User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
a must read book!?
Was this review helpful to you?
or
এককথায় মাস্টারপিস। নিতাইয়ের অসমাপ্ত গানের চার কলি এখনো কানে বাজছে- 'এই খেদ আমার মনে মনে ভালোবেসে মিটল না আশ-কুলাল না এ জীবনে। হায়, জীবন এত ছোট কেনে? এ ভুবনে?'
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ উপন্যাস। ভালবেসে মিটলো না সাধ,কুলালো না এ জীবনে, হায় জীবন এতো ছোট কেনে, এ ভুবনে..... এই কথাগুলো খুব ভাল লাগছে।
Was this review helpful to you?
or
অনুভূতিরা কোথায় জন্ম নেয় নাটক,সিনেমা,রকস্টারের কনসার্টে? প্রেমিক-প্রেমিকার আলিঙ্গনে? হয়তো। তবে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি অনুভূতিরা মনে হয় জন্মায় বইয়ের পাতায়। সাদা কালো লাল নীল ধূসর আর নাম না জানা কত অজানা রঙের অনুভূতি যে বইয়ের অক্ষর থেকে উঠে এসে মগজে আঘাত করে,এই পৃথিবীর ভাষায় তাদের সবার নাম দেয়াও সম্ভব নয়। এই পৃথিবীতে তারা জন্মায় না। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত 'কবি' উপন্যাসের এই প্রথম লাইনটিই পাঠকের সকল আকর্ষণ কেড়ে নিতে বাধ্য করবে। আমি মুগ্ধ হয়ে হারিয়ে যাচ্ছিলাম শব্দের মাঝে। পাতা উল্টানোর সাথে সাথে অনাবিল প্রশান্তি ছেঁয়ে যাচ্ছিল, অত্যন্ত মার্জিত বর্ণণা আর ভিন্নধর্মী প্লট। হতে পারত গল্পটা মজার, হতে পারত মুখে এক চিলতে হাসি ফোটানোর মোক্ষম উপায়। কিন্তু ইচ্ছেরা যে ধরাছোঁয়ার বাইরে। কিছু বই পড়ার পর বাকরুদ্ধ হয়ে থাকতে হয়, অনুভূতিরা বিবশ হয়ে যায়, মনে বিষাদের মেঘেরা কুণ্ডলী পাঁকিয়ে ঘুরে বেড়ায়। এই বইটা এমন-ই। বইটি সূক্ষ্ণ বিশ্লেষণ করার ধৃষ্টতা দেখানোর যোগ্যতা নেই, শুধু এতোটুকুই বলব- কিংবদন্তি অবশ্যই পাঠ্য। ঈষৎ জীবনবোধ, কিছুটা অপ্রাপ্তি, খানিকটা বিরহের আবহ, আর প্রেমময় কিছু অনুভূতি - এক কথায় অচিন্তনীয় অনুভূতির পরশ পেয়েছি। অনেকদিন পর কোনো বই পড়ে এতটা তীব্র অনুভূতি হলো, অনেকদিন পর কোনো বই পড়ে কেমন একটা হাহাকার কাজ করছে বুকের ভেতর! যারা এই ছোট্ট জীবনটাতে তাদের ভালোবাসার মানুষকে পেয়ে যায়, ভালোবাসার মানুষকে ভালোবাসার সুযোগ পায়, তারা কতটা সৌভাগ্যবান, তারা কি জানে? তাদের জানা উচিত। অ্যাপ্রিশিয়েট করা উচিত। ভালোবাসার মানুষটাকে আঁকড়ে ধরে রাখা উচিত। হায়, জীবন এত ছোট কেনো?
Was this review helpful to you?
or
OSTHIR EKTA BOI
Was this review helpful to you?
or
#সপ্তর্ষি_রকমারি_বুকরিভিউ_প্রতিযোগ নামঃ সাদিয়া ইসলাম মৌ জেলাঃ মুন্সিগঞ্জ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ শ্রীনগর সরকারি কলেজ ইমেইলঃ [email protected] বইয়ের নামঃ কবি লেখকঃ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বইয়ের ধরণঃ উপন্যাস কলেজে থাকতে বাংলার শিক্ষক বলে ছিলেন – বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ দু’টি উপন্যাসের মধ্যে “কবি” একটি । সেই থেকে এই বই পড়ার ইচ্ছা । কলেজের লাইব্রেরিতে থাকলেও তখন এই বই পড়ার সাহস এবং সময় করে উঠতে পারি নি । পরবর্তীতে একদিন দোকানে পেয়ে গেলাম এবং বগল দাবা করলাম । আমার একটি প্রশ্ন আছে – “গোবরে পদ্মফুল” এর উদ্ভাবন কি এই উপন্যাসের পরেই হয়েছে? প্রশ্নটা মনে জাগার পিছনে যথেষ্ট কারণ আছে। "শুধু দস্তুরমত একটা বিস্ময়কর ঘটনাই নয়, রীতিমত এক সংঘটন। চোর ডাকাত বংশের ছেলে হঠাৎ কবি হইয়া গেল” একটা সময় ছিল যখন সমাজের নিচু বংশের কেও যদি ভাল কাজ করত তাহলে বাহবা না দিয়ে তার অর্জন নিয়ে হাসিঠাট্টা করা হত। ‘কবি’ উপন্যাসে লেখক ঠিক সেই সময়েরই এক হতভাগা কবিয়ালের জীবনের গল্প তুলে ধরেছেন যার জন্ম ডোমবংশে, নাম নিতাইচরণ। বংশের সবাই চোর ডাকাত হলেও নিতাইয়ের স্বপ্ন ছিল কবিগান। সেবারের মেলায় কবিয়ালের অনুপস্থিতিতে কবিগানের সুযোগ পেয়ে মুহূর্তেই নিতাই তাক লাগিয়ে দিল মেলার সবাইকে। সেই থেকে শুরু হল এক কবিয়ালের জীবনের গল্প। পরিবার আর সমাজ থেকে নিতাই পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিল বন্ধু রাজনের কাছে, শুরু করলো স্টেশনে কুলিগিরির কাজ। বেশিরভাগ সময় কুলির কাজ করে, আর বাকিসময় ঘরে বসে করে কবিগানের চর্চা। এসময় পরিচয় হয় রাজনের শালিকা ঠাকুরঝির সাথে। কালো বর্ণের মেয়েটার প্রতি নিতাইচরণের আকর্ষণ বাড়তে থাকে। নিতাই গান লিখে- “কালো যদি মন্দ তবে কেশ পাকিলে কাঁদ কেনে?” সম্পর্কটা ধীরে ধীরে প্রণয়ের দিকে যেতে থাকে। কিন্তু ঠাকুরঝি বিবাহিত, তাই নিতাইচরণের জন্য তার পরিবারে দেখা দেয় বাকবিতণ্ডা। তখন নিতাই চলে যায় দূরে, ঠাকুরঝিকে ফেলে অনেক দূরে। তারপর উদ্দেশ্যহীন নিতাই যোগ দেয় ঝুমুরের দলে যাদের কাজ ছিল গান বাজনা, নাচ এবং বেশ্যাবৃত্তি। সেই দলে নিতাইয়ের সাথে পরিচয় হয় বসন্তের (বসন)। প্রথমে টুকটাক খুনসুটি, খুনসুটি থেকে প্রণয় আর প্রণয় থেকে বিয়ে। কিন্তু নিতাইয়ের মনে তো আগেই বাসা বেঁধে রেখেছে ঠাকুরঝি। তাহলে এক মনে দুজনকে ঠাই দেয় কি করে! তাই সে গান লিখে ফেলল- “এই খেদ মোর মনে, ভালোবেসে মিটল না আশ, কুলাল না এ জীবন হায়! জীবন এত ছোট কেনে, এ ভুবন.. ©Sadia Islam Mou
Was this review helpful to you?
