User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নাম- ২৩° ৪৪' ৪৮" ৯০° ২২' ৫০" লেখক- সুহান রিজওয়ান বইটি নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমেই আসবে বইটির নাম নিয়ে সংশয়। নাম এমন কেন? চতুর পাঠকরা অবশ্যই নাম দেখে ধারণা করে নেবেন যে লেখক কোনো নির্দিষ্ট ঠিকানাকে তার বইয়ের নাম হিসেবে ব্যবহার করেছেন। বইয়ের নামটি কথায় বলতে গেলে, "তেইশ ডিগ্রি চুয়াল্লিশ মিনিট আটচল্লিশ সেকেন্ড থেকে নব্বই ডিগ্রি বাইশ মিনিট পঞ্চাশ সেকেন্ড" এইরকম শোনাবে। এরপর এই লোকেশনটা যদি আপনি আপনার স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটারের ম্যাপে খোঁজ করেন তাহলে সুনির্দিষ্ট ভাবে যে ঠিকানার উল্লেখ পাবেন সেটা হলো ঢাকা শহরের মিরপুর রোডের পাশের একটা ঠিকানা। এর কারণ হলো লেখকের বেড়ে ওঠা ঢাকা হওয়া সম্ভবত। তবে তিনি ঢাকাতেই সীমাবদ্ধ থাকেননি, অফিসের কাজে চীন ভ্রমণ এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে ইউরোপ ভ্রমণের কথাও যোগ করেছেন তার বইয়ে। এরপর আসি বইটির বিষয়বস্তু নিয়ে, বইটা লেখকের জার্নাল। ২০১৫ থেকে ২০২০। দীর্ঘ ৬ বছরের লেখকের নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়, চিন্তাভাবনা, নিজের কথা উঠে এসেছে বইটিতে। তৎকালীন সময়ে ঘঠে যাওয়া নানান আলোচিত ঘটনাগুলি সম্পর্কে নিজের মন্তব্য যেমন রয়েছে তেমনই রয়েছে বিভিন্ন মুভি কিংবা সিরিজ নিয়ে কথা, বই নিয়ে আলোচনা, বিভিন্ন লেখক কিংবা লেখিকার লেখা অথবা উনাদের বক্তৃতা শোনার অভিজ্ঞতা সাথে সাক্ষাৎ লাভের ঘঠনা-ও উল্লেখ্য। একজন লেখকের জার্নাল পড়ার মানে হলো তার নিত্তনৈমিত্তিক বিষয়গুলো সম্পর্কে জানা। তাতে তাঁর লেখার উপকরণ নিয়ে কথা যেমন রয়েছে তেমনই লেখা নিয়ে তাঁর নিজস্ব চিন্তাভাবনাসহ সাহিত্য বিষয়ক চিন্তাভাবনাও উপস্থিত। তার মানে আমরা লেখকের ব্যক্তিগত চিন্তার জগতের আরো কাছে যেতে পারছি। তাঁর চিন্তাভাবনাগুলোর পাশে যাওয়ার জন্য জার্নাল চমৎকার এক উপায় বলে মনে হলো। বইয়ের এক পর্যায়ে দেখেছি লেখক পুরোদস্তুর লেখক হওয়ার জন্য নিজের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন। আমি যদি ভুল না হই তাহলে কিছুদিন আগে লেখক সেই দুঃসাহসী কাজটাই করে ফেলেছেন। তারমানে আমরা হয়তো ভবিষ্যতে এমন একজন লেখকে পাবো যিনি পুরোদস্তুর লেখক। জার্নাল পড়ে আরেকটা অনুভূতি হলো যেটার কথা না বললেই নয়। আপনি হয়তো একটা ঘটনা বা প্রেক্ষাপটকে একটা দৃষ্টিতে দেখছেন এখন আপনি জানেন যে ব্যক্তিভেদে যেকোনো প্রেক্ষাপটের বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থাকতে পারে। জার্নাল সেই সুযোগটিই করে দিয়েছে খুব সহজে, লেখকের মনোজগতে প্রবেশের(অবশ্যই লেখক যতটুকু প্রবেশ করতে দিয়েছেন তার মনোজগতে) একটা সুযোগ। লেখক বিভিন্ন ঘটনাকে কীভাবে দেখছেন তাঁর দেখার সাথে আমার কিংবা আপনার দৃষ্টিভঙ্গির মিল কিংবা অমিলটা ধরতে পারবেন। রিভিউ: অনিক চৌধুরী সংগ্রহ: গুড রিডস
Was this review helpful to you?
