User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
আমি জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে। নষ্টদের দানবমুঠোতে ধরা পড়বে মানবিক সব সংঘ-পরিষদ; চলে যাবে, অত্যন্ত উল্লাসে চ’লে যাবে এই সমাজ-সভ্যতা-সমস্ত দলিল নষ্টদের অধিকারে ধুয়েমুছে, যে-রকম রাষ্ট্র আর রাষ্ট্রযন্ত্র দিকে দিকে চলে গেছে নষ্টদের অধিকারে। চ’লে যাবে শহর বন্দর ধানক্ষেত কালো মেঘ লাল শাড়ি শাদা চাঁদ পাখির পালক মন্দির মসজিদ গির্জা সিনেগগ পবিত্র প্যাগোডা। অস্ত্র আর গণতন্ত্র চ’লে গেছে, জনতাও যাবে; চাষার সমস্ত স্বপ্ন আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে একদিন সাধের সমাজতন্ত্রও নষ্টদের অধিকারে যাবে। হুমায়ুন আজাদের এই কবিতারই উপন্যাস সংস্করণ মনে হলো যেন ডি-মাইনর বইটা। বইটা বলে ভবিষ্যতের সেই সময়ের কথা, যখন জীবনের সকল স্বাধীনতা চলে গেছে নষ্টদের অধিকারে, যখন শিল্প চলে গেছে নষ্টদের অধিকারে, প্রেমের আবেদন, একটা বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যা, এক ঝাঁক পাখি বা একাকী মানুষের বেঁচে থাকার স্বাধীনতা, এমনকি মৃত্যুর স্বাধনীতাও চলে গেছে নষ্টদের অধিকারে। এ বইয়ে ফুটে উঠেছে আমার গল্প, এ বইয়ে ফুটে উঠেছে আমাদের গল্প, ফুটে উঠেছে এ শহরের প্রতিটা মানুষের খণ্ড খণ্ড গল্প, খণ্ড খণ্ড মৃত্যু। তাই বইটা পড়ার সময় মনে হয় বইটা যেন আমারই লেখা, হয়তো অন্য কোন জন্মে অন্য কোন ভুবনে আমি নিজেই লিখেছিলাম এ শহরের প্রতিটা মানুষের পাঁজরের ইতিহাস, নিজের বেঁচে থাকার ব্যর্থতা অথবা টিকে থাকার সফলতা। আমাদের জীবনের প্রতিদিনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মৃত্যুকে এভাবে কোন বইয়ে রোপণ করতে দেখিনি আমি এর আগে কখনো। আমাদের প্রতিদিনের রোপণ করা খণ্ড খণ্ড মৃত্যু থেকে গড়ে উঠে হতাশার এক একটি গাছ, গড়ে উঠে জীবনের হতাশার অরণ্য, সেই অরণ্যে আমরা নিজেরাই কখন হারিয়ে যাই আমরা জানি না, আমরা তখন সূর্যের আলো দেখতে পারি না, পাহাড় দেখতে পারি না, ঝর্না দেখতে পারি না, এমনকি অরণ্যও দেখতে পারি না। আমরা পড়ে যাই সেই গোলকধাঁধায়, যেখান থেকে আমরা কখনো বের হতে পারি না, আমাদেরকে বের হতে দেয় না আমাদের রাষ্ট্র, আমাদের নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত মানুষরূপী ঈগলেরা। তবুও এর মাঝে একদল যুবক বের হয়ে আসে অরণ্য থেকে, তারা দেখতে চায় সূর্যের লাল, আকাশের নীলিমা, ঝরনার ঝিরিপথ, পাহাড়ের সবুজ; তারা গড়ে তুলতে চায় সভ্যতার নতুন ভিত্তি, তারা আকাশের মেঘে