or
~ #Rokomari_Book_Club_Review_Competition পোস্ট :- ৮ প্রতিযোগির নাম :- Mohammed Siddik তিরিশোওর এর বাংলা কবিতার একটি স্থান দখল করে আছেন কবি আল মাহমুদ।আধুনিক বাংলা কবিতায় ত্রিশ দশকের প্রবনতার মধ্যেই তিনি ভাটিবাংলা জনজীবন,গ্রামজীবন,নর-নারী,প্রেম-বিরহ বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছেন।আধুনিক বাংলা ভাষার প্রচলিতভাবে আঞ্চলিক শব্দ প্রয়োগ করে কাব্য জগতে নতুন সৃষ্টি করেছিল।জীবনান্দ দাশ কিংবা জসীমউদ্দীন থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র আল মাহমুদের শব্দালঙ্কার নান্দনিকতায় বর্ণনায় ছিলেন অসামান্য ধ্রুপদী।একজন মৌলিক কবি হিসেবে তিনি বাংলা কবিতা ভিন্নমাত্রা যোগ করেছেন।তার মৌলিক নীতি প্রবর্তন অসাধারণ সব চিত্রকল্প নির্মাণে প্রকাশ করেছিল "সোনালী কাবিন" কাব্যগ্রন্থে।এটিই তার কবি প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করেছিল। ৪৪ টি কবিতার সংকলনে এ কাব্যগ্রন্থের কবিতা গুলো গ্রামীণ আবহে রচিত। "সোনালী কাবিন" আল মাহমুদের তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ।এই গ্রন্থে বিভিন্ন শিরোনামের কবিতায় ১৪ সনেটের সমন্বয়ে "সোনালি কাবিন" নামে একটি কবিতা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।এটিকে আলাদাভাবে একটি ক্ষুদ্র কাব্যগ্রন্থ বলা যেতে পারে।অন্য কবিতাগুলো জাতিস্মর,পালক ভাঙার প্রতিবাদে, ক্যামোফ্লাজ,শোণিত সৌরভ,তোমার আড়ালে ইত্যাদি।প্রথম নাম ঠিক করা হয়েছিল 'অবগাহনের শব্দ' পরবর্তীতে নামটি পরিবর্তন করা হয়। পুরো কাব্যগ্রন্থটি গ্রামীণ আবহে উঠে এসেছে বঞ্চিতদের ক্ষোভ,শ্রমিকের ঘাম,কৃষকর পরিশ্রমের কথা।বাদ যায়নি যৌন প্রসঙ্গ এসবের মধ্যেই তিনি ইতিহাসকে নিয়ে এসেছেন অবলীলায়,তাকে প্রবেশ করেছেন অনুভূতির মাঝে,তার সৌন্দর্যময় শব্দচয়নে।মাতৃভূমির ইতিহাস খনন করে তুলে এনেছেন ঐশ্বর্যময় অনুষঙ্গ এতে তিনি শক্তিমত্তা রোমান্টিসিজমে প্রবেশ করিয়েছেন।সোনালী কাবিন সনেটগুচ্ছ করেছে অনুপম সৌন্দর্যময়। শুধু তাই নয় কবির কবিতায় ফুটে উঠেছে তার বিশ্বাস।তিনি পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা স্মরণ করেছেন।আর সেই মৃত্যুচিন্তা অনুভূতিগুলো ফুটে উঠেছে বিদগ্ধ শব্দ চয়নে। বাঙালির আবহমান জীবনযাত্রার প্রামাণ্য দলিল সোনালী কাবিন।শহর এবং নাগরিক যুক্ত অনুপ্রবেশ এই কাব্যের মহিমায় সমুজ্জ্বল করেছে।গ্রামীণ শব্দগুলো আল মাহমুদের শিল্পিত হাতের ছোঁয়ায় আধুনিক হয়ে উঠেছে।ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে লুকিয়ে থাকা বাঙালির ঐতিহ্য দানা বেঁধেছে স্লোগান তুলেছে সোনালি কাবিনের।মানুষ ও মানবতা কাব্যের প্রধান বিষয়।প্রেম ভালোবাসার বন্ধন যেমন আছে,তেমনি আছে বিপ্লব-বিদ্রোহের ধারালো সুর।বাংলাদেশের মাটির গহীন থেকে উঠে আসা গ্রাম্য গন্ধ লেগে আছে এ কবিতাগুলোতে।কবির শাণিত হাতের ছোঁয়ায় মৃত ইতিহাস ও জীবন্ত হয়ে উঠেছে। বাংলা কবিতার আকাশে কালজয়ী সৃষ্টি 'সোনালি কাবিন'।কাব্যগ্রন্থটি আল মাহমুদকে সত্যিকার অর্থে অন্যতম প্রতিভাবান প্রতিশ্রুতিশীল প্রজ্ঞাবান,সৃজনশীল এবং শ্রেষ্ঠ রূপকার কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।এর মাধ্যমে কবি বাংলা কাব্যজগতে নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করেছেন।যেখানে বাংলা কবিতায় নতুন করে চেনা যায়,নতুনভাবে দেখা যায়,নতুন রস আস্বাদন করা যায় এবং নতুন ভাষায় আঙ্গিকে উপলব্ধি করা যায়।'সোনালী কাবিন' কবি আল মাহমুদকে কাল থেকে কালান্তরে,যুগ থেকে যুগান্তরে,নদীর মত বয়ে নিয়ে যাবে।আল মাহমুদ সোনালী কাবিন লেখার পর যদি কোন কবিতা লিখতেন তবুও তিনি বাংলার কাব্যকাশে চিরভাস্মর হয়ে থাকতেন। 'সোনালী কাবিন' সম্পর্কে কবি-সমালোচক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর বলেছেন,বর্তমান অতীতকে ইমারতের মতন গড়ে তোলার জন্য তিনি এক চরিত্র ব্যবহার করেছেন বাঙালি মনোভাবের প্রতিনিধি হিসেবে।ঐ ব্যক্তি বাঙালি কবি,আবহমান মানুষ,ইতিহাসের মধ্যে হৃদয়ের ইতিহাস গেঁথে দিয়েছেন জনপদ,শস্য, সবই এক মহাসত্যের বিভিন্ন দিক।আর শব্দ আবহমান,চিরকালীন গ্রামীণ এবং লোকজ। মৃত্তিকা সংলগ্ন কবিসত্তার আত্মপ্রকাশ ঘটে 'সোনালী কাবিন' কাব্যগ্রন্থ।এ কাব্যগ্রন্থ বাংলাদেশের মাটি-মানুষ,জনপদের জম্ম পরিচয় অর্থাৎ বাঙালি ঠিকানার সন্ধান দেয়। এ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে আল মাহমুদ আমাদের শিকড় খোঁজার পথ চিনিয়ে দিয়েছেন।আর বাংলা কাব্য সম্ভারকে দিয়েছেন পূর্ণতা। এ সম্পর্কে আল মাহমুদতাল নিজেই বলেছেন, 'সোনালি কাবিনের শব্দগুলো আমি এ মাটির গন্ধ থেকে আরোহন করেছি, ব্যবহার করেছি। দিয়েছি যা সোনালী কাবিন ধরে রেখেছে তার বুকে'। 'সোনালী কাবিন' কাব্যে আল মাহমুদ লোকজ ও আঞ্চলিকত শব্দের সমন্বয়ে উদ্ভাবন করেন এক ধরনের শব্দ জাদুময়তা। যেমন- 'আমার ঘরের পাশে ফুটেছে কি কার্পেটের ফল? গলায় গুঞ্জার মালা পরো বালা প্রাণের শবরী, কোথায় রেখেছো বলো মহুয়ায় মারি বোতল নিয়ে এসো চন্দ্রলোকে তৃপ্ত হয়ে আচমন করি। ব্যাধের আদিম সাজে কে বলে কে তোমাকে চিনব না নিষাদ কি কোনদিন পক্ষিণীর গোত্র ভুল করে? এইশব্দ জাদুময়তার ভিতর দিয়ে আল মাহমুদ তার পাঠকদের চমকৃত করে যাচ্ছেন গত পঞ্চাশ বছর ধরে। আল মাহমুদের 'সোনালি কাবিন'কে কেবল শাশ্বত বাংলার কাব্য বললে এর প্রকৃত কাব্যগুলি অস্বীকার করা হয়।আল মাহমুদের 'সোনালি কাবিন' আর জসীম উদ্দিনের 'নকশী কাঁথার মাঠ' জীবনানন্দের 'রূপসী বাংলা' এক ধারার কাব্যগ্রন্থ নয়।আল মাহমুদ এদের থেকে পৃথক ও আধুনিক এই কারণে যে,দেশের চিত্র আঁকতে গিয়ে তার বৈশ্বিক হয়ে উঠতে সমস্যা হয়নি।