User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

      By Md Rakib Hasan

      14 May 2025 09:38 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      ====== কাহিনী/বইয়ের সার-সংক্ষেপ ======= “Yesterday upon the stair I met a man who wasn’t there He wasn’t there again today I wish, I wish he’d go away” প্রায় ৪৫ বছর পূর্বে দার্জিলিংয়ে খুন হন সত্তরের দশকের উঠতি বয়সের প্রতিভাবান ও সম্ভাবনাময় একজন কবি অমিতাভ মিত্র। কিন্তু তার খুনের পর যদিও আসামী হিসেবে তারই ঘনিষ্ঠ বন্ধু আরেক রহস্য ঔপন্যাসিক অরুণ চৌধুরীর দিকে পুলিশের সন্দেহ হয়; তবুও পরস্পর বিরোধী নানা তথ্য-প্রমাণের জন্য সেই অভিযোগের কোন শক্ত ভিত্তিই পুলিশ দাঁড় করাতে পারেনি। আর এত বছর পেরিয়ে গেলেও সেই হত্যাকাণ্ডেরও কোন সুরাহা কেউ করতে পারেনি। কিন্তু নতুন করে ঘটনার উন্মোচন হয় ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট তনয়া ভট্টাচার্য ওরফে টিনার দার্জিলিং যাত্রা দিয়ে। যেহেতু ৪৫ বছর পূর্বের এই হত্যা মামলার অনেকেই বেঁচে নেই বা বার্ধক্যে উপনীত তাই তনয়া মামলার সন্দেহভাজন আসামী অরুণ চৌধুরীর সাথেই প্রথম সাক্ষাৎ করলো। তবে প্রথম সাক্ষাতে রহস্য আরোও ঘনীভূত হওয়ার পাশাপাশি অরুণ চৌধুরী তনয়ার হতে তুলে দেন কবি অমিতাভ মিত্রের লেখা একমাত্র অসমাপ্ত রহস্যপোন্যাসের পান্ডুলিপি! পাশাপাশি তিনি এও বলে দেন এই উপন্যাসের মধ্যেই রয়েছে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্যভেদের চাবিকাঠি। তনয়া তার প্রতিবেদনের জন্য যতই তথ্য ও সাক্ষাৎকার নিতে শুরু করে ততই জট পাকতে থাকে ৪৫ বছরের পুরোনো হত্যা রহস্যের। কে খুনি আর কে-ই বা সত্য আড়াল করছে; তবে কি ঘটনার পিছনে রয়েছে অন্য কোন ঘটনা? নাকি সত্যের মোড়কে রয়েছে অন্য এক ভয়ংকর মিথ্যা? ========= পাঠ প্রতিক্রিয়া ========== এটা অনেকটা চিরন্তন সত্য যে, পৃথিবীতে আসলে পারফেক্ট ক্রাইম বলে কিছু হয়না। কিন্তু কোন ক্রাইমের অস্তিত্বকেই যদি অন্য কিছু দিয়ে আড়াল করা হয় তবে? বইটি এক কথায় বলবো দুর্দান্ত ও আমার এ যাবৎ পড়া গোয়েন্দা রহস্যপোন্যাসের মধ্যে অন্যতম সেরা লেগেছে বইটি। উপন্যাসের ভিতরে উপন্যাস এবং রহস্যের ভিতরে রহস্য এমনকি সেটার পরেও উন্মোচন হয় আরেক রহস্য! এমন একটি গোয়েন্দা ও রহস্যপোন্যাস যা পাঠককে বার বার চিন্তা করতে বাধ্য করবে। বইটি কিন্ত টান টান উত্তেজনাপূর্ণ কিংবা এক বসাতেই শেষ করার মতো নয় কিন্তু রহস্য প্রিয় পাঠককে মোহাবিষ্ট করে রাখবে দীর্ঘক্ষণ। বইটি দুইটি টাইম লাইনে লেখা; তাই কাহিনীর প্রয়োজনেই দুইটি টাইম লাইনেরই অর্থ্যাৎ সত্তরের দশক ও বর্তমান সময়ের পরিবেশ, মানুষের জীবন-যাপন, রাজনীতি, সমাজিক ব্যবস্থা লেখক যথাসম্ভব তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। সত্তরের দশকটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, নকশাল বাহিনীর উত্থান, কমিউনিস্টদের সক্রিয়তা সবই লেখক বইটিতে যত্নসহকারে তুলে ধরে দুই সময়েরই আবহ দানের চেষ্টা করেছেন। বইয়ের প্রতিটা অধ্যায়ই কিন্তু শুরু হয়েছে ছোট ছোট কবিতার মধ্য দিয়ে,সেগুলোর যৌক্তিকতা ও প্রাসঙ্গিকতা একে একে ধরা পড়ে কাহিনীর একদম শেষে গিয়ে। এজন্যই বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ের ফাঁকে ফাঁকে গুঁজে দেয়া এইসব কবিতা তখন আর অপ্রাসঙ্গিক মনে হয় না। তবে আমার মতো অনেকেরই কাছে হয়তো সেটা ততটা নাও ভালো লাগতে পারে। গোয়েন্দা, রহস্য ও থ্রিলার প্রিয় পাঠকদের বলবো যদি এই বইটি কেউ পড়ে না থাকেন; তবে খুবই দারুণ একটি গোয়েন্দা রহস্যপোন্যাস মিস করছেন। তাই অবশ্যই বইটি পড়ার অনুরোধ থাকলো। প্রোডাকশনঃ বইটির নামকরণ ও কভার ডিজাইনের মাহাত্ম্য ততটা বুঝিনি। আমার বইটি ফটোকপি প্রিন্ট ছিলো তাই প্রোডাক্টশন নিয়ে মন্তব্য করতে পারছি না। তবে বানান ভুল চোখে পড়েনি। ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৯/১০।