উড়িয়ে দিতে চায় স্বাধীনতার পতাকা, তারা বেঁচে থাকার স্বাধীনতাকে স্বাভাবিক করতে চায় জীবনকে বাজি রেখে, তাঁরা একটি যুদ্ধ করতে চায় ঈগলের থাবা থেকে এই শহরকে বাঁচাতে। তাদের এই চাওয়াটা পূর্ণতা পেয়েছিল কিনা সেটা বড় প্রশ্ন নয়, তাঁরা চাইতে পেরেছিল সেটাই ছিল সবচেয়ে বড় ব্যাপার। এই শহরের মানুষ ঈগলের থাবার ভয়ে কোনকিছু চাইতেও ভুলে গিয়েছিলো। এই যুবকের দল অন্তত চাইতে পেরেছিল। শিরোনামহীনের গানে বললে, জাহাজীর কাছে ভীষণ সত্য সেই, পথটাই যাওয়ার, এর আর কোন ফিরে আসা নেই । শহরের জাহাজীরা ফিরে আসতে পারে না, ঐ যুবকের দল ফিরে আসতে চেয়েছিল, তারা মুক্তির পথ খুঁজেছিল, তারা মুক্তির গান গেয়েছিল, তারা আলোর পথে খুঁজেছিল, তারা নষ্টদের নষ্ট করতে চেয়েছিল, তারা ঈগলের ডানা পুড়িয়ে দিতে চেয়েছিলো। বইয়ের ভালো লাগা কিছু লাইন: পৃষ্ঠপোষকতার নামে যে-কোনো ধরনের আর্টকে রেসের মাঠে নামানোর অর্থই হলো সেটার অমর্যাদা করা। মানুষকেই ঘুরে দাঁড়াতে হয় চলমান স্র��তের বিপরীতে, কখনো-বা মানুষেরই বিপরীতে। কিন্তু সেটা কি শুধুই স্বেচ্ছা প্রয়োজনে? নাকি অনেকটা বাধ্য হয়ে? অথবা ব্যাপারটা কি এমন যে মানুষের সাথে যাবতীয় জড়তা-স্থবিরতার সম্পর্কটা প্রতিদ্বন্দ্বিতার? বরং এটা ধরে নেওয়ায় সহজ হবে যে মানুষের ধর্মই নয় ক্যালেন্ডার হয়ে দেয়ালে ঝুলে থাকা, মানুষের ধর্ম মূলত চলন্ত ট্রেন কামরায় বসে দেখা মুহুর্মুহু বদলে যাওয়া দৃশ্যকল্পের মতো। - মনিদা আপনিও কি পালাচ্ছেন আমার মতো?' - পৃথিবীতে পালানোর মতো কোনো জায়গা আছে নাকি? আমার তো মনে হয় নেই। আমি আসলে খুঁজে বেড়াচ্ছি। - কী খুঁজছেন দাদা?' - আমি আসলে খুঁজে বেড়াচ্ছি গান, এটাকে তুমি অন্যকথায় সুরও বলতে পারো তাতে করে অর্থের ব্যপ্তিটা বাড়বে। শোনো, সুর মানে হলো সৃষ্টি বা ভারসাম্য আর বেসুরের অর্থ প্রলয় বা বিশৃঙ্খলা আর সমসুর হলো ভারসাম্যের একটা আইডিয়াল কন্ডিশান। এই যে সমতার নামে এত এত রক্ত ঝরল, মানুষে মানুষে বিভাজন এক থেকে অগণিত হলো সব সমসুর প্রতিষ্ঠার জন্যেই। সবার আগে প্রয়োজন ছিল ছড়ানো ছিটানো সুরকে একত্রিত করা তারপর এগুলোর ভেতর ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা। জানো তো? বেসুর সংখ্যায় কম কিন্তু ভয়ানক শক্তিশালী। - শোনো, বিপদ থেইকে পলায়া সাময়িক মুক্তি পাওয়া যায় হয়তো, কিন্তু তাতে কইরে কোনো লাভ হয় না, বরং আরও বিপদ বাড়ে আর কইমে যায় বিপদ মুকাবেলা করার শক্তি। - তাইলে আমি এখন কী করব আব্বা? - না পলায়া তোমার উপরে আসা বিপদরে