User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
লেখিকার নামের মতোই বইটা বিষাদিনী। বেশ ভালো লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
আমার ভালোই লেগেছে,,,,,,তবে সকলের পছন্দ আলাদা,,তাই কারো ভালো না ও লাগতে পারে,,,,?
Was this review helpful to you?
or
আমি বরাবরই রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র উনাদের বই পড়া লোক। তাই একটু ভিন্ন স্বাদ নেওয়ার জন্য মম সাহা আপুর বই টা নিলাম। এই বই সম্পর্কে একটা কথাই বলবো অতী শীঘ্রই বইটি জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। খুবই চমৎকার আর কুমুদীনি যে আমার পছন্দের নারী চরিত্র হয়ে উঠলো :)
Was this review helpful to you?
or
#চন্দ্রকায়া #পাঠ_অনুভূতি ♦এক নজরেঃ •উপন্যাসের নামঃ চন্দ্রকায়া •লেখকঃ মম সাহা (বিষাদিনী) •ধরনঃ সামাজিক, রোমান্টিক, মনস্তাত্ত্বিক •প্রকাশনীঃ নবকথন প্রকাশনী •প্রচ্ছদঃ সাদিতউজ্জামান •পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৮৫ •প্রকাশকালঃ সেপ্টেম্বর ২০২৪ লেখনীতেঃ রিফায়াত হাসান সাকিব ♦ভূমিকাঃ অদ্ভুত সুন্দর রাতগুলোকে অন্ধকার যখন আঁকড়ে ধরে, আমি তখন বই নিয়ে বসতে চাই । বসতে গিয়ে মনে হয় জগতের এই আঁধার, এই নিঃসঙ্গতা আমাকে বই নিয়ে কল্পনা করার কথা বলে । যে কল্পনায় আমি সুখ খুঁজে পাই । এই সুখে কতটা তৃপ্তি তা কি আদৌ টের পাওয়া যায়? যায় না তো । তবুও আমি একরাশ অনুভূতি শুধু সাজিয়ে বসে থাকি বই পড়ার জন্য । একটা রাত আসবে, কখনোবা একটা বই পড়া হবে । সেই বইটা নিয়ে আলগোছে কখনোবা নিঃশ্বাস ফেলে আমি শুধু তাকিয়ে থাকবো অন্ধকার রাতের দিকে । এই মুহূর্তগুলো ভীষণ কাছের হয়ে ধরা দেয় সবসময় । ♦নামকরণঃ মানুষ একটা জীবন ভাসতে থাকা পৃথিবীতে শুধু নিজের জীবন বয়ে নিয়ে যায় কষ্টকে লুকিয়ে রাখার জন্য । যে কষ্ট মানুষকে কত টানাপোড়েন দেয়, কত আলোড়ন দেয় মানুষ শুধু তা নিয়েই ভেসে চলে যায় জীবনভর । এই জীবন যেন চাঁদের মতো সুখ এবং সৌন্দর্য নিয়ে তাদের পেছনের গল্প লুকিয়ে রাখার মতো করে জীবনভর বয়ে যায় । এই যে জীবনের এত এত মুহূর্ত, কতশত মুহূর্তে অগুনতি আলোড়নে বিশেষণের খেয়াল । এগুলো যেন মানুষ একজনম ধরে শুধু আঁকড়ে ধরেই জীবনটা কাটিয়ে দেয় । এই চন্দ্রকায়ার মতো লুকিয়ে রাখা শরীরটায় কতশত দুঃখের গল্প, কত নাম না জানা বিষণ্ণতার গল্প এবং মুখ লুকিয়ে থাকা কান্নার গল্প আছে তা কেইবা জানে! বোধহয় জীবনও জানে না । শুধু অদৃশ্যে দাঁড়িয়ে থাকা মন দেয়ালের রেশগুলোই টের পেয়ে