User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
❝ইচিইয়ানাগি পরিবারকে তাদের বংশের বেয়াড়া, একগুঁয়ে, উদ্ধত পুরুষদের জন্য কয়েক প্রজন্ম ধরে ভুগতে হয়েছে। ❞ ১৯৩৭ সালের বহুল আলোচিত একটি কেস "কোতো হত্যাকাণ্ড" বা "হোনজিন হত্যাকাণ্ড"। ২৫ শে নভেম্বর ইচিইয়ানাগি পরিবারের বড় ছেলের বিয়ে হয়। অভিজাত পরিবারের কর্তার বিয়ে উপলক্ষে চারিদিকে খুশির আমেজ কিন্তু এসবের আড়ালে কেউ একজন করছে গোপন ষড়যন্ত্র! বিয়ের দিন রাতে তীব্র আর্তনাদ ও কোতোর ঝংকারে জেগে ওঠে পুরো পরিবার। নবদম্পতির ঘরের দিকে ছুটে গেলেও সব দরজা-জানালা বন্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। কিন্তু শব্দ তো এখান থেকেই এসেছে! বরফের মধ্যে কাতানা গেঁথে আছে... বন্ধ শাটার ভেঙে বর-কনে পক্ষের লোকজন যা দেখলো সম্ভবত কোনোদিনও ভুলতে পারবে না...!!! ইনস্পেকটর ইসোকাওয়া জোড়া মৃত্যুর খোঁজখবর করতে যেয়ে অদ্ভুত এক লোকের সন্ধান পায়। বিয়ের দুদিন আগে তাকে সন্দেহজনকভাবে ইচিইয়ানাগি ম্যানশনের আশেপাশে ঘুরঘুর করতে দেখা গেছে। কনের চাচা গিনজির আহ্বানে বিখ্যাত ডিটেকটিভ কোসুকে কিনদাইচি কেসের সাথে জড়িয়ে পড়ে। প্রথমে সাদামাটা কোনো কেস মনে হলেও আদতে যে অসাধারণ ভয়ানক বিকৃত মস্তিষ্কের কেউ এসবের কলকাঠি নাড়ছে বুঝতে দেরি হয় না কিনদাইচির। কিন্তু কে সে? কেন করেছে? এলাকার লোকজনের মতে বংশপরম্পরায় ইচিইয়ানাগি পরিবার যে অভিশাপ বহন করে চলেছে এসব তারই ফল! বই পড়তে বসেছেন কিন্তু খুনি কে হতে পারে জানার আর তর সইছে না, এমন কি কখনও হয়েছে? তখন কী করেন? ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে যখন বইটা পড়া শুরু করি তখন এক-তৃতীয়াংশ পড়েই বইয়ের শেষ কয়েক পেইজ পড়ে ফেলি। আমার পড়া প্রথম লকডরুম মিস্ট্রি জনরার বই এটাই। তারপর বাকিটা না পড়েই রেখে দিয়েছিলাম যদি স্পয়লার ভুলে যায় এই ভেবে। কিন্তু কয়েকদিন আগেই বইটা আবার শুরু করে শেষ করে ফেললাম। আসলে "কে" না বরং "কেন" ও "কীভাবে" প্রশ্ন দুটোই আমাকে বেশি আকৃষ্ট করেছে। গল্পকথক হোনজিন কেসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তুলে আনবেন কিন্তু নিজে কোনোভাবেই কেসের সাথে সম্পর্কযুক্ত না। সম্পূর্ণ কাহিনী ড. ফ- এর কাছ থেকে শুনে ও নোট থেকে নিয়ে নিজের মতো করে গুছিয়ে পাঠকদের শোনাবেন এক অদ্ভুত গল্প... দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরুর আগেকার জাপানের এক অভিজাত পরিবারের কথা বলা হয়েছে। প্রায়ই এমন দেখা যায় যে কোনো ডিটেকটিভের আগমন বইয়ে হলে মূল ফোকাস তার ওপরই থাকে। কিন্তু এই বইয়ের ক্ষেত্রে উল্টাটা হয়েছে। ইচিইয়ানাগি পরিবারের সদস্যরাই বরং বেশি ফোকাসে থেকেছে। চরিত্রগুলো এমন রহস্যময় করে উপস্থাপন করা হয়েছে যে সন্দেহের তীর সবার দিকেই ঘুরতে থাকে। অল্পবয়সী অগোছালো তুখোড় ডিটেকটিভ কিনদাইচি কীভাবে রহস্যের খোলাসা করবে এটাই ভাবিয়েছে বেশি। পোশাক, আসবাবপত্র, বাদ্যযন্ত্র, বিভিন্ন সামগ্রীর ভিন্ন ভিন্ন নাম যে জাপানিরা দেন এইজন্য বইয়ের শুরুতে কনফিউজড হয়ে যাচ্ছিলাম। বইয়ের একদম প্রথমে যেমন বইয়ের চরিত্রগুলোর পরিচয় দেওয়া হয়েছে তেমনি এইসবের ক্ষেত্রে করলে ভালো হতো। বারবার গুগল করতে যেয়ে পড়ার ফ্লো নষ্ট হয় না তাহলে। অপ্রয়োজনীয় আলোচনা একদমই নাই বলতে গেলে। শুরুটা একটু স্লো হলেও পড়ে মজা পেয়েছি। শেষে মঞ্চস্থ করে যেভাবে সেই রাতের ঘটনাগুলো তুলে আনা হয়েছে... দারুণ! অপরাধীর জটিল সাইকোলজিক্যাল মাইন্ডকে যেভাবে ধাপে ধাপে যুক্তির মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হয়েছে ভালো লেগেছে। আসলে যুক্তি ও বিচার-বিশ্লেষণের সাহায্যেই পুরো কেস কিনদাইচি নিজের মতো ব্যাখ্যা করেছে। কিন্তু এই "ব্যাখ্যা" কতটা সঠিক শেষেই জানা যাবে। বইয়ে বেশ কিছু লকডরুম মিস্ট্রি বইয়ের কথাও বলা হয়েছে। অনুবাদ বেশ ভালোই হয়েছে তবে কিছু অংশ কঠিন লেগেছে। জাপানি থেকে ইংরেজি তারপর বাংলায় অনুবাদের কারণে হয়েছে নাকি লেখনশৈলীই এমন জানি না। কয়েকটা লাইনে "তার" শব্দ রিপিট হয়েছে। বইয়ে প্রায় অধিকাংশ সময়ই ডাক্তারকে "ফ" বলে সম্বোধন করা হয়েছে। ১৩৯ পৃষ্ঠায় আবার "এফ" বলা হয়েছে। ইংরেজি "F" অনুবাদে "ফ"/ "এফ" হয়ে গেছে সম্ভবত। ৫২ নং পৃষ্ঠায় বলা আছে ৪৫ নং পৃষ্ঠায় স্কেচ আছে। কিন্তু স্কেচটা ৪১ নং পৃষ্ঠায় আছে। অল্প কিছু বানান ভুল আছে। এছাড়া বইয়ের ওভারঅল প্রোডাকশন ভালোই হয়েছে। বই: দ্য হোনজিন মার্ডারস লেখক: সেইশি ইয়াকোমিজো অনুবাদক: বিমুগ্ধ সরকার রক্তিম, রুদ্র কায়সার জনরা: লকডরুম মার্ডার মিস্ট্রি প্রচ্ছদ: সজল চৌধুরী প্রকাশনী: ভূমিপ্রকাশ প্রথম প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২০২০ পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৬০
Was this review helpful to you?
or
Locked Room mystery, ending was unpredicted??
