User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

      By Romario Das

      30 Jan 2024 11:13 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      Excellent.

      By Md. Nasir Uddin

      12 Dec 2021 11:06 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      চেতন ভগত এর "3 Mistake Of My Life" বাতিঘর প্রকাশনীর বই। """ মাঝরাতে লেখকের কাছে অদ্ভুত এক ই-মেইল আসে- এক তরুণ আত্তহত্তা করতে যাচ্ছে। উদ্দিগ্ন হয়ে উঠেন লেখক। সেই তরুনকে থামানোর জন্য উঠেপড়ে লাগেন লেখক। তারপর অসাধারণ এক কাহিনী জানতে পারেন সেই লেখক: ৩ বন্ধুর ৩রকম অবসেশন- গনিত, ক্রিকেট আর ধর্ম! তাদের মাঝখানে এসে পড়ে আশ্চর্য বালক আলী। তাকে ঘিরে সপ্ন, নিজেদের ব্যবসা, প্রেম আর ভারতের রাজনীতি জট পাকিয়ে ৩বন্ধুকে দাড় করায় কঠিন বাস্তবতায়। গুজরাটের ভয়ংকর দাংগা এলোমেলো করেদেয় তাদের জীবন। তারপর......................!!!!!!!

      By FAYSAL

      10 Feb 2021 03:28 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      Best book of Chetan bhagat

      By Md. Rakibul Hasan

      15 Dec 2019 01:19 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      It's really a good book from cheton vogut. I think this book will change so many peoples life who are depressed with their life. Cheton Vogut is really a good writer. I wish many more books will come from him as like "Three Mistakes Of My Life",

      By Litan D Khan

      11 Dec 2019 09:46 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      চেতন ভগতের বই মানে ঝালমুড়ি স্টাইল। যতক্ষণ পড়া,ততক্ষণ ভালো লাগে। সিনেম্যাটিক কাহিনী, বিচিত্র চরিত্রের মাধ্যমে কাহিনী বিন্যাস আর গল্প দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কারণে ই বইটা আমার ভালো লেগেছে।

      By Mahboba Jahan Eva

      12 Nov 2019 09:23 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      নাম: থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ লেখক: চেতন ভগত অনুবাদ: ইশতিয়াক আহমেদ প্রকাশনী: বাতিঘর প্রচ্ছদ: ডিলান পৃষ্ঠা: ২২৫ মূল্য: দুইশত ত্রিশ টাকা ভুল? হ্যাঁ... ভুল। শব্দটার সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। এমনকি জীবনে চলার পথে সকলেই আমরা কম বেশি ভুল করে থাকি। কিন্তু সেই ভুলগুলো আমাদের জীবনে কতটা প্রভাব ফেললো বা সেই ভুলগুলোর ফলে জীবনটাই বদলে গেলো কিনা সেটাই হলো মূল বিষয়। এরকমই একটা গল্প 'থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ'। এই গল্পে কি সেই তিনটি ভুল? এই তিনটি ভুলের ফলে কি হয়েছিলো? জীবনের উপরে কি আদৌ কোনো প্রভাব ফেলেছিলো ভুলগুলো? উঁহু আমি বলবো না, সেটা জানতে হলে নিজেরাই পড়ে নিয়েন বইটি! চলুন দেখি গল্পের শুরুটা কিভাবে হয়েছিলো.... মাঝরাতে লেখকের কাছে অদ্ভুত এক ই-মেইল আসে, এক তরুণ আত্মহত্যা করতে যাচ্ছে। উদ্বিগ্ন হয়ে উঠে লেখক। সেই তরুণকে থামানোর জন্য উঠেপড়ে লাগেন তিনি। অনেক চেষ্টার পরে ই-মেইলের সেই তরুণের খোঁজ পান লেখক। তার নাম গোবিন্দ প্যাটেল। তারপর লেখক গোবিন্দ প্যাটেলের সাথে দেখা করে, তার কাছ থেকে জানতে পারেন এক অসাধারণ কাহিনী। চলুক দেখি কি সেই অদ্ভুত কাহিনী......... গল্পের শুরুটা ইন্ডিয়ার ছোট শহর আহমেদাবাদে। সেই শহরে বেড়ে ওঠা তিন বন্ধুকে ঘিরে। তিন বন্ধুর প্রথম দেখা হয়েছিলো কোনো এক পার্কে। কোনো বিশেষ নাটকীয়তার ভেতর দিয়ে এই বন্ধুত্বের শুরু হয়নি। খেলার মাঠে ছ'বছর বয়সী শুধু ওরাই ছিলো, একই সাইজের। আর সেখান থেকেই একসাথে খেলাধুলার মধ্য দিয়ে এই তিনজনের বন্ধুত্ত্ব দীর্ঘায়িত হতে থাকে। তিন বন্ধুর জীবনের উদ্দেশ্যগুলো ছিলো আলাদা। 'গোবিন্দ ' গনিতে খুবই ভালো, সে একজন বড় মাপের সফল ব্যবসায়ী হতে চায় এবং অনেক টাকার মালিক হতে চায়। 'ইশান' এর লক্ষ্য নিজেকে সব সময় ক্রিকেটের সাথে জড়িয়ে রাখা আর গল্পের ক্ষুদে প্রতিভাবান আলীকে একজন দক্ষ ব্যাটসম্যান হিসেবে গড়ে তোলা। আর 'অমি' সে চায় যেভাবেই হোক তার বাকি বন্ধু ২ জনের সাথে থাকতে। 'গোবিন্দ' ই হচ্ছে এই গল্পের প্রধান চরিত্র এবং সেই হলো গল্পকথক। নিজেকে একজন সফল বিজনেসম্যান হিসেবে গড়ে তোলার এক অদম্য লোভ কাজ করে তার মধ্যে। গনিতে খুব ভালো রেজাল্ট করেছে সে সব সময়, কিন্তু সে মনে করে গুজরাটি হিসেবে বিজনেস টা তার রক্তে মিশে আছে। আর তাই তার সকল চিন্তাভাবনা কেবল বিজনেসকে ঘিরেই। একমাত্র মাকে নিয়েই তার সংসার। গনিতের টিউশনির পাশাপাশি মাকে 'পিঠা সাপ্লাইয়ের' কাজে সাহায্য করে সে। আর পাশাপাশি তার ব্যবসায়ীক হওয়ার পরিকল্পনাও চালিয়ে যেতে থাকে। দুই বন্ধুকে নিয়ে গোবিন্দ একটি 'ক্রিকেট শপ' খোলে। ক্রিকেট শপের নাম দেয়া হয় 'টিম ইন্ডিয়া ক্রিকেট শপ'। শুরু করে ব্যবসা। এভাবেই চলতে থাকে তিনবন্ধুর জীবন এবং আস্তে আস্তে দেখা যেতে থাকে ধর্মীয় গোড়ামী, রাজনীতি মত বিষয়গুলো। গল্পের এক পর্যায়ে ইশানের আদরের ছোটবোন বিদ্যাকে পড়ানোর দায়িত্ব এসে পড়ে গোবিন্দর ঘাড়ে। ইশান তার অষ্টাদশী বোনকে সকল ছেলেদের থেকে আগলে রাখে, আর সেই বোনেরই টিউশন টিচার ঠিক করে গোবিন্দকে। গোবিন্দ প্রথমে একটু অমত করলেও পরে ঠিকই পড়াতে রাজি হয়। গোবিন্দ পড়ায়, বিদ্যাও পড়ে। কিন্তু তারপর? গোবিন্দ কি টিউশন টিচারের দায়িত্ব ঠিকমত পালন করতে পেরেছিলো? নাকি কোনোভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলো সেই তিনটি ভুলের দিকে? কি ঘটেছিলো তারপর........?

      By BookHunter

      11 Nov 2019 10:59 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      In late-2000, a young boy in Ahmedabad called Govind dreamt of having a business. To accomodate his friends Ish and Omi's passion, they open a cricket shop. Govind's wants to make money and thinks big. Ish is all about nurturing Ali, the batsman with a rare gift. Omi knows his limited capabiltiies and just wants to be with his friends. However, nothing comes easy in a turbulent city. To realize their goals, they will have to face it all - religious politics, earthquakes, riots, unacceptable love and above all, their own mistakes. Will they make it? Can an individual's dreams overcome the nightmares offered by real life? Can we succeed despite a few mistakes?