যায় । ♦ফ্ল্যাপে লেখাঃ কুমুদ প্রথমে কিছুটা ভয় পেলেও পরক্ষণেই সাহসিকতার সাথে জিজ্ঞেস করল, “কে?” ওপাশ থেকে তখন মন্ত্রমুগ্ধের মতন প্রেমিক পুরুষ বলে উঠল, “কুমুদিনী, আমি । একটু খুলবেন কি এই অভিমানের জানালাখানা? মুখটুকু দর্শন না করলে ঘুম হবে না যে!” বুকের ভেতর অদৃশ্য হৃৎপিণ্ডটার শব্দ বেড়ে গেল দ্বিগুণ । সারা বিকেল যে শূন্যতাটা পুরো ব্যথায় জর্জরিত শরীরটাকে গ্রাস করে রেখেছিল, হুট করেই কিছু শব্দের ব্যবধানে সেই শব্দ জাদুর মতন গায়েব হয়ে গেল । কুমুদ ছুটে এসেই জানালাটা খুলল শান্ত হাতে । আকাশে জোছনা নেই । থাকলে হয়তো দক্ষিণের জানালা দিয়ে সে এসে হামাগুড়ি দিত তার পায়ের কাছে । আলিঙ্গন করে নিত এই প্রেম মুহূর্তের সবটুকু দৃশ্যকে । কুমুদের চোখে জল জমেছে । বিনা কারণে মিথ্যে রাগ জড়িয়ে প্রশ্ন ছুড়ল, “এখানে কী? তাও এত রাতে?” রবী হাসল কোমল ঠোঁটগুলো বাঁকিয়ে । টর্চ লাইটটা জ্বালিয়ে সেটার ওপর হাত রাখল আলোর উজ্জ্বলতা কমিয়ে আনতে । তারপর কুমুদের শুকনো মুখটির দিকে তাকিয়ে বলল, “দেখা দেননি যে! অভ্যাস হয়ে গিয়েছে । না দেখলে ঘুম আসে না তো ।” কুমুদের জল জমা চোখ হেসে ওঠে লজ্জায় । লজ্জা লুকানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে মেয়েটি, “এত দেখতে হবে না । লোকে জানলে কী হবে, বলো তো? মাইর খাওয়াব নাকি? রাতের বেলা এখানে এসেছ যে?” “আমি নির্দ্বিধায় তা খেতে রাজি । আপনাকে দেখার অপরাধে ফাঁসি হলে, আমি গলা পেতে নিব সেই দড়ি, তবুও দেখার লোভ কেমন করে ছাড়ি?” কুমুদ মুখ ভেংচায়, “বড়ো কবি হচ্ছ নাকি? মাইর খেলে ভূত নেমে যাবে ।” “নামুক ভূত, কিংবা কপালে আসুক শনি । আপনি বললে, আমি মরতে রাজি এক্ষুনি, এক্ষুনিই ।” ♦প্রচ্ছদঃ অদ্ভুত সুন্দর এবং হঠাৎ করে অন্যরকম হওয়া প্রচ্ছদটিকে দেখলে আমার কোথাও একটা ভালোলাগা কাজ করে । মনে হয় যেন কোথাও বিষণ্ণতার সুর যেন । এই বয়ে নিয়ে যাওয়া নদী, তার অদূরে দাঁড়িয়ে থাকা গাছ, একটা খোলা আকাশে কতকটা মেঘ, একটা চাঁদ তার জোছনা এবং একজন লাল শাড়ি পরিহিতা আঁচল হেলায় ছেড়ে দেয়া নারী কোথাও একটা যেন জীবনের গল্প বলে । যে জীবনের গল্পে কোথাও একটা অন্যরকম লাগতে চায় । অদ্ভুত সুন্দর প্রচ্ছদটির সামনের অংশে পাতা বিহীন গাছের একা হওয়া পাখি এবং পিছনের প্রচ্ছদটিতে পাতা থেকে যাওয়া দোকলা থাকা পাখি কোথাও যেন অদ্ভুত এক সৌন্দর্য নিয়ে আসে । জীবনের সৌন্দর্য । এই অদ্ভুত সুন্দর প্রচ্ছদটি তাই কোথাও একটা ভালো লেগে যায় । ♦পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ মন বিষণ্ণতার সুরে কোথাও একটা যেন শুধু তাকিয়ে থাকতে বলে । মনের এই তাকিয়ে থাকায় আমি একরাশ কেমন একটা অদ্ভুত অনুভূতির টের পাই । যে অনুভূতির আবছায়া ভাব আমি আমার জীবনে কখনও টের পাইনি । বেশ অনেকগুলো দিন পরে, অনেকগুলো মুহূর্ত ধরে যখন আমার এমন একটা উপন্যাস পড়তে খুব ইচ্ছে করছিল যে উপন্যাস বিষণ্ণতার গল্প বলবে । বলবে নিঃসঙ্গতার গল্প । ঠিক এরকমই এক উপন্যাসের অপেক্ষায় আমি যেন বসে ছিলাম । আদ্যোপান্ত মনের পাঠক দুয়ার খুলে দিয়ে যেন বসেছিলাম । এই উপন্যাস বিষাদের গল্প বলে । পুরোটা উপন্যাসের প্রতিটি পাতায় পাতায় আমি এক ধরনের বিষণ্ণতার হাতছানি যেন দেখতে পেলাম, যা কোথাও একটা অবসন্ন মনে নিঃশ্বাস নিয়ে তাকিয়ে থাকায় । এরকমই অনুভব আমাকে আবেগতাড়িত করে, অদ্ভুত কেমন একটা কষ্ট দেয় । অথচ ভালো লাগায় তৃপ্তিতে কেমন একটা লাগাতেও যেন চেষ্টা করে । ✓পটভূমিঃ এই উপন্যাসের শুরু নোঙরগাঁ গ্রাম থেকে । নব্বই দশকের জীবনের গল্প নিয়ে তৈরি পটভূমিতে উপন্যাসের গল্পে যেন তখনকার গ্রামবাংলার এক সুর । তখনকার ঐতিহ্যগত কিসসা, সামাজিক-রাজনৈতিক জীবন এবং ভাবাবেগে সংস্কার নামক টানাপোড়েন এর এক আখ্যান যেন কোথাও একটা বয়ে চলে । কোথাও একটা পটভূমিতে যেন তার প্রেক্ষাপট নিয়েই চরিত্রগুলোর মধ্যে অনুভূতি নামক আবেগ ভেসে বেড়ায় । অদ্ভুত অন্যরকম এই পটভূমিতে তাই গ্রামের তখনকার সময়ের জীবন, জীবনের গল্প এবং বিভিন্ন পরিস্থিতি চলে আসে । এই উপন্যাসের প্রেক্ষাপটে যেন তাই কোথাও একটা রাতের অন্ধকারের মতো নিঃসঙ্গতা এবং বিষণ্ণতা একই দলভুক্ত হয়ে যেন হেঁটেচলে বেড়ায় । এত অসাধারণ ভাবে নব্বই দশকের জীবনের সাথে প্রেক্ষাপট অনুযায়ী দৃশ্যপটগুলো বয়ে গিয়েছে যে কিছু কিছু জায়গায় ভীষণ ভালো লাগা এক অনুভূতি তৈরি হয়েছে । যার অনুভব যেন পুরোটা উপন্যাস জুড়ে বয়ে রেখেছিল আমাকে । সামাজিক সংস্কার এবং কিছু ভাবাবেগে মূল্যায়ন, জীবনের সমান্তরালে টানাপোড়েন, কষ্ট এবং সুখ যেন একই মুদ্রার এপিঠওপিঠ হয়ে বিরাজ করে রেখে দিয়ে যায় জীবনের সবকিছু । ✓আবহ গঠনঃ সাধারণত এই উপন্যাসের গল্প যেভাবে একই ধাঁচে বয়ে যায়, জীবনের গল্পের মুহূর্তগুলো ফুটে উঠে স্বাভাবিক ভাবেই তখন উপন্যাসের আবহ সৃষ্টি এবং প্রেক্ষাপটে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ এর এক আবছায়া টান কোথাও একটা আলগোছে যেন নিজের সুস্পষ্ট অস্তিত্ব নিয়ে আসেই । এই গল্পেও যেন তাই হয়েছে । কোথাও একটা আবহ যেন নিজে নিজেই গল্পের প্রয়োজনে নিজস্ব স্বকীয়তায় বয়ে চলেছে পুরোটা