User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

      By Shakil Hossen

      27 Oct 2024 03:50 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      উপন্যাস টি খুবই ভালো - মনোযোগ সহকারে পড়েছি - বাঙালী মেয়ের জীবন যুদ্ধ। পরিশেষে ডিভোর্স খাও। উপন্যাস পড়ে বুঝলাম মেয়ে মানুষ উপার্জনক্ষম হলে পুরুষ মানে নাহ্ অর্থাৎ স্বামীকে মানে নাহ্।

      By T M Raihan Masud

      04 May 2024 02:02 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      কর্মজীবী,সংগ্রামী মেয়ে মানেই যে তাকে নিজের জীবনসঙ্গীর প্রতি এমন শীতল, ভাবলেশহীন হিসেবে চিত্রায়িত করতে হবে, এর কোনো মানে নেই। বাস্তব জীবনের সংগ্রামী মেয়েদের মনটা মায়ায় পরিপূর্ণ থাকে, তা শুধু ছোটবেলার গুরুজনদের প্রতিই না, জীবনসঙ্গীর প্রতিও। নায়িকার এই বর্ণনাটা সবার চোখে প্রশংসনীয় হলেও, আমার কাছে লাগে নি।

      By pur****com

      02 Mar 2024 11:04 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      Onek vhalo akti boi

      By Tahmina Sultana

      15 Jan 2024 11:34 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      নানা দস্যিপনা আর ছেলেমানুষিতে ভরা একটি এগারো বছরের ছোট্ট মেয়ে " দীপাবলির" একদিন ধুম করে বিয়ে হয়ে যায়। মেধাবী, সুশ্রী দীপার সব স্বপ্ন, ইচ্ছাকে মাটিচাপা দিয়ে তাকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের ঠিক তিনদিন পরে তাকে 'বিধবা থান' পড়তে হয়। স্বামীর সাথে কোনো প্রকার শারীরিক বা মানসিক সম্পর্কে যাওয়ার পূর্বেই পাওয়া বিধবা উপাধি নিয়ে দীপাকে কাটাতে হয় বাকিটা জীবন। সনাতন ধর্মের হাজারটা রীতি-নীতি পালন করা শুরু হয় এই এগারো বছর বয়স থেকেই। কিন্তু এতে দমে যায়নি দীপাবলি। যার নামের মধ্যেই নিহিত অন্ধকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আভাস সেই দীপাবলি ধীরে ধীরে তার জীবন সংগ্রামে চলার পথের হাজারো বাধা-বিপত্তিকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যেতে শুরু করে। কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সে অন্যায়ের সাথে আপোস করেনি। মেয়েদের ন্যায্য অধিকার আর ছেলেদের সমান হতে তাকে সারা জীবন সংগ্রাম করতে হয়েছে। তেজি, পরিশ্রমী আর সততাবান এই দীপাবলি চরিত্রটি পাঠককে ভাবতে শেখায়, জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে শেখায়। স্বাধীনতা-উত্তর বাঙালি জীবনে স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে পৌঁছানোর প্রয়াসে মেয়েদের সাধ, সংকল্প ও সংগ্রামের এক জীবন্ত, ধারাবাহিক ছবি ফুটিয়ে তোলার জন্য অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে "সমরেশ মজুমদারের" এই সুদীর্ঘ, সুকল্পিত, সুবিন্যস্তএই উপন্যাস "সাতকাহন"

      By 880****686

      16 Sep 2023 08:08 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বাঙালী সাহিত্যের জনপ্রিয় লেখক "সমরেশ মজুমদার"-এর ব্যপক আলোচিত, দুটি খণ্ডে বিভক্ত, সাড়া জাগানো একটা উপন্যাস হলো 'সাতকাহন'। সাতকাহন আমার কাছে কোন বই বা উপন্যাস না। এটা আমার কাছে একজন সাহসী ও তেজস্বী নারীর গল্প। বিংশ শতাব্দীতে একটা নারীকে যত রকম ঘাত-প্রতিঘাতের সম্মুখীন হতে হয়েছিল, তার এক-একটি কানা-কড়ি লিপিবদ্ধ হয়েছে এ বইটিতে। এ গল্পের মূল নায়িকা দীপাবলি। তাকে নায়িকা না বলে একজন সংগ্রামী নারী বলাটাই বেশী শ্রেয়। দীপাবলির শৈশব কেটেছে জলপাইগুড়ির ডুয়ার্সের চা বাগানে। শৈশব ছিল তার আনন্দ ও স্মৃতিতে পরিপূর্ণ। কিন্তু তারপরই শুরু হয় প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে এগিয়ে চলা, স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করার অদম্য ইচ্ছা! আংড়াভাসা নদীর তীরের চা বাগান থেকে উঠে এসে স্বাধীন ভারতের একজন রেভিনিউ কর্মকর্তা হয়ে উঠার পেছতে শত প্রতিকূলতা এবং যুদ্ধের গল্প এটি।

      By Tonmoy Debnath

      10 Sep 2023 12:42 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      #রকমারি_বইপোকা_বুক_রিভিউ বই পড়া মূলত শুরু হয় হুমায়ূন আহমেদকে দিয়ে। তাঁর সহজ ও সাবলীল লেখা পড়তে কখনোই সমস্যা হয়নি। হয়তো একারনেই বই পড়তে এক অন্য রকম ভালো লাগা তৈরি হয়। তবে এত দিন হুমায়ূন আহমেদের বই পড়ে ভাবলাম অন্য লেখকেরও বই পড়া উচিত। সমরেশ মজুমদারের সাতকাহন (১ম খন্ড) । উপন্যাসটি তার প্রধান চরিত্রের জীবনের সংগ্রামের গল্প বলে। উপন্যাসের সময়কাল স্বাধীন বাংলার পঞ্চাশের দশককে ঘিরে। তখনও বাংলাদেশ বলতে কোনো দেশ তৈরি হয়নি। বাংলাদেশ বলা হতো মূলত পশ্চিম বাংলাকেই । সাতকাহন উপন্যাসের কেন্দ্রচরিত্র দীপাবলী। দীপাবলী শৈশব থেকেই খুব দূরন্ত। বন্ধুদের সাথে খেলাধূলা করা, ফুল পাড়া, মাছ ধরা, চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানো ছিল তার পচ্ছন্দের কাজ। কিন্তু সেইসাথে পড়াশোনায়ও ভালো ছিল সে। মা, বাবা, ঠাকুমা ও দুই ভাইকে নিয়েই তার পরিবার। দীপার বাবা অমরনাথ চা বাগানে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে তারা কোয়াটার্সে থাকে। তবে যে টাকা মাইনে পায় তাতে স্বাচ্ছন্দের জীবনযাপন করা দায়। কিন্তু দীপার প্রতি অমরনাথের ভালোবাসা অনেক বেশি ছিল তাই কম বেতন থাকা সত্ত্বেও দীপার পড়াশোনার পথে বাধা হয়নি কখনো বরং আরো উৎসাহ করেছেন। তবে অমরনাথ যখন দেখল যে, জলপাইগুড়ির এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলের সাথে বিনা যৌতুকে দীপার বিয়ে দেওয়া সম্ভব তখন তিনি আর বেশি দেরি করলেন না। দীপার বয়স তখন ১২ বছর। সে আরো পড়তে চেয়েছিল কিন্তু তার ইচ্ছার বিরুদ্ধেই তাকে বিয়ে দেওয়া হয়। এখন একে অমরনাথের যৌতুক না দেয়ার লোভ বলব নাকি মেয়ে যাতে সুখে থাকে এজন্য মেয়ের প্রতি ভালোবাসা, তা বলা মুশকিল। জীবনে যত বড় বড় ঝড় আসে তা ক্ষণস্থায়ী হলেও তার রেশ থেকে যায় বহুদিন। দীপাবলীর জীবনে বিয়ে নামক অধ্যায়টাও সেরকমই। বিয়ের রাতে সে জানতে পারে তাকে জন্ম দেওয়ার সময় তার জন্মদাত্রী মা মারা যায়। নিজের বাবা তার দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করে। তখন তার আপন মাসি তাকে আপন করে নেয়। অঞ্জলি ও অমরনাথের পালিত সন্তান সে। বিয়ের দুদিনের মাথায় তার স্বামী মারা যায়। শশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় সে। কিছুদিনের ব্যবধানে এতকিছুর ধাক্কা তাকে এক রাতেই বড় করে তোলে। সমাজের সাথে লড়াই করা শিখেছে সে। নিজেকে বিধবা না ভেবে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে। শশুরবাড়ির সাথে সকল সম্পর্ক সে ত্যাগ করে। তবে অতীতকে ভুলে থাকার চেষ্টা করলেও অতীত বার বার ফিরে আসে। দীপাবলীর শশুরের মৃত্যুর পর তার সকল সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয় দীপাবলী। কিন্তু দীপাবলীর আত্মসম্মান তাকে ঐ সম্পত্তি ভোগ করতে আপত্তি জানায়। তবে এত অর্থ সম্পদ ভোগ করার জন্য লোভী শকুনদের অভাব হয় না। তাই সে সিদ্ধান্ত নেয় সকল সম্পত্তি জনকল্যানে নিযুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠানে দান করে দেবে। পথে অনেক বাধা আসলেও সে সকল কিছু উপেক্ষা করে লড়ে গিয়েছে। দীপাবলী তার স্বপ্ন পূরণ করতে চায়। স্বপ্ন পূরণের পথে অনেককে পেয়েছে ভালো বন্ধু হিসেবে। সে চায় আই এস দিয়ে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে। সে কী পাড়বে তার স্বপ্ন পূরণ করতে? তার-ই উত্তর রয়েছে সাতকাহন ২য় খন্ডে । তৎকালীন সময়ের কুসংস্কার ও অবৈধ রীতি-নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার এক প্রতিবাদী মেয়ের গল্প বলে সাতকাহন উপন্যাস। সমরেশ মজুমদার তার লেখায় প্রতিটি চরিত্রকে খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। খুবই গুছিয়ে তিনি তৎকালীন সময়ের পশ্চিম বাংলা ও সেখানকার মানুষের চরিত্রের বর্ণনা দিয়েছেন।

      By Robiul islam Rbl

      11 Aug 2023 01:08 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      অনেক সুন্দর একটি বই।

      By Sumiya Afrin

      26 May 2023 10:06 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      আমার পড়া সবথেকে পছন্দের বই ছিল এটা একজন মেয়ের অবশ্যই পড়া উচিত

      By Md.Rabiul Islam

      13 Sep 2022 09:33 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      অসাধরণ একটি উপন্যাস।

      By asaduzzaman milon

      19 Aug 2022 01:00 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      Joss

      By ইমমেন্স খীসা

      23 Jul 2022 08:20 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      খুব সুন্দর বই,

      By ফখরুল আলম শাওন

      14 May 2022 07:22 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      nice

    • Was this review helpful to you?

      or

      I think every struggling women with having a high ambitions must read "SATKAHAN"...

      By Samaown Alam Swapno

      27 Jan 2022 01:52 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      nice one ?

      By Nazmul

      01 Nov 2021 05:31 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      Nice

      By Firoz

      26 Sep 2021 12:37 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      এটা কি দুটো পার্ট একসাথে আছে..?

      By Laxmi Akter

      11 Sep 2021 03:14 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      এ উপন্যাসের কেন্দ্র চরিত্রে আছে সাহসী এক মেয়ে দীপাবলী, যে ভাগ্য প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে নিরন্তর যুদ্ধ করতে করতে বহু বাঁধা বিপর্যয় পার হতে হতে কিভাবে সন্ধান পেল অমল এক তীরের, তাই নিয়ে এ কাহিনীর প্রথম খন্ড। বইটি কিনেছিলাম আরো বছর সাতেক আগে কিন্তু পড়বো পড়বো করেও আর পড়া হলনা। এত সুন্দর একটি উপন্যাস। দীর্ঘ একটি উপন্যাস তবু কেমন যেন হঠাৎ করেই শেষ হয়ে গেল। অসম্ভব ভাল লেগেছে বইটি আমার কাছে।

      By Fatema Akter

      24 Aug 2021 12:38 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      Thank you Rokomari ❤️❤️❤️❤️

      By LIFE OF Shisir

      21 Jun 2021 11:11 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      দীপাবলি .. মেয়েটি কে এমন ভাবে তুলে ধরা হয়েছে যে পাঠক চাইলেও তাকে অবজ্ঞা করতে পারবে না।শুধু পাঠক কেন উপন্যাসের কোন পুরুষ চরিএ পারে নি তার দৃঢ়তা কে অবজ্ঞা,অসম্মান করতে।এই বার আসি এই দিপাবলি কতটা এই ভারতীয় উপমহাদেশের মেয়েদের প্রতিচ্ছবি। উপন্যাসে যে সময় উল্লেখ করা হয়েছে তা আজ হতে ৬০-৭০ বছর আগের কথা।সেই দিক থেকে দীপাবলির যে ছবি পাই তা সত্যি প্রশংসনীয়। ভাবা,যায় না ১৯৬০ সালের একটি মেয়ে, যে সমাজের রীতিনিতির কথা না ভেবে শুধু নিজের অস্তিত্বের কথা ভেবে এত সংগ্রাম করেছে। অল্প বয়সে বিয়ে তারপরে বৈধব্য মেয়েটির পুরো জীবন কে অন্য বাঁকে ঘুরিয়ে দেয়।তার এই বৈধব্য তাকে যেমন তছনছ করে দিয়েছে সাথে সাথে দিয়েছে অনেক সাহস।সে নিজের অনুপ্রেরণা আর জেদে জীবন সংগ্রামে জয়ী হয়েছে। জীবনের কঠিন সময় গুলো কীভাবে মাথা ঠান্ডা রেখে উতরানো যায় এই বিশেষ গুণটি দিপাবলীর মধ্যে ছিল।সমরেশ মজুমদার এমন করে দীপাবলি কে সৃষ্টি করেছেন সত্যি অবাক লাগে।অত আগের একজন মেয়ে এত আধুনিক আর এত ব্যক্তিসম্পন্ন হতে পারে,ভাবাই যায় না!!এখন২০২১সালে এসে ও আমরা দীপার মত হতে পারি নি।জানি না হতে পারবো কি না!! তারমত হতে পারা সত্যি কঠিন।

      By Prioti

      12 Jun 2021 11:22 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      বইয়ের নাম-সাতকাহন লেখক-সমরেশ মজুমদার সমরেশের সৃষ্টি করা "দীপাবলি" চরিত্রটি নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার একটি নাম।এ বইটিতে উঠে এসেছে দীপাবলির জীবনে উঠা-নামা এবং কালো থাবার বিরুদ্ধে একটু একটু করে অদম্য সংগ্রামের কথা।স্বামীর বিশৃঙ্খল জীবন-যাপন,সৎ মায়ের রুঢ় আচরণ,কর্মজীবনে সহকর্মীদের জোঁকের মতো রক্ত চোষার মানসিকতা,অর্থের স্বল্পতা যেন দীপাবলিকে কষ্টিপাথরে পরিণত হতে বাধ্য করেছে।এত অসঙ্গতির ভিড়েও দাদি মনোরমা,খোকন আর মায়ার চরিত্র তার কাছে খরা দিনে বর্ষার মতই মনে হয়। কী করে চোখের সামনে একটি মানুষ বদলে যায়,কী করে কর্মক্ষেত্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি হয়,কীভাবে একজন সাধারণ মেয়ে একাই মুখোশপরা সমাজে টিকে থাকার চেষ্টা করে সেটি এ বইয়ে খুঁজে পাওয়া যাবে।বইটি শুধু বই-ই নয়,এটি কঠোর বাস্তবতার জীবন্ত এক দলিল।দীপাবলিরা এখনও আছে,হয়তো আমাদের আশেপাশেই আছে,তারা লড়ে,একাই লড়ে,লড়তে লড়তে মাঝে মাঝে হয়তো পেরে ওঠে না,তবু তারা উঠে দাঁড়ায়।কারণ তারা জানে,তারা উঠে না দাঁড়ালে অন্ধকারের করাল গ্রাসে বাকি দশটা নারীকেও হারিয়ে যেতে হবে।

      By Jahid Hasan

      07 Feb 2021 12:07 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      good

      By Monisha Khanom

      28 Oct 2020 10:37 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      অসাধারণ একটা বই❤

      By MD. TAREK RAHMAN

      21 Oct 2020 11:09 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      আমার পড়া সেরা বইয়ের তালিকায় সাতকাহন কে রেখে দিচ্ছি ???

