User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
গল্পের শুরুটা একদম শান্ত,নীরব এবং সহজ। তবে দাদা চরিত্রের রহস্যের গন্ধ পাচ্ছিলাম। দাদার অসিয়তের সেই চিঠিখানা গল্পের বাঁকে এনে দিয়েছে এক নতুন মোড় এবং শিকড় উপড়ে ফেলা গুলমোহরের জীবনের এক নতুন ও রঙিন ছন্দ। কি হতো যদি এই রঙ আরও রঙিন হয়ে ধরা দিত বাহার ও গুলমোহরের জীবনে? পুরো গল্পজুড়ে গুলবাহারের এক হয়ে যাওয়ার সেই চাপা আকাঙ্ক্ষাটা চোখ বেয়ে কয়েক জোড়া অশ্রু হয়ে ঝরে গেলো। প্রকৃতিতে যখন গুলমোহরের রাজত্ব এবং শীতল হাওয়ার দোলে বিরহের সুরে তার মাটিতে বিছিয়ে পরার ক্ষণে কেবলই ❝গুলমোহরের❞ কথা মনে পড়ে। শেষটা এমন নাও হতে পারতো! আমার কেবলই মনে হয়েছে গল্প শুরুর আগেই শেষ হয়ে গেছে। কেমন এক অতৃপ্তি রয়ে গেলো।
Was this review helpful to you?
or
বুক রিভিউ নাম-গুলমোহর লেখিকা- আফিফা মারজানা দাদাজানের সব চেষ্টার নির্যাস ঢেলে দিয়ে গড়ে তোলা যুবক "বাহার"। দাদাজানের দুনিয়াতে পাওয়া বেহেশতি ফুল " গুলমোহর"। দুজনের বসবাস কত কত মাইল দূরে! দুজনই আলাদা আলাদা তবিয়তের।ভিন্ন দু'জনের পথ ও পথের ঠিকানা। তবে উভয়ই দাদাজানের স্নেহের,চক্ষু-শীতলকারী। দাদাজান কাকে বেশি ভালোবাসতেন? গুলমোহর নাকি বাহারকে! গুলমোহর মেয়ে। তাই তার প্রতি আদিখ্যেতা হয়তো বেশি ছিল, তবে নির্ভরতা ছিল বাহারের প্রতি। বাহার শান্ত ও স্থির মেধার অধিকারী। অপরদিকে গুলমোহর ততটাই খামখেয়ালি। তাই হয়তো যাযাবর দাদাজান চেয়েছিলেন, গুল-বাহার এক হয়ে যাক। গুলের ধর্মবিরোধী বাবার অজান্তেই তিনি গুলের ভবিষ্যত বাহারের হাতে অর্পণ করেছিলেন। এমনকি বিষয়টি ছিল গুল-বাহারেরও অজানা। অসিয়তনামা পড়ে বাহারের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। কি করে সম্ভব ভিন্ন পথের মুসাফির দুজনের মানযিল এক হওয়া। একদিকে দাদাজানের আমানত গুলমোহর, অপরদিকে রাজকুমারী আনুদের হাতছানি। সব উপেক্ষা করে গুল-বাহার কি পারবে "এক" হতে! গুলমোহরের বাবা কি মেনে নেবে জঙ্.... বাহারকে গুলের জীবনসঙ্গী হিসেবে! কত ঝড় বয়ে যাবে গুল-বাহারের উপর!! ঝড়কে উপেক্ষা করে ঠিকে থাকতে পারবে তো!! গুল-বাহারের পথ চলার গল্প নিয়েই রচিত হয়েছে শ্বাসরুদ্ধকর উপন্যাস "গুলমোহর"। আচ্ছাহ! একটা গল্প এত সুন্দর হতে হবে কেনো?? এতো সুন্দর! সুবহানাল্লাহ। বইটা যে কত আবেগ,ভালোবাসা আর যত্নে লিখা হয়েছে তা বইটা পড়লে বুঝা যায়। পুরোটা বই আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়েছি।যেন গল্পের মধ্যেই আমি আছি। রব্বে কারীম লেখিকাপুর কলমে আরো বেশি বারাকাহ দান করুন। লেখিকাপুর " ইয়াসমীন" নিয়ে বসেছি উম্মু আম্মার (সুমাইয়া)
Was this review helpful to you?
or
❝একপলকে কত কী ভেবে ফেলা যায়— ভাবনার চেয়ে দ্রুতগামী কিছু আছে কি? আলোর চেয়ে কয়েকগুণ কিংবা শতগুণ গতি মানুষের মনের।❞ কিংবা " যে মুসাফিরের মঞ্জিল থাকে না পথই তার ঠিকানা, পথের ধূলিতেই লেখা থাকে তার জীবনালেখ্য..." খুবই সাধারণ কিন্তু কী গভীর অর্থবোধক কথা! পুরো বই জুড়ে এমন ছোট ছোট লাইফ লেসনগুলো জীবন নিয়ে ভাবতে শেখাবে। লেখিকার সহজ-সরল অথচ জীবন্ত বর্ণনা বইটিকে করে তুলেছে অনবদ্য। মোহর আর বাহার এর প্রেমের উপাখ্যান আর দশটা প্রেমের গল্পের মতো নয়। দু'জনের ভালোলাগা-ভালোবাসা, সুখ-দুঃখের অনুভূতিগুলো পাঠককে আন্দোলিত করবে অনায়াসেই। বইয়ের ভেতর ডুব দিয়ে হারিয়ে যাবার মতো একটি সাধারণ হতে গিয়েও অসাধারণ হয়ে ওঠা একটি গল্প। বইয়ের পাতায় পাতায় ছোট ছোট ম্যাসেজগুলো এটিকে আর দশটা সাধারণ প্রেমের গল্প থেকে আলাদা করেছে। একারণে 'গুলমোহর' আমার কাছে শুধু একটি উপন্যাসই নয়, বরং তারচে' একটু বেশি। বাহারের ভাষাতেই শেষ কথা বলি, "লিখলে আমি হাজার শব্দ, শতেক পৃষ্ঠা লিখে ফেলতে পারবো। কিন্তু সেসকল শব্দ-বাক্য হবে কেবল একটি শব্দেরই তাফসীর! 'ভালোবাসি'। "
Was this review helpful to you?
or
লেখার স্বীকৃতি যতটা সহজে দিই, লেখক স্বীকৃতি ততোটা আমার দ্বারা দেওয়া সম্ভব হয় না। তন্মধ্যে লেখিকা হলে তো কথাই নেই। আমার মাপকাঠিতে পুংলিঙ্গযুক্ত সবকিছু যত সহজে উতরে যায়, স্ত্রীলিঙ্গযুক্ত সবকিছু ততোটা কঠিনভাবে আটকে থাকে। পুরুষের বেলায় সে পুরুষ বলে সাত খু||ন মাফ। কিন্তু নারীর বেলায় অষ্টপূর্ণা হওয়া চাই। তবুও পান থেকে চুন খসলেই মাফ নাই। এই জটিল ছাকনিতে আটকা না পড়ে উতড়ে যাওয়া রমণীদের একজন আফিফা মারজানা। তাঁর লিখনশৈলীর মন্ত্রমুগ্ধতায় আমি যতটা আটকা পড়েছি ততটা আটকানোর যোগ্য অন্য লেখিকা তেমন নেই তো বটেই, লেখকদের মধ্যেও হাতেগোনা উদাহরণ টানা যাবে কেবল। অন্যজীবন পড়া শেষে জাহানারা ইমাম কেবল সেই স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। তন্মধ্যে তিনি অতি রূপবতী হওয়াও একটা কারণ। এই যুগের লেখিয়েদের মাঝে কেবল আফিফা মারজানাই তাই একমাত্র নিজস্ব লেখার ধরণের অনন্যতায় উত্তীর্ণ একজন। কিন্তু লেখিকার ইয়াসমিন পড়ে সে আশা গুড়ে বালি হয়েছিল ইয়াসমিনের কেবল ইয়াসমিন গল্প ছাড়া বাকিগুলোয় লেখিকার ‘নিজস্ব অনন্য লিখনশৈলীর’ অনুপস্থিতিতে। যে লিখনশৈলীতে আমি প্রায় অর্ধযুগ বিমোহিত, তার অভাবে প্রায় তিক্ত হয়ে গুলমোহর না পড়ে ফেলে রেখেছিলাম মাসখানেক ধরে। যদিও খানিকটা ধারণা ছিল গুলমোহরের পাতায় পাতায় নিশ্চিত সেই লিখনশৈলী থাকবে। কিন্তু ইয়াসমিনের হতাশার তিক্ততায় একরকম অভিমান করে পড়তে নিলাম না গুলমোহরকে। আজ কি মনে করে হাতে নিয়ে দেখি মলাটের ভাজে ধুলোবালি আর মাকড়সার জাল পড়ে গিয়েছে ইতোমধ্যে। হঠাৎ মায়া হলো। বই মোছার ন্যাকড়াটা খুঁজতে না গিয়ে যত্ন করে উড়নার কোণায় মুছে নিয়ে পড়া শুরু করলাম। শুধু পঞ্চাশ পৃষ্টা পড়তে লাগল এক ঘন্টা। সাধারণত আমি ধুমধাম পড়া শেষ করতে পারলেই বাঁচি ভাব নিয়ে বই পড়ি। বুঝে, চিন্তাভাবনা করে অল্প পড়ার চেয়ে ধুপধাপ পড়ে ফেলে বেশি পড়ে সব একসাথে মুড়িঘণ্ট করে নিজের মতো করে ধ্যানধারণা তৈরি করার পদ্ধতিতে পড়ি। কিন্তু এমন ধীর লয়ে, তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করতে করতে বাংলা সাহিত্য কি, ইংরেজিতেও শেষ কবে পড়া হয়েছিল মনে করতে পারছি না। এমন করে ডুবে যাওয়া, ডিসেম্বরের শীতের রাতে নানুর বাড়ির বেড়ার ফাঁক গলে ঢোকা শীতের হিমে বসে পড়া বুদ্ধদেব গুহ আর বিভূতিভূষণ বা আল তামাশেও হয়তো হয়নি। উপন্যাসে সাধারণত অপরিপক্ক লেখকও শুরুতে খানিকটা পটভূমি আর পরিবেশ পরিস্থিতি বর্ণনা টানে বেশ নিপুণভাবে। কিছুদূর যেতেই যা আমূলভাবে পরিবর্তিত হয়ে ঘটনার ঘনঘটায় মোড় নেয়। ব্যপারটা দৃষ্টিকটূ আর বিরক্তিকর। কিন্তু গুলমোহরের পাতায় পাতায় ঘটনার তালে তালে বর্ণনার সে হঠাৎ অভাব একবারও দেখা যায়নি। না গিয়েছে বর্ণনার আধিক্যের দেখা। এক চরিত্র ঘিরে ঘটনা প্রবাহের আবর্তনের ধারা থেকে বাংলা সাহিত্যের লেখকরা বেড়িয়ে আসতে পারেননি অতোটা যুতসইভাবে। কিন্তু গুলমোহরে দুই প্রধান চরিত্র, দুই ভিন্ন দেশে বসে ভিন্ন অথচ প্রায় অভিন্ন পরিস্থিতির মুখে পড়ার মুখোমুখি বর্ণনা অন্যরকম স্বাদ দিচ্ছিলো। দুই ভিন্ন নদী বইতে থাকার শান্ত সরলতা। এবং একসময় একই মোহনায় মিলিত হবার