User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Good books with fastest delivery.
Was this review helpful to you?
or
Helps to know Jibonanondo Das a little more, not from just a reader's point of view but from his wife's one.
Was this review helpful to you?
or
[পাঠ পর্যালোচনা ১২] কবি জীবনানন্দ দাশকে বলা হয় রবীন্দ্র পরবর্তী কবিদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি। তিনি বাংলা সাহিত্যের নির্জনতম কবি নামেও সমভাবে পরিচিত। প্রচারবিমুখ এই কবি যেখানে নিজের সিংহভাগ লেখাই জীবদ্দশায় রেখেছিলেন অপ্রকাশিত, সেখানে নিজের জীবনী টাইপের কিছু যে তিনি লিখে যাবেন না তা ধারণা করতে দ্বিধা নেই। অবশ্য ট্রাম এক্সিডেন্টে মারা না গেলে আত্মজীবনী লিখতেন কিনা সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত নই, যেমন নিশ্চিত নই তিনি এক্সিডেন্টেই মারা গিয়েছেন নাকি সেটা আত্মহত্যা ছিল! নিজের ব্যাপারে কিছু লিখে না গেলেও এই নিভৃত কবির জীবনযাপনের গল্প আমরা বিভিন্ন সময়ে কবির সহচর্যে আসা বিশিষ্টজনদের লেখনী থেকে জানতে পেয়েছি। তাতে তাঁর ব্যক্তিজীবন সম্পর্কে—একাকীত্ব, বেকারত্ব, সাহিত্য সমাজে উপহাসের পাত্র হওয়া, অর্থকষ্ট এবং অসংসারী মানুষ ও সংসার জীবনে অসুখী—এই কথাগুলোই বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে। যেগুলো পড়ে আমাদের এই মনে হতে বাধ্য যে জীবনানন্দের জীবনে কখনই কোন সুখের ঘটনা ঘটেনি, পৃথিবীর পথে তিনি মানসিকভাবে যেমন একা ছিলেন, তেমনি একা ছিলেন বাহ্যিক দুনিয়া থেকেও, যেন জীবনে চলার পথে তিনি কখনও কাউকে পাশে পাননি। এসবের বাইরেও যে একজন হাসিখুশি জীবনানন্দ দাশ থাকতে পারেন; যিনি খুব কম কথা বললেও মাঝে মাঝে একটা দুইটা কথা দিয়ে নিজের রসবোধের পরিচয় দিতে যিনি কুণ্ঠা বোধ করেন না; যিনি একজন স্নেহময়ী পিতাও হতে পারেন; যিনি স্ত্রীর দুঃখ বুঝতে পারেন; একজন উদার স্বামী যে কিনা সেই সময়ে দাঁড়িয়ে নিজের স্ত্রীকে বাংলা মঞ্চে অভিনয় করার সম্মতি দিয়েছেন; আবার চিন্তা করেছেন স্ত্রীর পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়েও—এসবের বাইরেও আরও অনেক বিষয় নিয়ে আমরা জানতে পারবো কবিপত্নী শ্রীমতি লাবণ্য দাশের লেখা ‘মানুষ জীবনানন্দ’ বইটি থেকে। খুব সহজ সরল ভাষায় সাধারণ বর্ণনার মধ্য দিয়ে লিখিত এই গ্রন্থটিতে আমরা জীবনানন্দের সাংসারিক জীবন সম্পর্কেই বেশী জানবো। উনার সাহিত্যজীবন সম্পর্কে দুই একটা স্মৃতির বাইরে বা কবিতার বিচার বিশ্লেষণ সম্পর্কে জানা যাবে না তেমন কিছুই। উনার স্ত্রী বাইরে থেকে যতটুকু দেখেছেন, স্বামীর ভেতরের কথাগুলোর মধ্যে যতটুকু যা বুঝতে পেরেছেন তার সবই আছে এই বইয়ে। এবং একজন এমন অসংসারী স্বামীর ব্যাপারেও তিনি খুব রূঢ় ভাষায় বলেননি একটা কথাও। যার দরুণ এই লেখা পড়ে কবিপত্নীর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা তৈরী হতে বাধ্য। এবং জীবনানন্দকে মোটামুটি একজন সুখী মানুষ হিসেবে বেশ কয়েক জায়গায় দেখতে পাওয়া যায় বলে, মনে মধ্যে একধরণের শান্তির উদ্রেক হতে বাধ্য। সর্বোপরী আত্মজীবনী বা জীবনী কোনটাই সম্পূর্ণ সত্য বা মিথ্যা হতে পারে না। তবে অন্যান্য অনেক জীবনীগ্রন্থের তুলনায় অল্প কথার এই বইটিতে কোন কথাই প্রায় ঘুরে ফিরে আসেনি, সময়েরেখা অনেক এগিয়ে গিয়ে আবার পিছিয়ে আসেনি। সহজ সরল ভাষায় লেখা সুখপাঠ্য এই বইটি কবি জীবনানদ ভক্তদের অতিশীঘ্রই পড়ে ফেলা উচিত।
Was this review helpful to you?