      By Fahmida Afrin

      15 Mar 2025 10:58 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      'সে কি রাত্রির শেষ মৃত পাখি, যার স্মৃতি আঁচড়াল মৃত্যুর ঘন ছায়ায় দেবযান ভয়ের মতন মৃদুসঞ্চারী স্বপ্নের পিছু নিতে? স্বপ্নের মত আয়ু চলে যায়, কখনো বা দ্রুত, কখনো বিলম্বিতে।' – পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল ◼️লেখক পরিচিতিঃ শাক্যজিৎ ভট্টাচার্যের জন্ম ১৯৮২ সালে। পেশায় রাশিবিজ্ঞানী। বিশ্বসাহিত্যের নিষ্ণাত পাঠক শাক্যজিৎ বিচিত্র বিষয়ে নিরীক্ষামূলক গল্প, উপন্যাস লিখছেন সাম্প্রতিক সময়ে। “শেষ মৃত পাখি ” তাঁর প্রকাশিত পঞ্চম বই। ◼️কাহিনি সংক্ষেপঃ পঁয়তাল্লিশ বছর আগে দার্জিলিংয়ের এক সম্ভাবনাময় কবি, অমিতাভ মিত্র খুন হয়েছিলেন। অভিযোগের তীর ছিল তাঁরই ঘনিষ্ঠ বন্ধু রহস্য-ঔপন্যাসিক অরুণ চৌধুরীর দিকে। কিন্তু নানা পরস্পরবিরোধী প্রমাণে সে অভিযোগ দাঁড়ায়নি। তনয়া একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক। অমীমাংসিত খুনের কাহিনি নিয়ে ধারাবাহিক লিখছেন পত্রিকায়। অমিতাভ মিত্রের হত্যা-রহস্য নিয়ে লেখার জন্য দার্জিলিংয়ে এলেন তনয়া। তনয়া কি খুঁজে পেলেন এই হত্যারহস্যের সমাধান? ◼️চরিত্রসমূহঃ ▪️অমিতাভ মিত্রঃ সত্তরের দশকের উদীয়মান তরুণ কবি ও সাহিত্যিক। অরুণ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। অমিতাভ এ গল্পের ভিক্টিম ভিক্টিম। অমিতাভকে হত্যার দায় গিয়ে পড়ে তার বন্ধু অরুণ চৌধুরীর ওপর। ▪️অরুণ চৌধুরীঃ সত্তরের দশকের উদীয়মান সাহিত্যিক। তাঁর প্রথম বইটি ফ্লপ হয়। পরবর্তীতে অবশ্য বেশ জনপ্রিয় লেখক হয়ে ওঠেন। ▪️অনন্যা চৌধুরীঃ অরুণ চৌধুরীর সহধর্মিণী। পেশায় একজন ইউনিভার্সিটি প্রফেসর। ▪️সিদ্ধার্থঃ অরুণ চৌধুরীর বড় ভাইয়ের ছোট ছেলে। নিঃসন্তান অরুণ -অনন্যা দম্পতির কাছে সিদ্ধার্থ সন্তানের মতোই। ▪️তনয়া ভট্টাচার্যঃ তনয়া একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক। অমীমাংসিত খুনের কাহিনি নিয়ে ধারাবাহিক লিখছেন পত্রিকায়। দার্জিলিং আসেন ৪৫ বছর পুরনো কবি অমিতাভ মিত্র হত্যার ওপর ক্রাইম স্টোরি লেখার জন্য। এখানে এসে তিনি জড়িয়ে পড়েন ভয়ানক রহস্যের জালে। ▪️ড্যানিয়েল লামাঃ সত্তরের দশকের একজন দাপটে পুলিশ কর্মকর্তা। তাঁর ভয়ে পুরো দার্জিলিংয়ের সকল অপরাধী তটস্থ থাকতো। নকশাল আন্দোলনের সাথে জড়িত যুবকরা ছিলো ড্যানিয়েলের প্রতিদিনের শিকার। ▪️সঞ্জয় অধিকারীঃ অরুণ, অমিতাভর বন্ধু। ▪️গিরিরাজঃ রহস্যময় চরিত্র। ▪️বাবলাঃ অরুণ চৌধুরীর বাড়ির বাগানের মালি। ▪️ধনরাজ গম্বুঃ একজন আদর্শবান পুলিশ কর্মকর্তা। ▪️আনন্দ পাঠকঃ পুলিশের সাধারণ কর্মচারী। কেইসের বিষয়ে ইনি টিনাকে অনেক সহযোগীতা করেছেন। ▪️মিসেস বাসুঃ অরুণ চৌধুরীর প্রতিবেশী। অরুণের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়ে ছিলেন এ ঘটনায়। ▪️রামবীরঃ পুরনো বাড়ির কেয়ারটেকার। ▪️শুদ্ধস্বত্বঃ অমিতাভর উপন্যাসের গোয়েন্দা। ▪️প্রণবেশঃ শুদ্ধস্বত্বের অ্যাসিস্ট্যান্ট। ▪️লতাঃ প্রণবেশের স্ত্রী। ▪️মাধব, আনিসুরঃ অমিতাভর উপন্যাসের ২জন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। ◼️পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ পঁয়তাল্লিশ বছর আগের হত্যা রহস্য নিয়ে ক্রাইম স্টোরির জন্য তথ্য জোগাড় করতে আসেন তনয়া ,তিনি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক। লেখক