User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
এই উপন্যাসটি শেষ করার পর আমি কিছুক্ষণ চুপ করে বসে ছিলাম। কারণ, রায়হান মাসুদের ভাষা নয়, বরং তাঁর তীক্ষ্ণ উপলব্ধির ধারায় কেটে গেছে আমার নিজের বিশ্বাসের অনেক স্তর। বইটির প্রেম কেবল রোমান্টিক নয়—এটি তর্ক, আদর্শ, বিশ্বাসঘাতকতা এবং দুঃখের এক জটিল রূপ। নীহারিকার চরিত্রটিকে প্রথমে যেভাবে দেখি—একজন প্রতিবাদী, আদর্শবাদী নারী—তা ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ে বাস্তবতার মুখে। আর ঠিক তখনই অনুভব করি, ভালোবাসা কখনও কখনও সত্যের চেয়েও নির্মম হতে পারে। এই বইয়ের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো—এটি কোনো পক্ষ নেয় না, বরং পাঠককে চুপচাপ আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়। কে ঠিক, কে ভুল—তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হলো: আমরা কতটা সৎ নিজ বিশ্বাসে? শেষ পৃষ্ঠায় এসে মনে হলো, ভালোবাসার কারণ গোনা যায় না, কিন্তু ব্যথার উৎস খুঁজে নিতে হয়। এবং সেই খোঁজেই রায়হান মাসুদের কলম পাঠককে ঠেলে দেন অন্ধকার-আলো মিশ্র এক বৃত্তের দিকে।
Was this review helpful to you?
or
আমি পাঠক হিসেবে নতুন। বাট এটা আমার পড়া এখন পর্যন্ত সেরা একটা উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
"প্রেম ভালোবাসা মানেই শরীরী মোহ। ছেলেগুলো প্রভাবক, আর মেয়েগুলো বিক্রিয়ক। উৎপাদ হলো এক সাগর হতাশা, দুঃখ আর বিশ্বাসঘাতকতা!" -রূপম মির্জা বইঃ ১৭ টা কারণে তোমাকে ভালোবাসি লেখকঃ রায়হান মাসুদ জনরাঃ থ্রিলার, বাস্তবধর্মী রেটিং ????? সাম্প্রতিক সময়ে আত্মহত্যাকারী অতুল সুভাষের নাম শুনেছেন? ব্যাঙ্গালুরু তে সুইসাইড করেছে ৩ কোটি টাকার অ্যালিমোনাই এর জন্য। কিংবা ৪ বছর আগে বাংলাদেশের ডঃ আকাশ এর আত্মহত্যার ঘটনা? যার স্ত্রী মিতু পরকিয়া করতো, কিন্তু উচ্চ দেনমোহরের ভয় দেখিয়ে ডঃ আকাশকে দমিয়ে রাখতো? পরে সুইসাইড করে ডঃ আকাশ। দুজনের ক্ষেত্রেই তাদের স্ত্রীরা তাদের মানসিক নির্যাতন ও পরকিয়া করতো। সবশেষে নারী নির্যাতন মামলা দিয়ে জীবনটা শেষ করে দেয়। উভয় ক্ষেত্রেই পুরুষ বিনা দোষে দোষী হয়ে সমাজের লাঞ্চনা সহ্য করতে না পেরে সুইসাইড করে। সাথে পরিবারটাও শেষ হয়ে যায়। কিন্তু সমাজে সেই পিশাচ নারীগুলো কিছুদিনের মধ্যে পপুলার হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রূপ বেঁচে ইনফ্লুয়েন্সার হয়। যেমন মিতু এখন আমেরিকায়। দিব্যি জীবন কাটাচ্ছে। সমাজের তৈরি আইন একরোখা ভাবে শুধু নারীদের ভিক্টিম