User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
satisfied
Was this review helpful to you?
or
অসম্ভব ভালো
Was this review helpful to you?
or
Good service
Was this review helpful to you?
or
best service
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই
Was this review helpful to you?
or
good book indeed. best of luck.
Was this review helpful to you?
or
Great service!
Was this review helpful to you?
or
?
Was this review helpful to you?
or
বানান ভুল থাকে কিছু কিছু জায়গায়।পেপার কোয়ালিটি খুব বাজে।
Was this review helpful to you?
or
বাকুলিয়া থেকে শুরু বাকুলিয়ায় এসেই শেষ। পড়ে অন্তত্য ভাল লাগছে।
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বইI জঘন্য ছাপা তে বইটি পড়ার স্বাদ নিতে কষ্ট হয়েছেI
Was this review helpful to you?
or
খুব ভালো
Was this review helpful to you?
or
eagerly waiting for this book
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
অনিন্দ্য সুন্দর।
Was this review helpful to you?
or
যে বই বারবার পড়তে ইচ্ছে করে।পড়ে মনে হয় এ তো নিজেরই গল্প।মনে হয় আমাকে নিয়ে লিখা।
Was this review helpful to you?
or
Very good
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের কাগজের কোয়ালিটি খুবই খারাপ।
Was this review helpful to you?
or
" সংশপ্তক " শব্দটার অর্থ জানা ছিলো না । অন্তর্জালে খোঁজ নিয়ে জানা গেলো। নির্ভীক। আজ শেষ পাতাটুকু উল্টিয়ে রেখে মনে হলো বইটার নাম এছাড়া বুঝি ভিন্ন কিছু হওয়ার ছিলো না। সেই সাথে একই সাথে মনে প্রশ্ন জাগে নির্ভীক আসলে কে? মালু? কথায় কথায় ছোট বয়সে সবার জন্যে চোখের পানি ফেলা মালু, যে জীবনের নানা ঘাত প্রতিঘাতের মুখোমুখি হয়ে দাড়ায় এক ফিনিক্স পাখির প্রতিরুপ হয়ে, যে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে থাকা নিজের ভগ্নাবশেষ থেকে আবারও মহাশূণ্যে ডানা মেলে। একবার, দুইবার... বারবার! মালুর জীবনের এই বিনির্মান, স্বপ্ন, স্বপ্নভঙ্গ, সকল বাধাবিঘ্ন, প্রতিকূলতার উজানে দাড়িয়ে সংগ্রাম করে এগিয়ে চলার এই গল্প কি শাশ্বত মানবজীবনেরই আখ্যান নয়? মেঝো ভাই আর সেকান্দর মাস্টার? অকারণে সর্বস্ব ত্যাগ করে কী এক ঘোর লাগা চোখে যারা ছুটে বেড়ায় সর্বত্র? তারা রুখে দাড়াতে জানে অন্যায়ের, আবার আপ্রাণে এগিয়ে আসতে জানে আর্তের।ও চরিত্রে, প্রেক্ষাপটে, জীবনের গন্ডি আর বাস্তবতায় দুজনের মাঝে অমিল অনেক, কিন্তু কোথায় যেন তারা আসলে একই মানুষ। সংশপ্তক মানুষের একই মনেরই দুই পৃথক অংশের প্রতিরূপ। সন্ন্যাস আর সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি। কিংবা রাবু? একটু একটু করে ক্ষয়ে যেতে যেতেও যে কখনো জ্বলতে জানে এক মুঠো জোনাকের পেলব আভার মতো, কিংবা কখনো মশালের আগুন হয়ে; যখন যেমন দরকার ... রাবু যেন ম্রীয়মান হয়েও সরব, ক্ষুরধার হয়েও কোমল। প্রতিকূলতার মাঝে সে কখনো কখনো নতজানু হলেও এগিয়ে গেছে আপন মনে, মুখ থুবড়ে পড়ে নি। বলা উচিত হুরমতী বুয়া, লেকুর কথাও.. জীবন এদের কাছে কখনও পুষ্পিত সৌরভে ধরা দেয় নি, বরং এগিয়ে এসেছে বিকট ক্লেদ, ক্ষুধা আর অত্যাচারিতের রূপে। এরাও অবলীলায় জীবনের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে জীবনের মতো করেই। লেকু তাই নির্মম ভাবে বউকে পেটায় জান্তব বোবা রাগে, আবার তাকে জড়িয়ে ধরে অনুতপ্ত হয়, পরমুহূর্তে তা ভুলেও যায়। হুরমতী ভরা মজলিশে ব্যভিচারের একপেষে শাস্তি নেয় পরম অবহেলায়, কিন্তু দ্বিচারিণী সমাজের চোখ কলুষ যে জীবন, তা থেকে সে বেরিয়ে আসে না। ভেসে বেড়ায় শিকড়বিহীন জলজের মতো। এরা সবাই মচকেছে, কিন্তু কখনো ভাঙ্গে নি। মানবজনমের কাঙ্খিত প্রতিরূপ এমনই। খলনায়ক রমজানও তো আক্ষরিক অর্থ বিবেচনায় সংশপ্তক নয়। ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ শক্তি হয়ে ওঠা রমজানের অপ্রতিরোধ্যতার কাছে অনেক শুভশক্তিই তো পরাজিত হয়। অনুভব করি সংশপ্তক একক কোন চরিত্র নয়, সবাই। সামষ্টিক এবং একক, দুইভাবেই। ...... তবুও কিছু কথা বলতেই হয়। শহীদুল্লা কায়সারের সংশপ্তক যেন কিছুটা শহুরে মানুষের চোখে দেখা গ্রাম। ঔপন্যাসিক চরিত্রগুলোর সাথেও সুবিচার করেন নি অনেকাংশেই। তাদের জীবনের পূর্ণাঙ্গ চিত্র তিনি আমাদের দেন নি, দিয়েছেন বিক্ষিপ্ত ছাড়া ছাড়া ছবি। তাই হুট করে বইয়ের পাতা থেকে সুপরিচিত কোন চরিত্রকে সরিয়ে দিয়েছেন এক লাইনেই, ধীর মন্থর গতিতে এগোনো কাহিনী পরম্পরাকে কয়েক পাতার ব্যবধানে বেখাপ্পা ভাবে টেনে নিয়ে গেছেন দীর্ঘপথ। অস্পষ্ট সে পথে হেঁটে পাঠক কিছুটা খেই হারাবেন। বোধকরি কিছুটা বিরক্তও হবেন। পাঠককে দোষ দেয় যায় না, কারণ এতো বৃহৎ প্রেক্ষাপটের উপন্যাসে এমন সুর কেটে দেওয়া সংক্ষিপ্ততা বিরক্তির উদ্রেক করারই কথা। তবে এমনটা ঘটার দায় যতোটা লেখকের, তারচেয়ে বেশি সম্ভবত প্রকাশকের। এর আঁচ পাওয়া যায় শুরুতে লেখকের সংক্ষিপ্ত ভুমিকাতে। তিনি সেখানে পরোক্ষভাবে অনুযোগ করেছেন বড় উপন্যাস ছাপাতে প্রকাশকদের অনীহার কথা। সেজন্যেই হয়তো মাঝেমাঝেই ছন্দপতনের সুর। তাই কিছুটা অতৃপ্তি নিয়েই আমার কাছে শেষ হলো বাংলা সাহিত্যে ধ্রুপদী সৃষ্টির মর্যাদা পাওয়া এ উপন্যাস । তারপরও অতোটুকু খুঁত নিয়েও শহীদুল্লা কায়সারের সৃষ্টি " সংশপ্তক " কালোত্তীর্ন, অবশ্যপাঠ্য।
Was this review helpful to you?
or
This book is awesome ?
Was this review helpful to you?
or
সংশপ্তক উপন্যাসের কাহিনির শুরু ইংরেজ আমলের অন্তিমকালে, শেষ পাকিস্তান আমলের সূচনাপর্বে ।কাহিনির অনেকখানি স্থাপিত পূর্ববঙ্গের গ্রামাঞ্চলে,খানিকটা কলকাতা ও ঢাকায়। এর বৃহত্তর পটভূমিতে আছে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ ,মন্বন্তর ,পাকিস্তান আন্দোলন , সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ঘটনা। এতে প্রধান্য ভাল করেছে শাখা প্রশাখাসমেত এক সৈয়দ পরিবারের কথা। তার এক সৈয়দ প্রাচীন পন্থী নান সংস্কারের সঙ্গে ইংরেজি শিক্ষা ও ইংরেজের চাকরি সমন্বিত করেছেন। আরেক সৈয়দ স্ত্রী-কন্যা ফেলে নিরুদ্দেশযাত্রা করে দরবেশ হয়েছেন। প্রথমোক্তজনের পুত্র জাহেদ আধুনিক শিক্ষা জীবন বোধ আয়ত্ত করে প্রথমে পাকিস্তান-আন্দোলন এবং বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। প্রাচীনতার সঙ্গে তার ভয়াবহ দ্বন্দ্ব। তাই পিতৃব্য যখন তাঁর এক বয়স্ক শিষ্যের সঙ্গে কন্যা রাবুর বিয়ে দিয়ে ফেলেন, তখন সে তার সমর্থদের নিয়ে নতুন বরের ওপর এমন হামলা করে যে শুধু জামাতা নন, সদলবলে শ্বশুরকেও পলায়ন করতে হয়। রাবুও এ ঘটনাকে বাড়াবাড়ি মনে করে, কিন্তু পরে-জাহেদের শিক্ষার প্রভাবে-ওই স্বামীকে স্বামিত্বের অধিকার দিতে অস্বীকার করে। কাহিনির শেষ হয় বাম রাজনীতিতে সংশ্লিষ্টতার কারণে জাহেদের গ্রেফতারে এবং তার প্রতি রাবুর দেহাতীত প্রেমের স্থিতিতে।
Was this review helpful to you?
or
সংশপ্তক শহীদুল্লাহ কায়সারের একটি কালজয়ী উপন্যাস । ১৯৬৪ সালে রচিত এই উপন্যাসটি ১৯৬৫ সালে প্রকাশিত হয় । পরবর্তীতে তা আবদুল্লাহ আল মামুন দ্বারা নাট্যরূপে রূপান্তর করা হয় এবং যা বাংলাদেশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয় । সংশপ্তক নাটকটি বাংলাদেশের টিভি নাটকের ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় নাটক হিসেবে বিবেচনা করা হয় । সংশপ্তক শব্দের অর্থ হলো হয় জয় নাহয় মৃত্যু ।
Was this review helpful to you?