      By Dr. Asif Shufian Arnab

      09 Nov 2019 11:36 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      ভারতের ইংরেজীভাষী লেখকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক চেতন ভগতের তৃতীয় বই 'থ্রি মিসটেইকস অব মাই লাইফ' একটু ভিন্ন ধাচের। পাঠকপ্রিয় হবার প্রায় সব গুণাগুণই রয়েছে বইটিতে। লেখক তার অভ্যস্ত হাতে সমাজ, ধর্ম, ক্রিকেট, ব্যবসা, গণিত, রাজনীতি, প্রেম, সাম্প্রতিক দাঙ্গা, মানবীয় সুখ-দুঃখ সকলকিছুই নিপুণভাবে চিত্রায়িত করেছেন।

      By Sohel

      08 Nov 2019 11:23 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বইটি আসলে তিনজন যুবকের গল্প । তাদের জীবনের উথান পতনের গল্প। যেই গল্প আমাদের সমাজের গল্প । যেই গল্পকে আপনি ইচ্ছে করলে আপনার জীবনের গল্প বলেও চালিয়ে দিতে পারবেন । জীবন যুদ্ধ ,জীবন সংগ্রাম , অস্তিত্ব টিকেয়ে রাখার সংগ্রাম । আছে বন্ধুর প্রতি বন্ধুর ভালবাসা , মানুষের প্রতি মানুষের ভালবাসা , হানাহানি, রাজনীতি- সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা । এ যেন আমাদের সমাজেরই প্রতিছব্বি । বেশ ভালোই লেগেছে।

      By Rakib Hasan

      19 Apr 2019 12:42 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      অসাধারণ গল্প কিন্তু অনুবাদ ভালো হয়নি।

      By Rahman Ferdinand

      30 Jul 2017 09:16 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      #রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা RF-07-051 রিভিউঃ থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ মূল রচনাঃ চেতন ভগত ভাষান্তরঃ ইসতিয়াক আহমেদ প্রকাশনীঃ বাতিঘর প্রকাশনী মূল্যঃ ২৩০ টাকা (রকমারি মূল্যঃ ১৬১) বলা নেই কওয়া নেই লেখকের কাছে আহমেদাবাদ থেকে এক যুবকের ইমেইল আসে। ওতে সুইসাইড নোট লেখা ছিল। লেখক প্রথমে সংশয়ে ভোগে যে এটা জাঙ্ক মেইল কিনা, পরে পরিচিত এক প্রফেসরকে বলেকয়ে তার ছাত্রদের দিয়ে যুবকটির খোঁজ বের করে। জানা যায় যুবক বেশ কয়েকটি ঘুমের বড়ি খেয়ে এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরদিন এক দুর্দান্ত গল্প শোনার নেশায় সিঙ্গাপুর থেকে রওয়ানা দেয় লেখক, হাসপাতালে যুবকটির সাথে দেখা করে। কাহিনী মূলত তিন যুবক আর এক ছোট ছেলেকে নিয়ে আবর্তিত। গোবিন্দ- এ বইয়ের নায়ক। যে সবসময়ই বড় কিছু একটা করতে চাইতো ব্যবসাক্ষেত্রে। সফলতার প্রতি বিশ্বাসী এই চরিত্রটি ঝুঁকি নিতে চায় বরাবরই এবং তার এই ঝুঁকির কারণেই সূত্রপাত হয় তার ‘ভুল’-এর। বইয়ে আমরা দেখা পাই তার দুই বন্ধু ঈশাণ এবং ওমি’র, যারা তার ঝুঁকির সঙ্গী হয়, সফলতার ও ব্যর্থতারও ভাগীদার হয়।অদ্ভুত একটি মেইলে গবিন্দই লেখককে তার তিনটি ভুলের গল্প বলতে চায়, কী সেই ভুলগুলো? পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ ♦ চেতন ভগতের লিখার সবচে ইন্টারেস্টিং নিউজটা হলো সমালোচকদের কাছে যে কারণে তিনি অপ্রিয়, সাধারণ পাঠকের কাছে ঠিক সে কারণেই জনপ্রিয়। অত্যন্ত সরল ভাষায় তিনি তাঁর গল্প বর্ণনা করেন। এ বইয়েও তিনি সেই ধারা বজায় রেখেছেন। ইশতিয়াক আহমেদের অনুবাদ অসাধারণ না হলেও খারাপ লাগেনি আমার। ♦ ভারতের মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের আশা-আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন, হতাশা, সম্ভাবনা ইত্যাদি খুব কাছ থেকে তুলে এনেছেন লেখক। গল্পের পটভূমি আহমেদাবাদের পুরোনো শহর। আহমেদাবাদ শহরের বর্ণনা খুব বস্তুনিষ্ঠ-ভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন লেখক। এই শহরের মানুষের ব্যবসায়িক মানসিকতা মডেল হিশেবে পুরো ভারতের সামনে তুলে ধরতে চেয়েছেন। ♦ পাঠকপ্রিয় উপন্যাস হবার জন্য যেসব গুণাগুণ থাকা প্রয়োজন এ উপন্যাসে তার সবগুলোই আছে। খুবই সুনিপুণ ভাবে তিনি ধর্ম, রাজনীতি, ক্রিকেট, ব্যবসা এবং প্রেম- একসাথে নিয়ে এসেছেন। ♦ক্রিকেট ভারতে সবচেয়ে বড় ধর্ম; এবং সবচেয়ে বড় ব্যবসা। ক্রিকেটের জন্য ভারতীয়দের উন্মাদনা বাকি সব কিছুকেই ফিকে করে দিয়েছে। ক্রিকেটের সাথে ভারতীয় তরুণদের যে আবেগ জড়িয়ে আছে চেতন ভগতও খুব কৌশলের সাথে তাঁর উপন্যাসে তা মিশিয়ে দিয়েছেন। ♦ একটা উপন্যাসে প্রেম কাহিনী থাকবে না তা কি হয়? তাই এ উপন্যাসেও আছে! তবে প্রেমের ব্যাপারটি এই উপন্যাসে যেভাবে এসেছে, তা খুবই অনুমানযোগ্য। মূল কাহিনীর সাথেও এই উপকাহিনীর তেমন একটা সম্পর্ক নেই। তিন যুবকের তিন রকম অবসেশনঃ অঙ্ক, ক্রিকেট আর ধর্ম’। গল্পের শুরুতে অমিকে যেভাবে চিনবেন, শেষে যেয়ে একটা ধাক্কা খাবেন নিশ্চিত। এখানেও সেই তিন বন্ধুর গল্প, আর সেই সাথে তিনটি ভুলেরও। এসবের সাথে সমান্তরালভাবে উঠে এসেছে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি, দাঙ্গা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো বিপর্যয়ও যা সবার জীবনকে খুব কম সময়ের মধ্যেই গ্রাস করে নেয়। তবে বাকি সবকিছু বাদ দিয়ে এই উপন্যাসটি বন্ধুত্বের গল্প জানার জন্যও পড়া হয় তবুও অত্তুক্তি হবে না বলে আশা রাখি :) রকমারি লিংকঃ https://www.rokomari.com/book/34058/থৃ-মিসটেকস-অব-মাই-লাইফ

