User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
khub sundor ekta boi..... economy k notun kore vabte lagben ai boi poree....
Was this review helpful to you?
or
অর্থনীতির মতো জটিল বিষয়কে সব পাঠকের উপযোগী করে চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করেছেন। অর্থনীতির ভালো খারাপ ও অন্ধকার দিকসমূহ কিভাবে বাস্তবায়ন হয় তা সমাজ, ব্যাক্তি জীবন বা দেশের উপর কিরুপ প্রভাব পড়ে তার বিস্তারিত জানা যাবে এই বই টি পড়ার জন্য। সবার জন্য সুখপাঠ্য একটি দরকারি বই।
Was this review helpful to you?
or
অবিশ্বাস্য, অসাধারণ!! প্রতি পৃষ্ঠায় এত চিত্তাকর্ষক আর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমি এর আগে কোন বইতে পেয়েছি মনে করতে পারছি না। অল্প জ্ঞান আর অধিক জ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য করে দেবে এই বই। এর আগে যেসব বিষয়ে দুই লাইন জানতাম, সেইসব বিষয়ে দুই পৃষ্ঠা পড়ে আগের ধারণা পুরো বদলে গেছে। বাংলাদেশের কেউ এমন বই লিখতে পারে তা এই বই না পড়লে বিশ্বাস হত না। মাস্ট রিড। এই বই পড়ার পরে আকবর আলি খানের অন্য বইগুলো না পড়ে থাকা অসম্ভব।
Was this review helpful to you?
or
অর্থনীতির অ ক খ না জানা মানুষ আমি, এটাই প্রথম। অনেক বিশ্লেষণ আমরা সাধারণ দৃষ্টিতে মনে হয় ভালো কিন্তু আদৌ তা আমাদের জন্য ভালো কিনা তা চিন্তায় ফেলে দিবে। অর্থনৈতিক তত্ত্ব অনুসারে দানের ক্ষেত্রে নিকৃষ্ট পণ্য দান করা উচিত। নিকৃষ্ট পণ্য মানে খারাপ পণ্য বোঝানো হয় নি এখনে। এর মানে হচ্ছে যে পণ্য চূড়ান্ত ভোক্তা বা দান গৃহিতার নিকট সর্বোচ্চ পণ্য পৌছাবে। নরম্যালি আমরা যদি শীতের সময় দামি কম্বল বিতরণ করি সেটা যথাযথ গরীবের কাছে পৌছানো সম্ভাবনা ক্ষীন। এছাড়া চাল হচ্ছে সাধারণ পণ্য, সেই হিসেবে গম একটু কম সাধারণ তাই এটা গরীবের কাছে পৌছানো সম্ভাবনা বেশি। বইয়ের কিছু অংশ উল্লেখ করে দিলে পাঠকের জন্য সহজ হবে। পরার্থপরতার জন্য দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে প্রবাদ-পুরুষ হলেন সম্রাট হর্ষবর্ধন তিনি সপ্তম শতকে কনৌজের সম্রাট ছিলেন। ঐতিহাসিকদের বর্ণনা অনুসারে হর্ষবর্ধন ছিলেন অতি দানশীল রাজা। প্রতি চার বছরে একবার তিনি প্রয়াগের মেলায় তাঁর সর্বস্ব দান করতেন। সব কিছু দেওয়া হয়ে গেলে তিনি তাঁর নিজের গায়ের কাপড় দান করে গঙ্গায় স্নান শেষে অন্যের বস্ত্র ধার নিয়ে বাড়ি ফিরে আসতেন। ইতিহাসের এ কিংবদন্তী নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে কোন বিতর্ক নেই। তবু কিংবদন্তীটি সম্পর্কে ছাত্রজীবনে আমার মনে কিছু দ্বিধা দ্বন্দ্ব ছিল। কিন্তু এ সব প্রশ্নের জবাব আমি কোন ঐতিহাসিকের কাছে পাইনি । দীর্ঘদিন পরে আমার নিজের জীবনেই এ ঐতিহাসিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে পাই । একবার পবিত্র শবে বরাতের পূর্বে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমার মা শবে বরাতের দিন আমার হাতে এক টাকার নোটের একটি বান্ডিল দিয়ে ভিখারিদের তা দান করতে হুকুম দিলেন। আমি পায়জামা পাঞ্জাবি পরে বাড়ির দরজার বাইরে প্রতিটি ভিখারিকে একটি করে এক টাকার নোট দেওয়া শুরু করি। কয়েক মিনিটের মধ্যেই আমি ভিখারিদের দ্বারা ঘেরাও হয়ে যাই। ভিড়ের ঠেলাঠেলিতে ভিখারিরা আমার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলে এবং আমার হাত থেকে নোট ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আত্মরক্ষার্থে দৌড়ে বাড়ির ভেতরে আমি চলে এলাম। সেই মুহূর্তে হঠাৎ হর্ষবর্ধনের ঘটনা আমার মনে পড়ে গেল । আমার বদ্ধ ধারণা যে, সম্রাট হর্ষবর্ধনও হয়ত ইচ্ছে করে প্রয়াগের মেলায় তাঁর পরনের কাপড়-চোপড় দান করেননি। হয়ত আমারই মত সম্রাট হর্ষবর্ধনও ঘেরাও হয়েছিলেন, তিনি গায়ের কাপড় দান করার সময়ই পাননি । হয়ত তাঁর পরনের কাপড় ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং বাধ্য হয়েই তাঁকে গঙ্গাতে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়েছে। হর্ষবর্ধনের জীবনীকার ছিলেন তাঁর সভাসদ্। কাজেই কাপড় ছিঁড়ে নেবার পর গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে সম্ভ্রম রক্ষার অসম্মানজনক ঘটনাকে তিনি একটু রঙ লাগিয়ে লিখে গেছেন। তাঁর বয়ানে তাই হর্ষবর্ধন ইচ্ছে করেই তাঁর পরনের কাপড় দান করে গঙ্গাস্নান করেন। হর্ষবর্ধনের ঘটনা অনেক দিন আগে ঘটেছে। সত্যি কি ঘটেছে একমাত্র বিধাতাই জানেন। তবে আমার অভিজ্ঞতা সত্য ঘটনা এবং তা মোটেও অস্বাভাবিক নয়। প্রতি স্বছরই ঈদের সময় জাকাতের শাড়ি বিতরণ করতে গিয়ে বাংলাদেশে এ ধরনের অজস্র ঘটনা ঘটেছে। সোমালিয়াতে জাতিসংঘের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় যে, দুর্গত লোক ও ত্রাণসামগ্রী থাকলেই সাহায্য করা সম্ভব হয় না। ত্রাণসামগ্রী বিতরণের জন্য কোথাও কোথাও প্রয়োজন হয় সশস্ত্র রক্ষীদের। অথচ অনেক দার্শনিকই বিশ্বাস করেন যে, দান করতে চাইলেই যত খুশি দান করা যায়।
Was this review helpful to you?