জীবনান্দ যখন বলেন- 'আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে এই বাংলায়' তখন কেবল বাংলাদেশেই ভেসে ওঠে পাঠকের মানষচোখে কিন্তু আল মাহমুদ যখন বলে উঠেন-- 'আমার ধর্ম হোক ফসলের সুষম বন্টন পরম পরম স্বস্তির মন্ত্রে গেয়ে ওঠো শ্রেণীর উচ্ছেদ এমন প্রেমের কাব্য সাহসিনী করে উচ্চারণ যেতে না ঢুকতে পারে লোক ধর্মের ভেদাভেদ' বাংলা সাহিত্যের চিরাচারিত কালজয়ী উপখ্যান হিসেবে সাক্ষী হয়ে আছে বেহুলা-লক্ষিন্দরের অমর প্রেমের কাহিনী।এখানে পতিভক্তির মাধ্যমে এক নারী নিঃস্বার্থ ভালোবাসার কথা স্মরণ করে দেয়।জীবনের সকল মায়াকে তুচ্ছজ্ঞান করে সাপে কাটা প্রিয়তম স্বামীর জীবন রক্ষার্থে সকল বাধা উপেক্ষা করে একা একা অসহায় সতী নারীর আপ্রাণ চেষ্টা একজন কবি হৃদয়কে কতখানি উদ্দেলিত আবেগ তাড়িত করে তুলতে পারে তারই প্রতিচ্ছবি সোনালি সোনালি কাবিনে উঠে এসেছে - "বিষের আতপে নীল প্রাণাধার করে থরো থরো আমায় উঠিয়ে নাও হে বেহুলা, শরীরে তোমার প্রবল বাহুতে বেঁধে এ গতর ধরো,তোমার প্রবল বাহুতে বেঁধে এ গতর ধরো, সতী ধরে তোমার ভাসানে শোবে দেবদ্রোহী ভাটির কুমার" এই কাব্যগ্রন্থের অসাধারণ কাব্যভাষার শীতল অনুভবযোগ্য।বিশেষভাবে সোনালী কাবিন সনেট গুচ্ছে কবি উপমার যে নান্দনিক ব্যবহার করেছেন,তা বাংলা কবিতার জগতকে দিয়েছে এক নতুন মাত্রা।এ কাব্য আল মাহমুদকে এনে দিয়েছে তুমুল খ্যাতি" বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ ছাড়িয়ে পৃথিবীর সমগ্র বাংলা ভাষাভাষী হৃদয়ে কাব্যটি খোদাই করা আছে।তাই কবি জীবনে সফল উত্তরণও এই কাব্য দিয়েই।এ কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদ "গোল্ডেন কাবিন" যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত হয়। সোনালী কাবিন বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কাব্যিক সংবাদও প্রেমের দক্ষিণাহস্ত।যেখানে রয়েছে নারীর নিখুত সৌন্দর্য, প্রকৃতির সুনিপন বর্ননা,প্রেমের বৈচিত্র্যময় ক্যানভাস।প্রকৃতি উঠে এসেছ নানান উপমা, ব্যঞ্জনা ও চিত্রকলা।এইসব উপমা ব্যঞ্জনা চিত্রকল্প হলো সেখানে রয়েছে বাস্তবতার ছোঁয়া।শহরের ভদ্র ও শুদ্ধ ভাষা কে পাশ কাটিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে গ্রামীণ ভাষা।যেমন-জনাব 'মিয়া',সকল নষ্টামি 'হগল পুংটামি', কাক 'কাউয়া ' ,নৌকা 'নাও' ছোট মাছ 'বইচা', পরেছি 'পিন্দেছি',মামা 'মামু' ইত্যাদি। কবি মজনু শাহ 'সোনালী কাবিন সম্পর্কে সাহিত্য-সাময়িকী সুবর্ণরেখা এক গদ্যে বলেছেন- 'সত্য যে,কবি আল মাহমুদ সোনালী কাবিন যখন প্রকাশিত হলো সেটা একটা দীর্ঘনির্ণয়ী ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।আজকের বাংলা কবিতার প্রেক্ষিতও ওই কাব্যের জন্য তিনি সর্বাধিক নন্দিত হন।পাঠক তাকে অল্প কিছু কবিতা দিয়ে চিহ্নিত করতে পেরেছিল সেদিন।তারপর অনেক কবিতায় লিখেছেন তিনি,অনেক রকম,কিন্তু সোনালি কাবিনের-এর সাফল্যকে পেরিয়ে যাওয়ার মতো কবিতা আমরা আর তার কাছ থেকে পাইনি'। ________________________________ "সোনালী কাবিন" লেখক:- আল মাহমুদ প্রথম প্রকাশ:- ১৯৭৩ প্রকাশক :- নওরোজ সাহিত্য সম্ভার পৃষ্ঠা সংখ্যা:-৭০ মূল্য:-১৭৬৳ ব্যক্তিগত রেটিং:-৫.০০/৫.০০ _____________________________
Was this review helpful to you?
or
Love to read this Book.
Was this review helpful to you?
or
কোনো বিশুদ্ধ প্রেমের গল্প নয় কবি উপন্যাস। এটি নিতাইয়ের কবি হয়ে ওঠার গল্প। হ্যাঁ , নিতাইকে কেন্দ্র করেই উপন্যাসের কাহিনী আবর্তিত হয়েছে।এখানে তার প্রতিটি গানের ইতিহাস রয়েছে। সে ইতিহাসের মূল কথা হল, নিতাইয়ের নিজেকে ভাঙতে ভাঙতে গড়া, গড়তে গড়তে ভাঙা। . হিন্দু সমাজের পতিততম স্তরের অন্তর্গত ডোম বংশে জন্ম নিতাইচরণের । তার বংশের পেশা ছিল ডাকাতি করা। নিতাই তার বংশ পরম্পরার বাঁধন ছিঁড়ে নিজের পথ ধরতে চায়, হতে চায় স্বোপার্জিত সত্তায় চিহ্নিত। তখনো সে পথ খুঁজে পায়নি। শুধু জানতো যে, রাত্রির অন্ধকারে তার মামার রক্তে যে বুদ্বুদ সৃষ্টি করে ,তা থেকে মুক্তি পেতে হবে। . কাহিনীর প্রথমভাগে কবি তার বন্ধু রাজনের আত্মীয় এক ঠাকুরঝির প্রেমে পরে যায়। ঠাকুরঝি বিবাহিতা ছিল। প্রতিদিন দুধ বিক্রি করতে আসার সময় তাদের দেখা হতো ,রেলস্টেশনের কৃষ্ণচূড়া গাছের পাশে দাড়িয়ে কখনও-কখনও খাওয়া হতো এককাপ চা। কৃষ্ণাঙ্গ ঠাকুরঝিকে দেখে নিতাই রচনা করে- কালো যদি মন্দ হয়, তবে কেশ পাঁকিলে কাঁদো কেনে? কালো কেশে রাঙা কুসুম হেরেছ কি নয়নে। ঠাকুরঝির প্রেমে রাধার ঐকান্ততা ছিল। একপর্যায় ঠাকুরঝি অসুস্থ হয়ে নিতাইয়ের জন্য পাগল হয়ে যায়, নিতাই তখন ঠাকুরঝি যেন সুখে থাকে, সমাজ কি বলবে এসব ভেবে চলে যায় গ্রাম ছেড়ে। . একসময় সে ঝুমুরদলের সাথে যোগ দেয় , সেখানে পরিচয় হয় বসন্ত নামের এক মেয়ের সাথে। এ অংশে ফুটে উঠেছে সমাজের নিম্নশ্রেণির চিত্র । অগাধ বাসনা, অদম্য জীবনশক্তি নিয়ে মারা যায় বসন্ত। তারাশঙ্করের প্রায় লেখায় জীবণচেতনা আর মৃত্যুচেতনা অর্ধনারীশ্বরীর মতো বিজড়িত। যে মানুষগুলো রাতের আলো আঁধারে বসন্তের নিকট আসতো তার দেহের মোহে, মৃত্যুর পর তারাই তাকে নরকগামী বলে আখ্যায়িত করে। মূলতো আমাদের সমাজের মুখোশধারী রূপকে এখানে মৃত্যুর মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। অন্যদিকে নিতাই ভেবেছে-মরণ সত্যিই অদ্ভুত। গহনার প্রতি বসন্তের অনেক মমতা ছিল , সেই গহনা মাসি খুলে নিল মৃত্যুর পর। বসন্ত একটি কথাও বলল না।যার দেহে একটু ময়লা লাগলে সে মুছতো,একটু যন্ত্রণা যার সহ্য হতো না, সেই দেহখানা পড়ে ছাই হওয়ার পরেও তার মুখের একটুও বিকৃতি হল না। . পুরো উপন্যাসে নিতাই দুইবার দু’জনের প্রেমে পরে । দুই জনের প্রেমে দুই রকম চিত্র ফুটে উঠেছে কিন্তু কোনো প্রেমই হয়না সফল । দিনশেষে তারই লেখনীতেই ফুটে ওঠে- এই খেদ মোর মনে- ভালোবেসে মিটলো না সাধ , কুলালো না এ জীবণের। হায়- জীবণ এতো ছোট কেনে? এ ভুবনে? . কবি তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
Was this review helpful to you?
