User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
২০২০ সালের প্রথম উপন্যাস। বাস্তব জীবনে আমি কুয়োর ব্যাঙ হলেও অ্যাডভেঞ্চার আমার খুব প্রিয়৷ কিন্তু এ জীবনে ঘুরে বেড়ানোর তেমন সুযোগ নেই বললেই চলে তাই আমার এডভেঞ্চার বইয়ের পাতাতেই সীমাবদ্ধ। বাস্তব জীবনে এডভেঞ্চার না থাকলেও কল্পনাতে আমি বেশ ঘুরে বেড়াচ্ছি, এইতো কিছুক্ষন আগে কাকাবাবু আর সন্তুর সাথে কাশ্মীর ঘুরে আসলাম! কাশ্মীরের আকাশ,পাহাড়,বরফ,হাউস বোর্ডের সৌন্দর্যে বিভোর হয়ে ছিলাম। আর সন্তুর সাথে ফিতে দিয়ে পাথর মাপতে মাপতে যখন ধৈর্য্যহারা তখনই আবিষ্কার করলাম সম্রাট কণিষ্কর পাথরের মুন্ডু। যার মূল্য টাকায় মূল্যহীন হলেও ইতিহাসে এর মূল্য অমূল্য। কিন্তু এত কষ্টের পরেও সম্রাট কণিষ্কর মূর্তির শেষ উদ্ধার হলো না, সূচা সিং এর স্বর্ণ লোভের জন্যে আবার হারিয়ে গেলো ইতিহাসের মূল্যবান মুন্ডু। পুনশ্চঃ চাঁদের পাহাড়ের পরে দ্বিতীয় কোন এডভেঞ্চার বই যেটা পড়ে মনে হচ্ছিল আমি নিজেও পাহাড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। সত্যিই অসাধারণ অভিযান।
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসঃ ভয়ংকর সুন্দর লেখকঃসুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (নীললোহিত) প্রকাশনীঃ আনন্দ পাবলিশার্স (ভারত) ধরনঃপশ্চিমবঙ্গের রহস্য, গোয়েন্দা, ভৌতিক ও পৌরাণিক মুল্যঃ২৭০ টাকা "কাকাবাবু" সবারই খুব পছন্দের বলতে অন্তত বইপোকাদের জন্য একটি অন্যতম ভালো লাগার চরিত্র। কাকাবাবুর পুরো নাম রাজা রায় চৌধুরী। তিনি নিজের ইচ্ছায় কিছু সমস্যা হাতে নিয়ে সেগুলো সমাধান করার চেষ্টা করে। তার সমস্যা গুলোর মধ্যে দেখা যায় বেশির ভাগ ঘটনা ইতিহাসের সাথে জড়িত। আর এসব অভিযান গুলো তে সবসময় তার সাথী হিসেবে থাকে একমাত্র ভাতিজা সন্তু। বলে রাখা ভালো,কাকাবাবুর কিন্তু সবথেকে দুর্বল দিক ও হচ্ছে সন্তু কারণ যে কাকাবাবু কাউকে দেখে ভয় পায়না তাকে খুব সহজেই গ্রাস করে ফেলা যায় সন্তুর কোন ক্ষতির কথা বললে। লেখকের কাকাবাবু সিরিজের প্রথম বই এটি। এটিই সেই বই যার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের পরিচিতি ঘটেছিলো ২ টি অমুল্য চরিত্রের। এবং শত শত বইপোকা পছন্দ করেছিলো। কাকাবাবু এবং সন্তুর এই অভিযান শুরু হয়েছিলো কাশ্মীরে ভ্রমনের মাধ্যমে। প্রথমে কাকাবাবু সন্তুকে কিছুই জানায়নি, শুধু এক জায়গা থেকে অন্য জায়গাতে ঘুরে ফিরছিলো। এরপর তারা নতুন গ্রামে গিয়ে উপজাতির সাথে মেশা শুরু করে এবং সেখানে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে। এর মধ্যে একজন ছিলো যে পুরোপুরি তাদের পিছু নেই। ভাবে যে হয়তো গুপ্তধনের জন্য কাকাবাবু এরকম ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি তারা আদৌ কোন গুপ্তধনের সন্ধান পাই? নাকি কাকাবাবু অন্য কিছু খুজতে এসেছে?? আর কোন ঘোর বিপদ কি অপেক্ষা করছে তাদের জন্য?? জানতে হলে পড়তে হবে।
Was this review helpful to you?
