User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
"মিশর রহস্য" কাকাবাবু সিরিজের এ গল্প নিয়ে তৈরী হয়েছিলো একটি সিনেমা ও। কাকাবাবু চরিত্রে ছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং সন্তু চরিত্রে আরিয়ান ভৌমিক। হানি আলকাদি এ গল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। সব বলে দিলে তো হচ্ছেনা, বই,গল্প,সিনেমা তিনটেই ভালো লেগেছিলো। বাকিটা আপনারা পড়ে বলবেন?।
Was this review helpful to you?
or
বই:- মিশর রহস্য লেখক:- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রকাশনী:- আনন্দ পাবলিশার্স (ভারত) ধরন:- রহস্য, গোয়েন্দা ও ভৌতিক রকমারি মূল্য:- ২২৫ টাকা। "কাকাবাবু" সবারই খুব পছন্দের বলতে অন্তত বইপোকাদের জন্য একটি অন্যতম ভালো লাগার চরিত্র। কাকাবাবুর পুরো নাম রাজা রায় চৌধুরী। তিনি নিজের ইচ্ছায় কিছু সমস্যা হাতে নিয়ে সেগুলো সমাধান করার চেষ্টা করে। তার সমস্যা গুলোর মধ্যে দেখা যায় বেশির ভাগ ঘটনা ইতিহাসের সাথে জড়িত। আর এসব অভিযান গুলো তে সবসময় তার সাথী হিসেবে থাকে একমাত্র ভাতিজা সন্তু। বলে রাখা ভালো,কাকাবাবুর কিন্তু সবথেকে দুর্বল দিক ও হচ্ছে সন্তু কারণ যে কাকাবাবু কাউকে দেখে ভয় পায়না তাকে খুব সহজেই গ্রাস করে ফেলা যায় সন্তুর কোন ক্ষতির কথা বললে। কাকাবাবুর সব দুঃসাহসিক অভিযান গুলো যদি তালিকা করা হয় তাহলে "মিশর রহস্য" এর মধ্যে অন্যতম। বরাবরের মতোই এবারও সন্তু দেখলো তাদের বাড়িতে প্রায়ই একটি লোক আসছে, লোকটাকে সে কখনও দেখেনি কিন্তু কাকাবাবুর সাথে কথা বলে চলে যায়, প্রথম দিকে বুঝতে না পারলেও পরে যখন কাকাবাবু সন্তুকে মিশরে যাওয়ার জন্য অফার করে তখন সন্তু লোকটার আসার কারন বুঝত পারে। পিরামিড গুলোতে যে সকল কফিন রয়েছে সেগুলোর সম্পর্কিত ঘটনা বের করতে গিয়ে আশেপাশের অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সামনে চলে আসে। তারপর কি হয়?? সন্তু কি কাকাবাবুর সাথে সেখান থেকে ফিরতে পারে?? নাকি ইজিপ্ট এর দেশেই সারাজীবন এর জন্য থেকে যেতে হয়?? আর যিনি আসতো কাকাবাবুর কাছে এনারই পরিচয় কি ছিলো?? সব জানতে পড়তে হবে এই বইটি।
Was this review helpful to you?
