User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
"Solitude is my Home Loneliness was my cage" যেহেতু বাবা-মা ছাড়া কোনদিনই কোথাও একা থাকিনি, এজন্য মেডিকেল লাইফের প্রচণ্ড চাপের মধ্যে ,নতুন পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে কি পরিমান যে কষ্ট হচ্ছিল তা আর এখানে বলতে চাচ্ছি না। তবুও বা কোনমতে মানিয়ে নিয়েছি , কিন্তু মাঝখানে কিছু রুমমেটদের অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যবহারে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে পড়ছিল। সার্বিকভাবে বেশ গ্যারাকলে পড়েছিলাম। সেই বিস্তর সমস্যা থেকে আমাকে তুলে আনার জন্যই আমার খুব কাছের একজন মানুষ আমাকে বইটি উপহার হিসেবে দিয়েছিল। অনেক চাপের মাঝেও চেষ্টা করেছি প্রতিদিন যেন অন্তত পাঁচ পৃষ্ঠা করে পড়তে পারি। প্রথম ননফিকশন বই হিসেবে বেশ ভালো সময়ই কেটেছে বইটির সাথে আমার। লেখক Renuka Gavrani বইটিকে মোট দুইটি অংশে ভাগ করেছেন। প্রথম অংশের নাম তিনি দিয়েছেন, 'Turning Loneliness into Solitude ' এবং দ্বিতীয় অংশ 'Turning Solitude into Growth Period ' বইটির প্রথম অংশে চারটা চ্যাপ্টার আছে এবং প্রতিটি চ্যাপ্টারের লেখক দেখিয়েছেন কীভাবে আমরা এই Loneliness কে Solitude বানাবো। আবার পরবর্তী অংশে সাতটা চ্যাপ্টারে দেখিয়েছেন কীভাবে স্বেচ্ছায় একাকীত্ব (solitude) কে আত্মউন্নয়ন ও ব্যক্তিগত বিকাশের সুযোগে রূপান্তরিত করা যায়। এখানে লেখক একা থাকাটাকে Loneliness বা নিঃসঙ্গতা হিসেবে না দেখিয়ে একটা অনেক সুন্দর টার্ম ব্যবহার করেছেন তা হচ্ছে Solitude একাকীত্ব । এখন অনেকে প্রশ্ন থাকবে যে দুটো শব্দ তো একই। হ্যাঁ, দুটো শব্দের অর্থ একই কিন্তু মূল পার্থক্য হচ্ছে, Loneliness জিনিসটা আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে গ্রহণ করি না বরঞ্চ সমাজ আমাদেরকে অস্বাভাবিক হিসেবে দেখিয়ে একা করে দেয়। কিন্তু Solitude জিনিসটা আমরা নিজেরা ইচ্ছাকৃতভাবে গ্রহণ করি, নিজেদের সাথে সময় কাটাই, নিজেকে ভালোবাসি, অন্যের ওপর নিজের নির্ভরশীলতা কমিয়ে নিজের চাহিদা অনুযায়ী নিজের কাজগুলো করি। বইয়ের শুরুতে লেখক দেখিয়েছেন ছোট থাকতে বা স্কুলে থাকতে তারা অনেক ভালো ভালো বন্ধু ছিল, যেমনটা আমাদের সবারই থাকে, কিন্তু আসল সমস্যার সম্মুখীন তাকে হতে হয় যখন তিনি তার নিজ শহরে ফিরে আসেন। গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করার পর তিনি এবং তার বন্ধুরা সবাই একে অপরকে প্রতিজ্ঞা করেন একসাথে আবার মিলিত হবেন, দেখা করবেন, প্রতিদিন একবার হলেও কথা বলবেন। কিন্তু আসলে আমাদের জীবনের প্রতিদিনকার ব্যস্ততায় সেই জিনিসগুলো আর হয়ে ওঠে না এবং সময়ের স্রোতে সেই বন্ধুত্বগুলো