User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

      By Faiza Habib

      07 Apr 2025 07:49 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বই:রোদ্দুর হোক আজ লেখক:বন্যা হোসেন প্রকাশনা:অনুজ প্রচ্ছদ:সাদিত উজ্জামান দারুণ প্রাপ্ত মনষ্ক একটা বই পড়ে শেষ করলাম।কানাডা প্রবাসী তিন মধ্যবয়সী মানুষের জীবনের গল্প।গল্পটা শুরু হয় বাংলাদেশে একই পাড়ায় বাসের সুবাদে তিন বন্ধু সামিন,শুচি আর তপনের বন্ধুত্বের মধ্যে।বাংলাদেশের মতো কানাডায় সামিনের বাড়িতে বন্ধুদের আড্ডা বসেছে,সেই আড্ডাতে বিভিন্ন চরিত্রের রসায়নে গল্পটিতে নিজের ছন্দ খুঁজে পায়। গল্পে লেখিকা আপু দারুণ এক টেকনিক ব্যবহার করেছেন।গল্পটা আমরা তৃতীয় ব্যাক্তির বয়ানে তথা ক্যানভাসে ফুটে উঠতে দেখি।সুচি,সামিন ও তপন এই তিন ব্যাক্তির জীবনে ঘটে চলা নানা রকম ঘটনাই ফুটে উঠেছে তৃতীয় ব্যাক্তির তুলির আঁচড়ে।ইউরোপের শিল্প সাহিত্যের বিকাশ রেঁনেসার যুগে যেমন বিখ্যাত কিছু শিল্পীর শিল্পকর্মে তার শিক্ষানবিশদের কারুকার্য থাকতো কিন্তু দুনিয়া সেই শিল্পকর্মকে জানতো সেই শিল্পীর শ্রেষ্ট কর্ম রূপে, আড়াঁলে থাকতো সেই নামহীন মানুষগুলো তেমনি এই গল্পে উদিতা রায়হান যেনো সেই নামহীন শিল্পীর মতো আড়াঁলে থেকে নিজের শব্দে বুনেছেন এক শিল্পকর্ম। প্রবাসী জীবনের টানাপোড়েন, ধাবমান জীবন আর করোনার সময় যেন গল্পটিকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে।মারণ ঘাতক করোনার থাবা বিশ্বকে থমকে দিয়েছিলো,সেই সময়টাকে লেখিকা নিজের লেখায় আবদ্ধ করেছেন।যেমন সমরেশের বই পড়লে তৎকালীন ভারতবর্ষে চলমান নানা রকম অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ যেমন নকশাল আন্দোলন নিয়ে জানা যায়,তেমনি এই বইয়ে লেখক চরিত্রের মধ্যে দিয়ে মানব সমাজের ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রেক্ষাপট রচনা করেছেন।দাম্পত্য এ গল্পে অনেক বড় মেজর রোল প্লে করছে।দাম্পত্য আমার কাছে আকাশে উড়ে চলা মুক্ত বিহঙ্গের মতো।আকাশ তার বিশালতায় ঠাঁই দিবে তার উড়ন্ত গাঙচিলকে।উড়ন্ত গাঙচিল শান্তি খুঁজে পাবে আকাশের সফেদ মেঘের ভেলায়।আর আকাশ তার বিশালতায় আলিঙ্গন করবে তার প্রিয়জনকে। যে দাম্পত্যে বিহঙ্গরূপী সঙ্গীর ইচ্ছে,স্বাধীনতা,স্বপ্নকে নষ্ট করে স্বর্ণের খাঁচায় পুড়ে ফেলা হয় তা আমার মতে জেলখানা হয়, আপন নীঁড় নয়। গল্পে লেখিকা চমৎকারভাবে বাঙালি মানসিকতার বহি:প্রকাশ দেখিয়েছেন।বাঙালি সমাজে একজন পুরুষ আর একজন মহিলা যদি বন্ধু হয় তাহলে তা হচ্ছে মুখোরোচক এক গল্পের খোরাক।মানুষের সাথে মানুষের যে আত্বার,শ্রদ্ধার,স্নেহের সম্পর্ক হতে পারে তা যেন এই কুঁচুটে বাঙালি মন মানতে নারাজ।মানুষ সামাজিক জীব,তাই তার মধ্যে স্নেহ,অনুকম্পা,মায়া,ভালোবাসা সহ নানা রকম মানবীয় গুণাবলীর সম্মেলন ঘটে।কিন্তু আমরা নারী পুরুষের সম্পর্ককে লেবেল বা ট্যাগ দিতে ব্যস্ত।প্রবাসী জীবনে উন্নত জীবন ধারা দেখলেও এরা নিজেদের এঁদো গলির সেই স্যাঁতস্যাঁতে মনোভাব থেকে বের হতে পারে না। বইটা পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে দাম্পত্যের বিকাশে সবচেয়ে বেশি কি প্রয়োজন?একটি চারাগাছকে বৈরি পরিবেশে রোপণ করলে অভিযোজিত হতে তার প্রয়োজন স্নেহ,ভালোবাসার মিশেলে এক অনুভূতি। তেমনি দাম্পত্যকে লালন করতে চাইলে প্রয়োজন বিশ্বাস,স্নেহ, ধৈর্য্য, সহানুভূতি।বিশ্বাসবিহীন সম্পর্ক তো শেকড়বিহীন উদ্ভিদ যা বৈশাখের প্রথম ঝড়েই মূলোত পাটিত হয়। সামাজিক এ উপন্যাসে একই সাথে জীবনবোধ,কালের বিকাশ ও বিষন্নতা ফুটে উঠেছে। কিন্তু লেখিকা জীবনে ঘটে চলা নানা দুর্যোগে মনোবল না হারিয়ে ফিনিক্স পাখির মতো পুনরুজ্জিবীত হতে বলেছেন।