or
#বুক_রিভিউ #সংশপ্তক #শহীদুল্লাহ_কায়সার যারা এক সময় বি.টি.ভি দেখতেন তাদের কাছে সংশপ্তক উপন্যাসটি নাটক হিসেবে বেশি প্ররিচিত। দীর্ঘদিন এই নাটকটি বি.টি.ভি তে প্রচারিত হতো। নাটকটির নাট্যকার ছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন । শহীদুল্লাহ কায়সারের এই উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যে একটি উল্লেখ যোগ্য স্থান দখল করে আছে। সাবলীল ভাষা এবং বিষয়বস্তু উল্লেখ করার মতই। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষলগ্নে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তার স্থানীয় সহযোগী আল-বদরের হাতে অপহৃত হন। ধারণা করা হয় যে, অপহরণকারীদের হাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।১৯৬৪ সালে রচিত এই উপন্যাসটি ১৯৬৫ সালে প্রকাশিত হয়।সংশপ্তক শব্দের অর্থ হয় জয় না হয় মৃত্যু। উপন্যাসের প্রধান প্রধান চরিত্র গুলো জাহিদ, রাবু, আবদুল মালেক ওরফে মালু, হুরমতী, সেকানদার মাসটার, রমজান এবং লেকু মিয়া। উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের শেষকাল এবং পাকিস্তানের শুরুর দিক এই উপন্যাসের বিষয়বস্তুতে ওঠে এসেছে। উপন্যাসের বৃস্থিত পটভূমিতে আছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, দেশ ভাগসহ আরো বেশ কিছু বিষয়। কাহিনির অনেকখানি স্থাপিত পূর্ববঙ্গের গ্রামাঞ্চলে,খানিকটা কলকাতা ও ঢাকায়। বাংলাদের এক প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাম বাকুলিয়া। উপন্যাসের শুরুটা হয় বাকুলিয়া গ্রামে। সেই গ্রামের বালক আবদুল মালেক ওরফে মালুর চোখ দিয়ে। তবে এটি যে শুধু মালুর উপন্যাস তা নয়, এই কাহিনী রাবুর, জাহেদের, হুরমতীর, সেকান্দার মাস্টার, রমজান কিংবা লেকু মিয়ার। দেশ ভাগের আগে বাংলার অবস্থা কেমন ছিল তারি চিএ দিয়ে উপন্যাসটি শুরু হয়। বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক নারীর, পিতা ছাড়া সন্তান জন্ম দেওয়ার অপরাধের বিচার কার্য পরিচালনা হয় ততকালীন মোড়ল সমাজের প্রতিনিধিত্ব কারী মিঞা বাড়ীর মিঞা দ্বারা। সেই সময়টা অথাৎ বৃটিশ শাসনের শেষ দিকে গ্রামের মুসলমান প্রভাবশালী পরিবার গুলো তাদের তাদের প্রভাব হারাতে শুরু করে। ফেলু মিঞা সেই সব পরিবার গুলোর প্রতিনিধিত্ব কারী ব্যাক্তি যে তার পরিবারের হারানো প্রতিপত্ত উদ্ধার করতে বদ্ধ পরিকর। সেই গ্রামের আর এক মুসলমান পরিবার সৈয়দ বংশ। এই পরিবারের সদস্য জাহিদ, রাবু। সৈয়দ বাড়ির মুনশীর ছেলে মালু । মালুর জীবনটা ছিল সাজানো গোছানো। কিন্তু এরি মধ্যে শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। তার জীবন হয়ে যায় এলোমেলো। কলকাতার হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা অতঃপর দেশভাগ। মালু তার যাযাবর জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে প্রত্যক্ষ করে এক বিরাট পৃথিবীকে। এই উপন্যাসের নায়ক জাহেদ। জাহেদ ছিল আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত একজন টকটকে যুবক। সে ততকালীর পাকিস্থানী বামপন্থি রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। প্রাচীনকে আকঁরে ধরতে কখনই সে রাজি নয়, জীবন সম্পর্কে সে ছিল আশাবাদী। বামপন্থি রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকার কারণে গ্রেপ্তার হতে হয়। উপন্যাসের নায়িকা রাবু। বিয়ে সম্পর্কে বুঝার আগেই তার বাবা এক দরবেশের সাথে তার বিয়ে দিয়ে দেয়। প্রথম দিকে তার ধর্ম ভীরু মন বাবার মতের অবাধ্য হতে চাই না। কিন্তু পরবর্তীতে জাহেদের শিক্ষার সংস্পর্শে এসে সে প্রতিবাদী হয়ে উঠে। রাবু সঙ্গী হয় জাহেদের বিপ্লবী সংগ্রামে। উপন্যাসের ভিলেন চরিত্র রমজান আলী। ফেলু মিঞার দোসর ছিলেন রমজান আলী। কিন্তু পরবর্তীতে দেশের অরাজকতার সময়, লাগামহীন হয়ে উঠে রমজানের মতো চরিত্র গুলো। কান কাটা রমজান হয়ে ওঠে সমাজের সনামধন্য ব্যাক্তিত্বে। এই উপন্যাসের আর একটি উলেখ্য যোগ্য চরিত্র সেকেন্দার মাষ্টার। শুরু থেকেই সে ছিল প্রতিবাদী। বাকুলিয়া গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষেদের মধ্যে সে ছিল একমাত্র শিক্ষিত ব্যক্তি। তাই তাকে ঘিরে সাধারণ মানুষেরা স্বপ্ন দেখতো। নৈতিকতার প্রশ্ন সে কখনো পিছপা হয়নি। মুসলমানদের অবস্থার জন্য জাহেদের সাথে সে আপ্রাণ চেষ্টা করতে দেখা যায় তাকে। পরিশেষে বলা যায় উপন্যাসটি বাংলার সাধারণ মানুষের জীবন কাহিনী, দেশ ভাগের কাহিনী, রমজানের মতো স্বার্থানেষীদের কাহিনী, ভূমিহীন কৃষকের কাহিনী।
Was this review helpful to you?
or
?
Was this review helpful to you?
or
সংশপ্তক শব্দের অর্থটি চমৎকার- হয় জয় না হয় মৃত্যু। ১৯৬৪ সালে রচিত এই উপন্যাসটি ১৯৬৫ সালে প্রকাশিত হয়। সংশপ্তক উপন্যাসের কাহিনির শুরু ইংরেজ আমলের অন্তিমকালে, শেষ পাকিস্তান আমলের সূচনাপর্বে ।কাহিনির অনেকখানি স্থাপিত পূর্ববঙ্গের গ্রামাঞ্চলে,খানিকটা কলকাতা ও ঢাকায়। এর বৃহত্তর পটভূমিতে আছে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ ,মন্বন্তর ,পাকিস্তান আন্দোলন , সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ঘটনা। এতে প্রধান্য ভাল করেছে শাখা প্রশাখাসমেত এক সৈয়দ পরিবারের কথা। তার এক সৈয়দ প্রাচীন পন্থী নান সংস্কারের সঙ্গে ইংরেজি শিক্ষা ও ইংরেজের চাকরি সমন্বিত করেছেন। আরেক সৈয়দ স্ত্রী-কন্যা ফেলে নিরুদ্দেশযাত্রা করে দরবেশ হয়েছেন। প্রথমোক্তজনের পুত্র জাহেদ আধুনিক শিক্ষা জীবন বোধ আয়ত্ত করে প্রথমে পাকিস্তান-আন্দোলন এবং বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। প্রাচীনতার সঙ্গে তার ভয়াবহ দ্বন্দ্ব। কাহিনির শেষ হয় বাম রাজনীতিতে সংশ্লিষ্টতার কারণে জাহেদের গ্রেফতারে এবং তার প্রতি রাবুর দেহাতীত প্রেমের স্থিতিতে।
Was this review helpful to you?