একসময় হারিয়ে যায়। আর এখানে এসেই তিনি বুঝতে পারেন যে একাকীত্ব কতটা কঠিন। তবে দিন যত যেতে থাকে তত তিনি উপলব্ধি করেন এই জিনিসটা আসলে সুন্দর। আমরা যারা একাকীত্বকে ভয় পাই, আমরা যারা নিজের সাথে সময় কাটাতে ভয় পাই, মানুষ কী ভাববে আমি আমার ভবিষ্যতে একা একা কিভাবে থাকবো, এই জিনিসগুলো নিয়ে আমরা যখন প্রচুর পরিমাণে চিন্তিত, যেটাকে আমরা ইংরেজিতে Overthinking বলে থাকি এই সমস্ত জিনিসগুলো থেকে আমরা নিজেরা কিভাবে বাঁচব তার কিছু উপায় তিনি তুলে ধরেছেন। আমাদের বর্তমান সমাজ, সামাজিকীকরণের যেকোনো মাধ্যম গুলো আমাদেরকে দেখায় একাকীত্ব জিনিসটা ভয়ানক। এমনকি, আমারা যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মুভি দেখি সিরিজ দেখি, দেখে ভাবি হয়তো কোনোদিন কোনো মানুষ ডিজনি ওয়ার্ল্ডের সেই প্রিন্স দের মতো এসে আমাদের বাঁচাবে। আমাদের আশেপাশর পরিবেশ আমাদের এটা ভাবতে বাধ্য করে। হ্যাঁ,অবশ্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে একাকীত্ব জিনিসটা আসলেই ভয়ানক কিন্তু যখন আমরা কারো সঙ্গ পাই না, তখন যে আমাদের মনের মধ্যে ভয় ভবিষ্যতে কি হবে, মানুষ আমাদের সম্পর্কে কি ভাবছে, এই ভয়টা আসলে অমূলক। বরঞ্চ এই একাকীত্ব সময় গুলো আমরা কাজে লাগাতে পারি, আমরা যদি নতুন কোন স্কিল শিখতে চাই সে শেখার পেছনে আমরা সময় ব্যয় করতে পারি, নিজেদেরকে সময় দিতে পারি, হাজারটা ব্যস্ততার মাঝে আমরা কতজন সময় দেই নিজেদেরকে? আমরা ভাবি মানুষ আমাদের নিয়ে মজা নিচ্ছে, কিন্তু আসলে প্রতিটা মানুষের নিজেদের জীবন আছে। আর জীবন আছে মানেই সমস্যা আছে। এই জিনিসগুলোই লেখক দেখিয়েছেন। লেখক বলেছেন, নীরবতাকে গ্রহণ করলে আমরা নিজের অনুভূতি ও চিন্তা নিয়ে গভীরভাবে ভাবার সুযোগ পাই, যা মানসিক স্বচ্ছতা বাড়ায়। বইটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো আবেগিকভাবে স্বনির্ভর হওয়া। Gavrani মনে করেন, প্রকৃত সুখের জন্য অন্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজের আবেগ সামলানোর ক্ষমতা গড়ে তোলাই হলো স্থায়ী শক্তি ও স্থিতিশীলতার চাবিকাঠি। Gavrani দেখিয়েছেন, একা থাকাকালীন ছোট ছোট কাজেও আনন্দ খুঁজে নেওয়া সম্ভব। বই পড়া, হাঁটা বা ডায়েরি লেখা- এসব সাধারণ কাজে প্রশান্তি ও তৃপ্তি পাওয়া যায়, যা বাইরের স্বীকৃতির ওপর নির্ভর করে না। আমরা অনেক সময় ইউটিউবের তথাকথিত Hacks দেখে সমাধান খুঁজি, কিন্তু লেখক বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে আরও গভীরতর ও বাস্তবসম্মত সমাধান দিয়েছেন। বইটার প্রতিটা চ্যাপ্টারে আমি নিজের সাথে রিলেট করতে পেরেছি। বইটির একদম প্রথম পৃষ্ঠা থেকে শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত কিছু না কিছু জিনিস আমাদের শেখার আছে। আমরা