ভেবে তৈরি করা। আর এই আইনের সুযোগ নিয়ে শেষ করে দিচ্ছে নারীবাদী ও ধান্দাবাজরা হাজার হাজার পুরুষের জীবন। ফাঁদ পেতেছে কাবিন ব্যবসায়ী নারী নামক বে*রা! এই সমাজে যারা সত্যিকারের ধর্ষক বা অপরাধী, তারা রাজনৈতিক ছাতার নিচে দিব্যি ঘুরে বেড়ায়। মানুষ জাজমেন্টাল হয় তাদের ব্যাপারে যে আসলেই সব সত্য কিনা? কিন্তু যদি আপনি নিরপরাধ ও স্বাভাবিক ভদ্র হোন, মানুষ আপনাকেই দোষী মানবে। বিচার বিশ্লেষণার উর্ধ্বে রেখে আপনাকে ট্যাগ দিয়ে দিবে। "সমাজ একটা অলস মষ্তিষ্কওয়ালা মানুষ।" বর্তমানের ভয়ানক নারীবাদ নামক ক্যান্সারগুলোকে ধ্বংস করে সত্যিকারের বিচার তৈরি করতে সমাজে একজন রূপম মির্জার প্রয়োজন। খুব বেশিই প্রয়োজন। কে এই রূপম মির্জা? চলুন, একটু গল্প করি বাস্তবতার। নারীবাদী নামক বর্তমান সময়ের অসভ্য উলংগ সভ্যতাকে প্রমোট ও পারিবারিক ধ্বংসের যেই মাতোয়ারা চলছে তা শুধু ভয়নাক না। একটা ম্যাসাকারের মতো এটা। বর্তমান নারীবাদ নামক ক্যান্সার এতোটাই ভয়ানক যে এর ফলে প্রতি ১০০০ টা নারী নির্যাতন ঘটনার মধ্যে ১ টা সঠিক সত্য বিচার হয়, বাকি ৯৯৯ টাই হয় মিথ্যা, নিরপরাধ পুরুষের জীবন ধ্বংস করার জন্য। কিন্তু সকল নারীবাদীই কি সারাটাজীবন ধরেই খারাপ ছিলো, নারীবাদী ছিলো? নাকি তাদের অতীত তাদের বাধ্য করে পুরুষকে ঘৃণা করতে। আর নারীবাদী সংঘের সবার উপরের পদে থাকা মানুষগুলো কি আদৌ নারীবাদী নাকি নারীর সহায়তার নামে পুরুষ-নারী উভয়ের পরিবার ও জীবনের বিনিময়ে চলে কোটি কোটি টাকার লোটপাট ব্যবসা? প্লটঃ বর্তমান সময়ের এক তীব্র পুরুষবিদ্বেষী উগ্র নারীবাদী লেখিকা নীহারিকা হান্নান যার ১৬ বছর পূর্বে পুষে রাখা রাগ ও তার প্রতিদ্বন্দী রূপম মির্জা যিনি সপুংসকের প্রতিষ্ঠাতা এবং এক তীব্র নারীবিদ্বেষী এবং যার জীবনেও রয়েছে ১৬ বছর পূর্বে ঘটে যাওয়া এক অসহায়ত্বের কষ্ট নিয়ে আগানো এক দূর্দান্ত বাস্তবিক গল্পের অনুপ্রেরণায় বর্তমান সমাজপ্লটকে তুলে ধরা হয়েছে। বিশ্বাস, অবিশ্বাস, নীতির যুদ্ধ আর অস্তিত্ব ও প্রেম রক্ষার এক অবিশ্বাস্য দাবা খেলায় শেষ হবে কে আর জয় হবে কার? উপরে অতুল ও ডাঃ আকাশ তো মাত্র বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তবে এই গল্পের শেষটায় শুধু একটা জিনিসই বলতে হয়। হ্যাপি এন্ডিং কখনো জীবনে ঘটেনা। এটা শুধুই প্রেম রসে ভরা ফ্যান্টাসিতে হয়। আপনি যদি একজন তীব্র থ্রিলার, বাস্তববাদী উপন্যাস প্রেমী ও সত্য ঘটনার অবলম্বনে পড়া গল্প পড়তে চান তবে এই বইটি মাস্ট মাস্ট মাস্ট রিডিং লিস্টে থাকার মতো বই।
Was this review helpful to you?
