User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
This really an awesome book...after all it's Satyajit Roy's book?
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইঃ বাদশাহী আংটি লেখকঃ সত্যজিৎ রায় ধরণঃ গোয়েন্দা, অ্যাডভেঞ্চার প্রকাশনীঃ নওরোজ কিতাবিস্তান মূল্যঃ ১৫০ টাকা (রকমারি মূল্য ১১৩ টাকা) . হঠাৎ করেই ঠিক হল এবারের পূজার ছুটিতে #তোপসে রা বেড়াতে যাবে "লখনৌ" তে। লখনৌ থেকে লছমনঝুলায় ঘুরতে যাবে। তোপসে, তোপসের বাবা, দূরসম্পর্কের কাকা-ধীরুকাকা এবং #ফেলুদা। তোপসের নাম মূলত "শ্রীমান তপেশরঞ্জন" তোপসে নামে তাকে যে ডাকে তার নাম ফেলুদা। অবশ্য ফেলুদার আসল নাম "প্রদোষ মিত্তির"। (মনে হয়না ফেলুদা আর তোপসের সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার বাকি আছে আমার) . লখনৌ জায়গায় যেতে তোপসে প্রথমে মনে মনে নারাজ থাকলেও যখন সে ফেলুদাকেও তাদের সাথে যাওয়ার ব্যাপারে রাজি করিয়ে ফেলল, তখন আর শ্রীমান তপেশরঞ্জনের আনন্দ, উৎসাহের সীমা রইলনা.... আর আনন্দ হবে নাইবা কেন? যেখানেই ফেলুদা.... সেখানেই রহস্য যে! ফেলুদা হচ্ছে শখের গোয়েন্দা! . তারপর, নির্দিষ্ট দিনে লখনৌতে পৌঁছে গেল তোপসেরা। ধীরুবাবুর বাড়িতেই উঠল তারা সেখানে। প্রায় কুড়ি বছর আগে উকিল হয়ে লখনৌতে আসেন ধীরুবাবু, তারপর থেকে সেখানেই থাকেন। বিকেলে যখন ধীরুবাবুর বাড়ির বাগানে বসে ওরা চা খাচ্ছিল তখনই গাড়ির শব্দ শোনা গেল। এক ভদ্রলোককে দেখা গেল, ধীরুবাবুর বন্ধু উনি। নাম শ্রীবাস্তব। অস্টিওপ্যাথ, ডাক্তার। কেমন যেন অস্থির দেখাচ্ছিল শ্রীবাস্তবকে! অবশ্য একটু পরেই উনার অস্থিরতার কারণ জানা গেল। গতরাতে নাকি উনার বাড়িতে ডাকাত এসেছিল। ডাকাতের কথা শুনে বেশ উত্তেজিত দেখা গেল ধীরুবাকে! জানা গেল, ডাক্তার শ্রীবাস্তব এখানকার মানে লখনৌয়ের লোক। আরেক নামজাদা ধনী ব্যবসায়ী হলেন "পিয়ারিলাল শেঠ"। পিয়ারিলালের স্ত্রী মারা গেছেন, বড় ছেলেও মারা যায় টাইফয়েডে। তারপর ছোট ছেলে মহাবীরের কি একটা হাড়ের অসুখ হয় বারো কি তেরো বছরে, তখন ডাক্তার শ্রীবাস্তবের চিকিৎসায় ভাল হয় মহাবীর। তারপর তিনমাস হল, পিয়ারিলাল মারা যান হার্ট অ্যাটাকে। মৃত্যু টা হার্ট অ্যাটাকে হলেও একটু যেন রহস্য ছিল পিয়ারিলালের মৃত্যুতে! হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়ার সময় #স্পাই শব্দটি শোনা যায় তার মুখে.... যাইহোক, মারা যাওয়ার কিছুদিন আগে ডাক্তারবাবুকে উপহার সরূপ দিয়ে যান তিনশো বছরের পুরনো এক মূল্যবান আংটি! শ্রীবাস্তবের ধারণা ডাকাত তার বাড়িতে এসেছিল এই আংটি নেয়ার জন্যই.... কিন্তু ধীরুবাবু বুঝাতে চেষ্টা করেন যে ডাকাত তো নাও হতে পারে, সামান্য চোর ছ্যাঁচড়াও হতে পারে, যে এসেছিল টাকা-পয়সার জন্য! কিন্তু তবু শ্রীবাস্তবের মনে যেন