অরুণ চৌধুরীর ওপর থাকা খুনের অভিযোগটিকে খতিয়ে দেখতে শুরু করেন টিনা। একের পর এক সামনে আসতে থাকে নতুন রহস্যজট। পেঁয়াজের পরতের মতো একের পর এক পর্দা সরতেই থাকে এই ঘটনা থেকে। টিনা যতোই নতুন নতুন জট খুলছে, সবকিছু যেন আরোই তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। সমাধান পর্যন্ত পৌছানো যাচ্ছে না। একাধিক নাটকীয় মোড় কাহিনিটাকে আরও রহস্যজনক করে তুলেছে। শেষ পর্বে গিয়ে এত বড় টুইস্ট পাবো ভাবতেই পারিনি! বলা যায় মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো একটা রহস্য কাহিনি। প্রতি পৃষ্ঠায় একেকটা সম্ভাবনা। কোনো চরিত্রই সন্দেহের বাইরে নয়। সব চরিত্রই রহস্যময়। একইসময় একই মলাটে দুটো গল্প চলমান। “পূর্ণতার ফোঁটা ফোঁটা অন্ধকার সান্দ্র সানুদেশে ঝরে পড়ে, রাত্রি তিন প্রহরে ডাকে মৃত্যু কাক।” -তুষার চৌধুরী শেষ মৃত পাখি সম্পর্কে আরও বলা যায় এটি সাহিত্যের নানা সূত্রে ঠাঁসা একটি উপন্যাস। সাথে প্রায় প্রতিটি পরিচ্ছেদে কয়েক লাইনের কোটেশন। ব্যাপারটা ভালো লেগেছে। একই মলাটে প্রায় সমস্ত জনপ্রিয় গোয়েন্দার ছায়া নিয়ে আসার দারুণ প্রচেষ্টা করেছেন লেখক। দারুণ শব্দচয়ন, যথোপযুক্ত বাক্যের প্রয়োগ, কাহিনির বর্ণনা, সাবলীল ঘটনাপ্রবাহ লক্ষনীয়। তবে অতিরিক্ত চিঠি,চিরকুট ইত্যাদির সংযুক্তি বিরক্তিকর লেগেছে। অতিরিক্ত গালিগালাজ খুবই বিরক্তিকর লাগে, এটাতেও এই বিরক্তিকর বিষয়টা অনেক বেশি আছে। বলা হয় বর্তমানের সেরা রহস্যকাহিনি গুলোর মাঝে “শেষ মৃত পাখি” একটি। আমার কাছেও মনে হয়েছে কাহিনি টা দারুণ। ◼️এক নজরে বইটিঃ বইঃ শেষ মৃত পাখি লেখকঃ শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৪০৩ প্রকাশনায়ঃ সুপ্রকাশ প্রথম প্রকাশঃ ১ সেপ্টেম্বর ২০২২ প্রচ্ছদঃ সৌজন্য চক্রবর্তী ©️ Review by Fahmida Afrin

      By Dr. Dewan Mahboob Hossain

      17 May 2024 10:52 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      অসাধারণ লেখা

    • Was this review helpful to you?

      or

      "পারফেক্ট মার্ডার বলতে কিছু হয় না। হলে সেটা কেউ 'মার্ডার' বলে জানবে না।" পারফেক্ট মার্ডার কি আদৌ আছে? কেমন হবে যখন একজন মানুষ হত্যাকারী সন্দেহে সমাজে বাস করে? কিন্তু প্রমাণ কখনো কথা বলবে তার পক্ষে, কখনোবা বিপক্ষে। সে আইনের হাত থেকে মুক্তি পেলেও, স্বজনদের সন্দেহের দৃষ্টি থেকে মুক্তি পাবেনা। এমনই এক গল্পের দেখা পাওয়া যায়, উপন্যাস 'শেষ মৃত পাখি' তে। উপন্যাসে, পঁয়তাল্লিশ বছর আগে দার্জিলিঙের এক সম্ভাবনাময় কবি, অমিতাভ মিত্র খুন হয়েছিলেন। অভিযোগের তীর ছিল তাঁরই ঘনিষ্ঠ বন্ধু রহস্য-ঔপন্যাসিক অরুণ চৌধুরীর দিকে। কিন্তু নানা পরস্পর বিরোধী প্রমাণে সে অভিযোগ দাঁড়ায়নি। তনয়া একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক। অমীমাংসিত খুনের কাহিনী নিয়ে ধারাবাহিক লিখছেন পত্রিকায়। অমিতাভ মিত্রের হত্যা-রহস্য নিয়ে লেখার জন্য দার্জিলিঙে এলেন তনয়া। তারপর? তনয়া কি খুঁজে পেলেন এই হত্যারহস্যের সমাধান ? অমিতাভ কি আদৌ খুন হয়েছিলো অরুণের হাতে? • উপন্যাসটা মূলত এই এক প্রশ্নের উপরই ঘুরপাক খেয়েছে, অরুণ হত্যাকারী নাকি না? এক পক্ষের প্রমাণ বলেছে, অরুণ নির্দোষ। আরেক পক্ষের প্রমাণ বলেছে, অরুণ হত্যাকারী। দুই ক্ষেত্রেই সাক্ষ্য-প্রমাণ অকাট্য। তাহলে সমাধান? সমাধান হিসেবে তনয়ার হাতে ধরিয়ে দেয়া হলো অমিতাভ মিত্রের লেখা অসম্পূর্ণ উপন্যাস। বইটার কাহিনী বাস্তব চরিত্র ও অমিতাভের উপন্যাস চরিত্রদের নিয়ে সমান্তরালে এগিয়েছে। সমাধানও হয়েছে একইভাবে। মানে উপন্যাসের ভেতর আরেক উপন্যাস। শুরু থেকেই ভেবেছিলাম, চুলচেরা বিশ্লেষণ করা যায়, এমনভাবে পড়বো। যাতে করে রহস্যের সমাধান উপন্যাস শেষ হওয়ার আগে আমি নিজেই করে ফেলতে পারি। এক পর্যায়ে শিকার ও শিকারি দুটোই শনাক্ত করতে পারলেও, শিকার কেন, কীভাবে হলো তার উত্তর আমি আন্দাজ করতে পারিনি। যা যা অনুমান করেছি, তার সবটা ছাড়িয়ে লেখক আমাকে চমকে দিতে পেরেছে, এতেই পাঠক হিসেবে আমার পড়া সার্থক, আর লেখক হিসেবে ওনার লেখা। এইযে হ্যাঁ/না এর মাঝের দ্বিধা, এই দ্বিধার মাঝে পাঠককে রেখে সমাপ্তি পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পেরেছেন, আর মাঝে মাঝে 'ক্লু' দিয়ে পাঠকের মগজের সাথে যে খেলায় মেতেছেন, তা প্রশংসনীয়। • এবার আসি, উপন্যাসের বাড়তি সৌন্দর্যের দিকে। লেখনশৈলীর পাশাপাশি বইটার একটা চমৎকার বিষয় হলো, এতে সাহিত্যের মুখ্য সব বিষয়েরই ছোঁয়া আছে। কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ/প্রতিবেদন, এমনকি চিঠি সংকলন। কবিতা প্রেমীদের জন্য এ উপন্যাস যে সাধারণ পাঠক থেকে শতগুণ বেশি উপভোগ্য, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রায় প্রতি অধ্যায়ের শুরুতেই একটা করে কবিতা জুড়ে দেয়া হয়েছে। কবিতাগুলো ব্যবহার করা হয়েছে রেফারেন্স হিসেবে। এখানে বেশিরভাগ বাস্তব জীবনের অন্যান্য কবিদের লেখা থাকলেও, কিছু কিছু কবিতা লেখকের নিজের। যা তিনি চালিয়েছেন, উপন্যাসের চরিত্র 'অমিতাভে'র নামে। তাছাড়া সত্তুর দশকের কবিতা, সাহিত্যের বাজারের অবস্থার কথাও বেশ সুনিপুনভাবে উঠে এসেছে উপন্যাসে। উঠে এসেছে নকশালবাদ ও সেই সময়কার পুলিশদের অবৈধ হত্যাকাণ্ডের কথা। • উপন্যাসে অমিতাভের লেখা উপন্যাস, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন আর সাথে অমিতাভের লেখা চিঠিগুলো, প্রত্যেকটাই বাড়তি সংযোজন যুগিয়েছে এখানে। কিন্তু কোনটাই অপ্রয়োজনীয় কিংবা অহেতুক মনে হয়নি, বরং এগুলো কাজ করেছে রহস্য ও এর সমাধান তরান্বিত করতে। আরেকটা বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়, অমিতাভের চিঠিগুলো ছিল ব্যক্তি সাপেক্ষে ভিন্ন। অর্থাৎ, সম্পাদকের কাছে এক রকম, বন্ধুদের সাথে এক রকম, আর শ্রদ্ধেয় কারো কাছে এক রকম। বাস্তবিক মনে করাতে লেখক এ কাজ করেছেন, তাতে সন্দেহ নেই। • এবার আসি কিছু নেতিবাচক দিকে। এই অংশটুকু যিনি বইটা পড়েননি, তিনি এড়িয়ে গেলেও চলবে। নেতিবাচক বলতে আমি একটা দিকই বলবো; অমিতাভের উপন্যাসের সমাধান অংশ। সমাধানটা এমন ভাবে দাড় করানো হয়েছে, যেন উপন্যাসে চরিত্রগুলো বাস্তবে ছিল। তনয়া যখন ফিকশনের ঘটনার সমাধান বলছে, তখন তার সংলাপ এমন ছিল যেন চরিত্রগুলো ফিকশনাল না, সত্যিকারের। সম্ভবত এমন, হয়তো এমন, এ ধরনের শব্দ ব্যবহার করার ফোলে তনয়ার মুখে উপন্যাসের সমাধানটা শুনতে কেমন একটা লেগেছে। অমিতাভ হত্যার সমাধান শুনতে অবশ্য এমন লাগেনি। তাও মেনে নেয়া যায়, যদি ধরে নেই তনয়া 'অমিতাভের উপন্যাসে'র শেষটা কীভাবে লেখা হতো সেটার একটা ধারণা দিয়েছেন মাত্র। অথবা, অমিতাভের হয়ে অপরাধী উপন্যাসে তার অপরাধের ছাপ রাখতে চেয়েছেন, এটা তারই ইঙ্গিত। এর বাইরে ব্যাখ্যা নেই আর। পরিশেষে বলবো, 'শেষ মৃত পাখি' এক কথায় দারুণ এক অভিজ্ঞতা। যারা রহস্য উপন্যাস পড়তে পছন্দ করেন, তাদের জন্য মাস্ট রিড। "মানুষের মৃত্যু হ’লে তবুও মানব থেকে যায়; অতীতের থেকে উঠে আজকের মানুষের কাছে প্রথমত চেতনার পরিমাপ নিতে আসে।" ~ জীবনানন্দ দাশ • বই: শেষ মৃত পাখি • লেখক: শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য • প্রকাশনী: সুপ্রকাশ (ভারত), বাতিঘর (বাংলাদেশে পরিবেশক) • প্রচ্ছদ: সৌজন্য চক্রবর্তী • পৃষ্ঠা: ৪০৪ • ব্যক্তিগত রেটিং: ৪.৬৫/৫ রিভিউ: ইয়াসির আল সাইফ

      By Kallyan Kanti Nag