or
#১৭টা_কারণে_তোমায়_ভালোবাসি "তোমার চোখেতে তোমারি স্বপন, আমি সেই স্বপনে তোমার আপন। আমি জানি না কেন মনে হয়, মনের রাগ কবে প্রেমে বদলায়....।" ( নীহারিকা হান্নানের ডায়েরি থেকে ) "আমি সেই আকাশের নিচে বসে আমার জানালার পাশে এই টেবিলে টেবিল ল্যাম্প জ্বালিয়ে তোমার জন্য লেখা ডায়েরি হাতে বসে। পাশে রাখা একটি লাল লিপস্টিক ও একটি টিপের পাতা। " ★কথা বলছি লেখক রায়হান মাসুদ এর লেখা তৃতীয় একক বই "১৭টা কারণে ভালোবাসি"।বইটি মূলত একটি রোমান্টিক ঘরানার সাইকোলজিকাল থ্রিলার। উপন্যাসটি মোট ১৭টা অধ্যায় নিয়ে লেখা হয়েছে। যার মধ্যে ১৬ টি অধ্যায়েই গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নীহারিকা হান্নানের দৃষ্টিতে লেখা। ★পাঠ প্রতিক্রিয়া: প্রতিটা মানুষের কাছেই নিজের নীতি শ্রেষ্ঠ এবং নিখুঁত মনে হয়। বইটির মূল বিষয় হচ্ছে নারীবাদ এবং পুরুষবাদ এই দুই নীতি নিয়ে। এই দুই নীতির বাহক হিসেবে কাজ করেছে বাস্তব কিছু সত্য ঘটনা, এবং কিছু সত্য চরিত্র। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নীহারিকা হান্নান মূলত একজন নারীবাদী লেখক এবং তার পাশে আছে গল্পের অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র রুপম মির্জা যে কিনা পেশায় একজন নারীবিদ্বেষী লেখক। দুজনই উপন্যাসটিতে তাদের লেখার জোরে সমাজের বিভিন্ন নারী নির্যাতন এবং সেই নারী নির্যাতন আইনের সহায়তায় কিছু পুরুষ কিভাবে নির্যাতিত হয় সেই সকল দিক তুলে ধরেছেন লেখক । বইটি শুরুর দিকে কাহিনী খুবই ধীর স্থিরভাবে এগিয়ে নিয়েছে লেখক ১ম- ১২ তম অধ্যায় কাহিনি তেমন হাইপ তুলতে পারেনি বলে আমার মনে হয়েছে। গতানুগতিক লেখাই মন হচ্ছিল কিন্তু ১৩ম অধ্যায়ের শুরু থেকেই হঠাৎ করে যেনো কাহিনীর মোড় ঘুরতে শুরু করলো। এখান থেকে মনে হলো বইটা রেখে আর এক মুহূর্ত ওঠা সম্ভব নয়। তারপর? তারপর আর কি বিভিন্ন ঘটনা দূর্ঘটনার মধ্য দিয়ে কাহিনী এগোতে থাকলো এবং একপর্যায়ে এমন একটি সমাপ্তির কাছে নিয়ে গেল যা পাঠক হয়ত বইটির শুরুতে চিন্তাও করতে পারেনি। সবমিলিয়ে বইটি শেষ করার পর আমার মনে অদ্ভুত মিশ্র এক অনুভূতি হচ্ছে, যাবলার মতো না। ★নীহারিকা হান্নান : এই গল্পের নায়িকা, ভিলেন,বা কেন্দ্রীয় চরিত্র যাই বলা হোক তা হবে এই চরিত্রটি। স্বভাবে খুবই কঠোর,একরোখা,স্পষ্টভাষী এবং সর্বোপরি নারীবাদী একজন লেখক। যেকিনা নিজের কলমের জোড়ে অনেক বড় বড় কেসও সমাধান করে দেন। কিন্তু নিজের