User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
knowledge should not be free, but comfortable for anyone. because of so much price this book unworthy for buying all classes of pupil.
Was this review helpful to you?
or
সোফির জগৎ বইটি অসাধারণ ?।ঠিক যেমন কভারপেজ দেখে অর্ডার করছিলাম ঠিক তেমনই পেয়েছি। ??
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন একটা বই
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
সেরা সেরা??
Was this review helpful to you?
or
কিছু বই পড়তে হয়। জীবনকে জানতে জীবনের কিছু অংশ ব্যয় করতে হয়। অন্যথায় এ জীবন বৃথাই রয়ে যায়। আমার ভেতর আমি কে জানতে এই বইটি অনবদ্য ভুমিকা রাখে। প্রিয় একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃ সোফির জগৎ লেখকঃ ইয়স্তেন গার্ডার অনুবাদঃ জি এইচ হাবীব প্রকাশকঃ সন্দেশ জনরাঃ ফিলোসোফি মুদ্রিত মূল্যঃ ৬০০ টাকা পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৫৪০ পার্সোনাল রেটিংঃ ৫/৫ আসলে কিছু বইয়ের প্রতি ভালোবাসা ভাষায় প্রকাশ যায় না। আমার জীবনে পড়া বইগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো এই বইটি। এক কথায় বলতে জাস্ট ভালোবাসা৷ আমি নরমালি অনেক দ্রুত বই পড়ি কিন্তু এই বইটি শেষ করেছি প্রায় ১ মাস সময় নিয়ে। কারণ এইটা শুধু গো থ্রো করে যাওয়ার বই না। প্রত্যেকটা অধ্যায়, প্রত্যেকটা দার্শনিক টার্ম বুঝতে পারলে আলাদা একটা রোমাঞ্চ অনুভব করতে পারবেন৷ দর্শনশাস্ত্রের জন্য একটা রিমার্কেবল একটা বই৷ দার্শনিক টার্ম গুলা এত সহজভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যে যেকেউ খুব সহজে তা বুঝতে পারবে৷ তাছাড়া আছে জগদ্বিখ্যাত দার্শনিকদের জীবনধারা আর তাদের চিন্তা চেতনা। দর্শনশাস্ত্র সাধারণত অনেকের কাছেই বোরিং লাগে। কিন্তু এই বইয়ে আপনাকে একটি মোমেন্টের জন্যও বোরিং ফিল করতে দিবে না। হ্যা দার্শনিক টার্ম গুলার জন্য মাঝে মধ্যে মাথায় গিট্টু লাগতে পারে কিন্তু যখন এগুলো ছাড়াতে পারবেন তখন আলাদা একটা আনন্দ পাবেন৷ নন্দকানন, টপহ্যাট, প্রকৃতিবাদী দার্শনিকবৃন্দ থেকে শুরু করে ডেমোক্রিটাস, সক্রেটিস, প্লেটো, এরিস্টটল, হেলেনিজম আরো অনেক অনেক দার্শনিক ও তাদের দর্শন সম্পর্কে বলা হয়েছে। এক কথায় বলতে ডেমোক্রিটাস এর আগে থেকে শুরু করে ডারউইনীয় দর্শন ও বিজ্ঞান পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে বর্ণনা করা হয়েছে। আসলে আমার কাছে বইটা এতটাই ভালো লেগেছে যে যত বলি ততই কম লাগতেছে৷ বইটি শুরু হয় সুন্দর একটি উক্তির মাধ্যমে " তিন হাজার বছর যে কাজে লাগাতে পারে না তার জীবন অর্থহীন।" — গ্যেটে কাহিনী সংক্ষেপঃ সোফি অ্যামুন্ডসেন নরওয়ের বাসিন্দা৷ মাত্র চৌদ্দ বছর বয়স কিন্তু খুব শীঘ্রই ১৫ বছর হয়ে যাবে তার। স্কুল থেকে ফেরার পর ডাকবাক্সে দুটি চিঠি দেখতে পায়। চিঠি দুটো তার জন্যেই পাঠানো। আর চিঠিতে থাকে দুটি অদ্ভুত প্রশ্নঃ "তুমি কে?" আর " পৃথিবীটা কোথা থেকে এল?"। প্রেরক হলো আলবার্টো নক্স নামের এক দার্শনিক। আর এভাবেই শুরু হয় দর্শনের জগতে তার এক অসাধারণ অভিযান। এভাবে বেশকিছু চিঠি আর কিছুদিন পর তার স্বশরীরে ও তার কুকুর হার্মেসের মাধ্যমে শুরু হয় সোফির দর্শন শিক্ষা আর সোফির কৌতূহলী মনের সামনে একের পর এক প্রশ্ন তুলে ধরা ও সেগুলো সমাধান করা৷ আর বলবো না বাকিটুক আপনারাই পড়ে জেনে নিন কোথায় গিয়ে থামে সোফির এই জার্নি। আর আলবার্টো নক্সই বা কে? কেন সোফিকে সে শিক্ষা দিতে চায় দর্শনবিদ্যা? সোফির জগৎটাই কি?? জানতে হলে পড়ুন এবং ঘুরে আসুন সোফির জগৎ থেকে।
Was this review helpful to you?
or
Outstanding
Was this review helpful to you?
or
দর্শন শুরু করার জন্য বেস্ট
Was this review helpful to you?
or
বাংলা ভাষায় অনুদিত দর্শন বিষয়ক একটি অনন্য বই, যার মূল গল্প ও অনুবাদ উভয়ই অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
একটি অসাধারন বেস্ট সেলার উপন্যাস |
Was this review helpful to you?