      By arif suvo

      12 Aug 2020 12:36 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      আমার পড়া অন্যতম একটি শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। বাস্তবিক অর্থে এটা পড়ার পর থেকে আমার বই পরা আর সংগ্রহের প্রতি নেশা ধরে যায়। একটা প্রানশক্তি আছে সাতকাহনে। সত্যই অসাধারন।

      By Md Tarek

      27 Apr 2020 11:16 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      বইটি পড়ে অনুপ্রেরণা পেয়েছি কিভাবে সমকালীন যুদ্ধের মত ব্যক্তি বা বাস্তব জীবনে লড়ায় করে বেঁচে থাকা যায়।

      By Tanzila Mahbub

      07 Feb 2020 09:40 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      অসাধারণ বই একটি।

      By Sohel

      06 Nov 2019 12:07 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      সমরেশ মজুমদারের লেখা "সাতকাহন" উপন্যাসটি মূলত একজন নারী কেন্দ্রিক উপন্যাস। সমাজের নিচু স্থান থেকে একা একজন মেয়ের উপরে উঠে আসার গল্প এই সাতকাহন। উপন্যাসটি দ্বারা লেখক বুঝাতে চেয়েছেন যদি ইচ্ছে শক্তি দৃঢ় হয়, তার লক্ষ্য ঠিক থাকে ও কঠোর পরিশ্রমী হয় তাহলে তাকে কেউ ঠেকাতে পারবে না।আমাদের সমাজে একটি মেয়ের অবস্থান কোথায় তারই কিছু বাস্তব চিত্র এই উপন্যাসে তুলে ধরা হয়েছে। উপন্যাসের মূল চরিত্র দীপাবলী নামের একটি সাহসী মেয়ে। উপন্যাসে দীপাবলী ছাড়াও আরো অনেকগুলো নারী চরিত্র এসেছে। চা-বাগানকে ঘিড়ে যাদের জীবিকা, তাদের জীবন কেমন হয় তার চমৎকার বর্ণনা পাওয়া যায় বইটিতে। দীপাবলীর উপরে উঠার প্রথম ধাপটি শুরু হয় এই চা-বাগান থেকেই। সাহস আর একাগ্রতার জোরেই অতীতের সবকিছু ভুলে শুরু করতে পেরেছিল নতুন জীবন।নিজের ভাগ্য নিজেই তৈরি করেছিল পড়াশুনার মাধ্যমে। কাছের মানুষরা লোভে ভয়ঙ্কর দানব হয়ে উঠেও দীপাকে কেউই থামাতে পারেনি। তখন সে বুঝতে পারে সে আসলে অনেকের মাঝে থেকেও ভীষন একা। তবুও সে ভেঙ্গে পড়েনি। দীপার কাছের মানুষ বলতে কেউই ছিলোনা! কেউ হাত বাড়িয়ে দেয়নি দীপার দিকে। সুযোগ ছিলো অনেক, চাইলেই তা হাত বাড়িয়ে নিতে পারতো দীপা। কিন্তু তা সে করেনি। সাধারণের মাঝেই দীপা অসাধারণের প্রতীক।

      By Huzzatul Islam Alif

      18 Oct 2019 09:05 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      প্রকৃতির নিজের ছবিটা তুলে ধরে ভারতবর্ষ বিশেষ করে বাংলা এলাকার মাটি ও মানুষ, মানসিকতা, সুখ, দুঃখ, হা-হুতাশের ছবি ফুটে ওঠেছে বেশ ভালভাবেই। কেবলমাত্র সম্পদের জন্য মানুষ কতটা নীচ হতে পারে সেটা দেখানোর পাশাপাশি মহৎ মানুষদের স্বরুপও ফুটে ওঠেছে। কিছু খাঁটি মানুষের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হয়েছে যারা পৃথিবীকে একটু হলেও দেবার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। ঘুনে খাওয়া সমাজটাকে বদলে ফেলার জন্য তৃণমূল থেকে প্রচেষ্টা চালান। কু-সংস্কারাবদ্ধ এই সমাজটাকে বদলে ফেলার জন্য প্রত্যয়ী হন। সমাজ জীবনের কথা বলা হয়েছে।অসাধারন বই।। কয়েক টা লাইন অনেক ভালো লাগছে,,,, ১.বিজ্ঞজনেরা বলে কখনও কাউকে ভালবাসলে তাকে বিয়ে করো না । ভাল বাসা হল বেনারসী শাড়ির মত, ন্যাপথালিন দিয়ে যত্ন করে আলমারিতে তুলে রাখতে হয়, তাকে আটপৌরে ব্যবহার করলেই সব শেষ। ২।বিষয় সম্পত্তি মানুষকে নির্লজ্জ করে । বিশেষ করে আর্থিক দুরবস্থায় পড়লে এবং সামনে কোন নির্দিষ্ট উপায় না থাকলে সে অসহায় হয়ে পড়ে । তরুণ বয়সে যা সহনীয় হয় যৌবন পেরিয়ে তা হয়ে দাঁড়ায় পীড়াদায়ক । তখন ডুবন্ত মানুষের পায়ের মতো মানুষের মন কিলবিল করতে থাকে একটু শক্ত জমির জন্য । ন্যায়, নীতি, স্নেহ, ভালবাসা ইত্যাদির ওপর নিজেকে স্তোক দেয়া পোশাক পড়িয়ে দিতে সে মোটেই দেরি করে না। ৩। কোন মানুষের যদি জেদ, পরিশ্রম, সততা এবং সেই সঙ্গে প্রতিভা থাকে জীবন তাকে সাফল্য দেবেই । ৪।সব কিছু মনের মত মেলে না, মানিয়ে নিতে হয় । মেনে নিলে একসময় ঠিক সুখ ফিরে আসে। ৫।প্রতিটি সংসারের নিজস্ব কিছু সমস্যা থাকে । বাইরে থেকে দেখলে আঁচ করা যায় না। ৬। বিজ্ঞজনেরা বলে জীবনযাপন বড় সহজ ব্যাপার যদি মানিয়ে চলতে পার । হংসের মত দুধটুকু খেয়ে জল ফেলে দাও, গায়ে মেখো না । কিংবা দুটোকে মিলিয়ে মিশিয়ে জটিল করতে যেও না । সংসারে থাকবে সন্ন্যাসীর মত । স্পর্শ করবে কিন্তু ধরবে না । এই আলগাভাব যে যত ভাল রাখতে পারবে তার তত ঝামেলা কম । ৭। বিপদ মানুষের ব্যবধান কমিয়ে দেয়।

      By Anik Hassan

      02 Sep 2019 03:10 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বইয়ের নাম: সাতকাহন; লেখক: সমরেশ মজুমদার; ধরন: সমকালীন উপন্যাস; প্রকাশক: নবযুগ প্রকাশনী যখন ক্লাস নাইনে পড়ি, আব্বা কিনে দিতেন শরৎচন্দ্রের উপন্যাস গুলো। এর পরে দিলেন সমরেশ মজুমদারের ‘কালবেলা’,কালপুরুষ, সাতকাহন” এইসব উপন্যাস পড়ে বুঝলাম এই বিখ্যাত লেখকরা নারীকে অনেক উঁচু আসনে বসিয়েছেন।দেখিয়েছেন কীভাবে তারা সকল প্রতিকুলতাকে কাটিয়ে উঠতে পারে। আজ থাকছে, সমরেশ মজুমদারের বিখ্যাত উপন্যাস “সাতকাহনের” বুক রিভিউ! নায়িকা বলবোনা, সংগ্রামী নারীর প্রতিক বলবো দীপাবলি কে। যার চাঞ্চল্যতা আর আত্ম সম্মানবোধ আমাদেরকে বুঝতে শিখিয়েছে বাস্তবতাকে কীভাবে রঙিন সুতোয় বাঁধতে হয়! দীপাবলীর মা অন্জলি, ঠাকুরমা মনোরমা, বাবা অমরনাথ, ছোট বেলার বন্ধু খোকন, বিশু তারা আর কেউ নয়—-শত বছর পরেও মনে হবে এই সমাজেরি আমরা কেউ। দীপাবলির প্রতিটা কথা, কর্মউদ্দীপনা, সকল প্রতিকুলতাকে উপেক্ষা করে এগিয়ে চলে, কীভাবে নিজের স্বপ্নগুলোকে ছুঁয়ে দেখা যায়,,,তা আমাদের জীবনের গল্প মনে হবে। শৈশব সবসময় আনন্দের আর স্মৃতিতে পরিপূর্ণ। উপন্যাসটি পড়তে গিয়ে আপনারও মনে হবে শৈশবেই আছি, সাথে থাকবে মায়ের বকুনি, শাসন আর বন্ধুদের চপলতা। তখন বাল্যবিবাহ এর প্রথা চালু ছিলো। দীপার সুন্দর শৈশব কেড়ে নিয়ে জোর করে বিয়ে দেয়া হয়। সেখান থেকে ফুলশয্যার পরদিনেই চলে আসা। পাঠকের মনকে নাড়া দিবে কালবৈশাখীর মতো। জীবন তো থেমে থাকেনা। বহতা নদীর মতো চলে। সকল বাধা পিছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়াতে হয়! তখন কেউ না কেউ পাশে এসে দাঁড়ায়। বোঝাতে সাহায্য করে, জীবনকে দ্রুতগামী ট্রেনের মতো চালাতে হয়।দীপা পেয়েছিলো তার শিক্ষক কে। যিনি দীপাকে বুঝিয়েছিলেন মেয়েরাও পারে!”। শুরু হলো জীবন যুদ্ধের এক মহা কাব্য। তিক্ত অভিজ্ঞতাকে মনের ভিতরে রেখে সে ম্যাট্রিক পাশ করলো ফাস্ট ডিভিশনে। এরপর জলপাইগুড়ি কলেজ, তারপর কলকাতা। সেই কিশোরী হয়ে উঠলো স্বতন্ত্র, বিদ্রোহী নারী। সমাজকে তুড়ি মেরে দেখিয়ে দিলো, নারী কোন অংশে কম নয়! তার বিধবা মা,ঠাকুরমা আর শিক্ষক রমলা সেনের অনুপ্রেরণায় হয়ে উঠলো দায়িত্ববান। আকাশকে নিতে চাইলো হাতের মুঠোয়। দুর্গম পাহাড়কে অতিক্রম করা তার নেশা হয়ে গেলো। মনোরমা বলেছিলেন,মাগো, জীবন হিমালয়ের চেয়ে বড়। সেখান থেকে যেটা খুঁজে নিতে চাইবে, সেটা খুঁজবে আন্তরিকভাবে।। কারও সাথে আপোষ করবিনা। আমার বয়সে কিছু খোঁজা যায়না, কিন্তু তোর বয়সটা ঠিকঠাক।”বলেই দীর্ঘশ্বাস ফেলে নাতনীকে জড়িয়ে ধরিয়েছিলেন। এই কথাগুলোর মাধ্যমে নাতনীকে দেখতে চেয়েছিলেন আপোষহীন ও সংগ্রামী নারী হিসেবে। ভাইবা বোর্ডে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো,” আপনি কি বিয়ের আগ থেকে চাকুরী করেন? হ্যাঁ! সেইজন্যই তো বিয়েটা হলো; আজীবন যৌতুক পাবে।” এতো জানেন, বোঝেন প্রতিবাদ করেননা? প্রতিবাদ করলেই, আমি সংসার হারাবো। সবাই সন্দেহ করবে। দীপাবলি কে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, বৈধব্যে তুমি ছিলে রাশভারী! দীপা জবাব দিয়েছিলো, নিজেকে আড়াল করতে একটা কিছু নিয়ে থাকতে হয়।আমার পক্ষে এটা ছাড়া আর কিছুই করার মতো ছিলোনা। লেখক বাস্তবচিত্র আর নারীর শিকল ভাঙার গান দুটোকেই সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন! দুপুর পেরিয়ে গেলে অঞ্জলীর আলমারির হাতলে হাত দিলো দীপা! ওই দূর্ঘটনার পর থেকে রঙিন শাড়ি এড়িয়ে চলে। রঙিন শাড়ির গায়ে হাত দিতেই অদ্ভুত একটা শিরশিরানি এলো শরীরে।ব্যাপারটা এমন যে,, সে নিজেই অবাক হলো। তার চেহারা এইরকম? নিজেকে চিনতে পারছেনা এখন। বাহিরের ঘর পেরিয়ে আসতে সময় লাগলো। পা দুটো যেনো খুব ভারি হয়ে গেছে। এই যে বৈধব্য হলেই যে সাদা শাড়ি পরতে হয় তার প্রতীকী প্রতিবাদ করলো দীপাবলি। দীপাবলি তৎকালীন সমাজ নয়। আজকের অনেক সাহসী নারীর প্রতিচ্ছবি সে। তৎকালীন সমাজের অনিয়ম, ধর্মীয় গোড়ামির বিরুদ্ধে আপোষহীন এক চরিত্র। “সাতকাহন ” এক নারীর দুর্দান্ত জীবনের খুঁটিনাটির গল্প এই বইটা পড়ে চলেন, জীবনকে জানি। প্রতি পাতায় হেঁটে হেঁটে পড়ি, জীবনের আঙ্গিকতা। আসুন, আমরা নারীরা দীপাবলি হয়ে উঠি।