or
সংশপ্তক বইটি এই কারণেই আপনার মনকে টানবে যে, এটি আসলে আবহমান বাংলার চিরায়ত এক গল্প। শহীদুল্লা কায়সার খুব নিঁখুত করে সাজিয়েছেন উপন্যাসের পটভূমি আর চরিত্রগুলো। উপন্যাসটি বাংলার খেটে খাওয়া মানুষ এর গ্রামীণ গল্প, তাদের দুর্দশার গল্প, হানাহানি কিংবা অপরাধেরও গল্প। একই সাথে এটি সাতচল্লিশের পূর্ববঙ্গ, পাকিস্তান আমলের ইতিহাসকেও ধারণ করেছে। তাই সব মিলিয়ে বলা যায়, যুগান্তরের অনবদ্য এক শিল্প শহীদুল্লা কায়সারের সংশপ্তক।
Was this review helpful to you?
or
One word: A Masterpiece. Whoever forgets "Kaan Kata Romjan"?
Was this review helpful to you?
or
# রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা লিখেছেন :আরাফ যায়াদ # বই:-সংশপ্তক লেখক:শহীদুল্লাহ কায়সার পৃষ্ঠা:৪০০ মূল্য:২১৩ প্রকাশকাল:১৮ ই সেপ্টেম্বর,১৯৬৫ প্রকাশনী: জোনাকি প্রকাশনী ধরণ: আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক উপন্যাস (চিরায়ত উপন্যাস) রেটিং-৪.৫/৫ . কাহিনী সংক্ষেপন:- মহাকাব্যরূপী এই উপন্যাসটি হচ্ছে ১৯৩৭-১৯৫২ সময়ের এর একটা জাজ্জ্বল্যমান দলিল। যার প্রমাণ পাওয়া যায় -- শুরুতেই হুরমতির কপালে যে মুদ্রার ছেঁক দেওয়া হয় তা"""" সম্রাট পঞ্চম জর্জের নামাঙ্কিত"" অর্থাৎ সময়টা ১৯৩৭। . প্রায় #৪০০ পৃষ্ঠার গাম্বুসাকৃতির এই উপন্যাসে চরিত্র সংখ্যা প্রায় #৫০।। তন্মোধ্যে রমজান,সেকান্দর মাস্টার ও জাহেদ চরিত্র অন্যতম।রাবু চরিত্রটাও প্রণিধানযোগ্য।। তাছাড়াও ফেলুমিঞা,রামদয়াল,লেকু,আম্বুরি,হুরমতি,মালু,রিহ ানা,আহসান,ইয়াসীন প্রমুখ চরিত্রের প্রেক্ষাপট ভিত্তিক আগমণ ঘটে। এই উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে---সামন্ত সমাজের অধীনস্থ বিত্তহীন সমাজের জুলুম-অত্যাচার-শোষণ- নিপীড়ন-নির্যাতন-নিস্প্রেষনের অতি নির্মম-নিষ্ঠুর জীবনচিত্র। . যার স্থানিক পটভূমিতে আছে-নোয়াখালী,ঢা কা,কলকাতা।লেখক দেশ বিভাগ পূর্বকালীন এবং উত্তরকালীন সমাজচিত্রের প্রতি আলোকপাত করেছেন। ব্রিটিশ শাসনের সায়াহ্ন,পাকিস্তান শাসনের প্রারম্ভিকতা,অসহযোগ আন্দোলনের মত জাঁদরেল ঘটনার ঠাঁই হয়েছে এই উপন্যাসে। সামন্তবাদীদের প্রতিনিধিত্ব করেছে- ফেলু,রমজান,রামদয়াল। নির্যাতিতদের প্রতিনিধিত্ব করেছে- লেকু,হুরমতি,মালু সহ ভিত্তহীন সমাজ। আর বিপ্লবী চরিত্রে আছে- জাহেদ,সেকান্দার মাস্টার,রাবু।যারা হচ্ছে ভিত্তহীন,নিম্ন-মধ্যবিত্তদের উত্তরণের প্রতিভূ। . এই উপন্যাসের শক্তিশালী চরিত্র-- সেকান্দার মাস্টার।সমাজতান্ত্রিক আদর্শে দীক্ষিত। সে ঔপন্যাসিকের জীবনাদর্শের প্রতিচ্ছবি।অসম্ প্রায়িক ও শ্রেণী সচেতনও।তা চাক্ষুস্মান হয়,তাঁর ও জাহেদের যুক্তি-তর্ক-বিতর্কে ।সে ছিল সম্পূর্ণ ও সুস্পষ্ট প্রকাশিত চরিত্র।তার উক্তিতে---- "" আমি প্রথমে মানুষ,তারপরে মুসলিম""। "" ধর্মের জন্য মানুষ নয়,মানুষের জন্য ধর্ম"""।। একথায় সেকান্দার চরিত্র স্বপ্নদর্শী-সহানুভূতিপূর্ণ-ত্য াগী-প্রতিবাদী-বিপ্লবী গুণে মহিমান্বিত। তার বিপ্লবের বীজমন্ত্রে দীক্ষিত হয়েছিল জাহেদ,রাবু,মালুরা। . জাহেদ চরিত্রটি লেখকের মানসপুত্র হিসেবে গড়ে উঠেছে।লেখক তার জীবনাদর্শ... জাহেদের মধ্যে চালান করেছেন।জাহেদ প্রথমদিকে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি - মৌলবাদী,স্বাতন্ত্র্য জাতীয়তাবাদী হলেও শেষ দিকে সমাজতন্ত্রী মন্ত্রে দীক্ষিত হয়।যার প্রতিফলন পড়ে অন্দরমহল নিবাসিনী "" রাবু"" চরিত্রের উপর।আমরা তার মধ্যে খানিকটা দার্শনিকতার আঁচ পাই,তাঁর কথোকপনে... "এক ধারায় নয়,বহু ধারায় প্রবাহিত হয় মানুষের জীবন।এক পথ রুদ্ধ হলে,অন্য পথ আপনাআপনি খুলে যায়... এই জীবনের রীতি"। মোটাদাগে বলতে গেলে জাহেদ চরিত্রের মধ্যে স্বজাতি ও স্বদেশপ্রেম,-প্রতিবাদী-কুসংস্কার বিরোধ- প্রেমিক,সহানুভূতি পূর্ণ-ত্যাগী-জনসেবী- মানবহৈতীষী ইত্যকার গুনের সমাবেশ দেখতে পাই। . রাবু চরিত্রটি প্রথমে দিকে অন্দরমহলবাসিনী থাকলেও পরবর্তিতে প্রতিবাদী হয়ে উঠে.. তার উক্তিতে.. ""..... আপনারা মেয়েদের পেয়েছেন কি? চিরকাল মেয়েদের অবলা ভেবে এসেছে,আজও তাই ভাবেন,ভাবেন আমরা কি আর আত্মরক্ষা করতে জানি??...