or
বই : মিশর রহস্য (কাকাবাবু সিরিজ) লেখক : সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। মূল্য : ২৮৫ টাকা। (রকমারি) পৃষ্ঠা : ১৪৪। প্রকাশনী : আনন্দ পাবলিশার্স (ভারত) সন্তু ভোর বেলা তার ছোট দলটা নিয়ে, মানে তার কুকুর রকুকু, বন্ধু কুনাল আআর বাপিকে নিয়ে বালিগঞ্জে যায় সাইকেল চালানো শিখতে। কিন্তু তিন দিনের মাথায় সন্তু সাইকেল থেকে পড়ে এমন ব্যথা পেলো যে, তার সাইকেল শেখার ইচ্ছেটাই মাটি হয়ে গেল। কিন্তু ওর ব্যথা পাবার ব্যাপারটা কাকাবাবু ছাড়া বাড়ির আর কেউ কিচ্ছুটি জানে না। আর কাকাবাবুও কি অদ্ভুত লোক! বাবা এমনি মাকেও জানায়নি! অন্য কোনো বাড়ির ছেলে হলে এত্তক্ষণে ডাক্তার হাসপাতালে ছুটোছুটি বেধেই যেতো এতে কোনো সন্দেহ নেই । কাকাবাবুর তাড়ায় আর চিকিৎসায় মচকানো পা সেরে উঠতেই সন্তু সাইকেল চালানো শিখে নিল। শুধু ভেবে যে, নিশ্চয় এইবার অভিযানে সাইকেল চালানো জানতে হবে, নইলে কি আর কাকাবাবু এত জোর দিয়ে বলত! আর কয়েকদিন ধরে কাকাবাবুর কাছে এক লোক এসে বসে থাকে। আর বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎ কাকাবাবু একাই দিল্লী চলে গেল! এইবার নাকি তেমন কোনো কাজ না, তাই সন্তুর না হলেও চলবে। ঐদিকে স্নিগ্ধাদির বাড়ি থেকে এসে সন্তুর মন ভীষণ খারাপ। রিনি তাকে খুব করে অপমান করলো যে। আর তারা সিদ্ধার্থদার সাথে ইজিপ্ট যাবে সে নিয়েও কত কাহিনী শুনিয়ে দিল তাকে! সন্তুর খুব মন খারাপ হলো। সে ঠিক করলো একাই সে খবরেরকাগজের ছাপানো পুকুরে ডুবে দুই ছেলে উধাও হয়ে যাবার রহস্যটা সমাধান করে ফেলবে। কিন্তু সন্তুর কপালটাই খারাপ! সে ওখানে গিয়ে পা পিছলে পুকুরে পড়ে যাওয়ায় যা বিছরি একখানা ব্যাপার ঘটল না! শেষ পর্যন্ত থানা পুলিশ পর্যন্ত ঘুরে বাড়ি ফিরতে হলো তাকে! এই ব্যাপারখানা যদি রিনি বা কাকাবাবু কেউ জানে! তবে আর মান-ইজ্জৎ কিচ্ছুটি থাকবে না! ভেজা কাপড়ে বাড়ি ফিরে দেখে বাবা এক লোকের সাথে বসে গল্প করছে। ওর সারা পেয়েই বাবা সন্তু সন্তু বলে চিৎকার করতে পালগো। সন্তু এসে জানতে পারলো কাকাবাবু দিল্লীতে জ্বরে পড়েছে তাই সন্তুকে ডেকে পাঠিয়েছে। সন্তুর চোখ ঝলঝল করে উঠলো। দিল্লী পৌঁছেও সন্তু কাকাবাবুর দেখা পেল না। নরেন্দ্র ভার্মা কাকাবাবু বন্ধুর কাছে নিয়ে যাওয়া হলে সন্তু জানতে পারলো ওর কাকাবাবুর উপর হামলা চালানো হয়েছিল। ভেতরে ভেতরে খুব উত্তেজিত হয়ে পড়লেও সন্তু চুপ মেরে রইল। কাকাবাবু সাথে যখন দেখা হয়, দেখা গেল হাত আর বুকে ইয়া ব্যান্ডেজ নিয়ে কাকাবাবু মিটিমিটি হাসছে! ঘটনা এমন দিকে গড়ালো যে, কাকাবাবু সুস্থ হতে না হতে ওরা উড়ে চললো মিশর! ইজিপ্ট! নীলনদের দেশে, পিরামিডের দেশে! যেখানে যাবে বলে রিনি সন্তুকে খুব করে অপমান করেছিল! কোন উদ্দেশ্য ওরা ইজিপ্ট যাচ্ছে? কি রহস্য এই ভ্রমণের? জানতে হলে প্রিয় পাঠক আপনাকেও সন্তু আর কাকাবাবুর সাথে উড়াল দিতে হবে চিররহস্য আবৃত্ত পিরামীদের দেশ মিশরে। #পাঠ_প্রতিক্রিয়া আহা চির চেনা সেই টানটান উত্তেজনা আর দুর্দান্ত এডভেঞ্চারে ভরপুর কাকাবাবুর প্রতিটা গল্প। এ গল্পটাও