User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
goood
Was this review helpful to you?
or
❤️
Was this review helpful to you?
or
দূরবীন শুধু দূরকেই কাছে টেনে আনে না, উল্টো করে ধরলে কাছের বস্তুকেও দূরে সরিয়ে দেয়। তিন প্রজন্মের গল্পে যেনো বৈপরীত্যই সুনিপুণভাবে গড়ে উঠেছে। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এর সুদীর্ঘ উপন্যাস "দূরবীন" বৈচিত্রতায় পূর্ণ মানবিক সম্পর্কের এক অনন্য সুন্দর আখ্যান। তিন প্রজন্মের এই গল্পের এক প্রান্তে দাড়িয়ে জমিদার হেমকান্ত, আর অন্যপ্রান্তে দাড়িয়ে তারই নাতি ধ্রুব৷ আর মাঝখানে আখ্যায়িত হয়েছে হেমকান্ত'র পুত্র এবং ধ্রুব'র পিতা কৃষ্ণকান্তের গল্প। দুইদিকে দুইজনের দৃষ্টিতে কৃষ্ণকান্তের সুদীর্ঘ জীবনের এক অনন্য মধুর বিশ্লেষনই যেনো এই উপন্যাসের মূল সূর৷ এই তিন প্রজন্মের মধ্যে "দূরবীন" গড়ে তুলেছে এক গভীর সেতুবন্ধন। শান্ত প্রকৃতি আর ভাবুক স্বভাবের কিন্তু অসাধারন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন পুরুষ জমিদার হেমকান্ত৷ গল্পের প্রথম ভাগ বলে যায় হেমকান্তের কথা৷ জমিদার হেমকান্ত আর পুরোহিত কণ্যা অথচ প্রবল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মহিলা রঙ্গময়ীর এক অন্য রকম প্রনয়ের গল্প ফুটিয়ে তুলেছে প্রাপ্তি, কাম, হিসাব-নিকাশের উর্ধ্বে এক গভীর ভালোবাসার জয়গান৷ দূর্বল মানসিকতার হেমকান্তের শক্তিই যেনো নিহিত থাকে রঙ্গময়ীর মাঝে। দ্বিতীয় প্রজন্মে আমরা দেখতে পাই হেমকান্তের পুত্র কৃষ্ণকান্তকে৷ যে অল্প বয়সেই তার নিষ্ঠা, একাগ্রচিত্ততা, মূল্যবোধ আর সাহসীকতার সংমিশ্রনে হয়ে উঠে এক দেব শিশুর সমতূল্য আদর্শবাদী এক বালক৷ ব্রক্ষাচার্য গ্রহন আর স্বদেশী আন্দোলনের প্রতি প্রীতি তাকে এগিয়ে নিয়ে যায় এক বৃহত্তর জীবনের পানে৷ দেশভাগের পূর্বের নিষ্ঠাবান স্বদেশী কৃষ্ণকান্ত দেশভাগের পর হয়ে উঠে তুখোর এবং প্রচুর ক্ষমতাসম্পন্ন রাজনীতিবিদ। আর গল্পের শেষ প্রজন্মে দাড়িয়ে ধ্রুব দেখতে পায় তার আর তার স্ত্রী রেমির মাঝে বিদ্যমান অদ্ভুত এক সম্পর্ককে৷ ভালোবাসা, অবজ্ঞা, অপরিনামদর্শীতা, অবহেলা আর মায়ার সংমিশ্রনে গড়ে উঠা এক অদ্ভুত সম্পর্ক। অন্যদিকে এই অংশে রুপমান হয় ধ্রুব'র ভাবুক এমন এক সত্তা যে নিজের সবচেয়ে বড় শত্রু মনে করে নিজের পিতা কৃষ্ণকান্তকে৷ পিতার প্রতি গভীর ঘৃণা তাকে নিয়ে যায় অন্য এক জীবনের দিকে যার ফল সবচেয়ে বেশি ভোগ করতে হয় তার নিজের স্ত্রী রেমীকে৷ তিন প্রজন্মের এই গল্পের বাকি সবকিছু একদিকে রাখলে যেই জিনিসটা সবচেয়ে বেশি গভীর আর স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে তা হলো পিতা পুত্রের মধ্যকার গভীর সম্পর্ক। একদিকে হেমকান্ত তার বিপরীত স্বভাবের পুত্র কৃষ্ণকান্তকে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন৷ তাদের এই পিতা পুত্রের সম্পর্কে স্পষ্টভাবে দেখা যায় একজন পিতা তার পুত্রকে কতটা ভালোবাসতে পারেন সবকিছুর উর্ধ্বে উঠে৷ অন্যদিকে কৃষ্ণকান্ত আর ধ্রুব'র সম্পর্ক থাকে ঠিক তার বিপরীত। পিতার প্রতি ধ্রুব'র থাকে অসামান্য ঘৃণা। যা দুই পিতাপুত্রের সম্পর্ক নামিয়ে আনে বৈচিত্র৷ তিন প্রজন্মের গল্পের আখ্যান বাদ দিলেও এই বিশাল উপন্যাস জুড়ে চিত্রায়িত হয়েছে স্বদেশী আন্দোলন, জমিদারী প্রথা, দেশভাগ এবং দেশভাগের পরবর্তী অবস্থার এক দারুন উপাখ্যান। বহু চরিত্রের এই বিশাল গল্পে একেক চরিত্র বলে যায় একেকটা গল্প। তবুও সবকিছু ছাপিয়ে পিতা পুত্রের সম্পর্ক আর প্রজন্মের পর প্রজন্মে যে জেনারেশন গ্যাপ সৃষ্টি হয় তারই এক বিষন্ন সুন্দর আখ্যানই যেনো "দূরবীন" এর মূল উপজীব্য। ব্যক্তিগত ভাবে আমাকে মুগ্ধ করেছে কৃষ্ণকান্ত, হেমকান্ত আর রঙ্গময়ীর চরিত্রত্রয়৷ আর বহু মেয়ে যেখানে ধ্রুব'র প্রেমে হাবুডুবু খায় সেখানে আমার সত্যি বলতে ধ্রুব'র চরিত্রটাকে অন্ধকারে নিমজ্জিত একটা চরিত্র মনে হয়েছে৷ কিছু কিছু জায়গায় বেশ বিরক্ত লেগেছে ধ্রুবকে। অন্যদিকে কৃষ্ণকান্তের প্রবল ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হয়েছি বেশ। বইঃ- দূরবীন লেখকঃ- শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ- ৬১৭ পার্সোনাল রেটিংঃ- ৫/৫
Was this review helpful to you?
or
খুব ভালো বই
Was this review helpful to you?
or
বই না শেষ করে উঠা যেত না।
Was this review helpful to you?