অপেক্ষায় চাপা উত্তেজনা— পাঠক মন একেকবার উত্তাল ঝড়ে নুয়ে পড়া সুপারি গাছের মতো হৃদয়টা নুয়ে নুয়ে পড়ছিলো যেন। নীতিবোধ, হোক ধর্মীয় বা সামাজিক— এর সূক্ষ্ম সীমারেখা ঠিক রেখে কম সাহিত্যই রচিত হয়। বিশেষত বঙ্গীয় সাহিত্যে। বঙ্গীয়দের নীতি, নিয়মে আবদ্ধ করা যতটা দুষ্কর, তাদের সাহিত্যে সেই নীতির দেখা মেলা তারচেয়েও বহুগুণ দুর্লভ। যত উশৃংখল, অনৈতিক কথাবার্তায় ঠাসা হবে ততোই বাজারে চলবে এই হলো এখনকার বাংলা সাহিত্যের অবস্থা। যেন কল্পনার যতো অশালীন আর অহেতুক অস্থিরতা সব ঢেলে দেওয়া চাই বইয়ের পাতায়। নীতিবোধের সীমারেখা ঠিক রাখা দূর, সেই সীমার সূক্ষ্মতা দেখার মতো চক্ষুস্মান লেখকই মূলত পাওয়া ভার। এশিয়ারই অন্য কয়েক দেশের সাহিত্যে যা বেশ স্বাভাবিক। সামাজিক নীতি আর মূল্যবোধ ধরে রেখে তারা সাহিত্য রচনার চেষ্টা করেন। আবেগের ধাক্কায় নায়িকার হাত থেকে কোল্ড ড্রিংকসের বোতলটা পড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখানোর পর চ্যাপ্টারের শেষ ছোট্ট একটা দৃশ্য থাকে যেখানে নায়ক তোয়ালে দিয়ে সে পতিত তরল পরিষ্কার করছেন সেটা পাবলিক প্লেস হওয়ায়। ফিকশনে এটুকু সামাজিক নৈতিকতাবোধের দৃশ্যায়ন না করলেও হতো। কিন্তু সে লেখকরা সেটা করবেই। ভিত্তি অনঢ় রাখবেই। এই চেষ্টাটা সবচেয়ে বেশি দেখেছি আমি আফিফা মারজানার লেখায়। গুলমোহরে তো বটেই, তাঁর অন্য লেখায়ও। গুলমোহরে খানিকটা বেশিই প্রকট যা। নীতিনীতিবোধের স্থানটায় অনঢ় থেকে সাহিত্য রচনা— এই ফাঁক পূরণের চেষ্টার জন্যেও গুলমোহর উঁচুদরের সাহিত্যে স্থান পাওয়া যোগ্য। এজন্যেই মূলত বেশি তৃপ্ত হচ্ছিলাম পড়তে। রান্না চাপিয়ে আসা নায়িকা অন্য দৃশ্যে চলে যাওয়ায় রান্নার কি হলো এই অস্বস্তি তাড়িয়ে বেড়ানোর মতো নীতি-নৈতিকতার অসংগতি নেই এখানে। মাথা হালকা করা আরামদায়ক পাঠ। আপাতত এক তৃতীয়াংশ পড়ে এটুকু বলতেই হলো। বাকি দুভাগ পড়া শেষে পূর্ণাঙ্গ পাঠানুভূতি আর অপছন্দ আর কমতি পেলে তা সহ যুক্ত করে তখন আরেকবার লিখবো।
Was this review helpful to you?
or
গুলমোহর একটি আবেগপূর্ণ এবং জীবনের নানা রঙেে রাঙানো উপন্যাস। প্রতিটি চরিত্রের গভীরতা ছিলো অসীম। উপন্যাস টি তে সম্পর্কের সূক্ষ্মতা ও জটিলতা ফুটে উঠেছে নিপুন ভাবে।গুলমোহর চরিত্রটির কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতেই হবে কারণ এই চরিত্রটি মূলত উপন্যাস এর প্রাণ।পরিশেষে বলব,লেখিকার সহজ, সাবলীল ও হৃদয়গ্রাহী ভাষা যেন পাঠককে ভাবাতে বাধ্য...
Was this review helpful to you?
or
সতর্কতা: "গুলমোহর" পড়ার আগে এই সম্পর্কে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকুন। এই বইটা আপনার জীবনের বাস্তবতার সঙ্গে মেলাতে পারবেন কিনা, সেটি নিজেই আবিষ্কার করুন। বইটিকে নিজের গুরুত্বপূর্ণ বইয়ের লিস্ট এ রাখবেন না। তবে আপনি যদি একজন প্রকৃত পাঠক হোন, যিনি আসলেই সব রকমের বই পড়তে পছন্দ করেন, প্রতিটা সেক্টরের আলাদা আলাদা বইকে আলাদা আলাদা ভাবে অনুভব করতে পারেন তবেই এই বইটি কিনবেন? --- এই উপন্যাসে পারিবারিক সম্পর্কের গভীরতা, সামাজিক দ্বিধাবোধ এবং নৈতিকতার টানাপোড়েনের এক অসাধারণ মেলবন্ধন আছে। শুধু উপন্যাসের কাহিনিই না,বরং গুলমোহর চরিত্রটি নিজেও এই জটিল বাস্তবতার মধ্য দিয়ে গেছে। তার সরলতা, আবেগ, এবং দ্বিধার প্রতিটি ধাপে আপনি হয়তো নিজের কোনো অংশকেই খুঁজে পাবেন। তবে মনে রাখবেন, এই বইটি সবার জন্য নয়। যে পরিমাণ হাইপ "গুলমোহর" তুলেছে, তার সিকিভাগই হয়তো বইটি পূরণ করতে পেরেছে। এর একটি কারণ সম্ভবত আমাদের অভ্যাস—বইয়ের নাম এবং তার প্রশংসা শুনে আমরা আগেই নিজেরা কল্পনা করে নিই, এটি হয়তো সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ উপন্যাস হতে চলেছে। এই ভেবে যদি বইটি পড়তে শুরু করেন, তবে এর চেয়ে বড় ভুল আর কিছু করবেন না। বই পড়ার আগে এই বিষয়ে অতিরিক্ত উত্তেজনা দেখালেও, বইটি কেমন হতে পারে তা নিয়ে অতিরিক্ত ধারণা করে বসবেন না। বরং বইটিকে তার মতো করে অনুভব করবেন। আশা করি তবেই বইটি পড়ে মজা পাবেন, দুঃখ পাবেন। কাঁদতেও পারেন যদি কান্না পায় তো।
Was this review helpful to you?
or
গুলমোহর বইটি রেখে উঠতে পারিনি। এক নিঃশ্বাসে পড়েছি বলা চলে। বাহারকে নিয়ে যা ভেবেছিলাম, মিলে গেছে। তবে লেখিকা এইভাবে, এই পথে গল্প টানবেন তা তো জানতাম না। কীভাবে মিলিয়ে দিবেন এই পরিণতিতে, এটা বোঝা সম্ভব ছিল না বলেই উপন্যাসটা এত আগ্রহ নিয়ে পড়েছি। ভাবছিলাম আনুদের বাবার কথা। তার মাধ্যমে শুভ পরিণতি সম্ভব। সেই সম্ভাবনাও যখন লেখিকা হাজির করলেন, আমার খটকা লাগল। তাকে তো আমি চিনি। এত সহজ লেখিকা নন যে, পাঠকের কল্পনার সাথে গল্প মিলিয়ে দিবেন হুবহু। শেষ পর্যন্ত খেলবেন উনি, এটা তো জানা কথা। করলেনও তাই। কেউ কেউ এই বইকে প্রেমের উপন্যাস বলেন। আমার চোখে গুলমোহর নিরেট রাজনৈতিক উপন্যাস। জুলাই গণঅভ্যূত্থানের আগে এমন একটা বিষয়কে কেন্দ্র করে বই লেখা রীতিমতো দুঃসাহসিকতারই নামান্তর।
Was this review helpful to you?
or
শরতের আবেশে সমাপ্তিতে এক বিন্দু নির্মল অশ্রুর রেখা গড়ে - গুলমোহর। দাদাজানের প্রিয় দুই নাতি নাতনি - বাহার ও গুলমোহর। দুজনকে ঘিরে দাদাজানের রহস্যের সৃষ্টি। সূচনায় তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে গুলমোহরের বিহ্বল শান্ত মনের প্রকাশ... বাহারের নিশ্চুপ বেদনার হাহাকার। অতঃপর ওসিয়ত স্বরূপ দাদাজানের চিঠি সঙ্গে নিয়ে বাহার ফিরে যায় তার শিক্ষার দেশে। সেখানে নব অনুভূতিকে স্বাগতম জানায় সে, আনুদ যার নাম। দ্বিধা জড়িত মনে বাহার সিদ্ধান্ত নিবে নিবে, ঠিক সেই সময় চিঠিটা তাকে গোলকধাঁধায় ফেলে দিলো। একই চিঠি ভিন্ন রূপে গুলমোহরের কাছে আছে। কী লেখা সেখানে? সম্পূর্ণ উপন্যাস পুষ্পীয় আবেশে ঘেরা। গুলমোহরের স্বভাব, বৈশিষ্ট্য সবকিছু তার প্রতি ভালোবাসা ও স্নেহ বাড়িয়েছে শুধু। আর বিপরীতে বাহারের উপর জন্মেছে শ্রদ্ধা। একই সাথে আনুদকেও সম্মান করি তার সরল মনের জন্য। পারিবারিক সম্পর্কের মধুরতাও এখানে স্পষ্ট। এমন সুন্দর বন্ধন থাকলে পরিবারের প্রত্যেকে একে অপরের জন্য যথেষ্ট হয়ে যায়। সূক্ষ্মভাবে লেখিকা এই দারুণ ব্যাপারটা তুলে ধরেছেন। এখানে একটা কথা উল্লেখ না করলেই না, বাহার নিজেকে অলস দেখতে চায় না তাই পড়াশোনায় ভালো করার চেষ্টা করে - এই বিষয়টা নিজের জীবনে প্রয়োগ করার জন্য দারুণ লেগেছে। হয়তো ফিকশনের ভেতর যারা নন ফিকশন খোঁজেন, তাদের কম ভালো লেগেছে (যেমনটা আমি নানান মন্তব্যের ভিড়ে দেখেছি)। কিন্তু আমার মনে হয় উপন্যাসের শেষের দিকে ঈষৎ তাড়াহুড়ো ছাড়া এতে আর কোনো কমতি নেই মা শা আল্লাহ। তাহিরা ও ইয়াসমীনের পর গুলমোহর, এবং গুলমোহরের পর আশা করছি কেউ খুব দ্রুতই আসবে লেখিকার হাত ধরে আমাদের আসরে। বিস্তারিত কিছু লিখলাম না স্পয়লারের ভয়ে। দুঃখের বিষয়, অনেকে আবেগ প্রকাশ করতে গিয়ে স্পয়লার দিয়ে ফেলছেন। যদিও আমার পড়ায় কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু কোনো বইয়ের স্পয়লার দেওয়ার আগে ‘স্পয়লার অ্যালার্ট’ কথাটা লিখে দিবেন।
Was this review helpful to you?