সাধারণত আমাদের বইগুলো উৎসর্গ করি আমাদের বাবা-মা, কোনো আত্মীয়, কোনো অভিভাবক বা খুব কাছের কোন মানুষকে। অথচ তিনি বইটির উৎসর্গে লিখেছেন, 'To all the people who are caged in their own minds' ইউনিক তাই না? আবার বইটির স্বীকৃতিতেও তিনি অন্য কোন মানুষকে ধন্যবাদ না দিয়ে লিখেছেন তিনি নিজে যদি নিজেকে সাপোর্ট না করতেন এই বইটি তার জন্য লেখা সম্ভব হতো না। এ বইয়ের রিভিউ লিখতে বসে আমার হাত আসলে থামছে না, মনে হচ্ছে আরো একটু লিখি, ঠিক যেমন পরীক্ষার খাতায় ১ নং সৃজনশীল লেখার সময় আমাদের হাত থামে না, ঠিক সেরকম হচ্ছে আমার সাথে। তবে নিজের আবেগএ যে নিয়ন্ত্রণ রাখতেই হবে। তবে লেখা শেষ করার আগে আমি বই থেকে কিছু চমৎকার লাইন এখানে না লিখে পারছি না- "After college, you don't make friends. you just network. You just try to be nice to people so you are noteft behind " "....if you start imagining every person who is nice to you as your future buddy then you are practically digging of your hopes." "Villains teach us that our dark side doesn't define us but it is still a part of us" ".... women uplift each other and women need each other more than they need men" "Knowing how to belong to yourself is an art in a world everyone is finding their home in others" আমার মনে হয়েছে কোনো কঠিন ইংরেজি শব্দ বা জটিল বাক্য যেন ইচ্ছাকৃতভাবেই এড়িয়ে গেছেন লেখক। যারা ইংরেজি পড়তে পারেন, বুঝতে পারেন তারা অনায়াসেই এই বই দিয়ে তাদের নন-ফিকশন পাঠযাত্রা শুরু করতে পারেন। আমি নিজে আগে কখনও নন-ফিকশন পড়িনি; এমনকি এটি আমার পড়া দ্বিতীয় ইংরেজি বই। তাই যাদের মনে ইংরেজি বই পড়া নিয়ে সংশয় বা ভীতি রয়েছে, তাদের জন্য আমার মতে এটি এক চমৎকার সূচনা হতে পারে। বইটির মূল বক্তব্য ইতোমধ্যেই বলেছি, তবে পড়তে গিয়ে একটি বিষয় চোখে পড়েছে, লেখক কিছু কিছু ধারণা একাধিকবার পুনরাবৃত্তি করেছেন। কখনও কখনও মনে হয়েছে যেন আমি একটি স্থানে আটকে গেছি, আর সামনে এগোতে পারছি না। তবে পরে উপলব্ধি করলাম, হয়তো আমাদের মনে সেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গভীরভাবে গেঁথে দিতে চেয়েছেন লেখক, যাতে আমরা সহজেই তা ভুলে না যাই। আমি জানি না আপষার কার কেমন লাগবে বা লেগেছে, তবে আমার খুব ভালো সময় কেটেছে বইটার সাথে। একাকীত্বকে সঙ্গী করে আত্ম অন্বেষণের পথে যাঁরা এগিয়ে চলেন, তাঁদের জন্য বইটি নিঃসন্দেহে এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা , এটি নিঃশব্দ-নিঃসঙ্গতার মাঝেও নিজেকে ভালোবেসে যেতে শেখায়। ব্যক্তিগত রেটিং: ৯/১০ বই: The art of being alone লেখক: Renuka Gavrani প্রকাশকাল: ২০১৮