User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
কিছু কিছু গল্প পড়বার পর মনে হয় আসলে এই গল্পের প্লটটা লেখকের মাথায় আসলো কীভাবে! এই গল্পে তো আমাদের চেনাপরিচিত দুনিয়ার উপকরণ থেকেও গল্পটা দূর কোনো জাদুবাস্তব জগতের মনে হয়। আর এই একেকটা গল্প জন্ম দেয় গভীর কৌতূহল বোধের। এরপরের গল্পে কী আছে? কীভাবে বলেছেন লেখক গল্পটা? হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালার বাঁশির সুরে হাঁটতে থাকা অবোধ শিশুর মতো আমি উল্টে যাই পাতার পর পাতা৷ হামিম কামালের গল্পে জাদুকরের গোপন শিশি কাত হয়ে সন্ধ্যা বেরিয়ে আসে। সেই সন্ধ্যায় রূপকথার মতো দোতলা বাড়ি আর রেস্তোরাঁয় সমান্তরাল জগতে পৌনঃপুনিকভাবে ঘুরতে থাকে শ্যামশ্রী রায় আর সুহানের গল্প। তীব্র জ্যামে আটকা পড়া বাসের সিট থেকে উধাও হয়ে যায় বুড়ো আসরফ। শুধু সিটের ওপর পড়ে থাকে তার রহস্যময় কাঁচদণ্ড। তারপর সেই কাঁচদণ্ডের সূত্রধরে আমরা গঙ্গাঋদ্ধির আদিবাসীদের মতো কল্পনার হাতিকে ইঁদুর বানাতে থাকি,আর সেই হাতিকে পোষ মানিয়ে সাজাতে থাকি পুরোদস্তুর সেনাবাহিনী। কল্পনার ডানায় ভর করে মস্তিষ্ক থেকে মস্তিষ্কে বার্তা পাঠাতে পাঠাতে আমরা হাজির হই স্নাত সকালের রমনা পার্কে। রমনা পার্কের মাঝ দিয়ে ছুটে যায় রূপালী নদীর ট্রেন। চুইং গামে আটকে থাকা ডানাকাটা পরীর বাঁশি শুনে ভেঙে যায় ঘুম। শ্রীপুরের যাত্রী হয়ে আমরা হারিয়ে যাই আদিম ঘ্রাণে ভরা এক বনে। মুখোমুখি হতে থাকি নিজের সত্ত্বার। সেই ভুতুড়ে বনকে ঝিঁঝিঁপোকারা খইয়ের মতো ফোটাতে থাকে। আর আমাদের মনে বিস্ময় জাগে, ক্ষুদ্র কীট কী করে এমন শব্দ তৈরি করতে পারে। যানপ্রেতের বর গল্পটা লেখক কীভাবে লিখলেন আমার জানার খুব আগ্রহ। হয় উনি মতিঝিল টু সেকশন ১০, সেনপাড়া পর্বতা পর্যন্ত বাস যাত্রার অংশটুকু সম্পূর্ণভাবে কয়েকবার গিয়ে গিয়ে ছোট ছোট নোটস করেছেন.... নয়তো ওই কল্পনাতে নিজেকে ওই জায়গায় নিয়ে চলে গিয়েছেন। আর সবারটা জানি না। আমার কাছে ক্রিয়েটিভিটি বিষয়টা অনুভবের আরেক নাম। লেখক হয়তো যেটা অনুভব করতে পারেন, বাস্তব হোক বা অবাস্তব হোক সিনগুলোর মাঝে ঢুকে যেতে পারেন। ধরেন, আমি কল্পনার করলাম আপনারা কেউ একটা কফিশপে বসে আছেন। একটা বিস্ত্রো। স্টিমড কফি ছেড়ে থেকে থেকে অপেক্ষার ধোঁয়া মিলিয়ে যাচ্ছে। আমি সিনটা কল্পনার করলে সেই বিস্ত্রোটার ইন্টেরিয়র ডিজাইন, ওয়েটার, কাউন্টারে ক্যাশ সামলানো লোকটা, টেবিলের কালার,কাউচগুলো কতটা নরম, কফি কতটা গরম, টেম্পারেচার কত,আশেপাশের মানুষজন আর তাদের পরনের পোশাক,তাদের খুঁনসুটি,ঠোঁটে লেগে থাকা হাসি,ছেঁড়া ছেঁড়া আলাপ সবকিছু দেখতে পাই, শুনতে পাই। লেখক যেভাবে বাসযাত্রার পার্টটুকু লিখেছেন সেটা অনেকটা কোনো অন্ধশিল্পী শুধু কল্পনার চোখে কাউকে দেখে তার পোর্ট্রেট আঁকার মতো। এতো সূক্ষ্ম অথচ আমাদের মতো নরমাল মানুষদের এমন অনুভব খুব কম হয়। এই মতিঝিল টু সেনপাড়ার রাস্তাটা অনেক অনেকবার অতিক্রম করেছি বলেই মনে হচ্ছে, লেখক খুব সম্ভবত নিজেকে ওই কল্পনার আসনে বসিয়েছিলেন,বাস্তবতার সাথে রঙতুলি ঘষে ছবি এঁকে এঁকে গল্পটা লিখে গেছেন। পরাবাস্তবতা,জাদুবাস্তবতায় মোড়া এই বইয়ের সবথেকে ভালো লাগার গল্পগুলো হলো যানপ্রেতের বর, প্রেমিক, পাঁচকন্যা পরিবার,সুরেলা, এক সন্ধ্যায় শ্যামশ্রী রায়। যে জগতে প্রেমিকার শ্বাসের বাতাস টেনে হৃদয় ছোঁয়া বাঁশির উচ্চগ্রামের সুরে কেঁপে উঠে বাতাস,সে গল্পের জগতে বারবার ফিরতে ইচ্ছে করে। রিভিউ: অনার্য র্অক সংগ্রহ: গুডরিডস