User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
আজকের বাংলাদেশ যা নদীমাতৃক পলিসমৃদ্ধ এক ভূমি তার জন্মলগ্নের সূচনা বহু হাজার বছর আগে। কোনো দেশ বা জাতি তার স্বকীয়তা নিয়ে যেমন একদিনেই পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয় না তেমনি তার ভাষাও নানা আবর্তন-বিবর্তনের মধ্যদিয়ে শক্তিশালী রুপ লাভ করে সময়ের বিস্তৃতির দ্বারা। তৃতীয় হিমবাহর সময়ে অর্থাৎ শেষ প্লাইস্টোসিন যুগ থেকে বর্তমান বাংলাদেশের উৎপত্তি। এর উৎপত্তি কালের সূচনা হয় আনুমানিক তিন লক্ষ বছর আগে। বাংলাদেশের নৃতাত্ত্বিক গঠন অনুসারে অস্ট্রো-এশিয়াটিকের একটি শাখা ছিল স্থলের অধিবাসী এবং আরেকটি শাখা নৌকায় বসবাস করে আসছে। এরাই আজকের যুগের বেদে বা বাইদ্যা। এই দেশটা কতটা সুন্দর নির্মল আর সতেজ। নিজ দেশটাকে যে ভালোবাসতে জানে সে দেশটার ইতিহাস সম্পর্কেও জানার আগ্রহ রাখে। শুধুই কি মোঘল আমল বা বৃটিশ শাসন কিংবা পাকিস্তানী স্বৈরাচারীতা। এর ও অনেক আগে এখানে মানুষ ছিলো। বাঙ্গালী জাতটাই বা কোথ থেকে এলো কিংবা বাংলা শব্দমালা। পথক্লান্তি, ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা ভুলে এই পাখি ডাকা নতুন দেশের সুন্দর নীল আকাশ, ছোট ছোট ঢেউতোলা খরতোয়া নীল নদী, সবুজ মাঠের শোভায় তাকিয়ে মুগ্ধ হয়ে গেল বং আর এলা। বাংলাদেশের জাতি গঠন ও ভাষার বিবর্তনের উপর ভিত্তি করে রিজিয়া রহমান এর 'বং থেকে বাংলা' উপন্যাসের সৃষ্টি। তবে এর মূল কথা অন্য। আড়াই হাজার বছর আগে বং গোত্র থেকে শুরু করে ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয়কাল পর্যন্ত দীর্ঘ পরিব্যাপ্তির মধ্যে এ উপন্যাসের কাহিনী বিন্যাস করা হয়েছে। বাংলার সাধারণ মানুষ চিরকালই ছিলো অবহেলিত, উপেক্ষিত ও উৎপীড়িত। জাতি হিসেবে সামাজিক, অর্থনৈতিক, গণতান্ত্রিক মর্যাদা তারা কোনদিনই পায়নি। 'বং থেকে বাংলা' যেমন একদিকে ইতিহাসের সঙ্গে সেই কথাটিই প্রকাশ করেছে তেমনি কী করে সুদীর্ঘ দিনে একটি জাতি স্বাধীনতার মর্যাদায় এসে দাঁড়িয়েছে তারই চিত্রণের চেষ্টা করেছে। দশটি অধ্যায়ে বিভক্ত দশটি ভিন্ন যুগের গল্পের মাধ্যমে সাজানো এই উপন্যাসটি একটি দেশ ও জাতি গঠনের ইতিহাস বর্ণনা করে। একটি জাতির জাগরণের ইতিহাস 'বং থেকে বাংলা'। কাহিনীচিত্র : দশটি অধ্যায়ের দশটি গল্পের ছোট আকারে সারমর্ম করলেও লেখাটা অনেক বেশী বড় হয়ে যাবে তাই দশটি অধ্যায়ের প্রধান চরিত্রগুলা আর কোন সময়ের ঘটনা তার বিবরণ দেয়াটা বেশীই যুক্তিযুক্ত মনে হচ্ছে। গল্প : ০১ - সময়কালটা বাংলাদেশ গঠনের সময়কাল আনুমানিক তিন হাজার বছর আগে যখন শুধুমাত্র সমুদ্র মেঘলা স্রোতস্বিনীর ধারা স্পর্শী নীল বনাচ্ছন্ন এক ভূমি এদেশ। তখন দুটি ছিন্নমূল মানুষ এলো এখানে বাস করতে। জনবসতি হলো বানিজ্য হলো প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এ ভূমির লোকেরা যাযাবর আর্যদের নজরে পড়লো। আর্যরা অশ্বারোহী কিন্তু জলচারী নয়। ধ্বংসের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে একদল সমুদ্রচারী হলো। তাদের মধ্যে থেকে এক যুবক আর যুবতীকে সমুদ্রে ফেলে দেয়া হলো সমুদ্র দেবতার আহারের জন্য যাতে তিনি অসন্তুষ্ট না হন। কিন্তু দেবতা বং আর এলাকে (যুবক আর যুবতী) গ্রহণ না করে দিল এক সুজলা সুফলা ভূমি। ঘুরতে ঘুরতে একদিন পরিচয় হয় একদল বাইদ্যাদের সাথে যাদের মধ্যে কৈয়ারতত আর পাইককী আর যাদের দলের সর্দারনী বাইদ্যা। পাইককী মনে মনে মন দিয়ে ফেলে বংকে ওদিকে এলাও আবার চায় বংকে। গল্প এগিয়ে চলে। গল্প : ০২ - সময়কালটা আনুমানিক দেড় হাজার বছর আগে যখন লোকজন কৃষি আর বানিজ্য করতে পারতো। বর্ষার মাঝামাঝি সময়। কিছুদিনের মধ্যে নৌকায় জীবনযাপন করা বাইদ্যারা আসবে এই বঙ্গ আলে। নদীর পাড়ে আলঘেরা জমিতে তারা ধান আর কার্পাস চাষ করে। এই বঙ্গআলের প্রধান বুড়ো ভুলু আর তার তিনটে বউ। তৃতীয়পক্ষের বউয়ের নাম বুইনী যে আদতে একজন বাইদ্যা। আর কালু হলো ভুলুর ছেলে। উত্তরদেশীয় কেরাতভূমি থেকে নমসিন নামে এক বিদেশী আসে বানিজ্যের জন্যে। এক বুনো মহিষের শিং এ গেঁথে প্রাণ হারায় ভুলু। কালু নিজে বঙ্গআলের প্রধান হতে চায় কিন্তু সবাই মেনে নিলেও বিপত্তি বাধায় বুইনী। গল্প এগিয়ে চলে। গল্প : ০৩ - সময়কালটা বৈদিক সভ্যতা যখন কিংবদন্তী অনুসারে আর্যযোদ্ধা মহাবীর ভীম তার অশ্বারোহী সেনাবাহিনী নিয়ে হানা দিলো সমতটের (বাংলা) প্রান্ত সীমানায়। ধনসম্পদ আর ললনা লুন্ঠন করে চলে গেল ওরা কিন্তু তাদের মধ্যে কিছু সৈন্য থেকে গেলো নীলাক্ষ তাদের একজন। দেশভ্রমণের ইচ্ছায় নৌকা নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে নীলাক্ষ। ঝড়ের তান্ডবে কোথায় ভেসে হারিয়ে যায় বলতে পারে না নীলাক্ষ। জ্ঞান ফিরলে নিজেকে অচেনা এক ভূমিতে আবিষ্কার করে। বিনিকা নামক এক সুন্দরী রমনীর কাছ থেকে জানতে পায় এই জায়গাটাকে কাটা আলপাড় বলে এখানে বঙ্গআল রা থাকে। বিনিকা কাটা আলপাড়ের প্রধান বাঘনের মেয়ে। বাঘন নিজে এসে হাতিতে চড়িয়ে নীলাক্ষ বাড়িত নিয়ে যায়। বাঘনের ডান হাত বগাইয়ের এই ব্যাপারটা একেবারেই সহ্য হয় না। তার উপর নীলাক্ষর মতো ভিনদেশী কাটা