or
বই রিভিউঃ বইঃ ভয়ংকর সুন্দর লেখকঃ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ক্যাটাগরিঃ কমিকস প্রকাশনীঃ আনন্দ পাবলিশার্স পৃষ্ঠাঃ ৪৬ মূল্যঃ ২৭০ টাকা রিভিউঃ গল্পের কথক সন্তু ক্লাস এইটে পড়ে। তার ভালো নাম সুনন্দ রায়চৌধুরী। সন্তু তার কাকাবাবুসহ কাশ্মীরে বেড়াতে এসেছে। বেড়াতে এসেছে বললে ভুল হবে। এখনো তারা শ্রীনগর বা অমরনাথ কিছুই ঘুরে দেখেনি। এই পহলগ্রামেই কাকাবাবু সন্তুকে নিয়ে সারাদিন লীদার নদীর তীরে ফিতে দিয়ে মাপজোক করেন। সন্তুর ভালো লাগে না। কিন্তু কাকাবাবুকে একা ছাড়তেও ইচ্ছে করে না। কাকাবাবুর এক পা খোঁড়া তো। সূচা সিং এর ধারণা কাকাবাবু সোনার খোঁজ করছেন। সূচা সিং অনেকগুলো বাস আর ট্যাক্সির মালিক। কিন্তু কাকাবাবু তাকে জানিয়ে দিয়েছে তারা গন্ধকের খোঁজ করছে। সূচা সিং কাকাবাবুকে প্রস্তাব দেয় একসাথে সোনা খোজার। কাকাবাবুকে ভাগ দেবে। কিন্তু কাকাবাবু রাজি হয়নি। কাকাবাবু বলে এসব তার কাজ না। একদিন সন্তুদের দেখা হয়ে যায় সিদ্ধার্থদা, স্নিগ্ধাদি আর রিণিদের সাথে। তারাও বেড়াতে এসেছে। কিন্তু কাকাবাবু তাদের সাথে তেমন কথা বলতে চাইলেন না। কাকবাবু ঠিক করলেন পাহাড়ের নিচের ছোট্ট গ্রামটাতে থাকবেন। সেখানকার ব্যবস্থা করে দিল ঘোড়াওয়ালা ছেলে দুটো। সেই গায়ের লোকেদের সাথে সন্তু আর কাকাবাবুর বেশ ভাব জমে গেল। একদিন সন্তু রাতের বেলা ঘোড়ার পায়ের আওয়াজ শুনতে পায়। মনে হচ্ছে যেন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে দৌড়াবার ভান করছে। সন্তু ভয়ে কাকাবাবুকে জানায়। পরদিন গল্পচ্ছলে কাকাবাবু কথাটা গায়ের লোকদের বলে। তারা বলে "হাকো"র কথা। যার চোখ দিয়ে আগুন বেরোয়। অনেক আগে হাকো ছিল এক রাজার সৈন্য। লাদাখের রাস্তা দিয়ে সে রাজার জন্য খৎ নিয়ে যাবার পথে কোন এক দুশমন তাকে হত্যা করে জঙ্গলের দিকের এক কুয়োর মধ্যে ফেলে দেয়। এটাই তারা পূর্বপুরুষদের মুখে শুনে আসছে। কাকাবাবুর কথা জ্বলজ্বল করে উঠে। তিনি বারবার জানতে চান সেই কুয়োর কথা। তারপর জঙ্গলে সন্তুকে নিয়ে শুরু করেন আবার মাপজোক। ঘটনাক্রমে সন্তু পড়ে যায় সেই কুয়োর মধ্যে। এরপর সন্তুর জীবনে ঘটতে শুরু করে রোমহর্ষক সব ঘটনা। হারিয়ে যায় কাকাবাবু। সন্তুদের তাবুতে হামলা করে কেউ একজন। কে সে? কি আছে সেই কুয়োর মধ্যে? কাকাবাবু কিসের খোঁজ করছেন? গন্ধক নাকি সত্যিই সোনার খোঁজ করছেন? কোথায় হারালো কাকাবাবু? সন্তু কি কাকাবাবুর খোঁজ পাবে না? এতসব প্রশ্নের সমাধান খুজতে পড়ে ফেলুন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা- " ভয়ংকর সুন্দর"। পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ কাকাবাবু সিরিজের বইগুলো সবসময়ই ভালো লাগে। এটাও তার ব্যতিক্রম নয়। অ্যাডভেঞ্চারের বর্ণনা বরাবরের মতোই ভাল। ইতিহাস নিয়ে অনেক কিন্তু থাকতে পারে। কিন্তু গল্পের খাতিরে সেসব এমনিতেই মাপ। তবে ছোট হয়ে গেছে। আরেকটু বড় হলে ভালো লাগতো। সূচা সিং এর কাহিনী আরো বেশি থাকলে ভালো লাগতো। শেষটা চমকপ্রদ ছিল না। সব মিলিয়ে কাকাবাবু সিরিজের প্রথম বই "ভয়ংকর সুন্দর" এর কমিকস সংস্করণ ভালো হয়েছে। ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৪/৫
Was this review helpful to you?