      By Ahmed Supto

      24 Apr 2019 05:08 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      কিছু উপন্যাস আছে যেগুলো পাঠককে নিজে থেকেই গল্পের ভিতরে নিয়ে যায়।পাঠকের নরম মনকে শক্ত করতে,মাথা তুলে দাড়াতে শিখায়,সাতকাহন তেমনি একটি উপন্যাস। সমরেশ মজুমদার তার কলমে যে মেয়েটির চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন, সে আর দশটি মেয়ের মতো নয়।লেখক বিদ্রোহী, আত্ননির্ভর এক বাঙালী নারীর চিত্র এই গল্পে তুলে ধরেছেন। যাকে সমাজের লোভ লালসা, আবেগের মহা সমুদ্র ছুতে পারেনি। একেই বাল্যবিবাহ আবার বিয়ের রাতেই রুগ্ন এক ছেলের নিকৃষ্ট বাসনা। সমাজের ঢেকে রাখা সত্যগুলোর সাথে লেখক পরিচয় করিয়ে দেয়।কিন্তু এর বিরুদ্ধে লড়তে পারার যে ইচ্ছা, স্বপ্ন তাও দেখিয়ে দেয় গল্পের নায়িকার মাধ্যমে।সামগ্রিক ভাবে দুই মলাটের ভিতর পাঠক এক প্রতিবাদী নারীর সংগ্রামী জীবনের ধারাবাহিতা দেখতে পাবেন।। অন্য মেয়েরা যেখানে সমাজের কঠিন বিচারের কাছে পরাজিত হয়,মাথা পেতে নিয়ে নিজেকে কুড়েকুড়ে শেষ করে দেয়।সেই মেয়েদের বিপরীত চিত্র এই সাতকাহনের নায়িকা।সমাজ হয়ত কিছু সময়ের জন্য তাকে দমিয়ে রাখে,কিন্তু থামিয়ে রাখতে পারেনা।। এই গল্প সেই নারীর যে জীবনের প্রতিটি দিন,প্রতিটি রাত,প্রতিটি বেলা যুদ্ধ করেই যায়।কখনো নিজের সাথে।কখনো বা এই সমাজের কুটিল নিয়মের বিরুদ্ধে।কোনো প্রতিবন্ধকতাই তাকে থামিয়ে রাখতে পারেনা।। লেখক প্রতিটি নারীকেই উদ্দেশ্য করে বলেছেন"একফোঁটা চোখের জল,একশো ফোটা রক্তের চেয়েও দামি"। এই উপন্যাস প্রতিটি নারীর চোখ খুলে দেবে।ভাবতে শিখাবে,বাঁচতে শিখাবে এই সমাজের বিরুদ্ধে লড়াই করে।।

      By Punom Das

      06 Jan 2019 12:49 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      সমরেশ মজুমদারের সৃষ্ট চরিত্র দীপাবলি নামের এক মেয়ে।"সাতকাহন" পুরো উপন্যাসে একমাত্র আলোকিত করেছে দীপাবলি নামক চরিত্রটি।মেয়েটির বেড়ে ওঠা হয় চা বাগান কে ঘিরে কিন্তু হঠাৎ করে তার চা বাগান এর শৈশবে ছিদ্র ঢুকে পড়ে।শুরু হয় তার নতুন জীবন।পুরনো ভারতবর্ষে একটি একা মেয়ের সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় তার পড়াশুনা এবং দুর্লভ চাকরি।সব মেয়ের প্রেরণা যেনো হয়ে থাকে "দীপাবলি" যার মধ্যে আছে নারীর অদম্য শক্তি এবং পুরুষ শাসিত সমাজের মধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার শক্তি।

      By Raju Ahmed

      31 Aug 2018 01:16 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      #রকমারি_পাঠক_সমাগম_বুক_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_৬ বইয়ের নাম : সাতকাহন লেখকের নাম : সমরেশ মজুমদার ক্যাটাগরি : উপন্যাস প্রকাশনী : নবযুগ প্রকাশনী মূল্য : ৬৮০ টাকা ব্যক্তিগত রেটিং : ৪.৮/৫ ভূমিকা ও নামকরণ : এ যুগের অন্যতম জনপ্রিয় কথাকার 'সমরেশ মজুমদার' এর কুশলী কলমে কাহিনীবর্ণনার সুদীর্ঘ, সুকল্পিত, সুবিন্যস্ত উপন্যাস- 'সাতকাহন'। 'সাতকাহন’ নাম দেওয়াটা একদম যৌক্তিক হয়েছে। প্রকৃতির নিজের ছবিটা তুলে ধরে ভারতবর্ষ বিশেষ করে বাংলা এলাকার মাটি ও মানুষ, মানসিকতা, সুখ, দুঃখ, হা-হুতাশের ছবি ফুটে ওঠেছে বেশ ভালভাবেই। কেবলমাত্র সম্পদের জন্য মানুষ কতটা নীচ হতে পারে সেটা দেখানোর পাশাপাশি মহৎ মানুষদের স্বরুপও ফুটিয়ে তুলতে হয়েছে লেখককে। কিছু খাঁটি মানুষের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হয়েছে যারা পৃথিবীকে একটু হলেও দেবার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। ঘুণে খাওয়া সমাজটাকে বদলে ফেলার জন্য তৃণমূল থেকে প্রচেষ্টা চালান। কু-সংস্কারাবদ্ধ এই সমাজটাকে বদলে ফেলার জন্য প্রত্যয়ী হন। উপন্যাসে এরা যে চরিত্র ই নেয় না কেন, আমি গত শতকের পরিস্কার একটা ধারণা এই উপন্যাস থেকে পেয়েছি। আমাদের সমাজের কাঠামোর পেছনের কারণ এই উপন্যাসে সমরেশ মজুমদার দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। কাহিনী সংক্ষেপ : উপন্যাসটির কেন্দ্রীয় চরিত্র দীপা- দীপাবলি বন্দোপাধ্যায়। আড়ংভাসার তীরের উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্সের সুবিশাল চা-বাগানের মধ্যে বেড়ে উঠেছে দীপা। আর আট-দশটা সাধারণ মেয়ের মতোই সে ছিল দুরন্ত ও চঞ্চল কিন্তু দশ বছর বয়স থেকেই তাকে ভাগ্যের প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে নিরস্তর যুদ্ধ করতে-করতে বহু বাঁধা, বহু বিপর্যয় পার করতে হয়েছিল। কিন্তু এসব প্র‌তিকূলতা‌কে অত্যন্ত দুর্দান্তভাবেই কা‌টি‌য়ে উঠে‌ছে সে। হঠাৎ করেই, দীপার বিয়ে নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়, তার বাবা প্রথমে আপত্তি করলেও দিদা মনোরমা'র চাপে দীপাকে শেষমেশ বিয়ে দেয়া হয় শিলিগুড়ির এক অভিজাত পরিবারের ছেলের সাথে। বিয়ের দিন দীপা জানতে পারলো এতদিন ধরে যে 'অমনরাথ' এবং 'অঞ্জলী' কে বাবা-মা বলে জেনে এসেছে তারা আসলে তার বাব-মা নয়। বিয়ের পরদিনই অর্থাৎ বাহাত্তর ঘন্টার মাথায় ই দুর্ভাগ্যক্রমে দীপার বর 'অতুল' মারা যায়। এই নিষ্ঠুর অতীতকে মুছে নতুন জীবন শুরু করতে তার ভালোই সময় লেগেছিল। 'সত্যসাধন মাস্টার' এর সহযোগিতা স্কুলের ফাইনাল পরীক্ষা খুব ভালো ফল করে শহরে চলে আসে স্বপ্ন পূরণের মাধ্যমে নিজের ভাগ্যকে নিজে জয় করতে। আর ঠিক এখানে দীপাবলির জীবনের মোড় ঘুরে যায় কিংবা শুরু হয় অন্য একট নতুন নাটক যা জীবনকেও ছাপিয়ে যায়... বাকিটা জানতে হলে পড়তে হবে এই অনিন্দ্য সুন্দর এই উপন্যাসটি। দীপার মাঝে যদি আপনি ডুব দিতে পারেন তাহলে আপনাকে বেশ কিছু ব্যাপারে নতুন করে ভাবা লাগতে পারে। এই যেমন- একটি মেয়ে কি দুরন্ত ছেলেদের সাথে ডানা ঝাপটে ঠিক ওদের মতই চলাফেরার স্বাধীনতা পেতে পারে? কেবল মেয়ে বলেই কি মা-বাবার উচিত সুপাত্র পেলেই বিয়েতে মত দেওয়া, তাও বাল্যবিবাহ? মেয়ে মানেই কি পিতামাতার ঘাড়ের বোঝা? কেবল লিংগ-বিষয়ক কারণেই কী নারীদের ব্যাপারে যেকোন কাজে আস্থা কম রাখা স্বাভাবিক? একা চলাফেরার স্বাধীনতা কি কোন নারীর থাকা উচিত? নারীদের জন্য আলাদা পোশাক থাকা কতটা জরুরী মনে হয় আপনার? নারী বলেই কি এই প্রজাতির মানুষদের পদে পদে বিরম্বনায় পড়া স্বাভাবিক? নারী জাগরণ বলতে আসলে কি বোঝায় আর কি বোঝানো উচিত? কেবলমাত্র ধর্মই কি নারীদের পিছিয়ে রাখার জন্য দায়ী?..... পাঠ প্রতিক্রিয়া: বাস্তবতা আর সা‌হিত্যের মিলন ঘ‌টবে একসাথে এমন একটি বই যদি আপনি খুঁঁজে থাকেন, তবে বাংলা সাহিত্যের সাড়াজাগানো উপন্যাস 'সাতকাহন' নিঃসন্দেহে আপনার জন্যই। দীপাবলী ব‌ন্দোপাধ্যায় না‌মের নারী-চ‌রিত্র‌টির মাধ্য‌মেই গল্প‌টি নি‌য়ে‌ছে বাস্তবরুপ, এ‌গি‌য়ে গি‌য়ে‌ছে সমাপ্ত পর্যন্ত । ‌নিম্ন‌বিত্ত প‌রিবার থে‌কে উ‌ঠে আসা মে‌য়ে‌টিকে বারবার পদস্খলন কর‌তে চে‌য়ে‌ছে জীবনের চোরাস্রোত । কিন্তু এসব প্র‌তিকূলতা‌কে কা‌টি‌য়ে উঠে‌ছে সে অত্যন্ত সাহসিকতার সাথেই। শুধু বড় হ‌য়ে ওঠা নয়, কর্ম‌ক্ষে‌ত্রেও যে কতরকম বাঁধা‌বিপ‌ত্তি আসে তা ঔপন্যা‌সিক অত্যন্ত সূচারুভা‌বে তু‌লে ধ‌রে‌ছের প্র‌তি‌টি পর‌তে পর‌তে । বাল্য‌বিবাহের ধোঁকায় প‌ড়ে যে মে‌য়ে‌টির জীবন ধ্বংস হ‌য়ে যে‌তে নি‌য়ে‌ছি‌লো,‌ সেই মে‌য়ে‌টি যেভা‌বে ঘু‌রে দাঁ‌ড়ি‌য়ে‌ছে তা স‌ত্যিই প্রশংসার যোগ্য । প‌রিবা‌র,কর্ম‌ক্ষেত্রসহ প্র‌ত্যেক‌টি জায়গায় তার ব‌লিষ্ঠতা চো‌খে পড়ার মতই। বি‌শেষ ক‌রে, "অন্যা‌য়ের সা‌থে কো‌নো আপোষ নেই " নী‌তি‌টি তার ম‌ধ্যে চমৎকারভা‌বে দৃশ্যমান হ‌য়ে উঠে‌। সত্যি কথা বলতে কি, দীপার চরিত্রে ডুবে গিয়ে আমি অনেক জায়গায় ইমোশনাল হয়ে পড়তে বাধ্য হয়েছি। এতই ভেতরে চলে গিয়েছিলাম যে চোখ থেকে অশ্রু বের হয়ে গিয়েছিল, কন্ঠে আবেগের প্রাবল্য এসে গিয়েছিল। সত্যি কথা বলতে কী, এমন কিছু লেখা আছে, এমন কিছু বর্ণনা আছে, এমন কিছু লেখক আছেন যারা পাঠকের মনের গহীনে ঢুকে পরেন শক্তি দিয়ে। সমরেশ বাবু তেমনই একজন লেখক। - রাজু আহমেদ