or
অর্থনীতির নাম শুনলেই মনে হয় কাঠখোট্টা ভারিক্কি আলোচনা।আকবর আলি খান স্যার এই বইটিতে রসোদীপ্ত কিন্তু তথ্যবহুল আলাপের আড়ালে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাঠকের জন্যে তুলে এনেছেন।'গ্রন্থকীট', জ্ঞানপিপাসু লেখকের এই অসাধারণ কর্ম সচেতন নাগরিক পাঠকদের জন্যে হিউমার এবং ইনফরমেশন এর সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করবে।
Was this review helpful to you?
or
All are Excellent
Was this review helpful to you?
or
Interesting book
Was this review helpful to you?
or
nice
Was this review helpful to you?
or
বদলে যাওয়া উন্নয়ন অর্থনীতির পর্যালোচনার জন্য যুগপোযুগী একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
Great
Was this review helpful to you?
or
❤️
Was this review helpful to you?
or
Alhamdulillah
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
Good read but boring as it gets on too much theories. Although I enjoyed whole book it is medium slow read and based upon ancient probability. Good for Economy students.
Was this review helpful to you?
or
Good book
Was this review helpful to you?
or
ঐ যে নাম-করনের স্বার্থকতা বলে একটা (টিপিক্যাল) বাঙালী টার্ম আছে... সে হিসেবে এটা ১০০ তে ১১০ পাবে
Was this review helpful to you?
or
প্রিয় বইয়ের তালিকায় রেখে দিয়েছি।
Was this review helpful to you?
or
Excellent book
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
খুবই চমৎকার একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
যারা অর্থনীতি নিয়ে তেমন কিছু জানে না, কিন্তু জানতে চায়। তাদের জন্যে এই বই একটি উত্তম চয়েস।
Was this review helpful to you?
or
Good book.
Was this review helpful to you?
or
that's awesome
Was this review helpful to you?
or
good book.
Was this review helpful to you?
or
A goof read indeed.
Was this review helpful to you?
or
অর্থনীতির মত ম্যাড়মেড়ে বিষয়ও যে রসাত্মকভাবে উপস্থাপন করা যায় তা এই বইটি পড়লে বোঝা যায়। আকবর আলী খানের লেখনী অসাধারণ!
Was this review helpful to you?
or
বারবার পড়ার মত বই
Was this review helpful to you?
or
outstanding.
Was this review helpful to you?
or
অত্যন্ত বিদগ্ধ একজন অর্থনীতিবিদ আকবর আলী খান। সুদীর্ঘ কর্মময় জীবনে অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি দেখেছেন মানুষের সমস্যার স্বরুপ। গন মানুষের খুব কাছ থেকে তাদের সমস্যা সম্ভাবনাগুলিকে ধরেছেন তার অর্ন্তদৃষ্টিতে। সেই লব্ধ অভিজ্ঞতাই কলমের মাধ্যমে লিপিতে আবদ্ধ হয়েছে “পরার্থপরতার অর্থনীতি”তে। এই বাংলার নিপিড়ীত শোষিত বঞ্চিত সহজ সরল মানুষগুলির অর্থনৈতিক মুক্তির এক পথনির্দেশনা রয়েছে এই বইতে। নীতিনির্ধারক মহল থেকে শুরু করে সবাই বইটি থেকে উপকৃত হবে বলে আমরা মনে করি।
Was this review helpful to you?
or
সাবলীল ভাষায় সাধারন মানুষ হিসেব অর্থনীতি সম্পর্কে জানার তীব্র আগ্রহ টা জয় করতে এই বইটি অসাধারন
Was this review helpful to you?
or
অর্থনীতি বিভাগের ছাত্ররা সবচেয়ে স্বার্থপর হয়, ব্যাপারটা জানলাম এই বই থেকে
Was this review helpful to you?
or
আমাদের বর্তমান জীবনে অর্থনীতির ভূমিকা, সহজ সরল ভাষায় রসাত্মক উপায়ে, ড আকবর আলি খান স্যার "পরার্থপরতার অর্থনীতি" বইটিতে সুনিপুণ ভাবে উপস্থাপন করেছেন। যেগুলো এই বইটি না পড়লে হয়তো সারা জীবনেও বোধ্যগম্য হতো না।
Was this review helpful to you?
or
বাস্তব জীবনের অর্থনৈতিক সমস্যা সম্পর্কে মূলধারার অর্থনীতির বক্তব্য তুলে ধরার লক্ষ্যে এই গ্রন্থে লেখকের পনেরটি প্রবন্ধ সন্নিবেশিত করা হয়েছে। বইটির শুরু দানখয়রাতের অর্থনীতি নিয়ে । আরও রয়েছে দুনীতির অর্থনীতি, সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি, মেরামত ও পরিচালনার অর্থনীতি, বাংলাদেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণের রাজনৈতিক অর্থনীতি, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ও লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের অর্থনীতি সম্পর্কে মনোজ্ঞ বিশ্লেষণ । ইংরেজিতে একটি প্রবাদ রয়েছে, যুদ্ধ এতই গুরুত্বপূর্ণ যে তা শুধু সেনানায়কদের কাছে ছেড়ে দেওয়া যায় না। অর্থনৈতিক সমস্যাও এত জরুরি যে, এ সব সমস্যার সমাধানের জন্য শুধু অর্থনীতিবিদদের উপর নির্ভর করা বাঞ্ছনীয় নয়। আশা করা হচ্ছে যে, এই বই অর্থনীতি নামক হতাশাবাদী ও দুর্বোধ্য বিজ্ঞান সম্পর্কে বিতর্কে অংশগ্রহণের জন্য সাধারণ পাঠকদের উদ্দীপ্ত করবে ।
Was this review helpful to you?
or
Good quality
Was this review helpful to you?