তার ব্যতিক্রম ছিল না। সন্তুর দুরন্তপনা আর দুঃসাহসিকতা, অপর দিকে কাকাবাবুর দৃঢ় চেতা ও আত্মবিশ্বাস দুয়ে মিলে পাঠককে নিয়ে যাবে অপূর্ব এক এডভেঞ্চারে। সন্তু চোখে দেখা হয়ে যাবে অদেখা সব শহর নগর আর নয়নাভিরাম প্রকৃতির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। বইতে আপনি লেখকের খুঁত খুঁজে বেড়াবেন? তবে শুধু বেড়ানোর সাড়। মন্ত্রমুগ্ধা হয়ে পাঠ করা ছাড়া আপনার কোনো উপায় থাকবে না। যেমন, হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে এই পরিস্থিতিতেও আমি পড়েছি। কিশোর উপযোগী উপন্যাস হলেও, পাঠে আমার বিন্দুমাত্র অনীহা আসেনি। আশা করবো পাঠক আপনাদেরকেও সন্তু আর কাকাবাবু হতাশ করবে না। প্রিয় লাইন : কাকাবাবু বললেন, "ইউ আর ওয়েলকাম। আমার কাটা মুণ্ডু কোনোও কথা বলবে না।"
Was this review helpful to you?
or
#রবিজ_রকমারি_বই_রিভিউ . থ্রিলার জগতে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের শক্তিশালী রচনা কাকাবাবু। কাকাবাবু বাংলা ডিটেকটিভ সিরিজগুলোর মধ্য অন্যতম। কাকাবাবু সিরিজের মূল দুই চরিত্র কাকাবাবু ও সন্তু। কাকাবাবুর আসল নাম রাজা চৌধুরী। এটা কাকাবাবু সিরিজের প্রথম দিকের বই। . মুফতি মুহম্মদ একজন খুবই ধার্মিক ব্যক্তি। তার অনেক শিষ্য আছে। বয়স তার প্রায় ৯০এর কৌঠায়। তারপরেও শরীর বেশ শক্ত সামর্থ্য। কিন্তু গত একবছর থেকে তার কথা বলা বন্ধ হয়ে গেছে। এই এক বছরে একটি শব্দও উচ্চারণ করতে পারেননি। প্রায় সময়ই তিনি ঘুম থেকে উঠে ঘুমের ঘোরে ছবি আঁকেন। সবাই চেষ্টা করেও কেউই এই চিত্রগুলোর অর্থ বের করতে পারেনি। অনেকে ধারণা এগুলো কোন গুপ্তধনের সংকেত। তাই এই অর্থগুলো বের করে দেবার জন্য কাকাবাবুর কাছে লম্বা ফর্সামতো একটা লোক আসেন। লোকটি প্রথমে মুফতির আত্মীয় বলে পরিচয় দেন, অবশ্য পরে জানা যায় তিনি মুফতির শিষ্য। তিনি কাকাবাবু কে দিল্লী নিয়ে যেতে চান, কারণ কাকাবাবুর হায়ারোগ্লিফিক বিষয়ে ধারণা আছে। কাকাবাবু তাকে অর্থগুলো বলার আগে মুফতির সাথে দেখা করতে চান। মুফতি কাকাবাবুকে দেখে বেশ খুশি হন। কয়েকটা ছবি ছড়িয়ে দিয়ে কাকাবাবু কে কিছু বুঝিয়ে দেন এবং যাচাই করে তারপর তার শিষ্যদের জানাতে বলেন। কাকাবাবু আর সন্তু সেই রহস্যের খোঁজে মিশর ছুটে যান। সেখানে নানান সমস্যার মুখোমুখি হন।এক ভয়ানক তথাকথিত জঙ্গি সংঘটনের কবলে পড়েন। যারা কিনা দেশের সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। কাকাবাবু আর সন্তু কি পারবে সেখান থেকে উদ্ধার হতে? আর মুফতির আঁকা ছবিগুলোর সংকেত আসলে কি ছিলো? গুপ্তধন নাকি অন্যকিছু!...... . পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ ফেলুদার সাথে অনেক আগে পরিচয় ঘটলেও কাকাবাবু পড়া হয়নি। এটা আমার পড়া কাকাবাবু সিরিজের প্রথম বই।এটি দারুণ একটি রোমাঞ্চকর থ্রিলার উপন্যাস। একজন পঙ্গু হয়েও কাকাবাবুর যে সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায় তা সত্যি অসাধারণ। এটি ঐতিহাসিক পটভূমিতে রচিত অ্যাডভেঞ্চার কাহিনী। পুরো ঘটনার ভাজে ভাজে মিশরের বর্ণনা ও বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা উঠে এসেছে। বইটি পড়ে মিশর ও মিশরের বিভিন্ন মমি সম্পর্কে জানা যাবে।