User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসের শুরুতেই একজন মানুষ (হারু) বটগাছের নিচে বজ্রপাতে মরে । তার লাশটা পরের দিন শশী ডাক্তার (মূল চরিত্র) গাছের সাথে সটান অবস্থায় শক্ত তক্তার মতন দেখে ছিলেন। কিন্তু ঐ লাশ ভয়ে কেউ ছোঁয়নি। অর্থাৎ তৎকালীন গ্রামীণ সমাজ ছিলো কুসংস্কারে নিমগ্ন। গাউদিয়া গ্রামে বসতি কমই। কেবল ছয়টা পরিবারের বাস ছিলো। ঐ এলাকার জোতদ্দার ছিলেন গোপাল দাস। তার ৩ মেয়ে ও এক ছেলে (শশী ডাক্তার ) । কিন্তু তার মেয়েদের ভালবিয়ে হয়নি। শশী ডাক্তার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারী পাশ করেছে। গ্রামে থেকেই রোগী দেখ। সে বিয়ে আর রোগী দেখার ব্যাপারে খুব হিসেবী। হারুর মৃত্যুর পর তার মেয়ে মতি অসুস্থ হয়। মতিকে দেখার জন্য শশী ডাক্তার যখন ওখানে যেতেন তখন তার পরাণের বউ কুসুমের সাথে দেখা হয়। পরাণ খুব সোজাসাপ্টা মানুষ আর কুসুম খুবই সুন্দরী। কিন্তু প্রায়ই শশী ডাক্তার আর কুসুমের মধ্যে প্রেমের একটা আবাহ তৈরি হয়েছে। পরাণের সংসারে কুসুম অসুখী ছিলো। কুসুম অসুখের ভান করে শশী ডাক্তারের কাছে যেতো। সে যাই হউক এতে কুসুমের শ্বশুর বাড়ির কেউ কিছুই বলতো না। কারণ ওরা সবাই কুসুমের বাবার দেয়া জমিতে থাকে। গ্রামের একজন নামকরা গণক ও সূর্য উপাসক যাদব। সে শশী ডাক্তারের সাথে গ্রামের ভবিষ্যতের ব্যাপারে তার তত্ত্ব বিশ্লেষণ করতো। সে শশী ডাক্তারের বিজ্ঞানকে ঠুনকো কিছু একটা ভাবতো। শশী ডাক্তারের মত যামিনী কবিরাজও তখন বেশ বিখ্যাত ছিলেন। লোকমুখে শোনা যায় যে সে মকর ধ্বজা ঔষধ তৈরি করেছে। যা দিয়ে মৃতকেও জীবিত করা যায়। পেশাগত একটা সংঘর্ষর জন্য প্রায়ই শশী ডাক্তারের সাথে যামিনি কবিরাজের বিরোধ দেখা যায়। যামিনী কবিরাজের স্ত্রী সেন দিদি সুন্দরী মহিলা। সে অসুস্থ হলে শশী ডাক্তার তার পিতার অনুরোধে তাকে চিকিৎসা দিয়ে আসে। শশী ডাক্তারের মতে সেন দিদির জলবসন্ত হয়। অপরপক্ষে যামিনী কবিরাজের মতে তা ম্যালেরিয়া। এমন দ্বন্দ্বই অনিবার্য। যেখানে অর্থনৈতিক স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবার আশঙ্কা থাকে সেখানে পেশাগত রেষারেষি থেকে যায়। সেন দিদি কিছুকাল রোগে ভোগে এবং এক চোখে অন্ধ হয়ে যায়। তার রূপময় বদনে রোগের দাগ পড়ে। এরপর থেকে সে মুখ আড়াল করে চলে । কিন্তু যামিনী কবিরাজ শশী ডাক্তারের নামে বদনাম রটিয়ে বেড়ায়। ডাক্তার সাহেব নাকি তার স্ত্রীর চোখ অন্ধ করেছে । আবার রোগী ভালো হয়ে যাবার সম্পূর্ণ অবদানকে নিজের নাম করে আস্ফালন করে বেড়ায়। একবার দূর্গা পুজো উপলক্ষে গ্রামের জমিদার শীতল বাবুর বাড়ি যাত্রা পালার আয়োজন করা হয়। সেখানে শশীর