আলপাড়ে থাকার অনুমতি পায় আর বিনিকা যে নীলাক্ষর প্রতি দুর্বল তা হাড়ে হাড়ে টের পায় বগাই। বগাই তাই ফন্দি আটে বাঘন আর নীলাক্ষকে সরিয়ে দিতে পারলে এই কাটা আলপাড় আর বিনিকা তার। গল্প এগিয়ে চলে। গল্প : ০৪ - সময়কালটা আজ হতে ১৬৫০ বৎসর পূর্বে মৌর্যবংশের সম্রাট অশোক কলিঙ্গের সময়কাল থেকে গুপ্তবংশের সম্রাট সমুদ্রগুপ্ত এর সমতট শাসনকাল যখন বৌদ্ধধর্ম বিশেষ প্রাধান্য পায় সমতটে। নীলেন্দ্র সমতটের বঙ্গাল বণিক। হাতি বেচে ঘোড়া কেনার লক্ষ্যে পুণ্ড্রনগরে এসেছে। পথিমধ্যে পরিচিত আরেক বণিক ওয়াইমতাং তার বন্ধু বনে গেলো। দুজনে মিলে এক সরাইখানায় খাওয়াদাওয়া সেরে সেখানেই দুই বণিকের সাথে কথা বলে এমন সময় দুজন ব্রাহ্মণ খেতে এসে নীলেন্দ্রকে দেখে খুব অসন্তুষ্ট হয় কেননা ব্রাহ্মণরা ছোট জাতের লোকদের ছায়া মাড়ায় না এতে অপবিত্র হয়। চিল্লাচিল্লি বেধে গেলে এক পর্যায়ে দুইজন সৈন্য এসে থামিয়ে দিয়ে খেতে বসে সমতটের লোকজন নিয়ে অপমানসূচক কথা বলে তাতে নীলেন্দ্র ভারী অপমানিত বোধ করে ক্রোধ সংবরণ করতে না পেরে হাতাহাতি করে বসে তাতে করে রাজদ্রোহী হিসেবে রাজবন্দী হয় নীলেন্দ্র। নীলেন্দ্র বন্দীদশা আর মানুষে এত ভেদাভেদ দেখে ব্যথিত হয় আলোর সন্ধান খুঁজে। এমন কোন আলো যেখানে মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ থাকবে না। গল্প এগিয়ে চলে। গল্প : ০৫ - সময়কালটা সপ্তম থেকে অষ্টম শতাব্দী হবে যখন আরব বণিকেরা চট্টগ্রামে ব্যবসা করতে আসতো কিংবা গুপ্ত সাম্রাজ্যের পর গৌড়াধিপতি শশাঙ্ক স্বাধীন নৃপতি থেকে 'মহারাজাধিরাজ' উপাধি পাওয়ার সময়কাল। এই গল্পটা খুব জটিলই বলতে গেলে না পড়লে বুঝা যাবে না তবে এই গল্পের মধ্য দিয়ে বাংলাতে ইসলাম ধর্মের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। গল্প : ০৬ - সময়কালটা সেনরাজাদের সময়কাল খুব সম্ভবত। যখন এদেশে শুধু আরব বণিকই নয় দলে দলে পীর আউলিয়া আসা শুরু করে আর সেনদের ব্রাহ্মণ্য প্রতাপের অপব্যবহারে ও অন্যায়ে বিরক্ত হয়েই সেনদের বঙ্গালরা নিশ্চিহ্ন করে নতুন ধর্ম ইসলাম নিয়ে দেশ ও জাতি গঠন করে। গল্পটা খুব সংক্ষেপে লেখাও সম্ভব না তাই এভাবেই বর্ণনা দিতে বাধ্য হলাম। গল্প : ০৭ - সময়কালটা ত্রয়োদশ শতাব্দী যখন তুর্কিরা এদেশে রাজত্ব বিস্তার করে। ইলিয়াস শাহী বংশের নাসিরুদ্দিনের পুত্র রুকনউদ্দিন বারবাকশাহ আভিজাত্যের নিদর্শনস্বরুপ আবিসিনিয়া থেকে বিরাট এক হাবসী ক্রীতদাস বাহিনী নিয়ে আসেন। এরা ছিলো নিগ্রো যাদেরকে সিদি বলা হতো। এদের সময়টা বাংলার জন্য