or
তারাশঙ্করের কবি গল্পের বেশ কিছু লাইন যা যে কাউকে গল্পের সাথে আটকে থাকতে বাধ্য করবে যেমনটা আমাকে করেছে। গল্পের শুরুতেই লেখক বলেছেন... “শুধু দুস্তরমত একটা বিস্ময়কর ঘটনাই নয়, রীতিমত এক সংঘটন। চোর ডাকাতের বংশের ছেলে হঠাৎ কবি হইয়া উঠিলো”। উপরোক্ত লাইনে পাঠক ভাবানায় ঠেই হারাতে বাধ্য। চরিত্রের ঘাত প্রতি ঘাত এখানে বাধ্যতামূলক। রাজা'র কাছ থেকে জানতে পারে ঠাকুরঝি আর বেঁচে নেই, নিতাই গ্রামছাড়ার পরে সে উন্মাদ হয়ে মারা যায়। গভীর হতাশায় নিতাই প্রশ্ন করে, "এই খেদ আমার মনে ভালোবেসে মিটল না এ সাধ, কুলাল না এ জীবনে! হায়- জীবন এত ছোট কেনে?"
Was this review helpful to you?
or
Nitaicharan nichu bongse konmo nea o tar osadharon protovar karone kobi hisabe sunam orjon kore. kobi uponnasher prodhan choritro guli holo nitaicharan, thakurjhi, rajon, boshonto. Shomajer bivonno dik ottonto nikhu vabe bornito hoyese uponnas ti te. kobi gan, jhumur dol eder jibon japoner chomotkar chitro fute uthese uponnas ti te. Nitaicharan er mone thakurji ebong boshonto dujoner jonne valobasha thakleo sesh porjonto ki hoyesilo tader porinoti? jante hole pore felun Tarasankar er Kobi uponnas ti.
Was this review helpful to you?
or
"জীবন এতো ছোট কেনে?"-মানবজীবনের বড় আক্ষেপের প্রতি প্রশ্ন তুলে লেখক শেষ করেছেন "কবি" উপন্যাসটি। কবি উপন্যাসটির প্রধান চরিত্র রূপায়নে দেখিয়েছেন অনন্যতা। ডোম বংশের ছেলের কবিয়াল হয়ে ওঠার পেছনের গল্পটি সত্যি চমকপ্রদ। বংশানুক্রমিকভাবে যাদের পেশা ছিলো ডাকাতি,সেই ডাকাত বংশের ছেলে ব্যতিক্রমী চিন্তাধারা থেকে কবিয়াল হয়ে আত্মপ্রকাশ করে। তাই শুরুতেই লেখক বলেছেন,"শুধু দস্তুরমত একটা বিস্ময়কর ঘটনাই নয়য়,রীতিমতো একটা সংঘটন। চোর ডাকাত বংশের ছেলে হঠাত কবি হইয়া গেল। " মায়ের অনুরোধ কিংবা মামার শাসন নিতাইচরণকে তার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি৷ অট্টহাস গ্রামের চামুন্ডার পুজোয় মেলা হয়। সেই মেলায় হয় কবিগান। একজন কবি সেখানে অনুপস্থিত থাকায়, নিতাই সেখানে গান করার সুযোগ পায়। যদিও সামনের অভিজ্ঞ কবিয়ালের কাছে তার পরাজয় ঘটে বটে,তবে গ্রামের মানুষদের কাছে "ডোমের ছেলে কবি" হিসেবে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়তে থাকে। নিতাই স্বপ্ন দেখে,তাকেও লোকে সম্মান করবে কবিয়াল পরিচয়ে, ডোম হওয়ায় কেউ তাকে আর তুচ্ছ করবেনা। সে আপনমনে কল্পনা করতে থাকে,লোকে দূর দূরান্ত থেকে তার খোজে আসছে, তাকে কবিগানের জন্যে নিয়ে যাবে বলে। স্টেশনের কর্মচারী রাজার বদৌলতে সে কুলিগিরি করতো,আর রাজা তাকে ভালোবেসে "ওস্তাদ" বলে ডাকতো। সেখানে পরিচয় হয় রাজার আত্মীয় "ঠাকুরঝির" সাথে। কালো বর্নের ঠাকুরঝিকে নিজের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলে নিতাই৷ঠাকুরঝিকে ভেবে কিছু কবিতা,ছন্দও লেখে সে। আবার নিতাইয়ের জ্ঞানচর্চা,কবিগানের প্রতি মুগ্ধ ঠাকুরঝিও একসময় ভালোবেসে ফেলে নিতাইকে।'স্বর্ণশীর্ষবিন্দু কাশফুল' উপমায় ঠাকুরঝিকে প্রকাশ করেছে নিতাই। স্নিগ্ধ, সরল স্বভাবের ঠাকুরঝি চুপচাপ ভালোবেসেছে নিতাইকে। কিন্তু ঠাকুরঝি যে বিবাহিত। তার নিজের সুখের সংসার আছে। তবুও নিতাই তাকে ভুলতে পারেনা৷ একসময় জানাজানি হলে ঠাকুরঝির সুখের কথা ভেবে ঝুমুর দলের সাথে নিতাই চলে যায়। ভাবে চোখের আড়াল হলে ঠাকুরঝি তাকে ভুলে যাবে, সুখে থাকবে। ঝুমুরদলের নর্তকী বসন্তের কারনে তার কবিগান আরো বিকশিত হয়,তার নাম ডাক ছড়িয়ে পরে চারদিকে। মন্দিরের মোহান্তের কথা- 'চিন্তামনি বেশ্যা সাধক বিল্বমঙ্গলের প্রেমের গুরু' নিতাইকে উৎসাহিত করে বসন্তের প্রতি তার ঘৃণা মুছে ফেলতে।তাই বসন্তের তার প্রতি ভালোবাসা দেখে একসময় গাটছড়া বাধে বসন্তের সাথে৷বসন্তকে নিতাই শিমুলফুলের সাথে তুলনা দিয়েছিল। মেয়েটি বাইরে যতোটা উচ্ছ্বল স্বভাব দেখায়,ভেতরটা তার ততোটাই কষ্টে জর্জরিত, রক্তাক্ত। একসময় দুরারোগ্য ব্যাধিতে বসন্তের মৃত্যু হলে হতাশ নিতাই পাড়ি জমায় কাশীর উদ্দেশ্যে। কিন্তু সেখানকার ভিক্ষার পেশা তাকে বাধনে বাধতে পারেনা। ফিরে আসে আবার তার পরিচিত লোকালয়ে। সেই স্টেশনে,যেখানে সে ফেলে গিয়েছে তার প্রিয় মানুষগুলোকে, ঠাকুরঝিকে। তারপর কি হয়েছিলো.. তা আমি বলবোনা। ঠাকুরঝির সাথে নিতাইয়ের পুনঃর্মিলন হয় কিনা, বা নিতাইয়ের কবিগানের কি পরিনতি হলো সেটুক জানার জন্যে বইটি পড়তে হবে।
Was this review helpful to you?