জীবনের এক কালো অতীত তার বর্তমানকে সবসময় দংশন করতে থাকে। ★রুপম মির্জা : একজন সাধারন এলেবেলে ছেলে এই চরিত্রটি যে নিজের চেষ্টা ও মেধাকে পুঁজি করে সপুংশক নামের এক সংগঠন গড়ে তোলে। যার মূল লক্ষ্য সমাজের নির্যাতিত পুরুষদের ন্যায় পায়িয়ে দেয়া। সমাজের তথাকথিত আইন এবং আমাদের নষ্ট সিস্টেমের বিরুদ্ধে লড়াই করাই রূপমের চরিত্রে অন্যতম বৈশিষ্ট্য। নীহারিকা আর রুপম ছাড়াও কাহিনির প্রয়োজনে বিভিন্ন চরিত্রের সমাগম ঘটেছে উপন্যাসটিতে, ভবানী মল্লিক, হুমায়রা, তামিম, স্মৃতি তাবাসসুম আরও অনেকেই। ★প্রিয় কিছু সংলাপ: ১. ছত্রাকের মত লেখক গজায় এখন দেশে। সবাই হুমায়ূন আহমেদ হতে চায়। ২. তোমাকে ঘৃণা করার প্রথম কারণটা হয়ত তোমাকে ভালোবাসার প্রথম কারণ হলেও হতে পারে। ৩. মানুষ সব সময় মনে রাখে অসাধারণ কিছুকে। হয় সুন্দর হয় কুৎসিত। অথবা ব্যতিক্রমী ব্যবহারকে হয় খুবই অমায়িক,বা খুবই অভদ্র কাউকে। ৪. তোমার নীতি আমার নীতির সম্পূর্ণ বিপরীত,তোমার গল্পের নায়ক আমার গল্পের ভিলেন, কিন্তু তাও তোমার নীতি না থাকলে আমার নীতি পূর্ণতা পেত না। ৫. আপনার চরিত্রদের যারা সম্মানের যোগ্য তাদের আমি সম্মান করব। কিন্তু আপনি ভুলেও কোনো পুরুষকে সম্মান করবেন না। এটাই আমাদের পার্থক্য। আমি মানুষ আপনি নারীবাদী...। ৬. নারীবাদ মানে পথে-ঘাটে মেয়েদের সিগারেট খাওয়া না। নারীবাদ মানে অসভ্য পোশাক-আশাক না। নারীবাদ মানে কোন ধর্মকে আঘাত না।নারীবাদ মানে নারীদের কোন অপরাধ নেই সেটা মানা না। ৭. মানুষ সত্যকে যে সুন্দর বলে এটা ঠিক না। সত্য কুৎসিত, তাই মানুষ সত্যকে পছন্দ করে না। মিথ্যা সুন্দর, তাই মানুষ মিথ্যা নিয়েই নির্ঝঞ্ঝাট জীবন চায়। ৮. বর্তমানে বাংলাদেশের লেখার গুণের চেয়ে উটকো জনপ্রিয়তার মূল্য বেশি। আগে মানুষ লিখে জনপ্রিয় হতো। এখন জনপ্রিয় হয়ে লেখে। ৯. প্রেম ভালোবাসা মানেই শরীরীমোহ! ছেলেগুলো প্রভাবক আর মেয়েগুলো বিক্রিয়ক। উৎপাদক হল এক সাগর হতাশা দুঃখ আর বিশ্বাসঘাতকতা! ১০. এ সমাজে নিরাপরাধ ধর্ষকদের জায়গা নেই। আমাকে শেষ করতে এসো না...।তোমাকে শেষ করতে বাধ্য করো না... ★ সবশেষে বলব লেখক এর প্রথম রোমান্টিক সাইকোলজিকাল থ্রিলার হিসেবে বইটি ভালো লেগেছে। আশাকরি লেখক আরও রোমান্টিক জনরার বই আমাদের উপহার দিবে সামনে। বই: ১৭টা কারণে তোমায় ভালোবাসি লেখক: রায়হান মাসুদ প্রকাশনী: কুহক প্রচ্ছদ : যাওয়াদ-উল-আলম মলাট মূল্য : ৪৬৫ টাকা
Was this review helpful to you?