      By Aam somik

      09 Feb 2017 09:02 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      চেতন ভগত “থ্রি ইডিয়টস” খ্যাত লেখক ভারতীয় হলেও চেতন ভগত কিন্তু হিন্দি ভাষায় লেখেন না । তার বইগুলো ইংরেজী ভাষায় লেখা ।তার লেখা থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ বইটির প্রাককথন সাধারণ বইয়ের মত নয় । লেখক চেতন ভগত একটি ইমেইলের প্রসংগ তুলে কাহিনী বর্ণনা আরম্ভ করেন । আহমেদাবাদের একজন ব্যবসায়ী চিরশয্যাশায়ী হওয়ার বাসনায় ঘুমের বড়ি খাওয়ার আগে লেখক চেতন ভগতকে মেইল করেন । এই ই-চিঠিতে জি প্যাটেল তার জীবনের তিনটি ভুলের ইঙ্গিত দেন । উনিশ লাইনের চিঠি, প্রতিটা লাইন শেষ হওয়ার সাথে একটা করে ঘুমের বড়ি খাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন জি প্যাটেল নামের সেই পত্র-টাইপক! এই ঘটনা বানানো হওয়ারই কথা, কিন্তু চেতন ভগতের ভাষা দেখে তা বোঝার উপায় নেই । এরপর চেতন ভগত আহমেদাবা্দে তার পরিচিত মানুষজন দিয়ে খোঁজ-খবর নেয়া আরম্ভ করেন । এতসব করার পর আসল গল্পে চলে যান লেখক । উপন্যাসের মূল চরিত্র গোবিন্দ প্যাটেল তার জীবনের কাহিনী বলে যেতে থাকে । গোবি্নদ একজন সাধারণ মানুষ, চুপচাপ থাকতে পছন্দ করে । কিন্তু সাধারণ মানুষ হলেও তার লক্ষ্যা কিন্তু সাধারণ নয় । তার স্বপ্ন হচ্ছে অনেক বড় ব্যবসায়ী হওয়া । তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হল অমি আর ইশান । গোবিন্দ সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে বিশ্বাস-অবিশ্বাস কোনটাই ঠিকমত করতে পারে না । গোবিন্দ তার দুই বন্ধুর সাথে মিলে ক্রিকেট সরঞ্জামের ব্যববসা শুরু করে । এর পাশাপাশি সে ইশানের বোন বিদ্যাকে অংক ও শেখাতো । একপর্যায়ে সে আর বিদ্যা প্রেমে পড়ে যায় । গণিত ও ব্যবসা বুদ্ধি ভালো বলে হিসাব কিতাবএর সব দায়িত্ব ছিল গোবিন্দের ঘাড়েই । গোবিন্দের অতি কাছের একজন বন্ধু ইশান, ডাকনাম “ইশ” । ইশের গুণপনার মাঝে আছে- দেশপ্রেমী, ক্রিকেটপাগল, গুজরাটের তত্র এলাকার দুঁদে ক্রিকেটার ইত্যাদি ইত্যাদি । তার আগ্রহেই তাদের ক্রিকেট সরঞ্জামের দোকানের নাম হয় টিম ইন্ডিয়া ক্রিকেট শপ । ইশ শুধু খেলতই না, সে ক্রিকেট ক্যাম্পও করাত । ইশ একপর্যায়ে আলী নামের একজন প্রতিভাবান ক্রিকেটারকে আবিস্কার করে বসে সে । আরেকজন হল অমি । স্থানীয় পুরোহিতের ছেলে, তার পরিবার এলাকায় অনেক মানুষের ভক্তি-শ্রদ্ধা পায় । অমিদের পরিবার কঠিন ব্রাহ্মণ পরিবার । জাত-পাত ইত্যাদি মেনে চলে তারা । সে অনেকটা ভোঁতা ধরণের মানুষ । তার মাঝে বৈচিত্র্য ও স্বপ্ন কোনটাই নেই । সে তার উগ্র বিশ্বাস নিয়ে মাঝেমাঝেই দ্বিধায় ভোগে । বিদ্যা হল ইশানের ছোট বোন, মধ্যবিত্ত পরিবারের বিদ্রোহী মেয়ে । মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার জন্য গোবিন্দের কাছে অংক পড়তে গিয়ে তার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে । সম্পর্ক নানা বাঁক নেয় কাহিনী এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে । আলি- মুসলমান ছেলে, ইশান তাকে ক্রিকেটের ট্রেনিং দেয় । বিদ্ধংসী ব্যাটিং করার ক্ষমতা নিয়েই জন্মেছে সে, উপন্যাসে তার ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিশেষত শেষ দিকে । গুজরাটের দাঙ্গায় আলিকে রক্ষার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করে ইশান আর গোবিন্দ । অমির উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিট্টু মামার সাথে সরাসরি লড়াইয়ে চলে যায় তিন বন্ধু । গোবিন্দ, হর্ষ, ঈশান পুরনো মন্দিরের পাশে দোকান খুলে ফেলে । মন্দিরে লোকজনের আনাগোনা ভালোই থাকায় তাদের বিক্রিবাট্টা দিনে দিনে বাড়তে শুরু করে । ধীরে ধীরে শুধু ক্রিকেটের জিনিসপাতি ছাড়াও আরো নানা জিনিস যেমন খাতা-কলম ইত্যাদি বেঁচাও শুরু করল তারা । ইন্ডিয়া ভালো খেললে তাদের বিক্রিও ভাল হয় । ইন্ডিয়ার খেলা, গুজরাটের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি, সাম্প্রদায়িক হিন্দু নেতাদের আস্ফালন, সাধারণ ছেলেপিলেদের ক্রিকেটম্যানিয়ার সাথে উপন্যাসের পাত্র-পাত্রীদের নানা ঘটনা মিশিয়ে লেখা “থ্রি মিস্টেকস অব মাই লাইফ” বেশিরভাগ মানুষের কাছে উপাদেয়ই লাগবে বলে মনে হয় আমার । দাঙ্গায় আলি হাতে মারাত্নক আঘাত পায় । আলিকে সুস্থ করার নিমিত্তে বিদ্যার কারণে ইশান-গোবিন্দের মাঝে কেটে যাওয়া সুর আবার ফিরে আসে । অনুবাদ বই পড়তে আমার এমনিতে কেমন জানি কাঠ কাঠ লাগে । কিন্তু এই বইটা পড়তে ভালোই লাগল । সমাপ্তি আরো ভালো লেগেছে ।পাঠক আপনাদের কাছেও বইটি বেশ ভাল লআগার মত হবে।তাই মিস না করে পড়ে ফেলুন।