or
তিন প্রজন্মের তিন নায়কের ব্যাক্তিত্ব সম্পূর্ণ আচারণ। প্রথম প্রজন্মের নায়ক হেমকান্ত যিনি কিনা বিপত্নীক কিন্তু তার ও প্রনয়ন কাহিনি চলে পুরোহিত কন্যার সঙ্গে। দ্বিতীয় প্রজন্মের উদ্বত হিম শীতল চরিত্রে কঠোর কৃষ্ণকান্তরের স্বদেশে করার সময় এক চরিত্র এবং ক্ষমতা আসার পর আরেক চরিত্র নিয়ে শেষ হয় দ্বিতীয় প্রজন্ম।এরূপ তৃতীয় প্রজন্মের নায়ক ধ্রুবর এক অমিল চরিত্র যা তার স্ত্রীর ওপর প্রভাব পড়ে, কখনো ভালোবাসা, কখনো উপেক্ষা...এই নিয়েই এক প্রকার বিরূপ প্রতিক্রিয়া চূড়ান্ত চরিত্রে অবাক করা ঘটনা নিয়েই শেষ হয়েছে বই টি। বইটি মূলত খারাপ লাগেনি কিন্তু হেমকান্তের অলস চরিত্রকে আরো অলস লেগেছে বইটিতে।আর সব চলন সই ছিলো।
Was this review helpful to you?
or
হেমকান্ত জমিদার। সামন্তশ্রেণীর যে রূপ ইতিহাসের পাতায় ছড়িয়ে আছে তা তার সাথে মেলে না। জমিদারীতে তার তেমন আগ্রহ নেই। প্রজাদের প্রতি সবিশেষ দয়া দেখানোই তার কাজ। প্রজারাও তাকে ভালবাসে। প্রজাদের ভালবাসা পেলেও তিনি তার ছেলেমেয়েদের স্বার্থের কাছে বড় অসহায় হয়ে পড়েন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তার গহনা লুটেপুটে নেওয়াতেই তার সন্তানরা ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তিনি জীবনের প্রতি বিরূপ হয়ে পড়েন। বুঝে নেন যে, এই পৃথিবীতে কেউ কারো নয়। সবাই নিজ নিজ স্বার্থে ব্যস্ত। তবু তাকে আজন্ম ভালবেসে যাওয়া রঙ্গময়ীর সেবা, মমতা, ভালবাসা বাঁচিয়ে রাখে জীবনের পথে। এই সুযোগে বলে রাখি, রঙ্গময়ী এক অসাধারণ চরিত্র, যার প্রতি পাঠক মাত্রেরই শ্রদ্ধা জন্মাতে বাধ্য। হেমকান্ত আরও একজনের জন্যে বাঁচতে চেয়েছিলেন, সেটা তার কনিষ্ঠ সন্তান কৃষ্ণকান্ত। শৈশবেই কৃষ্ণকান্ত মেধার স্বাক্ষর রাখেন। ধর্মবিশ্বাসে, লাঠিচালনায়, ধ্যানে তিনি বিজ্ঞ হয়ে উঠেন খুব অল্প বয়সেই। ইংরেজবিরোধী স্বদেশী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন তিনি। পিতার অপমানে একদিকে তার মাথায় যেমন খুন চেপে যায়, তেমনি ধীরস্থিরতা নেমে আসে দেশের প্রয়োজনে। কৌশলী হাতেই তিনি লড়াই করে চলেন স্বাধীনতার স্বপক্ষে। অল্প বয়সেই দেশব্যাপী পরিচিত হয়ে উঠেন তিনি তার যোগ্য নেতৃত্বের কারণে। দেশ স্বাধীন হলে তিনি মন্ত্রী হন। রাজনৈতিক কূটকৌশলও হয়তো শিখে নেন কিছুটা। স্বাধীনতার আগের কৃষ্ণকান্তকে পরের কৃষ্ণকান্তের সাথে মেলাতে পারেনা তার ছেলে ধ্রুব। মাতাল ধ্রুব নেশার জন্যে নেশা করেনা, নেশা করে মন্ত্রী বাবার ইমেজ নষ্ট করার জন্যে। কী কী করলে, বাবার অসম্মান হবে, সেটা নিয়েই ব্যস্ত থাকে সে। বাবার সাথে তার এক অদ্ভূত লড়াই। সে বিশ্বাস করে তার মা যে গাঁয়ে কেরোসিন ঢেলে আত্নহত্যা করেছিলেন, তার কারণ হলো তার বাবার অবহেলা। তাই সে বাবাকে ঘৃণা করে। মাতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে সে বাবাকে প্রতিনিয়ত অপমান করতে ব্যস্ত থাকে। সামন্ত রক্তে লাম্পট্য থাকাটা খুবই স্বাভাবিক কিন্তু হেমকান্তের বংশে কেউ নারী লোলুপ নয়। মদ্যপও নয়। ধ্রুব যে মদ খায়, সেটাও নেশা করে নয়। যার ফলে একদিন হঠাৎ করেই সে ছেড়ে দেয় মদ। অনেক অনুরোধেও তার বন্ধুরা আর তাকে সেটা স্পর্শও করাতে পারেনি। স্ত্রী রেমির প্রতি প্রচন্ড ভালবাসা থাকার পরেও শুধুমাত্র বাবার পছন্দের মেয়ে বলে তাকে অবজ্ঞা আর অবহেলায় প্রায় মৃত্যুমুখে ঠেলেই দিয়েছিল। রেমির সাথে তার ভালবাসা আর লুকোচুরি খেলা দেখতে দেখতে পাঠক বরং ধ্রুবকে করুণাই করতে থাকে। করুণাই হয়তো কিংবা ভালবাসা। উপন্যাসের প্রয়োজনেই ছোট ছোট ক্যারেক্টার এসেছে। ক্যারেক্টারগুলো যত ছোটই হোক পাঠকের মনে স্থান করে নিয়েছে বড় করে। যেমন বলা যায়, নোটন কিংবা ধারার কথা। কলগার্ল নোটন কিংবা উচ্ছৃঙ্খল ধারা অবশেষে পাঠকের কাছে ঘৃণার পরিবর্তে করুণায় পায়। শচীন, বিশাখা কিংবা জগা চরিত্রগুলোও নিজ নিজ ক্ষেত্রে উজ্জ্বল হয়ে থাকে গোটা উপন্যাস জুড়ে। দূরবীন যন্ত্রটা বেশ অদ্ভূত। এটি দিয়ে দূরের জিনিসকে শুধু কাছেই দেখায় না, উল্টো করে ধরলে কাছের জিনিসকেও দূরে দেখায়। অন্তর্নিহিত এই তত্ত্বের মতই উপন্যাসের চরিত্রগুলোও সমাজের মানুষের দূর এবং কাছের জীবনকে পাঠকের দৃষ্টির সামনে স্পষ্ট করে তোলে। সমাজ এবং জীবন দর্শন দারুণভাবে ফুটে উঠেছে উপন্যাস জুড়ে। দ্বিস্তর এই উপন্যাসে সেকাল ও একাল, অতীত এবং বর্তমান এক অনন্য কৌশলে একাকার। অতীতও কিভাবে বর্তমান হয়ে উঠে তা দেখানো শীর্ষেন্দুর পক্ষেই বোধ হয় সম্ভব। দারুণ এই উপন্যাসটি পাঠকমাত্রই প্রিয় হয়ে উঠতে বাধ্য।
Was this review helpful to you?
or
খুবি চমৎকার একটা বই। তিনটা আলাদা প্রজন্মের কথা, দৃষ্টিভঙ্গি, সময়কাল এত সাবলীল ভাবে রচনা করেছেন লেখক, যা এই বইটাকে নিয়ে গেছে অন্য উচ্চতায়। এটা বাংলা সাহিত্যের পাঠকদের জন্যে খুবি চমৎকার একটি পাঠ্য।
Was this review helpful to you?
