User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

      By Shahed Khan

      20 Sep 2023 04:48 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      হাসান আজিজুল হক - যদিও ছোটগল্পকার হিসেবেই তিনি বেশি পরিচিত, তবে আমার কাছে সবসময়ই তার নাম আর আগুনপাখি সমার্থক! আগাগোড়া আঞ্চলিক ভাষায় লেখা এই উপন্যাসটা আমাদের সাহিত্যে একটা জাদুকরী রত্ন! রাঢ়বঙ্গের এক কিশোরীর বড় হতে হতে একসময় 'দেশ' হয়ে ওঠা, আর সেই দেশভাগের বুকভাঙ্গা আর্তচিৎকার নিয়ে এই এপিকধর্মী উপাখ্যান! আমি সেই সহজ-সরল মেজো বউয়ের সাথে যুদ্ধ, বন্যা আর আকালের মাঝে বাঙলার পথে পথে ঘুরে বেরিয়েছি যেন বহুকাল ধরে! আপনারা যারা পাঠক, অথচ এখনও 'আগুনপাখি' পড়েননি - আপনারা জানতেও পারেননি বিশ্বসাহিত্যের কী এক 'ফিনিক্স' পড়ে আছে আপনাদের চোখের সামনে কেমন অগোচরে!

      By Md. Onyx Rahman

      25 Jul 2022 10:48 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      , অসাধারণ

      By Tanjina Afrose Keya

      17 Apr 2022 07:11 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      উপন্যাস :আগুনপাখি লেখক: হাসান আজিজুল হক প্রকাশক: ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ প্রচ্ছদ: সমর মজুমদার প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২০০৬ আমি সাধারনত কোনো বই পড়া শুরু করলে সেইটা যত দ্রুত সম্ভবই শেষ করতাম কিছুদিন আগ পর্যন্তও। কিন্তু এখন কোনো বই শেষ করতে আমার অনেক সময় লেগে যায়। হয়তো পড়ছি পড়ছিই আবার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি। কেন জানিনা কিছু কিছু বই অর্ধেক পড়ার পর বাকিটা আর শেষ করা হয়ে উঠতেছে না। তবে অনেকদিন বসে একটা বই আমি অনেক সময় নিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়লাম। বইটার ভেতরকার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বুঝে ওঠার জন্য এই সময়টা আমাকে নিতেই হতো। বলছি, হাসান আজিজুল হক-এর "আগুনপাখি" নামের বইটার কথা। একজন নারীর জবানীতে তিনি কিভাবে তুলে ধরেছেন একটা জনপদের জীবন- যাত্রা, জীবনের দুঃখ আনন্দ, এই জীবনের দিন রাত্রির গরমিল হিসাব, জীবনে হুড় হুড় করে ঢুকে পড়া সাম্প্রদায়িকতার প্রভাব, হিন্দু মুসলমানের মধ্যে প্রীতি বন্ধন আবার ব্রিটিশদের ছল চাতুরির কারনে তাদের ভেতরকার দাঙ্গা হাঙ্গামা, রক্তপাত,রাজনীতি,  এদেশে পশ্চিমা বিশ্বের যুদ্ধের প্রভাব, দুর্ভিক্ষ, দেশভাগ এবং একজন নারীর সবকিছুর শেষেও নিজের দেশের প্রতি অসীম মমতা ও মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকার গল্প। এই উপন্যাসটা লেখার আগে হাসান আজিজুল হক যে ৪০ বছর সময় নিয়েছেন তার সম্পূর্নটাই ব্যয় করেছেন এই বই লেখার প্রস্তুতি হিসেবে। এটি একটি ইতিহাস নির্ভর উপন্যাস। ইতিহাস, সভ্যতা নির্ভর উপন্যাস বরাবরই নির্দিষ্ট কিছু পাঠক সম্প্রদায়ের পছন্দের শীর্ষে থাকে। যারা ইতিহাস জানতে জানতে আরো বুঝতে চান ওই সময়কার মানুষের জীবন যাপনের ধরন, হাল চাল তারা নিঃসন্দেহে এই বইটি পড়তে পারেন। একজন মানুষের গোটা জীবন লেখক কি অপার সৌন্দর্যে, শব্দের বুননে বুনে গিয়েছেন তা ভেবে অবাক হতে হয়। আমি প্রতিটা লাইন পড়ার সময়ে অনুভব করতে পেরেছি কিভাবে দেশভাগ নামের বিষয়টি কোটি কোটি মানুষের হৃদয় খানখান করে দিয়েছে। কিভাবে নষ্ট করেছে মানুষে মানুষে সম্প্রীতি।  কিভাবে অদৃশ্য দেয়াল তুলেছে হিন্দু মুসলমান ভাইদের মাঝে। কিভাবে তাদেরকে করেছে একে অপরের শত্রু। অথচ মানুষে মানুষে মিলে ঝিলে কি সুন্দরই না চলছিলো দিনকাল! সব ধ্বংস হলো ব্রিটিশদের "ভাগ কর শাসন কর " নীতির যাতাকলে। ভাগ করার বীজ তারা বপন করে চলে গেলো আর ফল ভোগ করলো আপামর সাধারন জনগন। এ এক দুর্বিষহ যাত্রা। যা আমরা পুরোপুরি পরিষ্কার ভাবে বুঝতে পারি " আগুনপাখি" নামের উপন্যাসটা পড়ে। নিঃসন্দেহে এটি বাংলা সাহিত্যে অন্যতম সেরা উপন্যাস যা আমাদের মাঝে উপহার হিসেবে দিয়ে গিয়েছেন হাসান আজিজুল হক।