শান্তি নেই। কথায় কথায় বেরিয়ে আসে #বনবিহারীবাবু নামক এক অদ্ভুত ব্যক্তির কথা! এই লোকটির অদ্ভুত শখ রয়েছে। নিজ বাড়িতে করেছেন চিড়িয়াখানা। হিংস্র জানোয়ারে ভর্তি বাড়ি! উনার জানোয়ারদের ভয়েই নাকি এদিকে চোর-ডাকাত আসার সাহস রাখেনা! তবে? যে এসেছিল সে কি উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছিল আংটি টা নেবে বলে? . শ্রীবাস্তবের অনুরোধের জন্যেই ধীরুবাবু সেই মূল্যবান আংটি নিজ বাড়িতে রাখেন। তারপর........ চুরি যায় আংটি! কে চুরি করল??? ব্যাস, খেলা শুরু এইবার ফেলুদার! পরিচয় হয় বনবিহারী নামের সেই জীবজন্তু সৌখিন মানুষটার সাথে। উনার সাথেই ঘুরে ঘুরে লখনৌ দেখে ওরা। এই ঘুরে বেড়ানোর মধ্যেও বেশ কিছু ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয় ফেলুদা আর তোপসেকে। পরিচয় হয় পিয়ারিলালের ছেলে মহাবীরের সাথে। বেশ হাসিখুশি সুন্দর একটা ছেলে... ভালই লাগে ছেলেটিকে ফেলুদার। . কোত্থেকে আসে এক সন্ন্যাসী! পৌঁছে ফেলুদার হাতে এক উর্দু চিঠি, বলতে গেলে হুঁশিয়ারি চিঠি! কিন্তু হুঁশিয়ারি চিঠি ফেলুদার কাছে কেন? রহস্য কী? বেশ ভাল জট লেগে যায় এবং ধীরে ধীরে ফেলুদা আর তোপসে জড়িয়ে পড়তে থাকে ভয়ংকর এক বিপদে.... . #পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা সিরিজ মানেই জমজমাট কাহিনী! রহস্য, উৎকণ্ঠা! আর সাথে থাকে বিভিন্ন বিখ্যাত স্থানের কিছু বর্ণনা.... #বাদশাহী_আংটি বইটি পড়ে লেখকের নিপুণ হাতের লিখার ছোঁয়ায় হয়তো সেই বিখ্যাত স্থান গুলো ভাসছিল চোখের সামনে। বিশেষ করে #ভুলভুলিয়া নামক জায়গাটা আমার মনে বেশ গেঁথে আছে। ইমামবাড়ার ভেতরে একটি গোলকধাঁধা, তার নামই ভুলভুলিয়া... নবাবরা নাকি তাদের স্ত্রীর সাথে লুকোচুরি খেলতেন সেখানে। এই জায়গাটা এতই প্যাঁচানো যে গার্ড ছাড়া যদি কেউ ঢুকে তবে সে নাকি আর বের হয়ে আসতে পারেনা! যাইহোক, "বাদশাহী আংটি" বইটি ফেলুদা সিরিজের আমার বেশ পছন্দের একটা গল্প। আংটি টা কার কাছে পাওয়া যায় সেটা যখন সামনে আসে বেশ অবাক লাগে। শেষের দিকে বের হয়ে আসে একটি মৃত্যু রহস্য! এই ব্যাপারটিও বেশ অবাক করে.... সবদিক মিলিয়ে, "বাদশাহী আংটি" বইটি পাঠকদের ভাল লাগবে বলেই মনে হয়.... হ্যাপি রিডিং :)
Was this review helpful to you?
or
উফ! সত্যজিৎ রায়! কি অমর সৃষ্টি! কি অসাধারণ ! বাদশাহী আংটি অসম্ভব ভাললাগার একটি গল্প। এই গল্পটি আমি প্রথম রেডিওতে শুনি। ভারতের একটি বেসরকারি এফ এম রেডিওতে শুনি। পরবর্তীতে এইটা নিয়ে তৈরি সিনেমা দেখার সুযোগ হয়, অসাধারণ। সত্যজিৎ রায় যে কি সৃষ্টি করেছেন, আহা হা! ফেলুদা বাংলা সাহিত্যের অমর সৃষ্টি। ফেলুদাকে নিয়ে সৃষ্ট প্রত্যেকটি গল্পই অসাধারণ। প্রত্যেক গোয়েন্দা প্রিয় পাঠকের অবশ্যপাঠ্য।
Was this review helpful to you?