or
গুলমোহর, বইটা হাতে নেওয়ার পর একটানা না পড়ে পারিনি।যখন শেষ করলাম তখন রাত ২ টা। ২০২৩ এ পড়া সেরা বই ছিলো এটি। লেখিকার গল্প বর্ণনার ধারা খুবই ভালো লেগেছে। একদম হারিয়ে গেছি গল্পের মাঝে। বিশেষত দাদাজান আর ছোটচাচা চরিত্র গুলো খুব শক্তিশালী ছিলো। গল্পের নাটকীয় মোড় সবাইকে চমকে দিবে আশা করি। মোটকথা বইটি পড়ে দেখুন, খারাপ লাগবে না কথা দিচ্ছি।
Was this review helpful to you?
or
বইটা হাতে পাওয়ার পর কয়েকদিন আমার পড়ার টেবিলেই পড়ে ছিলো। পড়বো, পড়ছি করেও একটু অলসতা করছিলাম। কিন্তু একদিন রাতে পড়া শুরু করলাম। তারপর আর ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে করেনি। দু'দিনেই শেষ করে ফেলেছি। বইটা পড়ে কেঁদেছি। খুব মায়া লাগছিলো গুলমোহর আর বাহারের জন্য। প্রথম থেকেই খুব করে চাইছিলাম আনুদ নয়, গুলমোহরে সাথেই যেন বাহারের মিলন হয়। কিন্তু এ কেমন মিলন!? ছোটো গল্পের উদাহরণ দিতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ যেমন বলেছিলেন, শেষ হয়েও হইলো না শেষ। ঠিক তেমনি ওদের দু'জনেরও যেন মিল হয়েও হইলো না। বইয়ের কাহিনির কিছুই লিখলাম না রিভিউ-এ। শুধু এটুকু বলবো, পড়ে হতাশ হবেন না আশা করি। একটু মনটা কেমন করবে গুল-বাহারের জন্য। একটা ঘোরের মধ্যেও চলে যেতে পারেন। বাহারের একটা কথা ভীষণ মনে ধরেছে। সেটা দিয়েই শেষ করছি- "আমাদের হৃদয়ের মানচিত্রের জটিলতার চেয়েও দুর্বোধ্য আমাদের তাকদীর। আমরা কেবল দোয়া করতে পারি, রব যেন সবকিছু সহজ করে দেন।"
Was this review helpful to you?
or
জীবনের ব্যস্ততায় বই আর পড়াই হয় না। অনেকদিন বাদে এক বসায় কোন বই পড়ে শেষ করলাম। আল্লাহ লেখিকার লেখায় বারাকাহ দিন।
Was this review helpful to you?
or
শহরে যানজট ছেড়ে মানুষ প্রকৃতির সান্নিধ্যে যায় কিছু টা সতেজ হতে, গুলমোহর ও আমার কাছে সবুজ পাহাড় থেকে নীল ছে সমুদ্র দেখার মতোন স্নিগ্ধ,সতেজ, এক বসায় পড়ে মনে হয়েছে হৃদয়ে কিছু ভাল লাগা স্পর্শ করেছে।
Was this review helpful to you?
or
গুলমোহর যেদিন পড়ি,সেদিনের একাংশে আমি চলন্ত বাসে,,,হাতে গুলমোহর,, বাসের জানালা দিয়ে যখন বাইরে চোখ গেল, দেখি যে রাস্তার দুই ধারে সারি সারি কৃষ্ণ চূড়া গাছে থোকায় থোকায় গুলমোহরের মনো মুগ্ধ কর সমারোহ।তখন যে কি দারুণ অবর্ণনীয় বাস্তবিক অনুভূতি,, সুবহানাল্লাহ। গুলমোহর এমন এক হৃদয় স্পর্শী উপন্যাস যাকে আপনার হৃদয় জায়গা দিতে বাধ্য। এই উপন্যাস আপনার জীবনের একঘেয়েমি দূর করে হৃদয়ের খোরাক জোগাবে।আপনি যতক্ষণ না বইটি শেষ করবেন, ততক্ষণে অন্যকিছু তে স্বস্তি পাবেন না। গুলমোহর ও বাহারের পূর্নতার উপসংহারে আপনি যে ঘোরের মধ্যে পড়বেন,,কখন যে আপনি অশ্রুসিক্ত হবেন টেরও পাবেন না। এই রেশ আপনাকে বার বার ভাবাবে এটি গুলমোহর না হয়ে "গুলবাহার"ও হতে পারতো। লেখিকার অসাধারণ লেখনীতে যে একটি উপন্যাসকে হালাল প্রনয়ে সমাপ্তি করা যায় তার চমৎকার উদাহরণ " গুলমোহর"। বইটির একটি চিঠি এমন, যেখানে একজন স্বামী তার নববিবাহিতা স্ত্রী কে মনের কথা এভাবে লিখেছে, " লিখলে লিখতে পারি শতেক পৃষ্ঠা, তা সবই হবে কেবল একটি শব্দের তাফসির, "ভালোবাসি " বাহার
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃ গুলমোহর লেখকঃ আফিফা মারজানা প্রকাশকঃ পেনফিল্ড পাবলিকেশন বই প্রি-অর্ডার করার সময় প্রকাশনা সংস্থাকে অনুরোধ করেছিলাম লেখিকার অটোগ্রাফ সহ বই নিতে চাই। আমার অনুরোধ ফেলে দেওয়া হয়নি। আলহামদুলিল্লাহ। লেখিকার অটোগ্রাফের সাথে ছোট্ট একটা বাণী, কিন্তু সেই ছোট্ট বাণীর ওজন অনেক বেশী আমার কাছে। বই হাতে পেয়ে সুন্দর হাতের লেখার দিকে তাকিয়ে রইলাম। লেখার শব্দচয়ন মন ভালো করে দিতে বাধ্য। লেখার শেষে যেই দু'আ লেখিকা আমার জন্য করেছেন, সেটা যেন আল্লাহ্ কবুল করে নেন এবং এই দু'আর উত্তম প্রতিদান লেখিকাকে যেন দেন। আমিন। লেখিকার সাথে পরিচয় হয় 'ইয়াসমিন' আর 'তাহিরা' পড়ে। 'তাহিরা' পড়ে যেমন কষ্ট অনুভব করেছিলাম, গুলমোহর পড়েও তেমন কষ্ট লাগলো। কয়েকটা পর্ব আগেই অনলাইনে পড়া হয়েছিল, বাকি পর্ব পড়ার জন্য লেখিকা আমাদের চরম ধৈর্য ধারণ করার অনুশীলন করিয়েছেন। তবে সেই অনুশীলন বই প্রকাশিত হওয়ার পর সার্থক হয়েছে কিনা সন্দেহ আছে আমার। কারণ বই হাতে নিয়ে বেশ কয়েক পাতা পড়তে গিয়ে আর ধৈর্য ধরে রাখতে পারলাম না। শেষ পাতায় চলে গেলাম। শেষটাই আগে জানতেই হবে। লেখা শেষে কষ্ট লেগেছে ঠিকই, কিন্তু মনে মনে গুলমোহর, বাহার আর আনুদকে নিয়ে যেই চিন্তা করেছিলাম, সেই চিন্তাটাই দেখি বইয়ের ভিতরে লেখা হয়েছে, তবে সেটা লেখিকার মুন্সিয়ানায় দারুণ একটা টুইস্ট নিয়ে শেষ হয়েছিল। সেটা জানতেই এক নিঃশ্বাসে পড়ে শেষ করে ফেললাম বাকি পাতাগুলো। নিজের হাতে নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে ধ্বংস করে দেওয়ার প্রচেষ্টার জন্য গুলমোহরের বাবা'র শেষ পরিনতিটা জানতে পারলে আরো ভালো লাগতো। কেউ চিঠি দিলে, সেটা না পড়ে থাকে কিভাবে মানুষ? আর সেটা যদি হয় মৃত ব্যক্তির থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া চিঠি! গুলমোহর আর বাহারের এই স্বভাব অবাক করেছে আমাকে। দাদাজানের চরিত্রটা মৃত্যুর পরেও কিভাবে পরিবারের ভিতরে শক্তিশালী ছিল, সেটা আমাকে ভাবিয়েছে। মজবুত চরিত্রের অধিকারী মানুষ মৃত্যুর পরেও তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে শক্তিশালী প্রভাব ফেলেন কাছের মানুষজনের উপর, দাদাজান সেটার উদাহরণ। গল্পের শুরুতে চেয়েছিলাম আনুদ যেন বাহারের জীবনে না আসুক। কিন্তু পরে আনুদের জন্য মায়া বেরে গিয়েছিল, গুলমোহর নিজে সেই মায়া তৈরী করে দিয়েছে কিনা জানি না। গল্পটা শুরু হয়েছিল খুব ধীরস্থির জীবনবোধ নিয়ে, মাঝখানে উথাল-পাতাল জীবন, শেষে আবারও ধীর-স্থিরতা। জীবনটা এমনই আমাদের। লেখিকা লেখার মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে গল্প লিখলেও, লেখাতে ধীরস্থিরতা বজায় রেখে লিখেন। এই কৌশলের কারণেই, 'এরপর কি হবে?' এমন চিন্তা মাথায় নিয়ে গল্প পড়ার আগ্রহ বাড়ে। বাহারের বুদ্ধি, গায়রত, দ্বায়িত্ববোধ ধীরে ধীরে গল্পে আবির্ভাব হয়েছে, এর সাথে তাল মিলিয়ে গুলমোহরের চঞ্চলতা যেন ধীরস্বভাবে ধরা দিয়েছে। দুটো চরিত্রের মাঝে যে সমঝোতা তৈরী করা হয়েছে সুক্ষ্মভাবে, সেটা গল্পের মাঝে সমঝদার পাঠক অনুভব করতে পারবেন। গল্পের শেষে চোখের কোনে পানি জমেছিল। মায়া আর ভালোবাসা পৃথিবীর মানুষকে কাঁদতে শেখায়। লেখা যখন প্রাণ ছুঁয়ে যায়, পাঠক তখন হাসবে, কাঁদবে, কষ্ট পাবে, রাগ বা অভিমান নিয়ে থাকবে। এইখানে লেখকের সার্থকতা। গুলমোহরের লেখিকা এই ক্ষেত্রে সার্থক। গুলমোহরের দ্বিতীয় পর্ব ছোট্ট নূরজাহানের হাত ধরে আসতে পারে। লেখিকা সেটা চিন্তা করলেও করতে পারেন। সবশেষে বলবো, বইয়ের প্রচ্ছদটা সুন্দর। গল্পটা পড়ে ভালো লেগেছে। মানুষকে কিভাবে গল্প পড়াতে হয়, গল্পে আটকাতে হয়, লেখিকা সেটাতে পারদর্শী।
Was this review helpful to you?
