User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
ইতিহাসের শতভাগ সত্য আমরা কখনোই জানতে পারি না। কিছু জিনিস রয়েছে যা বইয়ের পাতায় বন্দী হওয়া উচিত নয়। কারণ ইতিহাস অনেক কিছুই নিজের মধ্যেই রাখতে চায়, শুধুমাত্র নিজের মধ্যেই। তবু কথায় আছে না, সত্য কখনো চাপা থাকে না! এমনই কোনো গুপ্ত জিনিসের কথা হঠাৎই আপনার সামনে আসলে আপনি কী করবেন? ১৭২১ সাল। দিনাজপুরের মহারাজ কান্তজিউর নামক মন্দির প্রতিষ্ঠার সময় হঠাৎই খুঁজে পান ইতিহাসের এক অমূল্য রত্ন। কিন্তু এই প্রাপ্তির পর আনন্দের চেয়ে বেশি চিন্তা চেপে বসল মহারাজের মাথায়৷ এই রত্নপ্রাপ্তির কথা বাইরে গেলে যখন-তখন যে কেউ আক্রমণ করে বসতে পারে সেটার জন্য। এখন একটাই উপায়, মন্ত্রী সুখলালের পরামর্শ। মহারাজ সুখলালকে ডাকলেন এবং পুরো বৃত্তান্ত খুলে বললেন। সবকিছু শোনার পর সুখলাল দিলেন এক গোপন পরিকল্পনা। কান্তজিউর মন্দিরের আরেক নাম হল নবরত্ন মন্দির। আলিফ মোহাম্মদ দিনাজপুরের অদূরে থাকা ঘুঘুডাঙ্গার বেশ কুখ্যাত লোক। সেদিন রাতে পরিত্যক্ত জমিদার বাড়িতে তার কোনো অতি গোপন কাজ ছিল। কী কাজ, তা আলিফ মোহাম্মদই ভালো জানতেন। অন্ধকার সামান্য ঘনিয়ে আসতেই কাঁচের উপরে রঙিন কাগজ লাগানো টর্চ নিয়ে তিনি হাঁটা দিলেন জমিদার বাড়ির পানে। এই জায়গাটা এখন ঘাস লতাপাতায় পরিপূর্ণ। চলতে গেলে সেসব মাড়িয়ে যেতে হয়। যে জিনিসটার খোঁজে আলিফ মোহাম্মদ এখানে এসেছিলেন তা তিনি টর্চের আলো ফেলে খুঁজতে লাগলেন। একসময় তার চোখে পড়ল সেই পাথরটি। খুবই সাবধানে আস্তে আস্তে পাথরটা তুলতে লাগলেন তিনি। তখনই তার অভ্যস্ত কান বুঝতে পারল, সে ফাঁদে পা দিয়েছে। সোজা হয়ে দাঁড়ানোর আগেই কেউ সজোরে ছুঁড়ে মারল মাছ ধরার একটি কোচ। কোচের ফলাগুলো আলিফ মোহাম্মদের পেট এফোঁড়ওফোঁড় করে দিল। একটি চিৎকার দিয়েই নেতিয়ে পড়ল আলিফ মোহাম্মদের দেহ। আর তখনই সেখান থেকে ধুপধাপ শব্দ করে পালিয়ে গেল কেউ। বই পড়ছিল ঈশান। দুপাতা পড়তেই রাশেদ এসে উপস্থিত হল। বন্ধুরা বাসায় আসলে ঈশানের ভালোই লাগে এখন। মোটামুটি ঈশানের বাসাটাই এখন তাদের অন্যতম আড্ডাখানা। রাশেদের সাথে কিছু অপ্রয়োজনীয় কথা বলতেই ঈশানের ফোন বেজে উঠল। ওপার থেকে শোনা গেল দিনাজপুরের বন্ধু লতিফ মোহাম্মদের ভয়ার্ত কন্ঠ। পুলিশ লতিফকে তার চাচার হ*ত্যাকারী বলে গ্রেফতার করেছে। যেই কোচ দিয়ে তার চাচাকে মা রা হয়েছে সেই কোচটা লতিফেরই। আর এলাকার মানুষজন মৃ ত দেহের কাছে সর্বপ্রথম লতিফকেই খুঁজে পেয়েছে। তাই পুলিশ লতিফকেই এখন খু নি ভাবছে। আর কিছু বলার আগেই ফোন কেটে গেল৷ চিন্তিত মুখে ঈশান ফোন দিল এক জায়গায়। যে কাজের জন্য ফোন দিল তা মুহূর্তেই হয়ে গেল। এখন দিনাজপুর যাবার পালা। লতিফকে জেল থেকে বের করতে হবে। তারপর