or
দর্শন বিষযটা বরাবরই সাধারনের কাছে দুর্বোধ্য। সেই দুর্বোধ্য দর্শনকে পাঠকের কাছে একটা গল্পের মোড়কে উপস্থাপন করেছেন লেখক। দর্শনের জটিল বিষয়গুলোকে খুব সহজ উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়েছেন। আর এই কাজ করতে সৃষ্টি করেছেন এক ভিন্ন গল্প৷ সোফি নামের একটি মেয়ের কাছে কিছু উড়ো চিঠি আসতে শুরু করে আর সেখানেই থাকে দর্শনের গূঢ় প্রশ্নগুলো। পরে জানা যায় প্রশ্নগুলো করেছেন অ্যালবার্টো নক্স নামের দর্শনেরই এক প্রফেসর। এবং ক্রমে ক্রমে উত্তরও তিনি দিয়েছেন। সোফির চিন্তাকে এলোমেলো করে দেওয়া এসব প্রশ্ন আর উত্তর খোঁজার এই যাত্রার মাধ্যমে লেখক পুরো পাশ্চাত্য দর্শনকে সহজ করেছেন আমাদের সামনে। আর সেই লেখার অসাধারণ অনুবাদ করেছেন জি এইচ হাবীব। বইটি যেমন দর্শনের ইতিহাসে চমৎকার সংযোজন তেমনি অনুবাদটিও আমাদের অনুবাদ জগতে চমৎকার সংযোজন।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের শুরুতেই আমরা পাই গ্যেটের বলা দারুণ এক উক্তি - "তিন হাজার বছর যে কাজে লাগাতে পারেনা তার জীবন অর্থহীন। দার্শনিকদের এই তিন হাজার বছরের চিন্তার ইতিহাসকে গল্পে গল্পে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে বইটিতে। এটা এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলার মতো বই না। প্রতিটা লাইন আপনাকে ভাবাবে, মাঝেমাঝে ধাক্কা দেবে, মাঝেমাঝে দেবে অদ্ভুতরকমের প্রশান্তি। কিছু রহস্য রাখা হয়েছে গল্পে, আমার মতো অস্থির মানুষদের ইচ্ছে করবে চট করে শেষ অধ্যায়টা দেখে নেই। ডোন্ট ডু দ্যাট। ধৈর্য ধরে আস্তে আস্তে পড়ুন।
Was this review helpful to you?
or
পাশ্চাত্য দর্শনের জগতে প্রবেশের জন্য সবচেয়ে সহজ চয়েস হতে পারে এ বইটি। সারা বিশ্বে প্রায় বিশ মিলিয়ন কপি বিক্রি বলে দিচ্ছে বইটির জনপ্রিয়তার কথা। ১৪ থেকে ১৫ তে পা দিচ্ছে এমন মেয়ে সোফি স্কুল থেকে ফিরে দেখলো তার চিঠির বাক্সে তার জন্য দুটি চিঠি। প্রত্যেকটাতে একটি করে প্রশ্ন। একটাতে রয়েছে: ‘তুমি কে?’ আর অপরটাতে রয়েছে-‘পৃথিবী কোথা থেকে আসলো?’ এভাবে শুরু হলো একজন রহস্যময় দার্শনিকের সাথে পত্রবিনিময়। সেই রহস্যময় দার্শনিকের কাছ থেকে সে জানতে লাগলো সক্রেতিস থেকে একেবারে সার্ত্রে পর্যন্ত দর্শনের অভিযাত্রার কাহিনী। বইটি মূলত একটি উপন্যাস। আছে থ্রিলার, সাসপেন্স ও রহস্যের সমাহার। মূলত শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা হলেও বড়রাই এর থেকে পুরো সুবিধা নিতে পারবে। দর্শনকে মানুষের কাছে সহজলভ্য ও সহজবোধ্য করার ক্ষেত্রে নরওয়ের লেখক ইয়োস্তেন গার্ডারের এই প্রয়াসকে সাধুবাদ জানানো উচিত সব পাঠকের!
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন একটা বই। আপনাকে খুব ধীরে ধীরে নিয়ে যাবে অসীম এক চিন্তা ভাবনার জগৎ এ। অসাধারন থ্রিলিং আপনাকে উঠতে দিবেনা বই ছেরে। আমি শেষ না করে অন্য কিছুতে মন দিতে পারিনি সত্যি কথা। দর্শন আর মেটাফিকশান মিলিয়ে এমন সাকসেসফুল বই এর আগে পাইনি আমি।"সোফির জগৎ" অনায়াসে পাঠ্যপুস্তক হতে পারে, গল্পের ছলে দর্শন এবং গল্পের ছলে নিজেকে জানা।
Was this review helpful to you?
or
সোফির জগৎ' নিয়ে কথা একটি অসাধারন বেস্ট উপন্যাস যাদের দর্শন আগ্রহের বিষয়,তাদের সবার এই বইটি পড়া উচিত।।
Was this review helpful to you?