or
ফেলুদা সিরিজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাসটি বোধ হয় 'বাদশাহী আংটি'। কারণ সত্যজিৎ রায়ের অনেক লেখা থেকে জানা যায়, ফেলুদাকে নিয়ে একটা সিরিজ করে নিয়মিত গল্প/উপন্যাস লেখার পরিকল্পনা তার কোনোদিনই ছিল না। অন্য অনেক একক গল্পের মতই ফেলুদা আর তোপসেকে নিয়ে 'ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি' নামক ছোটগল্পটি লিখেছিলেন তিনি। কিন্তু 'বাদশাহী আংটি'ই হল সেই উপন্যাস যার মাধ্যমে লেখক সিদ্ধান্ত নেন ফেলুদাকে নিয়ে নিয়মিত লিখবেন তিনি এবং সেকারণেই এই উপন্যাসে ফেলুদাকে একদম নতুন রূপে, পরিপূর্ণ গোয়েন্দা চরিত্র হিসেবে আবির্ভূত হতে দেখা যাবে। 'ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি' গল্পের ফেলুদা ছিল নিছকই অতি বুদ্ধিমান, তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষনশক্তি সম্পন্ন, রহস্য রোমাঞ্চ বিষয়ে আগ্রহী এক যুবক। কিন্তু এই উপন্যাসের মাধ্যমে শখের গোয়েন্দা হতে পেশাদার গোয়েন্দার ভূমিকায় আরও এক ধাপ উত্তীর্ণ হতে দেখা যাবে ফেলুদাকে। কাহিনী সংক্ষেপঃ তোপসের বাবা তোপসেকে জানাল যে এবারের ছুটিতে তারা লখনৌ যাবেন। লখনৌ সম্পর্কে তোপসের ধারণা খুব একটা ইতিবাচক নয়। তাই সে ফেলুদাকেও যেতে সাধল তাদের সাথে কারণ ফেলুদা যেখানেই যায় সেখানেই নাকি তাকে ঘিরে অনেক রহস্যময় ঘটনা ঘটে! ফেলুদা তোপসেদের সাথে যেতে রাজি হল। তারপর পৌঁছে গেল তারা লখনৌ, গিয়ে উঠল ধীরু কাকার বাড়ি। সেদিনই শ্রীবাস্তব নামে এক স্থানীয় হাড়ের ডাক্তার এসে জানালেন তার বাড়ি নাকি 'ডাকু' হানা দিয়েছিল। কারণ? তার বাড়িতে আছে এক বাদশাহী আংটি। নিজের বাড়িতে নিরাপদ না বুঝে ধীরুকাকার কাছে আংটিটা রেখে গেলেন তিনি। তিনি যাওয়ার পর ফেলুদা জানাল, একটা গাড়ি নাকি 'ফলো' করছিল শ্রীবাস্তবকে! পরেরদিন লখনৌয়ের কিছু দর্শনীয় স্থানে গেল সবাই। পরিচয় হল বনবিহারীবাবুর সাথে যার বাড়িতে একটা ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানা আছে! সেই চিড়িয়াখানা দেখতে যাওয়া হল। বাড়ি ফিরে দেখা গেল, এক রহস্যময় সাধুবাবা এসেছিল বাড়িতে আর তারপর ধীরুকাকা জানালেন, বাদশাহী আংটি হাওয়া! জমে উঠল কাহিনী। পুলিশে খবর দেওয়া হল। এখন ফেলুদার সামনে চ্যালেঞ্জ, সে কি পুলিশের আগে রহস্যের সমাধান করতে পারবে? ফেলুদাকে কিন্তু এ নিয়ে খুব একটা চিন্তিত মনে হল না। অথচ তলে তলে সে তদন্ত করে বের করে আনতে থাকল অনেক অজানা তথ্য যেগুলোর বড় রকমের প্রভাব রয়েছে এই রহস্যে। আর সে কারণে হুমকি দেয়া চিরকুট পেল ফেলুদা। এমনকি তার ওপর হামলাও হল। কিন্তু তাতে কি দমে যাবে নাকি আংটি চুরির তদন্ত চালিয়ে যাবে? কিন্তু আসলে কি সে আংটি সত্যিই চুরি হয়েছে? কাহিনীর শেষে এসে জানা যাবে রহস্যের যে জট, তার অনেকটাই লাগিয়েছে ফেলুদা নিজেই এবং এর মাধ্যমেই ফাঁদে ফেলে সে অপরাধীকে ধরতে চাচ্ছে। একটা পর্যায় ফাঁদে পড়ল সে নিজেই। তবে ফাঁদ কেটে বেরুবার ব্যবস্থাও আছে ফেলুদার। সেটা কি ঠিক ভাবে প্রয়োগ করতে পারবে সে? কাহিনী থেকেই বোঝা যাচ্ছে, 'ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি'র মত কোন ছেলেমানুষি রহস্য নয়, এই উপন্যাসে ফেলুদা জড়িয়ে পড়বে একটি হার্ডকোর রহস্যের জালে। কিন্তু তারপরও ফেলুদা যেভাবে তার কুল অ্যান্ড বোল্ড অ্যাটিচিউড বজায় রেখে রহস্যের শেষ সীমানায় পৌঁছাবে, তা সত্যিই অসাধারণ। আর মূলত এই অসাধারণত্বের ফলেই 'বাদশাহী আংটি' প্রথম ফেলুদা চরিত্রের প্রতি আকৃষ্ট করেছিল পাঠককে। তাই ফেলুদার সত্যিকারের গোয়েন্দা হয়ে ওঠার সাক্ষী হতে হলে এই এই উপন্যাসটি পড়তেই হবে।