      By Md. Saiful Islam Sohel

      29 Jul 2018 01:10 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      #রকমারি_পাঠক_সমাগম_বুক_রিভিউ_প্রতিযোগিতা মাসঃ জুলাই সপ্তাহ তৃতীয় পর্বঃ ১ বইয়ের নামঃ সাতকাহন লেখকঃ সমরেশ মজুমদার প্রকাশকঃ আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড পৃষ্ঠাঃ ৬৫৬ মুদ্রিত মূল্যঃ ৪০০ টাকা রিভিউ এটি একটি মেয়ের জীবনের সাতকাহন।কেন্দ্রীয় চরিত্র দীপাবলির ঘটনাবহুল জীবন এবং তার চলার পথের চড়াই-উৎরাই, সফলতা-ব্যার্থতা এ উপন্যাসটির উপজীব্য। বাবা অমরনাথের চা বাগানে চাকরির সুবাদে মা-বাবা, ঠাকুমা এবং ভাইদের নিয়ে কোয়াটার এ বাস তার, যদিও পড়ে সে জানতে পারে এরা তার মা-বাবা নয় বরং মেসো-মাসি। চা বাগানে দস্যিপনায় দীপার শৈশব কাটছিল। হঠাৎই তাতে ছেদ পরে, ১০ বছরেই দীপার জীবনে বিবাহ এবং একদিনের ব্যবধানে বৈধব্য আসে। ঠাকুমার হাড়িতে তার নিরামিষাশী সাদাকালো জীবন শুরু হয়। তবে এই দস্যি দীপা থেমে যায়নি ভাগ্য নামের আর এক দস্যির দস্যিপনায়। মাধ্যমিক এ দুর্দান্ত ভাল করে সে এতে তার স্কুল শিক্ষকের কিছু অবদান ছিল। শহরে পড়তে গিয়ে জীবনের বৈচিত্র দেখে দীপা। অনেক ঘটনার মধ্যে একটি হল সে জানতে পারে শ্বশুরের বিপুল সম্পত্তির মালিক সে, বিচিত্র উপায়ে এ সম্পত্তি ব্যায় করে দীপা। একসময় সরকারি চাকুরী জীবি হিসেবে কর্ম জীবন শুরু হয় তার। অমরনাথের মৃত্যুর পর পরিবার দীপাকে দায়ী করে তাকে দুরে ঠেলে দেয়। একা হয়ে যায় সে। এ পর্যায়ে অর্জুন নামক এক বিচিত্র চরিত্রের সাথে কিছু নতুনত্ব আসে দীপার জীবনে। এরপর মেধার কারনে সর্বোচ্চ সরকারী চাকুরীজীবি হয় দীপা। বড় শহরে চলে আসে দীপা। এ সময় সরকারী অফিসগুলোতে ঘুষখোর কর্মকর্তাদের পরিষ্কার চিত্র দিয়েছেন লেখক। এই শহরেই অলোক ভালবাসা হয়ে আসে দীপার একলা জীবনে। তাদের বিয়ে হয়। সংসারও হয় তবে তা সল্প দিনের। আবারও একা হয়ে যায় দীপা, কেন হল এসব? কিভাবে দীপা এ দীর্ঘ পথ পাড়ি দিল? সে কি একাই থাকবে বাকি জীবন নাকি নতুন কিছু চমক রয়েছে পাঠকদের জন্য? জানতে হলে, অবশ্যই পড়তে হবে সমরেশ মজুমদার এর এই বইটি। #পাঠ_প্রতিক্রিয়া বইটি আমার পছন্দের বইগুলোর একটিতে জায়গা করে নিয়েছে। দীপা একাই তার ভেঙ্গে পড়া জীবনকে দাড় করিয়েছে এবং সাফল্যের চূড়ায় পৌছেছে। দীপা আমার জন্য মোটিভেশনাল একটা চরিত্র। দীপার অসাধারন চরিত্রচিত্রণের পাশাপাশি রয়েছে চা বাগানের অপরুপ শোভা, আঙরাভাসা নদীর যৌবনদীপ্ত স্রোত। সম্পর্কের টানাপোড়ন ও রয়েছে উপন্যাসটির বড় অংশ জুড়ে। সবমিলিয়ে বইটি একজন পাঠকের চাহিদা মেটাতে পুরোপুরিও সক্ষম এবং সার্থক ও বটে। বইটি পড়ে আমার মনে হয়েছে প্রতিটি মেয়ের তো বটেই সব পাঠকেরই বইটা একবার হলেও পড়া উচিৎ। যেহেতু বইটিতে লেখক দীপার জীবনের নানাবিধ দিক চিত্রিত করেছেন সেহেতু "#সাতকাহন" নামটি যথার্থই সার্থক। সাদিয়া নুর

      By Dulal Hossin Emon

      07 Jul 2018 01:12 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      ভাল বই

      By Jannat Mojumdar

      03 Mar 2018 09:08 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বিংশ শতাব্দীর মাঝের দিকের সময়কার বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে রচিত উপন্যাস ‘সাতকাহন’। প্রকাশের পরই উপন্যাস দুই বাংলায় ব্যাপক জনপ্রিয় হয়। উপন্যাসের কাহিনী দীপাবলি নামে এক মেয়েকে কেন্দ্র করে।গল্পের শুরুই হয় দীপাবলির দস্যিপনা দিয়ে। ১০ বছরের দীপাবলির দুরন্তপনায় তার মা, বাবা, ঠাকুমা অস্থির হয়ে থাকেন সারাক্ষণ। সে সময়ে এই বয়সের মেয়েরা ঘরের কাজ শিখে বিয়ের প্রস্তুতি নিতো। কিন্তু দীপার মধ্যে তার কোনো লক্ষণ তো দেখা যায়ই না, বরং সে তার দুই বন্ধু বিশু আর খোকনকে নিয়ে সারা পাড়ায় কোনো না কোন অনিষ্ট করে বেড়ায়। সেই দুরন্ত দীপার একদিন বিয়ের প্রস্তাব আসে, ওর শত অনিচ্ছাতেও মা আর ঠাকুমার জোরাজুরিতে বিয়েটা হয়েই যায়। বিয়ের বাহাত্তর ঘন্টার মধ্যে মারা যায় দীপার স্বামী। বাড়িতে ফিরে আসে দীপা। পড়াশোনা করে অনেক বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখার সেই শুরু। ম্যাট্রিকে ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে দীপা কলেজে পড়তে যায় জলপাইগুড়িতে। থাকে হোস্টেলে। সেখানে থাকাকালীন সময়ে সে পরিচিত হয় ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে। এছাড়া বিভিন্ন ধরণের মেয়ের সঙ্গে থাকায় সে বিভিন্নরকম চরিত্রের মানুষের সম্পর্কে জানতে পারে। যেই অভিজ্ঞতা তার আগে হয় নি। একসময় দীপা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। এর মধ্যে তার জীবনে যে আর কোনো ছেলে আসে নি তা নয়, তবে তাদের সকলের থেকেই দীপা নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলো। সকলের মধ্যেই দীপা কখনো না কখনো দেখেছে স্বার্থপর এক রূপ। তাই নিজের স্বপ্ন পূরণের দিকেই বেশি মনোযোগ দেয় দীপা। এরও কয়েকবছর পর যখন কর্মজীবনে প্রবেশ করে সে, তখন পরিচয় হয় এক পরিবারের সঙ্গে। পরিবারের সকলের চরিত্র, কথাবার্তা, চিন্তাধারা মুগ্ধ করে দীপাকে। সেই পরিচয়ের সূত্রেই ওই পরিবারের ছোট ছেলে অলোকের সঙ্গে বিয়ে হয় দীপার। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পরেই অলোকের আচরণ কেমন যেন পাল্টে যেতে থাকে। এই অলোকের সঙ্গে আগের অলোককে মেলাতে পারে না দীপা। প্রতিদিনকার অশান্তিতে অসহায় হয়ে পড়ে সে। কী করবে এখন দীপা? জানতে হলে পড়তে হবে বইটি। বইটির মূল বৈশিষ্ট্য হলো লেখক সেই যুগে বসে এত আধুনিক চিন্তার কথা সেখানে লিখেছেন, যা আজও অনেকে ভাবতে পারে না। কোন অতিরঞ্জন ছাড়া সম্পূর্ণ সাবলীলভাবে সে দীপাবলীর জীবনকে বর্ণনা করে গিয়েছেন। যা পড়লে অবাস্তব মনে হয় না আবার চমকও জাগে! এই বইটি তাই সকলের অবশ্য পাঠ্য হওয়া উচিত।

      By MR Bijoy

      28 Dec 2017 08:42 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      কিছু গল্প আছে যার ধারা পাঠককে বইয়ের ভেতর টেনে নিয়ে যায়। যে বইটি সম্পর্কে বলতে চলছি তা এমনি একটি গল্প যার ধারা আপনাকে মোহিত করবে। হৃদয়ের কোণে লুকিয়ে থাকা মুক্ত সত্তাকে নাড়া দেবে, নিঃশব্দে বলে যাবে অনেক কিছু । 'গল্পটি দীপাবলী বন্দোপাধ্যায়ের, এটি একটি নারীকেন্দ্রিক গল্প' - এভাবে বললে আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে এটি শুধুই একটি নারীর গল্প। কিন্তু না, গল্পটি অন্যরকম। ডুয়ার্সের চা বাগানে বেড়ে উঠা এক দুরন্ত চঞ্চল মেয়ে দীপার গল্প এটি। ফুল কুড়ানো, বন্ধু বিশু-খোকনদের সাথে মাঠে দৌড়ে বেড়ানো কিংবা আংড়াভাসা নদীতে মাছ ধরা। মায়ের বকুনি, বাবার আদর, ঠাকুমার স্নেহছায়ায় বেড়ে উঠতে থাকা দীপা মুখোমুখি হয় এক অগ্নিপরীক্ষার। আচ্ছা, গল্পটি ভেঙেই বলি। কৈশোরে পা দেয়া ১১ বছর বয়সী দীপার বিয়ে ঠিক হলো। ভালো সম্বন্ধ বলে প্রত্যাখ্যান করতে পারেননি বাবা অমরনাথ। দীপার মানসিক পরিপক্বতা দেখার প্রয়োজন কেউ বোধ করেনি, তার বাড়ন্ত শরীরেরর উপর ভিত্তি করে বিয়ে ঠিক করা হয়েছে। মুক্ত মাঠজুড়ে ছুটে বেড়ানো কিশোরী দীপা এবার চললো শ্বশুরবাড়ি। "বিয়ে করলে কি হয়?" এই প্রশ্নের উত্তর না জানা দীপা পা বাড়ালো স্বামীর সংসারে। ফুলসজ্জার খাটে দীপা মুখোমুখি হয় জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর ঘটনার, সে আবিস্কার করলো হাড়জিরজিরে রুগ্ন এক ছেলের সাথে বিয়ে দেয়া হয়েছে তাকে। যে ছেলেটি মারা যায় সে রাতেই। দীপা পালিয়ে এলো বাবার বাড়ি। এবার ঠাকুমার কড়া হুকুমে বৈধব্যজীবন শুরু হলো তার। যে মেয়ে বিয়েরই কিছু বুঝেনি তার আবার বৈধব্যজীবন? বাবা ভুল বুঝতে পেরে আবারো স্কুলে ভর্তি করালো। কিন্তু এবার সমাজ চেপে ধরলো টুটি। সাদা শাড়ি পরে কি স্কুলে যাওয়া যায়? বিধবা হয়ে কি মাছ মাংস খাওয়া চলে? অসহায় এই মেয়ের পথে বাঁধ সাধলো শত বাঁধা। এবার মূল গল্পের শুরু। পাঠক হয়তো মেয়েটিকে একটু করুণার চোখে দেখছেন। কিন্তু না, করুণার পাত্র হওয়ার জন্য দীপা জন্মেনি। তার চোখজুড়ে স্বপ্ন, বহুদূরের স্বপ্ন, উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন, আত্নপরিচয় সৃষ্টি করার স্বপ্ন। অনিশ্চয়তার পথ ধরে স্বপ্নকে সঙ্গী করে যাত্রা চলতে থাকে দীপার। কিন্তু ভাগ্য কভু সঙ্গ দেয়নি তার। স্বার্থের শৃঙ্খলে আবদ্ধ চারপাশে কেউ নিঃস্বার্থভাবে হাত বাড়ায়নি। বইটি পড়তে কখনো কখনো কষ্টের দীর্ঘশ্বাস, যা আঘাত করবে হৃদয় দেয়ালে। সমাজের তথাকথিত নিয়মের হাজারো বাঁধা, ব্যক্তিজীবনের দ্বন্ধ এসব প্রশ্রয় দিয়ে মেয়েটি কভু পরনির্ভরশীল হয়নি, প্রখর আত্নসম্মানে সে অটল। একাকীত্বের চারপাশ ঘিরে থাকা শূন্যতার মাঝে কভু ভালবাসার আহ্ববান। অনিশ্চয়তার পথে যাত্রায় সব বন্ধন ছিন্ন করে এবার নিঃস্ব সে, যখন তার একমাত্র অণুপ্রেরণাদাতা বাবা মৃত্যুবরণ করে। বাবার মৃত্যুর জন্য দায়ী করে পরিবার হতে প্রত্যাখ্যাত হলো দীপা। প্রিয় মানুষের নিষ্ঠুর প্রত্যাখ্যান, অবহেলা সব ছাপিয়ে আবারো লড়তে থাকে সে। কিন্তু এবার আবারো দীপা চরম মুখোমুখি সেই ঘৃণ্য অতীতের। তবে কি দীপা হেরে যাবে? হাল ছেড়ে দেবে? কিন্তু পিছু হঠার মেয়েতো দীপা নয়। তবে কেমন হতে চলেছে দীপার জীবনযাত্রা? # পাঠ_প্রতিক্রিয়া অসাধারণ একটি বই। যতক্ষণ বইটি শেষ না হয়, ততক্ষণ ছেড়ে উঠা দায়। দীপা চরিত্রটির প্রেমে পড়ে গেছি। দীপা শুধু একটি মেয়ে চরিত্র নয়, দীপা সেই সকল নারীর প্রতিনিধি যারা শত প্রতিকূলতায় হার মানতে শেখেনি। সমরেশ মজুমদারের অসাধারণ লেখনীতে মুগ্ধ হয়েছি। তিনি প্রতিটি চরিত্র অত্যন্ত সুচারুভাবে উপস্থাপন করেছেন। তো আজই পড়ে ফেলুন অসাধারণ এই বইটি।

      By Mahbuba Supti

      14 Jun 2017 03:48 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      "সাতকাহন" উপন্যাসের সূচনা, বিস্তৃতি একজন নারীকে নিয়ে। যার নাম দীপাবলি বন্দ্যোপাধ্যায়। আপাতঃ দৃষ্টিতে মনে হয়, দীপার জীবনকাহিনী নিয়ে হয়তো লেখা এই উপন্যাস। কিন্তু না। এই উপন্যাস শ্বাশত বাঙালি নারীর উপন্যাস। পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজে কখনো একজন নারীকে দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে, কখনো বা লালসা, কখনো সংস্কারের নিয়ম দেখিয়ে ছুড়ে ফেলতে চায় অন্ধকারে। তবুও দীপার মতো কিছু নারী আছে যারা সমস্ত প্রতিকূলতা দূরে ঠেলে সামনে আগায়। এই উপন্যাস সেই সংগ্রামী নারীদের নিয়েই লেখা। দীপার জন্মের পর তার মা মারা যায়। মায়ের মৃত্যুর পরপরই বাবাও তাকে রেখে পালিয়ে যায় কাপুরুষেরর মতো। দীপাকে তখন কোলে তুলে নেয় তার মাসি। তার জায়গা হয় মাসি-মেসোর সংসারে। নিজের মেয়ে না হলেও কখনো মাসি অঞ্জলি কিংবা মেসো অমরনাথ কখনো বিন্দুমাত্র কষ্ট পেতে দেয় নি দীপাকে। নিজের দুই ছেলের থেকেও বেশি ভালবাসতো দীপাকে। এমনকি অমরনাথের মা মনোরমাও কখনো তাকে অবহেলা করেন নি। সবসময় আদর দিয়ে ভরিয়ে রাখতেন। দীপার স্কুল মাস্টার সত্যসাধন বাবু বুঝেছিলেন দীপার মেধাস্বত্বাকে। কিন্তু ঘুণেধরা সমাজব্যবস্থা। সেখানে একটা মেয়ে যতোই মেধাবী হোক তার যথেষ্ট মূল্যায়ন সে পায় না। এগারো বছর বয়সে দীপার বিয়ে ঠিক হয় বিত্তবান এক পরিবারে অসুস্থ, রোগাক্রান্ত, নিঃশেষ হয়ে যাওয়া ছেলের সাথে। এই অসুস্থ সমাজে একটা মেয়েকে বিয়ে দিতে হলে তার পরিপূর্ণতা বিচার করা হয় মেয়েলি সমস্যা শুরুর মাধ্যমে তার বিচার, বুদ্ধি দিয়ে নয়। দীপার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয় নি। এই অসুস্থ ছেলেটাকে দীপার সাথে বিয়ে দেওয়ার একমাত্র কারণ তাদের বংশরক্ষা করা। দীপা মেয়েটি মাত্র একরাতের জন্য বউ হয়েছিল সেই বাড়ির। কারণ বিয়ের পরদিনই তার স্বামী মারা যায়। এগারো বছরের ছোট্ট মেয়েটিকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেই এক বিভীষিকাময় রাত পার করার পর দীপার শুধু স্বামীই মারা যায় নি, মারা গিয়েছে তার শৈশব সত্তাটাও। দীপা ফিরে আসার পর বাবা অমরনাথ তার ভুল বুঝতে পারে। দীপার পড়াশোনা নতুন করে শুরু হলেও আগের চঞ্চল সেই দীপাকে আর পাওয়া যায় না। মনোরমা যখন তার উপর নির্মম এক বৈধব্য জীবন চাপিয়ে দেয় দীপা একটুও প্রতিবাদ করে নি। শুরু হয় তার নতুন যুদ্ধ। অমরনাথের সহযোগীতায় মাধ্যমিক পর্যায় শেষ করে জলপাইগুড়িতে ভর্তি হয় উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য। অমরনাথ এই সময় দীপার পাশে ছায়ার মতো ছিলেন। কিন্তু এখান থেকে বের হয়ে কলকাতার স্কটিশে ভর্তি হওয়ার সময় অমরনাথ চলে যান পৃথিবী ছেড়ে। অঞ্জলি স্বামীর মৃত্যুতে খুব ভেঙে পড়েন। পরিবারের সবাই দীপাকেই দায়ী করে অমরনাথের মৃত্যুর জন্য। পরিবার থেকে বের করে দেয়। একা হয়ে যায় দীপা। এরপর কি হয় দীপার? সে কি পারে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে?