মুকাবেলা করো। পরিস্থিতি কখনোই আমাদের মতো মানুষের হাতে ছিল না, এখনো নেই এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না সেটা নিশ্চিত। একদল পিষবো আর একদল পিষ্ট হইব এইটাই ফ্যাক্ট। এখন তুই আমি কোন দলে যামু এইটা ডিপেন্ড করতেছে তুই আমি জন্মাইছি সোসাইটির কোন ক্লাসে। আমি আবারও মনোযোগ ফেরাই টিনেজ দলটার দিকে। তারা কি একটা বিষয় নিয়ে যেন হাসাহাসি করছে খুব। সেটা দেখে মাথায় আসে একটা অদ্ভুত চিন্তা। যদিও আমি জানি না তাদের হাসির কারণ, তবুও মনে হয় সে কারণ যা কিছুই হোক না কেন তা নির্ঘাত অন্তঃসারশূন্য। এই জেনারেশনের সাথে কোনো সরাসরি যোগসূত্র নেই আমার তবুও বিগত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় যতটুকু বুঝেছি তাতে আলাদা করে তাদের অস্তিত্বটা টের পাইনি এখন অবধি। বরাবরই আমার মনে হয় তাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা টেস্টটিউবের ভেতর। বাইরের ছায়াচ্ছন্ন পৃথিবীর কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই কিংবা হয়তো সেটা জানার প্রয়োজনও তারা বোধ করে না। প্রজাপতির যতটুকু সুন্দর সেটা তার ডানার কারুকার্যেই বাকিটা মোটামুটি অর্থে কুৎসিত, মানুষের অন্তকরণের ভেতরকার জমাট ঘৃণার মতো। শোকেরা স্বভাবে উদ্বায়ী, অল্প আঁচেই উড়ে যায়, যেতে হয়। এই আঁচটা সময়ের, ব্যস্ততার কিংবা নিত্যকার দরকার-অদরকারি ভাবনার উপরিপাতনের। মূলত প্রতিটা শোকের আড়ালেই লুকিয়ে থাকে শক্তিশালী এক অদৃশ্য চুম্বক যা দুজন বিপরীতধর্মী মানুষের ভেতর জাগিয়ে তুলে তুমুল এক জৈবিক তাড়না। ব্যক্তিগত বোঝাপড়াটা মুগ্ধতার একেবারে উল্টো। একটা বাড়লে আরেকটা আপনা আপনিই কমতে থাকে। (আমার ব্যাক্তিগত সংযোজন: যেসকল মানুষ স্থির হয়ে থাকে জীবনযুদ্ধে, জীবনের অগ্রগতি সম্পর্কে যাদের ইচ্ছে ভঙ্গুর, যারা পরিবর্তনের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে না, তাদের মাঝে মুগ্ধতা একটা সময় পর মলিন হয়ে যায়। কিন্তু যারা এর উল্টো, তাদেরকে প্রতিনিয়ত নতুন করে বুঝতে হয়, তাদেরকে দেখে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ হতে হয়) এই চিঠিটা যখন পড়বে ততদিনে শহর পরিণত হয়েছে প্রেতপুরীতে। উৎপাদন যন্ত্রের নামে বাচ্চাদের খেলার মাঠগুলোর দখল নিয়েছে নামি-বেনামি সব স্থাপনা। নিরাপত্তাকার্যের দায়িত্বে নিয়োজিতদের অনুপস্থিতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় শহর হয়ে পড়েছে ভীষণ রকমের অনিরাপদ। মায়েরা তাদের বাচ্চাদের চোখের আড়াল করতে