or
খুব চঞ্চল প্রকৃতির পাঠক আমি।অনেক জনপ্রিয় বই অর্ধেক পড়েই ফেলে রাখি। কোন না কোন কারণেই তীব্র বিরক্তি কাজ করে হঠাৎ । আবার কিছু বই বুক শেল্ফ এ রোজ দেখি। আজ পড়ব, কাল পড়ব ভাবি কিন্তু পড়ার জন্য হাতে নেইনা। ঠিক ই অন্যান্য বই পড়ে শেষ করি কিন্তু জনপ্রিয় হলেও সেই বইগুলা আমি ধরিনা। এই প্রথম হুমায়ুন আহমেদ পড়াকালীন অন্য একটি বই হাতে নিয়ে আমি সবকিছু ভুলে সেই বই পড়াতেই মন দিয়েছি। আর সেই বই হল 'তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়' এর 'কবি' পড়ার পর মনে হল শেষ কেন হল?
Was this review helpful to you?
or
সবার পড়া উচিত।
Was this review helpful to you?
or
বই- কবি লেখক- তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায় প্রকাশনি -বিভাস ধরন-উপন্যাস পৃষ্ঠা- ১৬৪ মুদ্রিত মূল্য- ২০০ নিচু বংশে জন্মানো নিতাইচরণ গ্রামের সবাইকে চমকে দিয়ে কবি হয়ে ওঠে। সে কবিয়ালদের দোহার হিসেবে কাজ করছিল। কিন্তু গ্রামের পালাগানের আসরে এক প্রতিষ্ঠিত কবিয়ালের অনুপুস্থিতিতে তার সামনে সুযোগ খুলে যায় নিজের কবিয়াল পরিচয় গ্রামবাসীকে জানিয়ে দেয়ার। অভিজ্ঞ কবিয়াল মহাদেবের কাছে সেই দফায় হেরে গেলেও তার উদ্দেশ্য সফল হয়। বাবুরা রীতিমত অবাক-ডোমের ছেলে পোয়েট!নিতাইচরণের পারিবারিক পেশা ছিল ডাকাতি, কিন্তু সে হল অন্যরকম। এমনকি মায়ের অনুরোধ বা মামার শাসনের পরেও সে পড়াশুনো ছেড়ে ডাকাতির দলে নাম লেখায়নি। ঘরবাড়ি ছেড়ে স্টেশনে গিয়ে থাকে। এখানেই তার সাথে বন্ধুত্ব হয় স্টেশনের মুটে রাজার সাথে। নিতাইয়ের ওপর রাজার ভক্তি ও বিশ্বাস ছিল অগাধ। নিতাইকে সে ডাকত ওস্তাদ বলে। এদিকে রাজারই এক আত্মীয়কে ঠাকুরঝি বলে ডাকত সে। বিবাহিত ঠাকুরঝি রোজ এসে দুধ বিক্রি করে যেত। মেয়েটার গায়ের রং কাল ছিল বলে গ্রামের লোকজন তো বটেই রাজাও নানা কথা শোনাত। কিন্তু এই মেয়েটার জন্যই নিতাই এর মাথায় একটা পদ তৈরি হয়- কাল যদি মন্দ তবে চুল পাকিলে কান্দ কেনে? জীবনের সব জায়গায় অপমান পাওয়া ঠাকুরঝি এই পদ শুনে আন্দোলিত হয়। আর নিতাই এর মনে অসম্ভব জেনেও ঠাকুরঝির জন্য গভীর প্রেম জন্মায়। বিষয়টা জানাজানি হলে নিতাই গ্রামছেড়ে চলে যায়। নিতাই যুক্ত হয় ঝুমুরদলের সাথে। এই দল অশ্লীল গান-বাজনা করে এবং নারীরা গানের গানের সাথে নাচ করলেও তারা মূলত দেহোপজীবিনী। সে তার নিজের ভিতরকার কবিয়ালের সত্ত্বাকে চেপে রেখে এই দলের মত করেই গান রচনা করে। এখানে সে বেশ জনপ্রিয় হয়ে যায়। সেখানে তার সাথে পরিচয় হয় বসন্ত (বসন) এর সাথে। বসনের মধ্যে সে ঠাকুরঝির ছায়া দেখতে পায়। দুজনের মাঝে সখ্যতা গড়ে ওঠে। এই ব্যবসায় থাকলে নানা ধরণের রোগ হয়ে থাকে এবং তারই এক রোগে রোগাক্রান্ত হয়ে একসময়ে বসন্তও মারা যায়। শোকে কাতর হয়ে ঝুমুরদল ছেড়ে দেয় নিতাই। সে কাশীসহ অন্যান্য স্থান ঘোরে। মন না টেকায় আবারও সে নিজের আগের গ্রামে ফিরে আসে। রাজার কাছ থেকে জানতে পারে ঠাকুরঝি আর বেঁচে নেই, নিতাই গ্রামছাড়ার পরে সে উন্মাদ হয়ে মারা যায়। গভীর হতাশায় নিতাই বলে " এই খেদ আমার মনে,ভালোবেসে মিটলো না এ সাধ, কুলাল না এ জীবনে। হায়- জীবন এতো ছোট কেনে?এ ভুবনে?
Was this review helpful to you?
or
'কালো যদি মন্দ তব কেশ পাকিলে কাঁদ কেনো!' কালোই তো ভালো। নয় কি! প্রেম মানুষকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করার 'কবি' না পড়লে হয়তো অজানাই থেকে যেতো। প্রেমে নিতাই নির্বাসিত হলো, সেই প্রেমই কাউকে আত্মঘাতী করলো অথচ নিতাই জানলোও না! ঠাকুরঝি! আহা! 'আমি ভালোবেসে এই বুঝেছি সুখের সার সে চোখের জল রে!' পড়ার সময় এই কথাটার অর্থ ঠিক বুঝিনি। এই এখন অতি দূরের এক মায়াবতীর প্রেমে পরার দবন্ড স্বরূপ সব একদম হাতে কলমে বুঝিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। সুখপাঠ্য। গভীর জীবনদর্শন।
Was this review helpful to you?
or
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কবি' বাংলা সাহিত্য শুধু নয়, বিশ্বসাহিত্যের এক অপূর্ব নিদর্শন। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের 'কবি' নিশ্চয়ই এত আলোকপ্রাপ্ত নয়। তবুও মধ্যবিত্ত জীবনের দুঃখ-সুখের সাথে প্রেম-ভালোবাসাকে যতটা সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন তা বোধকরি দুর্লভ। এই উপন্যাস শেষ করে পাঠক যে দুঃখবোধ নিয়ে উঠবেন তার মূল্যায়ন করা খুবই দুঃসাধ্য। নিঃসন্দেহে হুমায়ূন আহমেদের অন্যতম সেরা কাজ।
Was this review helpful to you?
or
Poor paper quality and binding!!! Not expected, not satisfied with this publication.