or
"এই পৃথিবীতে আমি অবসর নিয়ে শুধু আসিয়াছি -আমি হৃষ্ট কবি আমি একা -ধুয়েছি আমার দেহ অন্ধকারে একা একা সমুদ্রের জলে; " এরকম হাজারো কবিতার জনক জীবনান্দ। স্মৃতির বিস্তিত প্রারন্তে তার হালকা আবছায় সহসা গাঢ় হয়ে মিশে গেছে সাহিত্যের পাতায় পাতায়। কখনো প্রেম, কখনো বিরহ, কখনো নিঃসঙ্গ নাগরিক জীবনের তীব্র হতাশা, কখনোবা আশবাদী এই লেখক। বাস্তব জীবনেও কি এমন ছিলেন? জানতে ইচ্ছা করে না ঠিক কেমন ছিল এই মহারথী যিনি ছাপ রেখে গেলেন এত প্রাগাঢ়...! কেমন ছিলেন মানুষ জীবনানন্দ? চলুন জানা যাক! #বই_প্রসঙ্গ_ও_আলোচনা বইটার লেখিকা লাবণ্য দাশ জীবনানন্দের স্ত্রী, তার কবি প্রতিভার প্রকাশের পূর্ব থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি দেখেছেন এই মানুষটিকে। তার কথায় প্রস্ফুটিত কেমন ছিলেন মানুষটা। মা বাবার মৃত্যুর পর লাবণ্যের ভরণপোষণ হয় জেঠামশাই অমৃতলাল গুপ্তের কাছে। তিনি যখন ইডেন কলেজে ভর্তি হোন তার কিছুদিন পর জরুরী তলবে বাড়িতে আসার পথে জামা জুতোতে কাদা লেগে যায়। সেই অবস্থাতেই তার সাথে কবির প্রথম দেখা হলো ড্রয়িং রুমে। দিল্লীর রামযশ কলেজের টিচার জীবনবাবু । যাহোক তাদের বিবাহ পর্ব চুকে গেল। এর মাঝে জীবনবাবুর আধুনিক মননের পরিচয় দিলেন লেখিকা। গতানুগতিক যৌতুকপ্রথা মানতেন না তিনি, পুর্বে বড় ঘর থেকে বিবাহের প্রস্তাব আসে, সাথে বড় যৌতুকের কথা। সাফ মানা করে দেন বিয়ে করতে জীবনানন্দ। তার মতে বিয়ে করতে হলে কিছু পেতেই হবে তেমন কি কথা! লাবণ্যের সাথে বিবাহের সময় কবিকে একটি আংটি দেয়া হয়েছিল। যেটার জন্যে তিনি কুন্ঠায় ভুগতেন। তখনকার সময়ে মেয়েদের পুরুষদের সামনে যেতে দেয়া হতো না। কিন্তু লাবণ্যকে একবার পুলিশের সামনে যেতে হয়েছিল এবং কবির লেখার খাতা সহ সব তল্লাসী চালিয়ে দুটি বিপ্লবের বই পাওয়া গেল। অতএব লেখিকা বামপন্থী ধরে নিয়ে কথা ওঠল এবং নির্দোষ প্রমাণ হবার পর এত কিছুর জন্যে জীবনানন্দ কিছুই বলেন নি। কবিমাতা কুসুমকুমারী দাশ ছিলেন প্রখ্যাত কবি। কিন্তু বাস্তব জীবনে একজন আদর্শ গৃহিণী ও দরদি মনের। সবসময় দরিদ্রদের সেবা করতেন। সেই সংসার জীবনে জীবনবাবু কেমন ছিল। তৎকালীন কবিদদের সাথে লেখকের সম্পর্ক কেমন ছিল? প্রাতিষ্ঠানিক আচরণ আর সন্তানের প্রতি তার আচরণ আর তার রসাত্নবোধ সব মিলে কেমন ছিল জীবনানন্দ তার একটা বর্ণনা পাওয়া যায় বই তে। কখনো তিনি দায়িত্ববান ও স্নেহময় পিতা হিসেবে বলেছেন, "-নব নবীনের লাগি প্রদীপ ধরিয়া আঁধারের বুকে আমার রয়েছি জাগি! " কখনো তিনি দেখা দিয়েছেন এক আদর্শ শিক্ষক হিসেবে। কখনোবা নতুন প্রজন্মকে কবিতা শুনাতেন প্রাণভরে। " কামনার পিছে ঘুরে সাজোনি উদাসী। ধবল কাশের দলে, আশ্বিনের গগনের তলে তোর তরে রে কিশোর, মৃগতৃষ্ণা কভু নাহি জ্বলে! " তপোবন প্রেমিক কবির জীবনে হাসি আনন্দ বেদনা সব মিলিয়ে সাহিত্যজগতে রেখে গেছেন এক অমর দাগ। তাই কবিপত্নী কবির মৃত্যর পর কি ভাবলেন? জানতে চান? জানতে চান একদম কাছ থেকে! বইটি পড়ুন। #একান্ত_নিজস্ব_মন্তব্য আমার মতে বাংলা সাহিত্য জগতে যে তিনজন কবি থাকলে সাহিত্যে কবিতার ইতিহাস অন্যরকম হতো তাদের মাঝে সবার আগে জীবনানন্দ। গভীর প্রেমের মাঝেও তিনি নিসঙ্গতা পেয়েছেন। " তবু এ মৃতের গল্প; কোনো নারীর প্রণয়ে ব্যর্থ হয় নাই; বিবাহিত জীবনের সাধ কোথাও রাখেনি কোন খাদ, সময়ের উদ্বর্তনে উঠে এসে বধু মধু-আর মননের মধু , দিয়েছে জানিতে; হাড়হাবাতের গ্লানি বেদনার শীতে এ-জীবন কোনদিন কেঁপে ওঠে নাই; তাই লাশকাটা ঘরে চিৎ হ'য়ে শুয়ে আছে টেবিলের পরে। " এমন ভাবটা আসল কোথা থেকে তা নিশ্চয় একটা বড় প্রশ্ন। যদিও জবাব বইটাতে পাবেন না, তবুও জানতে পারবেন এই ভাবটা যে ধারণ করেছিল সেই মানুষটা কেমন ছিল। বইটা ভালো লাগার কারণ: ★ ভাষাগত দিকটা খুবই স্বতঃস্ফুর্ত, খুব কম শব্দে ভাবটা সাবলীলভাবে ফুটে ওঠেছে। ★ বইটা প্রথম পুরুষে রচিত হলেও এটা পুরোপুরি রোজনামচা ধরনের হয়ে যায়নি আবার একেবারে নিরস কিছু হয়ে যায়নি। যাহোক, আমার বইটার সবচেয়ে প্রিয় অংশ শেষের কয়েকটা পেইজ আর সাথে দেয়া জীবনানন্দের কবিতার অংশবিশেষ। যার সব মিলিয়ে জন্ম হলো একটা #মানুষ_জীবনানন্দ! একদম শেষে আমার খুব প্রিয় একটা কবিতার অংশবিশেষ দিলাম: "শেষ হ’ল জীবনের সব লেনদেন, বনলতা সেন। কোথায় গিয়েছ তুমি আজ এই বেলা মাছরাঙা ভোলেনি তো দুপুরের খেলা শালিখ করে না তার নীড় অবহেলা উচ্ছ্বাসে নদীর ঢেউ হয়েছে সফেন, তুমি নাই বনলতা সেন। তোমার মতন কেউ ছিল কি কোথাও? কেন যে সবের আগে তুমি চলে যাও। কেন যে সবের আগে তুমি পৃথিবীকে করে গেলে শূন্য মরুভূমি (কেন যে সবের আগে তুমি) ছিঁড়ে গেলে কুহকের ঝিলমিল টানা ও পোড়েন, কবেকার বনলতা সেন। "