ভয় পাচ্ছে কেন না চোখের আড়াল হলেই তারা শুরু করেছিল হারিয়ে যেতে। এদের ভেতর যারা যারা ফিরে আসছে তাদের ছোট শরীরের ভেতর ঢুকে পড়ছে এক একটা পরিণত মানুষ, যাদের বিবর্ধিত চোখে ইনসমনিয়ার চিহ্ন। সন্ধ্যার পর তুমি রাস্তায় বের হলে মনে হবে এই শহরে কোনো জীবিত মানুষ নেই। শরীরের ছাল-বাকল উঠে যাওয়া দাম্ভিক কুকুরগুলো কেবল শহরের আনাচে কানাচে ঘুরে ঘুরে নিরাপত্তাকর্মীর দায়িত্ব পালন করছে, অন্ধকারে যাদেরকে প্রায়ই তুমি হায়েনা ভেবে আঁতকে উঠবে ভয়ে... বাঁচা-মরা নিয়া বেশি ভাবনা-চিন্তা কইরো না। যখন দেখবা যে জীবনের উদ্দেশ্য নিয়া ভ্যাবাচেকার মধ্যে পইড়া গ্যাছো শরীর থেইকা এইসব মিথ্যে পোশাক ছুইড়া ফালায়া একেবারে মাটির কাছে চইলা যাইবা। জন্মভূমির মাটির ভেতর অদ্ভুত রহস্যময় একটা ঘ্রাণ আছে। মানুষ মূলত পাগল হয়, নির্বিবাদে রক্ত ঢাইলা দ্যায় ঐ মাটিরে ভালোবাইসায়। সেই তোমারে ইশারা দিবো তোমার কী করা উচিত। এই শহরে হঠাৎ করে কারো নিখোঁজ হয়ে যাওয়াটা বর্তমানে নতুন কিছু নয়। এরকম হচ্ছে অহরহই। কারো ভেতর কোনো প্রকার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ামাত্রই যা কিনা রাষ্ট্রের চাপিয়ে দেওয়া বিন্যাসের সামান্য পরিপন্থি সেটিকে স্রেফ মিশিয়ে দেওয়া হয় ধুলোয়। তবে এখানে স্বেচ্ছায় মরে যাওয়াটা আইনের পরিপন্থি। সেটা চাইলে জিততে হবে যুক্তির লড়াই। মানুষ সবচেয়ে বেশি নিরুদ্দেশ হবার প্রেরণা পায় বৃষ্টি ও জোছনা থেকে। শুধুই 'আমিত্ব' ব্যাপারটা একটা ভয়াবহ অসুখ। কারণ এটা মানুষকে একসময় ঠেলে দেয় নিশ্চিত আত্মবিনাশের পথে। ব্যক্তিগত আয়নায় ঘুরে ঘুরে শুধু নিজেকেই বারবার দেখতে থাকলে একসময় তা থেকে জাগে মারাত্মক সব বিভ্রম। ব্যাপারটা আমি নিজেও টের পেয়েছি বেশ কিছু খণ্ড খণ্ড অভিজ্ঞতায়। অনেক দিন আগে কোথায় যেন শুনেছিলাম যে মৃতের সৎকার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী মানুষগুলোর ভেতর যাদেরকে অন্যান্যদের তুলনায় অধিক নির্ভার দেখায় ওরা মূলত তারাই যারা ভেতরে ভেতরে খুশিই হয় ঐ মৃতের বিপরীতে নিজেদেরকে জীবিত ভেবে। তবে এটা আমিত্বের একেবারে প্রাথমিক পর্যায়। নিজের প্রতি প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভালোবাসার শুরুটা হয় অনেকটা এরকমভাবেই। অভ্যাস ভয়ানক শক্তিশালী যা কিনা পুরোপুরি উল্টে দিতে পারে মানুষের আচার-আচরণের ধরন। অস্বস্তিকে বানাতে পারে স্বস্তি এবং সাহসীকে প্রচণ্ড রকমের ভীতু। রিভিউ: শাহ্ পরাণ সংগ্রহ: গুড রিডস
Was this review helpful to you?