Was this review helpful to you?
or
nice
Was this review helpful to you?
or
'দ্য হোনজিন মার্ডার্স' আমার পড়া প্রথম লকড রুম মার্ডার মিস্ট্রি। আচ্ছা তার আগে একটু বলে নেই 'লকড রুম মার্ডার মিস্ট্রি' আসলে কি? লকড রুম মার্ডার মিস্ট্রি হচ্ছে অপরাধী একটা বদ্ধ ঘরে এমন ভাবে খুন করে রেখে যায় যেখানে ঘর টা ভেতর থেকে বন্ধ থাকে। আর তার মধ্য দিয়েই খুনি তার শিকার করে চলে যা। অর্থাৎ সেক্ষেত্রে একজন খুনিকে হত্যা করার কাজটি নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করার জন্য দারুন বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হয়। কাহিনীতে আসা যাক এবার। এখানে ঘটনার শুরু গ্রামের সম্ভ্রান্ত ইচিয়ানাগি পরিবারের বড় ছেলের কেঞ্জোর বিয়ে নিয়ে। কনে বেশ শিক্ষিত ও মার্জিত স্বভাবের। তবে বিয়ে উপলক্ষে যেমন জাকজমক পরিবেশ থাকে এখানে সেটা নেই। বিয়ের কার্য সুষ্ঠুভাবে শেষ হবার পর বর এবং কনে দুজনেই তাদের ঘরে চলে গিয়েছে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে যখন সবাই ঘুমিয়ে গিয়েছে হঠাৎ মধ্যরাতে বরের ঘর থেকে শোনা গেলো এক আর্তচিৎকার এবং সেই সাথে ভেসে আসলো কারো কোতো (এক বিশেষ বাদ্যযন্ত্র) বাজানোর শব্দ। সেইসাথে ঘরের পর্দায় পাওয়া গেলো রক্তমাখা তিন আঙুলের ছাপ যেখানে তিন আঙুলওয়ালা এক লোককে কিছুদিন আগে গ্রামের আশেপাশে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। ঘটনাক্রমে খুনের তদন্তের জন্য খবর দেয়া হলো প্রাইভেট ডিটেকটিভ কোসুকে কিনদাইচিকে। ধীরে ধীরে উন্মোচিত হতে থাকলো পরিবারের গোপন রহস্য। সামনে আসতে থাকলো ইচিয়ানাগি পরিবারের ভেতরের মানুষদের কথা। যেহেতু লকড রুম মার্ডার মিস্ট্রি আগে কখনো পড়া হয়নি তাই এধরনের অন্য কোন বইয়ের সাথে তুলনা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে যদি মার্ডার মিস্ট্রি হিসেবে বলি তো বলব এমন মেদহীন দারুন মার্ডার মিস্ট্রি খুব কমই পড়া হয়েছে। বইতে অনর্থক কাহিনী লম্বা না করায় এক বসায় পড়ে ফেলা যায় আর তদন্ত থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত ছিল দারুন উপভোগ্য। সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে এখানে কোসুকে কিনদাইচি এর তদন্ত করার প্রক্রিয়া। পরিবারের প্রত্যেকটা চরিত্র কে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখে তারপর একটা সিদ্ধান্তে আসা এবং খুনির ফেলে যাওয়া ছোট ছোট বিষয়গুলোকে