or
বই : ভয়ঙ্কর সুন্দর (কাকাবাবু সিরিজ) লেখক : সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। মূল্য : ২৭০ টাকা (রকমারি) পৃষ্ঠা : ৪৬। প্রকাশনী : আনন্দ পাবলিশার্স। কাকাবাবু বিখ্যাত সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রচিত অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি কাল্পনিক চরিত্র। অবসরপ্রাপ্ত রাজা রায়চৌধুরী পেশায় একজন গবেষক ও ইতিহাসবেত্তা ছিলেন। তিনি সুনন্দ রায়চৌধরী সন্তুর কাকাবাবু। সন্তু ক্লাস এইটে পড়ে। সুযোগ পেলেই সন্তু কাকাবাবুর সাথে বেরিয়ে পড়ে পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গলে বিভিন্ন রহস্যভেদে, লেগে যায় গোয়েন্দাগিরিতে। সন্তুর ছুটির দিনগুলো কাটে দুর্দান্ত সব এডভেঞ্চারে। কাকাবাবু আর নিজের সেইসব রোমাঞ্চকর দুঃসাহসিক অভিযানের গল্পগুলাই সন্তু বয়ান করে থাকে নিজ জবানিতে । " ভয়ঙ্কর সুন্দর " কাকাবাবু সিরিজের প্রথম বই। পাঠাক আসুন তবে সন্তু আর কাকাবাবুর সাথে আমরাও ঘুরে আসি সেই কল্পরাজ্য থেকে। #কাহিনী_সংক্ষেপ সন্তু ছুটিতে কাকাবাবুর সাথে কাশ্মীর এসেছে চৌদ্দ দিন হয়। কিন্তু সে এখনো বেড়াতে যেতে পারিনি। পহলগ্রাম জায়গাও বেশ সুন্দর। সুন্দর হলেই কি আর হলো? কাশ্মীর এসে শ্রীনগর না গেলে হয়? তার ক্লাসের ফার্স্ট বয় দীপঙ্কর গতবছর কাশ্মীর এসেছিল, তার কাছেই সন্তু জেনেছে, শ্রীনগরের ডাল হ্রদের উপর ভেসে চলে বড় বড় সাজানো সুন্দর সুন্দর নৌকা, যাকে হাউজ বোট বলে। রাত্তিরে যখন সে বোটে আলো জ্বলে উঠে মনে হয় যেনো জলের উপর মায়াপুরী বসেছে। সুন্দর সাজানো ছোটো ছোটো শিকারা নামের নৌকা ভাড়ায় পাওয়া যায়। মোগল গার্ডেনস, চশমাসাহী, নেহেরু পার্ক--- এইসব জায়গায় কি ভালো ভালো সব বাগান, আহা! এইসব গল্প শুনেই তো সন্তু কাকাবাবুর সাথে কাশ্মীর দেখতে এসেছিল। কিন্তু হলোটা কি? চৌদ্দদিন ধরে সে কেবল ফিতা নিয়ে পাহাড় আর বরফের স্তুপ মেপে চলছে। যদিও পহলগ্রামও ছবির মত সুন্দর। কিন্তু তাই বলে কাশ্মীর এসে এক জায়গায় বসে থাকবে? তা কি হয়? এদিক ওদিক একটু বেড়াবে না! কাকাবাবু কি খুঁজে চলছেন কে জানে। প্রতিদিন বাসে চেপে সোনমার্গ যাচ্ছেন। বরফের ঢাকা পাহাড় মেপে আবার ফিরে আসছেন। আসলে কাকাবাবু ফিতার একপ্রান্ত ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন, আর সন্তুকে কাকাবাবুর নির্দেশমত কখনো ডানে কখনো বামে ঘুরে ঘুরে মাপজোখ করতে হয়। কেননা বছর কয়েক আগে এক এক্সিডেন্টে কাকাবাবুর একটা পা অকেজো হয়ে গেছে, ক্রেচে ভর করে চলতে হয়। সব কিছু একা একা করতে পারেন না। তাই সন্তুকে সবখানেই নিয়ে যান। খুঁড়ো হলে কি হবে কাকাবাবু মনের জোড় আর সাহস ভীষণ! আর কাকাবাবুর কাছে