or
দূরবীন যন্ত্রটা বেশ অদ্ভূত। এটি দিয়ে দূরের জিনিসকে যেমন কাছে দেখা যায়, উল্টো করে ধরলে কাছের জিনিসকেও দূরে দেখায়। অন্তর্নিহিত এই তত্ত্বের মতই উপন্যাসের চরিত্রগুলোও সমাজের মানুষের দূর এবং কাছের জীবনকে পাঠকের দৃষ্টির সামনে স্পষ্ট করে তোলে। সমাজ এবং জীবন দর্শন দারুণভাবে ফুটে উঠেছে উপন্যাস জুড়ে। দ্বিস্তর এই উপন্যাসে লেখক সেকাল ও একাল, অতীত এবং বর্তমান এর এক অনন্য চিত্র একেছেন । অতীতও কিভাবে বর্তমান হয়ে উঠে তা দেখানো শীর্ষেন্দুর পক্ষেই বোধ হয় সম্ভব। দারুণ এই উপন্যাসটি পাঠকমাত্রই প্রিয় হয়ে উঠতে বাধ্য।
Was this review helpful to you?
or
দূরবীন যন্ত্রটা বেশ অদ্ভূত। এটি দিয়ে দূরের জিনিসকে শুধু কাছেই দেখায় না, উল্টো করে ধরলে কাছের জিনিসকেও দূরে দেখায়। অন্তর্নিহিত এই তত্ত্বের মতই উপন্যাসের চরিত্রগুলো। সমাজ এবং জীবন দর্শন দারুণভাবে ফুটে উঠেছে উপন্যাস জুড়ে। দ্বিস্তর এই উপন্যাসে সেকাল ও একাল, অতীত এবং বর্তমান এক অনন্য কৌশলে একাকার। অতীতও কিভাবে বর্তমান হয়ে উঠে তা দেখানো শীর্ষেন্দুর পক্ষেই বোধ হয় সম্ভব। দারুণ এই উপন্যাসটি পাঠকমাত্রই প্রিয় হয়ে উঠতে বাধ্য।
Was this review helpful to you?
or
দূরবীন উপন্যাসটি শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের একটি অন্যতম মহৎ সৃষ্টি। উপন্যাসটিতে তিনটি প্রজন্মের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। উপন্যাসের দুইটি অংশ একসাথে এগিয়ে চলেছে। একদিকে হেমকান্ত নামক জমিদারের ও তার আদরের পুত্র কৃষ্ণকান্তের কাহিনী অগ্রসর হয়েছে অন্যদিকে ধ্রুব ও তার পিতা কৃষ্ণকান্তের। কৃষ্ণকান্ত দুই অংশের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করেছে। কৃষ্ণকান্তকে এই উপন্যাসের নায়ক হিসেবে উল্লেখ করাই যেতে পারে। প্রথম অংশের সূচনা হয় জমিদার হেমকান্তের হাত থেকে কুয়োর বালতি পড়ে যাওয়া মাধ্যমে। বালতি পড়ে যাওয়ার ফলে হেমকান্তের মাঝে মৃত্যচিন্তার আবির্ভাব হয়। হেমকান্ত হলেন দুর্বল চিত্তের মানুষ। পৃথিবীর জটিলতা সে পছন্দ করে না। তার মাধ্যমে লেখক কিছু দার্শনিতা ফুটিয়ে তুলেছেন। এই অংশের নায়িকা হলেন রঙ্গময়ী নামের প্রবল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এক পুরোহিত কন্যা, যার সাথে বিপন্তীক হেমকান্তের প্রণয়কাহিনীর কথা শুনা য়ায় এবং শেষ দিকে হেমকান্ত রঙ্গময়ীকে বিয়ে করে। অল্প বয়সে তার প্রথম স্ত্রী সুনয়নী মৃত্যু বরণ করেন। বিপত্নীক হেমকান্ত সর্বদা সন্তানদের থেকে দুরে থাকতেন। তার ধারণা সন্তানদের ভালোবাসা দেখালে তার দুর্বলতা ফুটে উঠবে। কিন্তু সে তার ছোট ছেলে কৃষ্ণকান্তকে খুব ভালোবাসতো। হেমকান্ত, রঙ্গময়ী ও বালক কৃষ্ণকান্তকে নিয়ে প্রথম অংশ। কৃষ্ণকান্ত হলেন দ্বিতীয় প্রজন্মের নায়ক। ছোট বেলা থেকে সে ছিল তেজি, বুদ্ধিদিপ্ত এক বালক। কৃষ্ণকান্তকে পিতা হেমকান্তের বিপরীত মেরুতে দাড় করানো হয়েছে। স্বদেশী আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে কৃষ্ণকান্তের ব্রহ্মচারীতা গ্রহণ এবং দেশভাগের পরে এক প্রভাবশালী নেতাতে পরিনত। শৈশব হতেই যার প্রতিভার স্ফূরণ ঘটে। ধীর-স্থির, নিজ সিদ্ধান্তে অটল কৃষ্ণকান্ত উপন্যাসের এক অন্যতম চরিত্র। তার মধ্য দিয়েই পাঠক পরাধীন ভারত হতে স্বাধীন ভারতের দেখা পায়। উপন্যাসের তৃতীয় ও শেষ প্রজন্মের নায়ক ধ্রুব। বিশ শতকের উপন্তপর্বে এক দিগভ্রষ্ট, উদ্ধত বিদ্রোহী যুবা। এই উপন্যামের এক অদ্ভুত চরিত্র এই ধ্রুব। প্রচণ্ড উদ্ধত, মদ্যপ ধ্রুবর মাঝে খারাপ গুণের অন্ত নেই, যার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য বাবার সম্মানহানি করা। কিন্তু পিতা কৃষ্ণকান্তের ধ্রুবের প্রতি অন্য রকম ভালোবাসা ছিল। ছেলের সমস্থ বিপদের পাশে দাড়াতেন তিনি। ছেলের জন্য তিনি আত্মহতা করেন। এই উপন্যাসেন আর একটি উল্লেখ্য যোগ্য চরিত্র হলো রেমি। ধ্রুবের স্ত্রী রেমি। অদ্ভুত সম্পর্ক ছিল ধ্রুব ও রেমির মধ্যে। কখনও ভালবাসা, কখনও উপেক্ষা, কখনও-বা প্রবল বিরাগ। অথচ রেমির ভালোবাসা শাত-আঘাতেও অবিচল। , এ-উপন্যাসের বিশাল প্রেক্ষাপটে আরও বহু বিচিত্র ও কৌতুহলকর শাখা-কাহিনী, এবং এর চালচিত্রে স্বদেশী আন্দোলন, দেশভাগ ও স্বাধীনতা পরবর্তী উত্তাল দিনরাত্রির এক তাৎপর্যময় উপস্থাপনার জন্যও ‘দূরবীন’ চিহ্নিত হবে অবিস্মরণীয় সৃষ্টিরূপে।
Was this review helpful to you?