      By pipilika the best

      06 Mar 2022 07:49 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      Alhamdulillah.... boita onak valo boita poira onak emotional hoiya porci...

      By Manisha Sarker

      16 Jan 2022 10:50 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      আমার পড়া অন‌্যতম এক শ্রেষ্ঠ বই।

      By শিহাব আল মুহিদ

      09 Jan 2022 11:25 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বইটি পড়া এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। গ্রামের অতি সাধারণ এক নারীর দৃষ্টি হতে সময়কে বর্ণনা করেছেন। দেশভাগ কেও দেখিয়েছেন অন্য এক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে।

      By Shoaib Mahmud

      23 Aug 2021 10:26 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      I didn't like the writing style

      By Mahdi

      31 Jul 2021 11:57 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      বালোই

      By Md. Sayef Hasan Ratul

      10 May 2021 07:32 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      আমার অসম্ভব পছন্দের বই।

      By ABU MOHAMMAD YOUSUF BIN AHAMMAD

      04 Apr 2021 09:17 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      ex

      By Tamanna Tasnin

      22 Mar 2021 07:05 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      অসাধারণ লিখনী ও কাহিনী

      By Raquibul Islam

      29 Dec 2020 11:02 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      দেশ ভাগ নিয়ে অসাধারন একটি বই

      By Minhaj Mehtaj.

      07 Jun 2020 03:48 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      দেশভাগের আলোকে লেখা। আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে।

      By Shamim Hossain

      15 Apr 2020 03:33 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      Hell of a book! Speaking of the book,it's a book about life,struggle,epidemic,war(WWII),famine,partition... Narrator of the book is an elderly woman;we can see everything through her. Hope,you are gonna enjoy the book as much as i did. Happy reading.

      By Adity

      24 Nov 2018 09:14 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      Nice story.

      By mitu

      22 Feb 2022 01:29 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      এক নারীর গল্প, এক মায়ের গল্প ❤️

      By Ove Malaker

      26 Oct 2020 04:43 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      অবশ্যই সকলের পড়ার মত একটি বই।

      By Saroar Jahan

      23 Mar 2021 08:19 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      সার্ভিস খুবই ভালো, শিপিং চার্জের জন্য হুটহাট ১-২টা বই কিনতে পারিনা।