একটা অনুমোদিত রিভলভারও আছে কিন্তু। সুতরাং কোনো ভয় নেই। কিন্তু বিপত্তিটা বাধলো অন্য একদিন। প্রতিদিনকার যাওয়াআসাতে বিরক্ত হয়ে কাকাবাবু আর সন্তু সোনমার্গের কাছে একটা গ্রামে থাকতে চলে যায়। সেখানে যে ছেলে দুটোর ঘোড়া ওরা ভাড়া নিত তাদেরই গ্রামে। থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাও ওরাই করে দেয়। দিনে চলে মাপজোখের কাজ আর রাতে গ্রামের লোকজনের সাথে আড্ডা। কাশ্মীরের লোকজন খুব মিশুক আর অতিথিপরায়ণ। ক'দিনের মধ্যেই ওদের কেমন আপন করে নিয়েছে। দিনকয়েক পরে কাকাবাবু খোঁজ হলো। তারা যেমন ঝড়ের মত গ্রামে থাকার জন্যে এসেছিলেন তেমনি ঝড়ের বেগে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে পহলগ্রামে ফিরে যাবার জন্য সোনমর্গে এসে পৌঁছাল। তখন বেলা শেষ প্রায়। ঝামেলাটা হলো এখানে! যাবার পথে কোনো গাড়ি না পেয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো ওরা। ঠিক সেই সময় সূচা সিং এর জিপ এসে হাজির। সূচা সিং পহলগ্রামের আর ওদের আগের পরিচিত। তাই ওরা তার গাড়িতেই চেপে বসে। মালপত্র জিপের পেছেনে রেখে কাকাবাবু হাতে একটা কাঠের বাক্সে নিয়ে বসেছে। ওই বাক্সে কি আছে জানতে মরিয়া সূচা সিং এর সাথে কাকাবাবুর গাড়িতেই মনকষাকষি হয়ে গেলো। আর পহলগ্রামে ফেরার পরদিন সকালে কাকাবাবু সন্তুকে তাবুতে বাক্সের সামনে পাহারা রেখে বাইরে বের হয় টেলিগ্রাম করতে। কিন্তু সকালে বের হয়ে রাতেও আর ফিরে আসে না কাকাবাবু। সন্তু কাকাবাবুর জন্য অপেক্ষা করতে করতে একসময় ঘুমিয়ে পড়ে। তার ঘুম ভাঙে যখন একদল ডাকাত তাকে বেঁধে রাখে তখন। সন্তুকে বেঁধে রেখে সব কিছু এলোমেলো করে দিয়ে ওরা শুধু কাঠের বাক্সটা নিয়ে যায়। অনেক কষ্টে সন্তু টেবিলে রাখা ছুরি দিয়ে প্রায় আধাঘণ্টার চেষ্টায় নিজেকে মুক্ত করে। ভয়ে অস্থির হয়ে সে সারারাত জেগে কাটায়। এই অচেনা শহরে একা সন্তু এখন কি করবে? কাকাবাবুকেই বা সে কোথায় খুঁজবে? ঐ কাঠের বাক্সে এমন কি ছিল যার জন্য ডাকাতি হলো ওদের তাবুতে? সন্তু কিছুই ভেবে পায় না! সন্তু কি কাকাবাবুকে খুঁজে বের করতে পারবে ? #পাঠপ্রতিক্রিয়া "কি হলো আজ আমি ভেবে না পাই?" "সব হারালেও আমি কাকাবাবু পড়তে চাই!" পাঠাক আশা করছি উপরের চরণ যুগল থেকেই অনুমান করতে পারছেন যে ; আমি কাকাবাবুতে ডুবে গেছি! আমার নেশা ধরে গেছে! সন্তু আর কাকাবাবুর সাথে আমিও হারিয়ে গেছি কাশ্মীরের অপরূপ প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে। ঘরেই বসেই আমি যেনো ঘুরে বেড়িয়েছি সারা কাশ্মীর! কখনো ভেসে গিয়েছি শ্রীনগরের ডাল হ্রদের হাউজ বোট আর শিকারায়। কখনো তরতর করে উঠে গেছি সোনমর্গের তুষারশুভ্র বরফ ঢাকা পাহাড়ে। আবার কখনো বা সন্তুর সাথে পা ভিজিয়েছি পহলগ্রামের লাদা নদীর স্বচ্ছ শীতল পানিতে। প্রতি পাতায় পাতায় মুগ্ধতা ছড়িয়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সৃষ্টি করেছেন "কাকাবাবু" নামের এক অনবদ্য ও অনন্য কল্পজগত। পাঠক, কিশোর উপন্যাস হিসেবে সমাদৃত হলেও সন্তু আর কাকাবাবুর রোমাঞ্চকর এডভেঞ্চারে অংশ নিতে পারবেন আপনিও। নির্দ্বিধায় নিঃসংকোচে। বই হোক ভালোবাসার প্রতীক।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ নভেম্বর উপন্যাসের নামঃ ভয়ংকর সুন্দর সিরিজের নামঃ কাকাবাবু বইয়ের নামঃ কাকাবাবু সমগ্র ১ লেখকের নামঃ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রচ্ছদঃ সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় উপন্যাসের প্রকাশকালঃ ১৯৭২ সমগ্রের প্রকাশকালঃ ১৯৯৩ প্রকাশনীঃ আনন্দ পাবলিশার্স লিমিটেড (ভারত) উপন্যাসের পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৬৭ সমগ্রের মূল্যঃ ৩৫০ রুপী (ভারত), ৭০০ টাকা (বাংলাদেশ) ও ১২০ টাকা (বাংলাদেশী লোকাল প্রিন্ট) যেকোন বই নিয়ে লেখা বা বইটি পড়ার আগে সেই লেখক সম্পর্কে জেনে নেওয়া ভালো। তাই রিভিউ শুরুর প্রথমেই আমি লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে কিছু বলে নিতে চাই। লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বিংশ শতকের শেষার্ধে আবিভুর্ত একজন প্রথিতযশা বাঙালি সাহিত্যিক। ২০১২ খ্রিস্টোব্দে মৃত্যুর পূর্ববর্তী চার দশক তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা-ব্যক্তিত্ব হিসাবে সর্ববৈশ্বিক বাংলা ভাষা-ভাষী জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন। বাঙলাভাষী এই ভারতীয় সাহিত্যিক একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, সম্পাদক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট হিসাবে অজস্র স্মরণীয় রচনা উপহার দিয়েছেন। তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার জীবনানন্দ-পরবর্তী পর্যায়ের অন্যতম প্রধান কবি। একই সঙ্গে তিনি আধুনিক ও রোমান্টিক। তাঁর কবিতার বহু পংক্তি সাধারণ মানুষের মুখস্থ। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় "নীললোহিত", "সনাতন পাঠক" ও "নীল উপাধ্যায়" ইত্যাদি ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন। এবার আসি বইয়ের রিভিউতে... "এক যে ছিল রাজা, তার সাহস ক্রাচে ভর, তার রাজ্য ছিল মগজে আর বুদ্ধি গুপ্তচর! এক যে ছিল রাজা, তার যুদ্ধ মানেই জয়, তার সুয়োরানি রহস্য আর দুয়োরানি ভয়! সাবধান! সাবধান! সাবধান!" কাকাবাবু লেখার ব্যাপারে বইয়ের শুরুতে লেখক একটি চমৎকার ঘটনা উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “একবার