or
রিয়েন তুই বই পড়ে দিন দিন আরো বেশি খারাপ হয়ে যাচ্ছিস কেন? এই প্রশ্নটা অনেকেই করে বিশেষ করে মা। আসল কথা হলো বই পড়ে আমি খারাপ হচ্ছিনা আবার ভালোও হচ্ছিনা। বই থেকে আমি কোন শিক্ষাই গ্রহণ করছি না। আমি শুধু কাহিনী গুলো মনে রাখি আর বাকি সব ভুলে যায়। যেমন ধরা যাক দ্য এ্যালকেমিস্ট বইটির কথা। এই বইতে অনেক কিছু শেখার ছিল। কিন্তু আমি কিছুই শিখিনি। আসলে শেখার চেষ্ট করেছি কিন্তু পারিনি।দ্য এ্যালকেমিস্ট এর কিছু মনে নেই শুধু মনে আছে একটা মেষ পালক যে গুপ্তধন এর সন্ধানে মিশরের পথে রওনা দেয়। মিশর যাওয়ার পথে অনেক কিছু শিখতে পারে। শেষ আর কিছুই মনে নেই।আমি এই পর্যন্ত যেই বই গুলো পড়ছি সব বই নিয়ে একই অভিজ্ঞতা! আসলে বই পড়ে খারাপ বা ভালো হচ্ছিনা। আমি রিয়েন যেমন ছিলাম তেমনই আছি। মা হয়ত আসা করে ভালো হব। যাই হোক ৯ দিনে আমার জীবনের পড়া সবচেয়ে বড় বই দুরবীন শেষ করলাম। এই বই থেকে যদি বলি কিছুই শিখিনি তবে ভুল হবে। দুইটা জিনিস শিখলাম এই বই থেকে পুত্রের প্রতি পিতার অসাধারণ ভালোবাসা এবং পিতার প্রতি পুত্রের তীব্র ঘৃণা। গল্পে সবচেয়ে বেশি ভাললেগেছে হেমকান্তকে। হেমকান্তকে ভাল লাগার সবচেয়ে বড় কারণ হলো তার মধ্যে আমি নিজেকে খুজে পেয়েছি। আর নিজেকে সবারই কম বেশি ভালো লাগে। বিপত্নীক হেমকান্তের জন্য রঙ্গময়ীর ভালোবাসা দেখে আমার সবসময়ই হিংসা হয়েছে। রঙ্গময়ীর মতো নারী বইতে থাকা সম্ভব। যদি বাস্তবে থাকতো তবে আমি তাকে পেতে চাইতাম। ছেলের প্রতি হেমকান্তের ভালবাসাটা যেকোন ছেলেরই হিংসা হতে পারে। কোন বাবা তার ছেলেকে এতটা ভালোবাসাতে পারে তা আমার জানা ছিলনা।হয়ত সব বাবাই তার সন্তানকে ভালবাসেন কিন্তু সেটা গোপনে প্রকাশ্যে নয়। বইতে সেই গোপন ভালবাসার কথাই বলা হয়েছে। বইটির গল্প চলেছে ১৯২৯ ও বর্তমান এই দুইটা নিয়ে। গল্পের মূলে ছিল হেমকান্ত তার ছেলে কৃষ্ণকান্তু ও তার নাতি ধ্রুবকে নিয়ে। ধ্রুব চরিত্রেকে আমার একদমই ভালো লাগেনি। ধ্রুবর মতো নিচ কেউ হতেই পারে না। মানছি সে পরিস্থিতির শিকার তাই বলে এতটা নিচে নামবে। সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে যখন যে তার স্ত্রীকে অন্য কারো সাথে প্রেম করতে বলে। মাঝেমধ্যে ধ্রুব তার স্ত্রীকে সিসস্টার বলে ঢাকতে দেখা গেছে। বউকে বোন কি ভাবে কেউ বলে! বইটি কেমন লেগেছে এক কথায় বলতে গেলে বলতে হয়,'আমার কাছে বইটি স্টার জলসার সিরিয়ালের মতো লেগেছে।'বইটির ভূমিকা পড়ে জানতে পারি সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকায় দু-বছরের বেশি কাল ধরে ধারাবাহিকভাবে বের হয়েছিল দুরবীন গল্পটি। (পুনশ্চঃ- বই এর সাথে এত ঔষধ কেন আমি নিজেও জানি না।)
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_জুন কাহিনী সংক্ষেপ - উপন্যাসের কাহিনী আবর্তিত হয়েছে তিন প্রজন্মকে ঘিরে। প্রথম প্রজন্মের জমিদার হেমকান্ত। অত্যন্ত উদারমনা এবং নরম স্বভাবের একজন মানুষ। তার একটিই বাতিক, সেটি হলো - জগতসংসার সম্পর্কে উদাসীনতা। মধ্যবয়সেই তাকে আঁকড়ে ধরেছিলো ভীষণরকমের বার্ধক্যচিন্তা। উপন্যাসের শুরুতে দেখা যায় হেমকান্তের হাত থেকে জল তোলার বালতি কুয়োতে পড়ে যায় আর তিনি সেটিকে নিয়ে বিস্তর গবেষণা শুরু করে দেন। ঘটনাটিকে তিনি নিজের বার্ধক্যের ছাপ এবং আসন্ন মৃত্যুর লক্ষণের একটি হিসেবে বিবেচনা করতে শুরু করেন। হেমকান্ত বিপত্নীক, স্ত্রী জীবিত থাকাকালীন সময়েও স্ত্রীর সাথে গভীর ভালোবাসার টান কখনো গড়ে উঠতে পারে নি তার। হেমকান্তর দার্শনিক মনোভাব সেটার মূলে ছিল। এতোকিছুর মধ্যে বহুকাল যাবত হৃদয়ের গোপনে হেমকান্তের জন্য আরাধনা করে আসছে বাড়ির পুরোহিতের প্রবল ব্যক্তিত্বসম্পন্না দায়িত্বশীলা কন্যা রঙ্গময়ী। রঙ্গময়ীর ভালোবাসা ফুরোয় নি কখনো তার প্রতি। হেমকান্তের টালমাটাল মন, তার রঙ্গময়ী, প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন পুত্র কৃষ্ণকান্তের শৈশবকাল ও প্রাসঙ্গিক পরিবেশ নিয়েই প্রথম প্রজন্মের গল্প। দ্বিতীয় প্রজন্মে রয়েছে কৃষ্ণকান্ত৷ সৌন্দর্য-সৌষ্ঠবে অনন্য এবং তারচেয়েও বেশি সাহসে টগবগ স্বদেশী আন্দোলনে সোচ্চার ব্যক্তিত্বটি শুরু থেকে ছিল তার পিতার চেয়ে বহুভাবে আলাদা। দেশভাগের পর তার ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু পরিবর্তন যা পরবর্তীতে তার জীবন ও পরবর্তী প্রজন্মকে প্রভাবিত করে নেতিবাচকভাবে। তৃতীয় প্রজন্মের নায়ক ধ্রুব। বাবার মতোই সুপুরুষ ধ্রুবর জীবনের প্রধান লক্ষ্য তার পিতার সাম্রাজ্য থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকা। পিতাকে সে ঘৃণা করে মনেপ্রাণে, তার সাথে জড়িত সবকিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে চায় সে। তার মধ্যে বিদ্রোহী মনোভাব পাহাড়ের মতো