Was this review helpful to you?
or
বই : কবি লেখক : তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় চিরাচরিত ডাকাতির পেশায় না গিয়ে ডোমের ছেলে নিতাই যখন কবি হয়ে যায় তখন গ্রামের সবাই আশ্চর্য হয়ে যায়! যে ছেলেটা ডাকাতি করতে না গিয়ে নিজেকে লিপ্ত রাখে সুন্দর কিছুতে সৃজনশীল কিছুতে সেই নিতাই কবি হয়ে নিজের প্রতিভা দিয়ে জয় করে নেয় সবার মন। এলাকায় তুমুল জনপ্রিয়ও হয়ে যায় সে। নিতাইয়ের জীবনে একজন মানুষ আছে। সে ঠাকুরঝি যে সুন্দর না। কালো। তাঁর উপর সে বিবাহিতা। কিন্তু এই কালো চেহারার ঠাকুরঝিই যেনো নিতাইয়ের কাছে ভিন্নভাবে ধরা দেয়। তাঁর কবিয়াল মুখে শুনা যায় “কালো যদি মন্দ হবে কেশ পাকিলে কাঁদ কেন?? কেন কাঁদ”? তাঁর এই গানে মনে নতুন শিহরণ জাগে ঠাকুরঝি। কিন্তু নিতাই বুঝে এ ভালোবাসা সমাজসিদ্ধ নয়! ঠাকুরঝি বিবাহিত। তাঁর সংসার আছে। একসময় ঠাকুরঝি জ্বর হলে গ্রামের মানুষ বুঝতে পারে নিতাই আর ঠাকুরঝির মধ্যে সম্পর্ক আছে। মানুষজন জেনে যায়! নিতাই বাধ্য হয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যায়। যোগ দেয় ঝুমুর দলে। ঝুমুরদলে নিতাই অশ্লীল গান গেয়ে বেড়ায়। ঝুমুর দলে এসবের আড়ালে চলে পতিতাবৃত্তি। নিজের সৃজনশীলতাকে নিজের কবি স্বত্বাকে সে যেনো বিলিয়ে দেয় একটা অশ্লীল কাজে। সে একাজ থেকে বেরিয়ে আসতে চায় কিন্তু সেখানেও তার জীবনে মানুষ আসে, সে হলো বসন্ত। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সেও পতিতাবৃত্তিতে লিপ্ত। এক সময় বসন্ত মারা যায়! ভালবাসা এএখানেতাঁকে অতৃপ্তি দিয়েছে, দিয়েছে ঠাকুরঝিও। সবকিছু ছেড়ে যখন নিতাই ঠাকুরঝির কাছে চলে যায় সেখানেও তাঁকে কাঁদতে হয়! ফিরতে শূন্য হাতে। তাইতো তাঁর কবিয়াল স্বত্বা গেয়ে ওঠে " এই খেদ মোর মনে মনে ভালবেসে মিটল না আশ - কুলাল না জীবনে। হায় ! জীবন এত ছোট কেনে! এ ভুবনে। " কিন্তু ভালোবাসার মানে সে বুঝে তাইতো সে কাঁদে আর ভালোবাসে - তাঁর কবিয়াল হৃদয় আবারো বলে ওঠে " আহা - ভালবেসে এই বুঝেছি সুখের সার সে চোখের জলেরে - তুমি হাস আমি কাঁদি বাঁশি বাজুক কদম তলে রে । " উপন্যাসের প্রত্যেকটা গানের লাইনে লাইনে যেনো মুক্তোঝরে। উপন্যাসটিতে অনেক গান ব্যবহার করেছেন। এক একটা এক একটা ভাবনার খোড়াক হয়। সত্যি কথা বলতে কি অসাধারণ সুন্দর একটা প্রেম আর বিচ্ছেদের গল্পের মধ্যে লেখক শুধুই একজন কবি স্বত্বাকে আবিষ্কার করে গেছেন।
Was this review helpful to you?
or
কবি - তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় . "কবি" তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা একখানা মাস্টারপিস উপন্যাস। উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ১৯৪২ সালে।তার আগে "প্রবাসী " নামের পত্রিকায় "কবি" নামের ছোটগল্প প্রকাশিত হয়।ছোট গল্প থেকে উপন্যাসে রূপদানের জন্য যথেষ্ট সাবধানী ছিলেন লেখক।দক্ষতার সাথে সফলতাও লাভ করেছেন।রাঢ় বাংলার পটভূমিকায় স্থাপিত সমাজের প্রান্তবাসী এক ব্যাক্তিমানুষের অন্তহীন জিজ্ঞেসা আর ব্যাপক ট্রাজেডি তে ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। কাহিনী সংক্ষেপ:-নিচু বংশে জন্মানো নিতাইচরণ গ্রামের সবাইকে চমকে দিয়ে কবি হয়ে ওঠে। সে কবিয়ালদের দোহার হিসেবে কাজ করছিল। কিন্তু গ্রামের পালাগানের আসরে এক প্রতিষ্ঠিত কবিয়ালের অনুপুস্থিতিতে তার সামনে সুযোগ খুলে যায় নিজের কবিয়াল পরিচয় গ্রামবাসীকে জানিয়ে দেয়ার। অভিজ্ঞ কবিয়াল মহাদেবের কাছে সেই দফায় হেরে গেলেও তার উদ্দেশ্য সফল হয়। বাবুরা রীতিমত অবাক- 'ডোমের ছেলে পোয়েট!' নিতাইচরণের পারিবারিক পেশা ছিল ডাকাতি; কিন্তু সে হল অন্যরকম। এমনকি মায়ের অনুরোধ বা মামার শাসনের পরেও সে পড়াশুনো ছেড়ে ডাকাতির দলে নাম লেখায়নি। ঘরবাড়ি ছেড়ে স্টেশনে গিয়ে থাকে। এখানেই তার সাথে বন্ধুত্ব হয় স্টেশনের মুটে রাজার সাথে। নিতাইয়ের ওপর রাজা'র ভক্তি ও বিশ্বাস ছিল অগাধ। নিতাইকে সে ডাকত 'ওস্তাদ' বলে। এদিকে রাজারই এক আত্মীয়কে ঠাকুরঝি বলে ডাকত সে। বিবাহিত ঠাকুরঝি রোজ এসে দুধ বিক্রি করে যেত। মেয়েটার গায়ের রং কাল ছিল বলে গ্রামের লোকজন তো বটেই, রাজা-ও নানা কথা শোনাত। কিন্তু এই মেয়েটার জন্যই নিতাই এর মাথায় একটা পদ তৈরি হয়- 'কাল যদি মন্দ তবে চুল পাকিলে কান্দ কেনে?' জীবনের সব জায়গায় অপমান পাওয়া ঠাকুরঝি এই পদ শুনে আন্দোলিত হয়। আর নিতাই এর মনে, অসম্ভব জেনেও, ঠাকুরঝির জন্য গভীর প্রেম জন্মায়। একপর্যায়ে বিষয়টা জানাজানি হলে নিতাই গ্রামছেড়ে চলে যায়। নিতাই যুক্ত হয় ঝুমুরদলের সাথে। এই দল অশ্লীল গান-বাজনা করে এবং নারীরা গানের গানের সাথে নাচ করলেও তারা মূলত দেহোপজীবিনী। সে ক্রমশ তার নিজের ভিতরকার কবিয়ালের সত্ত্বাকে চেপে রেখে এই দলের মত করেই গান রচনা করে। এখানে সে বেশ জনপ্রিয় হয়ে যায়। সেখানে তার সাথে পরিচয় হয় বসন্ত (বা বসন) এর সাথে। বসনের মধ্যে সে ঠাকুরঝির ছায়া দেখতে পায়। দুজনের মাঝে সখ্যতা গড়ে ওঠে। এই ব্যবসায় থাকলে নানা ধরণের রোগ হয়ে থাকে, এবং তারই এক রোগে রোগাক্রান্ত হয়ে একসময়ে বসন্তও মারা যায়। শোকে কাতর হয়ে ঝুমুরদল ছেড়ে দে নিতাই। সে কাশীসহ অন্যান্য স্থান ঘোরে। কিন্তু তার মন না টেকায় একসময় আবারও সে নিজের আগের গ্রামে ফিরে আসে। রাজা'র কাছ থেকে জানতে পারে ঠাকুরঝি আর বেঁচে নেই, নিতাই গ্রামছাড়ার পরে সে উন্মাদ হয়ে মারা যায়। গভীর হতাশায় নিতাই প্রশ্ন করে- 'জীবন এত ছোট ক্যানে?' ??? বিশ্লেষন:- উপন্যাসটি পড়ে অনেকের চোখে শুধুই বসন আর নেতাইয়ের প্রেমলীলা চোখে পড়বে।কিন্তু একটু অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দেখলে দেখা যাবে যে, তারাশঙ্কর এখানে একটা সমাজের কথা, সমাজের মানুষের জীবন ও পদ্ধতি ফুটিয়ে তুলেছেন। উপন্যাসে পরিস্ফূটিত হয়েছে সমাজের লোকায়িত শ্রেণির ভাষা, তাদের ভাবনা। "কবিগান" ও এর চর্চাকে তুলে ধরেছেন নতুনভাবে। এর সাথে সংশ্লিষ্ট মানুষের জীবনধারণ, কিভাবে তারা বেচে আছে এসব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। উপন্যাসে সর্বপরি একটা সমাজের সার্বিক দিক ফুটে উঠেছে।একটি ঝুমুর দলের টিকে থাকার গল্প,তাদের জীবন,সংগ্রাম, জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার গল্প বলে হিয়েছে।বলা হয়েছেএক কবির কবি বেশে স্বদেশে আগমনের গল্পই বলা হয়েছে। বইটি পড়তে দিয়েছে Arup। কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি,কবি। রেটিং:৮.৫/১০
Was this review helpful to you?
