User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অসাধারণ বই | বিজ্ঞানের এত মজার , সহজ , সাবলীল ও রোমাঞ্চকর উপস্থাপনার স্বাদ পেতে বইটির ভেতরে ডুব দেওয়া দোষের কিছু নয় |
Was this review helpful to you?
or
একটানা কিছু বিজ্ঞানের বই পড়লাম। ইশতিয়াক চৌধুরী-র একটুখানি জ্যোতির্বিজ্ঞান পড়েছিলাম কিছুদিন আগে। তার রিভিউ দিয়েছি। মজার পদার্থবিজ্ঞান বইটা সেই ফেব্রুয়ারী থেকেই কেনার ইচ্ছা ছিলো। কিন্তু কেন জানি দামটা অনেক বেশি মনে হচ্ছিল। তারপর ভাবলাম এটাও ভালো হবে হয়ত, তাই কিনে ফেললাম। পপ সায়েন্সের বই। অনেককিছুর ডিপ ব্যাখ্যা থাকবে না সেটাই স্বাভাবিক। তবে কন্সেপ্ট শেখাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন লেখক। এটা রেগুলার সাইজের বই না। দৈর্ঘ্যে প্রস্থে বেশ বড়। প্রত্যেক অধ্যায়ের শুরুতে একটা মিম আছে। আগে থেকে জানাশোনা না থাকলে ঐ মিম বোঝার জন্য পুরো চ্যাপ্টার পড়তে হবে। একদমই সহজ করে লেখা। বিজ্ঞানের বই এর চেয়ে সহজ হতে পারে বলে মনে হয় না। তাই প্রেসার ছাড়া ফিজিক্সের সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং কিছু টপিক সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। ফিজিক্স নিয়ে তেমন গভীর জ্ঞান না থাকলেও এই বই পড়তে বিশেষ বেগ পেতে হবে না। লেখার মাঝে মাঝে ছোটো ছোটো বাস্তবিক উদাহরণ আছে, যেগুলো শেখার প্রসেসটাকে অনেক সহজ করেছে। সাথে আছে প্রচুর ছবি। কখনো কখনো সেগুলোও বেশ মজার। আমার ধারনা এই বই পাঠকদের পদার্থবিজ্ঞান ভীতি দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তাছাড়াও এটা যে একটা রসকসহীন সাবজেক্ট সেই ধারনাও ভেঙ্গে দেবে। সবশেষে, বইয়ের কোয়ালিটি, কন্টেন্ট বিবেচনায় দামটা তেমন বেশি মনে হয়নি। সব ধরনের মানুষকে এই বই পড়ার জন্য বলব। সে ফিজিক্স ভালোবাসুক আর নাই বাসুক, বই পড়ার পর ফলাফল হবে একটাই।
Was this review helpful to you?
or
ধরুন, আপনার কাছে একটা টেনিস বল আছে। বলটা কোনো দেয়ালের দিকে সোজা ছুড়ে মারলেন। কী ঘটবে? অবশ্যই দেয়ালে ধাক্কা লেগে ফিরে আসবে আপনার দিকে। এক লাখবার ছুড়ে মারলে প্রতিবার একই ঘটনা ঘটবে। আচ্ছা, টেনিস বলের পরিবর্তে ইলেকট্রন নিয়ে একই পরীক্ষা করলে কী ঘটবে, বলুন তো? প্রায় ৯৯.৯৯৯৯৯% ক্ষেত্রেই ইলেকট্রনটি টেনিস বলের মতো দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসবে। তবে বাকি ০.০০০০১% সময় ঘটবে অদ্ভুত ঘটনা—ইলেকট্রনটি দেয়াল ভেদ করে চলে যাবে অন্যপাশে। ঘটনাটা এমনভাবে ঘটবে যেন দেয়ালের কোনো অস্তিত্বই নেই! কী ব্যাখ্যা এই অদ্ভুত ঘটনার? সাদা চোখে আমরা জগৎটা যেভাবে দেখি, অতি ক্ষুদ্র কণাদের জগতে পদার্থবিজ্ঞানের সাধারণ নিয়মগুলো আর সেভাবে কাজ করে না। অথচ অতি খুদে কণা দিয়েই আমাদের চারপাশের সবকিছু তৈরি। এর ভেতরে কী ঘটছে, পাঠকের চোখের সামনে তা উন্মোচিত হবে ইশতিয়াক হোসেন চৌধুরীর লেখা ‘মিমে আর কার্টুনে মজার পদার্থবিজ্ঞান’ বইটি পড়ে। গবেষণার মাধ্যমে অতি খুদে কণাদের অদ্ভুত যে জগত