গুণ্ডাদের আমরা ঠেঙ্গাতে পারি এবং ঠেঙ্গাব""!!! . ফেলু মিঞা দেশবিভাগের পূর্বকালীন তালুক রক্ষার্থে সচেষ্ট থাকলেও পরবর্তীতে তারই নায়েব রমজানের কুটচক্রে তালুক হারিয়ে শ্বশুর বাড়িতে আস্তানা গাড়ে। . রমজান চরিত্রটা সবচেয়ে তাজা-সজীব-প্রাণবন্ত। দেশবিভাগ কালীন সময়ে ঐশ্বর্যে উন্মাদ-শঠ-ধূর্ত-ভাঁড়- চরিত্রহীন-খল-লম্পট-দলাল-লুটেরা রমজান নারী পাচার,জমি দখল সহ নানান লোমহর্ষক কাজে নিয়োজিত হয়ে রীতিমতো--""" আঙ্গুল ফুলে বটগাছে"" রূপান্তরিত হয়ে "" কানকাটা রমজান থেকে কাজী রমজানে"" নামাঙ্কিত হয়।শুরু থেকে সে কূটনামিতে সফল চরিত্র হলেও শেষে তাকে পরাজিত হতে হয় সেকেন্দার মাস্টারের কাছে---- "শ্যামাচরণদত্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের"" নাম পরিবর্তন করে তার নামে রাখতে। এইখানেই রমজান চরিত্রের একমাত্র সীমাবদ্ধতা। . মালু একমাত্র চরিত্র যে... সকল স্থানিক পটভুমিতে ছিল। .. মূল কাহিনী ছাড়াও এখানে কিছু উপকাহিনীর অবতারণা হয়েছে,যেমন---লেকু- আম্বুরি,লেকু-হুরমতি,মালু-রিহান া,আহসান-রিহানা,ইয়াসীন-হাসনা দের দাম্পত্য ও ক্রাশিত কাহিনীর। . ভাষা প্রয়োগে তিনি ছিলেন চরমভাবে সচেতন। তারাশঙ্করীয় ও মানিকীয় ধারার চলিত ভাষার খানিকটা প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হয়।তাছাড়াও আরবি- পার্সী,আঞ্চলিক ভাষার মোটাদাগের ছোঁয়া আছে। চরিত্র উপযোগীয় ভাষা। . . ভাষা-সংলাপ-পরিবেশ-প্রতিবেশ-কাহিনীবিন্যাস সবকিছু মিলিয়ে অসাধারণেরও অসাধারণ।। . https://www.rokomari.com/book/22536/ %E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%B6%E0%A6%AA %E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%95?ref=srbr_pg0_p1
Was this review helpful to you?
or
awesome
Was this review helpful to you?
or
একটি কথা বলতেই হয় এই উপন্যাস টি হচ্ছে খাটি বাংলাদেশের উপন্যাস ! আছে বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষের কথা , আছে ভন্ড পীর দের কথা , গুণী লোকদের সম্মান না করার কথা আর আছে পচে যাওয়া একটি বিশেষ শ্রেনীর লোকদের কথা। সুতরাং বাংলাদেশ কে পিছিয়ে দেয়ার জন্য বাংলাদেশের খাটি একজন বুদ্ধিজীবী কে হত্যা করে আসলেই বাংলাদেশ কে অনেকাংশে পিছিয়ে দিয়েছে ।
Was this review helpful to you?
or
জোনাকী প্রকাশনীর এই বইটিতে প্রচুর বানান ভুল। টাকাগুলো জলে গেল।
Was this review helpful to you?
or
কালজয়ী একটি উপন্যাস। পড়ে দেখুন। ভালো লাগবে, জানতে পারবেন অনেক কিছু।
Was this review helpful to you?
or
বইটি কিনেছি । রকমারি থেকেই । বইয়ে অসংখ্য বানান ভুল, আক্ষরিক অর্থেই অসংখ্য, প্রথম কয়েক পাতার পর প্রত্যেক পেজেই গড়ে দুই তিনটা করে । তাও যে বানান গুলো ভুল সেগুলো খুবই হাস্যকর ধরণের ভুল । অনেক ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বানান ভুলের কারণেই অর্থের পুরাটাই দুর্বোধ্য বোধ হয়, দ্বিতীয়বার পড়ে বুঝতে হয়। এছাড়া মাঝে মাঝেই একটা লাইন এমনকি একটা অনুচ্ছেদ দুই বার করে লেখা। আই মিন রিপিট। তাই আমি বলব কিনতে হলে অন্য প্রকাশনীর কিনুন, এরকম অযত্ন নিয়ে যারা বাজারে শুধুই ব্যবসার উদ্দেশ্যেই বই বের করে তাদের বই কেনাটাই উচিৎ না ।
Was this review helpful to you?
or
This novel doesn't need some special things to be said for itself. This novel is a one of the best classics ever written in Bengali language. I enjoyed reading this book very much. I can highly recommend anyone who wants to read this book is that it will be worth your time.
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃ সংশপ্তক লেখকঃশহীদুল্লা কায়সার প্রকাশনীঃ জোনাকি পাবলিকেশন্স মূল্যঃ১৮৮ টাকা মাত্র সংশপ্তক বিগত যুগের কাহিনী। সংশপ্তক এ যুগের দর্পণ। সংশপ্তক ভাবীযুগের কল্লোল। একটি কথা বলতেই হয় এই উপন্যাস টি হচ্ছে খাটি বাংলাদেশের উপন্যাস ! আছে বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষের কথা , আছে ভন্ড পীরদের কথা , গুণী লোকদের সম্মান না করার কথা আর আছে পচে যাওয়া একটি বিশেষ শ্রেনীর লোকদের কথা।যারা দেশের সহজ সরল মানুষদের চুষে খেয়েছে আছে তাদের কথা। কিভাবে প্রতারিত হয়েছে বাংলার সহজ মানুষগুলো আছে সে কথা।বইটি পড়ার পর বুঝতে পারলাম আবেগের চূড়ান্ত প্রকাশ কাকে বলে। একজন অন্যতম বুদ্ধিজীবীর কলম-কালির মহিমা কতটা উজ্জীবিত এবং জীবন্ত হতে পারে তা শহীদুল্লা কায়সার তার সংশপ্তক উপন্যাসে দেখিয়েছেন। বইটির প্রতিটি শব্দ এখনো গেঁথে রয়েছে মনে। ঠিক এতটাই সমৃদ্ধ এ উপন্যাস। ঠিক এতোটাই অনুভূতি জেগেছে যা লিখে বোঝানো সম্ভব নয়। তার স্বাদ গ্রহন করতে হলে উপন্যাসটি পড়তে হবে।
Was this review helpful to you?
or
very bad print , need to change
Was this review helpful to you?
or
শহীদুল্লা কায়সারের 'সংশপ্তক' একটি কালজয়ী উপন্যা। এটা একটা অবশ্য পাঠ্য উপন্যা। কিন্তু প্রকাশক বইটির প্রতি প্রচন্ড অবহেলা প্রদর্শন করেছেন। বইটিতে এত বেশি প্রিন্টং মিসটেক বলার বাইরে। প্রায় প্রতিটি পাতায় পাতায় ভুল খুবই দৃষ্টিকটু লেগেছে। আশাকরি পরবর্তী সংস্করনে প্রকাশক এব্যাপারে সতর্ক থাকবে এবং এই ভুলগুলো থাকবেনা।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নামঃ সংশপ্তক লেখকঃ শহীদুল্লা কায়সার প্রকাশনাঃ জোনাকী প্রকাশনী ব্রিটিশ ভারত ও তৎকালীন সমাজ প্রেক্ষাপটের উপরে এ বইটি রচিত হয়েছে। ভারত উপমহাদেশ যখন ব্রিটিশ বেনিয়াদের হাত থেকে স্বাধীনতা লাভ করে, তৎকালীন সময়ে অনেক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়। ঝরে যায় অনেক নিরীহ প্রাণ। পাশাপাশি অনেক সুবিধাবাদী পক্ষ ইংরেজদের সাথে হাত মিলিয়ে ফুলে ফেঁপে ওঠে রাতারাতি। গড়ে তোলে অবৈধ সম্পদের অঢেল পাহাড়। এসবের মাঝেও কিছু মানুষ টিকে থাকে নিজ নিজ জীবন সংগ্রামের পথে। জীবন সংগ্রামের চলমানতায় নিজ নিজ কক্ষপথ হতে তারা বিচ্যুত হয়ে পড়ে না। এ ব্যাপারটিই বইটিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে অত্যন্ত সুচারুতার সঙ্গে। সংশপ্তক শব্দের অর্থঃ "যুদ্ধজয় অথবা মৃত্যু --- এ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যোদ্ধা ".........তাদের জীবনেও আসে দুঃখ, আসে দৈন্য। আসে বিপর্যয়। রাজনৈতিক সহিংস পরিস্থিতির মাঝেও তারা টিকে থাকে স্বার্থান্বেষী মহলের কালোহাতকে উপেক্ষা করে। তারা জীবন যুদ্ধের হার না মানা একেকজন সৈনিক। এ বিবেচনায় এরা প্রত্যেকেই একেকজন সংশপ্তক। সার্বিক বিবেচনায়, বেশ ভালো মানের একটি উপন্যাসের নাম সংশপ্তক। রকমারি লিংকঃ www.rokomari.com/book/22536/
Was this review helpful to you?