      By Rashel

      19 Jan 2017 10:52 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      #রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগীতা। বই- থৃ মিসটেক অফ মাই লাইফ। লেখক- চেতন ভগত। অনুবাদ- ইশতিয়াক আহমেদ। ধরন- সামাজিক, রোমান্টিক। পৃষ্ঠা- ২২৪। প্রধান চরিত্র- ইশান, গোবিন্দ, অমি, আলী, বিদ্যা, বিট্টুমামা, পারেখজি, নাসির আলম, ফ্রেড লি। সিঙ্গাপুরে প্রবাসী লেখক চেতন ভগত হঠাৎ একদিন একটি ই মেইল পান। আহমেদাবাদ থেকে গোবিন্দ প্যাটেল নামের এক তরুণ ব্যবসায়ী তাকে ই মেইলে জানায় সে জীবনে তিনটি বড় ভুল করেছে। এবং এই ভুলের মাশুল স্বরুপ সে ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছে। কৌতুহলী হয়ে তিনি ভারতে গিয়ে হাসঁপাতালে গোবিন্দর সাথে যোগাযোগ করেন। মানসিকভাবে ভঙ্গুর গোবিন্দ অবশেষে খুলে বলে তার জীবন কাহিনী যেখানে লুকিয়ে থাকে তার তিনটি বড় ভুল যা তাকে আত্মহত্যার দিকে প্ররোচিত করে তুলেছিলো। ইশান, গোবিন্দ ও অমি আহমেদাবাদের মধ্যবৃত্ত পরিবারের ছেলে। ছেলেবেলা থেকেই এরা তিনজন ঘনিষ্ট বন্ধু। ইশানের বাবা মার ইচ্ছা ছিলো ছেলে আর্মি অফিসার হবে। কিন্তু আর্মি থেকে পালিয়ে চলে আসে ইশান। তার স্বপ্ন সাধনা শুধুমাত্র ক্রিকেট নিয়ে। জেলা স্কুল পর্যায়ে ভালো খেলা ইশানের স্বপ্ন ছিলো জাতীয় টিম কিন্তু তার সেই স্বপ্ন পূরন হয়না। গোবিন্দর বাবা মারা গেছে ছোটবেলাতে। তার মা কোনোমতে ধূকে ধূকে তাকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। গোবিন্দ অঙ্কে খুব ভালো। সে সবকিছু অঙ্কের দৃষ্টিতে বিচার করে। গোটা এলাকায় সেই একমাত্র ভালো অঙ্কের টিচার। ফলে একটা সময় আগের গরিবী হাল থেকে কিছুটা উন্নতি হয় গোবিন্দদের। অমির পরিবার পুরোহিত পরিবার। তারা এলাকার বড় মন্দিরটার দেখাশোনা করে। কিন্তু অমির পুরোহিত হবার ইচ্ছা মোটেও নেই। তিনবন্ধুর মধ্যে সেই নির্বোধ প্রকৃতির। গোবিন্দর সবসময় ইচ্ছা ছিলো ব্যবসা করার। কিন্তু একা কিছু শুরু করার সামর্থ্য তার নেই। দুই বন্ধুকে রাজি করিয়ে সে ব্যবসা শুরু করে। অমির কল্যানে মন্দির সংলগ্ন দোকান স্বল্প ভাড়ায় পায় ওরা। তারা ক্রীড়া সামগ্রী বিক্রীর ব্যবসা শুরু করে। পাশাপাশি গোবিন্দ টিউশনি চালিয়ে যায় এবং ইশান শুরু করে ক্রিকেট কোচিং। ফলে ব্যবসার কাটতি তৈরী হয়। ক্রিকেট কোচিং করানোর সময়ই ইশান শুনতে পায় আলীর নাম। আলী বারো বছর বয়সী ছেলে। তাকে সমবয়সী ছেলেরা পাগলা আলী বলে ডাকে। কারন এই ছেলে ক্রিকেটে ছক্কা ছাড়া অন্যকোনো শর্টই খেলেনা। খোদ ইশানের টানা চারবলেই চার ছক্কা মেরে তাকে তাজ্জব করে দেয় আলী। ইশান সাথে সাথে সিদ্ধান্ত নেয় এই ছেলেকে সে প্রশিক্ষন দিয়ে একদিন জাতীয় টিমের সেরা ক্রিকেটার বানাবে। অমির মামা বিট্টুমামা স্থানীয় পার্টির বড় সদস্য। যেহেতু তিনি ওদের অনেক ছাড় দিয়েছেন তাই তার মন রক্ষা করতেই মাঝেমাঝে অমি, ইশান ও গোবিন্দকে বিট্টুমামার পার্টিতে যেতে হয়। গোবিন্দ অজ্ঞেয়বাদী। তারপরও সে যায় অনুরোধের কারনে। বিট্টুমামা পারেখজি নামের এক লোকের অধীনের কর্মী। এরা কট্টর ডানপন্থী। অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ নিয়ে যে ঝামেলা পাকাচ্ছে। ওদিকে আলীর বাবা নাসির আলম আবার সেক্যুলার পার্টির সদস্য। যারফলে আলীর বাবাকে এক অর্থে শত্রুই মনে করে বিট্টুমামা। মানুষের প্রতিটা কাজের পিছনেই থাকে স্বপ্ন। কিন্তু গোবিন্দর স্বপ্ন একবার ভেঙে যায় ভূমিকম্পে। তাদের ব্যবসায় লোকসান হয়। ইশের বোন বিদ্যাকে পড়াতে গিয়ে তার যৌনতার জালে ফেসে যায় গোবিন্দ। মড়ার ওপর খাড়ার ঘা মারতেই হাজির হয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা যা কেড়ে নিতে আসে ক্রিকেট প্রতিভা আলীর জীবন। আর সেখান থেকেই চিরতরে পাল্টে যায় তিনবন্ধুর অবস্থান। চেতন ভগতের অন্যতম মাষ্টারপিস এই উপন্যাস। অসাধারন এই উপন্যাসে উঠে এসেছে তিন মধ্যবৃত্ত পরিবারের ছেলে স্বপ্ন ও স্বপ্ন পূরণের সাধনার কথা। আলী এবং ইশান দুই ধর্মের হওয়া সত্তেও যে নিরেট ভালোবাসার বন্ধনের তারা আবদ্ধ হয় মন ছুয়ে যাবার মতো। আলীর জন্য যেভাবে ইশান খাটে তা কেবল বাবা মাই খাটতে পারে। ওদিকে অমিকে যতোটা নির্বোধ মনে হয় শেষে দেখা যায় ততোটা নির্বোধ সে নয়। বন্ধুদের প্রতি ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে সে বিরাট একটা জিনিস উৎসর্গ করে দেয়। পরিশেষে কি হয় তিনবন্ধুর? কি হয় বিদ্যার ও আলীর? জানতে হলে পড়তে হবে উপন্যাসটা। একটা দ্বিধা রয়ে যাচ্ছে এই ভেবে যে উপন্যাসটা সম্ভবত সত্য কোনো ঘটনা নিয়েই লেখা। পুরোটা উত্তম পুরুষে গোবিন্দর নিজের ভাষায় লেখা হয়েছে। আর উপন্যাসের তিনটি সাধারন অংশে লুকিয়ে আছে তার জীবনের তিন বড় ভুল যা তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে। তবে শেষটায় সে কি মারা যায় না বেচে থাকে তা না পড়লে জানতে পারবেন না। সহয বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে। অনুবাদের ব্যাপারেও বলা যায় প্রথমশ্রেণীর অনুবাদ হয়েছে। অনুবাদকের অবশ্যই একটা ধন্যবাদ প্রাপ্য এই বইটা অনুবাদ করায়। সবাইকে পড়ার আহবান রইলো। রেটিং- ৫.০০/৫.০০

      By Rohan Hasan

      04 Jan 2020 09:56 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      This is an another amazing book from chetan Bhagat, one of my favourite writer. Here is a story full of friendship. If you trust in friendship, then you must read this book.There are 3 friends life described in this book. It is also an cricket based book. cricket boy Ali Is also an important character of the book.I will give it 5 star

      By Mrityunjoy Biswas

      19 Oct 2019 12:15 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      নিজেদের ভাগ্যের চাকা পরিবর্তনের লক্ষ্য অবশেষ ঈশান, একজন পলাতক মিলিটারি, এবং ওমি, পুরোহিত এর ছেলে, সম্মত হল বন্ধু গোভিন্দ এর সাথে এলাকায় ক্রিকেট ব্যবসা শুরু করার লক্ষ্য। ঈশানের ক্রিকেট দক্ষতা এবং গোভিন্দ এর ম্যাথ টিউশন দিয়ে খুব অল্প সময়ের মাঝেই দ্বারিয়ে যায় তাদের ব্যবসা। কিন্তু উচ্চাভিলাসি গোভিন্দ বুঝতে পারে এখানে থেকে উপরে ওঠা সম্ভব হবে না, তাই সে ব্যবসা সম্প্রসারনের সিদ্ধান্ত নে, এবং সেখানেই সে জীবনের বড় ভূলটি করে বসে। বইটির অন্যতম চরিত্র হল ১৩ বছরের একটি মুসলিম ছেলে, আলি, জন্মগত ভাবেই হাইপার-রিফ্লেক্স এর গুনাবলি বিশিষ্ট থাকায় অল্প বয়সের আলির ক্রিকেট দক্ষতা ঈশানকে এতটাই মুগ্ধ করে সে বিনামূল্যে তার কোচিং এ তাকে ভর্তি করিয়ে নেন এবং জাতীয় দলের ক্রিকেটার বানানোর চেষ্টায় নামেন। আহমেদাবাদে হিন্দু-মুসলিম বৈষম্য এবং রাজনৈতিক ব্যবহার ছিল নিত্য দিনের বিষয় তাই আলি মুসলিম এবং তার পিতা একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ত্ব হবার কারনে ঈশানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথটা কঠিন হয়ে পরে। অন্যদিকে রাজনৈতিক চরিত্রের মধ্য অন্যতম হল বিট্টু মামা, ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বিট্টু মামার সাথে প্রতিদিন ই তাদের যোগাযোগ থাকত। হিন্দু পন্থী রাজনীতিবিদ হওয়ায় সমবসময়ই মুসলিম রাজনীতিবিদদের হটিয়ে নিজ দলের ক্ষমতায় আসাই ছিল তার প্রধান উদ্দেশ্য। এভাবেই কোন এক কারনে জেগে উঠে তার প্রতিশোধ নেবার তেষ্টা, শেষ করতে হবে মুসলিমদের, দল নিয়ে রওনা দেয় মুসলিম নেতাদের বাড়িতে, যার মধ্য ছোট্ট আলিও রয়েছে। লেখক বইটিতে তিনটি বিষয়ের উপরেই প্রধানত গুরুত্ত্ব দিয়েছেন, বিজনেস, ক্রিকেট এবং পলিটিক্স। তবে ঈশানের বোন ভিদ্যা এর সাথে গোভিন্দ এর সম্পর্কের সামান্য রোমান্টিকতার স্বাদ ও লেখক রেখেছেন। ম্যাথ টিউটর থেকে প্রেমিক হয়ে যাওয়াটা কিভাবে ঈশানের পরিবার নেবে সেটা নিয়েও গোভিন্দ এর ভীষণ চিন্তা, প্রিয় মানুষটির প্রতি ভালোলাগাকে প্রধান্য দিবে নাকি বন্ধুর বিশ্বাসের মান রাখবে! বাকিটা জানতে হলে পড়ে দেখতে হবে বইটি। হ্যাপি রিডিং।

      By Shovon Saha

      18 Dec 2017 07:10 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      Really awesome!

      By sohel rana

      29 Jul 2017 10:33 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      গল্প অসাধারন, এই বিষয়ে বলার কিছুই নাই , যেটা বলার সেটা হচ্ছে প্রকাশনার কাজ । বাতিঘর প্রকাশনি যেটা খুবি ভালভাবে করেছে ।