or
বইটি বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। ❤️❤️❤️
Was this review helpful to you?
or
"বর্তমানে বাংলাদেশে লেখার গুণের চেয়ে উটকো জনপ্রিয়তার মূল্য বেশি। আগে মানুষ লিখে জনপ্রিয় হতো, এখন জনপ্রিয় হয়ে লিখে।" বইতে এই ক'টি লাইন পড়ে বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে ভাবছিলাম। ভীষণ তিক্ত কিছু সত্যি লেখক তুলে এনেছেন বইটিতে। ও হ্যাঁ, বলছিলাম রায়হান মাসুদের লেখা '১৭টা কারণে তোমায় ভালোবাসি' বইটি নিয়ে। বইয়ের নাম শুনে মনে হয় হয়ত রোমান্টিক প্রেমের কোনো বই। আমি মনে মনে ভাবছিলাম ওরে বাবা, ভালোবাসে, আবার সেটার কারণও নির্দিষ্ট করে দেওয়া! এ আবার হয় নাকি! সেই আগ্রহ থেকেই মূলত বইটি পড়তে নেওয়া। কিন্তু পড়তে গিয়ে ধারণাই বদলে গেল! রোমান্টিকতার সাথে সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারের এক অদ্ভুত মিশেল। "তোমাকে ঘৃণা করার দ্বিতীয় কারণ হয়ত তোমাকে ভালোবাসার দ্বিতীয় কারণ হলেও হতে পারে।" নীহারিকা হান্নানের বলা এ কথাটির সাথে সাথে চলুন ঘুরে আসি নীহারিকা আর রূপম মির্জার জগত থেকে। প্রথমেই কাহিনী সংক্ষেপটা বলে নিচ্ছি। 'রাশভারী' মাসিক পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও সেই সাথে জনপ্রিয় লেখক নীহারিকা হান্নান, যে কিনা ভীষণ উগ্র নারীবাদী। তার লেখার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন নারী নির্যাতনের ঘটনা ফুটে ওঠে। হঠাৎ এক উগ্র নারীবিদ্বেষী লেখক রূপম মির্জা তার লেখা গল্পের মাধ্যমে প্রমাণ করেন, নীহারিকা হান্নানের একই নারী নির্যাতন বিষয়ক লেখাগুলোর অপরাধীরা আসলে নির্দোষ। শুরু হয় দুজনের অস্তিত্বের লড়াই। কাহিনীর মোড় ঘুরে যায়, যখন রূপম মির্জা নীহারিকা হান্নানকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়; সেই সাথে এটাও বলে তাকে একবছর সময় দিতে। এক বছর পর সে নীহারিকাকে তাকে ভালোবাসার পাঁচটি কারণ দিবে! এটা কি রূপম মির্জার কোনো প্ল্যান? নাকি সে সত্যিই নীহারিকাকে ভালোবাসে? বইটির প্রথম ষোলোটি অধ্যায় লেখক নীহারিকা হান্নানের লেখা ডায়েরি থেকে দেওয়া হয়েছে অর্থাৎ একজন নারীর দৃষ্টিকোণ থেকে এগিয়ে গিয়েছে উপন্যাসের কাহিনী। এ হিসেবে এখানে শুধু তার নিজের জায়গা থেকে ঘটনার বিন্যাস দেখানোর কথা। কিন্তু লেখক একইসাথে একজন পুরুষের দৃষ্টিকোণ থেকেও ঘটনাগুলো ব্যাখ্যা করেছেন। একই ঘটনা একেকজনের