      By Enamul Reza

      18 Mar 2019 01:22 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      সব ধ্বংসের শেষে মানুষ নিজের পাশে কি দাঁড়াতে পারে নিজের কাঁধে হাত রেখে? আগুনপাখি নামের এপিকধর্মী উপন্যাসটিতে মানুষের সেই বিজয়ী কিন্তু নিঃসঙ্গ রূপটি এঁকেছেন হাসান। এক ধরণের নির্লিপ্তি, সুতীব্র মমতা ও ক্ষমায়। শুধু রচনাশৈলীর কারণে বইটি বাংলা সাহিত্যে অনন্য তা না। আগুনপাখি অনন্য ও অভূতপূর্ব এর গল্পের শক্তিতেও।

      By Mahmudur Rahman

      16 Oct 2019 09:01 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      এই গল্পের কথক এক নারী, যার গণ্ডি সীমিত। সুতরাং, দেশভাগ সম্পর্কে কোন রাজনৈতিক বিশ্লেষণে যাওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই। সুতরাং, তা আশাও করিনি। কিন্তু এই নারীর প্রেম-বিষাদ দেখানো লেখকের উদ্দেশ্য ছিল না। তার মূল লক্ষ্য দেশভাগ। সংসার ভেঙে টুকরো হওয়ার সাথে দেশ ভাঙ্গার একটা তুলনা হতে পারে, কিন্তু দেশভাগের যে ক্ষত লেখক শেষটায় দেখিয়েছেন, তার পুরোটা কি বেজেছে পাঠকের ভেতরে? যে মাটি নিয়ে সে নারীর কথা, কেন সে মাটির প্রতি তার এতো টান, সেটা কি পরিষ্কার হলো? হাসান আজিজুল হকের গল্প মর্মে বাজে। কিন্তু এই উপন্যাস কেন যেন হৃদয় তন্ত্রী ছুঁয়ে গিয়েও সুর তুলতে পারলো না আমার। অনেক কিছু থেকেও কি যেন নেই বলে মনে হল। হাসান আজিজুল হকের গল্পের ছোট পরিসরের মাঝেও যে বিশাল এক আবহ থাকে, দূরের কোন সুর বাজে, তা এখানে পেলাম না। দেশভাগের যে ক্ষত দুই তিন লাইনে ফোটে, এখানে দুইশ পৃষ্ঠায় তা ফুটেও ফোটে না।

