User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Great Book!❤
Was this review helpful to you?
or
#বুক_রিভিউ বইঃ তোমার ক্ষয়। লেখকঃ রাহুল সাংকৃত্যায়ন। [রুক্কু শাহ্ ক্রিয়েটিভ পাবলিশার্স - ফেব্রুয়ারি, ২০১৬] . লেখক জেলখানায় বন্দি থাকা অবস্থায় বইটি লিখেছেন বলে বইয়ের প্রথমেই উল্লেখ করেছেন। যদিও লেখক বলেছেন " 'তোমার ক্ষয়' -এর মধ্যে আমি আমার নিজস্ব কিছু একান্ত ভাবনাকেই ব্যক্ত করেছি", মূলত তিনি সামাজিক ও ধর্মীয় অবক্ষয় নিয়ে বইটি লিখেছেন- যা সমাজের সবারই মনের কথা। বইটিতে মোট ছয়টি প্রবন্ধ রয়েছে- ১. তোমার সমাজের ক্ষয় ২. তোমার ধর্মের ক্ষয় ৩. তোমার ঈশ্বরের ক্ষয় ৪. তোমার সদাচরের ক্ষয় ৫. তোমার জাতপাতের ক্ষয় ৬. তোমার জোঁকদের ক্ষয় । শত পৃষ্ঠারও কম বিস্তৃতির এই বইটিতে এত বেশি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয়েছে যে ছয়টি অধ্যায়ের জন্য ছয়টি বিশ্লেষণ লিখলে সঠিক কাজ হত বোধ করি। আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে একটি বিশ্লেষণে ছয়টি অধ্যায়ের সামাম্য হিন্টস দেব মাত্র। বস্তুত ছোট আলোচনায় বইয়ের গভীরে ঢুকা দুরূহ ব্যাপার। প্রথম প্রবন্ধে লেখক সমাজের যাবতীয় অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরেছেন। এসব অসঙ্গতির কথা বলতে গিয়ে মানুষ হিশেবে সাধারণ কর্তব্য পালনে ব্যর্থতা, ধর্ম পালনের নামে সুবিধা গ্রহণ ও মুখে এক বলে কাজে আরেক করার প্রবণতা এবং শ্রমিকদের প্রতি যুগ যুগ ধরে চলে আসা অন্যায় ও বৈষম্য তুলে ধরেছেন। বলাই বাহুল্য, লেখক ভারতীয় বলে হিন্দু ধর্মের অসঙ্গতি ও ব্রাহ্মণদের সুবিধা গুলো (যেগুলো গ্রহণের মধ্য দিয়ে নিজেদেরকে মহান করে তুলেন) সম্পর্কে সুন্দরভাবে আলোচনা করেছেন। সাথে ইসলাম ধর্মীয় কিছু লোকের- ধর্মের নিয়মের সাথে জীবন পরিচালনা পদ্ধতির ফারাকের বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। শ্রমিকদের বিষয়ে তার বক্তব্যের গভীরতা বুঝতে পারলে এটাও স্পষ্ট হয় যে তিনি কমিউনিজমের ইজম ধারণ করতেন। পরবর্তীতে বইয়ের শেষ প্রবন্ধ "তোমার জোঁকদের ক্ষয়" এ বিষয়টি আরো অনেক বেশি পরিস্কার হয়। তোমার ধর্মের ক্ষয় এবং তোমার ঈশ্বরের ক্ষয় অধ্যায় দুটির প্রায় সবটা জুড়ে ধর্মকেন্দ্রিক আলোচনা স্থান পেয়েছে। ধর্মকেন্দ্রিক আলোচনা বলতে যে ধর্মের বিষয়াবলী আলোচনা করেছেন এমনটা নয়। বরং তিনি ইশ্বর ও ঈশ্বরবাদীদের নানা অসঙ্গতি ও দুষ্কর্ম তুলে ধরেছেন। যেমন কেউ একজন ঘুষখোর, তিনি ঈশ্বরবাদী হলেই সমস্যা। ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন না এমন কারো দুষ্কর্মের বিবরণ বইয়ে পাওয়া ভার। এই দুটি অধ্যায়ে পরিস্কার বুঝা যায়, লেখক ঈশ্বরবাদী নন অর্থাৎ সহজ বাংলায়- তিনি তার নাস্তিকতার বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে। এমনকি কোথাও কোথাও তিনি পাঠকে তার দিকে টানার চেষ্টা করেছেন। তবে ব্যক্তিগত আলাপের বাইরে তিনি সার্বিক অসঙ্গতি নিয়ে এই দুইটি অধ্যায়ে সুন্দর আলোচনা করেছেন। তোমার সদাচারের ক্ষয় অধ্যায়টি সবচে' বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে আমার কাছে। এতে তিনি মানবিক ও সামাজিক সমস্যাগুলো তুলে ধরেছেন নানা উদাহরণের মধ্য দিয়ে। এ অধ্যায়ে লেখক ব্যভিচার, মদ্যপান, অসত্য বলা, চুরি এবং ঘুষ, ন্যায়বিচার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা রেখেছেন। এছাড়া কিছু বক্তব্য আছে যেগুলোর বিশেষ শিরোনাম নেই। অন্য আলোচনার প্রাসঙ্গিক হিশেবে করা হয়েছে- অথচ এগুলো অনেকটা স্বতন্ত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ। অধ্যায়ভিত্তিক আলোচনার বাইরে সামগ্রিকভাবে বলতে হয় ৭০ বছর পূর্বের লিখিত এবং প্রায় ৫৫ বছর পূর্বে প্রকাশিত বইটি যেন বর্তমান সমাজকে উপজীব্য করেই লেখা হয়েছে। সহজসরল শব্দচয়ন বইটিকে অনেক বেশি সহজবোধ্য করেছে সাধারণ পাঠকের কাছে। দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্য থাকলে লেখকের সব কথা উড়িয়ে দেওয়া যায়। এটি আমার পড়া রাহুল সাংকৃত্যায়নের তৃতীয় বই। আগের দুটির মতো আমার কাছে এটাও ছিল বেশ উপভোগ্য। @বন্ধু শুভ