      By Bappy

      30 May 2021 08:25 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      আমার অনেক প্রিয় একজন মানুষের প্রিয় বই এটি ❤️❤️

      By Antor vincent cruze

      28 Dec 2019 10:10 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বই-লেখক#সাতকাহন -সমরেশ মজুমদার দীপাবলি,( দীপা) দারজি লিং এর পাহাড়ি এলাকায় তার ছোটবেলা, সমরেশ মজুমদারের ছোটবেলাও কেটেছে সেখানেই, লেখক তার লিখার মাধুর্য দিয়ে দার্জিলিং এর এরূপ বর্ননা করেছেন, একটা সময়ের জন্য মনে হয়েছিল আমি নিজেই দার্জিলিং আছি।❤ছোটবেলা থেকেই দীপা ছিল চতুর এবং মেধাবী,এবং তার মাস্টার মশায়ইের প্রিয় ছাত্র। বাবা -মার কাছেও কখনও আদরের কম পরেনি।কিন্তু তাতে কি ভ্যাগের চাকা তো সবসময় এক পথে থাকে না। গল্পের পরিক্রমায় ১০-১১ বছরের দীপার বসতে হয় বিয়ের পীড়ীতে, আর বিয়ের ৪৮ ঘন্টার মাথায় তার বিধবা হতে হয়। এখনই শুরু হয় বিধবা দীপার জীবনের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প,প্রতিষ্ঠিত হওয়ার গল্প।এই বইটা পড়ার পর এটা মনে হয়েছিল, মেয়ে হওয়া মানেই দুর্বলতা নয়,আমার কারও উপর নির্ভর করার প্রয়োজন নেই, আরএকটা মেয়ে, সে মেয়ে পরে আগে তো সে মানুষ, সে চাইলে সবই পারে!

      By Arfatun Nabila

      02 Aug 2017 01:47 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      ‘সাতকাহন’ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র দীপাবলি। কোন কিছুতে হার না মেনে চলা এক অসাধারণ নারী। যার একটি নামের ভেতর লুকিয়ে আছে এক সম্পূর্ণ বাঁধা বিহীন সত্ত্বা। অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে বিধবা হয়ে যাওয়া এই মেয়েটিকে সবসময় থাকতে হয়েছে এক অদ্ভুত গণ্ডির ভেতর। সেই গণ্ডি সমাজের তৈরি। যে সমাজ তৈরিই হয়েছে আমাদের মত মানুষদের নিয়ে। অল্প বয়সে বিধবা মেয়েটি জীবনের পথচলা তবু থামায়নি। বাবা অমরনাথ নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতেই হয়ত দীপাবলির লেখাপড়া বন্ধ করতে দেননি কিংবা হয়ত তিনি একজন পিতা বলেই সন্তানকে অনেক উপরে দেখতে চেয়েছিলেন। অমরনাথ নিজেকে দোষী ভাবতে ভাবতে এক সময় হারিয়ে যান দীপাবলির জীবন থেকে। এক অনিশ্চিত জীবনের যাত্রা শুরু হয় দীপাবলির। এই অনিশ্চিত যাত্রাপথে অনেক মানুষের সাথে পরিচয় হয় তার। খুব অল্প বয়সেই সে বুঝে যায় প্রতিটা মানুষ কোন না কোন ভাবে তার নিজের স্বার্থ নিয়ে বাঁচে। দীপাবলি এদের একজন হতে চায় নি। সে কখনো কারও কাছে থেকে কিছুই আশা করে না। নাকি করে? নাকি শুধু একা বলেই তার আশাগুলো পূর্ণতা পায় না? অসীম,শমিত,রাধা,মায়া,লাবণ্য- সবাই তার জীবনে ভিন্নভিন্ন চরিত্রে সামনে এসেছে।সময়ের প্রয়োজনে একসময় তারা সবাই দীপাবলির জীবনে এসেছিল কিন্তু একসময় সবাই হারিয়ে যায়। একজন মেয়ে বলে সমাজে অনেকের চোখেই সে ছোট হয়েছে কিন্তু নিজ পরিশ্রমে, সততার বলে সবাইকে একদিন সে নিজেকে চিনিয়েছে একদম ভিন্ন ধারায়। একজন মেয়ে খুব সহজে কঠিন জীবন বেছে নিতে চায় না। কিন্তু দীপাবলি সব পিছনে ফেলে শুধু সামনের দিকে তাকিয়েছে। দীপাবলির মা অঞ্জলিও তাকে দূরে ঠেলে দেন। পৃথিবীতে আপন বলতে একমাত্র ছিল ঠাকুমা মনোরমা। বাবা চলে গেলে মা যখন তাকে দূরে ঠেলে দিল তখন এই ঠাকুমাই শুধু আপন কেন হল দীপাবলির? ওর কি আর কেউ ছিল না? চাকরিতে নিযুক্ত হবার পর কি হয়েছিল দীপাবলির?কীভাবে কেটেছে তার চাকরি জীবন? সে কি পেরেছিল সেই জীবনে ভাল থাকতে? দীপাবলির বৈধব্য জীবনের অবসান কি হয়েছিল? কে এসেছিল দীপাবলির জীবনে? সে কি পেরেছিল দীপাবলিকে একাকীত্ব জীবন থেকে মুক্তি দিতে? শেষ পর্যন্ত কেমন ছিল দীপাবলি? এত সব কিছু জানতে হলে আপনাকে পড়তে হবে সমরেশ মজুমদারের ‘সাতকাহন’। লেখকের লেখায় ‘দীপাবলি’ চরিত্রটি ফুটে উঠেছে একা বাঁচতে চাওয়া এক সংগ্রামী মেয়ের প্রতীক হিসেবে। মেয়েরা সমাজে একা বাঁচতে ভয় পায়। আমাদের সমাজে অনেকের ধারণা একটি মেয়ে একা হলেই তার বেঁচে থাকার অধিকার শেষ হয়ে যায়। কিন্তু দীপাবলি আমাদের সবাইকে এই সমাজের প্রতিটি চরিত্র এক এক করে চিনিয়েছে। যদি নিজে বাঁচতে চাওয়ার ইচ্ছেটাকে প্রবল করা যায় তাহলে কোন বাঁধাই যে আসলে বাঁধা নয় তাই দেখায় দীপাবলি। পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ লেখকের অন্যান্য অসাধারণ সব উপন্যাসের চেয়ে সাতকাহন একটু আলাদা। শুধুমাত্র একটি মেয়ের জীবন কাহিনী যে কিনা মা বাবা বলতে জানে তার মাসী আর মেসো মশাইকে, সেই মেয়েটির অল্প বয়সে বিধবা হয়ে যাওয়া থেকে সমাজের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করা খুব সহজ কোন কিছু ছিল না। লেখক তার অসাধারণ লেখনীতে দীপাবলির এই জীবন সংগ্রাম তুলে ধরেছেন অবলীলায়। এই বই একজন পাঠককে ভাবতে শেখায়। সমাজে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কুসংস্কার গুলো যে চাইলে ধুয়ে ফেলা যার তার এক বাস্তব প্রতিচ্ছবি ‘সাতকাহনের দীপাবলি’। এখনো যদি বইখানা না পড়ে থাকেন তাহলে জলদি পড়ে ফেলুন।

      By Wasifa Zannat

      16 Jun 2016 09:59 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      প্রকৃতি শ্রেণীকাঠামো বা ছেলে-মেয়ের মধ্যে তার অকৃত্রিম রং-রূপ-রস ঢেলে দিতে বাছবিচার করে না। আমাদের দীপাবলীর বন্ধু খোকন আর বিশু ছেলে, তাতে কি! ওদের কাছেও তো আঙরাভাসা নদীটা নীল আর চা বাগানগুলো সবুজ, একই রঙ একই গন্ধ। তাহলে কেন মা-ঠাকুমার যত বিপত্তি তার মেয়ে হয়ে বাইরে যাওয়ায়। এরকম চারপাশের প্রকৃতির প্রতি একটি শিশুর সরল-সহজাত আকর্ষণ, আর পদে পদে বাধা পেয়ে অন্ধকারে নিত্য আলোর শিখা খুঁজতে থাকার মতই তার ছোট মনে দানা বেঁধে উঠতে থাকা মেয়েদের উপর সমাজ আরোপিত নানা বিধিনিষেধের প্রতি প্রশ্ন। কেন মেয়েদের পদে পদে কঠোর অনুশাসনের মধ্যে না চললে ভগবানের কাছে কৈফিয়ত দিতে হবে? ধর্মের এই একচোখা নিয়মগুলোর বিরুদ্ধে এভাবেই তার ভেতরে ফুটে ওঠে প্রতিবাদী স্বাধীনচেতা এক রূপ।দীপাবলী এমন এক চরিত্রের নাম, যাকে ভাগ্যদেব সুপ্রসন্ন হয়ে কখনো নিরবিচ্ছিন্নভাবে কিছু দেয়নি। বেঁচে থাকার জন্য, সমাজে নিজের জায়গা করে নেয়ার জন্য যাকে প্রতিটি মুহূর্ত লড়ে যেতে হয়েছে - কখনো পারিপার্শ্বিকতার সাথে তো কখনো নিজের সাথে। কঠোর পরিশ্রমে অর্জন করে নিয়েছে আয়করের চাকুরী, সম্মান, প্রতিষ্ঠা, বেছে নিয়েছে জীবনসঙ্গী। তারপরেও তার লড়াই থেমে থাকে নাই।লেখক সমরেশ মজুমদার তার জনপ্রিয় উপন্যাস 'সাতকাহন' এর দীপাবলী-কে এঁকেছেন আপোষহীন সংগ্রামী এক নারী চরিত্র হিসেবে। কেন দীপাবলীর মত এমন একটি চরিত্রটি তার মনে এল এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন - "আমি এগারো বছর বয়সের একটি বিধবা মেয়ে দেখেছিলাম। সে আমাদের চা বাগানের। তাকে দেখে আমার মনে হয়েছিল এত সুন্দর, কোমল, নিষ্পাপ একটি মেয়ে কেন এভাবে হারিয়ে যাবে? শেষ হয়ে যাবে? সাতকাহন লেখার সময় সেই মেয়েটিকেই আমি আমার মতো করে রূপ দিয়েছি। তাকে সমাজ, সংসারের বেড়াজালের ভেতর দিয়ে আমি পরিপূর্ণ মানুষ করে তুলতে চেয়েছি।" দীপাবলীর একা থেকে যাওয়াটা অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি, এব্যাপারেও লেখকের বক্তব্য স্পষ্ট - "বাংলাদেশের মেয়েরা যে আত্নমর্যাদাসম্পন্ন এটা আমাদের শ্রদ্ধার সঙ্গেই মনে রাখা দরকার।"লেখক পরিচিতি/সমরেশ মজুমদার শৈশব কেটেছে ডুয়ার্সের চা বাগানে।সমরেশ মজুমদারের প্রথম উপন্যাস “দৌড়” ছাপা হয়েছিলো দেশ পত্রিকায় ১৯৭৬ সালে। তিনি শুধু তাঁর লেখনী গল্প বা উপন্যাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী থেকে কিশোর উপন্যাস লেখনীতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। সমরেশ মজুমদারের উল্লেখযোগ্য উপন্যাস গুলির মধ্যে সাতকাহন, তেরো পার্বণ, স্বপ্নের বাজার, উজান গঙ্গা, ভিক্টোরিয়ার বাগান, আট কুঠুরি নয় দরজা, অনুরাগ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। অনেক অসাধারণ লেখনীর শব্দের এই রূপকার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অনেক পুরস্কার অর্জন করেছেন।