মিশর নিয়ে অধিকাংশ মানুষের আগ্রহ, কৌতুহল। আমারও মিশর নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই। তাই বইটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।তাছাড়া সুনীলের চমৎকার বর্ণনা, লেখনশৈলী তো ছিলই। তবে যারা জোরালো থ্রিলার পড়েন তাদের কাছে এটা বেশ দুর্বল মনে হতে পারে, ভালো নাও লাগতে পারে। যারা আগে মুভি দেখে ফেলেছেন তারা বই পড়ে হতাশ হতে পারেন। কারণ বইটি অনেক আগের, আর মুভিতে আধুনিকতার ছাপ। তাই যারা এখনো বই, মুভি কোনটাই পড়েননি, দেখেননি, তাদেরকে বই পড়ে তারপর মুভি দেখতে অনুরোধ করবো। ব্যক্তিগত রেটিং: ৪/৫ By Imili Chowdhury
Was this review helpful to you?
or
ভালো লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা :::::::::১৪:::::::::: বই:- মিশর রহস্য লেখক:- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রকাশনী:- আনন্দ পাবলিশার্স (ভারত) ধরন:- রহস্য, গোয়েন্দা ও ভৌতিক রকমারি মূল্য:- ২২৫ টাকা। 'কাকাবাবু সমগ্রের গোড়ার দিককার উপন্যাস 'মিশর রহস্য'। কাকাবাবুকে নিয়ে লেখা সকল উপন্যাসের মধ্যে 'মিশর রহস্য' উল্লেখযোগ্য। কাকাবাবুর সকল অভিজানে সন্তুকে নিয়ে যান। এবারই প্রথম তাকে ছাড়া একাই দিল্লীতে গেলেন। সন্তুর বিশেষ কোন কাজ ছিলো না। কাকাবাবুরর সাথে থাকতে থাকলে গোয়েন্দাগিরিতে তিনি অভস্থ হয়ে গেছে। সে একাই একটি অভিজানে নেমে পড়ল এবং ফল হলো হিতে বিপরিত। এই নিয়ে সন্তু যখন মন মরা হয়ে আছে, এমন সময় কাকাবাবুর চিঠি পেলেন। কাকাবাবু তাকে পাসপোর্ট এবং পপ্রয়োজনিয় জিনিস সাথে নিয়ে দিল্লীতে যেতে বলেছে। দিল্লিতে যাবার পর সন্তু জানতে পারে, কাকাবাবুকে কে বা কারা হত্যার চেষ্টা করেছিল। কাকাবাবু সেটিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন না। মুফতি মহম্মদ নামে এক সাধক ফকির হায়েরোগ্লিফিক ভাষায় কিছু লিখে দিয়েগেছেন। কাকাবাবু মেতে আছেন সেই রহস্য উন্মোচনের নেশায়। কোন একটা সংকেত দিতে চাচ্ছে মুফতি মহম্মদ। তার রহস্য কেউ উদ্ঘাটন করতে পারছে না। কাকাবাবু এবং সন্তু সেই রহস্যের পিছু নিয়ে ছুটে গেলেন মিশর। সেখানে তাঁকে পিড়ামিডের তলায় ঢুকে ঐতিহাসিক রহস্যের সমাধান করতে হবে। কিন্তু বড় বাধা হয়ে দাঁড়ালো আল মামুন আর হানি আলকাদি নামের দুইটি মুক্তিকামী দলনেতা, তাদের দুজনের মধ্য সম্পর্ক সাপে নেউলে। তাদের ধারনা মুফতি মহম্মদ তার সংকেতে গুপ্তধনের সন্ধান দিয়েছেন। হানি আলকাদির লোকেরা তুলে নিয়ে গেল কাকাবাবুকে। আর সন্তু বন্দি হল আল মামুনের হাতে। কি করো একত্র হবে তারা? কাকাবাবু কি মুফতি মহম্মদের বলে যাওয়া শেষ ইচ্ছা বা নির্দেশ পালন করতে পারবেন? কি ছিল সেই শেষ ইচ্ছা? #পাঠ_প্রতিক্রিয়া:- অসাধারণ একটি রোমাঞ্চক উপন্যাস । গোয়েন্দা গল্প পড়ার শুরু এই কাকাবাবু দিয়ে। মিশর রহস্য প্রিয় একটি উপন্যাস। রেটিং:- ৪.২
Was this review helpful to you?