অটল। স্ত্রী রেমির সঙ্গেও অদ্ভুত উদাসীনতার সম্পর্ক তার। রেমিকে সে ভালোবাসে না, ঘৃণাও করে না, কখনো উপেক্ষা করে, কখনো কাছে টেনে নেয়। রেমি তাকে ভালোবাসে উন্মাদের মতো। আঘাত-অপমান-উপেক্ষা-তিরস্কার সত্বেও। তিন প্রজন্মের কাহিনী মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে নিপুণ একটি শিল্পের মতো। সাংসারিক আলোকপাতের সাথে সাথে স্বদেশী আন্দোলন, দেশভাগের উত্তাল জীবনযাত্রায় দিনাতিপাতের সময়গুলো ফুটে উঠেছে দক্ষ হাতের ছোঁয়ায়। পাঠ-প্রতিক্রিয়া - বইয়ের এক তৃতীয়াংশে থাকতেই কোনো বইকে আমি "প্রিয় বই" হিসেবে আখ্যা দিয়ে ফেলেছি এই ঘটনা আমার বইপড়ুয়া জীবনের বারো বছরে প্রথম ঘটলো। শেষ অব্দি আসতে আসতে ভালো লাগাটা গাঢ়তর হয়েছে ক্রমান্বয়ে আরো। পিতার বিরুদ্ধে মারাত্মক ধরণের রিবেলিয়াস, ব্যক্তিজীবনে উদাসীন ধ্রুব চরিত্রটির আকর্ষণ কাটাতে সম্ভবত কয়েক সপ্তাহ সাধনা করা লাগবে বইটি পড়ার পর। এতো সুন্দরভাবে শীর্ষেন্দু এই চরিত্র কিভাবে রূপায়ন করেছেন আমার কল্পনাতেও আসে না। বই তো পড়ছি প্রত্যহ, কতো কতো উপন্যাস, কতো কতো গল্প, কিন্তু লেখায় ভালোবাসা, অনুভূতি, শিল্প - খুঁজে পাওয়া যেখানে দুষ্কর সেখানে এমন বই রত্নসম। ধ্রুবর উপরে একই সাথে শরীর অবশ করে দেবার মতো রাগ আবার কিছু পরেই দুর্নিবার একটা আকর্ষণ যে উত্তেজনার চক্রে আপনাকে ঢুকিয়ে ফেলবে সেটা যেকোনো থ্রিলার ডিটেকটিভ উপন্যাসকেও হার মানিয়ে দেয়। তার উপরে কারো ছায়া যদি দেখতে পান ধ্রুবর মধ্যে, চমকে চমকে উঠবেন আমার মতোই। রেমি চরিত্রটি আমাকে কল্পনাতীতভাবে ধাক্কা দিয়েছে। একটা বই তখনই খুব হৃদয়ে আঘাত হানে যখন সেটা আপনার মনের অবস্থা, আপনার ব্যক্তিগত জীবনের ছায়ার সাথে কিছু মেলে। কেউ কখনো অনেক আবেগে পড়ে কাউকে ভালোবেসে থাকলে রেমির সাথে নিজেকে বেশ মেলাতে পারবেন। সে পবিত্র নারীমূর্তি ❤ তার অনুভূতির কথাগুলো পড়লাম, অনুভব করলাম। হেমকান্তর বাল্যসুলভ ভাবভঙ্গী, রঙ্গময়ীর তাকে দায়িত্বশীল করে তোলার চেষ্টা, সমাজের বাঁধা কাটিয়ে ভালোবাসাকে স্বীকার করা, হেমকান্তর ছেলেমেয়ের প্রতি রঙ্গময়ীর মাতৃস্নেহ, কৃষ্ণকান্তর উজ্জ্বল বাল্যবেলাটি বেশ লাগছিল! পরিবর্তিত কৃষ্ণকান্তর ব্যক্তিত্ব বুঝতে সময় লেগে গেলো। পুত্র তার বিপরীতে থাকলেও পুত্রবধূর কিন্তু কৃষ্ণকান্তের উপর অগাধ বিশ্বাস। ধ্রুব বাবাকে ন্যূনতম সম্মান দিতেও রাজি নয়, কিন্তু রেমিকে কৃষ্ণকান্ত মেনে নিয়েছেন "মা" বলে, রেমিও তাকে শ্রদ্ধার পাত্র করে তুলে রেখেছে সকলের উপরে। সেটি নিয়ে ধ্রুবর তিরস্কার কম নয়। রেমি-ধ্রুবর খুনসুটিগুলো বড় উপভোগ্য ছিল। পুরো বইটা একটা ভালো লাগার উচ্ছ্বাস। সেটা প্রকাশ করতে বেগ পেতে হচ্ছে। যারা পড়েছেন তারা বুঝতে পারবেন। যারা পড়েন নি, তাদেরকে বলবো কিছু সত্যিকার অসাধারণ মুহূর্ত উপভোগ করতে চাইলে পড়ে ফেলুন। বইপড়ুয়া প্রায় সকলেরই খুব প্রিয় একটি বই শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের "দূরবীন"। মূলত সেই উৎসাহ থেকে পড়া শুরু করেছিলাম। শেষ করে মনে হয়েছে হাইপটা যথাযোগ্য ছিল।
Was this review helpful to you?
or
অনেক ভাল একটা বই
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগীতা বই- দূরবীন লেখক- শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় প্রকাশক- আনন্দ পাবলিশার্স প্রকাশকাল-১৯৮৬ পৃষ্ঠা সংখ্যা-৬১৬ রকমারি মূল্য- ৫৩০ টাকা। বইটিতে একটি বংশের তিন প্রজন্মের জীবনগাথা বর্ণনা করা হয়েছে।যাদের প্রত্যেক প্রজম্মের পুরুষদের জীবনেই যেন রয়েছে অস্বাভাবিকতা। এক প্রজম্মের প্রতি অন্য প্রজম্মের যেমন রয়েছে প্রবল ভালোবাসা, তেমনি রয়েছে চরম ঘৃণা। এত কিছু সত্ত্বেও তাদের জীবন যাপনের তাগিদে একই সাথে বেড়ে ওঠা, পাশাপাশি চলা সব কিছুর নিখুত বর্ণনা করা হয়েছে বইটিতে। জমিদার হেমকান্ত চৌধুরি ছয় সন্তানের জনক। অল্প বয়সেই স্ত্রীকে হারান তিনি। স্ত্রী মারা গেলে দ্বিতীয়বার আর, বিয়ে করেননি। ছোট ছেলেমেয়ে দুটি বিশাখা আর কৃষ্ণকান্ত তার কাছে থাকে। তার কাছে থাকলেও তারা মানুষ হয়েছে রঙ্গময়ীর কাছে। তাঁরা রঙ্গময়ীকেই মা বলে জানে। রঙ্গময়ী ছোটবেলা থেকেই এই বাড়িতে মানুষ। ঠিক কাজের লোকও নয় আবার পরিবারেরও কেউ নয় সে । সম্পর্কে বড় কর্তা হেমকান্তের দূর সম্পর্কের আত্মীয়া। রঙ্গময়ী হেমকান্তের চাইতে বয়সে ১০-১৫ বছরের ছোট হবে। নিজে কখনোই সরাসরি ছেলে মেয়ের খোঁজ খবর নেয়া হয়না হেমকান্তের। রঙ্গময়ীর কাছ থেকে ছেলেমেয়ের খোঁজ খবর পান তিনি। আবার তার কাছেই নিজের সব কথা খুলে বলেন। হঠাৎ একটা ঘটনার কারনে হেমকান্ত রঙ্গময়ীর আরো কাছাকাছি আসতে থাকেন। গ্রামে গুজব চলতে থাকে হেমকান্ত আর রঙ্গময়ী কে নিয়ে।বড় ছেলেমেয়েরা লজ্জায় পড়ে যায় বাবার এই ভীমরতির খবর শুনে।