or
গুলমোহর: হার্দিক বন্ধনের পরিশীলিত শৈল্পিক উপাখ্যান বইয়ের উৎসর্গ পাতায় লেখিকার কথায় দারুন চমকে গিয়েছিলাম।‘বই পড়া খুব বেশি ভালো কাজ নয়,খুব জরুরীও নয়।…..মানুষ ও জীবন দেখে নিজেকে শোধরানো ও গড়ে তোলা,আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায়।’ এমন নিগূঢ় সত্য ভাষণেই লেখিকার প্রেমে পড়ে যাই। তারচে' বড়ো বিস্ময় অপেক্ষা করছিলো,‘শুরুর কথা’ শিরোনামে…বিষখালী নদীর পাড়,চিরচেনা কোন গাঁয়ের বর্ননা যেই আলো হাওয়ায় লিখেছেন লেখিকা।সত্যিকার অর্থেই এই প্রথম নিজ জেলা নিয়ে অন্যরকম গর্ব অনুভব করলাম। গুলমোহর উপন্যাসের ভূমিকায় প্রিয় কথাসাহিত্যিক সাবের চৌধূরী যেন অনেকটাই বলে দিয়েছেন পাঠকের কথা।তিনি যেমন বলেছেন,গুলমোহর একটা সুন্দর দীর্ঘশ্বাস!গুলমোহর চরিত্রটি পাঠকের দীর্ঘশ্বাসে মিশে বুকের গভীরে কেন মিশে গেছে জানতে হলে পুরোটা উপন্যাস পড়ে ফেলা চাই। ‘গুলমোহর’ উপন্যাসকে কোনো জনরায় আসলেই কি ফেলা যায়?সমসাময়িক উপন্যাস বলেছেন বিদগ্ধ সমাজ।আমার মনে হয়েছে গুলমোহর যতোটা না সমসাময়িক তারচে প্রাসঙ্গিক হয়ে থাকবে চিরায়াত অনুপম শৈল্পিক প্রেমময়তার সংযমী প্রকাশের জন্য।পুরো উপন্যাস জুড়ে বাহার আর মোহরের চরিত্র,ব্যক্তিত্ব মাধুর্যের এক অনবদ্য সীমারেখা যেটি পাঠককে পরিতৃপ্তি করে শেষ পর্যন্ত। গুলমোহর উপন্যাসের ভাষাশৈলী, গল্পের বুনট এতোটা স্বচ্ছ টিনের চালে বৃষ্টি পতনের ছন্দের মতো।একজন পাঠকের মনে রুমঝুম শব্দে ঢেউ তুলে যায়।উপমা কিংবা রূপকের ব্যবহারে একটুখানিও বাড়াবাড়ি মনে হয়নি।উপন্যাসের নামকরণেও লেখিকা দিয়েছেন মাধুর্যের পরিচয়।তপ্ত রোদে সবুজে মাঝে লাল কৃষ্ণচূড়ার যে দহন,সেই দহনের সারথি উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র গুলমোহর। উপন্যাসটি পাঠের আগে অন্যতম শক্তিশালী কথাসাহিত্যিক সাব্বির জাদিদের থেকেও পড়েছিলাম, লেখিকার গদ্যের প্রশংসা। তিনি একদম যথার্থই বলেছিলেন পাঠক মাত্রই বুঝবেন বইটি সংগ্রহ না করলে কী মুক্তো তিনি হারাতেন! কাহিনী সংক্ষেপ : ▪️দাদার সংসার পাতার কাহিনী থেকে… দেশ বিভাগের দাঙ্গায় পরিবার স্বজন হারিয়ে পথে নামে এক যুবক।দীর্ঘ বাইশ বছরের যাযাবর জীবনে –আরব,মধ্য এশিয়া, সমরখন্দ-বোখারা থেকে কাশ্মীর,কাবুল থেকে বার্মা সকল জায়গা ঘুরে বেরিয়েছিলেন।একসময় জীবনসঙ্গীর কল্যাণে থিতু হয়েছিলেন বরিশালের এক সবুজ গ্রামে।গুলমোহরের দাদাজীর জীবন ছিলো বৈচিত্র্যময় অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞায় পরিপূর্ণ। তিন পুত্রসম্তান-বড়ো ছেলে ও ছোট ছেলে বাবার আনুগত্য করেছেন।মেঝো ছেলে দম্ভ,অহংকারে পিতার থেকে দূরে সরে যায়।বড়ো ছেলের ঘরের নাতি বাহার উদ্দিন মুহাম্মদ আর মেয়ে ফাতেমা।মেঝো ছেলের একমাত্র মেয়ে গুলমোহর ও তার ছোট ভাই।আর ছোট ছেলে রফিক অবিবাহিত। গল্পসূত্রে গুলমোহর দাদা ও চাচাদের ছেড়ে কানাডায় চলে যায় বাবার ব্যবসার কাজে।আর বাহার মাদরাসার পড়াশোনা শেষে কাতারে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছে। মৃত্যুশয্যায় দাদা তার সবচে’ প্রিয় দুই উত্তরাধিকারী গুল -বাহারের জন্য রেখে যান একটি কাঠের বাক্স আর লাইব্রেরিভরা বই। কি আছে সেই বাক্সে?গুল আর বাহার কখন খুলবে সেই জাদুর বাক্স?কী ওসিয়ত আছে ওদের জন্য?লেখিকা ছোট ছোট গল্পকে একত্রে সুনিপুণ হাতে জুড়ে দিয়েছেন পরম্পরায়। বাহারের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে পরিচয় ঘটে আনুদ ও তার রাজপরিবারের সাথে।আনুদের সম্ভ্রান্ত আভিজাত্যের সাথে কোমলতা,বিনয়ের সম্মিলনে আন্দোলিত করে পাঠককে।বাহারকেও কি একটু বিচলিত করেনি?দ্বিধা-দ্বন্দ্বের পরিসমাপ্তি শেষে কি পরিণতি ঘটে? পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ উপন্যাসের প্রধান কেন্দ্রীয় চরিত্র গুলমোহর প্রাণোচ্ছল বুদ্ধিমতি এক তরুণী।যার শৈশব কেটেছে তার আইডল দাদাজীর কাছে।কিছু মানুষের চরিত্র এতোটাই শক্তিশালী যে তার অনুপস্থিতিতেও অখন্ড প্রভাব বিস্তার করে যান চারপাশে।এ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র না হয়েও আকর্ষনীয় রহস্যময় চরিত্র হিসেবে দাদা চরিত্র যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।এরপর আসে বাহার চরিত্রের সহজ, লাজনম্রতা ও প্রয়েজনে দায়িত্বশীল,নির্ভরতার প্রতীক হয়ে ওঠা।লেখিকা চরিত্রগুলোর মনস্তাত্ত্বিক উত্থান পতন করেছেন শৈল্পিকরূপে। কখনো গুলমোহর,কখনো বাহারের কিংবা আনুদের মনোজাগতিক তোলপাড়ে পাঠককেও সমানভাবে অংশীদার করেছেন।উপন্যাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন চরিত্র আনুদ ও তার বাবা ইবনে হামাদের রাজকীয় পরিবেশের মাঝে সারল্য,কল্যাণকামী মনোভাব ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। গল্পের প্রয়োজনে আসা শাকির,কিংবা আনুদের পরিচারিকা জামিলা সকলেই নিজ জায়গায় সপ্রতিভ। মোহরের চাচীর ভূমিকায় এসে এক মমতাময়ী নারী যিনি সন্তানসম ভালোবাসায় আগলে রেখেছেন পরিবারটিকে।গরীর,অসহায় মানুষকে খাবার খাইয়ে পরিতৃপ্ত হন যিনি।চাচা রফিক সাহেব বাবার প্রতি অনুরক্ত, ভাতিজির জন্য সদা তৎপর।বাবার মৃত্যুর পরে শোকাতুর পুত্রের চিত্রায়নে পাঠক হৃদয়ও আপ্লুত হয়।গুলমোহরের মা ডালিয়ার প্রবাসী জীবনের পরিবর্তন,পিতার বিরুদ্ধবাদিতায় নিজ তাহজীব তামাদ্দুন থেকে সরে যাওয়া অন্ধ আবেগে রুদ্ধ মোহরের বাবা।প্রতিটি চরিত্র নিজস্বতায় অনন্য কোন কৃত্রিমতা অনুভব হয়নি। একজন প্রতিশ্রুতিশীল লেখক হিসেবে দায়বদ্ধতা থাকে প্রবাহমান সময়কে কলমের আচড়ে তুলে আনার।লেখিকা এক্ষেত্রে সাহসের সাথে লিখেছেন সমসাময়িক সময়ের অসঙ্গতি, রাজনীতি,সমাজ,সংস্কৃতি,দর্শনের মৌলিক বৃত্তান্ত।সময়ের পরিক্রমায় ইতিহাসের গর্ভে অনেককিছু হারিয়ে গেলেও সাহিত্যের মাঝে টিকে থাকে সময়ের গল্প,ইতিহাস। রাজনৈতিক পালাবদলে সবুজ,শ্যামল বাংলার মাটির কখনো হয়ে উঠেছে নিঃশব্দ কারাগার। প্রচ্ছদ,পৃষ্ঠা ও কাগজ বাধাই: পেনফিল্ড পাবলিকেশন স্বল্পসময়ে প্রকাশনা জগতে আস্থা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।বইয়ের বাধাই ও সন্তোষজনক। প্রচ্ছদের কথা না বললেই নয়।মাহজাবিন আপুর নিপুণ তুলিতে ভীষণ সুন্দর হয়েছে।আকাশ নীলের ব্যাকগ্রাউন্ডে শাখায় ফুটে থাকা ফুল আর সবুজ কলিগুলো যেন উপন্যাসের চরিত্রগুলোরই সন্নিবেশ। অভিযোগঃ অভিযোগ ঠিক নয় এমন প্রতিশ্রুতিশীল লেখক পেয়ে আরো প্রত্যাশা বেড়ে গিয়েছে।গল্পের বুননে আরেকটু যেন শোনার আকাঙ্ক্ষা থেকে যায়। গল্পের বেশকিছু চরিত্র আবহ আরেকটু বিকশিত হতে পারতো।গল্প বলার তাড়া যেমন ছিলো তেমনি একটা শব্দহীন অস্থিরতায় তাড়িত করেছে পাঠককে। আরেকটি দিক যেটি সুন্দর লেগেছে- লেখিকা তাঁর দায়বদ্ধতা থেকে সত্যিকারের গল্পকারের মতো লেখাটি সাহিত্যের মানদণ্ডে বিচার করতে বলেছেন।শরয়ী বা মাসআলার প্রশ্ন নিয়ে পাঠক যাতে বিচার না করেন।একজন পেশাদার লেখক হিসেবে এটি যথার্থ কেননা লেখা শুধু তো কোন বিষয়কে পাঠকের উপর চাপিয়ে দেওয়া নয়।সমকালীন সমাজ,রাষ্ট্র,মানুষের যাপিত জীবনকে তুলে আনা, তার প্রতিনিধিত্ব করাই সার্থকতা। পেনফিল্ড প্রকাশনীর প্রকাশিত বইগুলো বিষয়বস্তুর দিক থেকে অনন্য।লেখিকা আফিফা মারজানার ‘ইয়াসমীন ’ পড়তে চাই। বইঃ গুলমোহর লেখকঃ আফিফা মারজানা প্রকাশনীঃ পেনফিল্ড পাবলিকেশন প্রকাশঃ ২০২৩ প্রচ্ছদঃ মাহজাবীন আকতার পৃষ্ঠাঃ ১৫৯
Was this review helpful to you?