or
দু'হাজার বছর আগের এক গ্রীক দার্শনিক বিশ্বাস করতেন দর্শনের জন্ম মানুষের বিস্মিত হওয়ার ক্ষমতার মধ্যে। দর্শন, দর্শনতত্ত্ব বা দর্শনশাস্ত্র। এই শব্দগুলোর অর্থ কি..? শুধুই কি খুব মনোযোগ নিয়ে তাকিয়ে কোন কিছু অবলোকন করাই দর্শনের সংজ্ঞা নাকি কেবলই তাকিয়ে দেখে সেই ব্যাপারটা নিজের মধ্যে অন্তঃস্থ করা...? আসলে দর্শনের সংজ্ঞা কি তাহলে...? না শুধু আমি কিংবা আপনি না মানব সভ্যতার শুরু থেকে এখন অবধি এই উত্তর খুঁজে গেছেন সব বিখ্যাত মানব মানবী। তবে হ্যা অনেকটা বেশী যুক্তিনির্ভরভাবে বলা যায় যে মানুষের বিস্মিত হওয়ার ক্ষমতার মধ্যেই দর্শনের সূত্রপাত। 'তুমি কে'..? 'পৃথিবীটা এলো কোথা থেকে'...? হ্যা মানব সভ্যতার ইতিহাসের সবচাইতে বেশী বিতর্কিত এই প্রশ্নগুলো। শুধু মানব মানবীর কথাই না। আপনি তাকিয়ে দেখছেন আকাশ, প্রকৃতি, জীবজগৎ, প্রাণীজগৎ ইত্যাদি, অনুভব করছেন বাতাস। জনম জনম ধরেই কি এমনই ছিলো সব..? আচ্ছা সব ঘোড়া দেখতে একরকম কেন...? অন্যরকম ও তো হতে পারতো। আবার বলা যায়, মুরগী যদি আগে এসে থাকে তাহলে আমরা জানি ডিম ফুটেই বাচ্চা বের হয়ে মুরগী হয় তাহলে ডিমটা এলো কোথ থেকে..? বিজ্ঞানীরা বলে, পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে আসলেই কি তাই নাকি সূর্যই পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে..? এই যে পৃথিবীর প্রকৃতি একটা নিয়ম মালার ভেতর দিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করে প্রতিনিয়ত টিকে থাকছে এগুলো কি যুগ যুগ ধরেই এমন ছিলো নাকি ধর্মমতে ইশ্বরের কারুকাজ এগুলো...? এসব প্রশ্নের উত্তর খোজা শুরু হয়েছে বলতে গেলে মানব সভ্যতার শুরু থেকে এবং এখন অবধি এসব প্রশ্নের উত্তর খানিকটা অমীমাংসিত হিসেবেই মীমাংসিত হয়। এসব ব্যাপার জানার আগ্রহ বা ইচ্ছা থেকেই মানুষ তিন হাজার বছর আগেকার ইতিহাস পড়ে থাকে। ঠিক এই সব প্রশ্নের বিভিন্ন সময়কালের মনীষী বা দার্শনিকরা তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিকে যেভাবে তুলে ধরেছিলেন তারই এক সারমর্ম রচনা করেছেন নরওয়েজিয়ান লেখক ইয়স্তাইন গার্ডার "সোফির জগত" নামক বইটিতে। তিন হাজার বছরের পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন মাত্র ৫০০ পাতায় তাও সোফি নামক এক চৌদ্দ বছরের মেয়ের চিন্তা ধারা দিয়ে। তিন হাজার বছর যে কাজে লাগাতে পারে না তার জীবন অর্থহীন। সোফির জগত বইটিতে চরিত্র অনেক হলেও মূল চরিত্র ১৪ বছর বয়সী সোফি অ্যামুন্ডসেন এবং তার দর্শন শিক্ষক অ্যালবার্টো নক্স। একদিন সোফি স্কুল থেকে ফেরার পথে বাসার ডাকবাক্সে একটা চিঠি পায় যার মধ্য দিয়ে সেই দর্শন শিক্ষকের সাথে তার পরিচয় হয়। এছাড়া সোফির মা হেলেন অ্যামুন্ডসেন, সোফির বান্ধবী জোয়ানা, সোফির সমবয়সী আরেকটি মেয়ে হিল্ডা মোল্যার ন্যাগ এবং তার বাবা মেজর আলবার্ট ন্যাগ বলতে গেলে এরাই প্রধান চরিত্র এই বইটির। কাহিনীচিত্র : নরওয়ের কোন এক সুন্দর দিনে চৌদ্দ বছর বয়সী সোফি অ্যামুন্ডসেন আর তার বান্ধবী জোয়ানা ইঙ্গেবিগ্রেস্টেন স্কুল শেষে আধুনিক প্রযুক্তির রোবট নিয়ে কথা বলতে বলতে বাড়ির দিকে ফিরতে থাকে। এক তিন রাস্তার মোড়ে এসে দুজন আলাদা হয়ে যায় যে যার বাড়ির উদ্দেশ্যে। সোফি নিজের বাড়ির সামনে এসে ডাকবাক্সে কৌতুহলবশত উঁকি দেয় সমুদ্রে থাকা বাবার কোন চিঠি এলো কিনা তার জন্য। একটা চিঠি পায় সোফি কিন্তু তাতে ওর নিজের নাম লেখা। সোফি বেশ অবাক হয়। দ্রুত বাসায় যেয়ে চিঠিটা খুলে সোফি। চিঠিটাতে শুধু একটা প্রশ্নই লেখা 'তুমি কে'...? সোফি আয়নায় দাঁড়িয়ে নিজের প্রতিবিম্বকে জিজ্ঞেস করে একই কথা কিন্তু সোফি এও জানে প্রতিবিম্বটা আর প্রশ্নকারী সোফি অ্যামুন্ডসেন নিজেই। কৌতুহলবশত আবার ডাকবাক্সের কাছে যায় সোফি এবার আরেকটি চিঠি পায় তাতে লেখা 'পৃথিবীটা এলো কোথা থেকে'....? সোফ বিশাল ভাবনায় পড়ে যায়। একটা চৌদ্দ বছরের মেয়ে কিভাবে জানবে পৃথিবীটা কোথ থেকে এলো, সোফি তাই ভাবতে থাকে। অনেকগুলো দিন কেটে যায়। সোফি জানতে পারে বেনামি চিঠিগুলো মূলত একজন দার্শনিক আলবার্টো নক্স এর কাছ থেকে আসে ওর কাছে। দর্শন কোর্সে অনেকখানি এগিয়েছে সোফি। এরিমধ্যে সোফি চিঠি, ভিডিও মারফত জানতে পেরেছে