জুড়ে । হয়তোবা গল্পে ব্যবহৃত বিশেষণগুলোই কোথাও একটা গিয়ে এক ধরনের আবেগ তৈরি করেছে বলেই তা হয়েছে । বিষণ্ণতাই বোধহয় এর অন্যতম মূল কারণ । এই একই ভাবে, একইরকম মায়া নিয়ে চলে যাওয়া অদ্ভুত সুন্দর ভাবে একই ধাঁচে বয়ে চলা উপন্যাসটিকে তাই ভীষণ কাছের কাছের মনে হয় যেন । কোথাও একটা ভারসাম্য তৈরি করে দেয় যেন পুরোটা জুড়ে । ♦চরিত্র গঠনঃ এই উপন্যাসে চরিত্র গঠন খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ হয়ে আছে যেন । পরিস্থিতি এবং প্রেক্ষাপট অনুযায়ী যেন চরিত্রগুলো গঠন করা হয়েছে এবং তাদের সেভাবেই উপস্থিতি দিয়ে তাদের প্রতি এক ধরনের চাপ তৈরি করা হয়েছে । এবং সেভাবেই যেন নির্দিষ্ট বিভিন্ন প্রেক্ষাপট এবং দৃশ্যপটে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ বজায় রেখে চরিত্রগুলোর গঠন এবং গভীরতা টের পাওয়া যায় যেন । ♦চরিত্র বিশ্লেষণঃ •কুমুদঃ এই পৃথিবীতে মানুষের মনটা একটা নদীর মতো । নদীতে যেভাবে অজস্র পানিকে ধারণ করে তাদেরকে নিজস্ব অনুভবে রেখে দেয়া হয়, মানুষও যেন কতশত বিশেষণ এবং কত মুহূর্ত যেন শুধু মনের কোণে এক আলগোছে রেখে গিয়ে যায় । প্রচণ্ড আত্ববিশ্বাসী স্বভাবের মেয়েটি পরিবারকে ভালোবাসতে জানে । ভীষণ কর্মদক্ষ স্বভাবের মেয়েটি ধৈর্য নিয়ে শুধু অপেক্ষা করে যায় জীবনের । যে জীবনে সবকিছু একদিন ঠিক হয়ে যাবে । বন্ধুত্বপূর্ণ, হাসিখুশি স্বভাবের মেয়েটি কতশত রাত শুধু কাটিয়ে দেয় পরিবারের এবং ভালোবাসার জন্যেই । •কাননকাঁটাঃ হাসিঠাট্টা করা স্বভাবের মেয়েটির জীবনে হঠাৎ করে কিছু পরিস্থিতি তৈরি হয় । কোথাও একটা পরিস্থিতি বুঝে মানিয়ে চলতে পারা এ জীবনে তাকে ভীষণ কাছের বলে মনে হয় কোথাও একটা । বন্ধুত্বপূর্ণ স্বভাবের মেয়েটি সব পরিস্থিতির মুহূর্ত এবং গুরুত্ব যেন এক নিমিষেই বুঝে ফেলতে পারে । হালকা জেদ যেন তাকে কোথাও একটা বিশেষণে স্বয়ংসম্পূর্ণ ভাবাবেগ দেয় । •ডুমুরঃ বোনকে ভালোবাসতে চাওয়া মেয়েটি বোনের অনুভূতি এবং সাড়া কম পেলেই কোথাও যেন মন খারাপের এক অনুভব টানে । কোথাও একটা নিজেকে নিয়ে সামান্য মন খারাপের এক উদাসীন মুহূর্ত তাকে ভুল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চাওয়ায় যেন । কোথাও একটা যেন ভীষণ উদাসীন কিছু তাকে নিজের খেয়ালের অনুভবে কিছু বুঝতে শেখায় । •চমকঃ নিজের পরিবারকে ভীষণ ভালোবাসতে চাওয়া মানুষটি নিজের বোনদেরকে যেন গভীর মায়া নিয়ে প্রচণ্ড আঁকড়ে ধরতে জানে । পরিবারের মানুষদের থেকে একটু চাহনি নামক অদ্ভুত কিছু সঙ্গের আশা