or
যাদের অর্থনীতি নিয়ে আগ্রহ আছে তাদের জন্যে খুবই ভালো বই। যাদের আগ্রহ নেই, তাদের খুব ভালো লাগবে না পড়তে। এখানে রিভিউগুলিতে যেরকম বলা হচ্ছে জলবৎ তরলং করে প্রচুর হাস্যরস সহযোগে লিখিত, তা পুরোপুরি সত্যি নয়।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নাম: পরার্থপরতার অর্থনীতি লেখক: আকবর আলি খান। অর্থনীতির আলোচনা একটি গুরুগম্ভীর, জটিল ও বিশেষায়িত জ্ঞানের বিষয়। কিন্তু অর্থনীতিকে যদি রসালো, মজার, চমকদার করে পাঠ্য হিসেবে উপস্থাপন করা যায় তবে তা সর্বসাধারণের নিকট সহজেই গৃহিত হবে। আকবর আলি খানের লেখা ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’ বইটি পড়ে তাই মনে হয়েছে, এর পাতায় পাতায় হাসির উপাদান ছড়ানো, কিন্তু পাঠ শেষে পাঠকেরা একই সাথে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে অনেক গভীর চিন্তার খোরাক পাবেন।বইটির নাম পরার্থপরতার অথনীতি হলেও এটি কেবলই অর্থনীতির বই নয়। এতে অর্থনীতির পাশাপাশি ইতিহাস,দর্শন,রাজনীতি প্রভৃতির নানা বিষয় সরস ভাবে উত্থাপিত হয়েছে। অর্থনীতিকে বিশ্লেষণ করতে হলে যে কেবল অর্থনীতি যথেষ্ট নয় এ বিষয়টি এ বইয়ের প্রবন্ধগুলো পাঠ করলে অনুধাবন করা যায়। বইটিতে মোট পনেরটি প্রবন্ধ রয়েছে। অধিকাংশ প্রবন্ধগুলো নানা সময়ে বিভিন্ন পত্রিকা, সেমিনার. প্রকাশনায় প্রকাশিত বা উপস্থাপিত হয়েছে। বইয়ের কয়েকটি প্রবন্ধে নিয়ে সংক্ষেপে কয়েকটা তথ্য না দিলেই নয়। “শুয়োরের বাচ্চাদের অর্থনীতি” প্রবন্ধে যারা ঘুষ খায় অথচ কাজ করে না তাদের শুয়োরের বাচ্চা বলেছেন।সরকারি আমলাদের দুর্নীতির কারণ এর কুফল এবং অর্থনীতিতে এর প্রভাব লেখক দক্ষতার সাথে তুলে ধরেছেন। স্বাস্থ্যখাতে অর্থনীতির চিত্র এবং একই সাথে করণীয় তুলে ধরেছেন “বাঁচা মরার অর্থনীতি” প্রবন্ধে। ”সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি” প্রবন্ধে বাজেট ঘাটটির সমালোচনা করেছেন লেখক।লেখকের সবচেয়ে পছন্দ মোল্লা নাসিরুদ্দিনের অর্থনীতি। যিনি তাত্তিক অর্থনীতির সূচনার প্রায় সাতশ বছর আগে অর্থনীতির কিছু কিছু তত্ব তুলে ধরেছেন গল্পচ্ছলে যদিও মৌলিক,অর্থনীতিবিদরা নাসিরুদ্দিনকে অর্থনীতিবিদ হিসেবে স্বীকার করেন না।এসব নিয়ে একটি প্রবন্ধ আছে “মোল্লা নসরুদ্দিনের অর্থনীতি” নামে।”সোনার বাংলাঃ অর্থনৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষিত” প্রবন্ধে সোনারবাংলার অর্থনৈতিক ইতিহাসের প্রচলিত গল্পের সত্য মিথ্যা নির্ণয় করেছেন।”আজি হতে শতবর্ষ পরেঃ অর্থনৈতিক প্রেক্ষিত” প্রবন্ধে ভবিষ্যতের অর্থনীতি বর্তমানের চেয়ে উজ্বজ্বলতর হবে এমন হিসাব কষেছেন।“শোষণের রাজনৈতিক অর্থনীতি” প্রবন্ধে পূঁজিবাদ ও সমাজতণ্ত্রকে একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে তুলে ধরেছেন। ”অর্থনৈতিক মানুষ এবং মানুষ হিসেবে অর্থনীতিবিদ” প্রবন্ধে অর্থনীতিবিদরা নিজেরাই ”অর্থনৈতিক মানুষ” ধারণাটি গড়েছেন এবং নিজেরাই এর পিছনে দৌড়াচ্ছেন এমন মন্তব্য করেছেন। ”পরার্থপরতার অর্থনীতি” প্রবন্ধে তিনি নিঃস্বার্থ অর্থনৈতিক কর্মকান্ড অর্নৈতিক নিয়ম মেনে সম্পাদান করলে অধিকতর ফলপ্রসু হবে সে তত্বের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।মোটকথা এ বই পাঠ অর্থনীতি নিয়ে মানুষের ভীতি দূর করে সৃজনশিল উপায়ে মানুষকে ভাবতে শিখাবে, বিভিন্ন অর্থনীতি সংকটে পড়লে সমাধান কীভাবে সম্ভব তাও এ বই পাঠের মাধ্যমে জানা যাবে।তাই অামি মনে করি প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের সংগ্রহশালায় বইটা অবশ্যই থাকা উচিত।
Was this review helpful to you?
or
সমস্যার গভীরে গিয়ে সমাধান খুঁজে আনা সবাই পারেন না , আর যারা পারেন তাঁদের মধ্যে আকবর আলী খান অন্যতম ।<br><br> পরার্থপরতার অর্থনীতি বইটি তাঁর যথার্থ প্রমান । নিকৃষ্ট পণ্য বিতরণ আইডীয়া টা ছিল অসাধারণ ।
Was this review helpful to you?