প্রকৃতিবাদী দার্শনিকদের কথা, ডেমোক্রেটাসের কথা, সক্রেটিসের কথা, এথেন্সের নগর সভ্যতার ইতিহাসের কথা আরো সাথে জেনেছে প্লেটোর কথা। হঠাৎ করে সোফির কথাবার্তা আর চালচলনের খানিকটা পরিবর্তনে সোফির মা ভাবে হয়তো মেয়েটা ড্রাগ নিচ্ছে নাহয় বয়সে বড় কারো সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছে। এইসব নিয়ে কথা বলার মাঝেই সোফি একটা চিঠিতে তার দর্শন শিক্ষকের নাম জানে আর সেদিনই হিল্ডা মোল্যার ন্যাগ নামে তার সমবয়সী এক মেয়ের হারিয়ে যাওয়া স্কার্ফ আবিষ্কার করে নিজের বিছানাতে। সোফি বেশ অবাক হয়। এটা কিভাবে সম্ভব...? সোফির বাসার পিছন দিকে একটা ঝোপ আছে তার ভিতরে সোফির নিজের জন্য বসার একটা জায়গা আছে যেটা দেখতে অনেকটা গুহার মতো। এটা সোফির একান্তই গোপন জায়গা। কিন্তু সেই ঘটনার পর থেকে সোফি ডাকবাক্সের বদলে এই গোপন আস্তানাতেই চিঠি গুলো পায় কিন্তু প্রত্যেকটি চিঠির প্রান্ত ভেজা আর দুটো ফুটো থাকে তাতে। সোফি বুঝতে পারে তার উপর কেউ নজর রাখছে। এমনই একদিন বিকেলে গুহায় বসে ছিলো সোফি এমন সময় খেয়াল করে গুহার পেছনের ঝোপ আর বেড়ার ফাক দিয়ে একটা বড় সাইজের ল্যাব্রাডার কুকুর মুখে একটা খাম নিয়ে সোফির গুহার মুখে রাখছে। সোফির নড়াচড়া টের পেয়ে কুকুরটা বেড়ার ফাক দিয়ে বের হয়ে ছুট দেয় বনের মধ্যে সোফিও পেছন পেছন যায় বনের মধ্যে কিন্তু ধরতে পারে না। পরদিন চিঠিতে জানতে পারে কুকুরটার নাম হার্মেস আর ওই প্রতিদিন চিঠিগুলো এনে গোপন জায়গায় রেখে যায়। সোফি আরেকদিন সুযোগ বুঝে কুকুরটার পেছন নিয়ে বনের মধ্যে দিয়ে একটা লেকের কাছে চলে আসে দৌড়াতে দৌড়াতে। লেকের অপরপাড়ে একটা ঘর দেখে সোফ ভাবে এটাই সেই দর্শন শিক্ষকের বাসা। পাড়েই একটা নৌকা দেখতে পায় সোফি। ওপাড়ে যেয়ে তাড়াহুড়ো করে ঘরটায় ঢুকে সোফি। কিন্তু কেউ নেই সেখানে। ফেরার সময় টেবিলের উপর নিজের নাম লেখা একটা খাম দেখতে পায় সোফি। নিবে কি নিবে না সেই চিন্তা করতে করতে চোখ পড়ে এক পেতলের আয়নায়। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর সোফি খেয়াল করে আয়নাতে থাকা প্রতিবিম্বটা একসাথে দুই চোখ বন্ধ করে তাকে চোখ টিপ দিয়েছে। সোফি ভয় পায়। নিজের নাম লেখা খামটা নিয়ে সোফি দৌড়ে বেড়িয়ে আসে কিন্তু এসে দেখে তাড়াহুড়োতে নৌকাটা পাড়ে না উঠানোতে ওটা এখন লেকের মাঝামাঝি ভাসছে। সোফির প্রচন্ড ভয় লাগে। কি হয় শেষমেশ...? সোফি কি সেখান থেকে বাড়ি ফিরতে পারে...? আয়নাতে যে মেয়েটা দুই চোখ টিপলো সেইই কি হিল্ডা মোল্যার ন্যাগ যার স্কার্ফ সোফি নিজের বিছানায় পেয়েছিলো..? কে এই হিল্ডা মোল্যার ন্যাগ..? আর তার বাবাই বা কে মেজর আলবার্টো ন্যাগ যিনি তার মেয়ের সবকিছু একটা মেয়েকে একটা সোফিকে পাঠাচ্ছে..? কি তার গোপন উদ্দেশ্য..? কিংবা সোফির দর্শন শিক্ষক কি আসলেই রক্তমাংসে মানুষ নাকি সোফির কল্পনা...? নাকি সোফির মায়ের ধারনাই ঠিক যে সোফি ড্রাগ নিচ্ছে নাহয় বয়সে বড় কারো সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছে...? মোদ্দা কথা কে এই আলবার্টো নক্স যিনি নিজেকে সোফির দর্শন শিক্ষক হিসাবে জাহির করেছেন আর কেনইবা সোফিকেই দর্শনের শিক্ষা দিতে চান...? এসব জানতে হলে আপনাকে এক নিমিষে পড়ে শেষ করতে হবে ইয়স্তাইন গার্ডার এর সোফির জগত বইটি। যেটি একটি দার্শনিক রহস্য উপন্যাস। তিন হাজার বছরের পাশ্চাত্য দর্শন তিনি শুধুমাত্র ৫০০ পেইজে সীমাবদ্ধ করেছেন তাও একজন টিনেজ চৌদ্দ বছর বয়সী সোফির সাহায্যে। আলবার্টো নক্সের করা প্রশ্নগুলো আপনাকেও কুড়ে কুড়ে খাবে আর গোর্ডারের লেখনীর জাদুতে আপনি সোফিকে সাথে নিয়ে চলে তিন হাজার বছর আগেকার দার্শনিক যুগে। লেখক প্রসঙ্গ : ইয়স্তাইন গার্ডার একজন নরওয়েজিয়ান লেখক যিনি মূলত তার কর্মজীবন শুরু করে নরওয়ের একটা বিশ্ববিদ্যালয় এ। যেখানে তিনি একজন দর্শন শিক্ষক হিসেবে কর্তব্যরত ছিলেন। সেই সময়কালে লেখেন এই বিশ্ববিখ্যাত বইখানা। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে বইটিকে একটি মিউজিক্যালে রুপান্তর করার পর লক্ষ লক্ষ কপি বিক্রি হয় বইটার আর বাড়তে থাকে জনপ্রিয়তা। ইয়স্তাইন গার্ডারের এই শিল্পকর্ম এখন অবধি ৫৩ টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে আর প্রায় তিন কোটি কপির অধিক বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ইয়স্তাইন গার্ডার এখন পুরোদস্তর লেখক হওয়াতে তার অন্যান্য বইগুলো বেশ খ্যাতি লাভ করেছে পুরো বিশ্বজুড়ে। 'দ্যা সলিটারি মিস্ট্রি' আর 'দ্যা অরিজিনাল গার্ল' তার অন্যতম সেরা বই। অনুবাদ প্রসঙ্গ : খুব দক্ষ হাতে অনেকটা টাইম নিয়ে এমন একটা সাহিত্যকর্মের অনুবাদ করতে হয়। আর এই অনুবাদটি ছিলো একেবারেই সেই রকম। শব্দচয়ন, বাক্যগঠন খুবই দক্ষতার সাথে করা হয়েছে তা প্রতিটা লাইনেই বুঝা যায়। জি এইচ হাবীব বা গোলাম হোসেন হাবীব এই অনুবাদ তাই অনেকটা বেশী সহজ আর সাবলীল ভাষায় হয়েছে তবে সপ্তাহের জায়গায় হপ্তা ব্যাপারটা একটু বেখাপ্পা মনে হয়েছে। সত্যিকার অর্থে কি আপনার মনে যদি উপরে বর্ণিত প্রশংগুলো উদয় হয় আর তিন হাজার বছরের দার্শনিক ইতিহাস জানতে ইচ্ছে হয় তাহলে অন্যান্য বই পড়ে জানার চেয়ে এই এক বইতে আপনি অনেক বেশী জানতে পারবেন।
Was this review helpful to you?
or
সোফি অ্যামুন্ডসেন। চৌদ্দ বছর বয়েসী এই নরওয়েজিয় কিশোরী একদিন বাসার ডাকবাক্সে উঁকি মেরে দেখতে পায় সেখানে কে যেন অবাক করা দুটো চিঠি রেখে গেছে। চিঠি দুটোতে শুধু দুটো প্রশ্ন লেখা : ‘তুমি কে?’ আর ‘পৃথিবীটা কোথা থেকে এলো?’ অ্যালবার্টো নক্স নামের এক রহস্যময় দার্শনিকের লেখা আশ্চর্য চিরকুট দুটোর সেই কৌতূহল উস্কে দেয়া প্রশ্ন দু’খানি-ই সূত্রপাত ঘটিয়ে দিল প্রাক-সক্রেটিস যুগ থেকে সার্ত্রে পর্যন্ত পাশ্চাত্য দর্শনের রাজ্যে এক অসাধারণ অভিযাত্রার। পর পর বেশ কিছু অসাধারণ চিঠিতে আর তারপর সশরীরে, পোষা কুকুর হার্মেসকে সঙ্গে নিয়ে, অ্যালবার্টো নক্স সোফির কৌতূহলী মনের সামনে দিনের পর দিন একের পর এক তুলে ধরলেন সেই সব মৌলিক প্রশ্ন যার জবাব বিভিন্ন দার্শনিক আর চিন্তাশীল মানুষ খুঁজে ফিরছেন সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকে। কিন্তু সোফি যখন এই চোখ ধাঁধানো আর উত্তেজনায় ভরা আশ্চর্য জগতে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই সে আর অ্যালবার্টো নক্স এমন এক ষড়যন্ত্রের জালে নিজেদের বাঁধা পড়তে দেখল যে খোদ সেটাকেই এক যারপরনাই হতবুদ্ধিকর দর্শনগত প্রহেলিকা ছাড়া অন্য কিছু বলা সাজে না। উপন্যাসের ছলে সোফির জগৎ প্রকৃতপক্ষে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছে পাশ্চাত্য দর্শনের একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু প্রাঞ্জল ইতিহাস। তবে এখানে সোফি যেহেতু তার দর্শন শিক্ষককে নানান প্রশ্ন করছে , নিজের মেধা ও বুদ্ধি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, আরসেই সঙ্গে পাঠককেও উদ্বুদ্ধ করছে সেই চিন্তা ভাবনার খেলায় শামিল হতে , তাই বইটি শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠেছে অত্যন্ত চিত্তার্ষক এবং ভাবনাসঞ্চারী। দর্শন সম্পর্কে ভীতিমূলক ধারণা অমূলক প্রমাণে সোফির জগৎ যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে সে আশা হয়ত করা যেতে পারে। নরওয়েজিয় ভাষায় লেখা মূল বইটির এই বঙ্গানুবাদটি করা হয়েছে, লেখকের অনুমতিক্রমে, পঅলেট মোলারকৃত ইংরেজি অনুবাদ থেকে। লেখক : ইয়েস্তান গার্ডর এর জন্ম ৮ আগস্ট ১৯৫২ সালে। নরওয়ের বার্গেন শহরে দর্শন পড়িয়েছেন তিনি দীর্ঘদিন। এখন সর্বক্ষণের লেখক; নিবাস অসলো, স্ত্রী এবং দুই পুত্র সহ। ১৯৯৮ সালে সোফির জগৎ কে অত্যন্ত সফলভাবে একটি মিউজিক্যালে রূপ দেয়া হয় এবং জার্মানীতে সেটারপ্রথম পার্ফর্মেন্সের সময় বিক্রি হয় বইটির লক্ষ লক্ষ কপি। এ পর্যন্ত ইয়স্তেন গার্ডার যে কয়টি গ্রন্থ রচনা করেছেন তার সব কটিই ইংরেজিতে অনুবাদ হয়েছে। বাংলায় অনুবাদ হয়েছে আটটি। অনুবাদক : জি এইচ হাবীব (গোলাম হোসেন হাবীব) এর জন্ম ১৯৬৭ সালে ঢাকায়। মিরপুরের শহীদ আবু তালেব উচ্চ বিদ্যালয় ও মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ এর মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা মেসে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে অধ্যয়ন করেন। তারপর বছর দুয়েক সাংবাদিকতা করে যোগ দেন অধ্যাপনায়।
Was this review helpful to you?