করা মানুষটি হঠাৎ কোনো এক পরিস্থিতিতে কিছু ভুল করে ফেলে । যার দায় তাকে জীবনের বিভিন্ন মুহূর্তে অনুভূতিতে বিষণ্ণতার আবছায়ায় দিতে হয় । শরীরে যেন তাই ছুঁয়ে দিয়ে যায় । •চম্পাকলিঃ কখনও শক্ত হয়ে রাগ করতে থাকা কখনোবা নরম হয়ে পরিবারকে আঁকড়ে ধরা মানুষটির জীবনে বিভিন্ন পরিস্থিতি আসে যেন । কোথাও একটা যেন জীবন থেকে হারিয়ে ফেলা উদাসীনতার গল্প বলে যেন । বিভিন্ন পরিস্থিতিতে পাশের মানুষদের মুহূর্ত হারিয়ে ফেলা এক নারীর গল্প যেন এটি । •কাজলীঃ জীবনের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কখনও মানুষ ছোট করে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে ফেলে, কোনো কিছু ভাবনাচিন্তা ছাড়াই । হুট করে ভাবনাচিন্তা না করে, ধৈর্যহীন স্বভাবের কাজলী যেন ঠিক সেরকমই একটা কেউ । কোথাও একটা ভুল হয়ে যায় যেন । •কলসিঃ ভালোবেসে ভালোবাসার মানুষটিকে পাশে চাওয়ায় আজন্ম এক শখকে ইচ্ছেতে পূরণ করতে চাওয়া নারীটির জীবনে ভালোবাসার মানুষটির থেকে অন্যরকম এক অনুভূতির টের পাওয়া হয় যেন । সেই অনুভূতি নিয়ে এই নারীটির জীবনে বিভিন্ন মুহূর্ত আসে । •রবীঃ দুঃখী, অর্থকষ্টে ভুগতে থাকা মানুষটি ভালোবাসতে গিয়েও যেন কোথাও এক ধরনের হারিয়ে ফেলার ভয় । পরিস্থিতি যেন তাকে প্রতিটি মুহূর্তে টানাপোড়েনের সমান্তরালে অদ্ভুত মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ এর মতো করে বয়ে নিয়ে যেতে চায় । কোনো এক পরিস্থিতিতে তার জীবনে কিছু মুহূর্ত ঘটে । •টুকিটাকি চরিত্রঃ এছাড়াও এই উপন্যাসে অদ্ভুত কিছু জীবনের ধাঁচে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলোর মতো চরিত্রের টের পাওয়া যায় । যারা জীবনের গল্প বলে । এই উপন্যাসে আছেন গফুর শেখ নামক একজন চরিত্র, যিনি পরিবারকে এক করতে চাওয়ার পাশাপাশি কোথাও এক অদ্ভুত উদাসীন মুহূর্তে কোথাও যেন চলে গিয়েছিলেন । এছাড়াও এখানে আছেন দীর্ঘদিনের পরিচিত, গ্রামবাংলার জীবনের টানাপোড়েনে নিজ স্বার্থ নিয়ে সুবিধা ভোগ করে চলতে চাওয়া এক নারী, আমেনার মা । এছাড়াও এই উপন্যাসে আছেন বিপদে সাহায্য করার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসা পাশে থাকা এক চরিত্র, লালিত্য । যে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ভালোবাসার মানুষটিকে প্রতিবন্ধকতা এড়িয়েও ভালোবাসতে চায় । আছেন নিজের সুবিধা অনুযায়ী স্বার্থ নিয়ে কাজ করে অন্যরকম মানসিকতার দর্পণ খন্দকার । এছাড়াও উপন্যাসে আছেন সাহায্য করার মানসিকতা নিয়ে মানুষের বিপদে