      21 Sep 2024 03:00 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      Mind blowing ??✍️?

      By Wrudra Rahman

      28 Dec 2023 10:40 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      #আড্ডাখানায়_রকমারি #রিভিউ_২০২৩ পোস্ট সংখ্যা-০৩ ? প্রারম্ভিকা 'সে কি রাত্রির শেষ মৃত পাখি, যার স্মৃতি আঁচড়াল মৃ ত্যুর ঘন ছায়ায় দেবযান ভয়ের মতন মৃদুসঞ্চারী স্বপ্নের পিছু নিতে? স্বপ্নের মত আয়ু চলে যায়, কখনো বা দ্রুত, কখনো বিলম্বিতে। ' —পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল বন্ধু হয়তো পৃথিবীর সবচেয়ে আপন কোন কেন্দ্র যা আমরা মনের পুরো পরিধি নিয়ে এঁকে থাকি । পত্র পত্রিকা থেকে পুরো সমাজ এই বিশ্বাস করে ফেলেছে যে, কবি অমিতাভ মিত্রকে খুন করেছে তারই ঘনিষ্ঠ বন্ধু লেখক অরুণ চৌধুরী । খুনের সময়ে অমিতাভ মিত্র উঠতি জনপ্রিয় কবি ছিলেন যার সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে এক সাংবাদিক বলেন, ' কৃত্তিবাসের কবিকুলের পরের প্রজন্মের যে কয়েকজন শক্তিশালী কবি বাংলা সাহিত্যে এসেছেন, দেবারতি মিত্র, মৃদুল দাশগুপ্ত অথবা রনজিৎ দাশ—অমিতাভ মিত্রের নাম তাদের পাশে থাকবার মতো শক্তিশালী । ' কবিতাপ্রেমী এবং রহস্য উপন্যাস প্রেমীদের কাছে এই বইটি হয়ে উঠবে দুর্দান্ত, অসংখ্য কবির অনেক হৃদয়গ্রাহী কবিতাই আছে এই বইতে, সেই সাথে আছে একটা রহস্য ! সাংবাদিক তনয়া ভট্টাচার্য সেই তদন্তে নেমেছেন, ৪৫ বছর আগে খুন হওয়া কবির হত্যা রহস্যের কী সমাধান মিলবে এই বইয়ে? এই প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে আমার এই লেখাটি আপনাদের পড়তে হবে ধৈর্য্যের সাথে শেষ পর্যন্ত । ? চরিত্র পরিচিতি (১) অমিতাভ মিত্র (২) অরুণ চৌধুরী (৩) তনয়া ভট্টাচার্য (৪) ড্যানিয়েল লামা (৫) সঞ্জয় অধিকারী (৬) প্রশান্ত গুরুং (৭) অনন্যা চৌধুরী (৮) বাবলা (৯) সিদ্ধার্থ (১০) আনিসুর এবং অপ্রধান চরিত্রে আরও অনেকে । ? কাহিনী সংক্ষেপ এই উপন্যাসের শুরুতে আমরা দুজন বন্ধুর কথা জানতে পাই, যাদের আত্মিক টান ছিলো প্রখর,দুজনই একে অন্যের খুবই ঘনিষ্ঠ হওয়ার পরেও উঠতি জনপ্রিয় কবি অমিভাভ মিত্র তারই প্রাণপ্রিয় বন্ধু অরুণ চৌধুরীর হাতে খুন হন, এই খুনের ঘটনাটা কোন স্পয়লার নয় বরং বইয়ের ফ্ল্যাপেই লেখক তা পাঠককে জানিয়ে দিয়েছেন । লেখক অরুণ চৌধুরীই খুনটা করেছেন এটা সবাই প্রকাশিত সত্যের মতো জানলেও পুলিশ অরুণ চৌধুরীকে আটক করে রাখতে পারেনি । যখন খুন হয়েছিল অমিতাভ মিত্রের তখন অরুণ চৌধুরী পুলিশ স্টেশনেই বসেছিলেন,এই স্ট্রং অ্যালিবাই এর কারণে পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছিলেন কিন্তু সেই অরুণ চৌধুরীর পিঠের খুনি ট্যাগলাইন কী কখনো মুছেছিলো? না,মুছেনি কখনোই, ৪৫ বছর আগের সেই খুন বাংলা সাহিত্য জগৎকে নাড়া দিয়ে এসেছে এই এতোটা বছর ধরে । এই ঘটনা রহস্যের চাদরেই মোড়ানো ছিলো এতো বছর , সেই চাদর সরাতেই তনয়া ভট্টাচার্য নামে একজন বত্রিশ বছর বয়সী সর্বভারতীয় এক সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিক এগিয়ে এলেন । দেশে ঘটে যাওয়া অমীমাংসিত রহস্যকাহিনী সমাধান করে, ম্যাগাজিনে তার আদ্যোপান্ত তুলে ধরে তার প্রতিভা ও বিচক্ষণতার যে পরিচয় তিনি দিয়েছেন,এজন্য পুরস্কারও জিতেছেন । এই অমীমাংসিত রহস্যের সমাধান নিয়ে তার ম্যাগাজিনের শেষ কেইসটা দাখিল করতে চাইলে, সেই অরুণ চৌধুরীই মেয়েটিকে অমিতাভ মিত্রের খুনের তদন্ত করতে নিষেধ করে দেন ! তনয়া ভট্টাচার্যের মনে তখন একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খায়, অরুণ চৌধুরী খুনি না হলে তদন্ত করতে তিনি নিষেধ করবেন কেন? সেই কী বিকৃতমনা খুনি বন্ধু? আর খুনের সময় অরুণ চৌধুরী থানায় কেন বসে ছিলেন নির্দোষ সাজার জন্য? প্রথমত, তার বন্ধু