      By Soma Rahman

      22 May 2016 01:51 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      সাতকাহন, উপন্যাসটির সূচনা, বিস্তৃতি আর প্রবাহধারা একজন নারীকে নিয়ে । যার নাম দীপাবলি বন্দ্যোপাধ্যায়। আপাত দৃষ্টিতে এই উপন্যাসটিকে শুধু মাত্র একজন নারীর গল্প মনে হলেও, দীপা হলো বাঙালী সেই সব নারীদের প্রতিনিধি যাদেরকে এই পুরুষ শাসিত সমাজ কখনো সংস্কার, কখনো দুর্বলতা আবার কখনো লালসার ভয় দেখিয়ে হতাশার কাল কুঠুরিতে ছুড়ে ফেলতে চায়, কিন্তু দীপারা দমে না, হারে না। সমাজের চোখ রাঙ্গানি উপেক্ষা করে চলতে থাকে তাদের নিরন্তর যুদ্ধ। মায়ের মৃত্যুর পর জন্মদাতা পিতার কাপুরুষতায় দীপার আশ্রয় মেলে তার মাসি-মেসোর সংসারে। না, অপরের সন্তান মনে করে নয়, শুরুতে নিজের সন্তানের মত ভালবাসা আর আদর দিয়েছিল অঞ্জলি আর অমরনাথ। নিজের দুইটা পুত্র সন্তানের সাথে এই কন্যাটিকে বুকে টেনে নিয়েছিল ওরা। অমরনাথের মা মনোরমাও কখনো দীপাকে আলাদা করে দেখতে চাওনি। কিন্তু বৈধব্যের সংস্কারের কারণে নারী পুরুষের ভেদাভেদের চেতনায় মনোরমা সারাক্ষন দীপাকে আবদ্ধ রাখতে চাইত। মাষ্টার সত্যসাধনের বাবু তার অভিজ্ঞ চিন্তা শক্তি দিয়ে দীপার মাঝের মেধাবী সও্বাকে সহজেই চিনে নিয়েছিলেন। আর সেজন্য নিঃসন্তান এই মানুষটির দীপাকে নিয়ে স্বপ্ন দানা বাধে। কিন্তু সমাজের ঘুনেধরা সংস্কারগুলো দীপার পরিবারের মানুষগুলো পিছু ছাড়ে না । মাত্র এগার বছর বয়সে এক বিত্তবান ঘরের নিঃশেষিত রুগ্ন ছেলের সাথে দীপার বিয়ে হয়। এই অসুস্থ সমাজের চোখে একটি মেয়ের বিয়ের যোগ্যতা বিচার করা হয় তার মানসিক পূর্নতা নিয়ে নয়, তার ঋতুর সক্ষমতা নিয়ে। দীপারও তাএর ব্যতিক্রম হয় না । কিন্তু বিয়ের পর মাত্র একটা রাতে জন্য সে বধূ হয়ে থাকতে পারে। ঐ একটিরাতে দীপার সাথে কি হয়েছিল নিঃসন্দেহে পাঠকদের হৃদয়ে ঘটনাগুলো আলোড়িত করে তুলবে। বিয়ের পরের দিনই দীপার স্বামী মারা যায় আর দীপাকে, মাত্র এগারো বছরের একটা বাচ্চাকে একা পাঠিয়ে দেয়া বাপের বাড়িতে । দীপার জীবনের বিভীষিকাময় রাতের পর শুধু দীপার স্বামীর মৃত্যু হয়নি, আরেকটি মৃত্যু হয়েছিল, যেটি ছিল একটি হত্যা। দীপার শৈশবিক সত্তার হত্যা হয়েছিল সেই রাতে। কেউ শুনে নি, কেউ জানতে পারেনি। দীপার এই প্রত্যাবর্তনে অমরনাথ তার ভুল বুঝতে পারেন। দীপার পড়াশোনা আবার শুরু করা হয়। তবে সেই প্রাণোচ্ছ্বল, হাসি-খুশী দীপাকে এ বাড়ির আর কেউ কখনো দেখতে পায়নি। সে যেন এক প্রস্তর খন্ড। মনোরমাও দীপার উপর নির্মম বৈধব্য চাপিয়ে দিলেও দীপা কোন প্রতিবাদ করে না । কিন্তু সে শুরু করে নতুন এক যুদ্ধ। পড়াশোনায় নিজেকে উজাড় করে খোজে মুক্তির পথ। মাধ্যমিক মেধাবী ফলাফল করে জলপাইগুড়িতে ভর্তি হয় উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য। তাই এই সংগ্রামে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন অমরনাথ। উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডিও পার হতে দীপাকে খুব বেশি অসাধ্য সাধন করতে হলো না । কিন্তু কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে ভর্তি হবার পরে অমরনাথ দীপাকে ছেড়ে চলে যান। আর অমরনাথের এই স্বাভাবিক মৃত্যুকে মেনে নিতে পারেনি অঞ্জলি। তার মৃত্যূর জন্য দায়ী করা হলো দীপাকে। দীপাকে তার পরিবারের ছায়া থেকে বের করে দেওয়া হলো। দীপ সম্পূর্ণ একা হয়ে গেল, পাশে এসে দাড়াবার মত খুজে পেল না কাউকে। তবু দীপা কি পেরেছিল এই সমাজে হিংস্র আর স্বার্থান্বেষী শকুনের ভিড়ে নিজেকে রক্ষা করতে? পেরেছিল নিজেকে সেই শিক্ষার আলোয় নিজেকে ভাসাতে যে আলো তাকে মুক্তি দেবে? জানতে হলে, হাটতে হবে কিছুটা পথ দীপাবলির সাথে। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ আমি চিত্রাঙ্গদা। দেবী নহি, নহি আমি সামান্যা রমণী। পূজা করি রাখিবে মাথায়, সেও আমি নই; অবহেলা করি পুষিয়া রাখিবে পিছে সেও আমি নহি। যদি পার্শ্বে রাখো মোরে সংকটের পথে, দুরূহ চিন্তার যদি অংশ দাও, যদি অনুমতি কর কঠিন ব্রতের তব সহায় হইতে, যদি সুখে দুঃখে মোরে কর সহচরী আমার পাইবে তবে পরিচয়। রবীন্দ্রনাথের কাব্যের চিত্রাঙ্গদাকে যারা পড়েছেন, যারা খুজেছেন তারা সেই চিত্রাঙ্গদাকে দীপাবলির মাঝে দেখতে পাবেন। দীপাবলি বন্দ্যোপাধ্যায়, বাংলা সাহিত্যের এমন এক শক্তিশালী নারী চরিত্র, যাকে না জানলে, না চিনলে, পাঠকদের পাঠ্য জগতে একটা শূন্যতা থেকে যাবে । এক সাধারণ কিশোরীর অসাধারণ নারী হয়ে ওঠার উপ্যাখান হলো সাতকাহন। লেখক সমরেশ মজুমদার তার কলমের ছোয়ার যে নারীর কল্পছায়া আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন, সেটা নিঃসন্দেহে যর্থাথ এবং সাবলীল।

      By Arifur Rahman

      19 Feb 2023 10:57 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      প্রতিটি বাঙালি মেয়ে পড়া উচিৎ।

      By Rehnuma Rubayat Prapty

      24 Jun 2022 11:27 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      মেয়েছেলের আবার এইটা, তুই তো মেয়েছেলে.... এই ❝মেয়েছেলে❞ শব্দটা শুনলেই রেগে যায় দীপা। মেয়েছেলে আবার কী? হয় মেয়ে না হয় ছেলে। দীপাবলী মুখোপাধ্যায়। ১১ বছর বয়েসী প্রাণবন্ত এক কিশোরী। ভোর বেলা শিউলি তোলা, মা-বাবা, ঠাকুমাকে ফাঁকি দিয়ে পাড়ার ছেলে বন্ধুদের সাথে মাছ ধরা, ঠাকুর দেখতে যাওয়া আর সন্ধ্যের আগেই মায়ের বকুনি থেকে বাঁচতে লুকিয়ে বাড়ি ফেরা। জলপাইগুড়ির চা-বাগানে এইতো দীপার সুন্দর জীবন। জীবন তো সবসময় এক বাঁকে চলে না। মোড় নেয়। দীপার জীবনও মোড় নিয়েছিল। চা-বাগানে দৌড়ে বেড়ানো দীপার জীবন যুদ্ধ শুরু হলো বাল্যবিবাহ দিয়ে। বিয়ের আগের রাতে জানতে পারে তার জীবনের এক নির্মম সত্য। এতদিন যাদের মা-বাবা বলে জেনে এসেছে তারা আসলে দীপার মাসি আর মেসো। ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে আবার নিজের জীবনের নির্মম সত্য জেনে মুষড়ে পড়ে দীপা। দীপাবলী মুখোপাধ্যায় থেকে হয়ে যায় দীপাবলী বন্দোপাধ্যায়। বিয়ে তার জীবনে সুখ বয়ে আনেনি। সিঁথিতে সিঁদুর আর হাতের শাখা তার হাতে শোভা পেয়েছিল মাত্র বাহাত্তর ঘণ্টার জন্য। এরপরেই বিধবার খাতায় নাম উঠে যায়। পঞ্চাশের দশকে একজন বিধবার যে কঠিন নিয়মে চলতে হতো সে নিয়মে চলতে বাধ্য করে দীপার ঠাকুমা মনোরমা। কিন্তু সে তো নিয়মে বাঁধা পড়তে চায় না। বিদ্রোহ করার শক্তি তখনো নেই। জীবনের কঠিন যুদ্ধে আশার আলো বিদ্যার্জন। সত্যসাধন মাস্টার আছেন দীপাকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য। আরো আছেন আধুনিক মানসিকতার রমলা সেন। অঞ্জলি-অমরনাথ কখনও দীপাকে বোনের মেয়ে হিসেবে দেখেনি। নিজের মেয়ের মতো ভালোবাসা দিয়ে বড়ো করেছে। অকাল বৈধব্য বরণ করে নেয়ার জন্য যেন নিজেদেরই দায়ী করেন তারা। তাই দীপাকে জীবন সংগ্রামে এগিয়ে নিয়ে যেতে তারা দুইজন বদ্ধ পরিকর। সময় এগিয়ে যায়। স্কুল পরীক্ষায় ফার্স্ট ডিভিশন পেয়ে পাশ করে ভর্তি হয় জলপাইগুড়ির কলেজে। শুরু হয় হোস্টেলে নতুন জীবন। অতীত তবু পিছু ছাড়ে না। নামের শেষের বন্দোপাধ্যায় পদবী বয়ে বেড়াতে হয় তাকে। ভুলে যেতে চায় সে বিয়ের পরের সেই রাতের ঘটনা। নানা ঝড় ঝাপটা পেরিয়ে আই এ পাশ করে ফার্স্ট ডিভিশনে। ভর্তি হয় কলকাতা শহরের স্কটিশ চার্চ কলেজে। কলকাতার মতো বড়ো শহরেও দানা বেঁধে আছে সেইসব পুরোনো সংস্কার। মেয়েদের পিছিয়ে রাখার সংস্কার। কিন্তু দীপারা থেমে যায় না। বিদ্রোহ করে এগিয়ে যায়। সংস্কার মুছে নিজেকে প্রমাণ করে। একসময় কাছের মানুষগুলো কেমন অচেনা হয়ে যায়। একসময়ের ভালোবাসা স্নেহ যেন সব হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। সম্পর্কের তার কোথাও যেন কেঁটে যায়। কলকাতা শহরে একা একদম একা এক তরুণী সে। নেই কোনো আপনজন। ভুলে যেতে চাওয়া সেই বিবাহের সম্পর্কের জের ধরেই লক্ষ টাকার সম্পত্তি পেয়েও তা দান করে দিতে চায় দাতব্য প্রতিষ্ঠানে। দেখতে পায় আশেপাশের মুখোশ পরে থাকা সেই লোভী মানুষগুলোকে। যারা স্বার্থে একটু আঘাত লাগতেই চোখের পলকে কেমন বদলে গেলো। এই কি জীবন? দীপা পারবে সকল প্রতিকূলতা পেরিয়ে জীবন যুদ্ধে বিজয়িনীর আসনে বসতে? এমন তো হাজারো দীপা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল সেই সময়ের কলকাতায়! পাঠ প্রতিক্রিয়া: দীপাবলি বন্দোপাধ্যায় যেন তৎকালীন কলকাতার অধিকার আদায়ে বদ্ধ পরিকর সকল মেয়েরই প্রতিচ্ছবি। বইতে দেশভাগের পরের কলকাতার চিত্র লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন। আরো আছে সরকার বিরোধী আন্দোলন, ছাত্র রাজনীতি, সংস্কারের নামে কুসংস্কার আর সব কিছুর মাঝে নিজেকে প্রতি মুহূর্তে প্রমাণ করতে থাকা এক তরুণী। খুবই সহজ ভাষায় সে সময়ের একটা চিত্র লেখনীতে ফুটে উঠেছে। দীপার জীবনের মনস্তত্ত্ব, ভেতরের কান্না, সম্পর্কের টানাপোড়ন, একা জীবন আর চারপাশের মানুষগুলোর অবাক করা ব্যবহার তাকে নাড়িয়ে যাচ্ছিল পুরোটা সময়। তবুও দমে যায়নি সে। সত্যসাধন বাবুর মতো মাস্টার, অমরনাথের মতো বাবা, মনোরমার মতো ঠাকুমা, মায়া-রাধার মতো বান্ধবী, মায়ার মায়ের মতো একজন মন খুলে কথা বলার একজন মানুষ দীপার জীবন চলার কণ্টকাকীর্ণ পথে এনে দিয়েছিল একটু প্রশান্তি। দীপা থেমে থাকেনি, এগিয়েছে পথের পথিক হয়ে। আরো এগোতে হবে। নিজেকে সেই স্থানে নিতে হবে যেখানে নারী-পুরুষের ভেদাভেদ করার সুযোগ থাকবে না। তাতে গোরা মানসিকতার মানুষেরা যতোই চোখ ঠোঁট উল্টে যাক কেন। লেখক দীপার চরিত্র সাজিয়েছেন মনের মাধুরী দিয়ে। সুখ-দুঃখবোধ, জীবনে চাওয়া-পাওয়া, ভালোবাসা আর এক গম্ভীর ব্যক্তিত্বে ভরা এক তরুণী হিসেবে দীপাকে সাজিয়েছেন লেখক। কখনও সে গম্ভীর, কখনও সে চোখের জলে সিক্ত এক নারী যার জীবনে আপন বলতে খুব বেশি কেউ নেই। প্রতিনিয়ত যে দিচ্ছে অগ্নিপরীক্ষা। দীপার চরিত্র বিন্যাসে লেখক শতভাগ সফল। দীপাবলীর জীবনের প্রিয় মুখগুলোর হারিয়ে যাওয়া দেখে একটা লাইনই মন আওড়াচ্ছিল, ❝যেখানে যাহারে জড়ায়ে ধরেছি সেই চলে গেছে ছাড়ি।❞ বইটা পড়ার সময় বারবার মনে হচ্ছিল আজকের এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও কি নারীরা মুক্ত? সেই শিকল কি অদৃশ্য ভাবে এখনো পড়ানো নেই নারীদের পায়ে? পূর্ববঙ্গের ব্যাপারে কিছু তথ্য ছাড়া আগাগোড়া পুরো উপন্যাসই ভালো লেগেছে। যেখানে যেমনটা অনুভব করার ঠিক তা-ই করেছি। একসময় মনোরমার উপর খুব ত্যক্ত লাগছিল। এরপর লেখকের লেখার গুনে সেই তিক্ততা গিয়ে পড়লো অঞ্জলির উপর। মুহূর্তেই কীভাবে একজন মানুষ ভোল পালটে ফেলে সেটা অঞ্জলি, সুভাষের মতো চরিত্র থেকে খুব ভালো করে বুঝে ফেলে যায়। বই: সাতকাহন (প্রথম পর্ব) ❝ঈশ্বর যদি মানুষকে অন্তত একদিনের জন্যে অন্যের মনের কথা পড়ার ক্ষমতা দিতেন তাহলে নব্বইভাগ মানুষ কেউ কারো সঙ্গে থাকতে পারত না।❞ মনে মনে কত কিছুই তো আমরা ভাবি। বলতে পারি তার কয়টা? বলি না বলেই কি আশেপাশের সম্পর্কগুলো টিকে আছে? দীপাবলী। বাল্যবিবাহের শিকার হয়ে প্রথম জীবনেই বৈধব্যের শিকল পড়া এক ছোট্ট মেয়ে। পরবর্তীতে যে নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন করে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়। নানান টানাপোড়নের মাঝে যে নিজেকে বাঁচিয়ে রেখেছে। অনন্য ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এক সংগ্রামী নারী। দেশভাগ পরবর্তী ভারতের কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যে নিজেকে প্রমাণ করার জন্য প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করেছে। প্রথমে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে নেখালিতে জয়েন করে দীপাবলী। সেখানে ক্ষমতার অপব্যবহার আর টাকার কাছে সরকারি কর্মকর্তাদের বিকিয়ে যাওয়া দেখে হাল ছেড়ে দেয়। দেশের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এমন ব্যক্তিত্বহীন দশায় সে নিজেকে দেখতে চাইছিল না। কলকাতা ফিরে আবার আই আর এস পরীক্ষা দিয়ে ইনকাম ট্যাক্স কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেয় দিল্লিতে। কলকাতার গন্ডি পেরিয়ে এ এক নতুন জীবন। জীবনসঙ্গী হিসেবে খুঁজে নেয় অলোক মুখোপাধ্যায়কে। দীপাবলী আবার হয়ে যায় দীপাবলী মুখোপাধ্যায়। জীবন আসলেই চক্রের মতো ঘূর্ণায়মান। জীবন সংসারে একলা দীপাবলী অলোককে নিয়ে টোনা-টুনির সংসার পাতে। চাকরি জীবনের সমস্যা এখানেও। সরকারি কর্মকর্তাদের যে নিয়ম শিখিয়ে নিয়োগ দেয়া হয় বাস্তবে তার ষোলো আনাই মিছে। অন্যায়ের সাথে আপোষ না করা দীপাবলী নিয়ম মেনেও যেনো এক অনিয়ম। ভালোবেসে যাকে জীবনসঙ্গী করেছিল দেখা যায় তার সাথে মতের অনেক বিরোধ। তীব্র আত্মমর্যাদাসম্পন্ন দীপাবলী সব দেখেও নির্বিকার। সংসার করছে করতে হবে তাই। শুরু থেকেই সংগ্রাম করা এক নারী সংসার জীবনেও একাকীত্বে ভুগতে শুরু করে। বিয়ের আগের অলোক আর পরের অলোক কতটা তফাৎ? মানুষ বদলায়, কিন্তু কতখানি? জীবন দীপাবলীকে আবার ফিরিয়ে আনে কলকাতায়। শুরু হয় আবার একলা জীবন। চাকরি আর সংসার জীবনের টানাপোড়ন, পরিবারের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা সব নিয়েই চলে যাচ্ছিল দীপার জীবন। শেষে ঠাকুমা মনোরমাকে নিয়ে বাস শুরু করে দীপাবলী। এভাবেই চলবে? আত্মমর্যাদাবোধ কি ভালোবাসা থেকেও দামী? পাঠ প্রতিক্রিয়া: প্রথম খন্ড পড়ার পরে দীপার জীবনে কী হলো জানতে উদগ্রীব ছিলাম। দ্বিতীয় খণ্ড পড়ে মনে হচ্ছে না পড়াই ভালো ছিল। সত্তর আশির দশকের ভারতবর্ষ, তখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দুর্নীতি, অনিয়মকেই নিয়ম বানিয়ে দিব্যি বসবাস করা মানুষগুলোর মাঝে স্রোতের বিপরীতে এক অদম্য নারী দীপাবলী। প্রথম জীবনে সামাজিক অব্যবস্থার শিকার এবং পরবর্তীতে নিজের ভাগ্য বদলে বাবা এবং মাস্টারের স্বপ্ন পূরণ করে দীপাবলী এগিয়ে যায় জীবনে। লেখক তৎকালীন ভারতবর্ষের নানা সমস্যার কথা বেশ সাবলীলভাবে লিখেছেন। পুরো উপন্যাসের সিংহভাগই ছিল দীপার চাকরি জীবনের নানা সমস্যা নিয়ে। সৎ থেকে হাজারো অসৎ ব্যক্তির মাঝে কাজ চালিয়ে যাওয়ার যে স্পৃহা তার মধ্যে ছিল লেখক সে বিষয়গুলোই মোটা দাগে দেখিয়েছেন। থিওরি আর প্রাকটিসের মধ্যে বিস্তর এক তফাৎ, যা দীপাবলী চাকরি জীবনে টের পেয়েছে। পরিবার জীবনেও দীপাবলীর ভাগ্যে সুখ বেশিদিন জোটেনি। এক হাতে যেমন তালি বাজেনা তেমনি দোষ ছাড়া মানুষ হয় না। কেউই ❝পারফেক্ট❞ নয়। পৃথিবীর সকল দুঃখ উপরওয়ালা দীপাবলীকে এমনি দিয়েছেন না সেজন্য সে নিজেও সিকি ভাগ হলেও দায়ী এমনটা কি না সেটা যারা পড়েছেন বইটি তারা ভালো বুঝেছেন। দীপাবলীর জীবনে সংগ্রাম, অন্যায়ে আপোষহীনতা, আত্মমর্যাদাবোধ যেমন আমাকে তীব্রভাবে আকর্ষণ করেছে তেমনই তার চরিত্রের কিছু দিক আমাকে খুবই হতাশ করেছে। মাঝে মাঝে বিরক্ত ধরিয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে উপন্যাসের সমাপ্তিটুক। ফেইরী টেলসের মতো ❝??????? ???? ?????❞ টাইপ হবে আশা করিনি। তবে তার শেষ পর্যায়ের আত্মমর্যাদাবোধ আমার চোখে দীপাবলীকে অহংকারী এবং স্বার্থপর একজন নারী হিসেবে দেখিয়েছে। মনোরমার সাথে সে নিজের ছেড়ে আসা জীবনের যে তুলনা করেছে সেটা আমার কাছে অমূলদ লেগেছে। মনোরমার মতো দীপাবলীর জীবন থেকে বিনা কারণে পঞ্চাশ বছর নিশ্চয়ই হারিয়ে যায়নি। আর মনোরমার ঘটনাটা একেবারেই এক পাক্ষিক ছিল। যেখানে দীপাবলীর ক্ষেত্রে সে একদম তুলসী পাতা অবশ্যই ছিল না। জীবনের শুরুর দিকে মনোরমা দীপাবলীর সাথে যে অন্যায় করেছে সেটা ভুলে সে মনোরমা কে কাছে ঠেলার সময় আত্মমর্যাদার কথা ভাবেনি। এই ব্যাপারগুলো আমার কাছে দৃষ্টিকটু লেগেছে খুব। প্রথম পর্বকে অসাধারণ বললে দ্বিতীয় পর্বকে সাধারণ মানের বলা যাবে। লেখক উপন্যাসের শুরুর দিকে লিখেছেন, ❝এক ফোঁটা ভালোবাসার জন্যে যদি কোন মানুষ লক্ষ মেইল হেঁটে যেতে পারে তাহলে একটা পুরো সমুদ্র পেলে সে কি করবে?❞ বই পড়া শেষে এই উক্তি নিয়ে আমার বক্তব্য হবে, ❝কিছুই করবে না। পা আছে না কি তাই ভুলে যাবে।❞ সবই আমার ব্যক্তিগত মতামত। লেখকের লেখনশৈলী নিয়ে কোনোভাবেই প্রশ্ন তুলছি না। বই: সাতকাহন (দ্বিতীয় পর্ব)

      By Rhea Joti

      20 Jun 2022 09:00 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      আত্মসম্মানবোধ ?❣️

      By Johirul Islam

      25 May 2016 12:57 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      একটি মেয়ের গল্প, যে কিনা ছোট বেলা থেকেই সব বাঁধা থেকে মুক্তি চেয়েছিল। চেয়েছিল মুক্ত বিহঙ্গের মত আকাশে উড়ে বেড়াতে। জীবনে চলার পথে একজন মেয়ে হিসেবে যত রকম বাধার সম্মুখীন হওয়া যায় তার প্রায় সব গুলি বাঁধার সম্মুখীন সে হয়। পদে পদে এভাবে সমস্ত বাধা পেরিয়ে চলা একটি মেয়ে , নাম তার দীপাবলি । হ্যাঁ... নাম শুনেই সবাই হয়ত ইতিমধ্যে বুঝে ফেলেছেন যে আমি "সমরেশ মুজুমদার" এর "সাতকাহন" এর কথা বলছি। গত কয়েকদিন ধরে আবার পড়লাম , সেই ছোট বেলায় পড়েছিলাম সাতকাহন। বয়েস কত হবে? এই ... ৭ বছর কি ৮ বছর হয়ত, ঠিক মনে নেই। ঠিক তখন ই আমি প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম দীপাবলির । এই নারী চরিত্র টা আমাকে ঠিক সেই বয়েসেই খুব টেনেছিল। আমি সত্যি ই ভালবেসেছিলাম দুরন্ত এই দিপা কে, ছোট বেলা থেকেই দিপা মেয়ে টি খুব দুরন্ত। রাত বিরতে বাসা থেকে বের হয়ে দুষ্টুমি করা, ছেলে দের সাথে ঘুরে বেড়ানো মেয়ে এই দীপা। দীপার মা এসব পছন্দ না করলেও দীপার বাবার পশ্রয়ে সে দুরন্ত ই থেকে যায়। হঠাৎ একদিন দীপার বিয়ের প্রস্তাব আসে। বিয়েও হয়ে যায়, কিন্তু একদিন পরেই তার স্বামী মারা যায়, তার পর থেকেই জীবনের বিভীষিকা ময় দিন গুলি সামনে আসে দীপার। আমার তখন ইচ্ছে করত, ইশ! আমি যদি গল্পের মধ্যে যেতে পারতাম? তবে আমি এই মেয়ের সামনে বর্ম হয়ে যেতাম। কিন্তু বই আরেকটু সামনে এগুতেই দেখি না দীপাবলির আমাকে প্রয়োজন নেই সে স্বনির্ভর একটা মেয়ে । তারপর শুরু হয় তার জীবনের উত্থান পতনের কাহিনী। আমার সেই ছোট বেলার প্রেমে পড়া দীপাবলির কাহিনী নিয়ে দুই খণ্ডের এই বই টি আপনার ভালো লাগবে কথা দিচ্ছি ।

      By Pial Chakrobatty

      24 May 2021 12:16 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      অসম্ভব সুন্দর একটা বই।আমার মনে হয় সবার একবার বইটা পড়া উচিত।

      By Nowshin Tasnuva Aurpa

      04 Mar 2022 10:20 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বাঙালী সাহিত্যের জনপ্রিয় লেখক "সমরেশ মজুমদার"-এর ব্যপক আলোচিত, দুটি খণ্ডে বিভক্ত, সাড়া জাগানো একটা উপন্যাস হলো 'সাতকাহন'। সাতকাহন আমার কাছে কোন বই বা উপন্যাস না। এটা আমার কাছে একজন সাহসী ও তেজস্বী নারীর গল্প। বিংশ শতাব্দীতে একটা নারীকে যত রকম ঘাত-প্রতিঘাতের সম্মুখীন হতে হয়েছিল, তার এক-একটি কানা-কড়ি লিপিবদ্ধ হয়েছে এ বইটিতে৷ এ গল্পের মূল নায়িকা দীপাবলি। তাকে নায়িকা না বলে একজন সংগ্রামী নারী বলাটাই বেশী শ্রেয়। দীপাবলির শৈশব কেটেছে জলপাইগুড়ির ডুয়ার্সের চা বাগানে। শৈশব ছিল তার আনন্দ ও স্মৃতিতে পরিপূর্ণ। কিন্তু তারপরই শুরু হয় প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে এগিয়ে চলা, স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করার অদম্য ইচ্ছা! আংড়াভাসা নদীর তীরের চা বাগান থেকে উঠে এসে স্বাধীন ভারতের একজন রেভিনিউ কর্মকর্তা হয়ে উঠার পেছতে শত প্রতিকূলতা এবং যুদ্ধের গল্প এটি। এ বইয়ে সুস্থ নারীবাদের কথা উঠে এসেছে। সুস্থ বলছি কারণ বর্তমানে নারীবাদ বিষয়টা সমালোচনামূলক শব্দ হয়ে যায় তাই। ১২ বছর বয়সেই বাল্যবিবাহের শিকার হতে হয় দীপাকে। বিয়ের পরদিনই স্বামী মারা যায়;আর তারই কিছুদিন পর শ্বশুর। সেই সুবাদে দীপা মালিক হয়ে বসে অঢেল সম্পত্তির। কিন্তু তার তীব্র আত্মসম্মানবোধ তাকে বাধ্য করে সেই সম্পত্তি ত্যাগ করতে। সেই অঢেল টাকা-পয়সা সে এক সেবামূলক সংগঠনকে দান করে দেয়। বাল্যকালের মৃত বর 'অতুল', তারপর ধীরে ধীরে 'অমল', 'শমিত' ও 'অর্জুন' এর মতো বিভিন্ন পুরুষ কিছু-কিছু মুহূর্তের জন্য অংশ হয়েছিল দীপাবলির জীবনে। সকলকে পাশ-কাটিয়ে দীপা শেষমেশ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় 'অলোক' এর সাথে। কিন্তু তীব্র আত্মসম্মানবোধ আর ব্যক্তিত্ব তাকে বাধ্য করে এ সম্পর্ক থেকেও সরে আসতে! এ গল্পটি তীব্র আত্নসম্মানবোধ এবং ব্যক্তিত্বের একটি গল্প। আত্মসম্মানবোধ-ব্যক্তিত্ব এবং অহংকারের মাঝে একটা ক্ষীণ দাগ আছে। কতটুকু দাগ পার করলে সেটা অহংকারের পর্যায়ে পরে তা অক্ষরে অক্ষরে প্রকাশ পেয়েছে এ গল্পে। এই গল্পের শেষ দিকে গিয়ে লেখক পুরাতন প্রথাকে ভেঙে দিয়েছেন দীপার ঠাকুরমা চরিত্রের মাধ্যমে। সেই ঠাকুরমা; যিনি কি না আজীবন প্রথাকে আঁকড়ে ধরেছিলেন! লেখক দেখিয়েছেন 'রমনা সেন'-এর মতো নারীদের জীবনের রূপ-রেখা কেমন করে পাল্টায়। সেই সাথে সরকারী চাকরিতে আমলাদের দূর্নীতির নগ্ন চেহারাটি লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন। প্রসাশনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে যাওয়া দূর্নীতির কাছে দীপাবলিরা কেমন অসহায় আর বলির পাঠা তার দাঁত ভাঙা বর্ণনা উঠে এসেছে এই গল্পে। এবার, এতকিছুর পর এই বইটির অল্প একটু সমালোচনা করে ফেলি। সমালোচনা করার মত দুঃসাহস আমার নেই। তাই একে সমালোচনা না বলে আমি বলব আমার নিজের পয়েন্ট অব ভিউটি প্রকাশ করতে যাচ্ছি। এই বইয়ে, ইতিহাস ও রাজনীতির কথা একদমই কম উঠে এসেছে। তবে হ্যা, লেখক এই বইয়ে বিংশ শতাব্দীর একটি নারীর জীবন ও তার পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও পরিস্থিতি সুনিপুণভাবে তুলে ধরেছেন। আরেকটি বিষয় আমাকে একটু খোঁটা দিয়েছে। সেটি হলো, দীপা এই বইয়ে একটি আদর্শ নারী চরিত্র। সে তীব্র সংযমী, বুদ্ধিমান এবং আত্মসম্মানবোধ ও ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন একজন নারী। কিন্তু অঢেল আত্নসম্মানবোধ সম্পন্ন একজন নারী হওয়া সত্ত্বেও সে পুরো উপন্যাসে জীবনসঙ্গী নির্বাচনে দ্বিধাদন্দের মাঝে ছিল এবং নিজের পছন্দ বা ভালোবাসার প্রতি সজাগ ছিলো না। এই ইতস্থতা বা দ্বিধাদন্দটি/ আমি কি পছন্দ করি সেটার স্পেসিফিকতার অভাব এই অঢেল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নারী চরিত্রটিকে কিছুটা ম্লান/বিবর্ণ করে ফেলেছে বলে আমার মনে হয়েছে! পরিশেষে, দীপা বিংশ শতাব্দীর নারী হয়েও তার চিন্তাশক্তি ছিলো বর্তমান আধুনিক সমাজের মতো। একটি বিংশ শতাব্দীর নারীর জীবনের আদ্যোপান্ত যদি উল্টে পাল্টে দেখতে চান তবে এই বইটি আপনার জন্য সাজেস্ট করছি। নিজের আত্নসম্মানবোধ ও ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে সচেতন হবার জন্য সকল নারীর এই বইটি পড়া উচিত। পুরুষাশিত কুসংস্কার সম্পন্ন সমাজের মাঝে কিভাবে বিদ্রোহ করে একটি নারী উঠে এসেছে সামনের কাতারে; তা অবশ্যই সকল নারীর জন্য হবে একটি প্রেরণার উৎস। পাশাপাশি একটি পুরুষেরও উচিত এই বইটি পড়া, যাতে সে একটা নারীর পারিপার্শ্বিকতা বুঝতে পারে এবং নারীকে মানুষ হিসেবে গণ্য করতে পারে।