or
লেখিকা আর প্রচ্ছদ দুইয়ের কারনেই আমার কাছে আবেগের নাম।তবু এতটা ম্যাচুরিটি এসেছে যে পড়তে গিয়ে একজন পাঠক হিসেবেই পড়েছি। আমার সবসময়কার সরল স্বীকারোক্তি আমি শিল্প বা সাহিত্য বুঝি কম।আমি সেই পাঠক যে নিজের অবসরকে সুন্দর করতে পড়ি।বিশেষ করে গল্প উপন্যাস আমি জ্ঞানার্জনের জন্য পড়িনা-- সুন্দর সময় কাটানোর যে মনের চাহিদা,সেজন্য পড়ি।যে পড়া পড়তে গিয়ে বিনোদিত হবার চাইতে তার সাহিত্যমান বিচারে মাথা খাটাতে হয়,তা আমার ঠিক যুতসই হয়না,বুঝিও তো না।তাই খুব জটিল গদ্য বা অতি হালকা কথন কোনটাই আমার রুচেনা।নিছক মধ্যবিত্ত শ্রেনীর পাঠক..আর আমার মত লোকের জন্য গুলমোহর অতি উত্তম বটে। গল্পের প্লট একেবারে নতুন।চরিত্র গুলো সুন্দর। আর সব চরিত্র ছাপিয়ে সবসময় না থেকেও গল্প জুড়ে থেকে গেছেন দাদাজান।তাই গল্প শেষে গল্পের মূল পাত্র পাত্রীদের চাইতে পাঠকের মনে রাজত্ব করে চলেন তিনি। লেখিকার গদ্য সুন্দর। যদি গল্প মনমতো না-ও হয়,শুধু গল্প বুনে যাওয়া পড়েই আনন্দের সাথে পুরোটা বই শেষ করে দেয়া যায়।বর্ণনায় উপমার ব্যবহার যথেষ্ট, কিন্তু তা জটিল নয়,বিরক্তির উদ্রেক করেনা- বরং পড়তে পড়তে পাঠক একটা মায়ার আবেশে আচ্ছন্ন হয়।আমার মত পাঠকের ঠিক এইটাই চাই। লেখিকার গত বইয়ের চেয়ে এবারে লেখনী আরও পরিণত। গল্পের মধ্যে আরও কিছু গল্প বলা যেত।কিছু কিছু সময় এত দ্রুত পেরিয়ে গেছে,সে সময় গুলোর আরও কিছু সুখপাঠ্য বর্ণনা পড়া গেলে ভালো লাগত।যেন মনে প্রশ্ন থেকে যায়- "তারপর? তারপর কি হয়েছিল জানলাম ই না...," জানা গেলে হত। বেদনা নিয়ে গল্প শেষ হলে লোকে বকে ঠিক,তবে যে গল্প বুকে বেদনা না জাগায়,তা পাঠক ভুলেও যায় সহজে।লেখিকা বুদ্ধিমতী- যেভাবে তাহিরা ও ইয়াসমীন আমাদের এখনো মনে আছে,গুলমোহরও কোথাও তেমন একটা ছাপ রেখে যাবে মনে হচ্ছে- অবশ্যই আরও বেহতর কোন উপন্যাসের দাবী নিয়ে।। বইয়ের প্রচ্ছদ নিয়ে মনে একটু খুতখুতানি ছিলই।তবে লেখিকার কনফিডেন্স,পাঠকের পসন্দ আর সর্বোপরি হাতেনাতে বইখানা নিয়ে আক্ষেপ কেটে গেছে-আর ১০ টা বই থেকে একটু আলাদা তো করা যায় ই।
Was this review helpful to you?
or
গুলমোহর আমার জীবনে এসেছিল অচেনা এক বন্ধুর মতো; যাকে চিনিনা অথচ জানি! গতবছর অক্টোবরে যখন বইটা পড়া শুরু করি, প্রতি পদে পদে হোচট খেয়েছি। গুলমোহরের প্রতিটা স্মৃতি যেন আমার নিজের যাপিত জীবন। লেক অন্টারিও, টরন্টোর বায়তুল মুকাররম, নিম্নচাপের সময়কার কুয়াকাটা,,,,,,,,,, এই প্রত্যেকটা জায়গা আমার অন্তরে খোচা দিয়েছে অনবরত। আবারো বলি, গুলমোহর কোনো বই না আমার কাছে। গুলমোহর একটা রক্তমাংসের মানবী, আমার অদেখা অনুভবের বান্ধবী। গুলমোহরের প্রতিটা অশ্রুবিন্দু আমি অনুভব করতে পারি। এইসব কারনেই আমি গুলমোহরের রিভিউ লিখতে পারিনি গত একবছরেও। বড়জোর, গুলমোহর পড়ার সাজেশন দিয়েছি, আমার বই পাক্কা ৭/৮ মাস অন্যদের বাড়ি বারি ঘুরেছে, কেউ কিছু বললেই ডিফেন্ড করে গেছি গুলমোহরকে। এইটাও রিভিউ না, এইটা ভালোবাসা। গুলমোহরকে আমি ভালোবেসেছি।
Was this review helpful to you?
or
যাপিত জীবনের বিষাদময় নিজস্ব অনুভূতিরা চাপা পড়ে যায় গুলমোহরের বেদনায়। আমি কোন সাহিত্য সমালোচক নয়, নিবিড় এক পাঠক মাত্র। অনেকদিন পর এক নাগাড়ে কোন বই পড়ে শেষ করলাম। সাথে নিজের অশ্রু থামানোর ব্যর্থ চেষ্টা। গুলমোহর, বাহার এবং আনুদ বিষাদে ডুবিয়ে দিয়ে গেল। কতক বই পড়ে অনুভূতির ঘোরে ডুবে যাওয়ার অভ্যাস আমার। গুল-বাহারের স্থলে নিজেদের ভাবলাম। ওদের জন্য বেদনার জলই ঝরল কেবল। গুলমোহর একটি হার্দিক গল্প লেখিকার ভাষায়। এটা গতানুগতিক উপন্যাস না আমার কাছে। লেখিকার সার্থকতা উনার শব্দচয়ন আর অনুভূতি প্রকাশভঙ্গির মাঝে। উনার সাধারণ দিনলিপি পড়তেও অপেক্ষা করি এই কারণে।
Was this review helpful to you?
or
"গুলমোহর" নামের মধ্যেই একটা অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে। বইটিতে লেখিকার অনবদ্য উপস্থাপনা নামের স্বার্থকতা রেখেছে বলা যায়। গুলমোহর মূলত একটা মানবীয় উপন্যাস। কাহিনীটা গুল,বাহার ও আনুদের। গল্পের শুরুর দিকে ঘটনার ঘনঘটা তেমন না থাকলেও পরবর্তীতে মোরে মোরে টুইস্ট রয়েছে। গল্পের প্রতিটা চরিত্রই পাঠককে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে সক্ষম।বিশেষ করে দাদাজি, যিনি ছিলেন, দূরদর্শী,বিচক্ষণ,জ্ঞানী ও প্রজ্ঞাবান একজন চরিত্র।পাঠক হিসেবে গুলমোহর চরিত্রটাকে যে কেউ ভালোবেসে ফেলবে। বঙ্গোপসাগরের তীর থেকে আরব সাগর হয়ে আটলান্টিক মহাসাগরের তীরে গুল ও বাহারের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় একটা চিঠি। এরপর থেকে শুরু হয় গুলবাহারের অধ্যায়।অন্যদিকে অপেক্ষা আর অনিশ্চয়তা বাড়ে আরেকজনের জীবনে....... কার লেখা চিঠি ছিলো,কিই বা ছিলো চিঠিতে জানতে হলে পড়তে হবে "গুলমোহর" বইটি। উপন্যাসের শেষটা এমন নাহলেও পারতো। ক্ষণিকের জন্য মনে হয় আমিই জিঁইয়ে এলাম তাদের জীবন। গুল-বাহারের কষ্ট প্রতিটা পাঠকের হৃদয় স্পর্শ করবে।লেখনীর স্বার্থকতা বোধ হয় এখানেই।
Was this review helpful to you?
