User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
শীর্ষেন্দুর কোনো বই পড়ি নাই এর আগে। যখন প্রথম তার "জাল" বইটাকে হাতে নিলাম - মনে হচ্ছিলো - আমি সদ্য সতের কোনো যুবতীর হাতটা ধরলাম। এতো নরম এতো পেলব আর এতো মসৃন হাতটা - বারবার পিছলে যাচ্ছে - আবার সাবধানে আলতো করে ধরতেছি।হাতের ফাকে হাত গলে গলে পড়ে যাচ্ছে। টের পাচ্ছি উষ্ণতা বইটা কি জেদের? একটা কুকুর - বিশাল দশাসই এনসেশিয়ান কুকুর - দু বেলা মাংসের ছাট গম আর ভিটামিন মিশানো খাওয়ার খাওয়া কুকুর্।এরপর যখন সুবীর তাকে বললো - একুরিয়ামের এই মরা মাছটা তোমাকে খেতে হবে। না খেলে অন্য কিছু খাইতে দিবো না।কুকুরটা খায় না।তিন দিন যায়। পাচ দিন যায় - কুকুরটা খায় না।ধীরে ধীরে ভাংতেছে কুকুরটা। কিন্তুক মচকাচ্ছে না।এক আভিজাত্য আর দম্ভ নিয়ে তাকিয়ে থাকে - ঘোষণা দেয় - আমি মরা মাছ খাবো না সুবীর জানে - কুকুরটাকে মচকাতে হবে। হারতে হবে। নিশ্চয়ই হবে। একদিন হবে - জাল পেতে বসে আছে সুবীর এক বাঙ্গালী।সেও জেদ করে আছে - তার ষোলোআনা বাঙ্গালী বাড়িটা সে রিয়েল স্টেট কোম্পানির কাছে দিবে না।কোম্পানির লোকেরা অনেক টাকার হুমকি থেকে শুরু করে জীবন নাশের হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে তাকে তবুও অনঢ় সেই বাঙ্গালী। বলে - কোলকাতায় সব আছে এখন - জাস্ট বাঙ্গালী নাই।বাঙ্গালীরা নিজেদের বিক্রি করে দিচ্ছে অন্যদের কাছে। তিনি বিক্রি হবেন না। যতোটাকাই দেওয়া হোক - তিনি বিক্রি হবেন না এবারও জাল পাতলো সুবীর্। সেই বাঙ্গালীকে মচকানোর জাল আরও আছে মিলি - বুনি - যজ্ঞসেনী। যজ্ঞসেনী প্রথমে আসে সবুজ হয়ে। পরেরবার নীল হয়ে। তার চোখ মুখে শাড়ি লিপিস্টিক সব নীল। এবার আসে সে সুইসাইড করতে।ভোর হবে যখন - প্রকৃতি থেকে শুরু করে মানব সমাজ আস্তে আস্তে জেগে উঠবে - ঠিক সেই সময়ে যজ্ঞসেনী আস্তে আস্তে করে ঘুমিয়ে যাবেন। চির ঘুম।এমনটাই প্লান তার জাল - জাল পাতার কাহিনী। সুবীর জাল পাতে। যদিও সে নিজেও জালে জড়িয়ে - সেটা হলো ভাগ্যের জাল শীর্ষেন্দুর সাথে প্রথম সাক্ষাতে আমি মুগ্ধ।তার চার খন্ড উপন্যাস সমগ্র আছে আমার কাছে - সব মিলে তিন হাজারের বেশী পৃষ্টা। এতো কোমল এতো মায়াময় লেখনী আগে দেখি নাই বুঝি।এবার দেখবো। ভালো লাগতেছে ভেবেই। ভালো লাগতেছে
Was this review helpful to you?
or
Very good story. Thanks to Rokomary.
Was this review helpful to you?
or
আমার গল্পটা শুনবেন? আমি কানু লাহিড়ী। না না, অন্যান্য লাহিড়ীদের মতন ধনী বা যশস্বী লাহিড়ী নই আমি। আমি নিতান্তই এলেবেলে টাইপ লাহিড়ী। আচ্ছা একটু দাঁড়ান, উপরতলায় ফোন বাজছে। অবশ্য ফোন, এই বাড়ি, ডিভান, সোফা অথবা এই বাড়ির অ্যালশেসিয়ান জিম কোনোটাই আমার নয়। যশস্বী লাহিড়ীরা যদি আমার পেশার কথা শোনেন তবে আয়নায়ও নিজেদের দেখলে লজ্জা পাবেন। পাড়ার এক মাস্তানকে এক তরুণী পিটিয়ে অজ্ঞান করে ফেলে রেখে গেছিল। ব্যাপারটা আমার বাড়ির সামনে হওয়ায় আগাগোড়াই দেখেছিলাম আমি। ওকে তুলে বাড়ি এনে জ্ঞান ফেরালাম। ঢপ দিয়ে বললাম মেয়েটা আমার মাসতুতো বোন। ঘটনা পাঁচ কান হলে মাস্তান সমাজে ট্যাপার ঠাই হবেনা। ওই ভয়েই কিনা জানিনা ট্যাপা আমাকে ওদের দলে টেনে নিল, বেশ ভক্তিও করতো। একদিন আমাদের ঠেক এ দাঁড়িয়ে গল্পাচ্ছিলাম, দেখি হরি বোল জপতে জপতে একটা মড়া নিয়ে যাচ্ছে