অমিতাভ প্রতিভাবান কবি ছিলেন, তার যখন জনপ্রিয়তা ছিলো, সেই সময়ে অরুণ চৌধুরী রীতিমতো ফ্লপ লেখক ছিলেন । এজন্য অমিতাভকে ঈর্ষা করতেন অরুণ চৌধুরী,অমিতাভের খুনের পরেই অরুণ চৌধুরীর বই প্রথম বাজারে হিট করলো । দ্বিতীয়ত, সঞ্জয় অধিকারীর কাগজে অমিতাভ বিষ্ফোরক মন্তব্য করে লিখেছিলেন, ' অরুণের মতো বাজারি সাহিত্যিকেরা টাকা খাইয়ে পুজো সংখ্যাতে লেখার বরাত পায় । ' এতে অরুণের যে মানহানি হয়েছিলো তা কী দার্জিলিং এর এই বৃষ্টি এখনও মুছিয়ে দিতে পেরেছিলো? বাণিজ্যিক ও অবাণিজ্যিক এই যে অসুস্থ এক প্রতিযোগিতা এটা কী খুনের কারণ হতে পারে না? জনপ্রিয়তা পাওয়ার নেশায় পথের কাঁটা বন্ধুকে রাস্তা থে‌কেই সরিয়ে এখন অরুণ চৌধুরী বেস্টসেলার লেখক, যার এক একটা বই গড়ে ত্রিশ হাজার কপি বিক্রি হয় এখন! এসব প্রশ্নে জর্জরিত তনয়ার ঘোর ভাঙতে বেশিদিন লাগেনি, লেখক নিজেই তাকে ফোন করে দার্জিলিং যেতে বলেন । তনয়া এক বাক্যে রাজি হয়ে দার্জিলিং চলে আসেন । সে জানে আজীবন এই খুনি ট্যাগ লাইন বয়ে নিয়ে বেড়ানো অরুণ এবং তার পরিবারের পক্ষে সত্যিই বোঝা হয়ে গিয়েছিলো । অরুণ চৌধুরীর সাথে সাক্ষাৎকারে এসে, তনয়া সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেলো এজন্য যে, লেখক তনয়াকে বলেন,সেই তার বন্ধুকে খুন করেছে কিন্তু খুনের রহস্য নিয়ে কিছুই বলবে না বরং সে তনয়াকে একটি উপন্যাস ধরিয়ে দিয়ে বলে, এই মার্ডার মিস্ট্রি উপন্যাসের শেষটা নেই, এটার সমাধান খুঁজে ফেলতে পারলে আপনি খুনিকে ধরে ফেলতে পারবেন অনায়াসে । এই মার্ডার মিস্ট্রি বইটির লেখকের নাম শুনে তনয়া চমকে ওঠে! কে ছিলো সেই বইটির লেখক? অরুণ চৌধুরী তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে কেনই বা হত্যা করবেন ? লেখক তাকে বিভ্রান্ত করার জন্যই কী এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছিলো? কী এমন তথ্যই বা আছে বইতে যা দিয়ে সে ৪৫ বছর আগের খুনের রহস্য বের করে ফেলতে পারবে! এসব নিয়ে ঘোরে চলে যান তনয়া ভট্টাচার্য । এত পুরোনো একটা অমীমাংসিত কেস হাতে নিয়ে নির্ধারিত ডেড লাইনের ভিতরে কীভাবে তনয়া কেসটির রহস্যের সমাধান বের করবে? এই ৪৫ বছরে অনেক সাক্ষীই যারা ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ছিলো তারা আজ বেঁচে নেই । এতো বিচ্ছিন্ন তথ্য, ঝাপসা সাক্ষ্য ও বিবর্ণ জটিল সমস্যার আঁধারে তনয়া কী পারবে গোপন সেই বিকৃত খুনিকে তার ম্যাগাজিনের পাতার শিরোনামে আনতে? তনয়া ধীরে ধীরে রহস্যের টুকরো টুকরো ক্লু থেকে সেই তিমির বৃষ্টির রাতের একটা গল্প দাঁড় করাতে গিয়ে ধারণা করে , ষাট-সত্তর দশকের রাজনীতির একটা বড় ভূমিকা আছে এবং সেই সাথে কানেকশন আছে নকশালের । উগ্র বামপন্থী বলে চিহ্নিত নকশালের জন্ম হয়েছিল চীন-সোভিয়েত ভাঙনের সময়ে যারা মতাদর্শগতভাবে চীনের মাও সে তুং-এর নিখুঁত পদাঙ্ক অনুসরণকারী । নকশালকে থামাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যে মৃত্যুর মিশন জারি করে সেই সময়ে কী কবি অমিতাভ মিত্র কবিতা লিখে কারও দ্রোহের তোপে পড়ে জীবন হারিয়েছেন? একজন বন্ধু কী কখনো তার আরেকজন বন্ধুকে খুন করতে পারে? ৪৫ বছর আগের সেই ঘটনায় চকবাজার থানার পুলিশ ইনচার্জ যে দার্জিলিং এর একচ্ছত্র অধিপতি ড্যানিয়েল লামা সে কেন অমিতাভের খুন নিয়ে কোন মন্তব্য জানাতে অস্বীকার করেন? সে কী কোনভাবে এই খুনের সাথে যুক্ত ছিলেন? এমন নানা প্রশ্ন বাণে জর্জরিত তয়না কী সঠিক পথেই তদন্ত করছেন না কি পুরো পরিশ্রম বৃথা গিয়ে আবার নতুন করে খুনিতে খুঁজতে নামবে সে ? কে অমিতাভ মিত্রের বিকৃতমনা খুনি? অরুণ চৌধুরী ? ড্যানিয়েল লামা ? নকশাল আন্দোলনের কেউ? বাণিজ্যিক পত্রিকার কেউ? নাকি এই প্রাচীরের বাইরের কেউ? নাকি কেউ-ই না? জীবনানন্দ দাশের মতো বলতেই হয়, 'সকল রৌদ্রের মতো ব্যপ্ত আশা