or
পরার্থপরতার অর্থনীতি - আকবর আলি খান lবাস্তব জীবনের অর্থনৈতিক সমস্যা সম্পর্কে মূলধারার অর্থনীতির বক্তব্য তুলে ধরার লক্ষ্যে এই গ্রন্থে লেখকের পনেরটি প্রবন্ধ সন্নিবেশিত করা হয়েছে। বইটির শুরু দানখয়রাতের অর্থনীতি নিয়ে। আরও রয়েছে দুর্নীতির অর্থনীতি, সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি, মেরামত ও পরিচালনার অর্থনীতি, বাংলাদেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণের রাজনৈতিক অর্থনীতি,স্বাস্থ্য অর্থনীতি ও লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের অর্থনীতি সম্পর্কে মনোজ্ঞ বিশ্লেষণ। অর্থনীতির সবচেয়ে জটিল সমস্যা অর্থনৈতিক অসাম্য সম্পর্কে রয়েছে দুটি নিবন্ধ। লেখকের দৃষ্টি শুধু বর্তমানেই নিবদ্ধ নয়। ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক প্রবণতা সম্পর্কে বিশ্লেষণ রয়েছে ‘‘আজি হতে শতবর্ষ পরে’’ শীর্ষক প্রবন্ধে। অতীতের প্রসঙ্গ এসেছে দুটি নিবন্ধে: ‘‘সোনার বাংলা: অর্থনৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষিত’’ এবং ‘‘ভারতীয় অর্থনীতির উত্থান ও পতন’’।তিনটি মূল্যবান রচনা রয়েছে অর্থনীতিবিদদের সম্পর্কে। ‘‘অর্থনৈতিক মানুষ ও মানুষ হিসাবে অর্থনীতিবিদ” রচনায় দেখানো হয়েছে কীভাবে অর্থনীতির পূর্বানুমান এবং পক্ষপাত অর্থনীতিবিদদের ব্যক্তিগত জীবনকে প্রভাবিত করেছে। একটি প্রবন্ধে অর্থনীতির দর্শনের বিবর্তন বিশ্লেষিত হয়েছে। গ্রন্থকারের সবচেয়ে পছন্দের অর্থনীতিবিদ হলেন মোল্লা নস্রুদ্দীন। ‘‘মোল্লা নস্রুদ্দীনের অর্থনীতি’’ নিবন্ধে গ্রন্থকার সুন্দরভাবে দেখিয়েছেন যে, মোল্লার গালগপ্প ও কৌতুক-চুটকির মধ্যেই আধুনিক অর্থনীতির অনেক মূল্যবান সূত্র লুকিয়ে রয়েছে। ইংরেজিতে একটি প্রবাদ রয়েছে, যুদ্ধ এতই গুরুত্বপূর্ণ যে তা শুধু সেনানায়কদের কাছে ছেড়ে দেওয়া যায় না। অর্থনৈতিক সমস্যাও এত জরুরি যে, এ সব সমস্যার সমাধানের জন্য শুধু অর্থনীতিবিদদের উপর নির্ভর করা বাঞ্ছনীয় নয়। আশা করা হচ্ছে যে, এই বই অর্থনীতি নামক হতাশাবাদী ও দুর্বোধ্য বিজ্ঞান সম্পর্কে বিতর্কে অংশগ্রহণের জন্য সাধারণ পাঠকদের উদ্দীপ্ত করবে।
Was this review helpful to you?
or
১. আকবর আলি খান বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ। কর্মজীবনে তিনি যেমন সরকারী চাকুরিজীবি হিশেবে দেশের অর্থনীতিকে কাছ থেকে দেখেছেন, তেমনিভাবে বিশ্বব্যাংকে কাজ করে বৈশ্বিক অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়েও গবেষণা করেছেন। তাঁর মাপের অর্থনীতিবিদের কাছ থেকে বাংলা ভাষায় সাধারণ পাঠকদের জন্য অর্থনীতি-বিষয়ক রচনা প্রাপ্তি বাঙালি পাঠকের জন্য একটি সুখবর। তিনি অন্যান্য অর্থনীতিবিদদের মতো কেতাবি ভাষায় অর্থনীতি পাঠের পক্ষপাতি নন। তাঁর মতে, হালকা ও চটুল ভঙ্গি অর্থনীতির বক্তব্যকে লঘু করে দেয় না, বরং অনেক ক্ষেত্রে গভীর দ্যোতনা দেয়। যদিও গুরুগম্ভীর বিষয়ে হালকাভাবে লিখতে গেলে মূল বক্তব্য বিকৃত হওয়ার আশংকা অনেকাংশে থেকে যায়। কিন্তু আকবর আলি খান তাঁর প্রবন্ধের বই “পরার্থপরতার অর্থনীতি” তে সফল হয়েছেন। ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’ পনেরটি প্রবন্ধের সংকলন। বিভিন্ন সময়ে কিছু কিছু রচনা প্রকাশিত হলেও বেশিরভাগই এই বইতেই প্রথম প্রকাশ পেয়েছে। প্রত্যেকটি প্রবন্ধই লেখকের মৌলিক রচনা, এই কারণে প্রতিটি সমান মনোযোগ আশা করে। ২. বইয়ের শুরু “পরার্থপরতার অর্থনীতি” শিরোনামে প্রবন্ধে মধ্য দিয়ে ( যা আলোচ্য বইয়ের শিরোনাম)। এই প্রবন্ধে লেখক দান-খয়রাতের অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে এই দয়াদাক্ষিণ্যকে অর্থনৈতিক তত্ত্বের বাইরের বিষয় হিশেবেই বিবেচনা করতেন ক্লাসিক্যাল অর্থনীতিবিদরা। কিন্তু বর্তমানে তা উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। আজকের অর্থনীতিবিদরা পরার্থপরতার অর্থনীতি নিয়ে নানা মৌল প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছেন। আকবর আলি খান এই প্রবন্ধে তা বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। মানুষ কেন দান-খয়রাত করে, কী ধরনের দান-খয়রাত সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য কল্যাণকর- এইসব নিয়ে লেখায় অনুসন্ধান চালিয়েছেন। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোই ত্রাণসামগ্রীর আত্মসাৎ খুবই সাধারণ একটি ঘটনা। কী করে আত্মসাতের মাত্রা কমানো যায় তা নিয়ে বিস্তৃত ব্যাখ্যা আকবর আলি খান এই প্রবন্ধে উপস্থাপন করেছেন। সরকারী কর্তাব্যক্তিরা এদিকে নজর দিলেই দেশের কল্যাণ হয়। একজন প্রাক্তন আমলা হিশেবে আকবর আলি খান প্রচলিত ব্যবস্থার সংস্কারের উদ্যোগ, তা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা এবং তা প্রতিরোধে যে যুদ্ধ প্রতিনিয়ত আমাদের দেশে ঘটে চলছে, তার প্রত্যক্ষদর্শী। সময়ের সাথে সাথে যেকোনো ব্যবস্থায় সংস্কার জরুরী, নয়ত প্রগতির পথ ক্ষীণ হয়ে পড়ে। পরিবর্তনের সাথে সাথে কোনো ব্যবস্থা নিজেকে নামিয়ে নিতে না পারলে প্রাতিষ্ঠানিক কঠিনীভবনের সৃষ্টি হয় তাতে রাষ্ট্রে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড অচল হয়ে পড়ে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে যেখানে ঔপনিবেশিক আমলের রীতি রাষ্ট্রের অনেক ক্ষেত্রেই চেপে বসে আছে, সেখানে সংস্কারের অর্থনীতিটা বুঝে নেয়া রাজনীতিবিদদের জন্য উপকারী হতে পারত। কিন্তু আকবর আলি খান তাঁর ‘সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি’ প্রবন্ধে বলছেন যে, রাজনীতিবিদরা বেশিরভাগ সময়ই নতুন কোনো ধারণা গ্রহণ করতে চান না; কারণ যে ধরনের সংস্কার জরুরী কিন্তু ভোটার আকৃষ্ট করতে অক্ষম সে ধরনের সংস্কার রাজনীতিবিদদের আশীর্বাদ লাভ করে না। লেখক এই প্রবন্ধে সংস্কার কীভাবে করা উচিত তা নিয়ে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে যে দু’ধরনের মতবাদ প্রচলিত সেগুলো বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তিনি মনে করেন ধীর পদ্ধতিতে অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব বিবেচনায় এনে রাষ্ট্রের যে অংশগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কার প্রয়োজন তা শুরু করে দেয়া উচিত। একই সাথে সংস্কারের বিরোধিতা করে যেসমস্ত প্রতিষ্ঠান দাঁড়িয়ে যায়, তাদেরকে মোকাবেলা করার কৌশলও বাতলে দেন। আকবর আলি খানের কৌতুকের সাথে সংস্কারের কৌশল নিয়ে তাঁর নিজস্ব দর্শন ব্যাখ্যা করেছেন এইভাবে, “ পারস্যের কাহিনীকার নতুন বিবাহিত স্বামীদের যে পরামর্শ দিয়েছে সংস্কারকদের ক্ষেত্রেও তা সমভাবে প্রযোজ্য: ‘গুরবা কুশতান শব-ই-আউওয়াল’ (বিড়াল মারো প্রথম রাতে)”। এই সবচেয়ে ভিন্নধর্মী এবং অভিনব প্রবন্ধটি হলো “মোল্লা নসরুদ্দীনের অর্থনীতি”। আকবর আলি খানের ভাষায়, খ্যাপা খুঁজে ফিরে পরশ পাথর, আর তিনি খুঁজে বেড়ান অর্থনীতিবিদ। অর্থনীতিবিদদের ঘন ঘন মত বদলে যাওয়ার প্রবণতার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, তাঁর পছন্দ এক কথার অর্থনীতিবিদ। মোল্লা নসরুদ্দীনই আকবর আলি খানের 'মনের মতন অর্থনীতিবিদ'। যদিও অর্থশাস্ত্রের উদ্ভব মোল্লা নসরুদ্দীনের জন্মের পাঁচশ বছর পরে, তারপরও লেখক মনে করেন অর্থনীতির অনেক মৌল সমস্যার সমাধান মোল্লা জানতেন। মোল্লা নসরুদ্দীনের বিশ্লেষণ পদ্ধতি আজকের দিনের মতো গণিত কিংবা দর্শন-নির্ভর নয়, বরং পুরোটাই অভিজ্ঞতা-নির্ভর। আজকের অর্থনীতিবিদরা মোল্লাকে তাদের একজন বলে গণ্য না করলেও আকবর আলি খান মনে করেন, “হাসতে হাসতে মোল্লা যা বলে গেছেন আজকের অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা অনেক পরিশ্রম করেও তার চেয়ে খুব বেশি দূর এগিয়ে যেতে পারেননি”। তাঁর মতে, মোল্লা নসরুদ্দীনের চুটকি এবং গল্পগুলো ভালোভাবে অধ্যয়ন করলে মোল্লাকে দু’ধরনের অর্থনৈতিক তত্ত্বের পথিকৃৎ বলে মনে হয়- এক, অর্থনৈতিক ঝুঁকি সম্পর্কে মোল্লার দর্শন আধুনিক তত্ত্বগুলোর সাথে খাপ খায়; দুই, মহাজন তথা নেতৃস্থানীয় আর্থিক সংস্থাগুলোর আচরণ সম্পর্কে মোল্লার ছিল অগাধ জ্ঞান। মোল্লা নসরুদ্দীনের জীবনের নানা গল্প আর ছোট ছোট চুটকির মাধ্যমে আকবর আলি খান তাঁর ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন এই প্রবন্ধে। মোল্লা নসরুদ্দীনের মতো চরিত্রের গল্পগুলো থেকে এভাবে অর্থনৈতিক নানা তত্ত্ব এবং এর প্রয়োগের নানা সম্পর্ক বের করে আনাটা নিঃসন্দেহে লেখকের আলোচ্য বিষয়ে গভীর এবং প্রায়োগিক জ্ঞানের দিকেই ইঙ্গিত করে। অর্থনীতি নিয়ে বাংলায় লিখিত প্রবন্ধগুলোর মধ্যে এই প্রবন্ধটি একটি বিশেষ স্থান দখল করে রাখবে। ‘বাঁচা-মরার অর্থনীতি’ শীর্ষক প্রবন্ধে স্বাস্থ্য-ব্যবস্থার সংকট, এর কারণ এবং সম্ভাব্য সমাধানের পেছনের অর্থনীতি খুঁটিয়ে দেখা হয়েছে। আকবর আলি খান বিশ্বের স্বাস্থ্য-ক্ষেত্রের দু’টি সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন- হতদরিদ্রদের জরুরী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত না হওয়া এবং ধনীদের স্বাস্থ্য খাতে অপচয়। তিনি এসব সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজেছেন। একই সাথে ডাক্তারদের নৈতিক ভূমিকা নিয়ে যে সমস্ত মতবাদ প্রচলিত রয়েছে, তা বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এই প্রবন্ধে। যদিও অনেক বিশ্লেষণই উপস্থাপন করেছেন লেখক, কিন্তু সমস্যাগুলোর সমাধানের কোন ইঙ্গিত আকবর আলি খান দিতে পারেন নি। এটি এই প্রবন্ধের পরিপূর্ণতা প্রাপ্তিতে বাধা সৃষ্টি করেছে। শাস্ত্র হিশেবে অর্থনীতি ভবিষ্যতমুখী। ভবিষ্যতের অর্থনীতি নিয়ে আগাম ধারণা অর্থনীতিবিদদের দিতেই হয়। ‘আজি হতে শত বর্ষ পরে: অর্থনৈতিক প্রেক্ষিত’ শীর্ষক প্রবন্ধে লেখক বিগত দুইশ বছরে অর্থনীতিবিদগণ কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন ভবিষ্যতবাণী নিয়ে আলোচনা এবং বিশ্লেষণ করেছেন। নৈরাশ্যবাদী অর্থনীতিবিদদের ভবিষ্যতবাণী ভুল প্রমাণিত হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করেছেন তিনি। এটা সত্যি যে, নৈরাশ্যবাদীদেরকে নিরাশ করে মানব সভ্যতা ও অর্থনীতি এগিয়ে গেছে, ভেঙ্গে পড়ে নি তাদের ভবিষ্যতবাণী অনুসারে; কিন্তু তবুও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে আমাদের সীমিত সম্পদ ব্যবহার নিয়ে। পুরো প্রবন্ধে পড়ে মনে হয়েছে, লেখক আশাবাদীদের দলেই রয়েছেন, যদিও এর সপক্ষে খুব বেশি যুক্তি তিনি প্রদান করেন নি। তবে তিনি মনে করেন, মানব সভ্যতার প্রগতির পেছনে অন্তরায় হয়ে আছে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা। লর্ড কেইনস বলেছেন, “সে দিন দূরে নয় যে দিন অর্থনৈতিক সমস্যা যথাস্থানে পড়ে থাকবে অর্থাৎ পেছনে পড়ে থাকবে এবং মানুষের হৃদয় ও বুদ্ধিশক্তি আমাদের প্রকৃত সমস্যাগুলো সমাধানে নিয়োজিত হবে। সেসব সমস্যা হল- বাঁচার সমস্যা, মানবিক সম্পর্কের সমস্যা, সৃষ্টির সমস্যা, এবং আচরণ ও ধর্মের সমস্যা”। আজকের পৃথিবীর বিদ্যমান সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আর্থিক শোষণ বেড়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। পুঁজিবাদী শোষণের পেছনে যে রাজনীতি,ইতিহাস ও দর্শন আছে তা ভালোমতো উপলব্ধি করতে না পারলে, এর বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব হবে না। আকবর আলি খান তাঁর ‘শোষণের রাজনৈতিক অর্থনীতি’ শীর্ষক প্রবন্ধে মানুষের ওপর শোষণের ইতিহাস এবং শোষণের নানা তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিশেষ করে মার্কসবাদী তত্ত্বগুলো খুঁটিয়ে দেখেছেন। মার্কসের নানা তত্ত্বের পোস্টমর্টেম উপস্থাপন করে বিপ্লবের গতিপ্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করেছেন, এবং দেখিয়েছেন গত শতাব্দীতে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো বঞ্চিত মানুষদের স্বপ্ন দেখালেও কেন শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। তবে লেখকের মতে, বিদ্যমান সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুঁজিবাদকে উৎখাত করতে না পারলেও সাম্যের দাবি অপসৃত হবে না; নতুন নতুন রূপে অসাম্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দেখা দেবে। তবে এজন্য যা করতে হবে তা হলো- “কমিউনিজম মরে গেলেও নতুন করে সমাজতন্ত্রকে আবিষ্কার করতে হবে”। ‘লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের অর্থনীতি’ শিরোনামের প্রবন্ধে লেখক সমাজে নারীদের প্রতি যে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক বৈষম্য যুগ যুগ ধরে চলে আসছে তা বিশ্লেষণ করেছেন। তবে এই প্রবন্ধের শুরুতেই লেখক ভিন্ন একটি প্রসঙ্গের অবতারণা করে বেশ আলোড়ন ফেলে দিয়েছিলেন। কবি জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’ কবিতার ভিন্ন ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেছেন তিনি। বনলতা সেনকে রূপজীবিদের একজন হিশেবে উপস্থাপন করা আকবর আলি খানের মন্তব্যের কারণে আলোচ্য বইয়ের প্রকাশনার পর সাহিত্যিক মহলে বেশ হইচই হয়েছিল। যাই হোক, অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় নারীদের অংশগ্রহণ এবং এতে বৈষম্য নিয়ে অর্থনৈতিকদের মধ্যে নানা তত্ত্ব রয়েছে- যা এই প্রবন্ধে আলোচিত হয়েছে। লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের মতো প্রাচীন এবং জটিল সমস্যার সমাধানে যেসব মতবাদ দেখা যায়-সেগুলো নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেছেন লেখক। যদিও লেখকের অবস্থান কোন মতবাদের দিকে ঝুঁকে আছে তা প্রবন্ধ পাঠে উপলব্ধি করা যায় না; কিন্তু তিনি এ বিষয়ে নিশ্চিত যে, জনসংখ্যার অর্ধেক অংশকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাইরে রেখে আমরা কখনোই উৎকর্ষ অর্জনের কথা ভাবতে পারব না। একজন আমলা হিশেবে আকবর আলি খান বাংলাদেশের বিভিন্ন স্তরের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড খুব কাছ থেকে দেখেছেন; প্রত্যক্ষ করেছেন সরকারি ও বেসরকারি সেক্টরের নানা দুর্নীতি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অদক্ষতা। এসব নিয়ে তিনি ভাবিত হয়েছেন; লিখেছেন দু’টি প্রবন্ধ। প্রথমটি হলো ‘শূয়রের বাচ্চাদের অর্থনীতি’। এই প্রবন্ধে লেখকের আমাদের সমাজের সর্বস্তরে জেঁকে বসা দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে অর্থনীতিবিদরা দুর্নীতিকে একটি অর্থনৈতিক সমস্যা হিশেবে চিহ্নিত না করলেও বর্তমানকালে আর উপেক্ষা করতে পারছেন না। দুর্নীতির কয়েক ধরনের কুফল এবং তা নির্মূল করার জন্য অর্থনীতিবিদদের মধ্যে যে নানা তত্ত্ব প্রচলিত রয়েছে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এই প্রবন্ধে। অপর একটি প্রবন্ধ ‘খোলা ম্যানহোলের রাজনৈতিক অর্থনীতি’তে দেখিয়েছেন কেন বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে যে পরিমাণ সম্পদ ব্যবহৃত হচ্ছে সে অনুপাতে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। আকবর আলি খানের মতে, এর বড়ো কারণ হলো পরিচালনা ও মেরামতের ব্যর্থতা এবং সরকারী কর্মচারীদের অদক্ষতা। এসব সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদের অর্থনীতিবিদ আকবর আলি খানের পরামর্শ হলো- সেবা খাতের বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে এবং অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কারে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। বন্যা, বাংলাদেশের আবহমানকালের প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এই দুর্যোগে শুধু পারিবারিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হয়। এ কারণে যুগে যুগে বন্যা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা আমাদের দেশে করা হয়েছে। তবে এসব প্রকল্পের বেশিরভাগই