or
গুলমোহর! এটা পড়ার জন্য অনেকটা আকুল ছিলাম! অনেক বই পড়েই কেঁদেছি, কিন্তু সত্যি বলতে এমন করে ডুকরে ডুকরে উঠে হঠাৎ করে কাঁদিনি। একবসায় আস্ত ১ টা বই পড়ে শেষ করেছি অনেক আগে বার কয়েক। কিন্তু পিডিএফ পড়ার ইচ্ছে হয়নি, এমনকি ৫/১০ পৃষ্ঠার পিডিএফ পড়াও ধৈর্য্যে কুলায়নি। কিন্তু! গুলমোহর! এটা হার্ডকপি সংগ্রহ করতে পারিনি তখনও। কোন একটা সুযোগে পিডিএফ পেয়েই পড়তে শুরু করছিলাম, রাতে পিডিএফ টা পাওয়ার পর ভাবছিলাম কখন সকাল হবে, কখন শুরু করবো! আদৌ কি ধৈর্য্যে কুলোবে, চোখেঁ সইবে, ঝাপসা হয়ে আসবে না তো, পড়ার ইচ্ছে টা কমে যাবে না তো!! এত কিছু ভেবেও পিডিএফ থেকেই শুরু করে একবসাতেই শেষ করলাম, কেননা এটা তো এমন বই মনে হয়েছে আমার যেটা শেষ না করে উঠতে দিচ্ছিলোনা! আমি আমার অনুভূতি টুকু বুঝাতে পারবো না হয়তো! খুব গুছিয়ে লেখার শব্দ আমার জানা নাই। কিন্তু এটা পড়ার পর একজন সাধারণ পাঠক হিসেবে যেই ঘোরের মধ্যে ছিলাম কয়েক দিন তা ঘুঁচতে বেশ সময় লেগেছে! পড়া শেষ হতেই, অনেকগুলো প্রশ্ন আনমনে লেখিকা কে করেছিলাম, " কেন গুলমোহর কে মেরে ফেললেন! কেন ওদের বিচ্ছেদ ঘটালেন! কেন ওদের মিল হওয়ার সম্ভাবনা টুকু কে ক্ষীন করে দিলেন! " গুল-বাহারের বিচ্ছেদের রেষ আমার মনে কদিন থাকবে জানিনা! কিন্তু সত্যি বলতে এটা এমন একটা উপন্যাস যেটা পাঠককে এমন করে কাঁদাতে পারে, সাইলেন্টলি টুকরো টুকরো রিমাইন্ডার দিতে পারে! যেটা লেখিকার লেখা টাকে গল্প কিংবা উপন্যাস নয় একটা জীবন্ত কাহিনী বলেই মনে হয়, যার রেষ ভুলতে চাইলেও ভূত হয়ে মাথায় চেপে রয়। গল্পটা এমন না হলেও পারতো! গুল-বাহার এর দেখা হলেও পারতো! এমন টা হয়তো প্রত্যেক পাঠক ই পড়ার পর একবার হলেও ভেবেছে, মিল না করে বিরহে এসে শেষ হয়েছে ভেবে চাপা একটা ক্ষোভ ও হয়তো হয়েছে, হয়তো কি আসলেই হয়েছে, যার হয়েছে সেটা আমি, তাই মনে হলো হয়তো আরো কারও হয়েছে। আর এখানেই লেখিকার সার্থকতা, লেখিকা হওয়ার সার্থকতা। একটা গল্প এত সুন্দর হয় কি করে, এতটা সুন্দর করে কিভাবে লিখে একটা মানুষ! সেই লেখা আবার পাঠককে বিচ্ছেদের অনলেও পোড়ায়! সাধারন একটা গল্পের কি অসাধারণ ক্ষমতা!!! গোটা গল্প বুকের মাঝে কিভাবে দাগ কেটে যায়, কিছুটা সুখকর, রোমাঞ্চকর অনুভূতির মিশেলের পর দমকা হাওয়ার মতো কান্নারা কিভাবে এসে জটলা পাকায় সেটা এটা শেষ করার পর বুঝা যায়! আসলেই গল্পটার নাম গুলমোহর না যতক্ষানি, গুলবাহার তার থেকে বেশি ততক্ষানি। পরিশেষে রবের কাছে একজন পাঠক হিসেবে এটাই আর্জি যে রব লেখিকার লিখনিতে, চিন্তা শক্তিতে অফুরন্ত বারাকাহ দিক। পাঠক মনে এমন গভীরে লিখনি শক্তির ছাপ ফেলে যাওয়ার তাওফিক দিক। আর অবশ্যই উপকারী জ্ঞান দানের তাওফিক দিক,আমিন?
Was this review helpful to you?
or
❍ অক্টোবর মাস নিয়ে সবার নানান সমাচারের সারনির্যাস থেকে যা পেলাম— সমস্ত বিষাদের গলিত রূপের সমাহার হলো অক্টোবর। অদ্ভুতভাবে আমিও গুলমোহর এবং তাহিরা পাঠ করলাম অক্টোবর মাসে। সত্যিই কি এই অক্টোবর মাস জুড়ে কেবল বিষণ্ণতা আর বিমর্ষতার ছড়াছড়ি? এজন্যেই বুঝি আমার মন খারাপিটা একটু ভিন্ন মাত্রা পেয়েছিলো? যাইহোক, কাকতালীয় ভাবে হলেও একই সময়ে এতগুলো তাহিরার পাঠকের কাতারে শামিল হতে পেরে যুগপৎ আনন্দিত এবং বিস্মিত হচ্ছি। সাথীদের "গল্প বলেন গল্প বলেন" রবে বাধ্য হয়েই একপ্রকার গল্প পাড়তে বসলাম। যাবতীয় অযোগ্যতা স্বীকার করেই সবাইকে "তাহিরা" এবং "গুলমোহর" বলা শুরু করলাম। ছেঁড়া ছেঁড়া ভাবে পুরো গল্পে জগাখিচুড়ি পাকিয়ে কাকের ছা বকের ছা করে যেভাবেই পারছিলাম আরকি। তারা গল্পটা শুধু শুনছিলই না বরং গিলছিল— এই আশায় যে, শেষে গিয়ে তাদের অন্তরটা শুধু শান্তই নয় এমনকি প্রশান্তও হয়ে যাবে। কিন্তু শেষে আসল কাহিনি বলেই পড়লাম বিপাকে। লেখিকার বদলে আমিই হয়ে গেলাম একরাশ বিরাগভাজনের শিকার। আরে আশ্চর্য! ওটা আমি লিখেছি নাকি যে তোমরা আমাকে এমন করছো? ভেবে কুল পাচ্ছি না এই কজনের সামনেই আমার এই অবস্থা হলে লেখিকাপু আপামর জনতাকে কীভাবে সামলাচ্ছেন! সত্যি বলতে কি, এতবেশি জিজ্ঞাসা আর কোনো বই পড়েই বোধহয় জাগেনি। তাই মারফিয়াপুর সাথে গলা মিলিয়ে আমারো বলতে ইচ্ছে করছে মারজানাপুকে শুধু পাঠকের কাঠগড়ায়'ই নয়; বরং সমস্ত পাঠকের যাবতীয় জিজ্ঞাসাকে একাট্টা করে সেই স্তুপে আপুকে ফেলে দূরে দাঁড়িয়ে আপুর নাকানিচুবানি খাওয়ার তামাশা দেখা উচিত। হয় এভাবেই হাবুডুবু খেতে থাকেন; নচেৎ ওখানে বসেই পাঠকদের দিল ঠাণ্ডুককারী আরেকটি বই উপহার দিয়ে মুক্তির সুলুক সন্ধানে ব্যতিব্যস্ত হোন। সবিশেষে আপুর শুভকামনায় দূরের এক হিতাকাঙ্ক্ষীর আন্তরিক আর্যি— আপুর বইগুলো যেন সর্বমহলে পাঠকপ্রিয়তা পান এবং সর্বাধিক প্রচার প্রসার লাভ করে। আগামীতে রাব্ব যেন আপুর মাধ্যমে আরও উত্তম কিছুই উপহার দেন জাতিকে! এই প্রত্যাশায়...... পুনশ্চঃ নুরজাহান এবং খুশবুর অপেক্ষায় রইলাম কখন ঘ্রাণে মোহিত হবো! উফফ এটুকু ভাবতেই আনন্দ-বেদনা দুটোই যেন সম্প্রসারিত হচ্ছে প্যারালালে..?
Was this review helpful to you?
or
আগে প্রচুর বইপোকা ছিলাম। পরে বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে বই পড়া অফ রেখেছিলাম। কিন্তু গুলমোহর পড়ার পর এটা বুঝলাম যে ,শত ব্যস্ততার মাঝে বই পড়াটাও একটা আনন্দের বিষয় । গুলমোহর আমি পরপর দুবার শেষ করছি । সত্যি খুব সুন্দর বই ছিল। আমি প্রথম একটা রিভিউ দিয়েছিলাম, কিন্তু বুঝতে পারছি না ওটা send হয়েছে কিনা। তাই দ্বিতীয়বার দিলাম
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ, একটা বই, বেশ ভালো লেগেছে
Was this review helpful to you?
or
বহুদিন পর এক বসায় শেষ করা একটা বই।যেটা পড়ার পর আশেপাশে বই পড়তে পারে এমন সবাইকে জোর করে পড়তে দিছি।হিহি।পড়া হয়েছে আরো ৬মাস আগে তবে এখনো আমি গল্পটা চিন্তা করতে করতে নিজেকে হারিয়ে ফেলি প্রায়ই।
Was this review helpful to you?
or
লেখিকার শব্দের গাঁথুনি চমৎকার।পুরো কাহিনীর আবহ ভীষণ জীবন্ত আর শিহরণ জাগানিয়া। পছন্দের বইয়ের তালিকায় গুলমোহর যুক্ত হলো।
Was this review helpful to you?
or
'গুলমোহর' উপন্যাসকে কোনো জনরায় আসলেই কি ফেলা যায়? সমসাময়িক উপন্যাস বলেছেন বিদগ্ধ সমাজ। আমার মনে হয়েছে গুলমোহর যতোটা না সমসাময়িক তারচে প্রাসঙ্গিক হয়ে থাকবে চিরায়াত অনুপম শৈল্পিক প্রেমময়তার সংযমী প্রকাশের জন্য। পুরো উপন্যাস জুড়ে বাহার আর মোহরের চরিত্র, ব্যক্তিত্ব মাধুর্যের এক অনবদ্য সীমারেখা যেটি পাঠককে পরিতৃপ্তি করে শেষ পর্যন্ত।
Was this review helpful to you?