or
প্রখ্যাত সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত একটি বাংলা সামাজিক উপন্যাস “কবি”।কবিয়াল, ঝুমুরদল সহ ঐ সময়ের জীবনযাত্রার প্রেক্ষিতে এই বিখ্যাত উপন্যাসটি রচিত হয়েছে।উপন্যাসটির কাহিনী সংক্ষেপ হল ঃ-সাধারণ এক গ্রামে ডাকাত বংশে জন্মগ্রহণ করে নিচুবংশের নিতাই। তবে তার স্বভাব তার বাবা-কাকাদের মত নয়। সে সৎ থাকতে চায়, তাই ঘরবাড়ি ছেড়ে স্টেশনে গিয়ে থাকে। এখানেই তার সাথে বন্ধুত্ব হয় রাজার, যে স্টেশনে কাজ করে। সে কবিয়াল ধরণের মানুষ। বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ইতোমধ্যেই সে কবিগান করেছে।এদিকে রাজারই এক আত্মীয়কে ঠাকুরঝি বলে ডাকত সে। বিবাহিত ঠাকুরঝি রোজ এসে দুধ বিক্রি করে যেত। একপর্যায়ে তার ঠাকুরঝিকে ভাল লেগে যায়, ঠাকুরঝিওনিতাইকে ভালবেসে ফেলে, যদি সমাজ এর বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে বিষয়টা জানাজানি হলে নিতাই গ্রামছেড়ে চলে যায়। সে ঝুমুরদলের সাথে যুক্ত হয়, যেই দল অশ্লীল গান-বাজনা করে এবং নারীরা গানের গানের সাথে নাচ করলেও তারা মূলত দেহোপজীবিনী। সে ক্রমশ তার নিজের ভিতরকার কবিয়ালের সত্ত্বাকে চেপে রেখে এই দলের মত করেই গান রচনা করে। এখানে সে বেশ জনপ্রিয় হয়ে যায়। সেখানে তার সাথে পরিচয় হয় বসন্ত (বা বসন) এর সাথে। বসনের মধ্যে সে ঠাকুরঝির ছায়া দেখতে পায়। দুজনের মাঝে সখ্যতা গড়ে ওঠে।এই ব্যবসায় থাকলে নানা ধরণের রোগ হয়ে থাকে, এবং তারই এক রোগে রোগাক্রান্ত হয়ে একসময়ে বসন্তও মারা যায়। শোকে কাতর হয়ে ঝুমুরদল ছেড়ে দে নিতাই। সে কাশীসহ অন্যান্য স্থান ঘোরে। কিন্তু তার মন না টেকায় একসময় আবারও সে নিজের আগের গ্রামে ফিরে আসে। এসে জানতে পারে ঠাকুরঝি আর বেঁচে নেই, নিতাই গ্রামছাড়ার পরেই সে মারা যায়।এই উপন্যাসে যেমন বিভিন্ন প্রকার গান রয়েছে। তেমনি ভিন্ন ধরাণার জীবনযাত্রার আবহে একটি অন্যরকম প্রেমের কাহিনী রচিত হয়েছে।পাঠক পড়ে ভিন্ন স্বাদ পাবেন।তাই মিস না করে পড়ে ফেলেন ভাল লাগার মত অনেক কিছুই পাবেন উপন্যাসটিতে।
Was this review helpful to you?
or
“শুধু দস্তুরমত একটা বিস্ময়কর ঘটনাই নয়, রীতিমত এক সংঘটন। চোর ডাকাত বংশের ছেলে হঠাৎ কবি হইয়া গেল” একটা সময় ছিল যখন সমাজের নিচু বংশের কেও যদি ভাল কাজ করত তাহলে বাহবা না দিয়ে তার অর্জন নিয়ে হাসিঠাট্টা করা হত। ‘কবি’ উপন্যাসে লেখক ঠিক সেই সময়েরই এক হতভাগা কবিয়ালের জীবনের গল্প তুলে ধরেছেন যার জন্ম ডোমবংশে, নাম নিতাইচরণ। নিতাই তার জীবনে হারিয়েছে বেশি, পেয়েছে খুব কম। পথে যেতে যেতে হারিয়েছে সবাইকে, এমনকি বসন্তকেও। এতো হারানোর মাঝেও নিতাইচরণ কি পেয়েছিল সফল কবিয়ালের খাতায় নিজের নাম লিখতে? নাকি বংশ, সমাজ, ভাগ্য সবকিছুর বেড়াজালে আটকে পথের মাঝেই হয়েছিল এক কবিয়াল জীবনের সমাপ্তি!
Was this review helpful to you?
or
হায়! জীবন এত ছোট কেনে এই ভুবনে?
Was this review helpful to you?
or
শুধু ছন্দ মিলে গেলেই কবিতা হয় না, কিংবা দু-চার দশ লাইন লিখলেই কেউ কবি হয় না। কবির জন্য প্রয়োজন সাধনা, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, ঈগলের মতো চোখ আর শৃগালের মতো চতুরতা। এই জিনিসগুলো তারাশঙ্করের "কবি" বইতে খুব স্পষ্টভাবে এসেছে৷ এখানে তারাশঙ্কর দেখিয়েছেন কবিশক্তির মূলপ্রেরণা। কিভাবে একজন কবি দূর্বলতা, দৈণ্যতা আর হীনতাকে জয় করে আত্মার মর্যাদাবোধ সৃষ্টি করে৷ প্রাণশক্তি আর প্রেমশক্তি কি করে গুমোট বেঁধে এক হয়ে যায়। কেন কবি হৃদয়ে ব্যথা থাকার পরেও দুঃখ তাকে ছোঁয় না৷ মহৎ, মঙ্গলময় আর পবিত্রতা কি করে কবিকে টানে৷ কবি কিরূপ জ্ঞানপিপাসু হয়, তার চরিত্র কতো দৃষ্টিনন্দিত, তার কথায় কতো নিপুঁণতা। একজন কবির চৌকশ ছন্দগুলো কতইনা গুছিয়ে আসে হৃদয়ের চিলেকোঠা থেকে৷ এছাড়াও জানবেন এক নারীর গভীর প্রেম, অন্য এক দেহ ব্যবসাহিনী নারীর গল্প। যে সকলের কাছে দেহ বিক্রি করে। মৃত্যুকে সাদরে গ্রহণ করতে চায়৷ কেবলই একজনের প্রেমে পড়ে সে ভালো হতে চায়, এবার সে বাঁচতে চায়৷ নোংরা সমাজকে ছেড়ে, মনের মানুষকে নিয়ে চলে যেতে চায় দূর কোথাও। এক অসাধারণ বই। সম্পূর্ণ বইয়ে সাহিত্যের রূপালী শব্দের ভিড় জমেছে৷
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসের প্রথম লাইনটি দিয়েই বাজিমাৎ করেছেন লেখক; ' হটাত করে ডাকাত বংশের ছেলে কবি হইয়া উঠিল ।' মূলত এটি একটি প্রেমের উপন্যাস। অসম্ভব সুন্দর সুন্দর ডায়লগ সাথে মন চুরানো গল্প। রোম্যান্স ঘরনার পাঠদের জন্য হ্যাপি রিডিং। 'কাল যদি হয় এত মন্দ তবে কেশ পাকিলে কাঁদ কেন'
Was this review helpful to you?