      By Priyanka Ganapati

      16 Mar 2024 07:07 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      ★ পাঠপ্রতিক্রিয়া ★ ❝সূর্যোদয়ের আশায় মনের মধ্যে নিঃশব্দে উচ্চারিত হতে থাকে, রোদ্দুর হোক আজ।❞ মানব হৃদয় সারাজীবন প্রার্থনা করে একটুকরো রোদ্দুরে যেন ঝলমলে থাকে তার জীবনের আকাশ। কিন্তু চাইলেই কী সব পাওয়া যায়! মাঝে মাঝেই এক খণ্ড কালো মেঘ উড়ে এসে ছেয়ে দেয় সবকিছু, কালবৈশাখী ঝড়ে ওলটপালট হয়ে যায় সাজানো সংসার। তবুও মানুষ স্বপ্ন দেখে রোদের কিরণে মুখোরিত এক দিনের। রৌদ্রজ্জ্বল দিনের আশায় থাকা তেমনই কয়েকজন মানব-মানবীর জীবনের গল্পকে কেন্দ্র করেই রচিত হয়েছে লেখক বন্যা হোসেনের লেখা উপন্যাস ❝রোদ্দুর হোক আজ❞। কানাডায় বসবাসরত প্রবাসী তিন বন্ধু শুচি, সামিন ও তপন এবং তাদের জীবনের সাথে জড়িয়ে থাকা কিছু মানুষকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে উপন্যাসের কাহিনী। একদিকে একমাত্র সন্তান রোহানকে নিয়ে শুচির সংগ্রামী জীবন, অন্যদিকে জমজ দুই মেয়েকে নিয়ে তপন ও সুমির সুখের দিন। আবার আরেকদিকে সন্তানের আকাঙ্ক্ষায় টালমাটাল সামিন ও লুনার সুখের সংসার। কিন্তু কিছু আকাঙ্ক্ষিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় বদলে যেতে থাকে তাদের জীবন। সেই পরিবর্তন তাদের কোন গন্তব্যে পৌঁছে দেয় তা জানতে হলে পাঠককে হাতে তুলে নিতে হবে ❝রোদ্দুর হোক আজ❞। তিন বন্ধুর প্রবাস জীবনকে কেন্দ্র করে কানাডার পটভূমিতে রচিত উপন্যাসে একদিকে যেমন বর্ণিত হয়েছে প্রবাসের জীবনযাত্রা, অন্যদিকে বর্ণিত হয়েছে মানব হৃদয়ের গূঢ় রহস্য। ভালোবাসা-ঘৃণা, বিশ্বাস-অবিশ্বাস, সন্দেহ-প্রতারণা, উত্থান-পতনকে আশ্রয় করে বর্ণিত হয়েছে মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েনের গল্প। মানব জীবন বড়োই অদ্ভুত! এখানে সন্তান জন্মদানের অক্ষমতা পুরুষকেও পরাজিত সৈনিকে পরিণত করে, আবার সন্তানের আশায় নারীও নিজ হাতে সুখের সংসার তছনছ করে দেয়। আর এসবই দারুণ বর্ণনায় বাস্তবতার আঙ্গিকে তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে। করোনাকালীন সময়ে প্রবাসীদের দুঃখ-কষ্টে অতিবাহিত দিনের বর্ণনাও আমাদের সামনে তুলে ধরেছে কঠিন বাস্তবতা। লেখক সম্পূর্ণ উপন্যাস জুড়ে চরিত্রায়ণ করেছেন নিপুণ হস্তে। উপন্যাসের চরিত্রদের জীবনযাপন কখনো মুখে হাসি ফুটিয়েছে, আবার কখনো কষ্টে চোখ ভিজিয়েছে। শুচি, সুমি, সামিন, ইস্টি-মিস্টি সবার জন্যই কখনো না কখনো মন খারাপের অনুভূতিতে ডুব দিয়েছি। আবার কিছু চরিত্রের কর্মে রাগ ও ঘৃণা অনুভব করেছি। প্রবাস জীবনে চরিত্রদের সংগ্রাম তাদের প্রতি আরও শ্রদ্ধাশীল করে তুলেছে। রোহান ও বিদুষী বিদেশি সংস্কৃতিতে বড়ো হলেও যে চমৎকার আধুনিক চিন্তাধারা মনে লালন করে তা মুগ্ধ করেছে। রূপমের যত্ন যেমন হৃদয় ছুঁয়েছে, তেমনি উদিতার জীবন চোখ ভিজিয়েছে। বইটি হাতে নিয়ে একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে শুরু করলেও সাথে সাথে হোঁচট খেতে হয়েছে। উপন্যাসের সূচনাতেই একাধিক চরিত্রের উপস্থিতির কারণে তাদের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক বুঝতে একটু সময় লাগলেও কাহিনী যত অগ্রসর হয়েছে ততই সহজ ও সাবলীল বর্ণনা দারুণ উপভোগ করেছি। ছোটো টুকরো টুকরো ঘটনাগুলোও মনে রেখাপাত করেছে লেখকের চমৎকার লেখনশৈলীর কারণে। যেমন, মিসেস অ্যান্ডারসনের ভালোবাসা ও জীবনের পরিণতি হৃদয় ভারাক্রান্ত করে তুলেছিল, আবার কুন্দ বা জুঁই ফুলের বর্ণনায় সম্পূর্ণ উপন্যাস জুড়ে এক গুচ্ছ ফুল ফোঁটার অপেক্ষায় প্রহর গুনেছি। সম্পূর্ণ উপন্যাসটিতে কানাডার ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে মানবজীবন ও মানব মনের পরিবর্তনের যোগসূত্র এবং কাহিনীর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ উক্তি ও কবিতার ব্যবহার বইটিতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। চমৎকার প্রোডাকশনের বইটি বেশ কিছু সুখের মুহূর্ত উপহার দিয়ে আমার পাঠক মন তৃপ্ত করেছে। সমকালীন উপন্যাস যেসকল পাঠক পছন্দ করেন এক খণ্ড অবসর কাটাতেই পারে ❝রোদ্দুর হোক আজ❞ বইটির সান্নিধ্যে। ★বই পরিচিতি : বইয়ের নাম ~ রোদ্দুর হোক আজ লেখক ~ বন্যা হোসেন প্রকাশনী ~অনুজ প্রকাশন প্রচ্ছদ ~ মো. সাদিতউজজামান পৃষ্ঠা সংখ্যা ~৩০৪