or
বোন পড়তে শুরু করেই বলছিলো আবিয়াত্তাদের জন্যই এইসব উপন্যাস! আমি বললাম, নাহ! বরং আমি মনে করি, আবিয়াত্তাদের এইটা না পড়াই উত্তম। কেনো? কারণ পড়ার পর "Where is my বাহার" বলিয়া বুকে চিন চিন ব্যথা উঠলে কর্তৃপক্ষ তো এর দায়ভার নিবে না, তাই না! এই উপন্যাসে সবচে মনোমুগ্ধকর চরিত্র ছিলো দাদাজানের। যিনি একজন রহস্যময় পুরুষ। আমার বরাবরই রহস্য পছন্দ, তাই দাদাজানের চরিত্রই আমার কাছে সেরা। প্রচলিত গ্রাম বাংলার কুট-কাচালিময় পরিবেশ থেকে বাঁচিয়ে লেখিকা সেই চক্ষুশীতলকারী পরিবারের ব্যাখ্যা দিয়েছেন সেই পরিবেশটা তৈরি করার পেছনে মূখ্য ভুমিকা বাড়ির কর্তার থাকে বলে আমি মনে করি। এরপর আসা যাক এন্ডিং নিয়ে। এন্ডিং আমার ভালো লেগেছে আলহামদুলিল্লাহ। সেটার ব্যাখ্যা লিখতে হলে বিশাল ইতিহাস হয়ে যাবে, তাই সেদিকে আর আগালাম না। পড়তে পড়তে আমি ভাবছিলাম এতো ভালো একটা উপন্যাস! এর তো সিরিজ হওয়া উচিত! পরের সিরিজের নাম 'গুলমোহর ২' ঠিকও করে ফেলেছিলাম। পরে এন্ডিং এ এসে বুঝলাম, গুলমোহর তো পরিপূর্ণ! এর আর কোনো পার্ট হতেই পারে না! তবে পাঠক হিসেবে লেখিকার কাছে আবেদন তিনি যেন দাদাজানের উপর বই বের করেন। পরবর্তী কোনো বইয়ে হয়ত নূরজাহানকেও পাবো! ইনশাআল্লাহ। শুধুমাত্র স্পয়লার হওয়ার ভয়ে আমি আমার অনেক পাঠ্যানুভুতির উপর লাগাম টেনেছি। তবুও কিছু লিখবো আজ! উপন্যাসে একটা চিঠি আছে, যখন পড়ছিলাম এমনভাবে লজ্জা পাচ্ছিলাম মনে হচ্ছিল আমার জন্যই লেখা হয়েছে বহু শতাব্দী পূর্বে! মনে মনে চাচ্ছিলাম উপন্যাসটা এখানেই থেমে যাক, এখানেই থেমে থাকুক! সবকিছুর সমাপ্তি জানতে হয় না। কিছু বিষয়ের অসমাপ্তিতেই তৃপ্তি! লেখিকা তো আমার মনের মতো চলবেন না। তিনি তার আপন গতিতে গল্পের মূল টুইস্ট আনলেন এরপরই! আমি জমে গেলাম! হার্টবিট কি মিস হয়েছিল এরপর? আমি জানি না! তবে ঐ সময়টা আমি অজানা আশঙ্কায় বই পড়ায় বিরতি দিয়ে শান্তি পাচ্ছিলাম না! এবার একটু বাস্তবতায় ফেরা যাক, আমার নিরিখে বাস্তবে বাহাররা exist করে না। আর exist করলে বাহাররা তাদের ফাস্ট চয়েজেই সেটেল হয়ে যায়। কিংবা বাস্তবতায় গুলবাহারে মোহররা হাসে না। সেখানে ভীনদেশী তাঁরাই হেসে খেলে বেড়ায়। দাদাজানের মতো বাড়িতে মুরুব্বি থাকাও নিয়ামাহ। গুলমোহরের ব্যাপারে অনেক কথাই তো বলা হয়ে উঠেনি! অন্যতম একটি পছন্দের ফুল আমার! কৈশোরের সুপ্ত বাসনায় গুলমোহরও বিশাল জায়গা জুড়ে রয়েছে। যাকে দূর থেকে দেখেই চক্ষুশীতল করতে হয়, ধরা যায় না ছোঁয়া যায় না! ধরলেই যেন প্রজাপতির ডানার মতো ভেঙে ভেঙে পড়বে! সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো এই উপন্যাস আমার সামনে আসার পরই আমি গুলমোহর কে গুলমোহর নামেই চিনলাম! তারপর জানলাম নামকরণের মধ্যেও ধর্মীয় পলিটিক্স আছে! : ) আচ্ছা লেখিকার পরবর্তী লেখা কাকে নিয়ে হতে পারে? দাদাজান নাকি নূরজাহান? বা অন্য কোনো রহস্যময়ী? I'm waiting!
Was this review helpful to you?
or
#বুক_রিভিউ || এক নজরে বই পরিচিতি || বইঃ গুলমোহর রচনাঃ আফিফা মারজানা প্রচ্ছদঃ মাহজাবীন আকতার বানান ও ভাষারীতিঃ শাকির মাহমুদ সাফাত পৃষ্ঠাসজ্জাঃ মুহারেব মুহাম্মাদ মুদ্রণ ও বাঁধাইঃ জাজিরা প্রিন্টিং সল্যুশান প্রকাশনীঃ Penfield Publication || অবতরণিকা || লেখিকা আফিফা মারজানার ইচ্ছে গল্পকার হবার। তাই তিনি শব্দে শব্দে বুনন করেন গল্প। 'ইয়াসমীন' বইটিতে ছিল সাতটি ছোটগল্প। আর 'গুলমোহর' বইটিতে রয়েছে একটি গল্প, একটি ঘটনা। পুরো বইটি জুড়ে গুলমোহরময় আলাপ চললেও একে ছোটগল্প বললে সঠিক বৈকি ভুল হবে না। ঐ যে রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পের সংজ্ঞানুযায়ী আরকি। লেখিকা বোধ হয় শেষটুকু পাঠকদের উপর ছেড়ে দিয়েই নিশ্চিন্ত থাকেন। || বই প্রসঙ্গ || 'গুলমোহর' একটি গল্প। কয়েকটি জীবনের কাহিনীকথন। লেখিকার ভাষ্যমতে যা নিতান্তই একটি মানবীয় গল্প। ধীরলয়ে স্থিরতার সাথে শুরু হয়ে যার সমাপ্তি ঘটেছে এক আকাশ বিরহের সমন্বয়ে। || বই বৃত্তান্ত || নানান রকমের চরিত্র নিয়েই একটি গল্প বেড়ে উঠে। তেমনি 'গুলমোহর' - এ রয়েছে ভিন্ন জাতের কয়েকজন চরিত্র। দাদাজান, ছোটচাচা, ফাতিমা, গুলমোহর, বাহার, শাকির, আনুদ, ফাহাদ - কত বিচিত্র রকমের চরিত্র। প্রতিটি চরিত্রের পেছনে আছে আলাদা আলাদা গল্প, কিন্তু সব কি আর ফুটে উঠে শুধুমাত্র একটি বইয়ে? কিছু কিছু সময় পাঠকদের অনুভব করতে হয়, কল্পনায় পড়ে নিতে হয় সেসব অদৃশ্যমান গল্পকথা। এই পর্যন্ত 'গুলমোহর' কে পাঁচবার পড়ে তাই বুঝলাম। || সংক্ষিপ্ত প্লট || আঠারো বছর বয়সী তরুণীর সাথে গল্পের যাত্রাটা শুরু হয় শরতের এক অনিন্দ্য সকালে। ভোরের প্রথম আলোয় যে কানাডার এক অখ্যাত বেঞ্চিতে বসে বসে ভাবে নিজ মাতৃভূমির কথা, নিজ পরিবার পরিজনদের কথা। গল্পের পরতে পরতে পৌঁছে যাওয়া যায় কানাডা থেকে বাংলাদেশ, কখনোবা সুদূর কাতারের রাজপ্রাসাদে, আবার কখনোবা নির্জন সমুদ্রতীরে। দাদাজানের রহস্য, বড়চাচীর মায়া, ছোটচাচার স্নেহ, শাকিরের বন্ধুত্ব, বাহারের সরলতা, মোহরের অন্তর্মুখিতা, আনুদের প্রেম, ফাহাদের দায়িত্বশীলতা - সবকিছুর সংমিশ্রণ এখানে। যা ধীরে ধীরে এগিয়ে হুট করেই সমাপ্তি ঘটে যায় নূরজাহানের আগমনে। || পাঠ্যানুভূতি || প্রথমবার পড়ার সময় এক অজানা আতঙ্কে 'গুলমোহর' পড়ছিলাম ধীরে ধীরে। উৎসর্গ, ভূমিকা, শুরুর কথা - সবকিছুই পড়ছিলাম। একই লাইন দু'বার করে। তারপর মনে মনে সাহস জুগিয়ে ডুব দিলাম মলাটের ভাঁজে। পড়তে পড়তে নিজের শরীরে কাঁপুনি লক্ষ্য করছিলাম বারংবার। বিশেষ করে দাদাজির সঙ্গে মোহর ও বাহারের খণ্ড খণ্ড স্মৃতিগুচ্ছ আমাকে ক্ষণে ক্ষণে হাতছানি দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল দশ বছর আগের তাপদাহ গ্রীষ্মের কোনো এক সোমবারে। স্মৃতিতে ভাসছিল প্রিয় মানুষটির সঙ্গে আমার অতিবাহিত সময়গুলো, যিনি তাঁর মৃত্যুর বছর দশেক পরেও আমার অন্তঃকরণের সিংহভাগ জুড়ে আছেন। এতসব কারণে প্রথমবার পড়ে অনেককিছুই ঠাহর করতে পারি না। শুধুই অনুভূতির সাগরে যেন অবগাহন করেছি। দ্বিতীয়বার পড়বার সময় সেসব বুঝলাম। মনে পড়লো একবার একজন প্রিয় পরামর্শদাতা বলেছিলেন, "আপনি যখন কোনো বই পড়বেন তখন শুধুই পড়বেন, ঙকোনোকিছু বুঝবার দরকার নেই। অতঃপর দ্বিতীয়বার যখন পড়বেন তখন আগের বারের চেয়ে ধীরে ধীরে পড়ে প্রতিটি অক্ষর বুঝবার চেষ্টা করবেন। তখন দেখবেন এক একটি অক্ষরের পেছনে লুকায়িত গল্পগুলোও চোখের সামনে ভাসবে।" তাই তো আনুদকে প্রথমবার অসহ্য লেগেছিল, পরবর্তীতে দ্বিতীয়বার পড়ে বুঝলাম তার তো কোনো কসুর নেই। প্রতিটি মেয়ের হৃদকুহরে জীবনসঙ্গী নিয়ে সুপ্ত কিছু অনুভূতি জমানো থাকে। বাহারের সংস্পর্শে এসে তাঁর অনুভূতিগুলো ডানা ঝাপটালো কেবল। অতঃপর সে সময় এলো যখন বাহার সিদ্ধান্তহীনতার অতল সাগরে ডুবে গেল, তখন প্রথমবারের মতোই পৈশাচিক আনন্দ উপভোগ করলাম। প্রতিকূলতার ঝড়ঝাপ্টা শেষে যখন প্রেমবিহীন সাক্ষাৎ ঘটলো, তারা পাড়ি জমালো সেই সমুদ্রতীরে। সুখ যেন ধরা দিতে গিয়েও দিল না। বসন্তের রঙিন ফুলেদের ন্যায় ভালোবাসারা যখন ধরা দিল তখনি বেদনার প্রতীক্ষা শুরু হলো। এই প্রতীক্ষার সমাপ্তি কোথায়? খোদ পাঠকরাই তা জানে। || পছন্দের একাংশ || ◇ সে বললো, আমাকে একজোড়া সাদা আর নীল শাড়ি কিনে দিন একরঙা। - সাদা শাড়ি কেন কিনবে! এ কী কথা মেয়ের! - শিউলির মালা খোঁপায় জড়াবো বলে। ◇ বাড়ি যাবে? - আপনি যেথায় নিয়ে যান, সেথায় যাবার জন্য পথে নেমেছি। ?