      By Jannatul Naym Pieal

      15 Apr 2014 08:34 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      চেতন ভগতের তৃতীয় উপন্যাস 'থ্রি মিসটেকস অফ মাই লাইফ', এটাকেও ভিন্নধর্মী উপন্যাস হিসেবেই অভিহিত করেছেন লেখক। তবে এক অর্থে একে সামাজিক উপন্যাসও বলা চলে। আক্ষরিক অর্থেই এটা একটি উৎকৃষ্ট সামাজিক উপন্যাস। সমাজের প্রায় সকল দিকই উঠে এসেছে এই উপন্যাসে। মূলত তিন যুবক বন্ধু আর এক মুসলমান কিশোরকে নিয়ে আবর্তিত হয়েছে কাহিনী যা বর্ণিত হয়েছে তিন বন্ধুর একজন, গোবিন্দের জবানিতে। নিজের জীবনের কাহিনী আর তার জীবনে করা তিনটি ভুলের কথা, যা তার জীবনকে এমনভাবে তছনছ করে দেয় যে সে এক পর্যায়ে আত্মহত্যা করতে উদ্যত হয় --- তা নিয়েই 'থ্রি মিসটেকস অফ মাই লাইফ'। কাহিনীতে ২০০০-২০০২ এই সময়কার কথা বলা হয়েছে, পটভূমি ভারতের আহমেদাবাদ। ইশান, অমি আর গোবিন্দ তিন বন্ধু। ক্রিকেট তিনজনেরই অতি প্রিয়। ইশানের তো ধ্যান জ্ঞান সবই ক্রিকেট। শহরের চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার ছিল সে একসময়। অমির বাবা পুরোহিত, তাই ধর্ম নিয়ে অমির বাড়াবাড়ি একটু বেশিই তবে সে উত্তরাধিকার সূত্রে পুরোহিত হতে নারাজ। আর গোবিন্দ যে গোটা কাহিনীর মুখ্য চরিত্র, সে তিন বন্ধুর মধ্যে সবচেয়ে মেধাবি ও সবচেয়ে গরিব। গণিতে ভীষণ আগ্রহ ও দক্ষরা তার। তবু ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে রাজি হয়নি সে। আহমেদাবাদের মত শহরেই ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসাকে পুঁজি করে, বাকি দুই বন্ধুর সাথে ব্যবসা শুরু করে সে। তাদের দোকানের মাধ্যমে ইশান ক্রিকেটের কোচিংও করাতে শুরু করে। এই কোচিং করাতে গিয়েই আলীর সন্ধান পায় সে আর নানা ঘটনাপ্রবাহের মাধ্যমে আলীকে উচ্চতর ক্রিকেট শিক্ষা দিতে তিন বন্ধু অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত যায়। ইশানের স্বপ্ন আলীকে টিম ইন্ডিয়ায় খেলতে দেখবে। ওদিকে অমির মামা, যার দোকানে ব্যবসা খুলে বসেছে ওরা, সে ধর্মান্ধ রাজনীতিবিদ। তার কথায় মাঝেমধ্যে ধর্মভিত্তিক রাজনীতিতে যোগ দিতে বাধ্য হয় তারা। আর গোবিন্দ বাড়তি আয়ের জন্য টিউশনি করে। তার ছাত্রীদের মধ্যে ইশানের বোন বিদ্যা একজন। বিদ্যার সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে সে। এইভাবে নির্দিষ্ট গতিতে চলতে থাকা কাহিনী ২০০২ সালের প্রেক্ষাপটে এসে নতুন মাত্রা লাভ করে। ২৮ ফেব্রুয়ারি গোধরায় একটি ট্রেনে মুসলমানরা হামলা করলে মারা যায় ৫৯ জন। শুরু হয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। আলীর বাবা মুসলমান বামপন্থি রাজনিতিবিদ হওয়ায় তার বাবা-মাকে হত্যা করে অমির মামা। এবার আসে আলীকেও হত্যা করতে। শেষ পর্যন্ত আলীকে বাঁচাতে কি নিজ ধর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েও সফল হবে ওরা তিন বন্ধু? বিদ্যার সাথে সম্পর্কে জড়ানোর কথা জেনে ইশান কি করবে গোবিন্দের সাথে? আর গোবিন্দের জীবনের সেই তিনটি বিশাল ভুলই বা কি কি? সেই তিন ভুলের জন্য কি জীবন দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে গোবিন্দকে না এক সময় সব ঠিক হয়ে যাবে? এই নিয়েই 'থ্রি মিসটেকস অফ মাই লাইফ'। এই উপন্যাসে একই সাথে উঠে এসেছে ক্রিকেট, ধর্ম, গণিত, ব্যবসা, রাজনীতি, প্রেম, যৌনতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, মানবীয় সুখ-দুঃখ, মান-অভিমান সবকিছু। অনেক কট্টর সমালোচক বলেছেন এটা নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে লেখক করেছেন বইয়ের কাটতি বাড়াতে। আমি বলব এর সবই মিথ্যা। লেখক যেই সময়ের কথা তুলে ধরতে চেয়েছেন, সেই সময়ের প্রতি যেমন ছিলেন শ্রদ্ধাশীল তেমনি সঠিক গল্পটা বলার ক্ষেত্রেও ছিলেন সচেতন। তাই ২০০০-২০০২ সময়কালের মধ্যে আহমেদাবাদ-গুজরাটকে কেন্দ্র করে যেসব উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে, স্বাভাবিকভাবেই সেগুলো উপন্যাসে স্থান পেয়েছে। এবং উপন্যাসের চরিত্রদের সেইসব সত্যিকারের ঘটনার সম্মুখীন করে লেখক কাহিনীকে বাস্তবসম্মত করারই চেষ্টা করেছেন। আমি মনে করি না এক সাথে অনেক বিষয়ের সন্নিবেশনে মূল কাহিনীতে এতটুকু নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বাস্তবের জীবনে যদি মাল্টি-ট্র্যাক থাকে, সেই জীবনের প্রতিনিধিত্বকারী উপন্যাসেও তো তা-ই হওয়া উচিৎ। অনেকে 'থ্রি মিসটেকস অফ মাই লাইফ'কে বলিউডি মশলার উপন্যাস বলেছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে বলব, এই উপন্যাসের কাহিনী মোটেই তা না বরং পুরোপুরি বাস্তবসম্মত। ভারতের মত দেশে বসে হিন্দু ও মুসলমান, উভয় ধর্মাবলম্বিদের ধর্মান্ধতা ও তার পরিণতির কথা এতটা সাহসিকতার সাথে তুলে ধরা চাট্টিখানি কাজ নয়। ঐতিহাসিকভাবে ২০০০-২০০২ সময়কালের ঘটনাপ্রবাহকে সঠিকভাবে বিন্যাসের মাধ্যমে কাহিনীতে ব্যবহার করাও যথেষ্ট শ্রমসাপেক্ষ কাজ। কিছু কিছু জায়গায় সঠিক ঘটনার থেকে সামান্য হলেও সরে এসেছেন লেখক। তারপরও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সঠিক ইতিহাসেরই চিত্রায়ন করেছেন উপন্যাসে। আর তার সমান্তরালে যে গল্পটি বলেছেন তা নিয়ে আর কি বলব! জাস্ট অসাধারণ! চেতন ভগতের লেখনীর মৌলিক ফর্মুলা অনুযায়ী এই উপন্যাসেও একটি 'হ্যাপি এন্ডিং' হয়েছে যা সিংহভাগ পাঠককেই মানসিকভাবে তৃপ্ত করবে। কিন্তু শুভ সমাপ্তি হয়েছে বলেই যে এটা বলিউডি টাইপ উপন্যাস, এমন দাবি কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়।