      By Samiha Hossain Shoily

      16 Mar 2024 07:05 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      রোদ্দুর হোক আজ একটি সমকালীন জনরার উপন্যাস। শুচি, সামিন ও তপন তিনজন ছোটবেলার বন্ধু, শৈশব, কৈশোর, তারুণ্যের সময়টা তারা একসাথে পার করেছে। একটা সময় প্রত্যেকেই নিজ নিজ প্রচেষ্টায় কানাডায় পাড়ি জমায়, গড়ে তোলে স্থায়ী নিবাস। বেশ ভালোই যাচ্ছিল দিনগুলি। কিন্তু হঠাৎ ভাঙনের সুর ওঠে সামিন লুনার বৈবাহিক সম্পর্কে। বেশ কয়েক বছরের প্রণয়, পরিণয় তারপর সংসারজীবন। অর্থবিত্ত, বাড়িগাড়ি, ভালোবাসা কোনোকিছুরই অভাব ছিল না, তবু সম্পর্কের সুতো ছিঁড়ে গেল একটি অনুভূতির কাছে। আর তা হলো লুনার মাতৃত্বের আকাঙ্ক্ষা। ভালোবাসার কাছে মাতৃত্বের আকুলতা জিতে গেল। মায়া শব্দটো বাক্সবন্দি হয়ে পড়ে রইল দুজনের হৃদয়ের কোনো গোপনকক্ষে। ওদিকে তপন সুমির সাজানো গোছানো সংসার, ফুটফুটে দুটো জমজ মেয়ে, ইস্টি-মিষ্টি। ওদের তো কোনো অভাব ছিল না। অথচ এখানেও চিড় ধরলো সম্পর্কে। তপনের মন ঘুরে গেল এতো বছরের সম্পর্ক থেকে। অভাব তাহলে কীসের? 'অভাব কেবল ডুমুরের ফল আর আলোকলতার মূলের— যা দেখা যায় না, তার।' একে একে বদলে যাচ্ছে চেনা মানুষগুলো। কেউ নিয়েছে স্বেচ্ছা নির্বাসন, কেউ বা প্রতারণার আসন। তবু মায়া মুছে যায় না। 'রোদ্দুর হোক আজ' উপন্যাসটিতে কেবল ভাঙন, বিচ্ছেদ আর শঠতা নয় শুচির মতো আত্মবিশ্বাসী, দৃঢ়চেতা একাকী সংগ্রাম করে যাওয়া মা-ও আছেন যার সাথে তার একমাত্র ছেলে রোহানের গভীর বন্ধুত্ব। কৈশোরে সন্তানদের সাথে বাবামায়ের যে চিরাচরিত মনোমালিন্য দেখা যায়, এই গল্পে তার কোনো অস্তিত্বই নেই। সত্যি তাই, মায়ের মতো নিঃস্বার্থ বন্ধু কজন হয়?রোহানও যেন তার মায়ের সুযোগ্য পুত্র। কি দারুণ বোঝাপড়া মা-ছেলের মাঝে। উদিতা নামের আরো একটি চরিত্র আছে, যার তেমন একটা ভূমিকা থাকলেও পুরো উপন্যাস জুড়ে ছিল নীরব উপস্থিতি। গল্পে আরো আছে ঝুমুর মাইক দম্পত্তি, শেকড়হীন দুজন পথিকের এক হওয়ার গল্প। শুচির গল্পে কিন্তু আরো একটি নাম জুড়ে গিয়েছিল। মজার ছলে তার সম্বোধন হয় 'ঝুঁটিওয়ালা'। নতুন মানুষ এসেছিল সামিনের জীবনেও। তবে দিনশেষে সঙ্গী ছিল কি কেউ? নাকি লুনার মতোই মাঝপথে হাত ছেড়ে দিয়েছিল? এই গল্পের একটা পর্যায়ে লিপিবদ্ধ হয়েছে কোভিডের দিনগুলি। চারিদিকে অসুস্থতা, প্রিয়জন হারানোর বেদনা, গৃহবন্দী সেইসময়গুলো যেন লেখকের কলমে আবারো চোখে সামনে ভেসে উঠেছিল। উপন্যাসটির প্রতিটি চরিত্র যথার্থ, প্রত্যেকের গল্পই চিত্রায়িত হয়েছে। গল্পের শুরুতে চরিত্রদের বুঝে উঠতে খানিকটা সময় লাগলেও বাকিটায় কোনো বেগ পেতে হয়নি। পাশাপাশি একটা বিষয় না বললেই নয়, লেখকের ঝরঝরে গল্প বলার ধরণ আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নান্দনিক উপস্থাপনা ছিল গল্পের প্রাণ। গল্প বলার সাবলীলতাই পাঠককে নিয়ে যাবে শেষ অবধি যেখানে অপেক্ষা কল্পনাতীত পরিণতি কিংবা সমাপ্তি। [ প্রকৃতি শীতের আগে সব কেড়ে নেয়, তারপর আবার ভরে দেয়। পাতার ঝরে পড়া মানেই গাছের মৃত্যু নয়, সব শেষ নয়। বসন্তে রঙিন হয় আবার ছোঁয় আকাশ। ] বই: রোদ্দুর হোক আজ লেখক: বন্যা হোসেন জনরা: সমকালীন উপন্যাস প্রকাশনী: অনুজ প্রকাশন প্রচ্ছদ: মো. সাদিতউজজামান