এবং ছেলেমেয়েরা এসে ঘোষণা দেয় রঙ্গময়ীকে বাড়ি ছাড়া করতে হবে । জমিদার হেমকান্ত চৌধুরির ছোট সন্তান কৃষ্ণকান্ত। ছোট বেলায় মা মারা যাওয়ার পর থেকে পিসি রঙ্গময়ীর কাছে মানুষ। বাবা খুব গম্ভীর ধরনের মানুষ হওয়ায় বাবার সাথে তেমন কথা বলারও সাহস হয়নি। হঠাৎ একদিন বাবা কৃষ্ণকান্তকে ডেকে পড়ালেখার খোজ নেয়া শুরু করেন এবং শরীর চর্চা শেখান। হেমকান্ত যেন বাবাকে নতুন করে আবিস্কার করে। মা ছাড়া ছেলেরা অগোছালো হয়। কিন্তু হঠাৎ বাবার সাহচর্যে কৃষ্ণকান্ত যেন জীবনকে নতুন করে ভাবতে শেখে। অবশেষে কৃষ্ণকান্ত বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে, স্বদেশীদের দলে নাম লেখায়। "ধ্রুব চৌধুরি, সাবেক জমিদার কৃষ্ণকান্ত চৌধুরির ছোট ছেলে। স্বাধীন ভারতের খুব বড় মাপের একজন নেতার ছেলে তিনি। লোকমুখে তার বাবার নাম যশের কমতি নেই। একমাত্র ছেলে ধ্রুবই বাবার প্রতি উদাসীন। ধ্রুব এমনিতে শিক্ষিত,স্মার্ট, এবং সজ্জন লোক। কিন্তু বাবার প্রতি বৈরীতা থাকায় বাবার মান সম্মান নষ্ট করতে অনেক চেষ্টাই করে ধ্রুব। তার বাবার নাম যেখানে যেখানে থাকে সেখানে গিয়ে প্রকাশ্যে গালিগালাজ করে সুনাম ভঙ্গের চেষ্টা চালায় ধ্রুব । কৃষ্ণকান্ত ছেলেকে ঠিক করার ইচ্ছায় বিয়ে করান। কিন্তু স্ত্রীর দিকে ফিরেও তাকায় না ধ্রুব। বাবার প্রতি এক আজম্ম রাগ যেন মনের মধ্যে লালন করে যাচ্ছে সে। দেশের সমগ্র মানুষ যেখানে শ্রদ্ধা করে মহান নেতা, কৃষ্ণকান্ত চৌধুরিকে, সেখানে ছেলে হয়ে ধ্রুবের কিসের এত রাগ?? কি কারনে, সে বাবাকে বাবাকে বলে ডাকে না???? #পাঠ_প্রতিক্রিয়া:- বড় বইয়ের রিভিউ লেখা অনেক কঠিন তবুও চেষ্টা করেছি যতটুকু সম্ভব মূল ঘটনা ফুটিয়ে তোলার। বইটাতে প্রতিটা চরিত্রের সাথেই মেয়ের বর্ননা আছে কিন্ত গল্পের নায়কদের থেকে মেয়েদের একটা দুরত্ব বজায় ছিলো, হয়তো সেই সময়ের সামাজিক কারনগুলো শতভাগ ফুটিয়ে তোলার জন্যই লেখক তার সৃষ্টিকে এভাবে সাজিয়েছেন!!!! ধ্রুবর প্রতি একটা আলাদা টান তৈরি হয়েছিলো আমার। একটা মানুষের ভালোবাসা বা অভিমান থেকে কি পরিমান ঘৃণা জন্মাতে পারে তার স্পষ্ট চিত্র ধ্রুব চরিত্রে শতভাগ ফুটে উঠেছে। এছাড়াও এক প্রজন্মের সাথে আরেক প্রজন্মের যে কতটুকু দূরত্ব, সেটা শতভাগ স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠেছে।
Was this review helpful to you?
or
দূরবীন অসাধারণ একটি উপন্যাস। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে উপন্যাসটি। আশা করি সব রুচির পাঠকেরই ভালো লাগবে এই উপন্যাসটি।
Was this review helpful to you?
or
হেমকান্ত জমিদার। সামন্তশ্রেণীর যে রূপ ইতিহাসের পাতায় ছড়িয়ে আছে তা তার সাথে মেলে না। জমিদারীতে তার তেমন আগ্রহ নেই। প্রজাদের প্রতি সবিশেষ দয়া দেখানোই তার কাজ। প্রজারাও তাকে ভালবাসে। প্রজাদের ভালবাসা পেলেও তিনি তার ছেলেমেয়েদের স্বার্থের কাছে বড় অসহায় হয়ে পড়েন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তার গহনা লুটেপুটে নেওয়াতেই তার সন্তানরা ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তিনি জীবনের প্রতি বিরূপ হয়ে পড়েন। বুঝে নেন যে, এই পৃথিবীতে কেউ কারো নয়। সবাই নিজ নিজ স্বার্থে ব্যস্ত। তবু তাকে আজন্ম ভালবেসে যাওয়া রঙ্গময়ীর সেবা, মমতা, ভালবাসা বাঁচিয়ে রাখে জীবনের পথে। এই সুযোগে বলে রাখি, রঙ্গময়ী এক অসাধারণ চরিত্র, যার প্রতি পাঠক মাত্রেরই শ্রদ্ধা জন্মাতে বাধ্য। হেমকান্ত আরও একজনের জন্যে বাঁচতে চেয়েছিলেন, সেটা তার কনিষ্ঠ সন্তান কৃষ্ণকান্ত। শৈশবেই কৃষ্ণকান্ত মেধার স্বাক্ষর রাখেন। ধর্মবিশ্বাসে, লাঠিচালনায়, ধ্যানে তিনি বিজ্ঞ হয়ে উঠেন খুব অল্প বয়সেই। ইংরেজবিরোধী স্বদেশী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন তিনি। পিতার অপমানে একদিকে তার মাথায় যেমন খুন চেপে যায়, তেমনি ধীরস্থিরতা নেমে আসে দেশের প্রয়োজনে। কৌশলী হাতেই তিনি লড়াই করে চলেন স্বাধীনতার স্বপক্ষে। অল্প বয়সেই দেশব্যাপী পরিচিত হয়ে উঠেন তিনি তার যোগ্য নেতৃত্বের কারণে। দেশ স্বাধীন হলে তিনি মন্ত্রী হন। রাজনৈতিক কূটকৌশলও হয়তো শিখে নেন কিছুটা। স্বাধীনতার আগের কৃষ্ণকান্তকে পরের কৃষ্ণকান্তের সাথে মেলাতে পারেনা তার ছেলে ধ্রুব। মাতাল ধ্রুব নেশার জন্যে নেশা করেনা, নেশা করে মন্ত্রী বাবার ইমেজ নষ্ট করার জন্যে। কী কী করলে, বাবার অসম্মান হবে, সেটা নিয়েই ব্যস্ত থাকে সে। বাবার সাথে তার এক অদ্ভূত লড়াই। সে বিশ্বাস করে তার মা যে গাঁয়ে কেরোসিন ঢেলে আত্নহত্যা করেছিলেন, তার কারণ হলো তার বাবার অবহেলা। তাই সে বাবাকে ঘৃণা করে। মাতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে সে বাবাকে প্রতিনিয়ত অপমান করতে ব্যস্ত থাকে। সামন্ত রক্তে লাম্পট্য থাকাটা খুবই স্বাভাবিক কিন্তু হেমকান্তের বংশে কেউ নারী লোলুপ নয়। মদ্যপও নয়। ধ্রুব যে মদ খায়, সেটাও নেশা করে নয়। যার ফলে একদিন হঠাৎ করেই সে ছেড়ে দেয় মদ। অনেক অনুরোধেও তার বন্ধুরা আর তাকে সেটা স্পর্শও করাতে পারেনি। স্ত্রী রেমির প্রতি প্রচন্ড ভালবাসা থাকার পরেও শুধুমাত্র বাবার পছন্দের মেয়ে বলে তাকে অবজ্ঞা আর অবহেলায় প্রায় মৃত্যুমুখে ঠেলেই দিয়েছিল। রেমির সাথে তার ভালবাসা আর লুকোচুরি খেলা দেখতে দেখতে পাঠক বরং ধ্রুবকে করুণাই করতে থাকে। করুণাই হয়তো কিংবা ভালবাসা। উপন্যাসের প্রয়োজনেই ছোট ছোট ক্যারেক্টার এসেছে। ক্যারেক্টারগুলো যত ছোটই হোক পাঠকের মনে স্থান করে নিয়েছে বড় করে। যেমন বলা যায়, নোটন কিংবা ধারার কথা। কলগার্ল নোটন কিংবা উচ্ছৃঙ্খল ধারা অবশেষে পাঠকের কাছে ঘৃণার পরিবর্তে করুণায় পায়। শচীন, বিশাখা কিংবা জগা চরিত্রগুলোও নিজ নিজ ক্ষেত্রে উজ্জ্বল হয়ে থাকে গোটা উপন্যাস জুড়ে। দূরবীন যন্ত্রটা বেশ অদ্ভূত। এটি দিয়ে দূরের জিনিসকে শুধু কাছেই দেখায় না, উল্টো করে ধরলে কাছের জিনিসকেও দূরে দেখায়। অন্তর্নিহিত এই তত্ত্বের মতই উপন্যাসের চরিত্রগুলোও সমাজের মানুষের দূর এবং কাছের জীবনকে পাঠকের দৃষ্টির সামনে স্পষ্ট করে তোলে। সমাজ এবং জীবন দর্শন দারুণভাবে ফুটে উঠেছে উপন্যাস জুড়ে। দ্বিস্তর এই উপন্যাসে সেকাল ও একাল, অতীত এবং বর্তমান এক অনন্য কৌশলে একাকার। অতীতও কিভাবে বর্তমান হয়ে উঠে তা দেখানো শীর্ষেন্দুর পক্ষেই বোধ হয় সম্ভব। দারুণ এই উপন্যাসটি পাঠকমাত্রই প্রিয় হয়ে উঠতে বাধ্য।
Was this review helpful to you?
or
Amr life er best boier modhhe ekta
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_পাঠক_সমাগম_বুক_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_৪ মাস:আগস্ট সপ্তাহ:০২ পর্ব:০৪ বইয়ের নাম:দুরবীন লেখক:শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় প্রকাশনী:আনন্দ পৃস্ঠা:৫০৪। মূল্য:২০০/- "১৯২৯ সালের শীতকালের এক ভোরে হেমকান্তের হাত থেকে দড়ি সহ বালতি কুয়োর ভিতর পড়ে যায়। হেমকান্ত অসহায় ভাবে দাঁড়িয়ে শুনলেন জলে দড়ি ও বালতির পড়া ও ডুবে যাওয়ার শব্দ, আর এই আপাততুচ্ছ ঘটনায় হেমকান্ত আক্রান্ত হচ্ছেন মরন চিন্তায়। ----হেমকান্ত ছিলেন তিন প্রজন্মের এই কাহীনিতে প্রথম প্রজন্মের প্রতিভু এবং নায়ক। দ্বিতীয় প্রজন্ম এর নায়ক কৃষ্ঞকান্ত। তিনি ছিলেন হেমকান্তের বিপরীত মেরুতে। এই প্রজন্মে দেশভাগের পর তার অমুল পরিবর্তন । তৃতীয় ও শেষ প্রজন্মে নায়ক ধ্রুব তিনি এক বিদ্রোহী যুবা। ধ্রুব এর স্ত্রী রেমি, যার সাথে এক অদ্ভুত সম্পর্ক ধ্রুবর, কখনো ভালবাসা, কখনো উপেক্ষা, কখনো প্রবল বিরাগ। অথচ তবুও ভালবাসা অবিচল। এই তিন প্রজন্মের তিন নায়ক কে নিয়ে যথারিতী এই উপন্যাস যা শেষ হয়েছে ক্ষতবিক্ষত এক মর্মাহত কাহিনী দিয়ে। পাঠ প্রতিক্রিয়া :এই বইটির কাহিনী অনেক বড়। যখন বইটা আমি পড়তে বসি ভাবি হয়ত বা সাধারণ কোন উপন্যাস যার কারনে আমার মধ্য ছিল বিরক্তিকর। কিন্ত বইটির সার-সং ক্ষেপ আমাকে বইটির প্রতি আগ্রহ করে তুলেছে। এক অভাবিত উপন্যাস যা যে কারো মন ছুয়ে যাবে। দুরবীন যেমন দুর কে কাছে আর কাছ কে দুরে টানে এই বইটি তার প্রকাশ কে এমনি ভাবে তুলে ধরেছে। বইটির নাম করন : দুরবীন চিহ্নিত এক অবিস্মরণীয় রুপে। দুরবিন শুধু দুর কে কাছেই আনে না। উল্টোদিক থেকে কাছের জিনিস ও দুরে নিয়ে যায়। দুরবিন নাম করনে যেমন সুক্ষতা, রচনারীতিতে ও তেমন অভিনব। দিস্তর এই উপন্যাস সেকাল একাল অতীত ও বর্তমান এক অনন্য কৌশল একাকার। - তামান্না আক্তার সাথী
Was this review helpful to you?
or
বইটিতে মূলত: তিন প্রজন্মের কাহিনীর সংমিশ্রণ। উপন্যাসের শুরুতে প্রথম প্রজন্মের নায়ক হেমকান্ত। হেমকান্ত বিপত্নীক এবং ভীরু, দূর্বল মনের একজন মানুষ। হেমকান্ত এবং পুরুতকন্যা রঙ্গময়ীর গোপন প্রেম কাহিনী এবং আরো কিছু পারিবারিক কাহিনী নিয়েই উপন্যাসের প্রথম পর্যায়। দ্বিতীয় প্রজন্মের নায়ক কৃষ্ণকান্ত। পিতা হেমকান্তর সম্পূর্ণ বিপরীত এক চরিত্র কৃষ্ণকান্ত। স্বদেশী আন্দোলন, ব্রক্ষ্মচর্য গ্রহণ- এসব নিয়েই উপন্যাসের দ্বিতীয় পর্যায়। তৃতীয় প্রজন্মের নায়ক ধ্রুব। দিকভ্রান্ত, উদ্ধত, বেপরোয়া এক যুবক। তার স্ত্রী রেমি। যার সাথে অদ্ভুত এক সম্পর্ক ধ্রুবর। কখনো ভালবাসা, কখনো অবহেলা, কখনোবা তীব্র আঘাতের। কিন্তু শত অবহেলা সহ্য করেই রেমি ভালবাসে ধ্রুবকে। পিতা কৃষ্ণকান্তের সাথে এক বিরূপ মনোভাব ধ্রুবর। সে তার পিতার মাঝে খুজেঁ পায় না সেই ব্রক্ষ্মচারী আর দেশের জন্য উৎসর্গ করা মন। আর ধ্রুবর এই না পাওয়া ব্যর্থতা দিয়েই শেষ হয় কাহিনী।
Was this review helpful to you?