যে সু-বিবেচনাপ্রসূত নয়, বরং বেশিরভাগই রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য আবিষ্কার করা হয় তা লেখক জানিয়েছেন ‘বাংলাদেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণের রাজনৈতিক অর্থনীতি’ শীর্ষক প্রবন্ধে। সাধারণভাবে মনে করা হয়, বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেই কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি আসবে। কিন্তু এর ফলে যে পরোক্ষ এবং দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি সাধিত হয়- তা নিয়ে খুব একটা ভাবিত নন দেশের রাজনীতিকরা। রাজনৈতিক চমক দেখানোর জন্য যে সব বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয় সেগুলো দীর্ঘমেয়াদে তো নয়ই, স্বল্পমেয়াদেও খুব একটা কাজে আসে না, বরং প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণেই সরকারি কোষাগার ফুটো হতে থাকে। লেখক একই সাথে বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণে স্থানীয় জনগণের নির্লিপ্ততার সমালোচনা করেছেন। আকবর আলি খানের মন্তব্য হলো, যতদিন পর্যন্ত বন্যা বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন ও আধুনিক নীতি বাস্তবায়িত হবে না ততদিন বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পসমূহের সমস্যা জটিলতর হতে থাকবে। শিক্ষার সাথে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে তা কল্যাণ রাষ্ট্রসমূহ অনেক আগেই টের পেয়েছে। আধুনিক যুগ হলো জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির যুগ, জ্ঞানে-বিজ্ঞানে-প্রযুক্তিতে যারাই এগিয়ে যেতে পেরেছে তারাই প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে পৃথিবীর মানচিত্রে। শিক্ষা ও অর্থনীতির মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে রচিত প্রবন্ধের শিরোনাম-‘শিক্ষা ও অর্থনৈতিক অসাম্য’। এই প্রবন্ধে লেখকের শিক্ষার আদর্শ ও লক্ষ্য নিয়ে যে দু’হাজার বছরের বিতর্ক আছে তা নিয়ে শুরুতেই আলোচনা করেছেন। শিক্ষা প্রদানের সাথে অর্থ গ্রহণের যে সম্পর্ক তা নিয়ে যুগে যুগে দার্শনিকদের মধ্যে বিতর্ক হয়েছে এবং তা এখনো চলমান। আকবর আলি খান পাঠকদেরকে সেই যুগযুগান্তরের বিতর্ক ও নানা মতবাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন আলোচ্য প্রবন্ধে। একই সাথে বর্তমান যুগে জ্ঞানভিত্তিক সমাজের আবির্ভাবের সাথে সাথে যে অর্থনৈতিক অসাম্য ধনী ও দরিদ্র রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তাও বিশ্লেষণ করেছেন।লেখকের মতে, “বৈপ্লবিক কারিগরি পরিবর্তনের ফলে যে সব দেশ নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পারবে না তারা উন্নত দেশসমূহের তুলনায় ক্রমেই পিছিয়ে পড়বে”। তাই আজকের উন্নয়নশীল দেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো উন্নত দেশের সাথে জ্ঞানের ফারাক হ্রাস করা। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ তো বটেই, ঐতিহাসিকরাও বিশ্বাস করেন যে, প্রাক-ব্রিটিশ আমলে বাংলা ছিল পার্থিব স্বাচ্ছন্দ্যে পরিপূর্ণ; এ দেশ ছিল ঐশ্বর্যশালী এবং এখানকার মানুষের জীবনযাত্রার মান ছিল অত্যন্ত উন্নত। কিন্তু একজন অর্থনীতিবিদ হিশেবে আকবর আলি খান এই ‘সোনার বাংলা’ তত্ত্বের সাথে একমত নন। তাঁর ‘ সোনার বাংলা: অর্থনৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষিত’ শীর্ষক প্রবন্ধে লেখক তাঁর প্রাচীন বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে নিজস্ব বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছেন। তাঁর মতে, প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলার মানুষ প্রায়ই দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত হতো। যদিও ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়েও এর প্রকোপ কম ছিল, তারপরও জনমানসে ‘সোনার বাংলা’র যে চিত্র গেঁথে আছে তার পেছনে যৌক্তিক খুব কমই ছিল। মধ্যযুগে দ্রব্যমূল্য সস্তা হওয়ার ঘটনা বাংলার মানুষকে তৎকালীন আর্থিক সমৃদ্ধির একটা ভুল বার্তা দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে মাঝে মধ্যেই বাংলার মানুষের ক্রয়ক্ষমতা এতো নিচে নেমে আসত যে এর ফলে দ্রব্যমূল্য খুবই কমে যেত। এটা ঘটত অর্থনীতির সূত্র মেনেই। মধ্যযুগের দারিদ্র্যের আরেকটি দৃষ্টান্ত লেখক দিয়েছে। সেটি হলো- দাসপ্রথার প্রচলন। ইবনে বতুতার মতো ভ্রমণকারীরা অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে এদেশে কম মূল্যের দাস বিক্রয় হতে দেখেছেন- যা সে যুগের দারিদ্র্যকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। এই গ্রন্থের শেষ দু’টি প্রবন্ধ একাডেমিক দৃষ্টিকোণ থেকে খুবই মূল্যবান। অর্থনীতিবিদ আকবর আলি খান তাঁর নিজস্ব ক্ষেত্রের মানুষ এবং অর্থনীতির দর্শন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি প্রবন্ধ লিখেছেন। “অর্থনৈতিক মানুষ ও মানুষ হিসাবে অর্থনীতিবিদ” প্রবন্ধে প্রচলিত অর্থনৈতিক তত্ত্বের ভিত্তি ‘অর্থনৈতিক মানুষ’এর কনসেপ্টটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। অনেক একাডেমিকের কাছে, ‘অর্থনৈতিক মানুষ’ ধারণাটি লোভী মানুষের চিত্র; বাস্তবতা-বর্জিত এবং অগ্রহণযোগ্য। তবে