or
ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া আমার মা মনিটা বইটি হাতে পাওয়ার সপ্তাহ খানেকের মধ্যে পড়ে ফেলেছে। তার ভাষায় ‘বইটি দারুন’।
Was this review helpful to you?
or
জানার আনেক কিছু আছে ।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা উপন্যাস যা এক কথায় বলে শেষ করা সম্ভব না। অনুবাদক জি এইচ হাবীবের অনুবাদটা সত্যিই প্রশংসার দাবীদার, যদিও লেখক নিজেও বলেছেন যে কঠিন বইগুলি অনুবাদ করতে তাঁর বেশ ভালো লাগে। কী নেই এই বইটিতে! দর্শন, ইতিহাস, ধর্মসহ দার্শনিক চিন্তার খোরাক---কি বলবো এ যেনো সমস্ত বিষয়াদির এক পসরা সাজিয়ে বসেছেন লেখক তার এই উপন্যাসটিতে। যাঁরা দর্শন ভালোবাসেন, জানতে চান দর্শনের আদিপন্ত্য, যারা জানতে চান ইতিহাসের কথা (যদিও অতোটা নেই) তাঁরা অবশ্যই বইটি পড়বেন। এই বইটা আমার কাছে ম্যাজিকের মতো কাজ করেছে, কেনো জানি মন্ত্রমুদ্ধের মতো করে পড়েছি তবে গিলিনি কেননা এটা গলাধঃকরণের বই না, চিন্তার অনেক খোড়াক জন্মে! বইটা পড়ার পর বুঝতে পারলাম কেনো পুরো পৃথিবী ব্যাপি এই বইটা এতোটা সমাদৃত। আমি অস্বীকার করবো না অনেক অজানা তথ্য আমি জানতে পেরেছি এই বইটা পড়ার মাধ্যমে। বইটা একবার না বারবার পড়ার মতো।
Was this review helpful to you?
or
সোফির জগতের কথা প্রথম শুনেছিলাম ২০০৪ সালে। এক শনিবার, এসেম্বলিতে প্রিন্সিপাল তার বক্তৃতায় বলেছিলেন। নরওয়েজীয় ভাষায় মূল বইটির নাম "সোফিস ভার্ডেন", লেখক ইয়স্তেন গার্ডার। পলেট মোলারকৃত ইংরেজি অনুবাদের নাম "সোফিস ওয়ার্ল্ড"। আর ইংরেজি থেকে বাংলা করেছেন জি এইচ হাবীব, নাম দিয়েছেন "সোফির জগৎ"। জি এইচ হাবীব আমাদের কলেজের প্রাক্তন ছাত্র, প্রথমে মনে হয়েছিল বিশেষভাবে এই বইয়ের নাম বলার কারণ বোধহয় এটাই। পরে কলেজ লাইব্রেরিতে বই হাতে নিয়ে দেখি, অন্য কারণও আছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষক জি এইচ হাবিব বইয়ের ভূমিকায় মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের অধ্যক্ষ "কমলপুরাণ" ও "তিন পুরুষের রাজনীতি" খ্যাত রফিকুল ইসলামকে (রফিক কায়সার) বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিয়েছেন, প্রকাশের আগেই বইটি পড়ে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়ার জন্য। কলেজ ভাইয়ের অনুবাদ দেখে, পড়ার উৎসাহ বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, ৫০ পৃষ্ঠা পড়ার পরই পাঠকের মৃত্যু হল। কারণ জানি না। খাবার টেবিলে আমার পাশে বসতেন শাহরিয়ার ভাই। অনেক করে বললেন, প্রথম থেকে আবার পড়তে। তারপরও পড়া হয়নি। প্রায় চার বছর পর, এই সেদিন কিনে পড়া শুরু করলাম। এবারে দর্শনের প্রতি বিশেষ আগ্রহ থেকে। পড়তে গিয়ে প্রথমে খুব ভাল লাগে। রহস্য দিয়ে উপন্যাসের শুরু। সোফি নামের ১৪ বছরের এক নরওয়েজীয় কিশোরী তার বাসার মেইল বক্সে স্বাক্ষরবিহীন চিঠি পেতে শুরু করে। প্রথম চিঠিতে কেবল একটি বাক্য লেখা, তুমি কে? এই প্রশ্নই সোফিকে দ্বিধায় ফেলে দেয়। আমি সোফি আমুন্ডসেন, এই উত্তর তাকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। পরের চিঠিতে লেখা, বিশ্বটা কোত্থেকে এল? নিজে নিজেই আকাশ-পাতাল ভাবতে থাকে। কোন হদিস পায় না। তবে এটা বুঝতে পারে যে, প্রশ্নগুলো নিয়ে ভাবতে তার ভাল লাগছে। এর পরই শুরু হয় দর্শনের কোর্স। তৃতীয় চিঠি হিসেবে পায় টাইপ করা তিনটি পৃষ্ঠা। এভাবেই প্রাক-সক্রেটীয় যুগ থেকে দর্শন শিক্ষার সূচনা