      By liz****com

      15 Mar 2024 11:52 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      পাতাঝরা বিজন বনপথে চলেছি বুনো ফুলের খোঁজে ফুল পাই বা না পাই তবু রোদ্দুর হোক আজ। বইয়ের নাম: রোদ্দুর হোক আজ লেখক: বন্যা হোসেন প্রকাশক: অনুজ প্রকাশন পৃষ্ঠা: ৩০৪ মুদ্রিত মূল্য: ৭০০ টাকা রিভিউতে: ফাহারিয়া লিজা ব্যস্ততার ফাঁকে ফাঁকে প্রথমে এক দুই পৃষ্ঠা করে পড়িছিলাম বইটা; এই এক দুই পৃষ্ঠা পড়ে পোষায়নি। পুরোটা শেষ করার জন্য অস্থির হয়ে গিয়েছিলাম। এর মধ্যে একদিন একটু সময় পেলাম; সাথে সাথেই এক বসায় বইটা পড়ে ফেলেছিলাম। পুরো পড়ার পর শান্তি, আহা! বইটা পড়ে কখনো আমার চোখ-মুখ যেমন উজ্জ্বল হয়েছিল; ঠিক তেমনি কখনো কখনো হৃদয়ে হাহাকার হয়েছিল। প্রথম কয়েক পৃষ্ঠায় চরিত্র নিয়ে তালগোল পাকিয়ে গেলেও, আস্তে আস্তে সব ক্লিয়ার হয়ে গেছে। জীবনে ভালো বন্ধু পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়। "রোদ্দুর হোক আজ" বইটি তিন বন্ধুর জীবনের গল্প। কানাডায় বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশি তিন বন্ধুর জীবনের উত্থান-পতন, বিশ্বাস-অবিশ্বাস, সুখ-দুঃখ, সম্পর্কের টানাপোড়েনের গল্প। শুচি,সামিন,তপনের জীবনকে কেন্দ্র করে রয়েছে আরও উল্লেখযোগ্য সব চরিত্র, আর এদের নিয়ে পরিপূর্ণ একটি উপন্যাস "রোদ্দুর হোক আজ"। মানুষের জীবন সরলরেখায় চলে না। নানা সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে তাদের যেতে হয়। সফলতা অর্জন করার জন্য নানা পরীক্ষা দিতে হয়। শুচির জীবনে রয়েছে নানা সংগ্রামের গল্প। এখন তার ছেলেকে নিয়ে সুন্দর সংসার। শুচি আর তার ছেলের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। নারী হিসেবে যেমন দারুণ একটা চরিত্র; মা হিসেবেও অসাধারণ! তাদের জীবনের নানা মুখরোচক গল্প বইটিতে ফুটে উঠেছে। রুপম চরিত্রটি আমার অসাধারণ লেগেছে। এই চরিত্রের কারণে উপন্যাসটি দারুণভাবে উপভোগ করেছি। সামিন আর লুনা দাম্পত্যে জীবনে ভালোবাসায় পরিপূর্ণ, তবুও রয়েছে শূন্যতা। এই শূন্যতা কি ভালোবাসাকে হার মানাবে?? জমজ সন্তান নিয়ে তপনের সুখের সংসার। তপনের একটা ভুলের মাশুল কি তাদেরও দিতে হবে?? সাময়িক সুখের জন্য মানুষ বার বার ভুল পথে পা বাড়ায়। এই ভুলগুলো একসময় বড় আকার ধারণ করে; যা তাদের জীবন দুর্বিষহ করে দেয়। পরকীয়া একটি বিষাক্ত সম্পর্ক। যা কখনোই সুখের হতে পারে না। এই বইটিতে তা প্রকাশ করা হয়েছে। এই বইটির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো নারীদের আত্মনির্ভরশীলতা। বইয়ের নারী চরিত্রগুলো খুবই সক্রিয় ছিল। নানা ঝড়-ঝাপটা পেরিয়ে, আত্নসম্মান বজায় রেখে নারীরা ঘরে-বাইরে সুন্দর করে সামলে নেয়। বইতে কয়েকজন নারীর সংগ্রামী চিত্র ফুটে উঠেছে। সমাজের বাজে কথায় কান না দিয়ে তারা এগিয়ে যায়। যার মধ্যে রয়েছে ঝুমুর। সে নানা সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেছে। এই বইয়ের আরেকটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র হলো উদিতা। যা আপনারা বইটি পড়লেই বুঝতে পারবেন। বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান স্তম্ভ রেমিটেন্স। প্রবাসীরা নিজের পরিবারের জন্য শত কষ্টের মাঝেও আয় করে; যাতে পরিবারের মানুষগুলো ভালো থাকে। নিজেরা বিদেশের মাটিতে কষ্ট করে দেশে থাকা পরিবার আর আত্মীয়দের জন্যও অনেক কিছু করে। "রোদ্দুর হোক আজ" বইটিতে রেমিটেন্সের বিষয়টিও ধরা দেয়। করোনাকালীন সময় কিভাবে মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল তার একটা খন্ডাংশ এই বইটিতে রয়েছে! মানবজীবনে দুঃখের পর সুখ আসে। সব মানুষের জীবনে এমন একজন আসে যে তাকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসে৷ ❝ প্রেম হচ্ছে সূর্যের মতো। অস্ত যায়, আবার উদয় হয়❞। ~ রোদ্দুর হোক আজ এই বইটি পড়ে নানা অনুভূতিতে ডুবেছিলাম আমি। বইয়ের শেষটা ভীষণভাবে তৃপ্তি দিয়েছে। চমৎকার একটা সময় কাটিয়েছিলাম বইটার সাথে। উপন্যাসের শব্দচয়ন ভীষণ সুন্দর ছিল। সাবলীল ভাষায় খুব সুন্দর শব্দশৈলী দ্বারা লেখক উপন্যাসটি উপস্থাপন করেছেন। যারা সমকালীন জনরার বই পড়তে ভালোবাসেন তারা "রোদ্দুর হোক আজ" বইটি পড়ুন। আশা করি দারুণ সময় কাটবে।

      By Oniket Udashin

      15 Mar 2024 04:02 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      বইয়ের গল্প বন্যা হোসেনের সাবলীল কলমে এগিয়েছে প্রবাসে মূলত তিনবন্ধু শুচিস্মিতা, সামিন এবং তপনের বন্ধুর পথচলাকে ঘিরে। এদের আপাত সুখী জীবনে একে একে ঘটতে থাকে অনাকাঙ্ক্ষিত সব ঘটনাবলী। এইসব ঘটনা একটা থেকে আরেকটা চরম আশ্চর্যের। লেখকের অসাধারণ গল্পকথনে কখন যে ঢুকে যাবেন কাহিনির গভীরে টেরই পাবেন না। পড়তে পড়তে ভেবেছি মানবচরিত্র আসলেই জটিল। নইলে সন্তানের আশায় কীভাবে সুখের তরী অকস্মাৎ ডুবে যায়, ভালোবাসা কর্পুরের মতো উবে যায় পরকিয়ার মতো অনৈতিক স্থূল পদস্খলনে! এটিকে ঘিরেই কাহিনি এগিয়ে চলে। ধীরে ধীরে উন্মোচিত হয় অভাবনীয় সব কাণ্ডকারখানা। এখানে পাত্রপাত্রীদের চরিত্র নিপুণ মুন্সিয়ানায় তুলে এনেছেন লেখক। পড়তে গিয়ে কখনও আপ্লুত হবেন সুকুমার বৃত্তিতে, ভালোবাসায় কিংবা অবিচারের করুণ রসে, কখনও রাগে চুল ছিঁড়বেন চরিত্রের কদর্য দিকগুলোর সুচারু অবতারনায়। নানান ত্রুটিবিচ্যুতি আর পরস্পর বিরোধিতার সমন্বয়েই একেকটা সত্তা! জীবনের প্রয়োজনে, আপন স্বার্থের কিংবা লালসার চক্রে চেনা মানুষও অচেনা হয়ে যায়। এই প্রাচীন অনুভবটি লেখক খুবই বিশ্বাসযোগ্যতায় সামিন, লুনা, তপন, সুমি প্রভৃতি চরিত্রগুলির মাঝে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। তারপর এসে যায় ভালোবাসার চিরন্তন দোলাচাল। একাকী জীবনে নির্ভরতার লুব্ধক হাতছানি। খুব ঋজু নারীও কোথায় জানি একটা পেলব লতার মতো। নিস্তরঙ্গ জলে রুপমের মতো ঢিলের ঢেউ ওঠে সুচিস্মিতার জীবনে। সুচি কি পারবে এই হাতছানি উপেক্ষা করতে? এ প্রশ্নগুলির উত্তর পাওয়া যাবে ধীরে ধীরে। কানাডার রাজধানী অটোয়ার পটভূমিতে চিত্রিত এই আলেখ্যের দুটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো পুরো প্লট জুড়ে ঋতুর পরিবর্তনের কাব্যময় বর্ণনা আর কোভিড আক্রান্ত শহুরে জীবনের চালচিত্র। সেই সময়ের বিভীষিকা প্রামাণ্য দলিলের মতো জুড়ে গেছে এই উপন্যাসে যা প্রশংসনীয়। লেখকের চরিত্রচিত্রণ বরাবরের মতো প্রশংসনীয় হলেও কিছুটা দুর্বলতাও আছে। যেমন, মূল প্রেমিকপ্রবরটি অতিমাত্রায় সদগুণের অধিকারী। অত কেয়ারিং লোক সোনার পাথরবাটির মতো। সামিন অতিমাত্রায় অথর্ব কিংবা তপন নির্লজ্জের হদ্দ! কাহিনির শেষের দিকে সামান্য বাহুল্য মনে হয়েছে। তবে এসব কিঞ্চিৎকর ব্যাপার বাদ দিলে ‘রোদ্দুর হোক আজ’ একটি সুখপাঠ্য উপন্যাস। আর একটি ব্যাপার - উদিতা নামের চরিত্রটি কে? তাঁর কাজইবা কী পুরো উপন্যাস জুড়ে? জানতে হলে আজই পড়ে ফেলুন একইসাথে ভাঙনের, সন্দেহের, অবিশ্বাসের, প্রতারণা এবং সর্বোপরি অনন্য ইতিবাচক ভালোবাসার অনুপম আলেখ্য - রোদ্দুর হোক আজ!

