User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
ওয়াও এই বইটা আছে এই বইটা খুব সুন্দর আগে স্কুল লাইব্রেরি তে পড়েছিলাম খুব মজার একটা বই সবাই এই বইটা নিতে পারেন বইটা খুব সুন্দর,,, এর সব বই খুব সুন্দর ভাবে দেখা ফর্সা page আমার খুব ভালো লেগেছে,, আমার বাসা থেকে বাজার অনেক দূর তাই অনলাইন থেকে অর্ডার করতে খুব সহজ হয় এই পরিকল্পনা খুব ভালো হয়েছে এখন থেকে আমার ছোটখাটো বই নিতে এখান থেকেই অর্ডার করবো ইনশাআল্লাহ
Was this review helpful to you?
or
'বিশ বছর পর' বইটির প্রকাশকাল ১৯৯১ সাল, যার সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন প্রবাসি স্যার মুহম্মদ জাফর ইকবাল। বইটিও প্রথমত প্রকাশিত হয়েছিল সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকেই, যা সুধী মহলে বেশ ইতিবাচক সাড়া পেলেও প্রচার ও প্রসারের অভাবে বাংলাদেশের খুব বেশি সাধারণ পাঠকের নিকট পৌঁছুতে পারেনি। পরবর্তিতে ২০১০ সালে এই বইটির পুনর্মুদ্রন ও বাংলাদেশে প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ও তা বাস্তবায়নও হয়। ১৯৯১ সালের প্রেক্ষাপটে সম্পাদিত একটি বই ২০১০ সালে এসে, অর্থাৎ দীর্ঘ ১৯ বছর পর দেশের মানুষের হাতে পৌঁছে দেয়ার সিদ্ধান্ত অবশ্যই বিচিত্র। তবে কার্যকারণ সম্পর্কে উপলব্ধি করতে পারলে বিস্ময়ের জায়গা আর খুব বেশি থাকবে না। এই গ্রন্থে মূলত ঠাঁই পেয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশ লাভের ২০ বছর পর বাংলাদেশ কোন অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছিল, সে বিষয়ে দেশি ও প্রবাসি সুধীজন, শিক্ষাবিদ ও মননশীল সুশীল সমাজের মূল্যায়ন। স্বাভাবিকভাবেই তাদের মূল্যায়নে ইতিবাচকতা অপেক্ষা নেতিবাচকতা ও হতাশাবাদিতাই অধিক প্রকট হয়ে উঠেছিল। এবং দুঃখের বিষয়, স্বাধীনতার ২০ বছর পর গুরুজনেদের কন্ঠে যে হাহাকারধ্বনি প্রকম্পিত হয়েছিল, আরও ১৯ বছর বাদেও তার খুব একটা অবস্থান্তর হয়নি। এই বিষয়টা অবশ্যই অত্যন্ত পরিহাসের। এবং আরও পরিহাসের বিষয় এই যে, এতদিনেও দেশ একচুল এগোয়নি বলেই প্রথম প্রকাশের ১৯ বছর বাদেও বইটির দ্বিতীয় মুদ্রনের সার্থকতা ও যৌক্তিকতা অক্ষুণ্ন রয়েছিল! যাইহোক, আগেই উল্লেখ করেছি এই বইয়ের বিষয়বস্তু ছিল স্বাধীনতার ২০ বছর পর বাংলাদেশের সার্বিক চিত্র সম্পর্কে শিক্ষিত সমাজের মূল্যায়ন। উল্লেখ্য যে, তারা সকলেই ছিলেন একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূলধারার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই স্বাধীনতা লাভের বিস বছর পর দেশকে এগিয়ে যাবার বদলে পশ্চাদপৎসারিত হতে দেখে তাদের মনে যে তীব্র ক্রোধ ও বিষাদ জন্ম নিয়েছিল, তা বেশ মোটা দাগেই ফুটে উঠেছে প্রায় প্রতিটি নিবন্ধ ও প্রবন্ধেই; যেগুলোর রচয়িতা ছিলেন শামসুর রাহমান, হায়াৎ মামুদ, জাহানারা ইমাম, হুমায়ুন আহমেদ, নির্মলেন্দু গুণ, মুহম্মদ জাফর ইকবালের ন্যায় ব্যক্তিরা। তাদের মূল্যায়নে নেতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়গুলো স্থান পেয়েছে তা হল... ১/ স্বাধীনতার ঘোষণা এবং প্রকৃত ঘোষক কে, তা নিয়ে দেশে সৃষ্ট বিতর্ক; ২/ যুদ্ধাপরাধীদের বঙ্গবন্ধুন কর্তৃক সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা; ৩/ ১৯৭৫ সালে দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে গনতন্ত্রকে হত্যা করে সমাজতন্ত্র আনয়ন তথা বাকশাল গঠনের প্রচেষ্টা; ৪/ ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা; ৫/ ১৯৭৫ সালে জেলখানায় নৃশংস হত্যাকান্ড; ৬/ মেজর জিয়ার রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সংসদে ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে যুদ্ধাপরাধীদের ঠাঁই দেয়া, গোলাম আজমের মত ঘৃণ্য ব্যক্তিকে দেশে ফিরিয়ে আনা, বিল পাস করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার পথ রহিত করা তদুপরি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের প্রশাসনিক সুযোগ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে দেশান্তরি হতে সাহায্য করা, জেল হত্যা মামলাকে বিচারের আওতায় না আনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে মিনি পাকিস্তানে পরিণত করার নীল নকশা; ৭/ সাংস্কৃতিকভাবে দেশকে অবদমিত করে রাখা, 'বাঙালি ও বাংলাদেশী' ইস্যুর মাধ্যমে সূক্ষ্মভাবে দেশের হাজার বছরের ইতিহাসকে অবমাননা, প্রশাসনিক কাজে বাংলার বদলে ইংরেজিকে প্রাধান্য দেয়া, জাতীয় প্রতীক সমূহে নির্বাচনে স্বেচ্ছাচারিতা ৮/ গণমাধ্যম থেকে অতি সূক্ষ্মভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করতে শুরু করা, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রকে প্রকাশ্যে বিকৃত করা, বইপত্র থেকে 'পাকিস্তানি হানাদার' শব্দযুগল থেকে 'পাকিস্তান' শব্দের বদলে 'পশ্চিমা' শব্দের ব্যবহারের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে অস্পষ্টভাবে স্বাধীনতার কথা তুলে ধরা, পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের উল্লেখ না করা; ৯/ এরশাদ কর্তৃক স্বৈরাচারী সরকার গঠন ও দেশকে ষাটের দশকের পূর্ব পাকিস্তানের ন্যায় বেহাল দশায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া; ১০/ বিএনপি-আওয়ামী লীগের নিজস্ব স্বার্থ সিদ্ধির ফাঁকতালে জামায়াতে ইসলামীর মত মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি ও প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলের মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়ানো, ধর্মভিত্তিক রাজনীতির পুনঃপ্রচলন; ১১/ উপজাতি ও সংখ্যালঘুদের অধিকার হরণ; ১২/ ১৯৯০ সালে '৬৪ এর ন্যায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি এবং সে ব্যাপারে সংবাদ মাধ্যমের ধৃষ্টতা; ১৩/ দেশকে গনতন্ত্রের পথে উত্তোরণের পরও সরকার গঠনপূর্বক বিএনপি'র হঠাৎ করে জনপ্রিয়তা হ্রাস, সংসদে যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের দাবিতে প্রয়োজনীয় বিলসমূহ পাশ করা থেকে বিরত থাকা; ১৪/ আওয়ামী লীগের অবিরোধীদলসুলভ আচরণ; ১৫/ স্বাধীন দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্য সম্মান না দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের সম্মানের স্থানে অধিষ্ঠিত করা; ১৬/ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাস্তবায়নে টালবাহানা। উপর্যুক্ত বিষয়সমূহ নিয়ে আলোচ্য বইটিতে সুধী সমাজ বারবার হতাশা ব্যক্ত করেছেন এবং এসব কারণের পরিপ্রেক্ষিতে তারা মনে করেছেন যে দেশ স্বাধীন হলেও প্রকৃত স্বাধীনতার পথ থেকে দেশ অনেকাংশে দূরে সরে গেছে। অর্থাৎ আক্ষরিক অর্থেই '২০ বছর পর' বাংলাদেশ সেই বাংলাদেশ হয়ে ওঠেনি যার স্বপ্ন একসময় বীর মুক্তিযোদ্ধারা দেখেছিলেন। এখন বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, স্বাধীনতার ২০ বছর পর সুধী সমাজ স্বাধীন বাংলাদেশ নিয়ে যেসব অভিযোগ করেছিলেন, আজ স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও শিক্ষিত সমাজ সেগুলোর কোন পরিবর্তন অনুভব করছে না। বরং হিসাব করলে দেখা যাবে অভিযোগের পরিমাণ বাড়ছে বৈ কমছে না। সেদিক থেকে দেখতে গেলে, ১৯৯০ সালে প্রকাশিত বইট পড়তে পড়তেও পাঠক সামগ্রিক বিষয়বস্তুর সাথে বর্তমানকে সহজেই 'রিলেট' করতে পারবে। তাই যারা মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের সাথে সরাসরি যুক্ত ব্যক্তিদের দেশ ভাবনা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী, তাদের অবশ্যই উচিৎ '২০ বছর পর' বইটি পড়া ও সংগ্রহে রাখা।