ঘটে, শেষ হয় আধুনিক যুগে জঁ-পল সার্ত্র্-এর অস্তিত্ববাদে এসে। সোফিকে দর্শন শেখাচ্ছিলো আলবার্তো নক্স নামের এক প্রৌঢ় দার্শনিক। নক্স তাকে বলে, দর্শনের ইতিহাস যেন এক গোয়েন্দা গল্প। এভাবে সোফির গোয়েন্দাগিরির পরিসর আরও বৃদ্ধি করা হলো। কারণ, সোফিকে প্রথমেই অনুসন্ধান করতে হচ্ছিল, কার কাছ থেকে এই বেনামী চিঠিগুলো আসছে? অচিরেই এই রহস্যের সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু তখনই এক অদ্ভুত সমস্যা দেখা দেয়। সোফি এবং নক্সের জগতে এমন কিছু ঘটনা ঘটতে থাকে যার কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই, নিছক অলৌকিক। আলবার্তো ন্যাগ নামের কেউ তাদের সাথে এই অলৌকিক-অলৌকিক খেলা খেলছে। দেখে মনে হয়, ন্যাগের কোন ঐশ্বরিক ক্ষমতা আছে। এটুকু তারা প্রথমেই বুঝতে পারে যে, আলবার্তো ন্যাগের মেয়ের নাম হিল্ডা মোলার ন্যাগ যার বয়স সোফির সমান অর্থাৎ ১৪ বছর। এটাও বুঝতে পারে, হিল্ডার বাবা সোফির বাবার মত বাসার বাইরে থাকে। তবে সোফির বাবা মেরিন অফিসার, আর হিল্ডার বাবা জাতিসংঘ শান্তি রক্ষী মিশনের মেজর যার পোস্টিং বর্তমানে লেবাননে। আলবার্তো ন্যাগ কিভাবে তাদের নিয়ে খেলা করছে, দর্শন কোর্সের পাশাপাশি এটা নিয়েও চিন্তা করতে হয় সোফি ও আলবার্তো নক্সকে। তাদের সূত্র হিসেবে থাকে হিল্ডার জন্মদিনকে উদ্দেশ্য করে সোফির প্রযত্নে হিল্ডার কাছে পাঠানো আলবার্তো ন্যাগের পোস্টকার্ডগুলো। সোফি এবং আলবার্তো নক্স দর্শনের ইতিহাসে অভিযান চালানোর পাশাপাশি নিজেদের অস্তিত্ব খুঁজে পেতে চেষ্টা করে। এক হিসেবে বলা যায়, অস্তিত্ব অন্বেষণের এই প্রচেষ্টা না থাকলে, সোফির জগৎ কেবলই দর্শনের এক পাঠ্যবই হতো। তার মানে, সোফি ও আলবার্তো নক্সের অস্তিত্বের সন্ধানই উপন্যাসের কাহিনী তৈরী করেছে। কাহিনী বিচারে একে অধিসাহিত্য (মেটাফিকশন) বলা যায়, অর্থাৎ পাঠক একসময় বুঝে যাবেন যে তিনি একটি উপন্যাস পড়ছেন। অধিসাহিত্য আগে কখনও পড়িনি। "অ্যাটোনমেন্ট" সিনেমাটি অধিসাহিত্য থেকে করা। কিন্তু, অ্যাটোনমেন্ট উপন্যাস তো আর পড়া হয়নি। সে হিসেবে অন্য ধরণের এক মুগ্ধতা কাজ করেছে। সোফির জগৎ আধুনিক "থ্রো দ্য লুকিং গ্লাস"-এর মোড়কে শিক্ষণবিজ্ঞানের এক সফল সৃষ্টি। সাহিত্য হিসেবে সফলতা যদিও খুব বেশি না। টাইম ম্যাগাজিনের সমালোচক জন ইলসন তো বলেই দিয়েছেন, As fiction, Sophie's World deserves no better than a D . But as a precis of great thought, Gaarder's tour de force rates a solid B. আমি অবশ্য সাহিত্য বিচারে একে ডি দেব না। আমার কাছে সোফির জগৎকে "এ-" এর যোগ্য বলে মনে হয়েছে। এন্টারটেইনমেন্ট ডেইলিতে "এ-" দেয়া হয়েছে। উপন্যাসের নামের নিচেই লেখা, দর্শনের ইতিহাস বিষয়ক একটি উপন্যাস। বইয়ে পাশ্চাত্য দর্শনের কোন কিছুই বাদ পড়েনি। তবে এক গৌতম বুদ্ধ ছাড়া এতে প্রাচ্য দর্শনের তেমন কিছুই নেই। প্যাগান এবং মধ্যযুগীয় মুসলিম দর্শনকেও এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। তার পরও মুগ্ধ না হয়ে পারিনি। প্রথম দিকেই গ্যেটের কবিতার একটি চরণ পড়েছিলাম, যে তিন হাজার বছরকে কাজে লাগাতে পারল না, তার জীবন ব্যর্থ। সোফির জগৎ পড়ার পর মনে হয়েছে, তিন হাজার বছর কাজে লাগাতে না পারলেও কিভাবে কাজে লাগাতে হবে তা অন্তত বুঝতে পেরেছি। আমার মনে হয়েছে, সোফির জগৎ যে কোনও মনোযোগী পাঠকের জীবন পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে পারে। ইয়স্তেন গার্ডারের