অর্থনীতিবিদরা বলেন, বাস্তব জগতে এতো বেশি পরিমাণ চলক অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে যে, সবগুলোকে একই সাথে বিবেচনা করা সম্ভব নয়; তাই ‘অর্থনৈতিক মানুষ’ ধারণাটি একেবারে পুরোপুরি না হলেও প্রায়ই সত্যের কাছাকাছি ফলাফল উপহার দেয়। লেখক এই প্রবন্ধে একটি মজার ব্যাপার উল্লেখ করেছেন। বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে দেখা যায় যে, অর্থনীতির ছাত্ররা অন্যান্য বিষয়ের ছাত্রদের চেয়ে অনেক বেশি স্বার্থপর। লেখকের ভাষায়, “অর্থনীতিবিদরা নিজেরাই ‘অর্থনৈতিক মানুষ’ ধারনাটি গড়েছে। এখন নিজেরাই ‘অর্থনৈতিক মানুষ’ ধারণার পেছনের দৌড়চ্ছে”। পরবর্তী প্রবন্ধ ‘অর্থনৈতিক দর্শনের সন্ধানে’ লেখক শতবছরে অর্থনৈতিক দর্শনের বিবর্তন এবং এর কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করেছেন। অর্থনীতিকে বিজ্ঞানের একটি শাখা দাবি করা হলেও অনেক দার্শনিক তা মানতে নারাজ; অর্থনীতিবিদরা বরাবরই এর বিরোধিতা করেছেন। আকবর আলি খান এই প্রসঙ্গে বিজ্ঞানের দর্শন এবং এর পদ্ধতি বিশ্লেষণ করেছেন। এই অংশটুকু আলোচ্য গ্রন্থের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ৩. বইয়ের শেষে ‘ইংরেজি থেকে বাংলা’ ও ‘বাংলা থেকে ইংরেজি’ পরিভাষা কোষ সংযুক্ত করে দেয়া হয়েছে। এতে করে বইয়ের উৎসাহী পাঠক, যারা প্রবন্ধগুলোর বিষয়বস্তু সম্বন্ধে আরো ভালোভাবে জানতে যায়, তাদের সুবিধে হবে। এছাড়াও অসাধারণ একটি নির্ঘণ্ট যুক্ত করা হয়েছে। বইয়ের যেকোনো বিষয়বস্তু সহজেই এই নির্ঘণ্ট থেকে খুঁজে বের করা যাবে। ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’ বাংলা ভাষায় অর্থনীতি চর্চায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। অর্থনীতির নানা জটিল বিষয় আকবর আলি খান প্রাঞ্জলভাবে উপস্থাপন করে প্রমাণ করেছেন যে, অর্থনীতি চর্চায় ভাষা কোনো জটিল বাধা নয়। এজন্য প্রয়োজন অর্থনীতিবিদদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা। কারণ অর্থনীতির মতো জীবন-ঘনিষ্ঠ বিষয় সম্বন্ধে মানুষের শুধু ধারণা থাকাই যথেষ্ট নয়, বাস্তবে প্রয়োগ করার মতো দক্ষতা অর্জনও জরুরী। লেখকের মতে, যুদ্ধ এতোটাই গুরুত্বপূর্ণ যে তা শুধু সেনানায়কের হাতে ছেড়ে দেয়া বোকামি। অর্থনৈতিক সমস্যাও এতো গুরুত্বপূর্ণ যে, সব সমস্যার সমাধানের জন্য শুধু অর্থনীতিবিদদের উপর নির্ভর করা বাঞ্ছনীয় নয়।
Was this review helpful to you?
or
বইটির সর্ম্পকে বলার আগে লেখক সর্ম্পকে একটু বলি । ঠিক জনশ্রুতি নয় , তবে ঘটনাটি যার কাছ থেকে জানা তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক । তিনি সরাসরি কথকের থেকেই শুনেছিলেন । এই কথক ভদ্রলোক তার ছাত্র জীবনে হলে এক বন্ধুর রুমে যাবার পর দেখলেন ইতিহাসের ছাত্র বন্ধুটি একটি বই থেকে একমনে কী যেন লিখছেন । বলে রাখা ভাল , ৬০ এর দশক তখন ; ফটোকপি মেশিনের বহুল প্রচলন কিংবা আভির্ভাব তখনো হয়নি । তিনি বন্ধুকে জিজ্ঞেস করলেন সে কি লিখছে । জবাবে বন্ধুটি বললো লাইব্রেরীতে একটা দুর্ল্ভ বই আছে ৩০০ পাতার। একটাই কপি । তিনি হিসেব করে দেখেছেন প্রতিদিন ১০ পাতা করে লিখলে এক মাসেই হাতে লিখে বইটির একটি কপি পাওয়া সম্ভব । তিনি এর আগেও এ রকম আরো দুটো বই কপি করে ফেলেছেন । লেখক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র ছিলেন এবং সেখান থেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে ১৯৬৪ সালে সম্মান ও ১৯৬৫ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে কমনওয়েলথ বৃত্তির নিয়ে তিনি কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি‘তে মাস্টার্স এবং পি. এইচ. ডি. ডিগ্রি অর্জন করেন। অর্থনীতি’র প্রতি ভালবাসা হয়তো তার তখন থেকেই । আবার ইতিহাসের ছাত্র যেহেতু অর্থনীতিকে তিনি ঔতিহাসিকের দৃষ্টিতে বিশ্লেষন করার প্রজ্ঞা রাখেন। শিক্ষকতা ও সরকারী প্রশাসনের সদস্য হিসেবে অর্থনীতি’র তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক উভয় দিকেই সমান দক্ষতা অর্জন করেন তিনি । সুতরাং অর্থনীতি নিয়ে একটি বই না লেখাটাই তার জন্য অস্বাভাবিক । অর্থনীতি কে মুল উপজীব্য বিষয় হিসেবে ১৫টি প্রবন্ধ নিয়ে তার বই “পরার্থপরতার অর্থনীতি” । কিন্তু পাঠক এই বই পড়ার সময় ঠিক বুঝে উঠতে পারবেন না যে তিনি অর্থনীতি , দর্শন না ইতিহাস পড়ছেন । তাই বলে আবার বইটি আবার ভারিক্কী গম্ভীর কিংবা জ্ঞানগর্ভ নয় । “লঘু চালে” লেখক পাঠককে কখনো মুচকি হাসিতে কখনো বা গড়াগড়ি খেয়ে পড়ার মতো অবস্থায় ফেলে অর্থনীতির জটিল সমস্যা ও তত্ত্বের জালে আটক করার ফন্দি করেছেন । যারা সাহিত্যের বাইরের পাঠক তাদের জন্য তো বটেই সাহিত্যের পাঠকদের জন্য ও এইটি একটি অবশ্য পাঠ্য বই । বিশেষত বইয়ের অধ্যায় গুলোর দু একটার নাম যদি হয়: “শুয়রের বাচ্চাদের” অর্থনীতি’ ; মোল্লা নসরুদ্দীনের অর্থনীতি’ । ইতিহাস, অর্থনীতি , রাজনীতি , কিংবা সাহিত্য যাই আপনার আগ্রহের বিষয় হোক না কেন , চির সবুজ রসে টইটম্বুর বইটি একবার পড়লে আপনার বারবার পড়া বইয়ের তালিকাটা বড়ই হবে বলে সাবধান বানী উচ্চারণ করে শেষ করছি ড: আকবর আলী খান এর “পরার্থপরতার অর্থনীতি” বন্দনা। এখন বাকী রসাস্বাদনের সিদ্ধান্ত পাঠক আপনার হাতে ।