      By Not Buying Anything from Rokomari

      14 May 2014 04:42 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      চেতন ভগতকে ভারতের ইংরেজিভাষী লেখকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় বলে ঘোষণা করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। আইআইটি দিল্লীতে স্নাতক এবং আইআইএম আহমেদাবাদে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা এই তরুণ লেখক অল্প সময়েই ভারতে জনপ্রিয় লেখকে পরিণত হয়েছেন। ‘ফাইভ পয়েন্ট সামওয়ান’ এবং ‘ওয়ান নাইট আট দ্য কল সেন্টার’ নামক দুটি বেস্টসেলারের পর যখন তিনি ২০০৮ সালে ‘থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ’ প্রকাশ করেন তখন ভারতজুড়ে ঝড় ওঠে। এরপর আরো তিনটি বই প্রকাশ করেছেন। তাছাড়া নিয়মিত বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লিখছেন তরুণদের নিয়ে, দেশজুড়ে দিচ্ছেন বক্তৃতা। বর্তমানে লেখকের চেয়েও তাঁর ‘Youth Icon’ ইমেজটাই তাঁকে বেশি পরিচিতি দিচ্ছে। চেতন ভগত টিনএজার, তরুণ এবং যুবকদের জন্য লিখে থাকেন। তিনি মূলত জনপ্রিয় ধারার লেখক। সমালোচকেরা উপন্যাসে তাঁর ব্যবহৃত ভাষা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। তবে সমালোচকদের কাছে যে কারণে তিনি অপ্রিয়, সাধারণ পাঠকের কাছে ঠিক কারণেই জনপ্রিয়। অত্যন্ত সরল ভাষায় তিনি তাঁর গল্প বর্ণনা করেন, যাতে ভারতের যে কোনো স্কুল পড়ুয়া পাঠকের তা বোধগম্য হয়। ‘থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ’এ তিনি সেই ধারা বজায় রেখেছেন। ইশতিয়াক আহমেদ কর্তৃক বাংলা অনুদিত এই বইটি বাতিঘর প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে। ইশতিয়াক আহমেদের অনুবাদ-প্রয়াসকে আমি সাধুবাদ জানাই। তিনি মূল বইয়ের মেজাজ ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন এবং অনেকাংশেই সফল হয়েছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মনে হয়েছে অনুবাদ অনেক বেশি আনুষ্ঠানিক রূপ ধারণ করেছে। এইসব ক্ষেত্রে আরেকটু প্রাঞ্জলতা ধরে রাখার চেষ্টা করলে অনুবাদের সার্থকতা আরো বাড়ত। গল্পের পটভূমি আহমেদাবাদের পুরনো শহর। আইআইএম আহমেদাবাদে পড়াশুনার সুবাদে লেখকের এই শহরের অলিগলি, রীতিনীতি, আচার-ব্যবহারের সাথে খুব ভালোভাবেই পরিচয় ছিল। সেই পরিচয়টুকুর পুরোটাই তিনি এই ‘থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ’ উপন্যাসে ব্যবহার করেছেন। তাঁর দেখার চোখ পরিষ্কার। তাঁর উপন্যাসের তিনি মাধ্যমে মূলত মধ্যবিত্ত তারুণ্যকেই বেশি তুলে ধরতে চেয়েছেন। ভারতের মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের আশা-আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন, হতাশা, সম্ভাবনা ইত্যাদি খুব কাছ থেকে দেখেছেন চেতন ভগত। এগুলো নিয়ে তাঁর নিজস্ব দর্শনও আছে। সেগুলোকেই তিনি জনপ্রিয় উপন্যাসের মোড়কে বাজারজাত করেছেন। আহমেদাবাদ শহরের বর্ণনা খুব বস্তুনিষ্ঠ-ভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন লেখক। এই শহরের মানুষের ব্যবসায়িক মানসিকতা মডেল হিশেবে পুরো ভারতের সামনে তুলে ধরতে চেয়েছেন। ‘থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ’ এ বেশ কয়েকটি চরিত্র মূল ভূমিকা পালন করেছে। তবে মূলত এটি তিন বন্ধুর গল্প। গোবিন্দ নামক আহমেদাবাদের নিম্ন-মধ্যবিত্ত তরুণের জবানিতে পুরো উপন্যাস বর্ণিত হয়েছে। গোবিন্দ কঠোর যুক্তিবাদী এবং ব্যবসায়িক মানসিকতার যুবক। সে তার জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে খুব পরিষ্কার ধারণা রাখে। গোবিন্দের চরিত্রের মধ্য দিয়ে চেতন ভগত ভারতের তরুণ ও যুবকদের জীবনের লক্ষ্য এবং কর্মপন্থা নির্ধারণের প্রেরণা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। গোবিন্দের দুই বন্ধু ইশান এবং অমি তার ব্যবসায়িক পার্টনার। ইশান ক্রিকেট পাগল, ক্রিকেটের জন্য সবকিছুই করতে রাজি সে। অপরদিকে অমি জীবন সম্পর্কে উদাসীন, পুরোহিতের ছেলে অমির ধর্ম নিয়ে কিছু বাড়াবাড়ি ছাড়া জীবন সম্পর্কে কোনো দর্শনের দেখা আমরা পাই না; বন্ধুত্বই তার জন্য সব। এই তিনজন ছাড়াও উপন্যাসে আরো দু’টি চরিত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছ- ইশানের ছোট বোন বিদ্যা এবং অমির বিট্টু মামা। বিদ্যা ভারতের সেই সব টিনএজারের একজন যে নিজের বর্তমান নিয়ে হতাশ এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভ্রান্ত। তার নিজস্ব পছন্দ এবং পরিবারের ইচ্ছার বিরোধের মাঝে পড়ে গিয়ে সে হতবিহবল। আর বিট্টু মামা ভারতের সাম্প্রদায়িক এক রাজনৈতিক দলে মাঝারি মানের নেতা। এই উপন্যাসে ভারতের রাজনীতি সাম্প্রদায়িক অংশটুকু চিত্রায়নে তিনি ব্যবহৃত হয়েছেন। পাঠকপ্রিয় উপন্যাস হবার জন্য যেসব গুণাগুণ থাকা প্রয়োজন, ‘থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ’ এ তার সবগুলোই আছে। ভারতে আর্থসামাজিক অবস্থায় সেখানকার তরুণেরা যেসব বিষয় নিয়ে বেশি মাতামাতি করে, সেগুলোই একসাথে মিশিয়ে এই উপন্যাসের জট পাকিয়েছেন চেতন ভগত। খুবই চাতুর্যের সাথে ধর্ম, রাজনীতি, ক্রিকেট, ব্যবসা এবং প্রেম- একসাথে মিশিয়ে একটি খিচুড়ি বানিয়েছেন লেখক এবং মজার বিষয়, ভারতের মানুষ সেটা গ্রহণও করেছে আনন্দের সাথে। আরো ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো-লেখক পটভূমি হিশেবে বেছে নিয়েছেন আহমেদাবাদকে, যা একটি মেট্রোপলিটন এবং ছোট শহরের বৈশিষ্ট্য একই সাথে ধারণ করে। স্বাভাবিকভাবেই, বড় এবং ছোট শহরের তরুণরা এই উপন্যাসের চরিত্রগুলোর সাথে নিজের সম্পর্ক খুঁজে নিতে পেরেছে। বিষয়গুলো নিয়ে একটু বিস্তারিত আলোচনা করা দরকার। ক্রিকেট ভারতে সবচেয়ে বড় ধর্ম; এবং সবচেয়ে বড় ব্যবসা। ক্রিকেটের জন্য ভারতীয়দের উন্মাদনা বাকি সব কিছুকেই ফিকে করে দিয়েছে। এটি স্রেফ একটি খেলাই নয়, অনেকে ভারতীয়র জীবন ধারণের প্রধান অবলম্বন। Eat