পর্যবেক্ষণ করা। বলতে বাধ্য হচ্ছি ডিটেকটিভের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা ছিল অসাধারণ। তবে আসল খুনি জানার জন্য অবশ্যই দু একবার ধাক্কা খেতে হবে কেননা আমি যাকেই খুনি হিসেবে সন্দেহ করেছি লেখক তাকেই ভুল প্রমাণ করে গিয়েছেন প্রতি ধাপে। যারা মার্ডার মিস্ট্রি পছন্দ করেন তাদের জন্য এটা হতে পারে দুর্দান্ত একটা বই। বইটি যৌথভাবে অনুবাদ করেছেন বিমুগ্ধ সরকার রক্তিম এবং রুদ্র কায়সার ভাই। রুদ্র কায়সার এর অনুবাদকৃত 'মার্ডার ইন মেসোপোটেমিয়া' পড়া থাকলেও বিমুগ্ধ সরকার রক্তিমের পড়া প্রথম অনুবাদ। এ ধরনের বইয়ের অনুবাদ প্রাঞ্জল না হলে অবশ্যই সেটা অখাদ্য লাগা স্বাভাবিক তবে অনুবাদক দুজন যে সেটা হতে দেননি তা বলতে বাধ্য হচ্ছি। অনুবাদ নিয়ে কোনো অভিযোগ আমার নেই। আর সজল ভাই এর করা দারুন প্রচ্ছদ আসলেই বইটাকে অন্য মাত্রা দিয়েছে। বইয়ের মূল বিষয় গুলোর কোনোটাই প্রচ্ছদ থেকে বাদ যায়নি। জাপানিজ বইতে মূলত যে সমস্যায় পড়তে হয় সেটা হচ্ছে নাম তাই এখানেও তার ব্যাতিক্রম না। ক্যারেক্টর গুলোর নাম মনে রাখা টা প্রথমে বেশ কঠিন ছিল যেজন্য মাঝে মাঝে নাম ভুলে যাওয়ায় পেছনের পৃষ্ঠা উলটে দেখা লেগেছে। তবে গ্রামের নাম এখানে 'ক', 'খ' দিয়ে উল্লেখ করায় একটু সুবিধা হয়েছিলো। আরেকটা সমস্যায় পড়েছিলাম সেটা হচ্ছে 'কোতো' আর 'কাতানা' এই দুটো জিনিস বার বার ওলট পালট করে ফেলায় একটু ঝামেলায় পড়েছিলাম। কাহিনী তে যে ব্যাপার টা খারাপ লেগেছে তা হচ্ছে ডিটেকটিভের আগমন, সত্যি বলতে কোসুকের এসেই রাজ্য জয় করার মত এই ব্যাপার টা গল্পের সাথে বেশ বেমানান লেগেছে আমার কাছে। তবে পরের বইগুলোতে নাকি এটা আরো ডিটেইলস আছে। তবে সব কথার শেষ কথা বইতে ভালো খারাপ থাকবেই। সবদিক বিবেচনা করলে এই বইয়ে ভালোর দিক টাই বেশি। বইঃ দ্য হোনজিন মার্ডারস মূলঃ সেইশি ইয়োকোমিজো অনুবাদঃ বিমুগ্ধ সরকার রক্তিম, রুদ্র কায়সার প্রকাশনীঃ ভূমি প্রকাশ মুদ্রিত মূল্যঃ ২৬০ টাকা
Was this review helpful to you?
or
#Book_Mortem 32 #দ্য_হোনজিন_মার্ডার্স লেখকঃ সেইশি ইয়োকোমিজো অনুবাদকঃ বিমুগ্ধ সরকার রক্তিম এবং রুদ্র কায়সার প্রচ্ছদঃ সজল চৌধুরী প্রকাশনীঃ ভূমিপ্রকাশ মূদ্রিত মূল্যঃ ২৬০ টাকা প্রত্যন্ত গ্রামের সবচেয়ে সম্ভ্রান্ত পরিবারের কর্তার বিয়ের বাসর রাতেই ঘটে গেলো নৃশংস হত্যাকাণ্ড। মারা পড়লেন বর এবং কনে। তদন্ত করতে এসে পুলিশ কর্মকর্তারা খুনীর কোনো ধরণের নিশানাই