or
‘সংশপ্তক’(১৯৬৫)- শহীদুল্লা কায়সার বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম, বাংলাদেশের এক মহান মানব-প্রেমিক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক কর্মী শহীদুল্লা কায়সার। তিনি ছিলেন ভাষা আন্দোলনের একজন নেপথ্য নায়ক এবং শ্রমিক-জনতার নিপুন চিত্রকর। বাঙালী জীবনের দুঃখ ও সংগ্রামের চিত্র তার উপন্যাসের উপজীব্য বিষয়। তাই তিনি তার লেখনীতে এই মেহনতি মানুষগুলোর পক্ষে কলম ধরেছিলেন কারান্তরীণ থাকাকালেই এবং লিখে গেছেন ১৯৭১ সালের বিজয়ের সূর্য উদিত হওয়ার কিছু সময় আগে আলবদর বাহিনীর হতে নিখোঁজ হওয়ার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত। বাংলা সাহিত্যে ‘সংশপ্তক’ শহীদুল্লা কায়সারের এক অমর কীর্তিগাথা। এর আভিধানিক অর্থ করলে দাড়ায়-‘নিশ্চিত পরাজয় জেনেও যে বীর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লড়ে যায়’। রাজনৈতিক পটভূমিতে রচিত এদেশের হিন্দু-মুসলমানের সম্মিলিত জীবন নিয়ে এবং অসাম্প্রদায়িক জীবনবোধে অনুপ্রাণিত সার্থক সৃষ্টি ‘সংশপ্তক’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট নির্মাণে শহীদ সাহিত্যিক যে নৈপুন্য প্রদর্শন করেছেন তা আমাদের দেশে একান্তই দুর্লভ। গ্রন্থখানিতে আছে মহাকাব্যিক ব্যপ্তি, আছে প্রসারতা। ‘সংশপ্তক’ উপন্যাসের দীর্ঘ আয়তনে ধরা পড়েছে বহু চরিত্র- সকলের উপর জেগে আছে পুরুষ-শাসিত মুসলিম সমাজে নারীর বিদ্রোহ। উপন্যাসের সূচনা হয়েছে হুরমতির লাঞ্ছনায়। ব্যাভিচারিণী হুরমতির কপালে আগুনে তাঁতানো পয়সাটা দিয়ে ছেঁকা দেবার যে বর্বর নিষ্ঠুর দৃশ্যটিতে উপন্যাসের সূচনা, সেখানেই নারীর বিদ্রোহের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। উপন্যাসের নায়ক জাহেদ একজন বিপ্লবী। আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষাপ্রাপ্ত টগবগে যুবক। মানুষ মাত্রই তার ভালবাসার পাত্র। মূলত জহেদ চরিত্রটি লেখকেরই প্রতিচ্ছায়া। স্কুল মাস্টার সেকান্দর, পতিতা হুরমতি, চাষী লেকু- সবাই তার স্নেহ ও ভালবাসা পায়। জাহেদ মানষের প্রতি আশাবাদী, আশাবাদী তার জীবনের প্রতি। চরম বিপদের সময়েও তার বিপ্লবী সত্তার প্রকাশ ঘটেছে। তাই তাকে গ্রেপ্তার করার সময় বলতে শোনা যায়- ‘‘চিন্তা করিস নে রা’বু আমি ফিরে আসব। আমি আসব”।এই উপন্যাসের একটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র হচ্ছে রাবু। সে বিবাহিতা, অতীতকে অস্বীকার করে বিপ্লবী জাহেদের সঙ্গে সমাজ সেবায় ব্রতী হয়। জাহেদকে সে ভালবাসে। রাজনৈতিক মুক্তি পথের পথিক রাবু। সেকান্দর মাস্টারও দেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামের একজন নিবেদিত কর্মী। সমগ্র উপন্যাসের কেন্দ্রে আছে দুটি গ্রাম- বাকুলিয়া ও তালতলি। এখান থেকে ঘটনা কলকাতা, ঢাকা পরিক্রম করেছে। জাহেদ, রাবু, ফেলু, মালু, রমজান, সেকান্দর মাস্টার, হুরমতি, লেকু- এদের চরিত্র-চিত্রণে লেখকের বাস্তব অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটেছে। এই চরিত্রগুলোর গল্পের শেষ নেই। তালতলির গল্প, বাকুলিয়ার গল্প, যুদ্ধের গল্প, দুর্ভিক্ষের গল্প, দাঙ্গার গল্প, ইংরেজ চলে যাবার গল্প, রমজানের মতো যারা এই দেশটাকে ভোজভাজি দেখাল তাদের গল্প, ভিটেহারাদের গল্প, সব মিলিয়ে ওদের নিজেদের গল্প। ওদের এক একটি জীবন অসংখ্য কাহিনী। আসলে ‘সংশপ্তক’ বাংলাদেশের ক্ষয়িষ্ণু গ্রামীণ জীবনের সামন্ত প্রভূদের অত্যাচার আর তার মধ্য থেকে সাধারণ মানুষের বাঁচার লড়াইয়ের এক মনোজ্ঞ পাঁচালি। তথ্যসূত্রঃ শহীদুল্লা কায়সার রচনাসমগ্র (১ম খন্ড)
Was this review helpful to you?