আমি একজন খোঁড়া মানুষকে খুব উচু পাহাড়ে উঠতে দেখেছিলাম। তাঁর যেন একটুও কষ্ট হচ্ছিল না। আমি তখন ছোট, সন্তুরই বয়সী। সেই মানুষটিকে দেখে বুঝতে পেরেছিলাম, অসাধারণ তাঁর মনের জোর এবং এরকম মনের জোর থাকলে মানুষ যেকোন বাঁধাকে অতিক্রম করতে পারে। সেই মানুষটিই কাকাবাবু!” আলোচ্য গল্পের প্রধান দুটি চরিত্র। সন্তু ও তার কাকাবাবু। কাকাবাবু একসময় সরকারের হয়ে কাজ করতেন। পরবর্তিতে আফগানিস্থানের একটা অভিযানে একটি পা হারান। কিন্তু অসাধারণ তাঁর মনের জোর। তিনি কোন ডিটেকটিভ নন। নন কোন পুলিশের লোক। অসাধারণ মনের জোর আর ইচ্ছাশক্তি নিয়ে তিনি অভিযানে যান। এডভেঞ্চার করে বেড়ান। সাথে থাকে একমাত্র ভাইপো সন্তু। আলোচ্য গল্পের শুরুতেই দেখা যায়, সন্তু ও কাকাবাবু কাশ্মীরে অবস্থান করছেন। প্রতিদিন ছোট্ট সন্তু তার কাকাবাবুর সাথে বের হয়। বিভিন্ন পাথর মাপামাপি করে। আবার ফিরে আসে। কাকাবাবুর ভাবভঙ্গি দেখলে মনে হয় তিনি কিছু একটা খুঁজছেন। বেশ কিছুদিন তারা এক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে কিছু না পেয়ে আরেকটি নতুন পাহাড়ী গ্রামে আশ্রয় নেয়। সেখানে বনের মধ্যে ওরকম একই খোঁজাখুঁজি করতে সন্ধান পায় এক অদ্ভুত গুপ্তধনের। কি সেই গুপ্তধন জানেন? না থাক! কমু না! বই পইড়া দেখেন, বুঝবার পারবেন! ;) এবার দেই বইয়ের উপর মতামত। কাকাবাবু প্রথম ধরেছিলাম ক্লাস সিক্সে। তখন ডিটেকটিভ বা এডভেঞ্চার যাই বলুন না কেন, আমার জ্ঞান ছিল ঐ ফেলুদা আর তিন গোয়েন্দা অব্দি। আমি তখন এসব সিরিজের ডাইহার্ট ফ্যান। কাকাবাবু ধরলাম। ভালো লাগলো না। লেখনীর ধরণ ভালো না। এরপরে দু একবার যা পড়তে গেছি, ভালো লাগে নি। তাই এবারও অনেকটা ভয়ে ছিলাম। একে তো বইটার পূর্ব অভিজ্ঞতা ভালো না। দ্বিতীয়ত, কাকাবাবু পড়ার আদর্শ বয়স পার করে এসেছি। তবুও ভয়ে ভয়ে পড়া শুরু করলাম। দেখলাম ঘন্টা দেড়েকের মধ্যে প্রথম গল্প শেষ। কেন জানিনা গল্পটিকে খুব সহজ স্বাভাবিক ও ফ্রেশ লেগেছে। মনে হলো এত চমৎকারভাবে লিখিত এডভেঞ্চার উপন্যাস অনেকদিন পড়িনি। বইটির বেশ কিছু দিক আমার ভালো লেগেছে। প্রথমটি তো বলেছিই, লেখনী। এছাড়া বইটিকে যথেষ্ট আধুনিক মনে হয়েছে। ফেলুদা সিরিজে যেমন প্রেক্ষাপট আমরা পড়ি, সেই যুগ আমরা চোখেও দেখিনি, কল্পনাতেও বানানো কঠিন হয়ে যায়। তবে কাকাবাবুর প্রেক্ষাপট অন্তত কল্পনায় বেশ কিছুটা আসে। গল্পের আরো একটি শক্ত দিক হচ্ছে, কাকাবাবুর চরিত্রায়ন। এখানে কাকাবাবুকে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেই দেখানো হয়েছে। তাঁর যেমন সাহস ছিল। তেমনি কিছু কিছু পরিস্থিতিতে যে তিনি আসলেই অসহায়, তা খুব চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। অন্তত অন্যান্য বিখ্যাত গোয়েন্দা বা এডভেঞ্চার দরিত্রের মত সুপার হিউম্যান বানানো হয়নি। সন্তুর চরিত্রটিও মন কেড়েছে। একজন কিশোর বয়সী ছেলে গল্প লেখার সময় কিংবা কোন ধটনা বলার সময় যেসব কথা চিন্তা করে বা বলে সেটিই এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এদিক থেকে ফেলুদার তোপসেকে আমার বরাবরই ইঁচড়ে পাকা মনে হয়। এছাড়া বইটির প্লট ভালো ছিল। শেষের ক্লাইম্যাক্সটা একেবারেই অপ্রত্যাশিত ও সুন্দর ছিল। আমি বইটির লোকাল বাংলাদেশি প্রিন্ট পড়েছি। তাই কোয়ালিটির কথা বলছি না। তবে বইটির অরিজিনাল ইন্ডিয়ান প্রিন্টের মান অতি চমৎকার! সবশেষে এটাই বলবো, যারা এখনো বইটি পড়েন নি, পড়ে ফেলুন। কারণ, "অ্যাডভেঞ্চারের চিঠি আজ খুলে দিল খাম, এক যে ছিল রাজামশাই রায়চৌধুরী নাম! সেলাম! সেলাম! সেলাম!" :) রেটিংঃ ৪/৫
Was this review helpful to you?
or
সাহিত্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে 'ভয়ংকর সুন্দর' উপন্যাসটির গুরুত্ব অনেক। কারণ এটাই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কর্তৃক কাকাবাবুকে নিয়ে লেখা প্রথম উপন্যাস অর্থাৎ 'কাকাবাবু ও সন্তু' সিরিজের প্রথম উপন্যাস এটি। এই উপন্যাসের মাধ্যমেই আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল কাকাবাবু ও সন্তুর মত বাংলা সাহিত্যের দুই অমর চরিত্রের। পাশাপাশি এই উপন্যাসেই দেখা মিলেছিল সিদ্ধার্থ, স্নিগ্ধা আর রিণি চরিত্রদের, যাদেরকে পরবর্তি সময় 'কাকাবাবু ও সন্তু' সিরিজের আরও বহু উপন্যাসে দেখা গেছে। যদিও এটি 'কাকাবাবু ও সন্তু' সিরিজের প্রথম উপন্যাস হিসেবে বিবেচিত হয়, তারপরও সম্ভবত লেখক প্রথম যখন এই উপন্যাসটি লিখেছিলেন তখন নিছকই আরেকটা কিশোর রোমাঞ্চ উপন্যাস লেখার কথা তাঁর মাথায় ছিল। কাকাবাবু ও সন্তুকে নিয়ে যে আরও অসংখ্য উপন্যাস লিখবেন পরবর্তি জীবনে, সে ধরণের কোন উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না। এজন্যই কাকাবাবুকে এই উপন্যাসে যেমন আঙ্গিকে দেখা গেছে, সিরিজের ঠিক পরের উপন্যাসের কাকাবাবুর চরিত্রের সাথেই তার ছিল প্রচন্দ অমিল। আসলে 'কাকাবাবু ও সন্তু' সিরিজের অন্যান্য সকল উপন্যাসের সাথেই এই উপন্যাসের অনেকগুলো বৈসাদৃশ্য আছে। প্রথমত, এই উপন্যাস রচিত হয়েছে সন্তুর জবানিতে, ফার্স্ট পারসনের বর্ণনায়। কিন্তু সিরিজের বাকি সব উপন্যাসই রচিত হয়েছে থার্দ পারসনের বর্ণনায়। দ্বিতীয়ত, এই উপন্যাসে কাকাবাবু চরিত্রটিকে সম্পূর্ণরূপে উন্মোচন করা হয়নি। কাকাবাবু যে খোড়া আর তা সত্ত্বেও অ্যাডভেঞ্চারের লোভে ঘুরে বেড়ান, এটা বলা হলেও তাঁর অন্যান্য অধিকাংশ গুণাবলিরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেনি এই উপন্যাসে। তৃতীয়ত, সন্তু চরিত্রটিকেও এই উপন্যাসে খুব একটা বুদ্ধিমান মনে হয়নি। এই উপন্যাসে দেখা মিলেছে এমন এক সন্তুর যে কাকাবাবুর সাথে সাথে ঘুরছে ঠিকই তবু কাকাবাবুর সাথে বিচিত্র অভিযানের বদলে সাদামাটা ভ্রমণ তাকে বেশি টানছে। চতুর্থত, এই উপন্যাসে দেখা গেছে কাকাবাবু সন্তুকে 'তুমি' 'তুমি' করে বলছেন। সন্তুও আবার কখনো কখনো কাকাবাবুকে 'আপনি' করে বলছে। অথচ পরিবর্তিতে আমরা আর সব উপন্যাসেই দেখেছি কাকাবাবু সন্তুকে বলেন 'তুই' করে আর সন্তু কাকাবাবুকে বলে 'তুমি' করে। পঞ্চমত, এই উপন্যাসে সন্তুর বয়স অনেক কম। সে মাত্র ক্লাস এইটে পড়ে! এই উপন্যাসে একটা বিশাল ভূমিকা রেখেছে ইতিহাস। মূলত কাকাবাবু ও সন্তুকে নিয়ে লেখা অধিকাংশ কাহিনীতেই ইতিহাস ও ঐতিহাসিকতা অধিক গুরুত্ব পেয়েছে। সেই জিনিসটা দেখা গেছে এই উপন্যাসেও। উপন্যাসে দেখা যাবে, সন্তু আর কাকাবাবু এসেছে কাশ্মীরে। কিন্তু অন্যান্য অভিযাত্রিদের মত তারা জনসাধারণের জন্য দর্শনীয় জায়গাসমূহ দেখে বেড়াচ্ছে না। বরং পহলগ্রাম নামক এক স্থানে তারা থাকছে আর দিনের পর দিন কাকাবাবু সন্তুকে সাথে নিয়ে পাহাড় মেপে বেড়াচ্ছেন। সবাইকে বলেছেন তিনি গন্ধক খুঁজছেন। কিন্তু তা ঠিক বিশ্বাসযোগ্য না। কেউ কেউ মনে করে কাকাবাবু সোনা খুঁজে বেড়াচ্ছেন। সন্তুরও সেরকমই ধারণা। যাইহোক, কদিন পর তারা গেল আর দুর্গম এক গ্রামে। নতুন পরিচিত দুই উপজাতিদের সাথে থাকতে লাগল। সেখানে শোনা গেল এক ভৌতিক গল্প আর সেই গল্পের সূত্র ধরে কাকাবাউ আর সন্তু খুঁজে পেল একটা কুয়া। সেই কুয়ায় কাকাবাবু এমন একটা কিছু খুঁজে পেলেন যা আপাতদৃষ্টিতে সামান্য মনে হলেও, ঐতিহাসিকভাবে যা অমূল্য। কি সেই জিনিস? সেটা জানা যাবে বইটি পড়লেই। তবে কাহিনী এখানেই শেষ না। এখান থেকে শুরু নতুন কাহিনীর। কাকাবাবু খুব মূল্যবান কিছু পেয়েছেন ভেবে অপহরণ করা হল কাকাবাবুকে। সন্তুর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হল কুয়ায় পাওয়া সেই মূল্যবান জিনিসটিকেও। শেষ পর্যন্ত কাকাবাবুকে কি খুঁজে পাবে সন্তু? আর যে মূল্যবান জিনিসের খোঁজে এত অভিযান, সেটা কি কিছু মূর্খ লোকের হাতে পড়ে নষ্ট হয়ে যাবে আর একটা দারুণ ইতিহাস বিলীন হয়ে যাবে? নাকি সেটা ফিরে পাওয়া যাবে? এই সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে 'ভয়ংকর সুন্দর' উপন্যাসে। সিরিজের অন্য যেকোন উপন্যাসের তুলনায় এই উপন্যাসের গঠনরীতি এবং সার্বিকভাবে কাহিনী ও তার উপস্থাপন সবই একদম অন্যরকম। তাই সিরিজের অন্যান্য উপন্যাস আগে পড়ে, পরবর্তি কোন সময় যদি আগ্রহী পাঠক এই উপন্যাসটি পড়তে যান তবে কিছুটা ধাক্কা তাকে পেতেই হবে!