পরিশিষ্টঃ 'গুলমোহর' এখন শুধু আমার কাছে আঠারো বছর বয়সী এক তরুণীর নাম নয়, একটি বই নয়। এখন এই আমার কাছে কি হয়ে উঠেছে তা ভাষাতীত। এটি এমন একটি গল্প, যা শরতের সুবহে সাদিকে আবির্ভূত হয়ে কোনো এক শরতের বিকেলেই যার সমাপ্তি ঘটেছে। তিনজন জলজ্যান্ত মানুষের পর এখন গুলমোহর নামক কল্পিত কাহিনীটি আমার হৃদয়ে নিজের স্থান গেড়ে বসেছে গভীরভাবে। একবছর আগে কৃষ্ণচূড়ার প্রেমে পড়েছিলাম। কিভাবে, কেন সেসব অনেক লম্বা কাহিনী। কিন্তু কেন জানি না যে লাল রং চোখে বিচ্ছিরি ভাবে ধরা দিত, সেই লালরঙা এই ফুলটিই আমাকে বাধ্য করেছে তাকে ভালোবাসতে! আর এখন কৃষ্ণচূড়া দেখলেই আমার মনে পড়বে গুলমোহরকে, নীল রং দেখলে বেদনা নয় বইটির প্রচ্ছদ ভেসে উঠবে চোখের তারায়। তারপর একে একে এর সবটুকুই। নিস্তব্ধ প্রহর পেলেই স্মৃতিতে ভেসে উঠবে গুলমোহর। আর কখনো রাগে হনহনিয়ে কোথাও থেকে চলে আসলে মনে পড়বে গুলবাহারের গল্প। আজ থেকে আমার জীবনের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছে এই কৃষ্ণচূড়া, এই গুলমোহর। রোজ রোজ মনে পড়বে না একে। কিন্তু যখনি মনে পড়বে উদভ্রান্তের মতো অশরীরী হুঁ হুঁ কান্না এসে ধরা দিবে চারিপাশে। রুক্ষ শীতকালে বিদেশ-বিভূঁইয়ে ঝরে পরা ম্যাপল পাতার মড়মড় আওয়াজে কতশত গুলবাহারের গল্প উত্তুরে হাওয়ায় বিলীন হয়ে যায়, যা কেউ কখনো দেখে না, অনুভব করে না। এটি শুধু এবং শুধুই একরাশ মানসিক যন্ত্রণা......! লেখায়ঃ তাসনিয়া তারা
Was this review helpful to you?
or
এক বসায় বইটা শেষ করে উঠেছিলাম। শেষ হওয়ার পর কেমন যেনো ঘোরের মধ্যে ছিলাম। "এটা কী হলো?" "কেন হলো?" কতশত প্রশ্ন! কিন্তু সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হয়না। তাই খুঁজিনি। কিন্তু বইটা একবার পড়ার জন্য আরো অনেককে সুপারিশ করেছি। লেখিকার নতুন বইয়ের অপেক্ষায়...
Was this review helpful to you?
or
বইটা পড়া হয়েছে প্রায় এক বছর আগে। কিন্তু এর ঘোর এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি আমি। এটা পড়ার পর আমার আজীবনের পছন্দের তালিকায় সামিল হয়ে গেলো বইখানা। লেখিকা এমনভাবে প্রত্যেকটা চরিত্র তুলে ধরেছেন যেনো মনে হবে খুব চেনাজানা কেউই। আর মোহর তো যেনো কত বছর ধরে আপন। এমনভাবে লিখেছেন একটা পাতা পড়ার পর পরের পাতায় যেতে মন উদগ্রীব হয়ে থাকতো। এখনো প্রত্যেকটা ঘটনা জীবন্ত লাগে আমার। শান্ত নদীর ধারে বসে থাকলে যেমন একটা শান্তি শান্তি অনুভব হয় বইটা পড়তে গিয়ে তেমন অনুভব হয়েছে। আর শেষদিকে? সেটা নিজেরা না পড়ে অনুভব না করলে বুঝবেন কী করে? আল্লাহ লেখিকাকে আমাদের জন্যে আরো অনেক অনেক সুন্দর সুন্দর বই লিখার তাওফিক দিক এবং লেখিকার লিখায় বারাকাহ দান করুক। আমীন।
Was this review helpful to you?
or
' গুলমোহর ' সম্ভবত অনেক দিন পর এতো সুন্দর একটা উপন্যাস পড়লাম। শুরুতে সাধারণ লাগছিলো অন্যান্য উপন্যাসের মতনই, কিন্তু ধীরে ধীরে যতই পড়ছিলাম মনে হচ্ছিলো সামনে কি হবে, কি হবে শেষ টায়! এতো অসাধারণ লাগছিলো, কি সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন লেখিকা। শেষের দিকে খেয়াল করলাম চোখ বেয়ে পানি পড়ছে...। কেমন যেনো এক বিষাদ বিষাদ অনুভূতি.. যারা উপন্যাস পড়তে ভালবাসেন নিঃসন্দেহে এটা পড়তে পারেন।
Was this review helpful to you?
or
রকমারীতে গুলমোহরের রিভিউ লেখার সুযোগ পেয়ে দুইকথা বলার লোভ সামলাতে পারলাম না। গুলমোহর পড়েছি অনেক আগে, অথচ মনে এখনো গুলমোহরের ছাপ রয়ে গেছে পুরোটাই। একটি আনমনে তরুণী প্রেমের ছোঁয়ায় ছটফটে হয়ে ওঠার পর জীন্দেগীর আচানক ট্রাজেডী কী করে তাকে ডুবিয়ে দেয় পুরোটাই গুলমোহর তার যথাযথ ছবি। 'গুলমোহর' প্রেম কিংবা সামাজিক বই মনে হলেও বইটি আসলে রাজনৈতিক। স্বৈরশাসকের আমলে হুট করে 'আয়নাঘরে' হারিয়ে যাওয়া মানুষের পরিবারের জীবনবৃত্তান্ত গুলমোহর তুলে ধরেছে আয়নাঘরের কথা আমরা জানার আগেই। স্বৈরাচারের আমলেই এমন একটি বই যিনি লিখতে পারেন, তাকে সাহসী না বলে উপায় নেই। যে বই মনে ছাপ রেখে যায় বহুদিন সে বইয়ের লেখক সফলও। লেখকের কাছে আবদার— 'আরো অনেক অনেক বই চাই।'
Was this review helpful to you?
or
গুলমোহরকে নিয়ে নতুন করে কিছুই বলার নেই! আমার দীর্ঘ বইপড়ার জীবনে বই পড়ে কাঁন্ন্া করার গল্প খুব কম। গুলমোহর প্রথমবার যখন আমি পড়েছি একদম ঘোর লেগে ছিলাম বেশ কতদিন। ২য় দফায় কদিন আগে পড়লাম একদম ধীর গতিতে। গুলমোহরের দাদজানের দেওয়া বাক্সের মতো এ বইটা শেষ করতে মন চাইতো না। মনে হতো এই " গুলমোহর" শেষ হলে আমি ক্যামনে থাকবো? পড়ন্ত বিকেলে মাঝে মাঝেই মনে হয় "গুলমোহরের কথা। এককথায় অসাধারণ একটা সৃষ্টি আফিফা মারজানার! এই বইটা বেস্টসেলার হওয়ার দাবী রাখে। লেখিকার কলম বারাকাহ দিয়ে ভরিয়ে দিন আমার রব্ব। আমিন।
Was this review helpful to you?
or
এই বইটি এতো সুন্দর সম্পর্কগুলো তো আর ও মধুর শালীন রোমান্টিক আর ট্রাজিডি উপন্যাস ? যা আপনাকে কাদাবে? এই উপন্যাসের চরিত্রগুলোর আখলাক এতো সুন্দর ,আসলে লেখিকার লেখন এতো সুন্দর মনে হবে কেনো শেষ হলো এ উপন্যাস!!
Was this review helpful to you?
or
খুব সুন্দর একটা উপন্যাস, যার শেষটা খুব অনাকাঙ্ক্ষিত, মানুষের জীবন কতটা বেদনার হতে পারে,কতএা গোছালো মানুষের জীবনও এক মুহুর্তে এলোমেলো হতে পারে, ভালোবাসা কতটা ভয়ংকর সুন্দর এবং পবিত্র হতে পারে এই গল্পটা তার উদাহরণ। হালাল সম্পর্ককে কেন্দ্র করে এত সুন্দর গল্প লেখার জন্য লেখিকা অসংখ্য ধন্যবাদ।
Was this review helpful to you?
or
বহুদিন পরে একটা বই পড়লাম এক নিঃশ্বাসে। শেষ করার পরে দুই দিন hangover ছিল । গল্পটা এত দুঃখের ?। এরপরে একটা happily ever after story লিখবেন please. বইটি অসাধারন। যারা পড়েন নাই তারা একটি বড় মিস করেছেন । আমার মত অলস পাঠকের জন্য এটি উপহার। যারা নিয়মিত পাঠক না কিন্তু বই পড়ার অভ্যাস করতে চান তারা এ ধরনের বই দিয়ে পড়ার অভ্যাস করতে পারেন কারন এটা চুম্বকের মত পাঠককে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখবে। শুভকামনা পরবর্তী বই এর জন্য।