User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নাম:রাখাল লেখক:লতিফুল ইসলাম শিবলী। প্রকাশক:কেন্দ্রবিন্দু যতক্ষণ তুমি নিজের সৌন্দর্য টের পাও না,ততক্ষণই তুমি সুন্দর।জেনে গেলে অহংকার তোমাকে কুৎসিত করে দেয়" "একাকিত্ব খুব ভয়ংকর জিনিস।এটা কাউকে কাউকে মেরে ফেলে।আর কাউকে কাউকে মহান মানুষের পরিণত করে।" "পার্থিব ভালোবাসা তোমাকে স্বর্গের সুখ দেবে ঠিকই,কিন্তু তোমাকে হত্যা করার সুযোগ পেলে নরকের যন্ত্রণা দিয়েই সেটা করবে।" "দোস্তির মতো দুশমনিরও একটা সীমা আছে,সেটা অতিক্রম করতে হয় না" ব্রিটিশ শাসিত ভারত।জঙ্গল তরাই এর জমিদার রামদেব ঘোষাল পরলোকগমন করলেন।রেখে গেলেন শেষ বয়সে সন্তানের আশায় বিয়ে করা যুবতী স্ত্রী পূর্বা দেবীকে।ইংরেজ আইন অনুসারে তিনিই হবেন জমিদারির মালিক।কিন্তু রামদেব ঘোষালের ভাই বাসুদেব ঘোষাল জমিদারি কুক্ষিগত করতে আশ্রয় নেন জঘন্য এক প্রথার।নিজ বৌদিকে সতীদাহের মধ্য হত্যা করতে চান তিনি।নিজ প্রভাব এবং ধর্মভীরু জনগণের আবেগ কাজে লাগিয়ে ব্যাপারটাকে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেন।ধুম পড়ে যায় এলাকায়।ওদিকে পূর্বা দেবী তার খাস চাকরানী কুন্তীর সাহায্যে পালিয়ে যায়।জমিদারদের বাথানের রাখাল তাকে নিয়ে লুকিয়ে রাখে জঙ্গলে।যাকে আগে থেকেই কুন্তী ঠিক করে রেখেছিল।সেই ছিলো একমাত্র পুরুষ, যার চোখে কুন্তী আগুন নয়, দেখেছিলো আলো।রাখাল পূর্বা দেবীকে রাখে পাহাড়ের চূড়ায় এক পরিত্যাক্ত ঈগলের বাসায়।যেখান থেকে পূর্বা নতুন করে দেখেন পৃথিবীর সৌন্দর্য।যেখানে তাদের মাঝে বিনিময় হয় আধ্যাত্মিকতা,মুগ্ধতার। অন্যদিকে বাসুদেব ঘোষাল উঠেপড়ে লাগে পূর্বা দেবীকে খুঁজতে।তার অনুগত ঠগী বাহিনীকে লেলিয়ে দেয় সে।যার প্রধান বাহরাম জমাদারের আছে ৮৯৩ খুনের রেকর্ড।রামদেব ঘোষালের মরদেহ আর রাখতে না পেরে অনুমরণ প্রথা বের করে সে,যেখানে পূর্বা দেবীকে পোড়ানো হবে আলাদাভাবে। সময়টা এমন যখন কলকাতা প্রস্তুত হচ্ছিল নতুন কিছুকে স্বাগত জানাতে।যেখানে অনেক প্রচলিত ধ্যানধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে বসে রাজা রামমোহন রায়ের নেতৃত্বের ব্রাহ্মসভা।প্রশ্ন করতে থাকে প্রচলিত হিন্দু ধর্মের কিছু প্রথা নিয়ে যেগুলো আসলে ধর্মের অংশই না।বিশেষ করে সতীদাহ বন্ধ করতে তারা উন্মুখ।আর হিন্দু কলেজে অধ্যাপক ডিরোজিও ' ইয়াং বেঙ্গল ' প্রতিষ্ঠা করে প্রশ্ন করতে থাকেন প্রচলিত নিয়মকে। তাদেরই প্রতিনিধি মাধবচন্দ্র ইংরেজদের সাহায্যে প্রাণপণে উঠেপড়ে লাগে পূর্বা দেবীকে বাঁচাতে।তাও ধর্মের সত্যিকার রূপ উন্মোচনের দ্বারা।যেকোনো মূল্যে সে বন্ধ করতে চায় এই অনাচারকে । বাহরাম জমাদারের গোয়েন্দাগিরিতে তারা খুঁজে পায় রাখালকে।নিয়ে যায় পূর্বা দেবীকে অচেতন রাখালকে দুই ঠগি কবর দিতে নিয়ে গেলে আক্রমণের শিকার হয় বাঘের।ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় রাখাল।পূর্বা দেবীকে আবারও উঠানো হয় চিতায়।তারপরের অসাধারণ কিছু পেতে পড়তে হবে বইটি। বইয়ের লেখনী যেনো শিল্পীর তুলির আঁচড়।বর্ণনার গভীরতা,সহজবোধ্যতা,আধ্যাত্মিকতা সব মিলিয়ে শিবলীর মহত্ব খুঁজে পাওয়া যায় এখানে।ঘটনা পরম্পরা আটকে রাখবে পাঠকদের।পেতে পারেন থ্রিলার বইয়ের সাসপেন্স।কাহিনী প্রবাহ খুবই সাবলীল।কোনো ঘটনাকেই অতিরঞ্জিত মনে হবে না।বিভিন্ন বর্ণনার গভীরতা নিশ্চিতভাবেই আপনার হৃদয় ছুঁয়ে যাবে।বিশেষ করে ছোটবেলার পূর্বা দেবীর মাসীকে চিতায় ওঠানোর বর্ণনা যেনো আপনি নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করলেন।বর্ণনায় অতি সুক্ষতা বিরাজমান।সাথে লেখনশৈলী চমৎকার।জঙ্গল এবং ঈগল পাখির বাসার সৌন্দর্য মোহিত করবে আপনাকে।চরিত্রগুলো প্রতিটি নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ ভাবে প্রকাশ করেছে।বইয়ের প্রোডাকশন চমৎকার।পেপারব্যাক এডিশন হিসেবে খুবই টেকসই এবং ভালো মানের পেজ কোয়ালিটি। বইটি থেকে জানা যাবে তৎকালীন কলকাতা বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের পুনর্জাগরণের চিত্র,তৎকালীন সমাজ বাস্তবতার পূর্ন ছবি।সাথে অসাধারণ আধ্যাত্মিকতা।যেটা আপনাকে বুঝতে শিখাবে, "সত্যের জন্যে বাঁচো,সত্যের জন্যে মরো"