কলঙ্ক। হাবসী রাজত্বের অবসান ঘটিয়ে আরব সন্তান সৈয়দ আলাউদ্দিন হুসেন শাহ বাংলার শাসনকর্তা নিযুক্ত হন। তারই পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির অনেকটা অগ্রগতি হয়। গল্পটা জটিল তাই ইতিহাস আলোচনা করলাম। গল্প : ০৮ - সময়কালটা মোঘল সাম্রজ্যের শুরু এবং শেষ। দিল্লিতে পাঠান যুগের অবসান ঘটিয়ে মোঘলরা আধিপত্য বিস্তার করলে বহুসংখ্যক পাঠান এদেশে এসে জায়গা নেয় এবং বিদ্রোহ করে। মোঘল বাদশাহরা বাংলাকে দুই নামে চিনত। এক, 'জান্নাত উলবেলাত' 'পৃথিবীর স্বর্গ' আর দুই, 'বুলাখখানা' 'বিদ্রোহীদের আড্ডা'। দিনে দিনে ব্যবসা বানিজ্যের প্রসারে আরব, দিনেমার, ওলন্দাজ, পর্তুগিজ, ফরাসী, আর্মেনীয় নাবিক ও বণিকেরা আসে। ব্যবসার কাজে এলেও অনেকেই হয়তো বঙ্গাল দেশের প্রেমে কিংবা বঙ্গাল দেশের রমনীর প্রেমে থেকে যায়। বঙ্গাল দেশের নাম বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এমন সময় আসে ইংরেজ বণিকরা। মোঘল সাম্রাজ্যের সমাপ্তি ঘটে। গল্প : ০৯ - সময়কালটা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর দুইশত বছর শাসন। এই গল্পে মূলত ইংরেজদের আর জমিদারদের অন্যায় অত্যাচার এর চিত্র আর তাদের বিরুদ্ধে নীলচাষী আর সাধারণ জনগণদের সশস্ত্র বিদ্রোহের গল্পই ফুটে উঠেছে। তাই আর বিস্তারিত গল্পে গেলাম না। গল্প : ১০ - সময়কালটা দেশবিভাগের পর থেকে স্বাধীনতা প্রাপ্তি পর্যন্ত। সাবের সাহেব তার একমাত্র পুত্র আনোয়ার, তার পুত্রবধূ জমিলা, তার নাতি মিন্টু এই নিয়ে তার সুখী পরিবার। ইসলাম সাহেব তার প্রাক্তন সহকর্মী মতের মিল একদমই নেই তাদের। যেমন ইসলাম সাহেব বলেন বাঙ্গালী মুসলমানদের ভাষা উর্দুই আর বাংলা হিন্দুদের ভাষা। কিন্তু সাবের সাহেব বলেন বাঙ্গালীর ভাষা বাংলা এতে হিন্দু-মুসলিমের ভেদাভেদ নেই। এরিমধ্যে দেশে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জিন্নাহ সাহেব আসেন। এক সম্মেলনে জানান রাষ্ট্রভাষা উর্দুই হবে। এদেশের আপামর ছাত্রজনতা বিক্ষোভে ফোটে পড়ে। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয় রাজপথ 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই'। পাকিস্তান সরকার চাপ সামলাতে না পেরে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে। ছাত্রজনতা সেই ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে আন্দোলনে নামে। পাকিস্তানি পুলিশ ছাত্রজনতার উপর গুলি করে এতে অনেকের সাথে সাথে ইসলাম সাহেবের ছেলেও গুলিবিদ্ধ হয়। ইসলাম সাহেব রাতের বেলা হসপিটালে এসে দেখেন