এগিয়ে আসা বিনোদ দত্ত । অদ্ভুত সুন্দর জীবনে পাশাপাশি হাতে হাত রেখে মানুষকে যেন সাহায্য করে যান তিনি । এছাড়াও উপন্যাসে আছেন ভালোবাসার মানুষটিকে ভালোবেসে যাওয়া মিরাজ । শহরের আধুনিকতার আড়ালে মনমানসিকতা নিয়ে চলা টুনি । ভালোবাসার কথা বিভিন্ন বিশেষণে বিশেষায়িত করা এক চরিত্র আসমান । এছাড়াও এই উপন্যাসে আছেন অদ্ভুত আলস্যে, দূরে দাঁড়িয়ে থেকে সাহায্য করার মানসিকতা নিয়ে থাকা এক অদৃশ্য চরিত্র, যার অস্তিত্ব যেন পুরোটা জুড়ে । ♦প্রিয় চরিত্রঃ এই উপন্যাসের প্রিয় চরিত্র লিখতে গেলেই আমার মনে হচ্ছে, লিখে দেই যে এই উপন্যাসের চরিত্রগুলোর মধ্যে যে বিশেষণ করার বিশেষায়িত করার এক ধাঁচ । অদ্ভুত সুন্দর এক আলোড়ন । এই সম্পর্কের টানাপোড়েনে অদ্ভুত এক রসায়ন । এগুলোই প্রিয় চরিত্র হওয়া উচিত গল্পের অনুভূতি প্রকাশে । কিন্তু তবুও উপন্যাসের প্রিয় চরিত্র হয়ে কুমুদ থাকে । সেই কুমুদ যাকে কেউ কুমুদিনী বলে ডাকলে কেউ আবছায়া আলস্যে ফিরে তাকাবে না । বোধহয় অনুভবে চাহনি মেলে দেখবে না । কেউ অদ্ভুত এক চোখ মেলে কোনো ছায়াভেজা রাতে চন্দ্রকায়া নদীর আবছায়ায় কারো ছায়াকে তাকিয়ে থাকতে দেখে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়বে । সেই চরিত্রটি অর্থাৎ কুমুদ চরিত্রটি উপন্যাসের প্রিয় চরিত্র হয়ে থাকুক । ♦প্রিয় অংশঃ এই উপন্যাসের প্রথম যা প্রিয় অংশ ছিল তা হলো, এই উপন্যাসের ভূমিকা এবং উৎসর্গ অংশটুকু । এতটা মায়া নিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে যে কোথাও একটা ভালোলাগা কাজ করেছে যেন । এরপরে এই উপন্যাসের প্রিয় অংশ বলতেই আমার বারবার মনে পড়ে এই উপন্যাসের মাঝে বিরাজ করে বিষণ্ণতা, বিষাদ, কষ্ট এবং দুঃখ নামক বিশেষণগুলোকে । প্রতিটি পাতায় পাতায় যেন কোথাও এক ধরনের অদ্ভুত এক বিষণ্ণতার গল্প বলে যায় এটি । মানুষ নিজের মনে কতশত গলিঘুপচিতে লুকিয়ে রাখা দুঃখের গল্প, নিঃসঙ্গতার গল্প যে একজীবন ধরে আলগোছে লুকিয়ে রাখে তা যেন বড্ড ভীষণ প্রভাবিত করে । কতশত মুহূর্ত যেন এড়িয়ে গিয়ে মানুষ শুধু সুখ খুঁজে বেড়ায় । এছাড়াও এই উপন্যাসের অন্যতম প্রিয় অংশ হলো যেভাবে পটভূমি অনুযায়ী প্রেক্ষাপটে নব্বই দশকের জীবনটা সাজিয়ে লেখা হয়েছে, সেই অনুযায়ী গ্রাম এবং শহরের জীবনের পার্থক্য যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে । তা অসাধারণ ছিল । যেভাবে সেখানকার জীবন দেখানো হয়েছে । বেশ ভালো ছিল । এছাড়াও এই উপন্যাসের প্রিয় অংশ হিসেবে বলা যায় স্মৃতি বিষয়ক যে