যদি গোলকধাঁধায় ঘুরে আবার প্রথম স্থানে ফিরে আসে, শ্রীজ্ঞান কী তবে চেয়েছিল?' সকল বিচ্ছিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আপনাকে ৪০৩ পৃষ্ঠার এই বইটি এক নিঃশ্বাসে ধৈর্য্য ধরে পড়ে ফেলতে হবে । ? পাঠ প্রতিক্রিয়া (ক) পজেটিভ দিক প্রথম পয়েন্ট : শুধুমাত্র লেখকের সাহিত্যিক ভাষার উপস্থাপন দেখে আমি রীতিমত তার ভক্ত হয়ে গিয়েছি । উপন্যাসের একটা দৃশ্যে, তনয়া যখন অরুণ চৌধুরীকে বলেন, 'যেহেতু আপনি নিজে ধরা পড়েননি, তাই আপনার প্রতিটা বইয়ে নিজের অপরাধকে সেলিব্রেট করে চলেছেন । ' তখন তনয়া লেখকের চোখের দিকে তাকিয়ে অনুভব করলেন অরুণ চৌধুরীর চোখের ভেতর একটা ইস্পাতের তলোয়ার ঝিকিয়ে উঠলো । কী চমৎকার সাহিত্যিক ভাষার প্রয়োগ সত্যি পুরো বই জুড়ে এই প্রয়োগগুলো আমাকে অভিভূত করেছে বারবার । দ্বিতীয় পয়েন্ট : জাপানিজ থ্রিলার যারা পড়েন তারা অবশ্যই জানেন হনকাকু জনরা নিয়ে,যে জনরা পাঠকের ব্রেনের সাথে খেলে সমান্তরালে,যে গল্প একটি ক্রিমিনাল তদন্তের প্রক্রিয়ার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এবং বিশুদ্ধ যৌক্তিক যুক্তি থেকে প্রাপ্ত বিনোদনকে মূল্য দেয় । উপন্যাসের বিভিন্ন ঘটনা এক এক দিকে ঘুরে আবার একটা বিন্দুতে এসে মিলেছে , তাই হনকাকু জনরায় এই বইটি লেখকের লেখার এই প্রচেষ্টাকে সফল করেছে । তৃতীয় পয়েন্ট : বাণিজ্যিক ও অবাণিজ্যিক পত্রিকার লেখক এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের যে সাপে নেউলে সম্পর্ক তা এই প্রথম কোন লেখকের উপন্যাসে আমি পড়েছি । সত্যিটা সবসময়ই আকাশের চাঁদের মতোই প্রকাশ্য, লিটল ম্যাগাজিনে যারা লিখেন তারা বাণিজ্যিক পত্রিকার লেখককে পছন্দ করেন না, এই যে দৃ‌ষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্য,এই টানাপোড়েন লেখক তা চমৎকার ভাবে প্রতিটা দৃশ্যপটে লেখক এই বিষয়টি ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন । চতুর্থ পয়েন্ট : দার্জিলিং এর অপরুপ সৌন্দর্য লেখক তার এই উপন্যাসে নিজের মনের মাধুরীর সব রঙ দিয়ে এঁকেছেন । সেখানের বৃষ্টির শব্দের মূর্ছনা যেন কানে ধরেই থাকবে পাঠকের । কুয়াশা ঘেরা দার্জিলিং এর ঠান্ডা আবহের মাঝে রহস্য নিয়ে পদচারণা,প্রকৃত পাঠককে বই পড়ার মোহে ফেলে দিতে বাধ্য করে দেয় অবচেতন মনে বারবারই । প্রকৃতির দৃশ্যায়নে লেখক তার সকল সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা করে গেছেন, সেই দিক থেকে বলা যায় বইটি অপূর্ব । পঞ্চম পয়েন্ট : উপন্যাসের ভিতরেই প্যারালালে আরেকটি উপন্যাস চলেছে এই বইয়ে, সেটা ঐ উপন্যাসটাই যা অরুণ চৌধুরী দিয়েছিলেন তনয়া ভট্টাচার্যকে, ৪৫ বছরের এই রহস্যটা খুঁজে বের করতে । প্যারালালি দুইটা উপন্যাস লেখক একটি বইয়েই বেশ ভালোই ব্যালেন্স করতে পেরেছেন, এতে তিনি প্রশংসার দাবী রাখেন । (খ) নেগেটিভ দিক প্রথম পয়েন্ট : পৃষ্ঠার বিচারে উপন্যাসটা আরও টানটান করাই যেতো,তাই কখনো মনে হয়েছে এতো ডিটেইলস ও তথ্য অপ্রাস‌ঙ্গিক আবার কখনো গল্পটা বেশ স্পীডে টেনে নিয়ে আসা হয়েছে । অপ্রাস‌ঙ্গিক তথ্য দিয়ে বইয়ের পৃষ্ঠা সংখ্যা না বাড়িয়ে, আরও টানটান দৃশ্যপট উপস্থাপন করতে পারলে লেখাটা আরও গ্রহণযোগ্যতা পেতো । দ্বিতীয় পয়েন্ট : একজন কবিতাপ্রেমী হিসেবে বইয়ে কবিতাগুলো দেখে ভালো লেগেছে কিন্তু যারা কবিতা পছন্দ করেন না তাদের ভালো লাগবে কি না সেটা পাঠকের উপরেই ছেড়ে দিলাম কারণ বইয়ে অনেক কবিতা আছে । উপন্যাসে অমিতাভের চিঠিগুলো পড়ে অমিতাভের আচরণ ও ব্যক্তিত্বের একটা ছবি ফুটে উঠলেও,সেই চিঠিগুলো থে‌কে রহস্য সমাধানের ক্লু পেয়ে তনয়া ভট্টাচার্য ৪৫ বছরের এই কেইসটা সমাধান করে ফেলবে এমন ভেবে পাঠক বইটা পড়লে হতাশ হবে । তৃতীয় পয়েন্ট : লেখকের মতে, হনকাকু জনরা এসেছে ১৯৮১ সালে , যা অরুণ চৌধুরীর বয়ানে