      By Khadija Meher Tarin

      16 Mar 2024 05:35 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বই: রোদ্দুর হোক আজ লেখক : বন্যা হোসেন প্রকাশনী: অনুজ প্রকাশন প্রচ্ছদ : মো. সাদিতউজজামান জনরা: সমকালীন উপন্যাস পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৩০৪ ?কাহিনি সংক্ষেপে: কানাডার পটভূমিতে বাংলাদেশি ৩ বন্ধু শুচি, সামিন, তপনদের বন্ধুত্ব, বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা, ভালোবাসা এবং করোনাকালীন সময়ের করুণ পরিস্থিতির আলোকে রচনা করা হয়েছে উপন্যাসটি। সামিন এবং লুনার দশ বছরের সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটে, সমাপ্তি ঘটে জমজ বোন ইষ্টি, মিষ্টির মা-বাবা তপন এবং সুমির সম্পর্ক। সামিন এবং শুচির পবিত্র বন্ধুত্বে আঙ্গুল উঠে। শুচি তার ছেলে রোহানের একাকী জীবনে আগমন ঘটে আগন্তুকের। তারপর ঘটতে থাকে নানা ঘটনা যা শুচি কখনো ভাবেও নি। দেখানো হয় জঘন্য এক চরিত্রের পরকীয়া যার কারণে ভেঙে যায় সুন্দর একটা সংসার। কারণ কি? তা জানতে হবে বইটি পড়ে। ? পাঠপ্রতিক্রিয়া: প্রথম অধ্যায় বা পর্বটুকু এই নিয়ে হয়তো আমি ৩/৪ বার পড়ে ফেলেছি। প্রথম বার পড়ার পর কাহিনি কিছুই ধরতে পারিনি। তারপর বেশকিছু পৃষ্ঠা পড়ার আবার ও এসে অংশটুকু পড়েছি, তখন গিয়ে মনে হয়েছে কি দারুণ এই মুহূর্তগুলো। লেখক বন্যা হোসেনের লেখা পড়া হয়েছে এই প্রথম। বলতেই হবে লেখকের লেখার হাত চমৎকার। কাহিনি সুন্দর এবং সাবলীলভাবে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। মনেই হয়নি এই অংশটুকু অহেতুক বা অতিরিক্ত। এডাল্ট লেখা আছে তবে তা পর্যাপ্ত মনে হয়েছে। পড়তে খারাপ লাগেনি। সবকিছুর বর্ণনা খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন। রুপম, শুচির ভালোলাগা, ভালোবাসার মুহূর্তগুলোর জন্য লেখককে আলাদা করে ধন্যবাদ এতো সুন্দর লাগতো ওদের ২জনকে। বইটার এন্ডিং আমার কাছে পার্ফেক্ট মনে হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক মতো নিজ গন্তব্যে এগিয়েছে। ?চরিত্র বিশ্লেষণ : শুচি: উপন্যাসটির সবচেয়ে বেশি ফোকাস পাওয়া চরিত্রটি হচ্ছে শুচি। অসাধারণ  এক চরিত্র যার সকলই গুণই আমার ভালো লেগেছে। আত্মবিশ্বাসী, নির্ভরশীল, চাকরিজীবী, একজন চমৎকার মা, ভালো বন্ধু , ভালো প্রতিবেশী, সোশাল ওয়ার্কার দারুণ সব বৈশিষ্ট্যের অধিকারিণী সে। এছাড়াও শুচির বিবাহবিচ্ছেদ, সিঙ্গেল মা হয়েও বিদেশ বিভূঁইয়ে যেতে পারা, স্থায়ী হওয়া, টিকে থাকা সবকিছুই অনুপ্রেরণামূলক। এবং শেষ পর্যন্ত ওর জীবনে  কাঙ্খিত মানুষটির আগমন সবকিছুই বইটিতে খুব সুন্দর করে দেখানো হয়েছে। সামিন: আমার কাছে বিষন্নতায় ভরা এক চরিত্র। শুরু থেকেই ওর জন্য কেমন খারাপ লাগা কাজ করতো। বন্ধু হিসেবে, পার্টনার হিসেবে চমৎকার একজন মানুষ। শেষটা একদম অপ্রত্যাশিত ছিলো। বলে না কষ্টের পরই আছে স্বস্তি। সামিনের বেলায়ও তাই মনে হয়েছে। তপন: এই চরিত্রটা নিয়ে কিছু বললেই মনে হচ্ছে স্পয়লার হয়ে যাবে! মানুষ ভুল করে তা শুধরায় কিংবা অনুতপ্ত হয় কিন্তু তপনের মাঝে এর কোনটাই দেখা যায় না। শেষে গিয়ে ওর জন্য আফসোসও হচ্ছিলো না৷ ও ডিজার্ভ করে এমনটাই। লুনা: বাচ্চা জন্ম দেয়াটা ওর জন্য এতোটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো যে ন্যায় নীতি ভুলে, সুন্দর সম্পর্ক ভাঙতেও তার দ্বিধাবোধ হয় নি! শেষটায় অবশ্য আশা করি নি ওর পরিণতি এমন হবে। কষ্ট লেগেছে একটু হলেও। সুমি: প্রথমে মনে হচ্ছিল সাধারণ বাঙালি চরিত্রের মতো সেও অন্যায় সহ্য করে সব মেনে নিবে। কিন্তু না ওর রুখে দাঁড়ানোটা ভীষণ ইন্সপায়ারিং। খুবই ভালো লেগেছে। ঝুমুর, মাইক: বইয়ে দেখা সবচেয়ে সুন্দর দম্পতি এদেরকেই মনে হয়েছে। রুপম: আরো একজন অসাধারণ চরিত্র। দারুণ সাপোর্টিং। বাবা হিসেবে পার্টনার হিসেবে সে দুর্দান্ত। ? প্রোডাকশন : চমৎকার নজরকাড়া এক প্রচ্ছদ। যা দেখলে শুধু তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে হয়। এছাড়াও বইটির বাইন্ডিং, প্রোডাকশন চমৎকার লেগেছে আমার। অহেতুক পৃষ্ঠার মধ্যে কোনো গ্যাপ রাখা হয় নি যা ব্যক্তিগতভাবে আমার ভীষণ ভীষণ ভালো লেগেছে। সব বইগুলো যদি এমন হতো! বই ধরে পড়তেও আরাম পেয়েছি। তাই বলবো অন্যান্য বইয়ের তুলনায় দামটা বেশি মনে হয় নি। কারণ কোয়ালিটির দিক দিয়ে পৃষ্ঠা অনুযায়ী দামটা ঠিক আছে৷ এদিক দিয়ে প্রকাশনী প্রশংসার কাজ করেছে। বইয়ের সম্পদনা বা প্রুফ রিডিং ভালো হয়েছে। বুঝা যায়, কারণ তেমন কোনো বানান ভুল আমার চোখে পড়েনি। এতে বই পড়ার সময় আরাম পেয়েছি৷ ? সামিনের উক্তিটি দিয়েই লেখাটি শেষ করছি.. "জুটি ভেঙে ভাবছ বুঝি জুড়বে আবার? মশারি তো নয় যে রিফু করলেই হবে তোমার। "

