User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
'কাকাবাবু ও সন্তু' সিরিজের অন্যান্য উপন্যাসের চেয়ে 'এবার কাকাবাবুর প্রতিশোধ' একেবারেই ভিন্ন ধরণের। এই ভিন্নতা শুধু কথার কথা নয়, আক্ষরিক অর্থেই। সাধারণত কাকাবাবুকে আমরা দেখি যে তাঁর কঠিন মানসিক শক্তির আড়ালে একটা কোমল মনও আছে যে কারণে কোন লোক তাঁর যত বড় শত্রুই হোক না কেন, তার প্রতি তিনি হিংস্রভাবে চড়াও হন না। কিন্তু এই উপন্যাসে বাস্তবিকই কাকাবাবুকে বিধ্বংসী ভূমিকায় দেখা যাবে। কেন কাকাবাবুর এই পরিবর্তন? তা বলছি একটু পরেই। এক সকালে হঠাৎ এক লোক এল কাকাবাবুর কাছে। নিজের পরিচয় দিল ধ্যানচাঁদ নাম দিয়ে। তারপর শুনাল এক ভয়ংকর কথা। কাকাবাবুকে নাকি তার সাথে মরণখেলায় অংশ নিতে হবে, যেখানে হয় সে বাঁচবে নয়ত কাকাবাবু বাঁচবে! এই খেলার কারণটাও খোলাসা করল। ৬ বছর আগে ধ্যানচাঁদের ভাই সুরজকান্ত ডাকাতি করতে গিয়ে ভীমবেটকা নামক স্থানে পুলিশের কাছে ধরা পড়ে এবং কিছুদিন পর জেলে আত্মহত্যা করে মারা যায়। সেই ডাকাত দলটিকে ধরার পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন কাকাবাবু। আর সুরজকান্ত নিজে নাকি ডাকাত ছিল না। পুলিশ অন্য একজনের বদলে তাকে ধরে এবং এ কারণে ধ্যানচাঁদ দোষারোপ করে কাকাবাবুকে। কাকাবাবুর কারণেই যে সুরজকান্ত পুলিশের হাতে ধরা পড়ল এবং পরে মারাও গেল! যাইহোক, কাকাবাবু খুনোখুনি বা হানাহানি পছন্দ করেন না। তাই পাত্তা দিলেন না ধ্যানচাঁদের কথা। বরং সন্তু আর জোজোকে নিয়ে চললেন শিমুলপুরে এক ভূতের বাড়ি ভূত দেখতে। কিন্তু ধ্যানচাঁদ আর তার সহযোগি লায়লা পিছু ছাড়ল না কাকাবাবুর। তবে প্রথম মেজর আঘাত হানল তারা সন্তুর উপর। দুটো গুলি লাগল সন্তুর বুকে। সন্তুর অবস্থা খুবই খারাপ। বাঁচার আশা মাত্র দশ শতাংশ। শেষ পর্যন্ত সন্তু কি বাঁচল? সেটা না হয় নাই বললাম। পাঠক নিজেই বইটা পড়তে গিয়ে জেনে নেবেন! এই ঘটনার পর কাকাবাবুও ধ্যানচাঁদের মতই প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠলেন। ঠিক করলেন হয় তিনি বাঁচবেন নয় ধ্যানচাঁদ বাঁচবে। এবার তিনিও সিরিয়াসলি ধ্যানচাঁদের সাথে তথাকথিত মরণখেলায় সামিল হলেন। পাশাপাশি সুরজকান্ত আসলেই ডাকাত ছিল কিনা আর সে কিভাবে মরল সে বিষয়ে তদন্ত শুরু করলেন তিনি। ক্রমশ বেরিয়ে আসতে লাগল অনেক অজানা সত্য যা জানে না এমনকি ধ্যানচাঁদও। কিন্তু কাকাবাবু কি ধ্যানচাঁদকে সেসব জানানোর সুযোগ পাবেন না তার আগেই ধ্যানচাঁদ কাকাবাবুকে মেরে ফেলবেন? আর কাকাবাবু যদি খেলায় যেতেন, তখন তিনি কি করবেন? সত্যি সত্যিই কি তিনি ধ্যানচাঁদকে মেরে ফেলবেন? এই নিয়ে জমজমাট কাহিনী 'এবার কাকাবাবুর প্রতিশোধ' বইটির। এই বইয়ের বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য বলা যায়। ১/ এই বইতে নতুন রূপে আবির্ভূত হবেন কাকাবাবু। ২/ জোজো চরিত্রকেও এবার নতুন করে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই নতুন জোজো শুধু গুলই মারে না। হাস্যকর সব কবিতাও লেখে ইংরেজি ও বাংলা দুই ভাষাতেই যেগুলো তার আষাঢ়ে গল্পের তুলনায় কোন অংশে কম মজার না। ৩/ এই উপন্যাসের সিংহভাগ অংশেই শুধু কাকাবাবুকে একা দেখা গেছে। সন্তু আর জোজোর উপস্থিতির অনুপাত অন্য যেকোন উপন্যাসের তুলনায় এটিতে কম। ৪/ অন্যান্য 'কাকাবাবু ও সন্তু' সিরিজের উপন্যাসের চেয়ে এখানে হিউমারের পরিমাণও বেশ কম। বরং কাহিনী এবং কাকাবাবুর চরিত্র, দুটিই অনেক বেশি গাম্ভীর্যপূর্ণ। ৫/ কাকাবাবুর সাথে শত্রুপক্ষের লড়াইও হয়েছে অন্য যেকোন উপন্যাসের তুলনায় অনেক বেশি। সবমিলিয়ে বলা যায়, 'কাকাবাবু ও সন্তু' সিরিজের অন্যতম সেরা উপন্যাস হওয়ার দাবিদার 'এবার কাকাবাবুর প্রতিশোধ'। যারা কাকাবাবু, সন্তু আর জোজোর ভক্ত, তাদের জন্য এই বইটি দারুণ লাগবে। কাকাবাবুর শেষের দিকের উপন্যাসগুলো প্রথম দিকের চেয়ে একটু কমই রোমাঞ্চকর। কিন্তু এই উপন্যাসে ফিরে পাওয়া যাবে সেই চিরচেনা লড়াকু কাকাবাবুকে, তবে একটু ভিন্ন রূপে - এই যা!