or
'কাকাবাবু ও সন্তু' সিরিজের একেবারে গোড়ার দিককার উপন্যাস 'মিশর রহস্য'। কাকাবাবুকে নিয়ে লেখা সকল উপন্যাসের মধ্যেও 'মিশর রহস্য' সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের একটি। সাম্প্রতিক সময় এই উপন্যাসের কাহিনী নিয়ে কোলকাতায় একটা ছবিও হয়েছে এবং অনেকের হয়ত সেই ছবিটি দেখেই এই উপন্যাসটি পড়ার আগ্রহ তৈরি হবে। একটা জিনিস সাধারণত দেখা যায়, উপন্যাস হতে অ্যাডাপ্ট করা ছবি বেশিরভাগ সময়ই মূল কাহিনীর মত অতটা ভাল হয় না। কিন্তু 'মিশর রহস্য' এর বেলায় সেটা একদমই ভুল। মূল উপন্যাসের তুলনায় এর কাহিনী থেকে নির্মিত ছবিটি অনেক বেশি আধুনিক, অনেক বেশি উন্নতমানের আর অনেক বেশি ডিটেইলে মূল কাহিনীকে সেখানে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাই দুঃখের সাথে বলতে বাধ্য হচ্ছি, সম্ভবত বাংলা সাহিত্যে প্রথমবারের মত দেখা যাবে যে পাঠক একটা উপন্যাস হতে নির্মিত ছবিকে মূল উপন্যাস অপেক্ষা অধিক সাদরে গ্রহণ করছে। আর সেকারণেই, যারা 'মিশর রহস্য' ছবিটি দেখার পর উপন্যাসটি পড়তে বসবেন, তারা বোধ হয় কিছুটা হতাশই হবে্ন। তবে সেসব যাইহোক, ছবির কথা ছেড়ে বইয়ের আলোচনায় আসি। এই উপন্যাসের শুরুতে দেখা যাবে কাকাবাবু কোন একটা কারণে দিল্লীতে গেলেন। সন্তু এদিকে কোলকাতায় একা একা কিছু করার না পেয়ে নিজেই এক গোয়েন্দাগিরিতে নেমে পড়ল এবং তার ফলে এক দারুণ কেলেংকারি হল। এই নিয়ে সন্তু যখন মন মরা হয়ে আছে, এমন সময় কাকাবাবুর চিঠি। কাকাবাবু তাকে পাসপোর্ট সমেত দিল্লীতে হাজির হতে বলেছে। অর্থাৎ এবারও তাদের ভারতবর্ষের বাইরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে! তো, দিল্লিতে যাবার পর সন্তু জানতে পারল, কাকাবাবুকে কারা যেন হত্যার চেষ্টা করেছিল! কাকাবাবু সেটিকে বেশি পাত্তা দিচ্ছেন না। মুফতি মহম্মদ নামে এক সাধক ফকির নাকি ঘুম থেকে জেগে উঠে কি সব লিখছে হায়েরোগ্লিফিক ভাষায়, কাকাবাবু মেতে আছেন তাই নিয়ে! কোন একটা সংকেত দিতে চাচ্ছে মুফতি মহম্মদ। তার রহস্য কেউ উদ্ঘাটন করতে পারছে না। কাকাবাবু বোধ হয় পারলেন কিন্তু সেটা প্রকাশ করলেন না কারো কাছে। তিনি ঠিক করলেন একাই মুফতি মহম্মদের নির্দেশ পালন করবেন। তাই সন্তুকে নিয়ে উড়াল দিলেন মিশরের উদ্দেশ্যে। সেখানে তাঁকে পিড়ামিডের তলায় ঢুকে ঐতিহাসিক