খুঁজে পেলেন না। তার উপর খুন দুটি হয়েছে বদ্ধ ঘরে। মানে ভিতর থেকেই সব দরজা বন্ধ অবস্থায় মারা গেছেন সদ্য বিবাহিত স্বামী স্ত্রী। আকুল পাথারে পড়া পুলিশকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলেন টোকিওর বিখ্যাত এক গোয়েন্দা। উদঘাটন করলেন খুনের রহস্য। সেটা যেমনি অভূতপূর্ব, তেমনি রোমহর্ষক। #পর্যালোচনাঃ লকড রুম মার্ডার মিস্ট্রি খুব সম্ভবত এই গ্রুপের সকল থ্রিলার প্রেমীরই কখনো না কখনো পড়া হয়েছেই। থ্রিলার সাহিত্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় জনরা এই লকড রুম মার্ডার মিস্ট্রি। এই বইটা নিয়ে আসলে বিশদ কিছু বলা সম্ভবই না। কারন এতে করে মূল গল্পের অনেক কিছুই স্পয়লার হয়ে যেতে পারে। আমি শুধু পারি বইটা নিয়ে আমার মুগ্ধতা প্রকাশ করতে। ১৯৪৩ সালে প্রকাশিত এই বইয়ের লেখনী পড়ে আমি খুবই অবাক হয়েছি। যদিও জানি না অনুবাদের অনুবাদ হওয়ার পর মূল লেখকের কতোটুকু অংশ বইয়ে বিদ্যমান ছিলো!! তবুও বলবো আমার বেশ ভালো লেগেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী জাপানের এক প্রত্যন্ত গ্রামের বর্ণনা, গল্পের বুনট, চরিত্রায়ন, ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে গল্প সাজিয়ে বলা, আর অতি অবশ্যই চমকপ্রদ এক মার্ডার মিস্ট্রি। এই ধরণের গল্পে যা হয় একের পর এক চরিত্রের উপর সন্দেহের উদ্রেক ঘটে, তা এই বইয়েও ছিলো। মাঝে তো একবার গোটা বইয়ের উল্লেখযোগ্য চরিত্র সবগুলাকেই একত্রে খুনী মনে হচ্ছিলো!! আর শেষটুকু পড়ে বিষাদময় মন নিয়ে আবারো আবিষ্কার করলাম, মানুষের ইগো/জিদ মানুষকে কতোটা অতলে তলিয়ে নিয়ে যায়। শুধু যদি মনের জেদের অংশটুকু একটু কন্ট্রোল করতে পারতাম আমরা, তা হলে হয়তো অনেকগুলো জীবন আনন্দে পরিপূর্ণ হতো!! #চরিত্রায়নঃ এতো অল্প কথায় এতো সুন্দরভাবে চরিত্র ফুটিয়ে তোলা সম্ভব তা কখনো ভাবিনি। বইয়ে এমনও চরিত্র ছিলো যাকে বর্ণনার পিছনে স্রেফ ৩টা লাইনই লিখেছেন লেখক, কিন্তু তাতে করেই আমি অনায়াসে চরিত্রটাকে বুঝে নিতে পেরেছি। এমনিতেই জাপানিজ নাম মনে রাখা কষ্টকর, তবুও শুধুমাত্র চরিত্রায়নের কারনেই নাম পড়ে বুঝতে খুব একটা অসুবিধা হয়নি এই বইটা পড়তে। #অনুবাদঃ এই প্রথম যৌথ অনুবাদের কোনো বই পুরোটা শেষ করলাম। আমি ভাবতাম এই ধরণের অনুবাদ গুলো সম্ভবত খুব একটা ভালো হয় না। কিন্তু অবাক হয়ে আবিষ্কার করলাম এই বইয়ের অনুবাদ বেশ সুন্দর এবং সাবলীল। এটা যে দুইজন মানুষ মিলে করেছেন তা একবারও মনে হয়নি। #প্রোডাকশনঃ ভূমির ওয়ান অফ দ্য বেস্ট প্রোডাকশন। যেমন সুন্দর প্রচ্ছদ, তেমনি কোয়ালিটিফুল পেইজ আর বাইন্ডিংস মিলে মাত্র ১৬০ পৃষ্টার বইটি বেশ মন কেড়েছে। Sultan Azam Sazal ভাইয়ের কথা আলাদা করে বলতে হয়। বইয়ের মূল মার্ডারের প্রতিটা এলিমেন্টকে প্রচ্ছদে অসাধারণ ভাবে ফুটিয়েছেন। আমি আরেকটু স্পষ্ট লেটারিং প্রেফার করলেও, এই বইটার সাথে এই লেটারিংটাই মনে হয়েছে সবচেয়ে সুন্দর মানিয়ে গিয়েছে। তবে ২/১টা জায়াগায় সম্পাদনা জনিত সামান্য ভুল ছিলো। পর পর দুটি বাক্যে একই চরিত্রের নামের দুই অংশ ব্যবহার করায় একটু করে সমস্যা হয়েছিলো, যেহেতু জাপানিজ নাম নিয়ে এমনিতেই বিভ্রান্ত হতে হয়। #রেটিংঃ ৭.৫/১০ (স্লো পেসড, একের পর এক সুতা ছেড়ে গিয়ে শেষে সব একসাথে জোড়া লাগানো। টিপিক্যাল মনে হলেও, লেখনীর ধরণ এবং জাপানের পটভূমির বর্ণনা মিলিয়ে ইউনিক, বেশ গুছানো এবং এনজয়েবল একটা গল্প শেষ করলাম) #পরিশিষ্টঃ যতোদূর জানি বইটা এখন প্রিন্ট আউট। হয়তো অনেকেই কিনে ফেলেছেন, অনেকেই পড়েও ফেলেছেন। তবুও ভূমিপ্রকাশের কাছে অনুরোধ থাকবে এই বইটার আরেকটা মূদ্রণ বের করার। ভালো বই প্রজন্ম জুড়েই টিকে থাকুক।
Was this review helpful to you?
or
এক কথা সুখপাঠ্য বই! চোখ বুঝে নিতে পারেন! অনুবাদ নিয়ে টেনশন করার কিছুই নাই, যথেষ্ট সাবলীল অনুবাদ ছিলো!
Was this review helpful to you?
or
রিভিউ :: বইয়ের নাম : দ্য হোনজিন মার্ডারস লেখক : সেইশি ইয়োকোমিজো অনুবাদক : বিমুগ্ধ সরকার রক্তিম এবং রুদ্র কায়সার। জনরা : মার্ডার মিস্ট্রি প্রকাশকাল : সেপ্টেম্বর ২০২০ প্রকাশনা : ভূমি প্রকাশনী প্রচ্ছদ : সজল চৌধুরী। পৃষ্টা সংখ্যা : ১৫৭ পেজ মুদ্রিত মূল্য : ২৬০ টাকা। এটি একটি লকডরুম মার্ডার মিস্ট্রি গল্প। লকডরুম মার্ডার মিস্ট্রি বা বদ্ধকামরায় খুনের রহস্য গল্পগুলো এই রকম যে খুনি একটি বদ্ধ কামরায় খুন করে তার খুনের এবং পালিয়ে যাওয়ার পারদর্শীকতা দেখাবে। গোয়েন্দা এর কাজ হলো খুনি কে এবং কিভাবে এই খুন করলো এবং কিভাবে সে ঢুকলো এবং পালালো এটা বের করা। প্রায় বিখ্যাত সব গোয়েন্দা সিরিজে একটা হলেও এই লকডরুম মার্ডার মিস্ট্রি এর কাহিনী পাঠক আগেই পেয়েছে, ফেলুদা এরকুল পোয়েরা, শার্লোক, সহ বড় অনেক গোয়েন্দা গল্পেই আমরা লকড রুম মার্ডার মিস্ট্রি পেয়েছি কমবেশি। কাহিনী সংক্ষেপ :: ১৯৩৭ সাল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগের জ্যাপানের ওকামুরা নামক গ্রামে সম্ভ্রান্ত ইচিয়ানগি পরিবার এর বড় ছেলে কেঞ্জো এর বিয়ে। মেয়ে আরেক সম্ভ্রান্ত পরিবার এর সন্তান। ছোটখাটো ঘরোয়া পরিবেশ এ বিয়ের আয়োজন। সব কিছু ঠিকই চলছি যতক্ষন না গ্রামে তিন আঙ্গুলওয়ালা এক আগন্তুক এর আগমন ঘটে। সেই আগন্তুক ইচিয়ানগি পরিবার এর ঠিকানা চেয়েছিলো। তারপর আসলো বিয়ের দিন, সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলো, বিয়ের রাতে স্বামী স্ত্রী নিজ বদ্ধ কামরায় খুন হলো। আর খুনি তার আঙ্গুলের রক্তেরছাপ রেখে গেলো পর্দা গুলোতে। সেই সাথে যাবার আগে সবাই শুনতে পায় কোতো এর মনোমুগ্ধকর সুর। কোতো একটি জাপানিজ বাদ্যযন্ত্র, যা বাজাতে তিন আঙ্গুল লাগে, বৃদ্ধা তর্জনী মধ্যমা। পাঠ প্রতিক্রিয়া :: লকড রুম মার্ডার মিস্ট্রি আমি এর আগেও কয়েকটা পড়েছি, সে হিসাবে আমার কাছে তেমন নতুনত্ব ছিলো না তবে বইটি বেশ উপভোগ্য ছিলো। প্রথমত্ব খুনে মোটিভ কি তা জানার জন্য আমি বইটিতে হুক হয়ে গেয়েছি। তাই শুরু থেকেই বইটি টেনেছে ভালোই। দ্বিতীয়ত এই গল্পে যতটা খুন কিংবা রহস্য ছিলো তার চে বেশি আমার ভালো লেগেছে সেই সময়কার জ্যাপানিজ পটভূমি। একদম চোখের সামনে ভেসেছে জ্যাপনিজ বাড়ি, তাদের রুম আনেক্স, কাতনা, তাদের পোশাক কিমানো, আর তাদের খাবার ইত্যাদি। আমি এই বইতে এসব জিনিশ উপভোগ করেছি বেশি। আর সবচে বড় বিষয় হলো পুরো বই জুড়ে যে জিনিশটার সবচে বেশি প্রভাব ছিলো তা হলো কোতো। বারবার মনে হয়েছে যেন কোতো এর মনোমুগ্ধকর সুর আমি শুনছি বইটির ভিতর। খুন হওয়ার পরই কোতোর সুর। মজার ব্যাপার হলো বইটি পড়তে পড়তে কোতোর কয়েকটি কভার মিউজিক ইউটিউব থেকে শুনে এসেছি। তারপর ডিটেকটিভ কোসুকে কিনদাইচি এর কথা না বললেই নয়। তার বুদ্ধিমত্তা সত্যি প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। পুরো গল্পটার মোর তিনি ঘুরিয়ে দিয়েছেন। অভার অল বেশ উপভোগ্য এবং ভালো বই। জাপানিজ গল্পে সবচে বেশি যে সমস্যা টা হয় তা হলো চরিত্র আর চরিত্রের সম্পর্ক গুলো, অনুবাদকদ্বয় চরিত্র গুলোকে প্রথমে আলাদা করে দেয়ার পাঠের বেশ সুবিধা হয়েছে এবং অপ্রয়োজনীয় নাম অক্ষরে আনায় ভালোই হয়েছে। অনুবাদ মোটামুটি ভালো এবং সাবলীল বটে। যাই হোক সব মিলিয়ে মোটামুটি ভালো লেগেছে। বাধাই ভালো, প্রচ্ছদ যথেষ্ট সুন্দর। পারসোনাল রেটিং : ৪/৫ গুডরিডস রেটিং : ৩.৮৪/৫। ধন্যবাদ, মিদুল ইসলামবাগ, চকবাজার, পুরাণ ঢাকা। ১৮-০৪-২০২১, বেলা ১টা।