or
অমর একুশে বইমেলা ২০২৩। ২৩°৪৪’৫৮” ৯০°২২’৫০” প্রথম কেনা বই এ বছরের। কিনেই পড়ে ফেললাম। প্রতিদিনের ডাইরি লেখা অনেক সহজ। কিন্তু প্রতিদিনের ঘটনা, চারপাশে মানুষের জীবনধারা আর তা থেকে রসদ নিয়ে, ভিন্ন ভাবে দেখে এবং উপলব্ধি করে লেখা সহজ নয়। এই কাজটি লেখক করেছেন খুব সুনিপুন ভাবে। এই ব্যস্ততম শহরে নাগরিক জীবনের ঝঞ্ঝাট থেকে বের হয়ে কিছু লিখতে পারাও একরকম ভাবে একটি পরীক্ষা। লেখকের মত আমরাও সাধারণ মানুষ প্রতিদিন এই পরীক্ষাটা দেই। কখন সফল হই বা কখন সব কিছুই বিফলে যায়। দিনলিপিটিতে স্থান পেয়েছ চীন এবং পেশাগত কাজে সেখানে অবস্থানের সময় তাঁর অনুভূতি। মৃত্যু ভয়কে উপেক্ষা করতে না পারা, কিছু না পড়া বই, অক্ষরে মানুষ আর বোধের অগম্য কিছু একটা ধরার অবিরাম চেষ্টা যেন শেষ হয় না বইটিতে । লেখক ইতিহাস পছন্দ করেন। মানুষের অতীত ইতিহাস সবসময়ই অবিশ্বাসের এটাই তাঁর উপলব্ধি। দুর্ভোগের এই শহরে বৃষ্টি একটি বড় দুর্ভোগ হয়ে দেখা দেয়। সেই সময়ের মানুষের অবর্ণনীয় কষ্ট এখানে ফুটে উঠেছে। পেপারহোয়াইট থেকে শরৎচন্দ্র, শাহদুজ্জামান , মোড়ের দোকানের চা আর ডাল পুরি, লাকি আকন্দ, আজিজ মার্কেটের তক্ষশীল দোকানের মালকিন বুড়ি, সুনীল, সবই আছে এই দিনলিপিতিতে। হটাত ফোন পেয়ে মনে হল আনিস ভাই অন্য কোনদিন মরলে পারত। কত সরল মনের অনুভব। রেসকোর্সে মুজিবের তর্জনী, কষ্ট করে টেনে পড়া হুমায়ুনের “মধ্যাহ্নও”, নিজের দ্বিতীয় উপন্যাসের খসরা, ইউরোপ ভ্রমন যেখানে সাদা কালো অক্ষরের মাঝ দিয়ে সহজেই ঘুরে আসা যায় দেশ-মহাদেশ, পিচ্চি মেয়ে “দখিনা”, লিট ফেস্ট , শওকত ওসমান, কোটাবিরোধী মিছিল, জাফর ইকবালের উপর হামলা, জাতীয় সংসদ নির্বাচন, সেলিনা হোসেন, চাকরি ছেড়ে দেবার সিদ্ধান্ত, লেখালেখির কোর্স ও প্রত্যাক্ষান , অজয় রায়, করোনা ভাইরাস ও পরবর্তী অবস্থা, মানসিক চাপ, সৌমিত্র সবই খুব সূচারু ভাবে লিপিবদ্ধ আছে বইটিতে। লেখক উপন্যাস লিখে যেতে চায়, সে বুঝতে পারে প্রতিটি মানুষ মাত্রই অনন্য গল্পকার, কারণ সমস্ত ঘটনাই সে ব্যবহার করে নিজের বয়ানের সুবিধার্থে। দিনলিপিটি থেকে আমার জেনে যাই যে মানুষের অনুরাগ থাকে না চিরকাল, অনেকটা কঠিন পথ একত্রে হেঁটে এসেও মানুষ আলাদা হয়ে যেতে পারে। আরো যে, ফেসবুকে চুপ করে থাকাটা শেখা দরকার অথবা দারুণ প্রজ্ঞাবান মানুষও নিজের ভিতরের নিচতা এড়াতে পারে না।হয়তো এভাবেই চিরদিন লেখার আড়ালে নিজেকেই লুকিয়ে রাখে লেখক? কিন্তু এটাও তখন মনে পরে যে, পৃথিবী শুনতে না চাইলেও নিজের কথাটা বলে যাওয়াই লেখকের কাজ লেখক উপলব্ধি করে , সত্যিকারের স্থানীয় লেখা না লিখে বৈশ্বিক হওয়া যায় না কিছুতেই। শৈল্পিক ভাবেও যে একটি দিনলিপি লেখা যায় পাঠকের মনে খোড়াক রেখে, ২৩°৪৪’৫৮” ৯০°২২’৫০” একটি উত্তম উদাহরণ।