User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
'যে ছিল আমার' সেবা প্রকাশনি হতে প্রকাশিত একটি রোমান্টিক ঘরানার উপন্যাস। উপন্যাসটির রচয়িতা শেখ আবদুল হাকিম। এই তথ্যটি জেনে অনেকেই হয়ত অবাক হতে পারেন। কারণ শেখ আবুল হাকিম যে মূলত রহস্য-রোমাঞ্চ বা হরর টাইপের লেখক। তবে তিনি যে জীবনঘনিষ্ঠ রচনা বা নিছক প্রেমের উপন্যাস রচনায়ও সম্মান পারদর্শী তার প্রমাণ মিলেছে এই উপন্যাসের মাধ্যমে। কেউ যদি জানতে চান কেন এই উপন্যাসটি পড়বেন তাহলে আমি বলব লেখকের নাম দেখে পড়বেন। কারণ একটি প্রেমের উপন্যাস বা উপন্যাসের কাহিনী ভাল এমন পরিচয়ের চেয়ে এই বইটির ক্ষেত্রে বোধ হয় শেখ আবদুল হাকিমের লেখা উপন্যাস পরিচয়টাই বেশি স্যুইটেবল। এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র একটি মেয়ে। মেয়েটির নাম লাবণী। প্রথমেই জানিয়ে রাখা ভাল, আর দশটা উপন্যাসের নায়িকার চরিত্রে যে কোমলতা দেখা যায়, তা দেখা যায়নি এই উপন্যাসের লাবণীর মধ্যে। বরং এই চরিত্রটি কিছুটা রুক্ষ, কিছুটা রূঢ়, কিছুটা অবুঝ আর অনেক বেশি স্বার্থপর। নিজেরটা ছাড়া অন্যেরটা ভাবার অবকাশ নেই তার। তার কারণে তার পরিবারের অন্যদের অর্থাৎ তার বড় বোন ও ভাইকে যে অনেক আত্মত্যাগ করতে হচ্ছে সেদিকে তার বিন্দুমাত্র খেয়াল নেই বরং সবসময় সে তাদের খুঁতটাই দেখতে পায়। 'ইগো' সমস্যায় বেশ ভালোভাবেই আক্রান্ত মেয়েটি। মেয়েটির প্রথম দিককার কার্যকলাপ পাঠকের মনে মেয়েটির প্রতি বিতৃষ্ণা নিয়ে আসতে পারে। যেমন যখন পাঠক দেখবে শুধু তাকে মানুষ করতে গিয়ে জীবনের অনেক খানি অংশ অপচয় করে ফেলা বড় ভাই যখন বিয়ে করতে চায় এবং তাতে নিজের স্বার্থ কিছুটা হলেও ক্ষুণ্ণ হচ্ছে দেখে মেয়েটা ভাইয়ের বিয়েতে বাগড়া দেয়। এটা স্রেফ একটা ঘটনা মাত্র। এরকম আরও অনেক ঘটনা দেখা যাবে উপন্যাসে এবং সংলাপের মাধ্যমেও বারবার এই জিনিসগুলো পাঠকের সামনে প্রতীয়মান হয়ে উঠবে। যাইহোক, এই বেয়াড়া মেয়েটাই একসময় প্রেমে পড়ে। কিন্তু তখনো সে তার 'ইগো' থেকে সরে আসে না। তাকে জানতে হবে যাকে সে ভালোবাসে সেও তাকে ভালোবাসে কিনা। কিন্তু মেয়েটার আশংকা তাকে কেউই ভালোবাসে না। কেননা একটা সময় এসে মেয়েটা নিজে থেকেই উপলব্ধি করে যে তার স্বেচ্ছাচারী আচরণ তাকে অন্যদের থেকে অনেক দূরে সরিয়ে দিয়েছে। তাই একটা সময় সে সিদ্ধান্ত নেয় আত্মহননের। কিন্তু দেরিতে হলেও কি সে তার আকাঙ্ক্ষিত ভালোবাসার সন্ধান পাবে? কাহিনীর শেষদিকে এসে পাঠক যেমন তার প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে উঠবে, উপন্যাসের অন্য চরিত্রদের মধ্যেও কি তেমনটা হবে? সেটা জানতে হলে পড়তে হবে এই উপন্যাসটি। এই উপন্যাস রচনায় দারুণ মুনশিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন আবদুল হাকিম। একটা চরিত্রকে একেকবার একেক আঙ্গিকে কিভাবে পাঠকের সামনে উপস্থাপন করা সম্ভব সেটার সফল দৃষ্টান্ত রেখেছেন তিনি এই উপন্যাসে। সবার যে এই উপন্যাস ভাল লাগবে তেমনটা নাও হতে পারে। বিশেষত হার্ডকোর থ্রিলারের জন্য যারা এই উপন্যাসের লেখককে পছন্দ করেন, লেখকের এই উপন্যাসে তাদের আশার প্রতিফলন নাও হতে পারে এবং সেক্ষেত্রে তারা এটিকে নিছকই 'লুতুপুতু প্রেমকাহিনী' হিসেবে যদি আখ্যায়িত করে, তাহলেও অবাক হবার কিছু থাকবে না।