রহস্যের সমাধান করতে হবে! কিন্তু ওদিকে মুফতি মহম্মদ তার সংকেতে গুপ্তধনের সন্ধান দিয়েছে এমন মনে করে কাকাবাবুর পেছনে লাগল আল মামুন আর হানি আলকাদি নামের দুই লোক, যারা আবার পরস্পর বিরোধী। মিশরে গিয়ে প্রথমে হানি আলকাদির লোকেরা তুলে নিয়ে গেল কাকাবাবুকে। আর সন্তু বন্দি হল আল মামুনের হাতে। শেষ পর্যন্ত কি হবে? সন্তু আর কাকাবাবু কি আবার এক হতে পারবে? কাকাবাবু কি মুফতি মহম্মদের বলে যাওয়া শেষ ইচ্ছা বা নির্দেশ পালন করতে পারবেন? কি ছিল সেই শেষ ইচ্ছা? সেই রহস্যেরও সমাধান মিলবে এই উপন্যাসের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে। আর তাই সব প্রশ্নের জবাব পেতে হলে বইটা পড়তেই হবে। সবমিলিয়ে দারুণ একটা রোমাঞ্চকর উপন্যাস। উপন্যাসের চাইতে এই কাহিনী হতে নির্মিত ছবিটি হয়ত অনেক দিক থেকেই এগিয়ে তবু সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা মূল উপন্যাসটিরও একটা বিশাল প্লাস পয়েন্ট আছে। সেটা হল, ছবির তুলনায় উপন্যাসের কাহিনী অনেক বেশি গতিশীল, কোন ঢিলেঢালা ভাব নাই; তিন ঘন্টার খোরাক জোগাড় করতে গিয়ে ছবিতে যা নিখোঁজ ছিল! আর পাশাপাশি, উপন্যাসটি একেবারেই মেদবিহীন। শুরুর প্রথম অধ্যায়টি বাদ দিলে পরের পুরো উপন্যাসই কাহিনীর সাথে একদম সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাছাড়া প্রথম অধ্যায়টিও কোনোমতেই খাপছাড়া নয় কেননা যেহেতু 'কাকাবাবু ও সন্তু' একটি নিয়মিত সিরিজ, তাই সিরিজের ধারাবাহিকতা মেইনটেন করতে ওটুকের দরকার ছিলোই। যাইহোক, 'মিশর রহস্য' ছবি দেখে যারা ভাবছেন একবার চেখে দেখবেন মূল বইটার স্বাদ কেমন, তারা আর দেরি না করে পড়ে ফেলুন বইটি। চলচ্চিত্রের ভাষায় যে মজা পেয়েছেন কাহিনী থেকে, লেখ্য ভাষায় তা হবে একেবারেই আলাদা। তাই কাহিনী ও বিষয়বস্তু সম্পর্কে আগে থেকে ধারণা থাকলেও বইটি পড়তে গিয়ে বোর হবেন না একটুও। বরং আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, এই বইটি পড়ার পর 'কাকাবাবু ও সন্তু'র মূল সিরিজের প্রেমে পড়ে যাবেন আপনি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জাদুকরী লেখনীর দেখাও পাবেন। আর যারা আগে থেকেই 'কাকাবাবু ও সন্তু' সিরিজের ভক্ত তাদের বলব, সংস্লিষ্ট সিরিজের অন্যতম সেরা উপন্যাস এটি তাই পড়ে না থাকলে এখনই পড়ে নিন উপন্যাসটি।