or
সে অনেক আগের কথা। বাসায় নতুন টেলিভিশন নিয়ে আসা হয়েছে। আজকের মত শত শত টিভি চ্যানেল ছিলনা তখন। ছিল বিটিভী। একটির পর একটি নাটক দেখার জন্য মুখিয়ে থাকতাম আমরা। টিভির পর্দায় দেখা কানকাটা রমজান কিংবা মালুর অভিনয় যেন প্রতিটি মুহূর্ত আবিভূত করতো। দিন যায় মানুষ বদলায়। কিন্তু স্মৃতির কাটা যেন আটকে থাকে ঠিক ওই সময়ে। যাই হোক লেখক শহীদুল্লাহ কায়সারের কালজয়ী সৃষ্টি সংশপ্তক উপন্যাসটি। কাহিনীর আখ্যানভাগ রচিত হয়েছে ইংরেজ শাসনের শেষ, অবিভাজ্য ভারতের বিভাজনের সূচনালগ্নে। তালতলী নামের এক গ্রামের মাতব্বর কর্তৃক হুরমতি নামের এক রমণীকে শাস্তি দেয়ার মাধ্যমে। এই শাস্তিদানের সময় ফুটে ওঠেছে তখনকার মানুষের অজ্ঞতা আর জমিদারীর দাসত্ব। তারপর কাহিনী গড়িয়েছে অনেক দূরে, বহুদূর। কখনও মনে হবে সেকান্দারই উপন্যাসের নায়ক, কখনও বা জাহেদ। আবার কখনও মালেক ওরফে মালু। এই ছেলেটির শিশুকাল হতে যুবক বয়সের অনেক কাহিনী যেন রচিত হয়েছে শহীদুল্লাহ কায়সারের কলমে।সাথে ফুটে ওঠেছে সৈয়দ পরিবারের ধার্মিক চিত্র, ফুটে ওঠেছে তাদের বেঁচে থাকার লড়াই। কখনও কাহিনী ঘুরতে ঘুরতে যেন চলে যায় কলকাতায়। হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায়। কেউই যেন কম ছিলনা। উগ্রতা যেন সর্বত্র। সৈয়দ পরিবারের কাজের লোকের ছেলে মালুও একদিন বিয়ে করে কোটিপতি আবগারি কর্মকর্তার মেয়ে রিহানাকে। সেটা কি ভালোবাসা ছিল নাকি ছিল নিছক এক মোহ। মাঝে মাঝে লেখক খুঁজেছেন জীবণের মানে। ঘুরতে ঘুরতে কাহিনীর ইতি হয়েছিল আবারও সেই তালতলীতে, কিন্তু খানিকটা ভিন্নভাবে। অনেক হারিয়ে যাওয়া,অনেক মৃত্যু, জমিদারীর গল্প নিয়ে। আর এরই নাম সংশপ্তক কিংবা জীবণপন যুদ্ধ করতে করতে বেঁচে থাকা সৈন্য।
Was this review helpful to you?
or
'সংশপ্তক' কবি শহীদুল্লাহ কায়সারের একটি কালজয়ী উপন্যাস।সংশপ্তক উপন্যাসের কাহিনির শুরু ইংরেজ আমলের অন্তিমকালে, শেষ পাকিস্তান আমলের সূচনাপর্বে ।কাহিনির অনেকখানি স্থাপিত পূর্ববঙ্গের গ্রামাঞ্চলে,খানিকটা কলকাতা ও ঢাকায়। এর বৃহত্তর পটভূমিতে আছে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ ,মন্বন্তর ,পাকিস্তান আন্দোলন , সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ঘটনা। এতে প্রধান্য ভাল করেছে শাখা প্রশাখাসমেত এক সৈয়দ পরিবারের কথা। তার এক সৈয়দ প্রাচীন পন্থী নান সংস্কারের সঙ্গে ইংরেজি শিক্ষা ও ইংরেজের চাকরি সমন্বিত করেছেন। আরেক সৈয়দ স্ত্রী-কন্যা ফেলে নিরুদ্দেশযাত্রা করে দরবেশ হয়েছেন। প্রথমোক্তজনের পুত্র জাহেদ আধুনিক শিক্ষা জীবন বোধ আয়ত্ত করে প্রথমে পাকিস্তান-আন্দোলন এবং বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। প্রাচীনতার সঙ্গে তার ভয়াবহ দ্বন্দ্ব। তাই পিতৃব্য যখন তাঁর এক বয়স্ক শিষ্যের সঙ্গে কন্যা রাবুর বিয়ে দিয়ে ফেলেন, তখন সে তার সমর্থদের নিয়ে নতুন বরের ওপর এমন হামলা করে যে শুধু জামাতা নন, সদলবলে শ্বশুরকেও পলায়ন করতে হয়। রাবুও এ ঘটনাকে বাড়াবাড়ি মনে করে, কিন্তু পরে-জাহেদের শিক্ষার প্রভাবে-ওই স্বামীকে স্বামিত্বের অধিকার দিতে অস্বীকার করে। কাহিনির শেষ হয় বাম রাজনীতিতে সংশ্লিষ্টতার কারণে জাহেদের গ্রেফতারে এবং তার প্রতি রাবুর দেহাতীত প্রেমের স্থিতিতে। সংশপ্তক শব্দের অর্থ জয় নাহয় মৃত্যু। যে সময়টাতে পড়েছি সেই সময়ের আমার অনুভূতি আবেগ আর চারপাশের পরিবেশটার স্মৃতি মন্থন করতেই বেশি পছন্দ করি। যেমন সেই সময়ে এই উপন্যাস পড়ে অদ্ভুত ভালো লাগার এক ঘোরে চলে গিয়েছিলাম। বিস্তৃতি আর ব্যাপক পটভূমির রচনা পাঠ চুকানোর তৃপ্তি'টাও বেশ উপভোগ করেছিলাম। আর প্রতিটি চরিত্রকেই মনে হচ্ছিল আমার চারিপাশে দেখা মানুষ গুলোর থেকেই যেন তৈরি। পটভূমিরর সময় ভিন্ন কিন্তু চরিত্র গুলোর চিন্তা ভাবনার ছাচ সব যেন সব যুগেই একই। এই সত্যটাও সম্ভবত সেখান থেকেই প্রথমে উপলব্ধি'তে আসে।একটি কথা বলতেই হয় এই উপন্যাস টি হচছে খাটি বাংলাদেশের উপন্যাস ! আছে বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষের কথা , আছে ভন্ড পীর দের কথা , গুণী লোকদের সমমান না করার কথা আর আছে পচে যাওয়া একটি বিশেষ শ্রেনীর লোকদের কথা। পাঠক এমন সুন্দর একটা উপন্যাস মিস করবেন না।
Was this review helpful to you?
or
জোনাকী প্রকাশনীর সংশপ্তক কেউ কিনবেন না। এত টাইপিং মিসটেক। পাতায় পাতায়, প্রতি লাইনে। মহাকাব্যিক একটি উপন্যাসের ছাপায় এত অবহেলা মেনে নেওয়া যায় না। মুদ্রণ প্রমাদহীন সংস্করণ চাই!