      By otripto anik

      28 May 2014 06:35 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বইয়ের নাম সাতকাহন লেখক সমরেশ মজুমদার ছোটবেলা থেকেই একজন মেয়ে যত বাধার সম্মুখীন হয় এটা করোনা ওটা করোনা। পদে পদে বাধা পেরোতে হয় তেমনি এক মেয়ের কাহিনী নিয়ে এই বইটি। দীপাবলি দুরন্ত এক মেয়ের নাম। গ্রাম্য আর ১০ টা মেয়ের মতই বেড়ে উঠছিলো। খেলার সাথী ছিলো অনেক মাছ ধরতে যাওয়া, চুরি করে রাত্রে বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়া ছেলেদের সাথে মেয়েদের তফাৎ করা মোটেই সহ্য করতে পারতোনা,কিন্তু তার মা এবং ঠাকুরমা এসব পছন্দ করতোনা একটুও তাই দীপার সাথে বাবার ছিল সব সখ্যতা...... কিন্তু সুখতো কারও বেশীদিন সয়না বিয়ের প্রস্তাব আসে দিপার। বিয়ে হয়েও যায় কিন্তু একদিন পর মারা যায় তার স্বামী তারপর শুরু হয় তার জীবনের বিভীষিকা দিনগুলি. অনেক কস্টে ভাল পাশ করে ভাল চাকরিও পায়,নতুন করে প্রেমেও পড়ে কিন্তু ঐ যে সুখ যে বেষিদিন সয়না, আরও আছে তার জিবনের অনেক উত্থান পতনের কাহীনি। ...তারপর দীপার কি হয় জানতে পরতে হবে বইটি। বর্তমানে এই বিংশ শতাব্দীতেও নারীদের অবস্থান এতটুকু পরিবর্তন হয়নি বইটী পরলে বোঝা যায় । অবশ্য পাঠ্য বই।

      By Jakaria Islam

      25 May 2016 01:06 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      সাতকাহন, উপন্যাসটির সূচনা, বিস্তৃতি আর প্রবাহধারা একজন নারীকে নিয়ে । যার নাম দীপাবলি বন্দ্যোপাধ্যায়। আপাত দৃষ্টিতে এই উপন্যাসটিকে শুধু মাত্র একজন নারীর গল্প মনে হলেও, দীপা হলো বাঙালী সেই সব নারীদের প্রতিনিধি যাদেরকে এই পুরুষ শাসিত সমাজ কখনো সংস্কার, কখনো দুর্বলতা আবার কখনো লালসার ভয় দেখিয়ে হতাশার কাল কুঠুরিতে ছুড়ে ফেলতে চায়, কিন্তু দীপারা দমে না, হারে না। সমাজের চোখ রাঙ্গানি উপেক্ষা করে চলতে থাকে তাদের নিরন্তর যুদ্ধ। মায়ের মৃত্যুর পর জন্মদাতা পিতার কাপুরুষতায় দীপার আশ্রয় মেলে তার মাসি-মেসোর সংসারে। না, অপরের সন্তান মনে করে নয়, শুরুতে নিজের সন্তানের মত ভালবাসা আর আদর দিয়েছিল অঞ্জলি আর অমরনাথ। নিজের দুইটা পুত্র সন্তানের সাথে এই কন্যাটিকে বুকে টেনে নিয়েছিল ওরা। অমরনাথের মা মনোরমাও কখনো দীপাকে আলাদা করে দেখতে চাওনি। কিন্তু বৈধব্যের সংস্কারের কারণে নারী পুরুষের ভেদাভেদের চেতনায় মনোরমা সারাক্ষন দীপাকে আবদ্ধ রাখতে চাইত। মাষ্টার সত্যসাধনের বাবু তার অভিজ্ঞ চিন্তা শক্তি দিয়ে দীপার মাঝের মেধাবী সও্বাকে সহজেই চিনে নিয়েছিলেন। আর সেজন্য নিঃসন্তান এই মানুষটির দীপাকে নিয়ে স্বপ্ন দানা বাধে। কিন্তু সমাজের ঘুনেধরা সংস্কারগুলো দীপার পরিবারের মানুষগুলো পিছু ছাড়ে না । মাত্র এগার বছর বয়সে এক বিত্তবান ঘরের নিঃশেষিত রুগ্ন ছেলের সাথে দীপার বিয়ে হয়। এই অসুস্থ সমাজের চোখে একটি মেয়ের বিয়ের যোগ্যতা বিচার করা হয় তার মানসিক পূর্নতা নিয়ে নয়, তার ঋতুর সক্ষমতা নিয়ে। দীপারও তাএর ব্যতিক্রম হয় না । কিন্তু বিয়ের পর মাত্র একটা রাতে জন্য সে বধূ হয়ে থাকতে পারে। ঐ একটিরাতে দীপার সাথে কি হয়েছিল নিঃসন্দেহে পাঠকদের হৃদয়ে ঘটনাগুলো আলোড়িত করে তুলবে। বিয়ের পরের দিনই দীপার স্বামী মারা যায় আর দীপাকে, মাত্র এগারো বছরের একটা বাচ্চাকে একা পাঠিয়ে দেয়া বাপের বাড়িতে । দীপার জীবনের বিভীষিকাময় রাতের পর শুধু দীপার স্বামীর মৃত্যু হয়নি, আরেকটি মৃত্যু হয়েছিল, যেটি ছিল একটি হত্যা। দীপার শৈশবিক সত্তার হত্যা হয়েছিল সেই রাতে। কেউ শুনে নি, কেউ জানতে পারেনি। দীপার এই প্রত্যাবর্তনে অমরনাথ তার ভুল বুঝতে পারেন। দীপার পড়াশোনা আবার শুরু করা হয়। তবে সেই প্রাণোচ্ছ্বল, হাসি-খুশী দীপাকে এ বাড়ির আর কেউ কখনো দেখতে পায়নি। সে যেন এক প্রস্তর খন্ড। মনোরমাও দীপার উপর নির্মম বৈধব্য চাপিয়ে দিলেও দীপা কোন প্রতিবাদ করে না । কিন্তু সে শুরু করে নতুন এক যুদ্ধ। পড়াশোনায় নিজেকে উজাড় করে খোজে মুক্তির পথ। মাধ্যমিক মেধাবী ফলাফল করে জলপাইগুড়িতে ভর্তি হয় উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য। তাই এই সংগ্রামে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন অমরনাথ। উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডিও পার হতে দীপাকে খুব বেশি অসাধ্য সাধন করতে হলো না । কিন্তু কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে ভর্তি হবার পরে অমরনাথ দীপাকে ছেড়ে চলে যান। আর অমরনাথের এই স্বাভাবিক মৃত্যুকে মেনে নিতে পারেনি অঞ্জলি। তার মৃত্যূর জন্য দায়ী করা হলো দীপাকে। দীপাকে তার পরিবারের ছায়া থেকে বের করে দেওয়া হলো। দীপ সম্পূর্ণ একা হয়ে গেল, পাশে এসে দাড়াবার মত খুজে পেল না কাউকে। তবু দীপা কি পেরেছিল এই সমাজে হিংস্র আর স্বার্থান্বেষী শকুনের ভিড়ে নিজেকে রক্ষা করতে? পেরেছিল নিজেকে সেই শিক্ষার আলোয় নিজেকে ভাসাতে যে আলো তাকে মুক্তি দেবে? জানতে হলে, হাটতে হবে কিছুটা পথ দীপাবলির সাথে। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ আমি চিত্রাঙ্গদা। দেবী নহি, নহি আমি সামান্যা রমণী। পূজা করি রাখিবে মাথায়, সেও আমি নই; অবহেলা করি পুষিয়া রাখিবে পিছে সেও আমি নহি। যদি পার্শ্বে রাখো মোরে সংকটের পথে, দুরূহ চিন্তার যদি অংশ দাও, যদি অনুমতি কর কঠিন ব্রতের তব সহায় হইতে, যদি সুখে দুঃখে মোরে কর সহচরী আমার পাইবে তবে পরিচয়। রবীন্দ্রনাথের কাব্যের চিত্রাঙ্গদাকে যারা পড়েছেন, যারা খুজেছেন তারা সেই চিত্রাঙ্গদাকে দীপাবলির মাঝে দেখতে পাবেন। দীপাবলি বন্দ্যোপাধ্যায়, বাংলা সাহিত্যের এমন এক শক্তিশালী নারী চরিত্র, যাকে না জানলে, না চিনলে, পাঠকদের পাঠ্য জগতে একটা শূন্যতা থেকে যাবে । এক সাধারণ কিশোরীর অসাধারণ নারী হয়ে ওঠার উপ্যাখান হলো সাতকাহন। লেখক সমরেশ মজুমদার তার কলমের ছোয়ার যে নারীর কল্পছায়া আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন, সেটা নিঃসন্দেহে যর্থাথ এবং সাবলীল।

      By Jahidur Rahman

      15 May 2016 02:09 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      কিছু উপন্যাস আছে যেগুলো পাঠককে নিজে থেকেই গল্পের ভিতরে নিয়ে যায়।পাঠকের নরম মনকে শক্ত করতে,মাথা তুলে দাড়াতে শিখায়,সাতকাহন তেমনি একটি উপন্যাস। সমরেশ মজুমদার তার কলমে যে মেয়েটির চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন, সে আর দশটি মেয়ের মতো নয়।লেখক বিদ্রোহী, আত্ননির্ভর এক বাঙালী নারীর চিত্র এই গল্পে তুলে ধরেছেন। যাকে সমাজের লোভ লালসা, আবেগের মহা সমুদ্র ছুতে পারেনি। একেই বাল্যবিবাহ আবার বিয়ের রাতেই রুগ্ন এক ছেলের নিকৃষ্ট বাসনা। সমাজের ঢেকে রাখা সত্যগুলোর সাথে লেখক পরিচয় করিয়ে দেয়।কিন্তু এর বিরুদ্ধে লড়তে পারার যে ইচ্ছা, স্বপ্ন তাও দেখিয়ে দেয় গল্পের নায়িকার মাধ্যমে।সামগ্রিক ভাবে দুই মলাটের ভিতর পাঠক এক প্রতিবাদী নারীর সংগ্রামী জীবনের ধারাবাহিতা দেখতে পাবেন।। অন্য মেয়েরা যেখানে সমাজের কঠিন বিচারের কাছে পরাজিত হয়,মাথা পেতে নিয়ে নিজেকে কুড়েকুড়ে শেষ করে দেয়।সেই মেয়েদের বিপরীত চিত্র এই সাতকাহনের নায়িকা।সমাজ হয়ত কিছু সময়ের জন্য তাকে দমিয়ে রাখে,কিন্তু থামিয়ে রাখতে পারেনা।। এই গল্প সেই নারীর যে জীবনের প্রতিটি দিন,প্রতিটি রাত,প্রতিটি বেলা যুদ্ধ করেই যায়।কখনো নিজের সাথে।কখনো বা এই সমাজের কুটিল নিয়মের বিরুদ্ধে।কোনো প্রতিবন্ধকতাই তাকে থামিয়ে রাখতে পারেনা।। লেখক প্রতিটি নারীকেই উদ্দেশ্য করে বলেছেন"একফোঁটা চোখের জল,একশো ফোটা রক্তের চেয়েও দামি"। এই উপন্যাস প্রতিটি নারীর চোখ খুলে দেবে।ভাবতে শিখাবে,বাঁচতে শিখাবে এই সমাজের বিরুদ্ধে লড়াই করে।।

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!