cricket, Drink cricket- নামক শ্লোগান ইতোমধ্যেই ভারতীয় সমাজে চালু হয়ে গেছে। এর কতোটা খেলার প্রতি ভালোবাসা, আর কতোটা ক্রিকেটকে সম্বল করে বেড়ে ওঠা পুঁজিপতিদের বইয়ে দেয়া কৃত্রিম হাওয়া- তা বিতর্কের বিষয়। ক্রিকেটের সাথে ভারতীয় তরুণদের যে আবেগ জড়িয়ে আছে, তা ব্যবহার করে বইয়ের কাটতি বাড়ানোর প্রচেষ্টা ‘থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ’ উপন্যাসে দেখা যায়। ভারতীয় সমাজে ক্রিকেটের সাথে ব্যবসার যে সম্মিলন বাজারে উপস্থিত, তার চিত্রায়ন আমরা পাই তিন বন্ধুর ক্রিকেট নিয়ে ব্যবসায় নেমে পড়ার মধ্যে। গোবিন্দ খুব ভালোভাবেই বুঝেছে, কীভাবে ক্রিকেটের প্রতি আবেগকে ব্যবহার করে ব্যবসাকে চাঙা করে তুলতে হয়। চেতন ভগতও খুব কৌশলের সাথে ক্রিকেটাবেগকে তাঁর উপন্যাসের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে ব্যবহার করেছেন। ধর্ম এবং রাজনীতি- উপমহাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থায় অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করে। ভারতের বর্তমান সামাজিক অবস্থায় কেউই রাজনীতির আওতার বাইরে নয় (যা আমাদের দেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য)। তরুণ-যুবকদের দেশ-চিন্তায় ধর্ম ও রাজনীতির ঢুকে পড়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। দেশকে পাল্টে দেয়ার স্বপ্ন দেখা সব ভারতীয় তরুণ-যুবকদের জন্য চিন্তার খোরাক এনে দিয়েছে ‘থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ’। অবশ্য তরুণ-যুবাদের চিন্তাভাবনা থেকেই এই উপন্যাসের তর্ক-বিতর্কগুলো উঠে এসেছে। বলা চলে, এসব বিতর্ক তাদের রোজকার আড্ডার বিষয়। তাই তরুণরা খুব সহজেই উপন্যাসের সাথে নিজের মতাদর্শিক অবস্থান যাচাই করতে পেরেছে। এই উপন্যাসে আবশ্যিক উপাদান হিশেবে আছে সাম্প্রদায়িকতা। সাম্প্রদায়িকতা ভারতের সামাজিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ; পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতি দেশ হিশেবে ভবিষ্যতে পৃথিবীর মানচিত্রে প্রধান খেলোয়াড় হতে চাওয়া ভারতের জন্য মাথাব্যথার বিষয়। চেতন ভগত বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে না গিয়ে ভারতীয় মধ্যবিত্তের জীবনযাত্রায় সাম্প্রদায়িকতার কুফল তরুণদের মনে ঢুকিয়ে দিতে চেয়েছেন। কিন্তু গোঁড়ার সমস্যা জিইয়ে রেখে আগার দিকে নজর দিলে যে আখের কোনো সুফল পাওয়া যাবে না, তা লেখক আমাদের বলেন না। ‘থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ’ উপন্যাসের একটি বিষয় আমার আমার ভালো লেগেছে; সেটা হলো- টিপিক্যাল ভারতীয় লেখকদের মতো সংখ্যালঘু মুসলিমদের স্টেরিও-টাইপিং থেকে বিরত ছিলেন চেতন ভগত। সব জনপ্রিয় সামাজিক উপন্যাসের মতোই এই উপন্যাসেও প্রেমকাহিনী থাকতে হতো, তাই আছে! তবে প্রেমের ব্যাপারটি এই উপন্যাসে যেভাবে এসেছে, তা খুবই অনুমানযোগ্য। গোবিন্দ তার বন্ধু ইশানের ছোট বোন বিদ্যাকে গণিত পড়াতে যাওয়ার ঘটনা জানামাত্রই যেকোনো পাঠক ধারণা করতে পারবেন যে, এদের মধ্যে একটি রোমান্টিক সম্পর্ক গড়ে উঠবে। এক্ষেত্রে চেতন ভগতকে খুবই সাধারণ লেখক বলে মনে হয়েছে। বিদ্যা ও গোবিন্দের মধ্যকার কথোপকথন কখনও কখনও বিরক্তির জোগান দিয়েছে। মনে হয়েছে, লেখক অযথাই একটি রোমান্টিক সম্পর্ক ব্যবহার করে পাঠককে সুড়সুড়ি দিতে চেয়েছেন। মূল কাহিনীর সাথেও এই উপকাহিনীর খুব একটা সম্পর্ক নেই, ক্লাইম্যাক্সে একটি মোচড় ছাড়া। ‘থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ’ বন্ধুত্বের গল্প। হিসেবী গোবিন্দ বন্ধু ইশানের জন্য জমানো টাকা খরচ করে বিদেশে যেতে রাজি হয়, ব্যক্তিগত অবস্থা ভুলে গিয়ে আলীর অপারেশনের জন্য টাকা জমায়। বন্ধু অন্তঃ-প্রাণ অমি সবসময়ই বন্ধুদের হাজির থাকে, এমনকি বন্ধুদের জন্য আত্মত্যাগ করে নিজের জীবন। ইশান ক্রিকেট পাগল হলেও বন্ধুদের প্রতি তাঁরও অবদান কম নয়। বাকি সবকিছু বাদ দিলেও, এই উপন্যাসটি বন্ধুত্বের গল্প জানার জন্য হলেও পড়া যায়। এই উপন্যাসের আরেকটু গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো- এখানে সত্যিকারের টাইমলাইন ব্যবহার করে গল্প এগিয়ে নেয়া হয়েছে। ২০০১ সালে গুজরাটের ভূমিকম্প, ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচ, টুইন টাওয়ারে হামলা, গোধরা স্টেশনে ট্রেনে অগ্নিসংযোগ, গুজরাটের দাঙ্গা ইত্যাদি ঐতিহাসিক সত্যগুলো চেতন ভগত গল্পের টার্নিং পয়েন্ট হিশেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন। কিছুটা যে সফল হয়েছেন তা বলা যায়। নানা সত্য ঘটনার উল্লেখের সাথে সাথে গল্পের মোচড়গুলো পুরো গল্পটিকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে। চেতন ভগত ভারতীয় তরুণদের নাড়ির স্পন্দন খুব ভালোভাবে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। একে উপজীব্য করেই লিখে গেছেন একের পর এক উপন্যাস এবং অর্জন করেছেন জনপ্রিয়তা। সমকালীন বাজারে ভালো মূল্য পেলেও চিরকালীন সাহিত্যের ময়দানে ‘থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ’ জায়গা পাবে না। তবে চেতন ভগত সম্ভবত মহাকালকে বিবেচনায় নিয়ে গল্প লিখেন না। বর্তমানকে ধারণ করে বর্তমানের জন্যই তাঁর যাবতীয় লেখালিখি। সেদিক থেকে দেখলে ‘থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ’কে খুব একটা খারাপ প্রয়াস বলা যাবে না। ভারতে বর্তমানে জনপ্রিয় উপন্যাস লেখার অন্যতম লক্ষ্য থাকে বইয়ের বলিউডি আডাপ্টেশন। চেতন ভগতও সেই প্রচলিত পথেই পা বাড়িয়েছেন। ফিল্মের পর্দায় যাতে ভালোভাবে মানায় সেজন্য যথাসম্ভব নাটকীয়তার যোগান দেয়া হয়েছে। কাটতি বাড়ানোর জন্য যা প্রয়োজন তার সব কিছুই ব্যবহার করেছেন চেতন ভগত। উপমাহাদেশীয় সাহিত্যের প্রেক্ষাপটে তো বটেই, এমনকি ভারতীয় সাহিত্যের প্রেক্ষাপটেও ‘থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ’ খুবই সাধারণ মানের একটি উপন্যাস।