or
ধরা যাক, এমন এক সময় এলো, যখন একটা জনপদের ইতিহাস বলে যা কিছু ছিল সব ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টায় প্রায় সফল হচ্ছে ক্ষমতায় বসে থাকা লোকজন। বর্তমানকে এমনই কোনঠাসা করে রাখা হচ্ছে যে বেঁচে থাকাটাকেই এক বিশাল অর্জন বলে ধরে নিয়ে লোকজন মাথানিচু করে শুধু পার করে চলে দিনের পর দিন। বাতাস গুমোট, বৃষ্টির জলে দুর্গন্ধ, মানুষ একে অন্যের থেকে বিচ্ছিন্ন। তার স্বাভাবিক জীবন যাপনের নিশ্চয়তা নেই কিন্তু স্বেচ্ছায় মৃত্যু বরণের অধিকারও নেই। এইরকম এক সময়ে, একদা এক রাজ্যে একজন বা একদল শিল্পীর অবস্থানটা কীরকম হবে? জিল্লুর রহমান সোহাগ সেই একজন বা একদল শিল্পীর যে গল্প করেছেন ডি মাইনর-এ, তা এই উপন্যাসকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করায় শেষ পর্যন্ত? আমার ধারণা, আরও অনেক প্রশ্নে জর্জর এক হলুদ রঙের দুপুরে। ডি মাইনর'র প্রধান টাইমলাইন দুটি। দেশ যখন বদলে যাচ্ছিল, সেই সময়ের আখ্যান আমরা জানতে পারি একটা রহস্যময় পান্ডুলিপি থেকে। সেটি একজন তরুণ পড়ে যেতে থাকে বর্তমানে বসে অর্থাৎ যখন দেশটা একেবারে বদলে গেছে। পান্ডুলিপির রচয়িতা ও পাঠক, দুজনেই শিল্পী। ওরা গান গায়। প্রথমজনার যাবতীয় কর্ম অতীত হয়ে গেছে, যা শুধু কন্ঠস্বর, আর দ্বিতীয়জন বর্তমানে সক্রিয়। বদলে যেতে থাকা সময়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সেই শিল্পীর দল কী কী করেছিল? আর যে পান্ডুলিপিটা পড়ছে, সেই বা এসব জেনে কী করবে? নিজের বর্তমান যাপনকে করবে প্রশ্নবিদ্ধ? নাকি বেছে নেবে বিপ্লব? নাকি কিছুই করবে না? পড়তে পড়তে মনে হয়েছে এ এক পেজ টার্নার। একেবারে বুলেট ট্রেনের গতিতে আমি পাতার পর পাতা উল্টে গেছি। সম্পাদনাজনিত কিছু ত্রুটি আমার চোখ এড়াতে পারেনি, বারবার মনে হয়েছে আরও কিছু সময় সম্পাদকের টেবিলে এ কাটাতেই পারত। কখনও কখনও লেখকের কন্ঠস্বর অধিক উচ্চকিত হয়ে উঠেছে চরিত্রগুলোকে ছাপিয়ে। কিছু কিছু চরিত্রের আরও জীবন্ত হয়ে ওঠার সম্ভাবনাও ছিল। প্লটের যে স্বাভাবিক নাটকীয়তার দাবি, সেই প্রলোভন থেকেও লেখক যে শতভাগ উৎরে গেছেন, তা বলবো না। কিন্তু সমস্ত কিছু পার করেই ডি মাইনরের বড় দুটি সফলতার একটি হল, এর কল্পবিশ্বে উৎপাদিত প্রশ্নগুলোতে পাঠক হিসেবে আমি নিজেও জর্জরিত হয়ে গেছি। যে কোন পাঠকেরই হওয়ার কথা। দ্বিতীয় সফলতা হচ্ছে নিরেট একটা আখ্যান দাঁড় করাতে পারা, যার মাঝখান দিয়ে যেন বা জানালার কাঁচের একধারে দাঁড়িয়ে দেখে নেয়া যায় এক ভয়ানক ডিস্টোপিয়াকে।