অন্যান্য উপন্যাসের মত, সোফির জগতেরও দুটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য আছে। প্রথমত, কিশোরের দৃষ্টি দিয়ে দেখা এবং দ্বিতীয়ত, শেখানোর চেষ্টা। এ ধরণের উপন্যাসের বেস্টসেলার হওয়ার কথা না। তারপরও সোফির জগৎ দীর্ঘ ৪ বছর নরওয়েতে বেস্টসেলার তালিকায় এক নম্বরে ছিল। পৃথিবীর যে দেশেই প্রকাশিত হয়েছে, সে দেশেই বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বাংলাদেশেও সোফির জগৎ কম বিক্রি হয়নি। এটা দেখেও খুব ভাল লেগেছে। এটাই প্রমাণ করে যে, সাধারণ মানুষ প্রাচীন ধর্ম এবং অতিপ্রাকৃতের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করছে। তারা সবকিছুর জাগতিক ব্যাখ্যা চাচ্ছে। এ কারণেই দর্শনের জটিল সব প্রশ্নের একটি সহজ উত্তরকে এভাবে লুফে নিয়েছে। স্টিফেন হকিংয়ের "আ ব্রিফ হিস্টরি অফ টাইম" যে কারণে জনপ্রিয় হয়েছিল, সোফির জগতের জনপ্রিয়তার কারণও অনেকটা সেরকম। অনেকে তো সোফির জগৎকে "আ ব্রিফ হিস্টরি অফ টাইম"-এর দার্শনিক প্রত্যুত্তর হিসেবে দেখছেন।
Was this review helpful to you?
or
২০১৭ সালের দিকের কথা। মার্চ মাসে আমি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিরছিলাম। বাসের মধ্যে হঠাৎ করে কেন যেন মনে হচ্ছিলো “সোফির জগৎ” বইটা আমাকে পড়তেই হবে এখনি, বলতে এখনি। ক্যাম্পাস থেকে ফিরে বইটা নামালাম। যেহেতু অনেকটা সময় আমাকে রাস্তায় কাটান্তেই হয় জ্যামের কল্যাণে, সেহেতু পিডিএফ পড়া একটু বেশি হয়। বইটা আমি বেশ ছোটবেলায় আমার ছোটমামার কাছে দেখেছিলাম। বইটা কেন যেন আমাকে খুব টানে। “সোফির জগৎ” নরওয়েজীয় লেখক ইয়স্তেন গার্ডার এর লেখা একই সাথে দার্শনিক আর রহস্যময় উপন্যাস। “এলিস এন্ড দি ওয়ান্ডারল্যান্ড” সেই রূপকথার গল্প মনে আছে? আমাদের সবারই কম বেশি জানা সেই এলিসের অদ্ভুত গল্প। সোফি অ্যামুন্ডসেন । মাত্র চৌদ্দ বছর বয়েসী এক নরওয়েজীয় কিশোরী। একদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে বাসার লেটারবক্সে দেখতে পায় দুটো বেশ অদ্ভুত চিঠি। চিঠি দুটোতে শুধু অদ্ভুত দুটো প্রশ্ন লেখা : ‘তুমি কে?’ ‘পৃথিবীটা কোথা থেকে এলো?’ কে? আমি কে? কে জানে আমি কে? আমি কি জানি? অ্যালবার্টো নক্স ও তার রহস্যময় কুকুর হার্মেস । এই দুই জন এর সাথে সোফির পরিচয়ের শুরু সেই দুটো চিঠির মধ্যে দিয়ে। প্লেটো- সক্রেটিস, কে নেই সোফির পাশে? সবাই সোফির সামনে, সোফির শিক্ষক হিসেবে হাজির। সবাই অদ্ভুত ভাবে এসে অদ্ভুত ভাবেই হারিয়ে গেল। এভাবে দিন কেটে যায়। ঘটনাক্রমে সোফির বন্ধু জোয়ানা এই সব কিছুর সাথে জড়িয়ে গেল। একদিন হঠাৎ করেই সোফি জানতে পারে, তাকে খুঁজে বের করতে হবে হিন্ডা নামের এক বালিকা কে। কিন্তু কে এই হিন্ডা? কে সোফি? কে জোয়ানা? কে আমি? শেষের পৃষ্ঠার চমক যে কত বড় এক অদ্ভুত চমক । আমি পড়ে প্রথমে বুঝে উঠতে পারিনা। বার তিন পড়তে হয়েছে বুঝার জন্য। পাঠ-প্রতিক্রিয়াঃ কে আমি? নিজেকে আবার প্রশ্ন করুন। আমার আমি কে জাগাতে বই টার তুলনা এই বইটাই। বইটা আবার পড়ার তালিকাতে রেখে দিয়েছি। অদ্ভুত এক বই! প্রত্যেকটা বাক্য সেলফ মোটিভেশনের জন্য অতুলনীয়। বই পড়লে নিজেকে অন্যভাবে জানতে পারবেন। আর বই পড়া শেষ এ একটা প্রশ্ন মাথায় আসবেই, কে আমি? বিশেষ করে শেষ এর অংশটা পড়ে আমি অনেক্ষন চুপ করে ছিলাম। আমি আসলে বুঝতে পারসিলাম না কি হল এটা? কিভাবে হল? মাথা কাজই করেনি। এরপরে বুঝলাম এমন অদ্ভুত ঘটনা আসলে সম্ভব? হ্যা অথবা না।