      By Rafa

      11 Mar 2024 08:56 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      ❝সব কাজের ফলাফল তড়িঘড়ি করে প্রকাশ পায় না। সময় দিতে হয়। তবে ফলাফল প্রকাশিত হবার পর কেউ আনন্দ করে, কেউ সুখে বাক্যহারা হয়, কেউ ঘটনার নাটকীয় মোড়ে বিস্মিত হয়, কেউ আকাশ-পাতাল ভেবে মাথার চুল ছিঁড়ে অথবা ভবিষৎ ভেবে আতঙ্কিত হয়।❞ ~রোদ্দুর হোক আজ ক্ষুদ্র এই মানবজীবনে ঘটে নানা ঘটনা। জীবন সবসময় সরলরেখায় চলে না। এই মানবজীবনের নানা ঘটনা উল্লেখিত আছে ‘রোদ্দুর হোক আজ’ উপন্যাসে। কানাডার পটভূমিতে বাংলাদেশের প্রবাসীদের জীবনযাত্রা, কাজ, সম্পর্ক, সংসার, প্রতারণা ও নানা সামাজিক ঘটনা নিয়ে লেখক বন্যা হোসেন এর অষ্টম গ্রন্থ ‘রোদ্দুর হোক আজ’ রচিত হয়েছে। ◼️কাহিনী সংক্ষেপ: কানাডার রাজধানী অটোয়ায় শুচি ও তার একমাত্র পুত্র রোহানের বসবাস। বহু সংগ্রামের পর আজ শুচি এই অবস্থানে এসেছে। একদিন এক আগন্তুকের আগমনে শুচির জীবনে হঠাৎই পরিবর্তন দেখা দেয়। কে সেই আগুন্তক? আর শুচির জীবনে কীইবা পরিবর্তন হয়েছিল? সামিন আর লুনা দম্পতির দীর্ঘদিনের সংসারে শুধু একটাই অভাব। সন্তানের আশায় থাকা এই দম্পতির আর কোন অভাব ছিল না। আসলেই কী তাই? কেন তাদের দীর্ঘদিনের চেনা সম্পর্কটা বদলে যেতে থাকে? বহু সংগ্রামের পর প্রবাস জীবনে থিতু হয় তপন ও সুমি দম্পতি। যমজ কন্যাসন্তান, ইস্টি ও মিষ্টিকে নিয়ে তাদের সুখের সংসার। তাদের সংসারেও যেন কারো নজর পড়ে। বদলে যেতে থাকে জীবন। কী হয়েছিল? উপরের সবগুলো প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে পড়তে হবে ‘রোদ্দুর হোক আজ’ উপন্যাসটি। ◼️পাঠ প্রতিক্রিয়া: ‘রোদ্দুর হোক আজ’ উপন্যাসটি মূলত তিন বন্ধু শুচি, তপন ও সামিন এর জীবনের নানা কাহিনী নিয়ে রচিত হয়েছে। তাদের জীবনের উত্থান-পতন, সুখ, দুঃখ, সফলতা, প্রতারণা ইত্যাদি সবকিছুর আখ্যান ‘রোদ্দুর হোক আজ’। কানাডার রাজধানী অটোয়াকে ঘিরে উপন্যাসটির কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। তিন বন্ধুকে ঘিরে আরও অনেক চরিত্র এসেছে উপন্যাসে। এই চরিত্রগুলোর কয়েকটাও মনে দাগ কাটবার মতো। উদিতা এমনই একটি চরিত্র। উদিতা চরিত্রটির উপস্থিতি শেষ পর্যন্তও ছিল। দারুণ একটি চরিত্র উদিতা। ঝুমুর চরিত্রটিকেও বেশ ভালো লেগেছে। ঝুমুরের জীবনটা সংগ্রামের। শেষপর্যন্ত ঝুমুর সুখের দেখা পায় কিনা তা বইটি পড়লে জানা যাবে। রিদওয়ান মিনহাজ উরফে রুপম চরিত্রটিও চমৎকার ছিল। মানুষকে সম্মান করতে জানে সে। অনেক পুরুষ নারীদের নিজের চেয়ে নীচু অবস্থায় দেখাতে চায়। কিন্তু রুপম চরিত্রটি পুরো ভিন্নরকমের। এই উপন্যাসে রুপম চরিত্রটির বড়ো অবদান রয়েছে। ক্ষণিকের মোহ যে দিনশেষে কত বিপদজনক হতে পারে তা উপন্যাসে চিত্রিত হয়েছে। মানুষ নিজেদের সোনার সংসারের কথা ভুলে যেয়ে ক্ষণিকের মোহের কারণে জড়িয়ে পড়ে আরেক জয়গায়। যা একসময় তাদের সারাজীবনের সবচেয়ে বড়ো ভুলের ও দীর্ঘশ্বাসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পরকীয়া আমাদের সমাজের জন্য একটি ব্যাধি। এই পরকীয়ার কারণে বহু সংসার ধ্বংস হয়। পরকীয়ায় সাময়িক সুখ পাওয়া গেলেও, এর পরিণতি কখনো ভালো হয় না। এর কারণে লোভে ও ভোগে মত্ত হয়ে সুচারুভাবে সাজানো জীবনটাকে তছনছ করে মানুষ। লেখক এই বিষয়টিও বইয়ে তুলে ধরেছেন। এই জগতে সরল ও ভালো মনের মানুষেরাই বেশি কষ্টের মুখোমুখি হয়। সামিন ছিল এমনই একটি চরিত্র। তবে শেষটা মনে স্বস্তি এনে দিয়েছে। করোনাকালীন সময়ে সমগ্র বিশ্ব নিজের গতি হারিয়ে ফেলে। মানুষের জীবন গৃহবন্দী হয়ে যায়। বইটিতে কানাডার অটোয়াতে করোনার প্রাদুর্ভাবের চিত্র বর্ণিত হয়েছে। এক ভয়ানক সময় পার করেছে মানুষ এই সময়ে। এই মহামারীর সময়টা উপন্যাসে উল্লেখ থাকার কারণে কাহিনীতে আরো বৈচিত্র্যতা এসেছে। এছাড়া, লেখক বইয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশের চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন। অটোয়ার প্রকৃতি সম্পর্কে নানা কিছু উপন্যাস থেকে জানতে পেরেছি। লেখক উপন্যাসের সমাপ্তিটাও খুব সুন্দরভাবে টেনেছেন। শেষটা আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। সমাপ্তিটা মন ভালো করার মতো সুন্দর হয়েছে, এরথেকে সুন্দর সমাপ্তি হয়তো এই বইয়ের জন্য আর হয় না। বইটা পড়ে মন পরিতৃপ্ত হয়েছে। ◼️বইয়ের বাইন্ডিং, কোয়ালিটি খুবই ভালো ছিল। অনুজ প্রকাশনীর আরো কয়েকটি বই এবার সংগ্রহ করেছি। সবগুলো বইয়ের মানই চমৎকার। বইয়ের প্রচ্ছদটাও মনোমুগ্ধকর ও নজরকাড়া। প্রচ্ছদে শুকনো পাতার উপর নতুন দিনের সূর্যের রশ্মির দৃশ্য চিত্রিত হয়েছে, যা সত্যিই অসাধারণ। বইয়ের সাথে একদম মানানসই প্রচ্ছদটা। ◼️বন্যা হোসেন আপুর লেখা প্রায় সবগুলো বই অনেক আগেই পড়া হয়েছে। আপুর লেখা পড়তে দারুণ লাগে। এই বইটাও এর ব্যাতিক্রম না। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত একটানে বইটা পড়ে শেষ করেছি। প্রথমে ভেবেছিলাম এত মোটা বইটা পড়তে অনেকদিন লাগবে। কিন্তু পড়া শুরুর করা পর দেখা গেলো এক দিনেই বইটা পড়ে শেষ করে ফেলেছি। সবমিলিয়ে বলতে হয়, অসাধারণ একটি উপন্যাস ‘রোদ্দুর হোক আজ’। ◼️প্রিয় লাইন: আনন্দ উচ্ছল একদল মানুষের সঙ্গ এমনই যে, চারপাশের প্রতিটি জড়বস্তু ও জীব সেই উদযাপনে সামিল হয়। উচ্চশিক্ষিত হোক আর অর্ধশিক্ষিত মেয়েদের মেয়েলিপনা আর কূটনামি যদি একটু কমত, নিজেদের মস্তিষ্ক আরেকটু খাটাতে পারত সৃজনশীল কাজে। ◼️বই পরিচিতি: বই: রোদ্দুর হোক আজ লেখক: বন্যা হোসেন প্রকাশনী: অনুজ প্রকাশন প্রকাশকাল: বইমেলা ২০২৪ প্রচ্ছদ: মো. সাদিতউজজামান মুদ্রিত মূল্য: ৭০০ টাকা ◾বই থেকে নেয়া পছন্দের কয়েকটি লাইন দিয়ে রিভিউটি শেষ করছি। ❝সূর্যোদয়ের আশায় মনের মধ্যে নিঃশব্দে উচ্চারিত হতে থাকে, রোদ্দুর হোক আজ।❞

