জীবনের সেরা প্রাপ্তির চেষ্টার মুহূর্তগুলো আরো অনুভব করতে পারলে যেন কোথাও একটা শান্তি পেতাম । ♦লেখক প্রসঙ্গেঃ লেখক তৃধা আনিকা আপুর এই বইটি পড়ে আমার মনে হয়েছে, লেখক নিজের লিখনশৈলীকে ভাঙছে । এই ভাঙায় যে পাঠক হিসেবে কী শান্তি, তা অনুভব করেও যেন আনন্দ । এরকম পটভূমিতে উপন্যাস যেন অসাধারণ কিছু মুহূর্ত দেয় । লেখক যেভাবে ভালোবাসা, মানব জীবনের সম্পর্কের রসায়নের অনুভূতিগুলো ফুটিয়ে তুলেন তা যেন আরো এখানে বেশ ভালোভাবে এলো । শুধু রোমান্টিক ঘরানার উপন্যাস লিখতে হবে ভাবনাকে ছাড়িয়ে লেখক যেভাবে জীবনের পরিস্থিতিগত সময়ে ভালোবাসার গল্পে রোমান্টিক উপন্যাস লিখেছেন তা বেশ ভালো লেগেছে আমার । ♦প্রকাশনীঃ অন্যধারা প্রকাশনীর সবথেকে দারুণ বিষয় হলো, বইগুলোর অদ্ভুত সুন্দর বাঁধাই । এত সুন্দর ভাবে তারা প্রচ্ছদ ফুটিয়ে তুলে বইটিকে পাঠকদের সামনে প্রস্তুত করে যে দেখলেই মুগ্ধ হতে হয় । ভীষণ ভালো লাগায় যেন প্রচ্ছদটিকে ধরে রাখতে ইচ্ছে করে খুব । এছাড়া বইয়ে তেমন বানান ত্রুটি নেই, তবে পাশাপাশি বাক্য ব্যবহারে যেগুলো চরিত্রদের সংলাপ, সেগুলো ব্যবহারে উদ্ধৃতি মূলক চিহ্ন ব্যবহার করা উচিত ছিল । ♦রেটিংঃ ৪.৬/৫ পরিশেষে বলবো, এই সুন্দর একটা উপন্যাসে কিছু কিছু চিন্তা ভীষণ মাথায় আসে । গল্পে ব্যবহৃত শেষ শব্দটির পরে ৩টি ফোঁটা চিহ্ন ব্যবহার এবং বইয়ের প্রচ্ছদের পিছনের অংশে থাকা লেখাগুলো কোথাও একটা থমকে যেতে বলে যেন ।
Was this review helpful to you?
or
লেখকের কম বেশি সব বইই পড়া হয়েছে, বলতেই হয় তাঁর লেখার মান আগের থেকে অনেক ভালো হয়েছে। আর এই বই নিয়ে কী বলবো! বইমেলায় কেনার পর থেকেই কখন পড়বো, অপেক্ষা করতে পারছিলাম না। পড়ার পর মনে হলো, আসলেই জীবনে যা হয়, ভালোই হয়, কারণ জীবন কেমন হবে, তা ঠিক করা থাকে। বইটা পড়ে একই সময়ে যেমন হেসেছি, তেমনি কাঁদতেও হয়েছে। সত্যিই খুব ভালো লেগেছে পড়ে!
Was this review helpful to you?
or
দারুন ❤️❤️❤️❤️❤️
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার