User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#ফিজা নিশব্দ যন্ত্রণারও এক ভাষা আছে, থাকে উচ্চারণহীন কান্নারও গল্প। "ফিজা" সেই গল্প,যেখানে এক নারীর জীবনের তিক্ততা, অপূর্ণতা আর সম্মানের লড়াই ফুটে ওঠে প্রতিটি পাতায়। প্রবাসজীবনের একাকীত্ব, পারিবারিক ছলনা আর সমাজের মুখোশ খুলে ফেলার এক সাহসী দলিল এই উপন্যাস। মোর্শেদা হোসেন রুবির সংবেদনশীল লেখায় 'ফিজা' শুধু একজন চরিত্র নয়, হয়ে উঠেছে হাজারো নারীর অভিমানী প্রতিবিম্ব। "ফিজা"- এক নিঃশব্দ আর্তনাদ, এক নারীর সংগ্রাম করে টিকে থাকার নাম। ? কাহিনি সংক্ষেপে : বাঙালি সংস্কৃতির কোমলতায় গড়া, আদুরে, স্বপ্নবিলাসী ফিজার জীবনে বিয়ের পর সবই যেন ঠিকঠাক চলছিল। পাত্র হিমেল, জাপানে বসবাসকারী, প্রতিষ্ঠিত ও শিক্ষিত এক পুরুষ। মা-বাবার চোখে পরিপূর্ণ একটি জীবনসঙ্গী। কিন্তু বিদেশের মাটিতে, চোখ ধাঁধানো আধুনিক জীবনের আড়ালে লুকিয়ে থাকা সমস্যাগুলো যেন ধীরে ধীরে ঘিরে ধরে ফিজাকে। দুই সন্তানের দায়িত্ব, জাপানের একাকী জীবনের চ্যালেঞ্জ, আর স্বামীর অনভিপ্রেত দূরত্ব। আবার নিজের পর্দা রক্ষার জন্যও ফিজাকে বারবার কটুবাক্য শুনতে হয়। সব মিলিয়ে এক একাকী, নীরব যুদ্ধের শুরু। যে হিমেল ছিল তার আশ্রয়, সে-ই একদিন যেন নিজেই বাতাসে মিলিয়ে গেল। বিধবা হয়ে ফিজা শুধু একজন স্বামী নয়, হারালো তার নিরাপত্তার আশ্রয়, ভবিষ্যতের দৃঢ় ভিত। এরই মধ্যে ফিজা জানতে পারে হিমেল এবং তার পরিবারের নগ্ন এক সত্যি। নিজের দেবর শ্যামলও জড়িয়ে আছে এই নোংরামিতে। জীবনের এই কঠিন সময়েই সামনে আসে অতীতের মানুষ- সাকিফ, আর হিমেলের বস ফারুক। কিন্তু প্রশ্ন একটাই, এই দুই পুরুষের মাঝে কার মধ্যে আছে প্রকৃত সহানুভূতির আশ্বাস? "পর্দার কাজ হলো নিজের চারপাশে ব্যক্তিত্বের এমন দেয়াল দাড় করানো যে সেই দেয়াল টপকে কেউ কাছে ঘেঁষতে না পারে। কাজটা করতে পারলে জীবনে বারবার মরতে হবে না।" ? পাঠ প্রতিক্রিয়া: “ফিজা” নিছক একটি উপন্যাস নয়, এটি একজন নারীর নিঃসঙ্গতা, হাহাকার, অপূর্ণতা আর সংগ্রামের দলিল। মোর্শেদা হোসেন রুবির কলমে ফুটে উঠেছে এক বিধবার নিঃশব্দ সংগ্রাম। লেখার ভাষা সহজ, সাবলীল ও হৃদয়স্পর্শী। বিদেশে একা থাকা নারীদের যে জটিল বাস্তবতা, সেটিকে খুব বাস্তবিক ও মনোগ্রাহীভাবে তুলে ধরা হয়েছে এই উপন্যাসে। বিশেষ করে মা হিসেবে ফিজার কষ্ট, দায়িত্ব, অপরাধবোধ, সব পাঠকের হৃদয়ে ঢেউ তোলে। সবচেয়ে বিরক্তিকর মনে হয়েছে হিমেল চরিত্রটিকে, একসময় মায়া লাগলেও শেষে এসে ওর প্রতি করুনাটুকুও মনে জায়গা দিতে পারি নি আমি। সত্যিকার অর্থে ও একটা কাপুরষ। শ্যামল চরিত্রটিও অসহ্যকর মনে হয়েছে। নারীদের আসল শত্রু নারীই রাহেলা, মাদিহা, এই চরিত্রগুলো এটা আবারও প্রমাণ করলো। একসময় মনে হয়, ফিজা যেন আমাদের সবার ভেতরে লুকিয়ে থাকা সেই গোপন কান্নার নাম, যে হারানোর ভয়েও হার মানে না। সবচেয়ে ভালো লেগেছে ফিজার মাধ্যমে জাপান সম্পর্কে অনেক কিছু জানা গেলো। নতুন কিছু জাপানি শব্দের সাথেও পরিচিত হতে পারলাম। ? কিছু অসঙ্গতি : গল্পে হিমেল একটি বক্স মেসেজ মৃত্যুর পূর্বে ফিজার জন্য তার বোনের কাছে রেখে যায়, সেটা বইতে উল্লেখ থাকলেও মেসেজে কি লেখা ছিলো সেটা বইতে নেই। যদিও লেখক পরবর্তীতে অনলাইনে সেটা পোস্ট করেছেন। কিন্তু আমার মনে হলো সব পাঠক তো লেখকের গ্রুপে বা আইডিতে থাকবে না, হয়ত তাকে সরাসরি চিনবেও না আমার মতো,তাহলে সম্পূর্ণ চিঠিটা কেন বইতে দেয়া হলো না? বইয়ের বিভিন্ন জায়গায় বেশকিছু টাইপিং মিস্টেক আর নামের গড়মিল আছে এটাও দৃষ্টিকটু। বিয়ের সময় ফিজার বয়স বলা হয়েছে উনিশ, এবং হিমেল মারা যাবার সময় পঁচিশ। এইক্ষেত্রে ওদের বাচ্চাদের বয়স আর ওদের বিয়ের বয়স উল্লেখ করা উচিত ছিলো। কারণ কাহিনি হিসেবে বাচ্চাদের বয়স তিন বছরের মতো মনে হচ্ছে। অথচ ফিজার বয়স পঁচিশ বলা হচ্ছে তখন। হিমেলের চাকরি জীবন সাত বছর বলা হয় মৃত্যুর সময় কিন্তু ও তো বিয়ের অনেক আগে থেকেই জাপানে তাহলে হিসেব মতো সাত আর ছয়, প্রায় তেরো বছর হবার কথা। এগুলো নিয়ে আমি একটু কনফিউজড। হিমেলের মৃত্যুর সময় ওর ভাই বাপ্পিকে দেখাই গেলো না অথচ কিছুদিন আগেও ওর বিয়ে নিয়ে মাতামাতি হলো ভালোই এটা একটু খটকা লেগেছে । আবার শেষে এসে হিমেলের পরিবার যেন একেবারেই কাহিনির বাইরে চলে গেলো,যারা ফিজাকে ধরে রাখতে এতকিছু করলো তারা এত সহজে হাল ছেড়ে দিলো? এটা মানতে পারলাম না। এই জিনিসগুলো বিস্তারিত থাকলে বইটি পূর্ণাঙ্গ মনে হত আমার কাছে। শেষ কথা: "ফিজা" শুধুমাত্র একজন নারীর গল্প নয়, এটি শত বাধা ঠেলে ভালোবাসা, সম্মান আর অস্তিত্ব রক্ষার গল্প। এক বসন্তের পেছনে হাজার শীত কাটানোর গল্প। হৃদয়ের গভীরে অনুরণন তুলতে পারে এমন এক উপন্যাস, যা পাঠকের মনে দীর্ঘদিন দাগ কেটে যাবে। "জীবনের এমন কিছু মোড় থাকে যেখানে ধর্মের মূল্যবোধ না থাকলে তার ঈমানদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। হালাল রোজগার খাবার জন্য কারো তসবিহ হাতে ঘোরা জরুরী না,বরং তাজবীহ হাতে ঘুরে হারাম খেলে সেটা ভয়ংকর।
Was this review helpful to you?
or
লেখিকার অন্যসব বইয়ের মতোই অসাধারণ একটি বই। ফিজার বাবার মতো বাবা, শিক্ষকের অভাব অনুভব করি। শ্যামলের মতো দেবর আর পরিবার এ সংসারে বিরল নয়, লেখিকা একটা সদ্য অল্পবয়সী বিধবার পরিস্থিতির বাস্তব অবস্থা তুলে ধরেছেন, পড়তে গেলেই মনে হয় এতো আমার দেখা । এ যুগে ফারুকের মতো মানুষের বড্ড প্রয়োজন!সংসার আর জীবনসঙ্গীর ভাবনা যদি ফারুকের মতো মানুষের সাথে মিলে যায় তবে তা সৃষ্টিকর্তার অপার কৃপা।