সাবের সাহেব তার ছেলের বেডের পাশে বসে আছেন। ইসলাম সাহেব বুঝতে পারেন সাবের সাহেবের কথাই সত্য বাঙ্গালী আজীবন স্বাধীনচেতা। দিন যায় মাস যায় বছর যায় আসে ১৯৭১ এর ২৫ শে মার্চের কালোরাত্রি। আনোয়ার এখন অনেকটা বৃদ্ধতার কাছাকাছি চলে গেছে। আনোয়ার আর জমিলা আর মিন্টু ঢাকাতেই থাকে। মিন্টু গ্রামে যায় কিছুদিনের জন্য বেড়াতে। এমন সময় পাক হানাদার বাহিনী আসে। আনোয়ার বলে, 'চব্বিশ বছর আগে তোমরা মুসলমান আর আমরাও মুসলমান এই সমঝোতাতেই তো দেশ হয়েছিল। অথচ তোমরা বেঈমান মুনাফেক'। কথাটা মেজরের গায়ে খুব লাগে। বাসার চাকর ছেলেটাকেও টেনে এনে নির্বিচারে গুলি করে মারে। ২৭ শে মার্চ সকালে ট্রানজিস্টার রেডিও খুলে শুনল তেজোদীপ্ত এক প্রতিবাদের কণ্ঠ। মিন্টু গ্রামে বসেই খবর পেল। মা-বাবা আত্মীয়স্বজন বন্ধু বান্ধব অনেকেই নেই। সারা শরীরের রক্ত তার উত্তেজনায় জ্বলছে। ঘরের মধ্যে পাগলের মতো পায়চারি করতে থাকলো মিন্টু। রমিজা ঘরে এলো সম্পর্কে চাচাতো বোন হলেও একয়েকদিনে বেশ ভাব জমেছে দুজনার। গ্রাম্য শান্ত মেয়ের সরল চোখে মশালের আগুন দেখতে পেল মিন্টু। হাতে হাত রেখে রমিজা বললো, 'যাও যুদ্ধে যাও। প্রতিশোধ নাও'। গল্প এগিয়ে চলে। লেখক প্রসঙ্গ : রিজিয়া রহমান হলেন স্বাধীনতা উত্তর কালের বাংলাদেশের একজন খ্যতনামা নারী ঔপন্যাসিক। ষাটের দশক থেকে গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, রম্যরচনা ও শিশুসাহিত্যে তার বিচরণ। তার প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থ অগ্নি স্বাক্ষরা। তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলো হল ঘর ভাঙা ঘর, উত্তর পুরুষ, রক্তের অক্ষর, বং থেকে বাংলা। লিখেছেন অভিবাসী আমি ও নদী নিরবধি নামে দুটি আত্মজীবনী। উপন্যাসে অবদানের জন্য তিনি ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। বং থেকে বাংলা যেমন একটি দেশ ও জাতি গঠনের ইতিহাস বর্ণনা করে ঠিক তেমনি তার প্রতিটি লেখাও বিভিন্ন আন্দোলন কিংবা ঘটনার প্রেক্ষাপটে এসেছে। বং এবং এলা নামে আড়াই হাজার বছর আগে দুটি তরুণ তরুণী সব হারিয়ে এই পাখিডাকা নীল জল টলটল শাপলা ফোটা বিলের ধারে, এই নদীর পাড়ে আল বেধে ঘর গড়েছিল। সেই বংআল আজ হাজার হাজার বছরের বঞ্চনা লাঞ্ছনা আর যন্ত্রনার আবর্তনের মধ্যে দিয়ে অনেক রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ। যারা পড়েন নি পড়তে পারেন। ভালো লাগবে পড়ে কেননা বুঝতে পারবেন কেন বলা হয়েছে, 'এমনটি দেশ কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি'।