মানুষের সামনে উন্মোচিত হয়েছে, সেই জগতের অলিগলি জানার সহজ উপায় এই বই। নিম্নমাধ্যমিক পর্যায়ের বিজ্ঞানের ধারণা থাকলে বইটি বুঝতে সহজ হবে। আর মাধ্যমিক পর্যায়ের পদার্থবিজ্ঞান পড়া থাকলে আনন্দ আরও বেড়ে যাবে বলে মনে করি। বইটির শুরুও বেশ অদ্ভুতভাবে। তিন বিজ্ঞানীর সঙ্গে নাটকীয়ভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে পাঠকদের। বোঝা যায়, এই তিন বিজ্ঞানী পুরো বইজুড়ে পাঠককে সঙ্গ দেবেন। শুধু বিজ্ঞানীরাই না, এর সঙ্গে আছে কয়েকটি কণা। অধ্যায় শুরুর আগে এই কণাদের সঙ্গেও পরিচিত হবেন পাঠক। এই কণাদের হাত ধরে (সত্যি সত্যি কার্টুন-প্রোটনের দুই হাত আছে!) প্রকৃতির লুকানো রহস্য জানতে পারবেন। কীভাবে পদার্থের জগৎ কাজ করে, কেমন হবে ভবিষ্যৎ, জানার সুযোগ থাকছে বইয়ের পাতায় পাতায়। মহাবিশ্বকে জানতে পদার্থবিজ্ঞানের ছোট ছোট ধারণা একের পর এক সাজিয়ে পূর্ণ ধারণা পাবেন পাঠক। বইটি চারটি ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগ অনেকটাই পদার্থবিজ্ঞানের জগতে প্রবেশের ভূমিকা। লেখক নাম দিয়েছেন ‘হযবরল বিজ্ঞান’। আলো নিয়ে আলোচনা দিয়ে শুরু। দৃশ্যমান আলো থেকে শুরু করে লেখক সহজ করে বুঝিয়েছেন তড়িৎ-চৌম্বকীয় বিকিরণ পর্যন্ত। এই ধারণার ওপর ভিত্তি করে এসেছে লেজার ফিজিকস। কার্টুন ছবিতে লেজার কীভাবে তৈরি হয়, তা এঁকে দেখানো আছে এই অধ্যায়ে। আলো কখনো তরঙ্গ কখনো কণা—জানা যাবে এই অধ্যায়ে খানিকটা এগোলে। এরপর পানির প্রবাহ থেকে উদাহরণ দিয়ে সান্দ্রতা বা ফ্লুইড নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ফ্লুইডের ধারণাগুলো তুলে আনার সময় কীভাবে কোন এক্সপেরিমেন্টের মাধ্যমে এই ধারণাগুলো এসেছে, সেই গল্পটা জানা যাবে। ফলে পদার্থবিজ্ঞানের অপরিচিত এই জগৎ আমার কাছে বেশ আকর্ষণীয় লাগবে। এ ভাগের শেষ অধ্যায়ে আছে রকেট সায়েন্স নিয়ে আলোচনা। রকেট কীভাবে কাজ করে, কঠিন ডায়াগ্রাম সহজ করে লেখক প্রকাশ করেছেন কার্টুনের মাধ্যমে। পুরো বই জুড়ে ছবির মধ্যে অনেক জায়গায় ইংরেজি রয়ে গেছে। বাংলা করলে পরিভাষা নষ্ট হয় কি না, সম্ভবত এই দুশ্চিন্তা থেকেই লেখক বিষয়গুলো ইংরেজিতে রেখেছেন। কোয়ান্টাম মেকানিকসের জগত নিয়ে আলোচনা আছে বইটির দ্বিতীয় ভাগে। বস্তু জগত কেমন করে কাজ করে, জানার জন্য, সঠিকভাবে বললে—মজায় মজায় জানার জন্য এই বইটি হতে পারে গাইড। পাতায় পাতায় কোয়ান্টাম মেকানিকস বা অতি ক্ষুদ্র জগতের অদ্ভুত বিজ্ঞান। শ্রোডিঙ্গারের বিড়ালের কথা অবশ্য আগেই জানা ছিল। এমন এক বিড়াল, যে কিনা একই সময়ে জীবিত বা মৃত—দুটোই হতে পারে। মাথা খারাপ করার মতো এই কথা পড়লে কিন্তু আর অতটা ভয়ঙ্কর মনে হবে না। মজার এই জগতে প্রবেশ করতে বিশেষ কোনো জানাশোনার প্রয়োজন নেই। তৃতীয় ভাগের একটি অধ্যায়ের নাম দেখে বেশ মজা পেয়েছি। কণাদের চিড়িয়াখানা। শুরুটাও বেশ অদ্ভুত। লেখক বলেছেন, ‘ঠিক কবে কণাপদার্থবিদরা একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন?’ সব কণা খুঁজে পাওয়ার আগে তাঁদের ঘুম না হোক, বই পড়ে আপনি শান্তি পাবেন বলেই মনে করি। আমার পছন্দের এরকম আরেকটি শিরোনাম ‘ভুবনভরা নিউট্রিনো ধরতে গেলে নেই’। বিজ্ঞানের ছাত্র হোক বা হাসতে পছন্দ করেন—এমন কেউ, সবার জন্যই বইটিতে আছে মজার বিজ্ঞান। মহাবিশ্ব সম্পর্কে আপনার ধারণা বদলে দিতে, নতুনভাবে মহাবিশ্বকে দেখতে সাহায্য করবে এই বই। চতুর্থ ভাগে পদার্থবিজ্ঞানের ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা করেছেন লেখক। এই ভাগটি শুরু হয়েছে একটি মিম দিয়ে। এখানে আলোচনা আছে গ্র্যান্ড ইউনিফিকেশন থিওরি নিয়ে। বিগ ব্যাংয়ের কিছু সময় পরে মহাবিশ্ব সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা হয়ে যায়। ফলে আলাদা হয়ে যায় তড়িৎ-চুম্বক বল ও দুর্বল বল। শক্তিশালী নিউক্লিয়ার বলের ক্ষেত্রেও ঘটে একই ঘটনা। ধারণা করা হয়, সবগুলো মৌলিক বল একীভূত অবস্থায় ছিল। এই একীভূত তত্ত্বের নামই গ্র্যান্ড ইউনিফিকেশন থিওরি। বিজ্ঞানীরা এর সপক্ষে অবশ্য এখনো নিশ্চিত কোনো প্রমাণ খুঁজে পাননি। বইটির প্রচ্ছদ আকর্ষণীয়। আমার মতো অনেকেই কার্টুন, মিম, মাঙ্গা খুব পছন্দ করে। অনেকে আবার নিজে আঁকতেও চায়। কোনো বইয়ে কার্টুন বা মিম থাকলে সেই বই পড়তে কিশোর-তরুণদের তাই বেশ সুবিধা। বইটি ঠিক মৌলিক নয়, আবার একদম অনুবাদও বলা যায় না। প্রচ্ছদে মূল বইয়ের নাম লেখা আছে—কোয়ার্কি কোয়ার্কস: এ কার্টুন গাইড টু দ্য ফ্যাসিনেটিং রেলম অব ফিজিকস অবলম্বনে। তবে ‘অবলম্বনে’ কথাটি হয়তো ঠিক নেই, রূপান্তর বললে আরও ভালো হতো বলে মনে করি। বইটি আমার মতো সাধারণ পাঠককে পদার্থবিজ্ঞানের জগতে আনন্দভ্রমণের সুযোগ করে দেয়। আগের দিনে ডাক্তাররা যেমন ‘হাওয়া বদল’-এর পরামর্শ দিতেন, মানুষ আনন্দভ্রমণে যেত, খানিকটা সেরকম। আমার ধারণা ছিল, কমিকস বই শুধু গল্প উপন্যাস থেকে হয়। কঠিন কোনো বিষয় নিয়ে বুঝি কমিক করা যায় না। এই ধারণা মিমে আর কার্টুনে মজার পদার্থবিজ্ঞান-এর লেখক ইশতিয়াক হোসেন চৌধুরী অনেকটা বদলে দিয়েছেন। বইটির কিছু দুর্বলতাও আছে। সবচেয়ে বড় দুর্বলতা—শুরুতে মূল লেখকদ্বয়ের নাম নেই। মূল বইয়ের নাম লেখা আছে প্রচ্ছদে ও ভেতরে শুরুর দিকে। মূল লেখকদ্বয়—বেঞ্জামিন ভার ও বরিস লেমারের নাম জানা যাবে শুধু ‘লেখকের কথা’ অংশে। শুরুতে লেখকের নাম থাকলে বিষয়টা আরও স্বচ্ছ হতো বলে মনে করি। বইয়ের কাগজ আরও উন্নত আশা করেছিলাম। ছবিগুলোও কিছু জায়গায় খানিকটা ঝাপসা এসেছে। প্রকাশক এদিকে আরও মনোযোগ দেবেন বলে আশা করি। এরউইন, ম্যাক্সওয়েল ও এমি এবং কয়েকটি কণার সঙ্গে কল্পনায় যোগ দিয়েছেন লেখক। কার্টুন ও মিমের এই বই শেষও হয়েছে একটি মিম দিয়ে। দেখে মনে হলো, মিম আর কার্টুনে মজার পদার্থবিজ্ঞান নাম দেওয়া স্বার্থক হয়েছে। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে 'কার্টুনে-আনন্দে পদার্থবিজ্ঞানের জগতে' শিরোনামে আহমাদ মুদ্দাসসের এর লেখায় 'মজার পদার্থবিজ্ঞান' বইয়ের রিভিউ প্রকাশিত হয়েছিল জনপ্রিয় ম্যাগাজিন 'বিজ্ঞানচিন্তা' এর পাতায়। হুবুহু কপি করা হলো এখানে।