User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
“রহস্যময় নক্ষত্রের দেহ” নামটাই কত নান্দনিক। এটি একটি কাব্য গ্রন্থ।মেলা দিন আগেই পড়া শেষ। একটা রিভিউ লেখার ইচ্ছে ছিলো বইটা নিয়ে , তবে সময় পাচ্ছিলাম না।শেষ পর্যন্ত এটাকে রিভিউ বলা যায় কি না সেটা আপনার বিবেচনা। প্রথমেই বলে রাখি কবিতা বলতে যারা শুধু ভাবেন যে এখানে অন্তমিল থাকবে, প্রেমের ফাউল আলাপ থাকবে তারা দয়া করে এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসুন, না পারলে বইটাকে স্কিপ করুন। এটা আপনার জন্য নয়। কিছু ভালো জিনিস একবার দুইবার আলোচনা করলেই হয়, আবার কিছু ভালো জিনিস বারবার আলোচনা করলেও কম মনে হয়। বইটার উৎসর্গ টাও এরকম। আমি শতভাগ নিশ্চিত যারা বইটা পড়েছেন , এরকম কেউ -ই হয়তো নেই যারা উৎসর্গ টা নিয়ে আলোচনা করেননি। উৎসর্গ মাকে যার পায়ের ধুলোর মধ্যে আছড়ে পড়েছে পৃথিবীর সমস্ত রহস্য। বাবাকে, প্রার্থনা করি - বাবার শ্বাসগুলো যেন প্রতিদিন আরও দীর্ঘ হয়, তার ক্লান্ত চোখের তারায় জোনাকির মত আলো ফিরে আসে। বাবা-মা, তোমাদের প্রতি প্রতিটি শব্দ ঋণের মতো, এই বই তোমাদের! ৪ ফর্মার কবিতার বইটাতে মোট ৫৬ টি কবিতা রয়েছে। প্রথাগত কবিতার চেয়ে একেবারেই আলাদা ধাঁচের কবিতা রয়েছে বইটায়। কবিতার পঙক্তি গুলোতে কখনো প্রেম-রাজনীতি,কখনো প্রত্যাশা-দ্রোহ-মিছিল, কখনো শহুরে আলাপ-সমাজ-দেশ, কখনো হাহাকার তো আবার কখনো অধিকার ফুটে উঠেছে। লেখকের লেখায় যে গভীরতা রয়েছে এটা উৎসর্গ টা পড়লে সহজেই অনুমেয়। যারা সামান্য পড়েই বুঝতে পারেন যে বইটা ভালো না খারাপ আপনাদের জন্য উৎসর্গটা যথেষ্ট হবে বলে মনে করি। বই থেকে আরো অনবদ্য কিছু লাইন — ?“নারী হয়ে উঠে শাস্ত্রের ফুটনোট, দেহ তার দাগ-তোলা পাণ্ডুলিপি, যেখানে পুরুষ কেবল নিজের মহিমায় লিখতে শিখেছে” ?“যদি জানতে চাও স্বাধীনতার মানে, আমি তোমার সামনে রেখে দেব এক ধুলোজমা থালা, যেখানে আতিথ্যের নামে লেখা আছে। শুধু না পাওয়ার গল্প” ?“মাঝেমধ্যে মনে হয় এই ব্যর্থ হৃদয়টা একটিবার বিক্রি করি, দু'মুঠো আশা কিনি- কিন্তু দোকানদার বলে দুঃখের বাজারে মূল্য নেই কিছুই” ?“মিছিল চলতে থাকে– সামনের দিকে, অনন্ত বিদায়ের পথে, যেখানে কন্ঠরোধী অন্ধকার আঁকড়ে ধরে প্রতিটি কবিতার পৃষ্ঠা” ?“তুমি পাশে থাকলে, প্রেম এক ফসল হয়ে উঠত যেখানে কৃষকের চোখে ঝলসে উঠত অশ্রু নয়, সন্তুষ্টি” ?“রাত্রি আর নদীর নাম রেখেছি একই, তারা দু'জনেই ভুলে যায় কীভাবে ফিরতে হয় নিজস্ব মাটির ভেতর” ?“আমাদের প্রতিটি স্বপ্ন ছিল মুদ্রার উল্টো পিঠে নকশা করা শূন্যতার প্রকোষ্ঠ। যেখানে প্রতিধ্বনি জাগে না, শুধু ধ্বংসাবশেষের স্তূপে জমে ওঠে বিস্মৃত সুর” ?“কলঙ্ক তো কেবল শরীরে নয়, কলঙ্ক থাকে চোখের গভীরতায়” ?“পাপ আর না-পাওয়ার হিসেব কষতে গেলে কাগজ ফুরিয়ে যাবে, তবু যোগফল মেলাতে পারব না” এখানে অতি অল্প দিয়েছি , বইয়ে এরকম আরো বহু পঙক্তি আছে। যেগুলো লিখলে এবং প্রশংসা করলে লেখাটা অনেক বড় হয়ে যাবে। যতটা পেরেছি গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করেছি।বইটা পড়ে আমি হতাশ হইনি। লেখকের বয়সের হিসেবে যথেষ্ট ফিডব্যাক পেয়েছি কবি থেকে। বইটি উৎকৃষ্ট। তবে কয়েক জায়গায় শব্দ ব্যবহারে আরো সচেতন হতে হবে / উন্নত শব্দ ব্যবহার করতে হবে। কিছু দুর্বল শব্দের ব্যবহারে ফ্লো কমে গিয়েছে কবিতায়। ভালোর শেষ নেই , তবে প্রথম বই হিসেবে এরচে ভালো আর হয় না।সাঈম ভাইয়ের কবিতাগুলো আজীবন না হলেও অনেকদিন মনে রাখার মতো উপাদানে সমৃদ্ধ। কবিতার প্রেক্ষাপটগুলো যেমন প্রাসঙ্গিক তেমনই বিস্ময়করও বটে। ছোট্ট আলাপন : সাঈম ভাই তার কবিতায় শহরের বর্ণনা চমৎকার ভাবে দেয়। অথবা বলা যেতে পারে যে শহুরে জীবন নিয়ে তার লেখা কবিতাগুলো খুব নান্দনিক হয়। কবি চাইলে একজন নাগরিক কবি হতে পারবে। এবং আমি আশা রাখবো অদূর ভবিষ্যতে হয়তো সাঈম্ভাই নাগরিক জীবন, শহুরে জীবন নিয়েই স্বতন্ত্র /আলাদা একটা কাব্য গ্রন্থ প্রকাশ করবে। পরবর্তী বইয়ের জন্য নিরন্তর শুভকামনা রইলো। রেটিং ৮.১/