কলেজের বন্ধু বোহেমিয়ান স্বভাবের সাহিত্য প্রেমিক কুমুদকে নাটকের নায়ক রূপে মঞ্চায়ন করতে দেখা যায়। কুমুদের বাচনভঙ্গি আর সুন্দর হাসি দেখে মতির (মৃত হারুর কন্যা) খুবই ভালো লাগে। বাড়ি পাশের পুকুরে পরদিন তাদের মনের ভাবনার আদান প্রদান চলে। তাদের সাময়িক প্রেম হয় । মাস তিনেক পর কুমুদ আবার গ্রামে ফিরে আসে। সে মতিকে বিয়ে করার জন্য শশীকে অনুরোধ করে। শশী তার অনুরোধ রাখাতে গিয়ে বেশ ভাবনায় পড়ে যায়। কুমুদ বোহেমিয়ান ছেলে, এখানে সেখানে থাকে, স্থায়ী ঠিকানাও নেই। যাইহোক তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর হানিমুনের কথা বলে মতিকে নিয়ে চলে যায়। হানিমুনে গেলো ঠিকিই কিন্তু ওরা আর ফিরলো না। এতে শশীর খুবই রাগ হয়। তাই হওয়া স্বাভাবিক। শশীর বোন বিন্দুর কোন খোঁজ খবর নেই। তার চিঠিও ইদানিং আসছে না। দুশ্চিন্তায় পড়ে শশী তাকে দেখতে কলকাতায় চলে গেলো। বিন্দুর স্বামী নন্দলাল বিন্দুকে পছন্দ করে না। কারণ সে জানতে পারে বিন্দুর বিয়ে জোরপূর্বক ছিলো এবং মেয়েটি তাকে স্বামীরূপে মেনে নেয়নি। সেই ক্ষোভে সে বিন্দুকে শ্বশুর বাড়িতে না রেখে একটা ভাড়া বাড়িতে রক্ষীতার মতন ফেলে রাখে। বিন্দু মাঝে মাঝেই মদ খেয়ে ওখানে পড়ে থাকে। ভাই বোন কলকাতা ছেড়ে গ্রামে ফিরে আসে। কিন্তু তাদের বাবা গোপাল দাস এতে খুবই রাগ করে ওদের দু চার কথা বলে দিয়ে চলে যায়। শশী সেদিন খুবই হতাশ ও বিষন্ন হয়ে যায়। কারণ তার নেয়া সিদ্ধান্তগুলোর কোনটাই ভালো হয়নি। মতি ও বিন্দুর দ্বায়িত্ব নিতে গিয়ে সে শেষ করতে পারেনি।
Was this review helpful to you?
or
অ়সাধারণ
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের কাভার পেইজের বাইন্ডিংটা যথেষ্ট নিম্নমানের ছিলো,যা খুবই অনাকাংখিত।
Was this review helpful to you?
or
কোনো এক রংহীন দিনে বইটা পড়া শুরু করি। সেটাও বছরখানেক আগের ঘটনা। স্মৃতিতে বিচরণ করলে বোধহয় কিছু মুহূর্ত তুলে ধরতে পারব। চার বসায় দীর্ঘ ছ-মাস লাগিয়ে শেষ করেছিলাম বইটা। এটা প্রথম ক্লাসিক বই যা আমি এত দীর্ঘ সময় লাগালাম শেষ করতে। তবে বইটা শেষ করার পর মনে হলো সুখ খেয়ে ফেলা বিষাদের নীল রঙের প্রজাপতির নিঃশ্বাস ফেলা কাগজের ভাজে একটা আ্যবসার্ড জীবন পরে আছে । যার গল্প মানিকবাবু কখনো লেখেননি। বোধহয় লিখবেনও না আর। সবকিছু থাকর পরও কিছুই না থাকাটা কি করে শশীকে দিন দিন নিঃশেষ করিয়া তুলিবে তা আমরা কখনো জানতে না পারলেও নিজেদের মাঝে তা অনুভব করতে পারব কড়ায়গণ্ডায়। এই ক্ষমতা বিধাতা আমাদের দিয়েছেন-এটাই মানিকবাবু জানতেন আমার মতে! তাইতো শশীর বাকি গল্প লিখবার প্রয়োজন বোধ করেননি সে। এজন্যই উপন্যাস