পুরো ঘটনাটার তদন্ত করতে হবে। ◼️ পাঠপ্রতিক্রিয়া (স্পয়লার থাকতে পারে) : এই বইয়ে দুটো গল্প ফাঁদা হয়েছে। একটা হচ্ছে আলিফ মোহাম্মদের খু নে র তদন্তের, আরেকটা হল গুপ্তধন উদ্ধারের। দুটো গল্প বললে ভুল হবে। আসলে গল্প একটাই। তদন্তের পাশাপাশিই গুপ্তধন উদ্ধারের কাজটা চলে। অনেক সময় দেখা যায় পাঠক ডিটেকটিভ উপন্যাস পড়তে গিয়ে বিরক্তবোধ করে গল্প বেশি লম্বা হওয়ার কারণে, যদি না গল্পটা লেখক ভালোভাবে ফাঁদে। এই বইয়ে লেখক এই জায়গায় সফল। তদন্তের ভেতরেই খুবই সূক্ষ্মভাবে গুপ্তধনকে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। যার দরুন গল্পের প্রতি পাঠকের আলাদা একটি আকর্ষণ কাজ করবে এবং পাঠককে গল্পে ধরে রাখবে। এই সিরিজের পূর্বের বইয়ের তুলনায় নিঃসন্দেহে এটা সেরা। লেখকের প্রাঞ্জল ও সরল বর্ণনার কারণে পড়তে বেশ মজাই লাগছিল। গল্পের ফ্লোও যথেষ্ট ভালো ছিল। সবথেকে ভালো লেগেছে ক্যারেক্টার বিল্ডআপ। প্রতিটা চরিত্রকে মনের মধ্যে গেঁথে ফেলা যায়। আর কী বলব? এগুলো বিশ্লেষণ করার মতো কিছু নেই। এককথায় বলা যায়, লেখক এই বইয়ে অসাধারণ কাজ করেছেন গল্পের প্রতিটি এলিমেন্টস নিয়ে। দিবাকর দাদার বইয়ের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে বইপাড়ায়। বিশেষত মহাকাল ট্রিলজির কারণে। আমি ভেবে রেখেছিলাম, প্রথমে দাদার অন্য বইগুলো একটু পড়ে দেখব। ভালো মনে হলে মহাকাল ট্রিলজি পড়া যায়৷ এই বই পড়ার পর আমার যথেষ্ট ভালো লেগেছে। এখন কালতন্ত্র আর মহাকাল ট্রিলজি ঘরে তুলতে হবে। এছাড়া বইয়ের প্রোডাকশনের কারণে বইটা নাড়তে চাড়তেও বেশ মজা লাগছিল। প্রিমিয়াম পাবলিকেশন্স এর প্রোডাকশন টপনচ লেভেলের। কিছু টাইপ মিস্টেক চোখে পড়েছে পড়ার সময়। তাছাড়া সবকিছুই ভালো। পরিশেষে, সহজ-সরল, প্রাঞ্জল বর্ণনায় চমৎকার একটি ডিটেকটিভ গল্প পড়তে চাইলে নবরত্ন পড়াই যায়। ফেলুদা, ব্যোমকেশ পড়ার পর এ ধরনের উপন্যাসগুলো পাঠকদের আর তেমন আগ্রহ যোগায় না। প্রথমবার ডিটেকটিভ স্টোরি পড়ার মত ফিল অবশ্যই এখন আর পাবেন না। তবুও দেশীয় লেখাগুলো পড়া উচিত। পাঠকরা তাদের আগ্রহের কথা জানালেই লেখক সেই অনুযায়ী গল্প ফাঁদবেন। তাই পারলে পড়ে দেখবেন। অন্তত সময় নষ্ট হবে না। ব্যক্তিগত রেটিং : ৪.৫/৫ বই : নবরত্ন লেখক : দিবাকর দাস প্রকাশনী : প্রিমিয়াম পাবলিকেশন্স পৃষ্ঠা সংখ্যা : ২০৭
Was this review helpful to you?
or
দিবাকর দাদার ঈশান সিরিজ এর এটি দ্বিতীয় বই । সত্যি বাংলাদেশের একটি ঘরোয়া গ্রামীণ আবহে এই কাহিনি টি অসাধারণ । গ্রামীণ আবহে এতো সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম দিক নিয়ে রহস্য উপন্যাস খুবই উপভগিয় , আসা করি এই সিরিজ এর বাকি বই গুলাতেও এই ভাবে চমক থাকবে ।