      By Saifuddin Rajib

      27 Dec 2018 08:53 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      আগুনপাখিঃ দেশ ও মাটির গল্পে জীবন আখ্যান। 'আমাকে কেউ বোঝাইতে পারলে না ক্যানে আলেদা একটো দ্যাশ হয়েছে গোঁজামিল দিয়ে যিখ্যানে শুদু মোসলমানরা থাকবে কিন্তুক হিঁদু কেরেস্তানও আবার থাকতে পারবে। তাইলে আলেদা কিসের? আমাকে কেউ বোঝাইতে পারলে না যি সেই দ্যাশটো আমি মোসলমান বলেই আমার দ্যাশ আর এই দ্যাশটি আমার লয়।' 'আগুনপাখি' উপন্যাসের এই যে প্রশ্ন ও ভাবনা, এর উত্তর যেমন মেজো বউ কখনো পায়নি। এর উত্তর আমার, আপনার কাছেও নেই। এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি কোন ধর্মীয় সম্প্রদায়, এমনকি বাঙালি জাতিগোষ্ঠীও। উপমহাদেশীয় হিসেবে ইতিহাসের অন্তরায় অনন্তকাল আমাদের বয়ে নিতে হবে এই জিজ্ঞাসা, যার কোন উত্তর নেই। কোনদিন হবেও না। বাংলা কথাসাহিত্যে যে কজন লেখক গল্প বলার মাধ্যমে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন তার মধ্যে হাসান আজিজুল হক অন্যতম। তার ছোটগল্প নির্মাণ ক্ষমতা ঈর্ষনীয়। তবে 'আগুনপাখি' উপন্যাসের যে স্বতন্ত্র গাঁথুনি, ইতিহাসকে টেনে সামনে এনে পাঠকের হৃদয়ে ছুঁয়ে দেবার যে শৈলী তিনি দেখিয়েছেন তা যুগান্তরে কালজয়ী হয়ে থাকবে। প্রায় একশ বছর আগে শুরু হওয়া এই গল্পের সবথেকে আকর্ষনীয় বিষয় হল ভাষার ব্যবহার। হাসান আজিজুল হক বলেই হয়ত প্রথম প্রকাশিত উপন্যাসটিতে এমন চ্যালেঞ্জ নেবার সাহস দেখিয়েছেন। রাঢ়বঙ্গের ভাষায় লেখা উপন্যাসে লেখক মূলত ধূলি ধূসরিত গ্রামের একজন আটপৌরে নারীর বর্ণনায় তার চারপাশ ঘিরে থাকা জীবনের গল্পকে পাঠকের হৃদয়ের গভীরে পৌঁছতে চেষ্টা করেছেন। যেখানে ছিলনা কোন কৃত্রিমতা অথবা ইতিহাসের গভীর তথ্যযোগ। তা সত্ত্বেও তিনি বলেছেন সব, বাকি রাখেননি কিছুই। রাজনীতি বোঝেন না, অথচ তিনিই বলেছেন ক্ষমতা-প্রলয়ের কেন্দ্রে থাকা ব্রিটিশ ও বিরোধীদের জাগরণের গল্প। বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামার গল্প যেখানে বৈশ্বিক রাজনীতি পরিলক্ষিত হয়নি তবে কি ঘটছে এবং কি ঘটতে পারে তার নিঃসৃত বিবরণ রেখেছেন হৃদয়িক শব্দ গাঁথুনিতে। চারদিকে দূর্ভিক্ষের চিত্র, অজানা রোগে আক্রান্ত বস্ত্রহীন মানুষের মৃত্যুর বর্ণনার সারল্য যেন পাঠককে পরিস্থিতি উপলব্ধির উপযোগ্য করেছে। সামাজিক ইতিহাসের গল্পে কমই রহস্য-উত্তেজনা থাকে, কারণ যুগ-যুগের ইতিহাস পাঠকের হৃদয়স্থ। এরপরেও পরিবেশ আর পরিস্থিতিকে ধারণ করে কল্পগল্প যোগে যে চিত্র পাঠকের হৃদয়কে উল্যেখিত সময় বা ঘটনায় ফিরিয়ে নিতে পারলে হয়ে ওঠে অনন্য। হাসান আজিজুল হক আগুনপাখির চরিত্রর ভাবনাতে সেই কাজটি করেছেন একেবারে মাটির সাথে মিশে। আগুনপাখি উপন্যাসের বিষয়বস্তু মোটামুটি বলেছি, কিন্তু আসলেই কি ছিল বইয়ে? মায়ের মৃত্যুর পরে গ্রামের আর পাঁচজনের মত মেয়েটিকে পাত্রস্থ করার ভাবনা ছিল বাবার। কিন্তু তখন যে তাকে মাতৃহারা ছোট ভাইকে আগলে রাখতে হয়! সেই সুত্রকে শেষ করে পাঁচ কোষ দূরের মধ্যবিত্ত পরিবারে