শেষে সিসিফাসের মতই আমরা এখানেও ধরে নিয়েছি শশী সুখে আছে। পুতুলনাচের ইতিকথা বইটা আমার কাছে প্রেমের উপন্যাস ছাড়িয়ে অনেকদূর প্রসারিত হয়েছে। এতো কেবলি দুঃখ, জীবন নাহি কোথাও। শতাব্দীর পর শতাব্দী শব্দহীন ব্যথায় আফসোস করে যাবো আমার বইটা পড়ার পর। জানতে পারব না নিজের সব স্বপ্ন যে ভয়ে বিসর্জন দিয়েছিলো সে তা জেনেও অনেকটা দ্বিধায় ভোগা কাপুরুষের মতো জীবন এগিয়ে নেয়ার ফন্দি আটছিলো কেনো? যখন মতিকে তার জীবন গাছ থেকে টুপ করে পেড়ে নিয়ে যায় কুমুদ আর এতে সাহায্য সে নিজেই করিয়াছিলো- তখন সে আসলে কি ভাবিতেছিলো? সে কি জীর্ণ পাতার শূন্য সাক্ষী হওয়া লেঙরা শালিকের সেই বয়ে আনা একখান মৃত শামুকের খোলসে লুকিয়া থাকা কোন দৈত্যের কারিশমার জন্য অপেক্ষা করিতেছিলো? জানিনে। এরপর সে কুসুমকেও যখন তার হাতের নাগালের বাইরে ফসকাই যাইতে দেখিলো আর তখন তা প্রতিরোধের চেষ্টায় একটা কলঙ্ক রটাইয়া দিবার ভয়ও তার মনে কোন চিন্তার ঢেউ তুলিতে পারলো না, তখন সত্যিই বেশ দেরী হইয়া গিয়েছিলো। কুসুম ততক্ষণে তার ভালোবাসা সেই পুকুরপাড়ে কবর দিয়া নিজের পুরুষটির সহিত চলিয়া যাইতে লাগিলো একখান নামহীন জীবনের উদ্দেশ্যে। শশীর তখন অনেককিছু করিবার সাহস থাকলেও বেশ দেরী হইয়া গিয়েছিলো। আসলে মানুষ তো আর মরেনা তখন যখন সে সত্যি মরে যায়। সবশেষে সব হারাইয়া অমোঘ প্রহরে একজোড়া উষ্ণ সান্নিধ্যের ক্লান্তি আঁচড়াইয়া ক্ষয় করা একখান দুর্বল শব নিয়া, প্রাণের উত্তাপে তৃষ্ণার্ত হইয়া সে ডুইবা যাইতে থাকলো নিজ সত্তার বিনাশে। তবে আজ থেকে কয়েক বছর পরও শহরের ধূসর ধোয়ার তলে গাঙচিল ডুবে যাওয়া অসহায় হেমন্তের কোন এক বিকেলে যখন পুনরায় বইটা আমি হাতে নিয়ে এর উষ্ণ বিষণ্ণতা অনুভব করতে থাকবো, তখনও দেখব শশী সেই কষ্টের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছে নিঃসঙ্গ সিসিফাস হয়ে। আর সে সময় শশী আমার কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বলবে, "বিচিত্র বিশ্ববুকে দাড়িয়ে থাকা এক করুণ জীবন আমি, যে হতাশার-বিষণ্নতার-মৃত্যুর গৌরব নিয়ে এখনো বেঁচে আছে।"
Was this review helpful to you?
or
সার্ভিস খুবই ভালো, শিপিং চার্জের জন্য হুটহাট ১-২টা বই কিনতে পারিনা।
Was this review helpful to you?
or
প্রথমে ভেবেছিলাম বইটা পুতুলনাচের ইতিহাস নিয়ে লেখা... কিন্তু এটি একটি উপন্যাস ।একজনের রেকমান্ডেশনএ কিনলাম । যতই এগোতে থাকলাম ততই মুগ্ধ হতে থাকলাম থাকলাম । "গ্রামের লোকের অনুমান শক্তি প্রখর । সকালে আকাশের দিকে চাহিয়া তাহারা বলিতে পারে বিকালে বৃষ্টি হইবে । বিকালে যদি নেহাত বৃষ্টি না-ই হয় সে অপরাধ অবশ্য আকাশের ।"