or
কবি-তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় অনেকে বলেন কেউ যদি কবি উপন্যাস না পড়ে থাকেন তবে-তিনি একটা রত্ন থেকে বঞ্ছিত হলেন। অনেকে কবি কে শ্রেষ্ঠ উপন্যাস বলে থাকেন। তারাশঙ্কর উপন্যাসিক হিসেবে সবসময়ই আলাদা ভাবের অধিকারী। তার উপন্যাসে থাকে সমাজ চিত্রণ, থাকে ততকালীন না আচার, সংস্কৃতি। সেই গ্রামান্তরে, সেই অঞ্চলে থেকেও অনেকে সেই রীতি গুলো, সেই আচারগুলো যেভাবে দেখেনি –তারাশঙ্কর যেন তারচেয়েও বেশি চিত্রণে সেই ছবি গুলো তুলে ধরেন। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র সমাজের নিম্নস্তরের একজন মানুষ। কিন্তু তিনি সেই পেশা, সে জীবন কে ত্যাগ করে বেছে নিয়েছেন-কবি জীবন কে। কবি ত না তিনি কবিয়াল। সেই সময় ছাপা বই ই বা কয়জন পড়ত, ছাপাখানা শুরু হবার কথা-কিছু কিছু জায়গায় বটতলার পুথির কথা আছে। তবুও সেই গ্রামের মানুষের কাছে কবিয়াল যেন বিরাট কিছু। আবার তার মাঝে সেই কবির মনে “কোনোদিকে কিছুক্ষন চাহিয়া থাকিলেই মনে হয় কম্পমান দূর দিগন্তের মধ্যে একটা স্বর্ণবিন্দুশীর্ষ কাশফুল দুলিতেছে, কাপিতেছে” হুম সেই কবিই আবার ঠাকুরঝির প্রতীক্ষার প্রেমে মগ্ন থাকেন। আবার সময়ে সময়ে বসনের গিটে পড়ে গেয়ে উঠেন; “এই খেদ আমার মনে- ভালবেসে মিটল না সাধ, কুলাল না এ জীবনে! হায়-জীবন এত ছোট কেনে? এ ভুবনে?” পাঠক হিসেবে আমি অত্যন্ত নিম্নশ্রেনীর। তাই কোন বইয়ের বিচার করা আমার সাজেনা। তবে কোন উপন্যাসটি কালোত্তীর্ণ, কোনটা পড়া উচিত, অন্তত ভালোমানের উপন্যাস লেখনী কেমন হয় তা জানার জন্য পড়া উচিত-তা বলতে হলে বলতে হবে কবি তেমনি একটি উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
রিভিউঃ আমার পড়া বইয়ের তালিকায় এই প্রথম তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়ের লেখা কোন বই স্থান পেল!দীর্ঘ সময় নন-ফিকশনে আটকে থাকার কারনেই এমনটা হয়েছে,তবে এই একটা বইয়ের মাধ্যমে তার লেখার প্রেমে পড়ে গেলাম।আবার একদিক দিয়ে ভাবলে-এই বইগুলো এখন পড়েই ভালো হয়েছে,কারন এখন যেভাবে অনুভব করতে পারি,লেখার গভীরতার জালে আটকা পড়তে পারি তখন হয়তো এমনটা হতো না। যাই হোক,আমার বই পড়ার গল্প জানাতে এই লেখা না,বরং জানাতে এসেছি নিতাই চরণের গল্প বলতে।নিতাই চরণের কবি হওয়ার গল্প বলতে। তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়ের "কবি" উপন্যাসটি ১৯৪১ ইং সালে প্রবাসী মাসিক পত্রে মুদ্রিত হওয়া একটি ছোট গল্পের বিস্তৃত রূপ।যা পরবর্তীতে ১৯৪২ ইং সালে পাটনা থেকে প্রকাশিত প্রভাতী পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়।এবং সবশেষ ১৯৪৩ ইং সালে এটি প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। নিতাই চরণ,সমাজের চোখে নিচু বর্গের একজন মানুষ।চোর ডাকাত বংশের ছেলে,খুনির দৌহিত্র, সিঁদেল চোরের পুত্র।ছোটবেলায় "গোবরে পদ্মফুল" নামে একটি প্রবাদ পড়েছিলাম।আমাদের গল্পের প্রধান চরিত্র নিতাইও তেমনি।বাল্যকাল থেকেই ছিল কবিগান শোনার নেশা।আর নেশা থেকেই তার মাঝে কবিত্ব প্রতিভার জন্ম হয়। বংশীয় পেশা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে,আশ্রয় নেয় রেল স্টেশনের পাশের বসতিতে।কুলিগিরির কাজ নেয়। সবকিছুই করে স্টেশনের পয়েন্টসম্যান রাজন/রাজার সাথে বন্ধুত্বের সুবাদে।যদিও কবিয়াল হওয়ার পর,এ কাজটা ছেড়ে দেয় সে। রাজার আত্মীয়া ঠাকুরঝির সাথে সেখানেই পরিচয় নিতাইয়ের।সেখানেই ভালোলাগা।ঠাকুরঝি রোজ দুধ বিক্রি করতে এ গ্রামে আসতো।একদিন রাজা ঠাকুরঝিকে আলকাতরার সাথে তুলনা করলে,ঠাকুরঝির মন খারাপ করে বেরিয়ে যায়।নিতাইয়েরও খারাপ লাগে বিষয়টা।তাইতো সে রচনা করে- "কালো যদি মন্দ তবে কেশ পাকিলে কাঁদ কেনে? কালো কেশে রাঙা কুসুম হেরেছ কি নয়নে?" প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় যখন বর্ন বৈষম্য প্রকট,তখন কোন লেখকের মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি কতটা উন্নত হলে এমন অভিব্যক্তি প্রকাশ পায়, বলতে পারেন? ঠাকুরঝির প্রেমে পড়ে যায় নিতাই।কিন্তু ঠাকুরঝি যে বিবাহিত! তাহলে? "চাঁদ তুমি আকাশে থাক-আমি তোমায় দেখব খালি, ছুঁতে তোমায় চাইনাকো হে-সোনার অঙ্গে লাগবে কালি।" সমাজ ব্যবস্থাটাকে ভাঙতে পারেনি নিতাই,পারেনি মনের মানুষ ঠাকুরঝি কে নিয়ে ঘর ছেড়ে পালাতে।তাই তো,ঠাকুরঝিকে ভালোবেসে লীলাটা অসমাপ্ত রেখে নিজেই গ্রাম ছেড়ে চলে যায়,তবুও ভালো থাকুক ভালোবাসা! "আমি ভালবেসে এই বুঝেছি সুখের সার সে চোখের জল রে।" গ্রাম থেকে বেরিয়ে নিতাই যোগ দেয় ঝুমুর দলে।মূলত সেখানেই তার কবি প্রতিভার পূর্ণ বিকাশ ঘটে।সেই ঝুমুর দলেরই এক মেয়ে,নাম বসন্ত; দীর্ঘ কৃশতনু গৌরাঙ্গী। অদ্ভুত সুন্দর চোখের অধিকারী এ মেয়েটি খুব চঞ্চল।কথাবার্তায় চটুল।রয়েছে অল্প সময়ে সহজেই মানুষকে আপন করে নেবার ক্ষমতা।নিতাইয়ের সাথেও ভাব করতে বেশি দেরি হয়নি তার।নিতাইও ভালোবেসেছিল তাকে।একসাথে আজীবন থাকার স্বপ্ন দেখেছিল।কিন্তু চাইলেই তো আর সুখের সন্ধান লাভ করা যায় না! রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন,"অলৌকিক আনন্দের ভার বিধাতা যাহারে দেন,তার বক্ষে বেদনা অপার।" নিতাইয়ের ক্ষেত্রেও তাই ঘটল। ভাবতে পারেন,কি ঘটেছিল নিতাইয়ের জীবনে? যদি জানা না থাকে,পড়তে পারেন বাংলা সাহিত্যের এই অমূল্য রত্নটি।পড়া শেষ হলে যা আপনাকে নিয়ে যাবে অন্য এক ভূবনে, হয়তো আপনার মনেও বেজে উঠবে- "হায়-জীবন এত ছোট কেনে? এ ভূবনে?"