      By Atiqur Rahman

      20 Feb 2024 12:51 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      #রোদ্দুরহোকআজ #পাঠপ্রতিক্রিয়া . আমার খুব প্রিয় এবং জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক Bonya Hossain আপার নতুন বই “রোদ্দুর হোক আজ” এসেছে এবারের বইমেলায়। লেখাটি মূলত কিছুদিন আগে অনলাইনে প্রকাশিত “এক মুঠো রোদ্দুর” এর পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত সংস্করণ! বন্ধুত্ব, ভালোবাসা, বিশ্বাসভঙ্গের উপন্যাস "রোদ্দুর হোক আজ"। উপন্যাসটি পড়ে কানাডার বাঙালি সমাজের একটা চালচিত্র পাওয়া যায়। বাংলাদেশের পাত্রপাত্রী কিন্তু বাংলাদেশকে প্রায় স্পর্শ না করে উপন্যাস লেখা যথেষ্ট শক্ত বলেই মনেকরি। যদিও লেখিকা এই শক্ত কাজটি যথেষ্ট মুন্সিয়ানার সাথেই সম্পন্ন করেছেন। বন্যা হোসেন আপার অন্যান্য লেখার মতোই এটাও অনেক সুখপাঠ্য। অসাধারণ কাহিনী, দারুণ লেখা এবং ঝরঝরে লেখা। “রোদ্দুর হোক আজ” বইয়ের গল্পটা মূলত তিন বন্ধু শুচি, সামিন আর তপনের। তারা বাংলাদেশে থাকতেই পরস্পর পরস্পরের পরিচিত। দেশেই শুচির বিয়ে হয়, যদিও বিয়ের কিছুদিন পরই সে তার বাবার বাসায় চলে আসতে বাধ্য হয়। তার একছেলে, রোহান। তপনের বিয়ে হয় সুমির সাথে। ইষ্টি মিষ্টি নামে জমজ দুটি মেয়ে আছে তাদের। আর সামিনের বিয়ে হয় লুনার সাথে। ওদের কোন সন্তান নাই। কালক্রমে ওরা তিন বন্ধুই থিতু হয় কানাডায়। গল্পে আরো এসেছে হেল্পিং হ্যান্ড হিসাবে বাংলাদেশের এক পরিবারের সাথে কানাডায় যাওয়া ঝুমুর আর তার চাইনিজ বংশোদ্ভূত হাসবেন্ড মাইকের কথা। আর আছে বিপত্নীক রুপম আর তার মেয়ে বিদুষীর কথা। দাম্পত্য জীবনের শুরুতে না হলেও একটা সময়ে বাচ্চারা হাসবেন্ড-ওয়াইফ সহ পুরো পরিবারকে বেঁধে রাখতে সাহায্য করে। আবার এই বাচ্চা না হওয়ার জন্যও একটা পরিবার ভেঙ্গে যেতে পারে। যদিও বাচ্চা না হওয়ার দোষ বেশীরভাগ সময়ই স্ত্রীর ঘাড়ে পড়ে। তবে এখানে ব্যাপারটা হয়েছে উল্টা। সামিন-লুনা দম্পত্তির বাচ্চা না হওয়ার দায় সামিনের। সামিনের এই ব্যর্থতায় তাদের দাম্পত্য সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। ইষ্টি মিষ্টিকে নিয়ে তপন-সুমি ভালই ছিল, কিন্তু হঠাৎ করেই তপনের আচরণে কেমন যেন পরিবর্তন আসে। অনেকটা যেন সে আর সুমিকে পছন্দ করতেছে না। সুমির সন্দেহ তপন কোন শ্বেতাঙ্গ মেয়ের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। সুমি, তপনের মোবাইল থেকে কিছু ইমেইল/চ্যাটের স্ক্রিনশট নেয়, কিন্তু পড়ার সুযোগ পায় না। সে স্ক্রিনশটগুলো শুচিকে পাঠিয়ে দেয়। কার সাথে তপনের চ্যাট চলতেছে? শুচি কি কিছু জানতে পেরেছিল? শুচির দিনকাল তার ছেলে রোহানকে নিয়ে ভালোই কাটছিল। তার পুরো চিন্তা রোহানকে নিয়ে। অফিসের বাইরে তেমন একটা সময় কাটায় না। বেশী কিছু হলে তার দুই ঘনিষ্ট বন্ধু সামিন বা তপনের সাথে যোগাযোগ করে। ঝুমুরের বিয়েতে শুচির পরিচয় হয় রুপমের সাথে। সে বিপত্নীক, এক মেয়ের বাবা, বড় চাকুরী করে। রুপম শুচিকে প্রথম দেখায় পছন্দ করে ফেলে, কিন্তু শুচি ঠিক বুঝতে পারে না, রুপমের সাথে তার সম্পর্কটা কতদূর পর্যন্ত নিয়ে যাবে। পছন্দ, না পছন্দের দোলাচলে শুচি থাকে। যদিও ধীরে ধীরে শুচির সাথে রুপমের একটা সহজ, বন্ধুর থেকেও বেশী গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর রুপমের আগ্রাসী ভালোবাসার জোয়ারে শুচির প্রায় ভেসে যাওয়ার যোগার! সাথে আছে নিজের ছেলে রোহান আর রুপমের মেয়ে বিদুষীর প্রশ্রয়। শুচি কি করবে? ডিভোর্সের পর সামিন টরেন্টো ছেড়ে অনেক দূরের এক ছোট শহরে চলে যায়। হঠাত শুচি, সুমির থেকে জানতে পারে লুনা প্রেগন্যান্ট! বাচ্চার বাবা কে? লুনার দাবী কি সঠিক? কেমন সব ধোঁয়াশা লাগা অবস্থা! এরমাঝে করোনা অতিমারির ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করে সমগ্র পৃথিবীবাসী। সামিন-শুচি-তপনের জীবনেও তার প্রভাব পড়ে। অনেক উত্থান পতন ঘটে তাদের সবার জীবনে। অনেক ঝড় ঝাপটা পার হয়ে সবাই অপেক্ষা করছে রৌদ্রোজ্জ্বল ঝলমলে একটি সোনালী দিনের জন্য, জীবনের কালোমেঘ কেটে রোদ্দুর হোক আজ! সেই রৌদ্রোজ্জ্বল ঝলমলে সোনালী দিনের দেখা কি পাবে তারা? . বই পরিচিতিঃ বইয়ে নামঃ রোদ্দুর হোক আজ লেখকঃ বন্যা হোসেন প্রকাশননীঃ অনুজ প্রকাশন মলাট মূল্যঃ ৭০০ টাকা পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৩০৪ প্রচ্ছদঃ মোঃ সাদিতউজজামান প্রকাশকালঃ অমর একুশে বইমেলা ২০২৪

      By Marzan Munni

      16 Dec 2023 10:32 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      অসাধারণ একটি বই। আশা করি ভালো লাগবে সবার।

      By Sania Jeni

      16 Dec 2023 10:12 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      অসাধারণ এক বই ! যারা পড়বে তাদের নিশ্চই ভালো লাগবে। ধন্যবাদ লেখিকাকে।

      By Arfia Jahan

      16 Dec 2023 09:07 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      বন্যা হোসেন, এমন একজন লেখিকা যিনি সরল, সাবলীল ভাষায় জীবনের গল্প তুলে ধরেন। এই বইটিও সেরকমই একটি বই। বই পড়াকালীন পাঠক কল্পনায় ডুবে রবে।

      By pur****com

      13 Dec 2023 08:52 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      দারুন একটি বই পড়া শেষ করলাম।শুরু করার পর একবার ও একঘেয়েমি লাগেনি। প্রতিটা চরিত্র এত জীবন্ত। ঝুটিওয়ালা রুপম,পরোপকারী ,সামিন,সুমি প্রতিটি চরিত্র ই অসাধারন।লুনার উপর রাগ হলেও শেষ পর্যন্ত রাগটা ধরে রাখাটা কঠিন ছিল। আবার ও পড়ব কিছুদিন গ্যাপে।অসাধারণ একটি উপন্যাস।

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!