জায়গা থেকে একেক রকম, মনে হবে প্রত্যেকের জায়গায় সেই ঠিক। লেখক রায়হান মাসুদ এই বিষয়টি বেশ চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। তবে সত্যি বলতে এই অধ্যায়গুলোতে নীহারিকা হান্নানের নিজের সাথে নিজের মানসিক টানাপোড়েনের অংশগুলো কিছুটা বিরক্তি লেগেছে। প্রতিটি অধ্যায়ে ঘটনাগুলো দারুণভাবে এগিয়ে গিয়েছে কিন্তু নীহারিকার ভালোবাসা, সেটা প্রকাশ না করার দোটানাটা বারবার আসাতে মনোযোগ নষ্ট হয়েছে। উপন্যাসে গতিময়তা এসেছে ১৩ অধ্যায়ের পর। হুট করে একের পর এক ঘটনা আপনাকে আটকে ফেলবে বইতে। 'রাশভারী' পত্রিকারই আরেক লেখক হুমায়রা খু*নের মাধ্যমে কাহিনী চলে যায় অন্যদিকে। ঘটনার পিছনেও থাকে ঘটনা। আদতে আমরা চোখের সামনে যা দেখি তা সবসময় সত্যি হয় না। নিজের স্বার্থের জন্য মানুষ কী না করতে পারে! বই, প্রকাশনী সাহিত্যজগতের অংশটা জড়িয়ে ছিল উপন্যাসটিতে। এজন্য পড়তে বেশ ভালো লেগেছে। আর সাহিত্যজগতের পেছনের গল্পগুলো কতটা ভয়ংকর হতে পারে তাও উঠে এসেছে লেখকের বর্ণনায়। কারও কাছে এই জগতটা হয়ত জনপ্রিয়তার, তো কারও কাছে শুধুই ব্যবসার! সাহিত্যের রস আস্বাদন ক'জন করতে চায়! সবচেয়ে যে বিষয়টি আমাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছে তা হলো উপন্যাসটির প্লট। নারীবাদ, পুরুষবাদের মতো এত বিতর্কিত বিষয় নিয়ে কী সাবলীলভাবেই না তিনি লিখলেন! রীতিমতো সাহসের পরিচয় দিয়েছেন লেখক এই প্লটটি ফুটিয়ে তুলতে। নামটা রোমান্টিক হলেও লুতুপুতু প্রেম একদমই ছিল না। বরং নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইতে নীহা আর রূপম এগিয়ে গিয়েছে সমানভাবে। ঘৃণা, ভালোবাসা, বিশ্বাস-অবিশ্বাস, খু*ন, রহস্য সবকিছুর ছোঁয়াতে লেখক রায়হান মাসুদের প্রথম সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার (প্রকাশিত বই হিসেবে তৃতীয়) '১৭টা কারণে তোমায় ভালোবাসি' আপনাকে দেবে একদম ভিন্ন কিছুর স্বাদ। শেষ করছি উপন্যাসে নীহারিকা হান্নানকে নিয়ে রূপম মির্জার লেখা গানের কিছু অংশ দিয়ে, "তুমি সাথে থাকো যখন, সব দুঃখ মিলিয়ে যায়। তুমি কাছে আসলে পরে, ঘৃণা প্রেমে বদলে যায়।" সংক্ষেপে: বই: ১৭টা কারণে তোমায় ভালোবাসি লেখক: রায়হান মাসুদ জনরা: রোমান্টিক সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার প্রকাশনী: কুহক কমিক্স এন্ড পাবলিকেশন প্রচ্ছদ: যাওয়াদ-উল-আলম মুদ্রিত মূল্য: ৪৬৫ টাকা।