      By Jahan-E-Noor

      25 Mar 2013 03:03 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      চেতন ভগতের কথা মনে আছে? বিখ্যাত চলচ্চিত্র “থ্রি ইডিয়টস” তাঁর “ফাইভ পয়েন্ট সামওয়ান” নামের একটি বই থেকে নির্মাণ করা হয়েছিল । ভারতীয় লেখক হলেও চেতন ভগত কিন্তু হিন্দি ভাষায় লেখেন না । তার বইগুলো ইংরেজী ভাষায় লেখা । আজকে আলোচনা হবে তাঁর তৃতীয় বই “থৃ মিসটেকস অব মাই লাইফ” নিয়ে । বাতিঘর প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ইশতিয়াক আহমেদের করা অনুবাদটি পড়েছি আমি । বইটির প্রাককথন সাধারণ বইয়ের মত নয় । লেখক চেতন ভগত একটি ইমেইলের প্রসংগ তুলে কাহিনী বর্ণনা আরম্ভ করেন । আহমেদাবাদের একজন ব্যবসায়ী চিরশয্যাশায়ী হওয়ার বাসনায় ঘুমের বড়ি খাওয়ার আগে লেখক চেতন ভগতকে মেইল করেন । এই ই-চিঠিতে জি প্যাটেল তার জীবনের তিনটি ভুলের ইঙ্গিত দেন । উনিশ লাইনের চিঠি, প্রতিটা লাইন শেষ হওয়ার সাথে একটা করে ঘুমের বড়ি খাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন জি প্যাটেল নামের সেই পত্র-টাইপক! এই ঘটনা বানানো হওয়ারই কথা, কিন্তু চেতন ভগতের ভাষা দেখে তা বোঝার উপায় নেই । এরপর চেতন ভগত আহমেদাবা্দে তার পরিচিত মানুষজন দিয়ে খোঁজ-খবর নেয়া আরম্ভ করেন । এতসব করার পর আসল গল্পে চলে যান লেখক । উপন্যাসের মূল চরিত্র গোবিন্দ প্যাটেল তার জীবনের কাহিনী বলে যেতে থাকে । গোবি্নদ একজন সাধারণ মানুষ, চুপচাপ থাকতে পছন্দ করে । কিন্তু সাধারণ মানুষ হলেও তার লক্ষ্যা কিন্তু সাধারণ নয় । তার স্বপ্ন হচ্ছে অনেক বড় ব্যবসায়ী হওয়া । তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হল অমি আর ইশান । গোবিন্দ সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে বিশ্বাস-অবিশ্বাস কোনটাই ঠিকমত করতে পারে না । গোবিন্দ তার দুই বন্ধুর সাথে মিলে ক্রিকেট সরঞ্জামের ব্যববসা শুরু করে । এর পাশাপাশি সে ইশানের বোন বিদ্যাকে অংক ও শেখাতো । একপর্যায়ে সে আর বিদ্যা প্রেমে পড়ে যায় । গণিত ও ব্যবসা বুদ্ধি ভালো বলে হিসাব কিতাবএর সব দায়িত্ব ছিল গোবিন্দের ঘাড়েই । গোবিন্দের অতি কাছের একজন বন্ধু ইশান, ডাকনাম “ইশ” । ইশের গুণপনার মাঝে আছে- দেশপ্রেমী, ক্রিকেটপাগল, গুজরাটের তত্র এলাকার দুঁদে ক্রিকেটার ইত্যাদি ইত্যাদি । তার আগ্রহেই তাদের ক্রিকেট সরঞ্জামের দোকানের নাম হয় টিম ইন্ডিয়া ক্রিকেট শপ । ইশ শুধু খেলতই না, সে ক্রিকেট ক্যাম্পও করাত । ইশ একপর্যায়ে আলী নামের একজন প্রতিভাবান ক্রিকেটারকে আবিস্কার করে বসে সে । আরেকজন হল অমি । স্থানীয় পুরোহিতের ছেলে, তার পরিবার এলাকায় অনেক মানুষের ভক্তি-শ্রদ্ধা পায় । অমিদের পরিবার কঠিন ব্রাহ্মণ পরিবার । জাত-পাত ইত্যাদি মেনে চলে তারা । সে অনেকটা ভোঁতা ধরণের মানুষ । তার মাঝে বৈচিত্র্য ও স্বপ্ন কোনটাই নেই । সে তার উগ্র বিশ্বাস নিয়ে মাঝেমাঝেই দ্বিধায় ভোগে । বিদ্যা হল ইশানের ছোট বোন, মধ্যবিত্ত পরিবারের বিদ্রোহী মেয়ে । মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার জন্য গোবিন্দের কাছে অংক পড়তে গিয়ে তার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে । সম্পর্ক নানা বাঁক নেয় কাহিনী এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে । আলি- মুসলমান ছেলে, ইশান তাকে ক্রিকেটের ট্রেনিং দেয় । বিদ্ধংসী ব্যাটিং করার ক্ষমতা নিয়েই জন্মেছে সে, উপন্যাসে তার ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিশেষত শেষ দিকে । গুজরাটের দাঙ্গায় আলিকে রক্ষার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করে ইশান আর গোবিন্দ । অমির উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিট্টু মামার সাথে সরাসরি লড়াইয়ে চলে যায় তিন বন্ধু । গোবিন্দ, হর্ষ, ঈশান পুরনো মন্দিরের পাশে দোকান খুলে ফেলে । মন্দিরে লোকজনের আনাগোনা ভালোই থাকায় তাদের বিক্রিবাট্টা দিনে দিনে বাড়তে শুরু করে । ধীরে ধীরে শুধু ক্রিকেটের জিনিসপাতি ছাড়াও আরো নানা জিনিস যেমন খাতা-কলম ইত্যাদি বেঁচাও শুরু করল তারা । ইন্ডিয়া ভালো খেললে তাদের বিক্রিও ভাল হয় । ইন্ডিয়ার খেলা, গুজরাটের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি, সাম্প্রদায়িক হিন্দু নেতাদের আস্ফালন, সাধারণ ছেলেপিলেদের ক্রিকেটম্যানিয়ার সাথে উপন্যাসের পাত্র-পাত্রীদের নানা ঘটনা মিশিয়ে লেখা “থ্রি মিস্টেকস অব মাই লাইফ” বেশিরভাগ মানুষের কাছে উপাদেয়ই লাগবে বলে মনে হয় আমার । দাঙ্গায় আলি হাতে মারাত্নক আঘাত পায় । আলিকে সুস্থ করার নিমিত্তে বিদ্যার কারণে ইশান-গোবিন্দের মাঝে কেটে যাওয়া সুর আবার ফিরে আসে । অনুবাদ বই পড়তে আমার এমনিতে কেমন জানি কাঠ কাঠ লাগে । কিন্তু এই বইটা পড়তে ভালোই লাগল । সমাপ্তি আরো ভালো লেগেছে । সকলকে ধন্যবাদ

      By Tanzila

      24 Apr 2014 03:20 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      উপন্যাসের গল্প ভারতের আহমেদাবাদ শহরে বেড়ে উঠা ৩ বন্ধুকে নিয়ে। তাদের প্রত্যেকের জীবনের উদ্দেশ্যই আলাদা: ‘গোবিন্দের’ লক্ষ্য টাকা বানানো; ‘ইশানের’ লক্ষ্য যে করেই হোক ক্রিকেটের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রাখা আর গল্পের ক্ষুদে প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান আলীকে সেরা ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তোলা; আর ৩য় প্রধান চরিত্র ‘অমি’ এর নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য নেই, সে শুধু চায় তার বাকি দুই বন্ধুদের সাথে যেকোন উপায়ে থাকতে। ‘গোবিন্দ’ হচ্ছে এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র আর একইসাথে গল্পকথক। নিতান্তই সাধারণ গোছের একজন যার মাঝে যে কেউ নিজের ছায়া খুজে পেতে পারেন। তার আকাংখা বলতে গেলে একেবারেই কম, কিন্তু এক বিষয়ে সে অত্যন্ত লোভী। আর তা হচ্ছে নিজেকে সফল বিজনেসম্যান হিসেবে গড়ে তোলার এক অদম্য লোভ। যদিও সে ম্যাথমেটিক্সে ভালো রেজাল্ট করেছে সব সময় তারপর ও সে মনে করে গুজরাটী হিসেবে ‘বিজনেস’ তার রক্তের সাথে মিশে আছে। তাই এ ব্যাপারে সে দৃড় প্রতিজ্ঞ। বিজনেসে আসার আরেকটি কারণ হচ্ছে তার পরিবারের দারিদ্রতা। পরিবারের সদস্য বলতে যদিও আছে শুধুমাত্র তার মা, তারপরও সংসারের হাল সামলাতে তার মায়ের ‘পিঠা’ সাপ্লাইয়ের ব্যাবসায়ের পাশাপাশি করতে হয় তাকে ম্যাথমেটিকসের টিউশনি। আর মনে মনে বুনতে থাকে তার ব্যাবসায়ের পরিকল্পনা। তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা হচ্ছে ‘ইশান’ আর ‘অমি’, যাদের সাথে তার একটি দিন না কাটালে নয়। তাই এই দুই বন্ধুকে নিয়েই সে একসময় শুরু করে ‘ক্রিকেট শপ’। পাশাপাশি চালিয়ে যেতে থাকে তার টিউশনি। এভাবে এগিয়ে যেতে থাকে তিন বন্ধুর গল্প সামনের দিকে, আসতে থাকে ধর্মীয় গোড়ামী, রাজনীতি বা নিঃস্ব হউয়ার দীর্ঘশ্বাস...আর গল্পের পরিক্রমায় একসময় আপনি গোবিন্দকে বিদ্যার প্রেমেও পড়তে দেখবেন যে কিনা তারই ঘনিষ্ঠ বন্ধু ইশানের ছোট বোন। অষ্টাদশী বিদ্যা হচ্ছে ইশানের ছোট বোন, যাকে ইশান সব সময় আগলে রাখে অন্যান্য ছেলেদের থেকে। আর এই বিদ্যাকেই কিনা একসময় পড়ানোর দায়িত্ব এসে পরে গোবিন্দর ঘাড়ে। গোবিন্দও পড়ায়, বিদ্যাও ‘পরে’... পা বাড়াতে থাকে ভুল এর দিকে... জীবনের করা তিনটি ভুলের একটি ভুলের দিকে..

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!