যখন তার বিয়ে হয়, সে কি জানতো সুদীর্ঘ জীবনের আলেখ্য একদিন লিপিবদ্ধ হবে! সেই জীবনের গল্প হাসান আজিজুল হক সাজিয়েছেন চরিত্রের নিজের মুখে নিজের ভাষায়, আমার মায়ের য্যাকন মিত্যু হলো আমার বয়েস ত্যাকন আট-ল বছর হবে। ভাইটোর বয়েস দেড়-দু বছর। এই দুই ভাই-বুনকে অকূলে ভাসিয়ে মা আমার চোখ বুজল। ত্যাকনকার দিনে কে যে কিসে মরত ধরবার বাগ ছিল না। এত রোগের নামও ত্যাকন জানত না লোকে। ডাক্তার-বদ্যিও ছিল না তেমন। মরবার আগে মুখে যেদি ওষুধ পড়ত, তাই কতো! পেরায় পিতিবছর কলেরা-বসন্তে কতো যি লোক মরত, তার সীমা সংখ্যা নাই। আমার মা যি কলেরা-বসন্তে না মরে অজানা কি একটা রোগে মারা গেল তাই কতো ভাগ্যি! গল্প বলার এইযে পদ্ধতি, মনে হয় যেন খুব কাছে বসে কেউ এই আত্মকাহিনী বর্ণনা করছে। আপনি হয়ত একটু পরেই সেই কাহিনীতে বিষয়বস্তুতে হারিয়ে যাবেন। উপন্যাসের উল্যেখিত বর্ণনাকারী বলেছেন তার বিয়ের পরের কথা। একান্নবর্তি পরিবারে পয়া হয়েই তিনি মেজোবউ হয়ে প্রবেশ করেন, সেখানে সহজসরল নিঃসন্তান ভাশুর ছিল বড় ভাইয়ের মত, তেমনি স্নেহস্পদ দেবরকে তিনি সন্তানের ন্যায় বড় করার কথা বলেছেন। সংসারের অভ্যন্তরীণ দায়িত্বে থাকা শাশুড়ি ছিলেন গিন্নী এবং অধিকর্তা স্বামীকে তিনি কত্তা সম্বোধন করে বর্ণনা করেছেন। সংসার বড় হতে লাগলো, ধীরে ধীরে কত্তা হলেন গ্রামের প্রভাবশালী। প্রথম সন্তান জন্ম নিল। সেই সন্তান হল যৌথ পরিবারের সোনার টুকরো। গল্পে আয় উন্নতি যখন কানায় কানায় পূর্ণ তখন সংসার ছাপিয়ে বর্ণনা শুরু হল রাজনীতির। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্রান্তি শুরুর আগেই বাংলা জুড়ে শুরু হয়ে গেছে ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনের পরিক্রমা, সেই আন্দোলনের ছিটেফোঁটাও নেই গ্রামে। তাতে কী, জীবনের গল্প বর্ণনাকারী যে থেমে থাকেনি! থাকবেই বা কিভাবে, এই আন্দোলনের সুত্রে তার যে বড় ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল। সোনাধন ছেলের তখন গোপরেখা উঠেছে, সদ্য স্কুলের ছাত্র জড়িয়ে পড়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে। গ্রেফতার হয়ে আবার সাথে সাথে মুক্ত হলেও বাড়িতে ফিরেই পড়ে নামহীন জ্বরে। আর ওঠা হয়নি তার। এই যে শুরু হল জীবন পরিক্রমার সংগ্রামের গল্প, তারপরে বলেছেন বিশ্বযুদ্ধের গল্প। একজন আটপৌরে গৃহবধু সামগ্রিক বৈশ্বিক রাজনীতি গল্প হয়ত প্রকাশ করতে পারেননি। কিন্তু প্রত্যন্ত গাঁয়ে যুদ্ধের যে বিষবাষ্প ছড়িয়েছিল তা বলেছেন নিজের মত করে, মাটির ভাষায়। যুদ্ধ শেষ হয়নি, শুরু হয় দূর্ভিক্ষ। অবস্থাপন্ন হলেও দূর্ভিক্ষের শিকার হয়েছিলেন গল্পের এই কেন্দ্রীয় চরিত্র, বস্ত্র স্বল্পতায় পড়তে হয়েছিল পুরো পরিবারকে। একই সময় খাদ্যের দুস্প্রাপ্যতা, বস্ত্রহীনতা, কলেরা ও নানা রকম দূর্যোগের চাক্ষুস বর্ণনায় ফুটে উঠেছে,একটা যুদ্ধ- দুর্ভিক্ষ মানুষকে কতটা বিপাকে ফেলে দিতে পারে। লেখক যখন চরিত্রের ভাষায় বলেন, তিনিতো বাদ রেখে যেতে পারেন না। তিনি ফিরে আসেন পরিবারে, সেই