পোড়ানোর জন্য। হঠাৎ এক মহিলা দৌঁড়ে এসে বলল এটা মড়া নয়, খুন, মড়াটাকে আটকাও। আর পায় কে ট্যাপাকে, সাথে সাথে মড়া আটকানো হলো। পুলিশ এলো, পোস্ট মর্টেমের জন্য লাশ নিয়ে গেল। লাশের সাথে ডেথ সার্টিফিকেট যেটা ছিল সেটা গদাই ডাক্তারের সই করা। ট্যাপাকে আর পায় কে, এতোদিন ধরে গুন্ডামি করলেও গুন্ডা সমাজে তেমন নাম করতে পারেনি। করবে কী করে, ঐ চুরি ছিনতাই ছাড়া কোনোওকালে কিছু করেইনি। এবার বেশ একটা সুযোগ পাওয়া গেল। গদাই ডাক্তারের উপর হামলা করতে হবে, তবেই মানুষ ওকে দাম দিবে, তারপর সুযোগ বুঝে একটা মার্ডার। ৬৪ টাকা ভিজিট নেয়া একটা ডাক্তারকে হুট করে কিছু করা যায় না, আগে একটু আল্টিমেটাম দিতে হয়। ট্যাপা কী বুঝে আমাকেই পাঠালো। আমিও গিয়ে নিজেরটা জাহির করলাম। বললাম আমার নাম কানু লাহিড়ী, পাড়ায় সবাই আমাকে চেনে, আমার একটা দল আছে, ওরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছে আমার ইশারার জন্যে। আপনি একটা ভুল কাজ করেছেন সেটার জন্যেই আমার আসা। উনি আমাকে বোঝালেন যে ঐ মহিলার মৃত্যুটা স্বাভাবিক মৃত্যু, পুলিশও কিছু করতে পারবেনা। তিনি আমাকে একটা অফার দিলেন, তার মেয়েকে অঙ্ক পড়াতে হবে। বিনিময়ে বেশ ভালো টাকা দিবেন। আর ছোটখাটো এটা সেটা কাজের জন্য আলাদা খরচ। আমি বুঝিয়ে শুনিয়ে ট্যাপাদের ফেরত পাঠালাম। তারপর থেকে কী হলো জানিনা, মাস্তান মহলে আমার একটা পরিচিতি ছড়িয়ে গেল। অথচ আমি একদিনও মাস্তানিটাই ভালো করে করলাম না! খবরটা আমার বাল্যবন্ধু পুপুর কানেও গেছে। ওরা ইদানিং কন্সট্রাকশন বিজনেস করে ভালো টাকা পয়সার মালিক হয়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় জমি কিনে ফ্ল্যাট বানিয়ে বিক্রি করছে। সেন্ট্রাল রোডের ধারে একটা বেশ খালি জমি পাওয়া গেছে, ওখানে একটা বড় শপিং মল করা যাবে। সবকিছু রেডি। সিমেন্টও কেনা হয়ে গেছে, গুডাওনে পচছে। লাফড়াটা হলো এক বাঙালকে নিয়ে। কিছুতেই নিজের জমিটুকু ছাড়বেন না। অথচ ওর জমিটাই একদম মাঝখানে, কাজও শুরু করা যাচ্ছেনা। গেলেই কীসব বাঙাল আর বাঙালীর গল্প শোনান। সবাই নাকি কলকাতা থেকে বাঙলাটাকে সরিয়ে দিচ্ছে। বেচে দিচ্ছে অবাঙালীদের কাছে। তিনি কিছুতেই বাঙলা বেচতে রাজী নন। পুপু আমাকে কাজটা করে দিতে বলল। লাগলে লাশ ফেলে দিতেও বলল, যা খরচ লাগে করবে। আমি ভাবলাম, টাকা দিয়েও যদি সতীশ ঘোষকে কেনা না যায় তবে অন্য কিছু দিয়ে কিনতে হবে। খুঁজে বের করতে হবে তার দুর্বলতা। জাল বিছিয়ে আনতে হবে তার ওপরে। জালের ফাঁদে পড়ে ঠিকই জমিটা দিতে রাজি হবেন। কানু লাহিড়ীর বয়ানে যে গল্পটা শুনলেন সেটা শীর্ষেন্দুর জাল বইয়ের। বেশ অনেক দিন পর শীর্ষেন্দু পড়লাম। ছোট্ট বই, অথচ কাহিনীটা সুন্দর। বেশি আহামরি কিছু নয় তবে রেখে উঠতেও পারবেন না। আমিও পারিনি। এক বসায় শেষ করে তবেই উঠেছি। বেশ হাল্কা ঢঙে লেখা, অবশ্য শীর্ষেন্দুর যে'কটা বই এখন পর্যন্ত পড়েছি সবই ওরকম হাল্কা ঢঙেই লেখা ছিল। এই ব্যাপারটার জন্যই শীর্ষেন্দু পড়ে মজা পাই, বিরক্তি লাগেনা একটানা পড়তেও। একদম প্রথম পাতা থেকেই কিছু হাস্যরস দিয়ে শুরু করায় শেষ খুব আরাম হয়েছে পড়তে। মাত্র ১২০ পৃষ্ঠার বই হওয়াতে পড়তে সময় লেগেছে মাত্র দেড় ঘন্টা। রকমারিতে অর্জিনাল ইন্ডিয়ান প্রিন্টের বইটা পাবেন মাত্র ২২৫ টাকায়। কাহিনী অনুযায়ী প্রচ্ছদটাও খাপে খাপ। হ্যাপি রিডিং।