মুহূর্তগুলো । মানুষ যে একটা জীবন ধরে শুধু স্মৃতি জমা করে রাখে শুধু মুহূর্তগুলোতে সাজানোর জন্যে তা যেন কোথাও এক ধরনের অদ্ভুত মোহমায়া তৈরি করে । যে মায়া ক্ষণে ক্ষণে বাড়ে, ক্ষণে নিঃশ্বাস তৈরি করে । এছাড়াও অদ্ভুত বিষণ্ণ রাতগুলো কোথাও একটা কষ্ট নামক প্রিয় হয়ে থাকে । প্রিয় হয়ে থাকা চন্দ্রকায়া নদীকে দূর জানালা থেকে দেখা সেই রাতগুলো । যেখানে কারো ছায়াকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কল্পনা করা যায় । চন্দ্রকায়া নদীর বিষণ্ণতা যেন পুরো জীবনের গল্পের লুকায়িত এক ছাপের মতোই প্রাণহীন হয়েও প্রাণ নিয়ে বয়ে যেতে চায় । ♦সংলাপঃ উপন্যাসের সংলাপ এবং শব্দচয়ন প্রেক্ষাপট হিসেবে বেশ ভালোভাবে করা হয়েছে । বর্ণনা ভিত্তিক এই উপন্যাসে যতটুকু সংলাপের জায়গা ছিল তা যেন কোথাও এক ধরনের ভালো লাগা দিয়েছে । ভারসাম্য বজায় রাখতে কাজ করেছে । ♦লেখক প্রসঙ্গেঃ বেশ অনেকগুলো দিন আগে কয়েক লাইনের একটা ছোট গল্প পড়েছিলাম লেখক মম সাহা এর । সেটাই এখন পর্যন্ত আমার তার লেখা প্রথম এবং শেষ পড়া ছিল । আমার কখনও তার লেখা ফেসবুকে পড়া হয়নি । ‘চন্দ্রকায়া’ লেখক মম সাহা এর প্রকাশিত হওয়া প্রথম উপন্যাস । কোথাও একটা বিষণ্ণতা, নিঃসঙ্গতা, বিষাদ এবং বিরহ এই মুহূর্তগুলো খুঁজে যাওয়া উপন্যাসগুলোর প্রতি পাঠক হিসেবে এক আজন্ম লোভ থেকেই লেখকের বইটি নেয়ার ইচ্ছে হয়েছিল আমার । মনে হয়েছিল এমন কোনো কিছু দরকার, যা আমার অনুভূতিতে তীব্র এক নিঃশ্বাস দিবে । এক অদ্ভুত আবেগতাড়িত ক্ষণ তৈরি করবে । এই বই যেন ঠিক সেটিই করলো । চন্দ্রকায়া নামক চাঁদের মতো দেহে চাঁদ যেমন সৌন্দর্যের আড়ালে তার কলঙ্ক লুকিয়ে রেখে দুঃখবিলাস করতে চেয়েও মানুষকে সুখ দিয়ে যায় । আমরাও বোধহয় সেরকমই কোনো এক সযতনে চোখ মুখ এবং চাহনি দিয়ে মনের কাছাকাছি মুহূর্তগুলোকে লুকিয়ে ফেলে দ্বিধাভরে এগিয়ে চলে যাই । এরকমই এক বিষাদ, দুঃখ এবং আবছায়া এক কষ্টের জীবনের এক অদ্ভুত হাতছানি মাখা এই উপন্যাসটি পড়তে যেভাবে লেখক পুরো পটভূমিটি সাজিয়েছেন তা অসাধারণ ছিল । এরকম লিখনশৈলী ফুটিয়ে তোলার জন্য সূক্ষ্ম বিভিন্ন মুহূর্ত এর খেয়াল রাখা জরুরি । তাও দারুণ ভাবে করা হয়েছে । এছাড়াও উপন্যাসে যেহেতু বিভিন্ন বিশেষণে বিশেষায়িত, তাই মনস্তাত্ত্বিক কিছু টানাপোড়েন জীবনের সমান্তরালে বয়ে গিয়েছে, তাও অসাধারণ ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে । এছাড়া বর্ণনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি বেশ ভালো ছিল । লেখার মাঝে বেশ গভীরতা আছে । লেখক মম সাহা এর পরবর্তী লেখাগুলোর জন্য শুভকামনা রইলো । ♦প্রকাশনীঃ নবকথন প্রকাশনী এর লেখা অনেকগুলো বই পড়া হয়ে গেল । এই বইটি সম্পর্কে যা বলবো তা হলো, বইটির প্রচ্ছদটি দারুণ ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে । বইটির সামনের এবং পিছনের দুই অংশের প্রচ্ছদটি এত সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যে ধরে দেখতেও কোথাও এক ধরনের শান্তি শান্তি টের পাওয়া যায় যেন । এছাড়া বইটির ভিতরেও যেভাবে সাজানো হয়েছে তা বেশ ভালো । বইটিকে যেভাবে বাঁধাই করা হয়েছে কিংবা পৃষ্ঠা বাঁধাই করা হয়েছে তাও বেশ ভালো । এই বইটিতে তেমন একটা বানান ত্রুটি নেই । যা বইটি পড়তে বেশ ভালো লাগা দেয় । জলছাপগুলোও দারুণ ভাবে সাজানো হয়েছে । ♦রেটিংঃ ৫/৫ ♦উপসংহারঃ কতগুলো দিন আগে আমার সংগ্রহে এই বইটি এসেছিল আমার বর্তমানে ঠিক মনে নেই । কিন্তু কোথাও একটা যেন এই বইটিকে দেখে আমার মনে হয়েছিল, আমি ঠিক যেরকম ধরনের লেখা পড়তে ভালোবাসি, তারই কোনো একটা ধরনের এই লেখাটা পড়তে আমার ভালো লাগবে খুব । অথচ এই বইটি আমি এতদিনে পড়িনি । শুধু অপেক্ষা করেছি একটা নিঃসঙ্গ রাতের । যে রাতের আঁধারে বইটা পড়তে আমার ঠিক ওই চন্দ্রকায়া নদীর ছায়া বিহীন রাতে দাঁড়িয়ে থেকে ভীষণ উদাসীন মনে হবে সেরকম একটা রাতে । পৃথিবী কেমন হয় তা ঠিক জানা নেই, তবে কোথাও যেন জীবনের দুঃখ, বিষণ্ণতার মতো করে সুখগুলোও ভীষণ নিঃসঙ্গ ধরনের হয় । তবে সুখগুলো বিলিয়ে দিয়ে ভাগ করে নেয়া গেলেও অন্যান্য বিশেষণগুলো বোধহয় খুব কম পাওয়া যায় । এই তো জীবন, ওই জোছনা রাতের আলোছায়ায় নিঃশ্বাস ফেলে একাকী বসে থাকার মতোই জীবন!
Was this review helpful to you?
or
রহস্যময় একটা বই, প্রতিটি পৃষ্ঠায় চমক
Was this review helpful to you?
or
খুবই সুন্দর বইটা আজকেই হাতে পেয়েছি সাথে বুকমার্ক,নোটপ্যাড এবং লেখিকার অটোগ্রাফ ছিলো ভাবতে পারিনি রকমারি থেকে অর্ডার করলে এগুলো পাবো ধন্যবাদ।
Was this review helpful to you?
or
এ বইয়ে লেখিকা গ্রাম এবং শহরের দুটি জীবনযাত্রার আলাদা চিত্র তুলে ধরেছেন তবে দুঃখজনক হলো এদের কোনটার সাথেই কোনটার যুগের মিল নেই। তাছাড়া কিছুটা খাপছাড়া লিখা আছে যা গল্পে না হলেও চলতো।এসবের পাশাপাশি ভাষাগত কিছু অসামঞ্জস্যতা লক্ষণীয়। আর পুরো গল্পটায় একটা ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে বেশ কয়েকটি চরিত্রের সাথে সেটা হচ্ছে পরকীয়া। সর্বোপরি বইটি ব্যক্তিগত ভাবে আমার ভালো লাগে নি।