পরিবারেও ঘটে একে একে দূর্ঘটনা। সময় পরিক্রমায় পরিবেশ বদলায়, কিন্তু কালান্তরেও পরিবারের ভেতরের মানুষের চরিত্র বদলায় না। নানা জনে নানা রুপ, এক একজনের জীবনের গল্প তিনি বলেছেন কেন্দ্রভূত হয়ে। সেখানে ননদের জীবনের গল্প যেমন এসেছেন তেমনি গিন্নী যখন বিছানধরা সেই পরিক্রমার কথাও বলেছেন। দূর্ভিক্ষের শেষ লগ্নে জমানো খাদ্যশস্য যখন শেষ হয়ে আসে, পরিবারের মানুষগুলোর পরিবর্তনের গল্প বলেছেন। ধীরে ধীরে একটা পরিবারের ভাঙনের চিত্র তিনি স্বীকার করেছেন অকপটে। বইয়ের ভেতরের গল্প বলতে গিয়ে নিজে কিছু যোগ না করলে এই আলোচনা সার্থক হচ্ছে না। দূর্ভিক্ষ নিয়ে বেশ কিছু বই পড়েছি। বলে রাখা ভাল, দূর্ভিক্ষের শিকার মানুষগুলো ধুকে ধুকে মরলেও তারা প্রতিবাদী হয়ে ওঠেনি। একই সময়ে খাদ্যের উচ্চদর ছিল, মজুদদারদের গোলাভরা ধানও ছিল। কিন্তু অনাহারে পথেঘাটে মানুষের মৃত্যু হলেও লুটপাট ও চুরির গল্প তেমন আসেনি। যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে এতটাই ছড়িয়ে পড়েছিল যে অনাহারে ও নানা রোগে ধুকে ধুকে মরা এই অঞ্চলের খবর তখন বৈশ্বিক রাজনীতির নিচে চাপা পড়ে যায়। দীর্ঘ হতে থাকে মৃত্যুর মিছিল। একশ আশিবছর ধরে শাসন করা ব্রিটিশ শাসকগন শেষদিকে এই পিড়িত জনপদ থেকে নিজেদের দৃষ্টি সরিয়ে রেখেছিলেন। আর তাতেই ত্রিশ লক্ষাধিক মানুষের করুণ মৃত্যু হয়। ইতিহাস বহু পরে এই দূর্ভিক্ষকে মনুষ্যসৃষ্ট আখ্যায়িত করলেও ক্ষতির হিসেব রাখেনি। উল্টো যাকে সবথেকে বেশি দায়ী করা হয় সেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। ফিরছি মুল গল্পে, উপরের তথ্যযোগ করার কারণ দুটো, আগেই বলেছি লেখক যে চরিত্রকে দিয়ে এই আলেখ্য বর্ণনা করিয়েছেন তিনি ছিলেন আটপৌরে গৃহিণী। লেখকতো সব জানেন, চাইলে কি আরও তথ্যযোগ করতে পারতেন না? অবশ্যই পারতেন। হাসান আজিজুল হক 'সাবিত্রী উপাখ্যান' উপন্যাসে সেই দায়িত্ব নিজে নিয়েছিলেন বারে বারে। কিন্তু 'আগুনপাখি'তে তিনি আপোষ করেননি। পক্ষপাতের কোন ছায়া ছিল না। তাই গৃহবধুর আত্মস্বরূপে স্বয়ংনিষ্ঠ বর্ণনায় লেখক ইতিহাসের তথ্যভার সপে দেননি। যাইহোক, উপরে আমার কথার অন্য কারণটি হল তুলনা। যে বঙ্গের লোকেরা ইতিহাসের অন্যতম ক্ষয়ক্ষতিপূর্ণ দূর্ভিক্ষে প্রতিবাদহীন না খেয়ে মারা গিয়েছে সেই জাতিই দূর্ভিক্ষ থেকে মুক্তি পেয়ে জড়িয়ে পড়ে ধর্মীয় কলহে। গ্রামে একটা কথা বলে, ‘সয় যদি শইলে, পাগল ঝাঁপায় কইলে’। হয়েছিলও তাই, দেশজুড়ে শুরু হয় দাঙ্গা হামলা! কিন্তু কেন? দুটি জাতি স্বাধীন হতে চায় বলে! কিন্তু সেই স্বাধীনতা কেমন? বর্ণনাকারী গ্রামের গৃহবধু, তিনিতো এসবের মারপ্যাঁচ বোঝেন না! কিন্তু তার বড় সন্তান যে ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনের শিকার হয়েছিল! তাই তাকে যে সব বুঝতেই হয়... তিনি আগেই বলেছেন, প্রায় দুশো বছর ধরে চলে আসা ব্রিটিশ শাসনের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে দেশ। তাহলে দাঙ্গা কীসের? তলে তলে চলে ধর্মের গান। সেই ধর্মের ভিত্তিতে অবশেষে