লেখক লিখেছেন কিন্তু এর অনেক আগেই হনকাকু জনরা জাপানিজ লেখকদের কলমের শৈল্পিক ছোঁয়াতে এসেছিলো । ইন্টারনেটের তথ্য মতে, Pioneered by Edogawa Rampo, Seishi Yokomizo and Keikichi Osaka, Japan’s honkaku mysteries were hugely popular in 1920’s and 1930’s before a new emphasis fell on psychological-focused crime novels . অর্থাৎ, এডোগাওয়া র‌্যাম্পো, সেশি ইয়োকোমিজো এবং কেইকিচি ওসাকা দ্বারা প্রবর্তিত, জাপানের হনকাকু রহস্যগুলি ১৯২০ এবং ১৯৩০ এর দশকে মনস্তাত্ত্বিক-কেন্দ্রিক অপরাধ উপন্যাসের উপর নতুন জোর দেওয়ার আগে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল । তাই হনকাকু জনরার আবির্ভাবের সাল নিয়ে লেখকের দেয়া তথ্যটি একেবারেই ভুল তথ্য । চতুর্থ পয়েন্ট : মিস্ট্রি উপন্যাস টানটান না হলে পাঠক সবসময়ের জন্য বইয়ে আকৃষ্ট হয়ে থাকেনা,উপন্যাসে তনয়া এবং সিদ্ধার্থের চরিত্রায়নটি কখনো কখনো একঘেয়েমিতে ফেলেছে, সিদ্ধার্থ চরিত্রটির সাথে তনয়া চরিত্রের এ্যাটাচমেন্ট আরেকটু গভীর করা যেতো । এছাড়া আরও কিছু চরিত্রের মধ্যে সেই এ্যাটাচমেন্টটা সেভাবে ছিলোনা । পঞ্চম পয়েন্ট : ৪৫ বছরের আগের রহস্য কেউ সমাধান করতে পারেনি,উপন্যাসে লেখক গোয়েন্দা না নিয়ে এসে একজন সাংবাদিককে এনে একটা বৈচিত্র্য আনলেও রহস্য সমাধানের কোন সেই শক্তপোক্ত প্রমাণ নেই যা দিয়ে অরুণ চৌধুরীকে আইনের হাতে সোপর্দ করে দিতে পারবেন তনয়া ভট্টাচার্য । তাই অপরাধী যদি কখনো বলেই বসেন তনয়াকে, 'আপনার এই সমস্ত কল্পকাহিনীর তথ্যের ভিত্তি কোথায়? প্রমাণ করতে পারবেন, আমার স্বীকারোক্তি ছাড়া? ' তখন তনয়া ভট্টাচার্যের অসহায় হয়ে কলম কামড়ানো ছাড়া আর কিছু কল্পনা করতে পারছি না । ? বইটি কেন আপনি পড়বেন? প্রকৃতি ও রহস্য মানুষকে মায়া বিস্তার করে কাছে টানতে বাধ্য করে । সেই প্রকৃতি ও রহস্যের পরীক্ষায় এই বই চোখ বন্ধ করে A+ পেয়ে যায় । এই বই পড়তে পড়তে একসময় লেখকের সাহিত্যিক ভাষার প্রয়োগের প্রেমে পড়তে বাধ্য হবেন আপনি এতটুকু বলতে পারি । এই বই পড়ে পাঠক কল্পনায় দার্জিলিং এর সেই বৃষ্টি ও কুয়াশার অরণ্যে ডুব দিয়ে বইয়ের রহস্য সমাধানের নেশায় উত্তেজনার আবহ,নতুন তথ্য ও টুইস্টের জন্য প্রহর গুণে যাবেন । বইটি পড়ার আগে থেকেই পাঠক জানে অমিতাভ মিত্রের খুনি তারই বন্ধু অরুণ চৌধুরী, এটাই পুরো সমাজের ভাষ্য, সত্যিই কী বন্ধু বন্ধুকে খুন করতে পারে? এক পর্যায়ে এই উপন্যাস রহস্য ছাপিয়ে কখনো মনে হবে কোন বন্ধুত্বের গল্প পড়ছি । যারা উপন্যাসের শেষে টুইস্ট পেতে পছন্দ করেন তাদের জন্য এটি মাস্ট রীড একটি বই । ? সম্পাদনা, প্রচ্ছদ ও বাঁধাই প্রচ্ছদ বা বাঁধাই নিয়ে আমার কোন দ্বিধাই নেই এই বইয়ে , প্রচ্ছদে নতুনত্ব আছে আছে রহস্যের ছোট্ট ক্লু ও, বইয়ের বাঁধাইও ছিলো মানসম্মত । কিন্তু সম্পাদনায় কিছু ঘাটতি ছিলো, এজন্য কিছু বানানে ভুল চোখে ধরেছে । সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা হলো, বইয়ের সংশোধিত দ্বিতীয় সংস্করণের তারিখে, সেপ্টেম্বর ২০২২ এর বদলে ২০০২ লেখা! Unbelievable! ? ব্যক্তিগত রেটিং ৪.৪/৫ ? লেখক পরিচিতি শাক্যজিৎ ভট্টাচার্যের জন্ম ১৯৮২ সালে । তিনি পেশায় রাশিবিজ্ঞানী । বিশ্বসাহিত্যের নিষ্ণাত পাঠক শাক্যজিৎ বিচিত্র বিষয়ে নিরীক্ষামূলক গল্প, উপন্যাস লিখছেন সাম্প্রতিক সময়ে। এটি তাঁর প্রকাশিত পঞ্চম বই । ? বই পরিচিতি বইয়ের নাম : শেষ মৃত পাখি লেখকের নাম : শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য জনরাঃ মিস্ট্রি,থ্রিলার প্রকাশনীঃ সুপ্রকাশ প্রচ্ছদঃ সৌজন্য চক্রবর্তী মুদ্রিত মূল্যঃ পাঁচশত বিশ টাকা পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৪০৩ ? বই ফটোগ্রাফি রুদ্র রহমান

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!