or
শুধু দূরকেই কাছে আনে না, উল্টো করে ধরলে কাছের জিনিসও দূরে দেখায় দূরবীন। "দূরবীন" উপন্যাসের নামকরণে যেমন সূক্ষ্মতা, রচনারীতিতেও তেমনই অভিনবত্ব এনেছেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। দ্বিস্তর এই উপন্যাস সেকাল ও একাল,অতীত ও বর্তমান এক অনন্য কৌশলে একাকার।
Was this review helpful to you?
or
বাংলা সাহিত্যের সকল কালের একটি অন্যতম সেরা বই
Was this review helpful to you?
or
"দূরবীন" শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এর অন্যতম মহৎ সৃষ্টি।তিন প্রজন্মের এই কাহিনীতে প্রথম প্রজন্মের জমিদার হেমকান্ত।উপন্যাসের সূচনায় দেখা যায়,হেমকান্তের হাত থেকে কুয়োর বালতি জলে পড়ে গেছে,আর এই আপাততুচ্ছ ঘটনায় হেমকান্ত আক্রান্ত হচ্ছেন মৃত্যুচিন্তায়।বিপত্নীক হেমকান্ত ও রঙ্গময়ী নামের প্রবল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এক পুরোহিতকন্যার গোপন প্রণয়কাহিনী ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য পারিবারিক কাহিনী নিয়ে এ উপন্যাসের প্রথম পর্যায়।দ্বিতীয় প্রজন্মের নায়ক কৃষ্ণকান্তকে দাঁড় করিয়েছে পিতা হেমকান্তের বিপরীত মেরুতে।স্বদেশী আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ কৃষ্ণকান্তের ব্রক্ষচর্যগ্রহণ ও দেশভাগের পর তাঁর আমূল পরিবর্তন -এই নিয়ে এ উপন্যাসের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাহিনী।তৃতীয় ও শেষ প্রজন্মের নায়ক ধ্রুব,বিশ শতকের উপান্তপর্বে এক দিগভ্রষ্ট,উদ্ধত বিদ্রোহী যুবা।ধ্রুবর স্ত্রী রেমি,যার সঙ্গে এক অদ্ভুত সম্পর্ক তার।কখনও ভালবাসা,কখনও উপেক্ষা,কখনও বা প্রবল বিরাগ।অথচ রেমির ভালবাসা শত আঘাতেও অবিচল।একদিকে রেমির সঙ্গে সম্পর্ক অন্যদিকে পিতা কৃষ্ণকান্তের মধ্যে সেই ব্রক্ষচারী ও স্বদেশের জন্য উৎসর্গীকৃত প্রাণসত্তাটিকে খুঁজে না পাওয়ার ব্যর্থতায় ক্ষতবিক্ষত ধ্রুবর আশ্চর্য কাহিনী নিয়ে এ উপন্যাসের শেষ পর্ব। এটি আমার এ পর্যন্ত পড়া সবথেকে ভাল লাগার উপন্যাগুলোর মধ্যে একটি।বাস্তব জীবনের অনেক অপ্রিয় সত্যকে লেখক এখানে তুলে ধরেছেন।পিতৃস্নেহ কি জিনিস তা এ উপন্যাস পড়লে বুঝা যায়।উপন্যাসটিতে পরকীয়ার একটা ব্যাপারও এসেছে।কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটাকে একটু অ্যাডাল্ট উপন্যাসও বলা যায়। এই উপন্যাসের অনেক কথাই মনে গেঁথে গেছে।কোন জায়গাতেই বোরিং লাগেনি।দুইটা পর্বকেই শীর্ষেন্দু খুব চমৎকারভাবে সাজিয়েছেন।এক কথায় অসাধারণ একটা উপন্যাস.....!!
Was this review helpful to you?
or
শীর্ষেন্দুর লেখাতে সময় হচ্ছে মুখ্য বিষয়। তাঁর এই অসাধারণ কীর্তি ‘দূরবীন’ এ লেখক উনিশ শতকের ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং প্রজন্মগত ব্যাবধান(জেনারেশন গ্যাপ) খুবসাবলীল ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে উপন্যাস টা । উপন্যাসটা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মূলত হেমকান্ত এবং ধ্রুবর দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে। কিন্তু আসলে এদের দুজনের কেউ ই এই উপন্যাসের মূল নায়ক নন।আসল নায়ক হচ্ছেন কৃষ্ণকান্ত- ধ্রুবর বাবা । এভাবেই তিন পুরুষের চমৎকার উপাখ্যান বর্ণিত হয়েছে । উপন্যাসটা দুটি অংশে বিভক্ত, আর দুই অংশের বর্ণনাই লেখক চমৎকার ভাবে লিখে গিয়েছেন। একশোর উপরে অধ্যায় উপন্যাসটায়। কিন্তু কোথাও খারাপ লাগে নি কিংবা পড়তে পড়তে একঘেয়েমি এসে যায় নি । বিজোড় অধ্যায় গুলো(১,৩,৫.........) প্রথম কাহিনীর অন্তর্গত এবং জোড় অধ্যায় গুলো দ্বিতীয় কাহিনীর অন্তর্গত। কেউ যদি প্রথম অংশ গুল(১,৩,৫...) পড়ে শেষ করে, তবে দ্বিতীয় অংশে সে প্রথম অংশের পরথেকে ধারাবাহিক বর্ণনা পাবে!!!! আর গল্পের প্রয়োজনেই এখানে রেমি এবং ধ্রুবর যে মধ্যে যে ভালোবাসার টানাপড়েনের চিত্র আকা হয়েছে তার মধ্যেও অনেক সময়আবেগে ডুবে গিয়েছি। কখনো মনে হয়েছে যে রেমি ই ঠিক আবার কখনও মনে হয়েছে যে ধ্রুবই ঠিক। গল্পের প্রয়োজনে অনেক চরিত্রেরই আগমন ঘটেছে যার প্রত্যেকটিই উপোভোগ্য। এছাড়াও উপন্যাসটিতে ইংরেজদের হাত থেকে ভারতের স্বাধীনতার চিত্র খুব বড় ভাবে না হলেও সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। স্বাধীন হওয়ার আগের ও পরে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার একটা চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে। প্রথম অংশের ঘটনাস্থল আমাদের বাংলাদেশ এই এবং দ্বিতীয় অংশের ঘটনাস্থল পশ্চিমবঙ্গ।প্রথম অংশটুকুতে কৃষ্ণকান্তের সংগ্রাম এবং সাফল্য এবং দ্বিতীয় অংশে এর পরিণতি এবং কৃষ্ণকান্ত ও ধ্রুব এর মধ্যে ব্যাবধান তুলে ধরা হয়েছে। সবার জন্যই অবশ্য পাঠ্য একটা বই। না পড়লে পড়তে পারেন। সব রুচির পাঠক এর ই ভালো লাগবে আশা করি