ভাগ হয়ে গেলো দেশ। মুসলমানদের জন্য হল পাকিস্তান, হিন্দুদের জন্য হল ভারত। কিন্তু তিনি যে মুসলিম, একটু একটু করে গড়ে তোলা এই ঘর-বাড়ি সম্পত্তি ছেড়ে কেন যাবেন? সেটাই যেন মূল প্রশ্ন। এর উত্তর কেউ তাকে দিতেও পারেনি। আজীবন মাথা নিচু করে থাকা এই আটপৌরে নারীর ভেতরের উত্তরহীন প্রশ্নের গভীরতা তার অস্তিত্বকে শেষ অবধি একচুলও নড়াতে পারেনি! একে একে স্বামী সন্তান সব নতুন দেশে চলে গেলেও তিনি ছাড়লেন না আপন ভিটে। শুরুতে যা লিখেছিলাম সে কথাতেই তিনি শেষ করলেন, 'আমাকে কেউ বোঝাইতে পারলে না যি সেই দ্যাশটো আমি মোসলমান বলেই আমার দ্যাশ আর এই দ্যাশটি আমার লয়। আমাকে আরো বোঝাইতে পারলে না যি ছেলেমেয়ে আর জায়গায় গেয়েছে বলে আমাকেও সিখানে যেতে হবে। আমার সোয়ামি গেলে আমি আর কি করব? আমি আর আমার সোয়ামি তো একটি মানুষ লয়, আলেদা মানুষ। খুবই আপন মানুষ, জানের মানুষ, কিন্তুক আলেদা মানুষ।' সে নারী/পুরুষ তিনি যেই হোন, দীর্ঘ ইতিহাস তাঁর আত্মস্থ থাকার কথা না। আগেই বলেছি, লেখক সর্বজ্ঞানসম্পন্ন তাকেতো সব জানতে হয়, ভাবতে হয়। নাহলে তিনি লেখক হবেন কেন। হাসান আজিজুল হক সেই ভাবনা প্রকাশে অহংকারী ছিলেন না। তবে এই বর্ণনায় তথাকথিত সাহিত্য শিল্প নেই, কিন্তু মাটির গন্ধ রয়েছে। তথ্য নেই, কিন্তু মৌলিকতা অক্ষুন্ন রেখে ইতিহাসের পরিশুদ্ধ পরিক্রমার বিবরণ রয়েছে। তাই মাটির ভাষায় বর্ণনায় সম্মোহনী শক্তি গল্পের পরিবেশকে নিয়ে এসেছে পাঠকের খুব কাছে। শব্দযোগের বুননসন্ধির টান সময়ের গাড়িতে সওয়ার করে ইতিহাসকে নিয়ে এসেছে খুব নিকটে। তাহলে কি ছিলনা 'আগুনপাখি' তে? লেখায় স্বাতন্ত্র্য ও এতটাই মৌলিক করতে চেয়েছেন যে পুরো আগুনপাখিতে আলোচিত চরিত্রগুলোর কোন নাম নেই, হয়ত বংশ পরিক্রমায় কিছু নাম এসেছে তবে তাও ছিল একেবারে আপন সত্তায়। যাদের শুধু গল্প বলা হয়েছে, তারা গল্পে ভূমিকা রাখেননি। উপন্যাসটি পড়তে শুরু করার পরে আঞ্চলিক ভাষার প্রভাবে বারে বারে মনোযোগে স্খলন হচ্ছিল। তিনি মাটির গল্প মাটির ভাষায় প্রকাশে আপোষ করেননি! কিন্তু শেষ করে মনে হল, লেখককে আপোষ করতে হয়েছে। বর্ণনাকারীর ভাষা উন্নত হয়েছে, হতে পারে সময়ের সাথে সাথে এই উন্নয়ন। তবে এ বিষয়ে লেখক কোথাও লেখেননি। এমনকী কোন সাক্ষাৎকারেও নয়। সে যা হোক, সত্যনিষ্ট বর্ণনায় গল্প অক্ষুণ্ণ রয়েছে, কোন ছন্দপতন নেই। একটু আগে বলা কথা ধরে শেষ করতে হয়, চরিত্রের ওই নারী তিনি যেই হোন, দীর্ঘ ইতিহাস তাঁর আত্মস্থ থাকার কথা না। লেখক স্বয়ং এখানে কল্পনা-কাঠামোকে প্রয়োগ করেছেন সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। সেটাতো তাকে করতেই হত, আবরণ না থাকলে সেটা যে উপন্যাস হয়না, শুধু ইতিহাস হয়ে যায়। তাই বর্ণনা অবিচল রেখে ঘটনার রূপ নির্মাণে লেখক ইতিহাসকে পরিমার্জন করেছেন। তবে যৌগিক শিল্পযোগের চেষ্টা ছিলনা একদমই। আর একারনেই উপন্যাসটি স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্টে বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী রচনা হয়ে থাকবে।

      By murad

      15 Jul 2016 03:27 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      অদ্ভূত একটা উপন্যাস আগুন পাখি! কথক গল্পের মূল নারী চরিত্র। লেখাপড়া না শেখা একজন স্বশিক্ষিত নারী যিনি! যে স্বামীর প্রয়োজনের সময়ে গহনা ছাড় দিতে দ্বিধায় পড়ে যায় সেই নারীই শুধুমাত্র ধর্মের দোহায় দিয়ে দেশভাগের ভণ্ডামী সহ্য করতে না পেরে স্বামী সন্তানদের সাথে মুসলমানদের জন্য আলাদা দেশ পাকিস্তান যেতে কিছুতেই রাজী হয়না। আগুনপাখি যেভাবে ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে নতুন জীবন নিয়ে বেরিয়ে আসবার সাহস পায় গল্পের কথক আমাদের সেই সাহসের গল্প শোনান একদম তার নিজের ভাষায়। সহজ সরল গ্রাম্য ভাষায়, যেভাষায় গল্পটা পড়তে পড়তে কখনো হেসেছি কখনো বা চোখের পানিতে অক্ষরগুলো ঝাপসা হয়ে গেছে। অদ্ভুত একটা ভালোলাগায় মনটা ছেয়ে ছিল বহুক্ষণ বইটা পড়ে। গাঁয়ের একটি মেয়ে, বাপের বাড়ি শ্বশুরবাড়ির বাইরে সে জানে চারপাশের মানুষজনকে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই হিন্দু । হিন্দু বলে তারা যে আলাদা, তেমন তো কিছু বোঝেনা সে । গভীর মমতায় সে গড়ে তোলে তাদের বড় একান্নবর্তী সংসার, আর রাতের নিরালায় স্বামীর কাছে শিখে নেয় অল্পসল্প লেখাপড়া । সুখ দুঃখ এর নানা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে সে দেখে কেমন করে তার স্বামী জড়িয়ে পড়ে সামাজিক কাজে, হিন্দু মুসলমান দুই সম্প্রদায় এর কাছেই কতটা প্রিয় এক নেতা হয়ে ওঠে সে। কিন্তু হঠাত যেন পাল্টে যায় সব। তাদের একান্নবর্তী সংসারেও ধরে ভাঙ্গন, আর বাইরেও কোথা থেকে রব ওঠে যে দেশটাও নাকি ভাগ হয়ে যাবে । তা কি করে হয় ? দেশ আবার ভাগ হয় কেমন করে ? অবিশ্বাস্য সেই ঘটনাও সত্য হলো একদিন। মুসলমান পাড়া প্রতিবেশীরা চলে যেতে লাগলো ভিটে ছেড়ে । পরিজনেরাও । কিন্তু সে? না , সে কিছুতেই যাবেনা, কেননা, সে বলে " আমাকে কেউ বোঝাইতে পারলেনা ক্যানে আলেদা একটো দ্যাশ হয়েছে ,...[কেন] এই দ্যাশটি আমার লয়।"

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!